আকাশপথে মাত্র দুই ঘণ্টার পথ। সেই অর্থে ঢাকা থেকে দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। বলছি চীনের ইউনান প্রদেশের কথা। বাংলাদেশ থেকে এটি দেশটির সব চেয়ে নিকটবর্তী প্রদেশ।
চারিদিকে চোখ ধাঁধানো প্রকৃতিক সৌন্দর্য, চা বাগানের মুগ্ধতা, বাহারি ফুলের সমাহার কিংবা ওষুধ উৎপাদন- বলা যায় দেশটির অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিও ইউনান। দৃষ্টিসীমা জুড়ে শুধুই নৈসর্গিক সৌন্দর্য। কিছুটা হেঁটে, কিংবা কিছু পথ গাড়িতে খুব কাছ থেকে দেখা মেলে নয়নাভিরাম দৃশ্য।
নানা ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ ইউনান। ভূ-প্রকৃতি, পাহাড়, প্রাকৃতিক পরিবেশ, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও খাবার পর্যটকদের সহজেই আকৃষ্ট করে। ইউনানে রয়েছে চিত্তাকর্ষক প্রাকৃতিক দৃশ্য, আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক নিদর্শনাবলি এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার সব উপাদানই এখানে বিদ্যমান। সেই জন্যই চীনের ইউনানকে বলা হয় 'পর্যটন স্বর্গরাজ্য'।
ইউনান প্রদেশের আয়তন ৩ লাখ ৯৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। যা বাংলাদেশের প্রায় তিন গুণ। কিন্তু জনসংখ্যা ৪৭ দশমিক ২ মিলিয়ন, যা বাংলাদেশের তিন ভাগের এক ভাগ। মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে প্রদেশটি সারা বিশ্বের ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
ইউনান সম্পর্কে বলা হয়- এখানে এক পাহাড়েই একসময়ে চার ঋতুর সমাহার ঘটে এবং প্রতি পাঁচ কিলোমিটার পরপর আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যায়। এখানে রয়েছে ২৪০টিরও বেশি প্রাকৃতিক গরম পানির ঝরনা। রয়েছে হিমবাহ, উষ্ণ প্রসবন, সুউচ্চ পর্বতমালা, বরফ ঢাকা পর্বত চূড়া, হ্রদ, অরণ্য আর বিষুবীয় রেইন ফরেস্ট।
চায়ের মাতৃভূমি
ইউনানকে বলা হয় চায়ের মাতৃভূমি। ইউনান প্রদেশের মালিপোতে প্রথমবারের মতো সম্প্রতি হয়ে গেল 'লাওশান ইন্টারন্যাশনাল টি ফেস্টিভ্যাল'। অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের চা শিল্পের বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তা, সামাজিক ব্যক্তিত্ব, এবং গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ফেস্টিভ্যালে তারা চীনা এবং বিদেশী চা সংস্কৃতির উপর মত বিনিময় করেছেন। গ্রামীণ জীবন ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবনে অবদান রাখার জন্য বিশ্বে যৌথভাবে মালিপোর প্রাচীন গাছের চা-এর প্রচার করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এথনেক গ্রুপের পারফরম্যান্স ছিল উপভোগ্য।
দেশি-বিদেশি অতিথিরা হরেকরকম চা পান করেন। চা উৎপাদনে অবদান রাখায় ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একটা স্টলও ছিল।
অনুষ্ঠানে ‘স্প্রিং টি এর সুগন্ধি’ অনলাইন সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয় এবং মালিপো প্রাচীন গাছের একটি আঞ্চলিক ব্র্যান্ড চালু করা হয়।
সমৃদ্ধ ফুল বাজার
ইউনান; যেখানে হাজারের বেশি রয়েছে ফুল উৎপাদন কেন্দ্র। ফুল চাষের মাধ্যমে এখানে গড়ে উঠেছে এশিয়ার বৃহৎ ফুলের বাজার।
নানা ধরনের ফুল চাষ করে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। ভ্রমণপিপাসুরা এখানে এসে ফুলের রাজ্যে হারিয়ে যায়।
কুনমিং ইউনান প্রদেশের সবচেয়ে বড় শহর এবং শহরটি ইউনানের রাজধানী। এছাড়া শহরটি প্রদেশের প্রধানতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র। শহরটি বেশকিছু ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানের জন্যও বিখ্যাত। সুন্দর আবহাওয়ার কারণে শহরটিকে বলা হয় 'বসন্ত নগরী বা চিরবসন্তের দেশ'।
বলা হয়, কুনমিং একটি সমৃদ্ধ শহর। কুনমিং-এ ৫০০ টিরও বেশি প্রজাতির প্রাণী, ১ হাজার ২০০ প্রজাতির বন্য উদ্ভিদ এবং ৪৬০ টিরও বেশি প্রজাতির ফুল রয়েছে। টানা ২০ বছর ধরে এশিয়ার মধ্যে ফুলের বাজারের প্রথম স্থান ধরে রেখেছে চীন। এই কুনমিং থেকে চীনের ব্যাবসায়ীরা ইউরোপসহ অন্তত ১৫টি দেশে ফুল রপ্তানি করে।
ওষুধ উৎপাদন
ইউনান প্রদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত সেউডু-জিনসেং। ওয়েনশান হল সিউডো-জিনসেং-এর উৎপত্তি ও প্রধান উৎপাদনকারী এলাকা। এখানে মূল্যবান ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ উৎপাদন করা হয়।
ওয়েনশান কিহুয়া কোম্পানি ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, যা পূর্বে ওয়েনশান ফার্মাসিউটিক্যাল ফ্যাক্টরি নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালে দুটি পুনর্গঠনের পর ইউনান বাইয়াও গ্রুপের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সাবসিডিয়ারি হয়ে ওঠে। সম্পূর্ণ মানস্পন্ন পরিবেশে এখানে ৭ ধরনের ওষুধ এবং ২৩টি নির্দিষ্ট পণ্য উৎপাদন করা হয়।
এই কোম্পানিটি প্রথম ওয়েনশান প্রিফেকচার গভর্নমেন্ট কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট অ্যাওয়ার্ড জিতেছে। এবং একটি ন্যাশনাল হাই-টেক এন্টারপ্রাইজ এবং ইউনান লিডিং এগ্রিকালচারাল এন্টারপ্রাইজ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।
দর্শনীয় স্থান পুজেহেই
পুজেহেই প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে কুইবেই কাউন্টি হল চীনের একটি দর্শনীয় স্থান। এখান থেকে দর্শনার্থীরা স্বচ্ছ হ্রদ এবং পদ্ম ফুলভরা পুকুর, পান্না পর্বত এবং মনোমুগ্ধকর কার্স্ট ল্যান্ডস্কেপের মনোরম দৃশ্য দেখতে পারেন।
ইয়াও, মিয়াও, হুয়াং সংখ্যালঘুদের উৎসবে আড়ম্বর দেখার জন্যও এই মনোমুগ্ধকর দেশটি একটি আদর্শ জায়গা। জুলাই থেকে আগস্ট হল পুজেহেইয়ের সবচেয়ে সুন্দর সময়। এ সময় পদ্মফুলগুলো পরিপূর্ণ ফুটে থাকে।
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য