তুরস্কে নতুন করে আঘাত হানা ভূমিকম্পে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার রাত ৮টার কয়েক মিনিট পর দেশটি দক্ষিণাঞ্চলে দু বার আঘাত হানা এ ভূমিকম্পে আরও প্রায় ৩০০ মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথমে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প। এর তিন মিনিটের মাথায় আবার আঘাত হেনেছে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরেক ভূমিকম্প।
পাশ্ববর্তী দেশ সিরিয়াও কেঁপেছে এই ভূমিকম্পে। দেশটিতে আহত হয়েছে প্রায় ২০০ মানুষ।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি এ দুই দেশে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প। এতে ৪৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ যায়। আহত হন অসংখ্য মানুষ। ধসে পড়ে বহু ঘর-বাড়ি।
তুরস্কের দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা এএফএডির বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এতে বলা হয়, সোমবার তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায় প্রদেশের প্রদেশের দেফনে শহরে ভূমিকম্প আঘাত হানে।
এর ২০০ কিলোমিটার উত্তরের আন্তাকিয়া ও আদানা শহরে এএফপির সাংবাদিকেরা ভূমিকম্প অনুভব করেছেন।
তুরস্কের দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পটির পর হাতায়ের সামান্দাগ জেলায় ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়া, জর্ডান, ইসরায়েল ও মিসরও এ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে।
উদ্ধার তৎপরতা চলছে জানিয়ে কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
বিয়ে নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই মানুষের, কোথাও কোথাও তো বছরের কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বিয়ের ‘মৌসুমও’ হয়ে ওঠে কয়েকটি দিন। চীনেও আছে এমন এক সময়। তবে এবার সে মৌসুম উযদাপনে সাড়া মেলেনি।
বছরের সপ্তম মাসের সপ্তম দিনে ওক্সি ফেস্টিভল নামে এক উৎসব হয় চীনে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মতোই হয় এর আয়োজন। আয়োজনের দিনে অনেক তরুণ-তরুণী বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। তবে এ বছরের আয়োজন উদযাপনে আয়োজকরা বরং ক্ষতির মুখেই পড়েছেন।
এর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে, বিয়েতে আগ্রহ হারিয়েছেন চীনের বাসিন্দারা। তার চেয়ে বরং লিভ টুগেদার বা সিঙ্গেল থাকতে চান তারা। কেউ কেউ তো বলেই ফেলেছেন, বিয়ের আরেক নাম হলো মৃত্যু।
আল জাজিরা বলছে, গত ২২ আগস্ট ওক্সি ফেস্টিভলের দিনে সিচুয়ান প্রদেশের মিয়ানয়াং শহরের একটি বিবাহ নিবন্ধন অফিস বিবাহ নিবন্ধন সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ওই দিন সে এলাকায় বিয়ে করতে আসেন খুব জুটিই।
শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। বিয়ে নিবন্ধন হলের অনুষ্ঠানের পরিবর্তে লাইভে দেখানো হয় শহরের মনোরম দৃশ্য।
এ ঘটনাটি নিয়ে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে। বিয়েতে অনাগ্রহের পেছনের কারণও বেরিয়ে আসছে অনেক।
বিয়েতে উদ্বুদ্ধ করতে সরকার নানা উৎসাহমূলক পদক্ষেপ নিলেও কয়েক বছর ধরে চীনে বিয়েতে আগ্রহ কমছে মানুষের।
এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে বার্ষিক প্রায় সাড়ে ১ কোটি ৩৫ লাখের মতো বিয়ে হয়েছে চীনে, অথচ গত বিয়ের বিয়ে হয়েছে প্রায় ৭০ লাখ।
এসব পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে, চীনের বাসিন্দারাও পরে বিয়ে করছেন। বিবাহবিচ্ছেদের হার বাড়ছে এবং সিঙ্গেল থাকতে চাওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে।
চীনা তরুণরা মনে করছেন, বিয়ে তাদের আধুনিক জীবনের সঙ্গে বেমানান। সাংহাইয়ের বাসিন্দা বছর বয়সী ইউ ঝাং আল বলেছেন, ‘চীনে বিয়ে এক প্রকারের মৃত্যু।’
পেশায় ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান এই যুবক বলেন, দুই বছর ধরে আমি আমার প্রেমিকার সঙ্গে এক সঙ্গে আছি। আমরা প্রায়ই বিয়ের কথা আলোচনা করেছি। তবে সবসময় একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি- বিয়ে করার চিন্তা করলে দেখি সেটি আমাদের সুখের চেয়ে চাপই বেশি দেয়।
চীনের বিবাহযোগ্য অনেকে মনে করেন, দুটি পরিবারের এক হওয়ার পাশাপাশি বিয়ের মাধ্যমে একটি বাড়ি কিনে সংসারও শুরু করতে হয়। এই মুহূর্তে, এই তিনটি লক্ষ্য অবাস্তব বলে মনে হচ্ছে।
বিয়েতে আগ্রহ বাড়াতে প্রচারণা চালাচ্ছে চীন। এ লক্ষ্যে গত মে মাসে ২০ টিরও বেশি চীনা শহরে ঘোষণা করা নতুন পদক্ষেপ। ঝেজিয়াং প্রদেশের একটি কাউন্টি গত মাসে ঘোষণা করেছে, পাত্রীর বয়স ২৫ বা তার কম হলে তারা আর্থিক পুরস্কার পাবেন।
এ ছাড়া কর্মকর্তারা জনসাধারণকে ‘সঠিক বয়সে’ বিয়ে করতে এবং সন্তান ধারণের জন্য জনসাধারণকে উৎসাহিত করেছেন। সাম্প্রতিক টিভি শো এবং ফ্যাশন শোতে বিয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা হচ্ছে।
গুয়াংজু শহরের জেসিকা ফু বিশ্বাস করেন, বিয়ের প্রতি যে মনোযোগ দেয়া হয়েছে তা দেশের জন্মহার বাড়ানোর সরকারের লক্ষ্যের সঙ্গে যুক্ত। তবে কোনো কিছুতেই সংকট কাটছে না।
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের চীনা ও এশিয়ান স্টাডিজের সিনিয়র লেকচারার প্যান ওয়াংয়ে মতে, ব্যক্তিগত পছন্দের আবির্ভাব চীনা সমাজে বিয়ের গতিপথ বদলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিবাহিত জীবন আজ অনেকগুলি জীবনধারার বিকল্পগুলোর মধ্যে একটি মাত্র।
আরও পড়ুন:বিতর্কিত নাগোর্নো-কারাবাখ এলাকা আজারবাইজানের দখলে যাওয়ার পর থেকে হাজার হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ানরা ওই এলাকা ছাড়ছেন।
গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজারের মতো বাসিন্দা ওই ছিটমহলটি ছেড়ে আর্মেনিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন বলে বিবিসির মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ এলাকায় এক লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ানের বাস ছিল। আর্মেনিয়ার সরকার যুদ্ধের কারণে বাস্তুহারা মানুষকে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর থেকেই তারা এলাকা ছাড়তে শুরু করেন।
আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ওই এলাকায় জাতিগত নিধন চলছে।
বিবিসি বলছে, নাগোর্নো-কারাবাখ দক্ষিণ ককেসাস এলাকার একটি পাহাড়ি এলাকা। এটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তবে তিন দশক ধরে এটি জাতিগত আর্মেনিয়ানরা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
এই ছিটমহলের প্রতি আর্মেনিয়া এবং তাদের মিত্র রাশিয়ার সমর্থন ছিল। বছরের পর বছর ধরে সেখানে শত শত রুশ সেনা ছিল।
গত সপ্তাহে আজারবাইজানের সেনারা আক্রমণ চালালে রাশিয়ার পাঁচজন শান্তিরক্ষী এবং ২০০ জন জাতিগত আর্মেনিয়ান এবং কয়েক ডজন আজারবানি সেনা নিহত হন।
আর্মেনয়িয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে সেখানে এটাই চলছে এবং এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক, কারণ এ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানানোর চেষ্টা করছি।
আজারবাইজান বলেছে, তারা জাতিগত আর্মেনিয়ানদেরকে ‘সমান নাগরিক’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী গেগহাম স্টিপানিয়ান এক্স-এর (সাবেক টুইটার) মাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছেন, কারাবাখের প্রধান শহর স্টেপানাকার্টের একটি পেট্রোল স্টেশনে বিস্ফোরণে ২০০ বেশি মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
তবে বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।
মানুষের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে আর্মেনিয়ার সীমান্তে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে।
রোবববার আর্মেনিয়ার গোরিস শহরে যেসব শরণার্থীরা এসে আশ্রয় নিয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। এই শহরটি কারাবাখের সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।
এক ব্যক্তি বলেন, আমি আমার সারা জীবন আমার মাতৃভূমির প্রতি উৎসর্গ করেছি। এভাবে পালিয়ে আসার চেয়ে তারা যদি আমাকে মেরে ফেলতো তাহলে বেশি ভাল হতো।
ভেরোনিকা নামে এক নারী জানান, দ্বিতীয় বারের মতো শরণার্থী হয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের লড়াইয়ের সময় প্রথমবার শরণার্থীতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি।
অনেক দিন পর আবার প্রকাশ্যে এলেন মহানবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বহিষ্কার হওয়া বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা।
সোমবার ভারতের আরেক বিতর্কিত বলিউড চলচ্চিত্র ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর মুক্তি পেতে যাওয়া নতুন চলচ্চিত্র ‘ভ্যাকসিন ওয়ার’-এর প্রচারে দেখা গেছে বিজেপির সাবেক ওই মুখপাত্রকে। কোভিডের সময় ভারতের ভ্যাকসিন আবিষ্কার নিয়ে নির্মিত হয়েছে এ চলচ্চিত্রটি।
চলচ্চিত্রটির প্রচারে গিয়ে নূপুর শর্মা বলেন, ‘এখানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ। আমি সে সকল বিজ্ঞানীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা এ করোনা টিকা তৈরি করেছেন। কারণ এর জন্যই আমরা ভারতীয়রা আজ বেঁচে আছি।’
নূপুর শর্মা ও পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীকে একসঙ্গে দেখার পর থেকেই বেশ জোরেশোরে আলোচনা শুরু হয়েছে বলিউড ও ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে। দ্য কাশ্মীর ফাইলস চলচ্চিত্রটি দিয়ে এ পরিচালক আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন এবং একাধিক ইস্যুতে ধারাবাহিক বিতর্কিত মন্তব্য করতে থাকেন।
আরও পড়ুন: কে এই নূপুর শর্মা
দ্য কাশ্মীর ফাইলস-এ বিবেক অগ্নিহোত্রি ‘সরাসরি বিজেপির ভাষায়’ কথা বলেছেন বলে ওই সময় মন্তব্য করেন বিজেপি বিরোধীরা। চলচ্চিত্রটিতে কাশ্মীরে অত্যাচারিত মুসলমানদেরকেই উল্টো অত্যাচারী হিসেবে দেখানো হয়।
ওই সময় বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মুসলমান জনগোষ্ঠী ছাড়াও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী মানুষ চলচ্চিত্রটিকে বয়কট করে। অন্যদিকে বিজেপি নেতারা তাদের কর্মী-সমর্থকদের চলচ্চিত্রটি দেখার নির্দেশ দেন।
আগামী বছর ভারতের জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে কাজ শুরু করেছে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো। কট্টর ধর্মীয় দল হিসেবে পরিচিত বিজেপির নির্বাচনের আগে ধর্মের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। তবে মনিপুর ইস্যু, মুদ্রাস্ফীতি, বিরোধীদের জোট ও সম্প্রতি কানাডায় শিখ নেতা নিজ্জর হত্যার ঘটনায় পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হওয়ায় বেশ চাপে রয়েছে ক্ষমতাশীন বিজেপি। এমতাবস্থায় সামনের নির্বাচনের বৈতরণী উতরানোর জন্য বিজেপিপন্থী হিসেবে পরিচিত শিল্পীদের কাজে লাগাতে পারে তারা বলে ধারণা করছেন অনেকে।
২০২২ সালে মহানবীকে নিয়ে খুবই আপত্তিকর মন্তব্য করেন এই নূপুর শর্মা। সেই মন্তব্য ঘিরে ভারতে রীতিমতো দাঙ্গার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়, বিশেষত আরব বিশ্বের প্রবল চাপে কট্টর দল হওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত নূপুর শর্মাকে দল থেকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হয় বিজেপি। এরপর থেকেই তাকে বাইরে দেখা যায়নি।
নূপুর শর্মার সঙ্গে এ পরিচালকের যুগলবন্দি বিজেপির নতুন কোনো রাজনৈতিক কৌশল কিনা- তাই এখন দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন:নিজেদের দেশের ইলিশ, নিজেরাই খেতে পারি না। সব বিদেশে চলে যায়। ঘাটে, আড়তে গিয়েও বড় আকারের ইলিশ পাওয়া যায় না। যা-ও দুই একটা পাওয়া যায়, দাম শুনে ফিরে আসতে হয়। ঢাকায় বড় সাইজের ইলিশ পাওয়া গেলেও তা কেনার সামর্থ্য নেই বেশিরভাগ মানুষের।
রপ্তানি সিন্ডিকেটের কাছে জেলেরাও অসহায়। আড়তদার বা ঘাট বাজারের বাইরে কারও কাছে ইলিশ বিক্রি করতে পারেন না তারা। এমনকি পরিবারের জন্য বাড়িতে ইলিশ নিয়ে যাওয়াটাও জেলেদের জন্য কষ্টসাধ্য।
ইলিশের প্রাপ্যতা ও দেশের জাতীয় মাছটির দাম নিয়ে এমন নানা অভিযোগ দেশবাসীর। দেশে আগুন দামে ইলিশ কিনতে হয়, অথচ আমাদেরই ইলিশ তুলনামূলক কম দামে উঠছে প্রতিবেশী দেশের মানুষের পাতে- এমন অভিযোগও বিস্তর। তবে এ বছর অন্তত কম দামে প্রতিবেশীরা ইলিশ খাওয়ার অভিযোগটা ধোপে টিকছে না। ইলিশের দামে পশ্চিমবঙ্গের ক্রেতাদেরও হাত পুড়ছে- এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে।
কলকাতার মাছ বাজারগুলোতে ইলিশের চড়া দাম নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, “মানিকতলা বাজারে পা রাখতেই মন ভাল হয়ে গেল গৃহস্থদের। মাছ বিক্রেতার ঝুড়ির দিকে তাকিয়ে মুখে হাসি ফুটল। বড় আকারের ইলিশগুলো দেখে মন ভাল হওয়ারই কথা। তাও আবার পদ্মার ইলিশ বলে কথা। বাড়িতে নিয়ে যেতে পারলে পাড়ায় গল্প করা যাবে- আজ পদ্মার ইলিশ দিয়ে ভাত খেলুম।
“এমন বিশ্বাস নিয়েই হাতিবাগানের এক বাসিন্দা বললেন- দেখার পর থেকেই ব্যাগে ভরে নিতে ইচ্ছে করছিল। তখন বিক্রেতাদের হাঁক কানে আসছিল। কেউ বলছেন- একদম রাজশাহী! আবার কেউ বলছেন- পদ্মা থেকে জ্যান্ত ধরে আনা।
“কিন্তু পদ্মার ইলিশের কাছে যেতেই দামটা উড়ে এল কানে। আর তা শুনেই মুখটা নিমেষে কালো হয়ে গেল গৃহকর্তার।”
সোমবার বাংলাদেশ থেকে ইলিশ যাওয়ার খবরে সাড়া পড়ে গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের ঘরে ঘরে। অনেক গৃহকর্তা গিন্নিকে খুশি করতে ব্যাগ হাতে ছুটেছিলেন বাজারে। আশা ছিল, পদ্মার ইলিশ নিয়ে ঘরে ফিরে বউকে বড়মুখ করে বলবেন, ‘দেখ গিন্নি, কী এনেছি!’
কিন্তু সেই আশা তো পূরণ হয়নিই। বরং, গোমড়া মূখে বাজার থেকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে বেশিরভাগ ক্রেতাকে। অন্তত হিন্দুস্তান টাইমসের ওই প্রতিবেদন থেকে তাই জানা যাচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, বাংলাদেশের ইলিশের দামের আঁচে হাতে ছ্যাঁকা খেয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। শুকনো মুখে পরে পুকুরে চাষ করা রুই-কাতলা নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে তাদের।
কলকাতায় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে বাংলাদেশের রুপালী ইলিশ। তার পরও বাংলাদেশ থেকে আরও ইলিশ চায় পশ্চিমবঙ্গের ‘ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’।
এ ব্যাপারে অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ জানিয়েছেন, বাঙালির কাছে পদ্মার ইলিশ লোভনীয় খাবার। দুর্গাপুজার সময় যাতে নাগালের মধ্যে পর্যাপ্ত মাছ থাকে, আমরা সেই চেষ্টা করব।
আরও পড়ুন:৩০ বছর ধরে পালিয়ে থাকার পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ইতালির সেই মাফিয়া বস মাত্তিও মেসিনা দেনারো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সেন্ট্রাল ইতালির ল আকিলার সান সালভাতোর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বরাতে সোমবার জানিয়েছে সিএনএন।
দেনারো দেখতে কেমন, সেই তথ্যই ছিল না পুলিশের হাতে। তবে শেষ পর্যন্ত গত জানুয়ারিতে ধরা পড়েন ইতালির মাফিয়া সংগঠন কোসা নস্ট্রার কথিত এই প্রধান।
অসংখ্য খুন, অপহরণ, বোমা হামলার আসামি এই সংগঠিত অপরাধীচক্রের ‘বস’ নাকি একবার গর্ব করে বলেছিলেন, তার হাতে নিহতদের দিয়ে ‘একটা কবরস্থান ভরে ফেলা যাবে।’
ইতালির কর্তৃপক্ষ কীভাবে সর্বোচ্চ স্তরের মাফিয়া সিন্ডিকেটগুলোকে ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে তার এক জীবন্ত প্রতীক ছিলেন এই মাত্তিও মেসিনা দেনারো।
তার অনুপস্থিতিতেই আদালতে বিচার হয়েছিল মেসিনার এবং ২০০২ সালে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু ১৯৯৩ সাল থেকে অনেক চেষ্টা করেও পুলিশ তাকে ধরতে পারছিল না।
সিসিলির একটি প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করার পর এখন বেরিয়ে আসতে থাকে, এতদিন সবার চোখ ফাকি দিয়ে পালিয়ে ছিলেন তিনি।
এই মাফিয়া বসকে যখন পালেরমো শহরের একটি হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন তিনি ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তিনি ভুয়া নাম-পরিচয়ে ওই ক্লিনিকে কেমোথেরাপি নিতে এসেছিলেন।
নিরাপত্তা বাহিনীর ১০০ জনেরও বেশি সশস্ত্র সদস্যের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে এবং একটি গোপন স্থানে নিয়ে যায়।
চীনের ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিপন্ন’ করায় উইঘুর জাতিগোষ্ঠীর এক অধ্যাপককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে বলে খবর পেয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন দুই হুয়া ফাউন্ডেশনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাজার বিরুদ্ধে চলতি মাসে আপিলে হেরে যান ৫৭ বছর বয়সী রাহিলে দাউত।
শিনজিয়াংয়ে উইঘুরসহ বেশির ভাগ মুসলিম থাকা জাতিগোষ্ঠীর ওপর চীন মানবতাবিরোধী অপরাধ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করে, গত কয়েক বছরে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ১০ লাখের বেশি উইঘুরকে আটকে রেখেছে চীন। বন্দিশালাগুলোকে ‘পুনঃশিক্ষা ক্যাম্প’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে দেশটি।
লাখ লাখ উইঘুরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডও দিয়েছে পূর্ব এশিয়ার বৈশ্বিক পরাশক্তিটি।
দুই হুয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জন ক্যাম বলেন, অধ্যাপক রাহিলে দাউতের সাজা নিষ্ঠুর ট্র্যাজেডি। এটি উইঘুর জাতিগোষ্ঠীর জন্য বিশাল ক্ষতি।
এ মানবাধিকারকর্মী রাহিলের দ্রুত মুক্তি ও পরিবারের কাছে তার নিরাপদে ফিরে যাওয়া নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
রাহিলের মেয়ে আকেদা পুলাতি জানান, প্রতিদিনই মাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন তিনি।
আকেদাকে উদ্ধৃত করে দুই হুয়ার বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমার নির্দোষ মা কারাগারে সারা জীবন কাটাবেন, এমন ভাবনা অবর্ণনীয় কষ্টের। ওহে চীন, দয়া দেখাও এবং আমার নির্দোষ মাকে মুক্তি দাও।’
আরও পড়ুন:তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষায় যুক্তরাজ্যে সিগারেট নিষিদ্ধ করার চিন্তা করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের ধূমপান-বিরোধী পদক্ষেপটি বিবেচনা করেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
নিউজিল্যান্ডের ওই আইনে ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পরে জন্মগ্রহণকারী সবার ওপর তামাক বা তামাকজাত সামগ্রী ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে সুনাক বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ধূমপান মুক্ত করা ও দেশে ধূমপায়ীর হার কমানোর লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যেই জনগণকে উত্সাহিত করার চেষ্টা করছি।
‘এ লক্ষ্য পূরণে আমরা যে ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করেছি, তার মধ্যে রয়েছে- বিনামূল্যের ভেপ কিট প্রদান, গর্ভবতী মহিলাদের ধূমপান ছাড়ানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে একটি ভাউচার স্কিম প্রদান ও বাধ্যতামূলক সিগারেটের প্যাকেটে এর কুফল সম্পর্কে তথ্য দেয়া।’
চলতি বছরের মে মাসে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিনামূল্যে ভেপিং ও ই-সিগারেটের স্যাম্পল বিতরণ বন্ধ করে যুক্তরাজ্য সরকার। সেসময় এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানায়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ধূমপানে আসক্তি রোধে দেশটি আইনি ফাঁকফোকর বন্ধের চেষ্টা করছে।
পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় গত জুলাই মাসে একবার ব্যবহার করা যায় ২০২৪ সালের মধ্যে এমন ভেপ বিক্রি নিষিদ্ধ করতে পৃথকভাবে যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানায় ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য