৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাত। গভীর নিদ্রায় তুরস্কের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চল। হঠাৎ কম্পনে ঘুম ভাঙে সবার।
বুঝে ওঠার আগেই ভবনের নিচে চাপা পড়তে থাকেন একের পর এক মানুষ। কেউ তৎক্ষণাৎ, কেউ বা পরে প্রাণ হারান ইট-পাথরের নিচে।
ভাগ্যবানরা উদ্ধার হতে পেরেছেন প্রায় দুই সপ্তাহ পরও। বাকিরা রেখে গেছেন ভাঙা দরজা-জানালা কিংবা আসবাব। কারও কারও ধ্বংসস্তূপে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে খেলার পুতুল।
এমন কিছু পুতুলের সন্ধান পাওয়া গেছে ভূমিকম্পে তুরস্কের অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল আদিয়ামান ও হাতাই প্রদেশে, যেগুলোর ভিডিও ধারণ করেছে আনাদোলু। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাটির ফুটেজে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপের পাশে পড়ে আছে লাল একটি গাড়ি।
আরেক অংশে গোলাপি জামা পরা একটি পুতুলকে দেখা যায়, যেটি চাপা পড়েছে ধ্বংসস্তূপে।
বর্ণিল একটি টেডি বেয়ারকে দেখা গেছে, যেটি ভবন থেকে বের হয়ে আসা রডে জড়িয়ে রয়েছে। এ যেন ভূমিকম্পে আটকে পড়া মানুষের প্রতিচ্ছবি।
ভবনের ধ্বংসস্তূপের ওপর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পুতুল দেখা গেছে। নিথর মানবদেহের মতো এসব পুতুলে আছে শুধু স্মৃতি।
ভূমিকম্পপ্রবণ তুরস্ক ও যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় ভূকম্পনে প্রাণহানি বেড়ে ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এ দুর্যোগে আহত হয়েছে দুই দেশের হাজার হাজার নাগরিক। বরফশীতল পরিবেশে ঘরহারা হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
তুরস্কের ১১টি প্রদেশে ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আদানা, কিলিস ও সানলিউরফায় উদ্ধার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন:Rescue teams continue to find survivors and debris is removed in 11 provinces affected by the 7.7- and 7.6- magnitude earthquakes in Türkiye
— ANADOLU AGENCY (@anadoluagency) February 18, 2023
Children's souvenirs and toys fall among rubble in Adıyaman and Hatay provinces
🔴LIVE updates here: https://t.co/pCgJ7oPKXj pic.twitter.com/1OByRgFOGL
মালয়েশিয়ায় একটি সামরিক মহড়ার সময় মাঝ আকাশে নৌবাহিনীর দুটি উড়োজাহাজের সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলভার সাড়ে ৯টার দিকে মালয়েশিয়ার লুমু শহরে নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, রয়্যাল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনীর কুচকাওয়াজের জন্য একটি সামরিক মহড়া চলাকালীন মাঝ আকাশে নৌবাহিনীর ওই দুই উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়। পরে বিধ্বস্ত হয়ে মাটিতে পড়ে যায় বাহন দুটি। কেউই বেঁচে নেই।
নানা মাধ্যমে এর ফুটেজও প্রকাশিত হয়েছে।
রয়্যাল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনী জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই ১০ জনকে মৃত বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। লুমুত সামরিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে মরদেহ শনাক্তের জন্য। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
যে দুটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে এর মধ্যে একটি হলো এইচওএম এম৫০৩-৩। এতে সাতজন আলোরী ছিলেন। চলমান ট্র্যাকে বিধ্বস্ত হয়েছে এই উড়োজাহাজটি। অন্যটি ফেনেক এম৫০২-৬। এতে ছিলেন তিনজন আরোহী। এটি বিধ্বস্ত হয় কাছাকাছি একটি সুইমিং পুলে।
রাজ্যের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার বিষয়য়ে সতর্ক করা হয়েছিল।
এর আগে গত মার্চ মাসে একটি মালয়েশিয়ান কোস্ট গার্ড উড়োজাহাজ প্রশিক্ষণ ফ্লাইটের সময় মালয়েশিয়ার আংসা দ্বীপের কাছে সাগরে বিধ্বস্ত হয়। ওই দুর্ঘটনার পর পাইলট, কো-পাইলট এবং এতে থাকা দুই যাত্রীকে জেলেরা উদ্ধার করেন।
এক রাতে ৮০ বারেরও বেশি ভূমিকম্পে দফায় দফায় কেঁপে উঠল তাইওয়ান। স্থানীয় সময় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এসব কম্পন অনুভূত হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীব্রতার ভূমিকম্পের উৎপত্তি পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েনে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশিমক ৩।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসনের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে প্রথম যে ভূমিকম্প আঘাত হানে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশিমক ৫। রাজধানী তাইপেতেও এ কম্পন অনুভূত হয়। এরপর দফায় দফায় কম্পন অনুভূত হতে থাকে। বিশেষ করে মঙ্গলবার সকালে আঘাত হানা দুটি ভূমিকম্প ছিল তীব্র।
রিখটার স্কেলে প্রথমটির তীব্রতা ছিল ৬.০ এবং দ্বিতীয়টির ৬.৩।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূল। এতে অন্তত ১৭ জন মারা গেছে। অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তীব্র এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে।
তাইওয়ানে গত ২৫ বছরের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। এর আগে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প তাইওয়ানে আঘাত আনে। তাতে প্রায় ২ হাজার ৪০০ মানুষ মারা যায়।
এদিকে নতুন এ ভূমিকম্পের পর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ঘটনাস্থলে অগ্নিনির্বাপক দলকে পাঠানো হয়েছে।
কেউ হতাহত হয়নি বলে তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বলে তাইওয়ানে ঘন ঘন ভূমিকম্প আঘাত হানে।
আরও পড়ুন:কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর এবার ভারী বৃষ্টিপাতের কবলে পড়েছে আরেক মরুর দেশ সৌদি আরব। রাজধানী রিয়াদের কিছু অঞ্চলসহ দেশটির অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাটও।
সৌদি আরবের আবহাওয়া বিভাগ সতর্কতা জারি করে বলেছে, আগামী কয়েকদিন বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। সতর্কতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর বলছে, শনিবার থেকে রাজধানী রিয়াদসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। ভারী বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানী রিয়াদ ছাড়াও দিরিয়াহ, হুরায়মালা, ধুর্মা থেকে কুয়াইয়াহ পর্যন্ত।
আবহাওয়ার চলমান এ পরিস্থিতি মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এই সময়কালে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে সতর্কতার অংশ হিসেবে সৌদি আরবের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃষ্টির সময় উপত্যকা ও জলাবদ্ধ এলাকা থেকে নাগরিকদের দূরে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। সবশেষ গেল সপ্তাহে অতি বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা যায় দুবাই ও শারজাহতে।
আরও পড়ুন:ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফা শেষ হতে না হতেই প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রথম দফায় ভোটের হার আশানুরূপ না হওয়ায় তিনি সরাসরি ধর্মীয় মেরুকরণের পথে হাঁটছেন বলে মত বিরোধীদের।
বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক জোট ‘ইন্ডিয়া’ভুক্ত দলগুলো বলছে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট টানতে ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিচ্ছেন মোদি।
বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য এখন পর্যন্ত এ অভিযোগের কোনো প্রতিবাদ জানানো হয়নি।
রোববার রাজস্থানের একটি জনসভায় গিয়ে মোদি বলেন, ‘সরকারে থাকাকালীন কংগ্রেস বলেছিল, দেশের সম্পদের ওপর মুসলিমদের অধিকার সবার আগে। অর্থাৎ দেশের সম্পদ বণ্টন করা হবে তাদের মধ্যে, যাদের পরিবারে বেশি সন্তান রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দেয়া হবে দেশের সম্পদ।’
তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের ইশতেহারেই বলা হয়েছে, মা-বোনদের সোনার গহনার হিসাব করে সেই সম্পদ বিতরণ করা হবে। মনমোহন সিংয়ের সরকার তো বলেই দিয়েছে, দেশের সম্পদে অধিকার মুসলিমদেরই। আপনাদের মঙ্গলসূত্রটাও বাদ দেবে না।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় বইছে ভারতজুড়ে।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লিখেছেন, ‘প্রথম দফার ভোট শেষ হতেই হতাশ হয়ে পড়েছেন মোদি। তার মিথ্যাচারের মাত্রা এতটাই নিচে নেমেছে যে এখন মানুষের নজর ঘোরাতে চাইছেন।’
রাহুল লিখেছেন, ‘কংগ্রেসের এবারের ইশতেহার বৈপ্লবিক। এ বিপ্লবের প্রতি বিপুল জনসমর্থন উঠতে শুরু করেছে। এবার মানুষ তার পরিবার, কর্মসংস্থান, ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভোট দেবে। অন্য ভাবনায় বিচ্যুত হবে না ভারতের জনগণ।’
আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘স্বৈরশাসকের আসল চেহারা আবারও উন্মোচিত হয়েছে। এটি জনগণের নেতৃত্ব নির্বাচনের অধিকার কেড়ে নেয়া বাবা সাহেব আম্বেদকারের সংবিধানকে ধ্বংস করার আরেকটি পদক্ষেপ। আমি আবারও বলছি- এটা শুধু সরকার গঠনের নির্বাচন নয়, এটা দেশ বাঁচানোর নির্বাচন, সংবিধান রক্ষার নির্বাচন।’
মোদিকে তোপ দেগেছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও।
তার কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী সরাসরি মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারী বলেছেন। আসলে ২০০২ সাল থেকে মুসলিমদের নির্যাতন করেই ভোট পেয়ে আসছেন মোদি। আমরা যদি দেশের সম্পদের কথা বলি, তাহলে মোদি সরকারের আমলে দেশের সম্পদের ওপর প্রথম অধিকার তার ধনকুবের বন্ধুদের।
‘ভারতের এক শতাংশ মানুষ আজ দেশের সম্পদের ৪০ শতাংশ খেয়ে ফেলছে। সাধারণ হিন্দুদের মুসলমানদের ভয় দেখানো হচ্ছে, অথচ সত্য এই যে, আপনার টাকায় অন্য কেউ ধনী হচ্ছে।’
এদিকে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিতে ২০০৬ সালে মনমোহন সিংয়ের বক্তব্যের একটি ভিডিওর ২২ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ ছড়িয়ে দেয় বিজেপি। এর জবাবে পরে ওই ভাষণের ১ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ প্রচার করে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মনমোহন বলেছিলেন ক্ষমতায়নের কথা, অথচ মোদি বলেছেন মানুষের সম্পদ কেড়ে নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বাঁটোয়ারা করে দেয়ার কথা।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান পদত্যাগ করেছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলা ঠেকানোর ব্যর্থতার দায়ভার মেনে নিয়ে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সোমবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে এএফপি।
সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে ৭ অক্টোবরের ঘটনার দায়ভার মাথায় নিয়ে মেজর জেনারেল আহারন হালিভা তাকে অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ করেছেন।’
তিনি চিফ অফ জেনারেল স্টাফের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সুশৃঙ্খল ও পেশাদার প্রক্রিয়ায় মেজর জেনারেল আহারন হালিভার উত্তরসূরী নিয়োগ দেয়া হলে তিনি পদত্যাগ করবেন এবং আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) থেকে অবসর নেবেন।’
গত বছর হালিভা জানান, তিনি অক্টোবর ৭ এই হামাসের নজিরবিহীন হামলা সম্পর্কে আগে থেকে তথ্য না পাওয়া ও গোয়েন্দা বিভাগের অন্যান্য ব্যর্থতার দায়ভার স্বীকার করে নিয়েছেন।
টাইমস অফ ইসরায়েল জানিয়েছে, বর্তমানে সেনাবাহিনী হালিভার বিরুদ্ধে হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জুনের শুরুতে তদন্তের ফল আইডিএফ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভির কাছে জমা দেয়া হবে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশটি এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে রোববার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।
সংবাদমাধ্যমে এমন খবর দেখে এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞাার কোনো কথা উঠলে আমি আমার শক্তি দিয়েই লড়ব।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, আইডিএফের নেতজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রস্তুতির নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কোনো ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে।
অবশ্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘যদি কেউ মনে করে যে তারা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে, আমি আমার সমস্ত শক্তি দিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করব।’
এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘আইডিএফের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া অবশ্যই উচিত হবে না। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে।’
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক বড় ধরনের হামলা চালায়। এ সময় তারা প্রায় এক হাজার ১৭০ ইসরায়েলিকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে। এখনও তাদের হাতে ১৫০ জিম্মি রয়েছে।
ওই হামলার পর ইসরায়েল গাজায় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে যা এখনও চলছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। ইসরায়েল-হামাসের এ হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ইসরায়েলের পক্ষে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সাত দেশের জোট জি-৭-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
তারা এক যৌথ বিবৃতিতে এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএনবি।
বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, যৌথ বিবৃতিতে তারা মিয়ানমারে অস্ত্র ও জেট ফুয়েলসহ অন্যান্য উপকরণের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সব রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলেছেন। তারা একটি অর্থবহ ও টেকসই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে অবিলম্বে যেকোনো সহিংসতা বন্ধ, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাদের থেকে শুরু করে নির্বিচারে আটক সব বন্দিদের মুক্তি এবং সব অংশীজনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ প্রতিষ্ঠার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি শুক্রবার বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে, যেকোনো ধরনের জোরপূর্বক শ্রম থেকে বিরত থাকতে এবং সব বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও অভাবী মানুষের কাছে দ্রুত, নিরাপদ ও অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার দেয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি।’
মিয়ানমারে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের জন্য জবাবদিহি অপরিহার্য উল্লেখ করে জি-৭ দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৬৬৯ নম্বর প্রস্তাবের (২০২২) ব্যাপক বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেছি। মিয়ানমার বিষয়ক নবনিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূতের নেতৃত্ব এবং দেশটিতে আবাসিক সমন্বয়কারী নিয়োগের মাধ্যমে এ সংকটে জাতিসংঘের আরও সম্পৃক্ততা সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য