ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়েছিল তুর্কি বৃদ্ধ হুসেইন বারবার। সেখানে এই ডায়াবেটিস রোগীকে কাটাতে হয়েছে ১৮৭ ঘণ্টা। জীবন বাঁচাতে খেতে হয়েছে নিজের প্রস্রাব।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটি জানিয়েছেন হুসেইন।
চিকিৎসকরা বলছেন, মানুষ পানি না খেয়ে কিছুদিন বাঁচতে পারে। তবে ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের ভেতরে ৬২ বছর বয়সে আহত অবস্থায় পাঁচদিনের বেশি বেঁচে থাকাটা অলৌকিক।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কের হাতায় প্রদেশের আন্তাকিয়া শহরের ১৫তলা একটি ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন হুসেইন। ভূমিকম্পের পর একটি কেবিনেট ও ফ্রিজের ওপর আটকে যায় তার দেয়াল। সেখানে একটি চেয়ারের ওপর বসে এক সপ্তাহের বেশি সময় ছিলেন তিনি।
এসময় হুসেইনের কাছে ছিল একটি পানির বোতলও, একসময় সেটি শেষ হয়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত নিজের প্রস্রাব খেয়ে বাঁচতে হয় তার।
মঙ্গলবার উদ্ধারের পর হুসেইনকে তার বাড়ি থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মেরসিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হুসেইন বলেন, দ্বিতীয় ভূমিকম্পে আমার সিলিং ভেঙে পড়ে, তবে তাতেও আমার ক্ষতি হয়নি। দেয়ালটি পড়ে ফ্রিজ ও কেবিনেটের ওপর আটকে ছিল। সেখানে একটি কম্বল ছিল, পাশেই ছিল একটি চেয়ার। আমি কোনোরকমে কম্বল জড়িয়ে সেটির ওপরে গিয়ে বসেছিলাম।
ধ্বংসস্তূপের ভেতরে থাকা সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে হুসেইন বলেন, আমি চিৎকার করছিলাম। এতে আমার গলা ব্যথা হয়ে যায়। এক ঘণ্টা পর আমি বোতলের পানি শেষ করে ফেলি। পরে সেটির মধ্যে প্রস্রাব করে খেতে থাকি। যখন ঠান্ডা লাগত তখনই খেতাম। এটা খেয়েই আমার প্রাণ বেঁচেছে।
এ নিয়ে মেরসিন হাসপাতালের চিকিৎসক দেনিজ গেজের বলেন, বেঁচে থাকার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ঠান্ডা। প্রস্রাব কখনোই পানির বিকল্প হতে পারে না কারণ এতে মানব দেহের বর্জ্য থাকে।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারি শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের ভূমিকম্পে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে কমপক্ষে ৩৬ হাজার ১৮৭। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ সিরিয়ায় ভূমিকম্পে প্রাণ হারায় কমপক্ষে ৫ হাজার ৮১৪ জন।
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত দুই দেশে ১১তম দিনেও চলছে উদ্ধার তৎপরতা।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
হোয়াইট হাউসে রোববার দেয়া বক্তব্যে জো বাইডেন বাশারের ক্ষমতাচ্যুতিকে সিরিয়ার রাজনৈতিক উত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশ পুনর্গঠনে সিরীয় নাগরিকদের সামনে ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে। এই কাজে সিরীয় নাগরিকদের সহযোগিতা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।’
সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এটাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন সতর্ক করে বলেন, ওয়াশিংটনকে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর উত্থানের বিরুদ্ধে সব সময় সজাগ থাকতে হবে।
জঙ্গি গ্রুপ ইসলামিক স্টেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী নতুন করে হামলা চালিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাইডেন বলেন, ‘সিরীয় সরকারের পতন ন্যায়বিচারের মৌলিক ফল। সিরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চলা গৃহযুদ্ধের ভোগান্তিতে থাকা জনগণের জন্য এই বিজয় একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’
পালিয়ে মস্কোতে আশ্রয় নেয়া প্রেসিডেন্ট বাশারের পরিণতি কী হওয়া উচিত- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেছেন, ‘বাশার আল আসাদকে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।’
আরও পড়ুন:বর্তমানে বিশ্বে মাত্র দু’জন নেতা আছেন। তাদের একজন আমি নিজে এবং অন্যজন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোয়ান এমনটা মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা ইতার তাস।
এরদোয়ান বলেছেন, ‘আমি এটা বলছি না যে কারণ তাদের মধ্যে আমিও একজন আছি। ২২ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি, পুতিনের প্রায় কাছাকাছি। অন্যরা চলে গেছেন। এবং আমরা চাই আমাদের মধ্যে সংলাপ অব্যাহত থাকবে।
‘রাজনীতিতে সংলাপ অব্যাহত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ধরুন, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের পদত্যাগের পর জার্মানিতে রাজনীতিও শেষ হয়ে গেছে।’
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর গেরহার্ড শ্রোয়েডারকে আমি খুব সম্মান করতাম। আমাদের প্রতিও তার সম্মানবোধ ছিল ভিন্ন রকমের। সত্যিই তিনি ছিলেন খুব ভালো একজন নেতা। ‘যেমন ধরুন- রমজানের সময় তিনি আমাদের ইফতারির টেবিলে বসে কখনও বিয়ার পান করতেন না। তিনি মুসলমানদের প্রতি খুব সম্মান দেখাতেন।’
এরদোয়ান আরও বলেন, ‘শ্রোয়েডারের সঙ্গে আমাদের সংলাপ এখনও চলে এবং তিনি মাঝে মাঝে তুরস্ক সফরে এলে তখনও তার সঙ্গে আমাদের সংলাপ বা আলাপ-আলোচনা হয়।’
আরও পড়ুন:সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে ইসলামপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। আর এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির প্রধানের নাম আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি।
এইচটিএস রোববার এক বিবৃতিতে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের ঘোষণা দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জালিম শাসক বাশার আল-আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন। সিরিয়া এখন মুক্ত। এর মধ্য দিয়ে এক অন্ধকার যুগের সমাপ্তি ঘটল। আর সূচনা হলো এক নতুন যুগের।
বাশার আল-আসাদের দেশ ছেড়ে পালানো, তার টানা দুই যুগের সরকারের পতনের পরিপ্রেক্ষিতে এইচটিএসের প্রধান জোলানিকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘সবচেয়ে কার্যকর’ ভূমিকা পালন করেছে এইচটিএস ও এর প্রধান জোলানি।
এইচটিএস ঘোষিত লক্ষ্যই ছিল বাশার আল-আসাদের স্বৈরাচারী শাসন থেকে সিরিয়াকে মুক্ত করা। এইচটিএস আজ এই লক্ষ্য অর্জনের ঘোষণা দিল।
রোববার বিদ্রোহীরা দামেস্কে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে জোলানি রাজধানীতে সব সামরিক বাহিনীকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের আশপাশে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
জোলানির জন্ম একটি সচ্ছল পরিবারে, ১৯৮২ সালে। তিনি রাজধানী দামেস্কের অভিজাত এলাকা মাজেহে বেড়ে ওঠেন। শিক্ষা জীবনে তিনি বরাবরই মেধার স্বাক্ষর রেখে এসেছেন।
জোলানির প্রকৃত নাম আহমেদ আল-শারা। তিনি ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম পিবিএসকে বলেন যে তার গৃহীত নাম আল-জোলানি, গোলান (জোলান) হাইটসে তার পরিবারের শেকড়ের স্মারক। তিনি জানান, ১৯৬৭ সালে এই অঞ্চলটি ইসরায়েল সংযুক্ত করে নেয়ার পর তার দাদাকে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়।
দামেস্কে থাকাকালে জোলানি ঠিক কী করতেন তা জানা যায়নি। মিডলইস্ট আই নিউজ ওয়েবসাইট জানায়, ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেনের পর জোলানি প্রথম জিহাদি চিন্তাধারার দিকে আকৃষ্ট হন। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসনের পর তিনি যুদ্ধে অংশ নিতে সিরিয়া ত্যাগ করেন।
আবু মুসাব আল-জারকাভির নেতৃত্বে ইরাকে আল-কায়েদায় যোগদান করেন জোলানি। ২০০৬ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হাতে গ্রেপ্তার হন। তাকে পাঁচ বছর আটক রাখা হয়।
গণতন্ত্রের দাবিতে ২০১১ সালে সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে বাশার আল-আসাদ সহিংসতার পথ বেছে নেন। এর জেরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
জোলানি দেশে ফিরে আসেন এবং আল-কায়েদার সিরিয়ার শাখা আল-নুসরা ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সালে তিনি ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর আমির আবু বকর আল-বাগদাদির আনুগত্য অস্বীকার করে আল-কায়েদার আইমান আল-জাওয়াহিরির প্রতি আনুগত্যের শপথ নেন।
এক সময় জোলানির মধ্যে পরিবর্তন আসে। তিনি আল-কায়েদার মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে ‘বিশ্বব্যাপী খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার পথ থেকে সরে আসেন। এমন কিছুর পরিবর্তে সিরিয়া সীমান্তের ভেতরে নিজের গোষ্ঠীর তৎপরতা সীমাবদ্ধ করেন তিনি।
জোলানি ২০১৫ সালের মে মাসে বলেছিলেন যে আইএসের বিপরীতে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর কোনো ইচ্ছা তার নেই। তিনি আরও ঘোষণা করেছিলেন যে আসাদ পরাজিত হলে সংখ্যালঘু আলাভিদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক আক্রমণ হবে না।
জোলানির এই পরিবর্তনকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তারা মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে জোলানির গোষ্ঠীটি বহুজাতিক বা আন্তঃদেশীয় গোষ্ঠীর বদলে একটি জাতীয় গোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হয়।
বাশার আল-আসাদ সরকার ২০১৬ সালের জুলাইয়ে আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ইদলিবের দিকে চলে যায়। সিরিয়ার এ অঞ্চল তখনও বিদ্রোহীদের দখলে। চলতি বছর জোলানি প্রকাশ্যে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি আল-নুসরা বিলুপ্ত করেন। গঠন করেন নতুন সংগঠন জাভাত ফাতেহ আল-শাম।
২০১৭ সালের শুরুর দিকে আলেপ্পো থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা ইদলিবে পালিয়ে আসেন। এ সময়ে বিদ্রোহীদের ছোট ছোট অনেক গোষ্ঠী ও নিজের জাভাত ফাতেহ আল-শাম নিয়ে জোলানি গঠন করেন এইচটিএস।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে জোলানি বলেছিলেন যে তার আক্রমণের উদ্দেশ্য হলো আসাদকে উৎখাত করা।
জোলানি এখন স্পটলাইটে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার, বিবৃতিও দিচ্ছেন। সিরিয়ায় আগামী দিনগুলোতে কী হতে যাচ্ছে বা হতে পারে তার ইঙ্গিত পেতে জোলানি বক্তব্য শোনার জন্য সারাক্ষণ মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে আছেন সিরীয়রা।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন নেতা ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে তার দেশের যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি করার ব্যাপারে আগ্রহী।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে রোববার উভয় নেতার এক বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন। আর এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগেই বিশ্বমঞ্চে আবির্ভূত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
প্যারিস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ইউক্রেনে প্রায় তিন বছর ধরে চলা মস্কোর সামরিক অভিযান এবং জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের প্রাক্কালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ শনিবার এলিসি প্রাসাদে জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের সঙ্গে এক ত্রিমুখী আলোচনার আয়োজন করেন।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘জেলেনস্কি ও ইউক্রেন একটি চুক্তি করতে এবং যুদ্ধ-উন্মাদনা বন্ধ করতে আগ্রহী।
‘এখানে অকারণে অনেক জীবন নষ্ট হচ্ছে। অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। যদি এটি চলতে থাকে, তবে আরও বড় এবং আরও খারাপ কিছুতে পরিণত হতে পারে। সুতরাং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি হওয়া এবং আলোচনা শুরু করা উচিত।’
নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ের পর জেলেনস্কির সঙ্গে এটি ছিল তার প্রথম মুখোমুখি বৈঠক।
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বলেছেন, সামরিক আইন জারি ও সেনাবাহিনী দিয়ে পার্লামেন্ট ভবন অবরুদ্ধ করে রাখার জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও অনুতপ্ত।
এ কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
জাতির উদ্দেশে শনিবার দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউন আরও বলেন, দ্বিতীয়বার তিনি আর কখনও সামরিক আইন জারি করবেন না।
তিনি বলেন, ‘চারদিকে গুজব চলছে, সামরিক আইন আবার জারি করা হবে। আমি অপনাদের পরিষ্কার ভাষায় বলছি, সামরিক শাসন জারির মতো আর কখনও কিছু ঘটবে না।’
স্কাই নিউজ ও এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে আকস্মিক এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল সামরিক আইন জারি করেন।
সামরিক শাসন জারির পর ইউন প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েন। তার বিরুদ্ধে দলগুলো অভিশংসনের দাবি তোলে।
পরে প্রধান বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরাসহ সাধারণ মানুষ পার্লামেন্ট ভবনের মূল প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে স্পিকারের নেতৃত্বে দ্রুত পার্লামেন্টে ভোটাভুটির ব্যবস্থা করে সামরিক আইন রহিত করা হয়। এরপর মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে তা অনুমোদন দিলে সামরিক আইন বাতিল হয়ে যায়।
পার্লামেন্টের ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন সংসদ সদস্য সামরিক আইনের বিরুদ্ধে ভোট দেন।
ইউন তার সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘আমি খুবই দুঃখিত এবং সামরিক আইন জারির ঘটনায় আন্তরিকভাবে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের কিছু অংশে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর ফলে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (এনডব্লিউএস)।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার হামবোল্ট কাউন্টির ফার্নডেল শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
প্রাথমিকভাবে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে জানালেও পরে এটিকে ৭.০ মাত্রায় উন্নীত করে ইউএসজিএস। সমূদ্রপৃষ্ঠের ৬০০ মিটার গভীরে কম্পনের উৎসস্থল চিহ্নিত করা হয়।
ভূমিকম্প আঘাত হানার কয়েক মিনিট পর এনডব্লিউএসের সুনামি সতর্কতার আওতায় পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার অন্তত ৫৩ লাখ মানুষ। এরপর ওই এলাকা ও সানফ্রান্সিসকো উপকূল থেকে স্থানীয়দের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ডেল নর্টে, হামবোল্ট ও মেন্ডোসিনো কাউন্টিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম।
উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্বল্প মাত্রার আফটারশক হয়েছে।
হামবোল্ট কাউন্টির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:রাশিয়া যে কোনো উপায়ে নিজ দেশকে রক্ষা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন সের্গেই ল্যাভরভ। একইসঙ্গে তিনি ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদেরকে ‘ওরেসনিক’ হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ভাবতে বলেছেন।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের উদ্ধৃতি দিয়ে ল্যাভরভ বলেন, সম্প্রতি ইউক্রেনে আঘাত হানা হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে দশগুণ বেশি গতিতে ধাবিত হয়।
ফক্স নিউজের সাবেক সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বুঝতে হবে যে ইউক্রেন যুদ্ধে তাদেরকে জিততে না দিতে রাশিয়া সব উপায় অবলম্বন করবে।
তিন বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া দু’সপ্তাহ আগে দিনিপ্রতে ওরেসনিক হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করে। ইউক্রেনের জন্য আমেরিকার এটিএসিএমএস অস্ত্র পদ্ধতি কার্যকর হওয়ার পর মস্কো এমন পদক্ষেপ নেয়।
সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে রাশিয়া ও তার মিত্রদের ভয় দেখাতে চাচ্ছে আমেরিকা।
ইউক্রেনে সংঘাত বৃদ্ধিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে দায়ী করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে ল্যাভরভ বলেন, ‘ট্রাম্প দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে বদ্ধপরিকর। যদিও কোন প্রক্রিয়ায় তা শেষ হবে সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প হচ্ছেন এমন মানুষ যিনি ফলাফল দেখতে চান।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য