যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের মেমফিসে ২৯ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ যুবক টায়ার নিকোলসকে মারধরের ভিডিও প্রকাশ করেছে শহর কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ৭ জানুয়ারি মেমফিসের অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা মোটরসাইকেল আরোহী যুবককে লাথি, ঘুষি মারার পাশাপাশি লাঠিপেটা করছিলেন। ওই সময় ‘মা, মা’ বলে কাঁদছিলেন এক সন্তানের জনক নিকোলস।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পুলিশের পোশাক ও খুঁটিতে থাকা ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজটি গতকাল প্রকাশ করা হয়, যার আগেই পুলিশের পাঁচ কর্মকর্তার (যাদের সবাই কৃষ্ণাঙ্গ) বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত হত্যা, হেনস্তা, অপহরণ, আচরণবিধি লঙ্ঘন ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
নিকোলসকে থামানো নিয়ে শুরুতে পুলিশ বলেছিল, বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাচ্ছিলেন যুবক, তবে মেমফিস পুলিশের প্রধান বলেছেন, থামানোর পক্ষে যথাযথ যুক্তি দেখাতে পারেননি কর্মকর্তারা।
ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের ওপর ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে, এমন অবস্থান থেকে অনেক দূরে থাকার পরও নিকোলসকে দৃশ্যত মারধর করা হয়েছে। মারধরের একপর্যায়ে দুই কর্মকর্তা নিকোলসকে ধরে রাখেন। অন্যজন তার মুখে ক্রমাগত ঘুষি মারতে থাকেন। বাকি পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের না থামিয়ে নীরবে দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির পরাজয়ের জন্য জো বাইডেনকে দায়ী করেছেন দেশটির প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
তিনি বলেছেন, বাইডেন নির্বাচন থেকে আগেই সরে দাঁড়ালে ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করতে পারত।
নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পেলোসি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন নির্বাচন থেকে আগে সরে দাঁড়ালে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আরও প্রার্থী থাকতে পারত।’
নিউ ইয়র্ক টাইমসের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্ক টাইমসে পেলোসির সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ হয়।
এর আগে শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হতে কয়েক মাস ধরে নির্বাচনি প্রচার ও বিতর্ক চলে। বাইডেন পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার পর ডেমোক্রেটিক পার্টি আর কোনো প্রার্থী বাছাই করেনি।
নির্বাচনের চার মাস আগে ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর বাইডেন সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
ওই সময় ডেমোক্রেটিক পার্টি তড়িঘড়ি করে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে প্রার্থী মনোনীত করে।
পেলোসি নির্বাচনি প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তড়িঘড়ি করে কমলা হ্যারসিকে প্রার্থী হিসেবে অনুমোদন দেয়ায় বাইডেনের সমালোচনা করেন।
কমলা হ্যারিসের প্রশংসা করেন পেলোসি বলেন, ‘তিনি মানুষের মধ্যে আশা জাগিয়েছেন।’
প্রার্থী বাছাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে কমলা জিততেন বলে মনে করেন পেলোসি।
তিনি বলেন, ‘হয়তো কমলা আরও বেশি শক্তিশালী হতেন। জনগণের কাছে যেতে পারতেন।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ হিসেবে সুসি ওয়াইলসকে নিয়োগ দিয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এটিই হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের দেয়া প্রথম নিয়োগ।
এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও টাইমস অফ ইসরায়েল।
হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ সাধারণত প্রতিটি প্রেসিডেন্টের প্রশাসনিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ওয়াইলস ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচার দলের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন এবং মঙ্গলবার নির্বাচনের দিন অনুষ্ঠিত রাতের এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প সুসির প্রশংসা করেন।
ট্রাম্পের প্রচার দলের তথ্য অনুযায়ী, ওয়াইলস হবেন প্রথম নারী যিনি এ দায়িত্ব পালন করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বাইডেন বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে তার সরকার বদ্ধপরিকর।
ডনাল্ড ট্রাম্পের ঐতিহাসিক বিজয়ের দুই দিন পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘শুধু বিজয়ী হয়েই দেশকে ভালবাসা যায়, তা নয়, পরাজিত হয়েও দেশকে ভালোবাসতে হবে। আর আমেরিকানরা তা পারে।’
বাইডেনের কাছে ২০২০ সালে হেরে আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি ডনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলা চালিয়েছিল রিপাবলিকান সমর্থকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন ওই হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বাইডেন বলেন, ট্রাম্পের কাছে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত তার সরকার।
ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থকদের দেশ গঠনে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট।
প্রায় এক দশকের মধ্যে ব্রাজিলের আমাজনে বার্ষিক বন উজাড় সর্বনিম্ন পরিমাণে হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দা সিলভা সরকার স্থানীয় সময় বুধবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ব্রাসিলিয়া থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চের (আইএনপিই) প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এক বছর সময়কালে বন উজাড় ৩০.৬ শতাংশ কমেছে।
আইএনপিই পরিচালক গিলভান অলিভেরা জানান, ওই সময়ে ৬ হাজার ২৮৮ বর্গকিলোমিটার বন ধ্বংস করা হয়, যা গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় ৪০ শতাংশ জুড়ে থাকা আমাজন রেইনফরেস্ট গত শতাব্দীতে কৃষি ও গবাদি পশুপালন, জ্বালানি কাঠ এবং খনির বিস্তার এবং শহুরে বিস্তৃতির কারণে প্রায় ২০ শতাংশ এলাকা হারিয়েছে।
লুলা ২০৩০ সালের মধ্যে আমাজনের অবৈধ বন উজাড় বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে তিনি কিছু কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর বাধার মুখে পড়েছেন।
আইএনপিইর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমাজন ছাড়াও মধ্য ব্রাজিলে বিশ্বের সবচেয়ে প্রজাতি-সমৃদ্ধ সাভানার সেরাডোর ২৫.৭ শতাংশ বা ৮ হাজার ১৭৪ বর্গকিলোমিটার হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব পড়বে, এমনটা মনে করেন না নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
আমেরিকান সেন্টারে বুধবার আয়োজিত ‘ইউএস ইলেকশন পার্টি’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
বদিউল বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অব্যাহতভাবে প্রায় আড়াই শ বছরের বেশি সময় ধরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকারিতা প্রদর্শন করেছে। আমরা একটা অপেক্ষাকৃত নতুন রাষ্ট্র, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। তাদের পদ্ধতি ও আমাদের পদ্ধতি ভিন্ন। আমাদের পার্লামেন্টারি সিস্টেম দুর্ভাগ্যবশত স্থিতিশীল হয়নি।
‘অনেক টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা গেছি। অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বর্তমানে শঙ্কার মধ্যে আছে। তারাও সংকটের মধ্যে আছে, ভয়াবহ সংকটের মধ্যে আছে। তাদের মধ্যে যে বিভাজন সেটা ভয়ানক। এবার কী হবে সেটা নিয়ে অনেকে শঙ্কিত। কমলা যদি স্বল্প ব্যবধানে জিতে তাহলে সংকট হতে পারে, শুধু সংকট না সহিংসতাও হতে পারে। এটা অনেকে আশঙ্কা করছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যদিও ট্রাম্প একটা টুইট করেছেন এবং এটি তার ভোটের বিবেচনায় ভারতীয়দের ভোট পাওয়ার জন্য করেছেন। আমি নিশ্চিত ট্রাম্প বাংলাদেশ কোথায় সেটাও জানে না। আমার মনে হয় না এটার কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে।’
আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেকে জয়ী ঘোষণা করেছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প।
দেশটির ফ্লোরিডায় একটি নির্বাচনি প্রচারের ওয়াচ পার্টিতে হাজির হয়ে ট্রাম্প নিজেই তার বিজয় ঘোষণা করেন।
ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মঞ্চে তার রানিং মেট জেডি ভ্যান্স, স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প ও তার প্রচার দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ভাষণে ট্রাম্প বলেন, তিনি একটি ‘অসাধারণ বিজয়’ পেয়েছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, এটি হবে আমেরিকার ‘স্বর্ণযুগ’।
তিনি বলেন, ‘এটি আমেরিকার মানুষের জন্য একটি অসাধারণ বিজয়, যা আমাদের আবার আমেরিকাকে মহান করতে সাহায্য করবে।’
সর্বশেষ পাওয়া ফল অনুযায়ী, ট্রাম্প ২৪৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পান। নির্বাচনে জয়ের জন্য তার প্রয়োজন ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।
যুক্তরাষ্ট্রের দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, উইসকনসিন, নেভাডা ও অ্যারিজোনায় ভোট গণনা চলছে। এ পাঁচ অঙ্গরাজ্যের সবগুলোতেই ৫০ শতাংশ বা তার বেশি ভোট গণনার পর ট্রাম্প এগিয়ে ছিলেন।
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের জয়ের সম্ভাবনা প্রতি ঘণ্টায় ক্ষীণ হচ্ছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল সংবাদমাধ্যম হিসেবে পরিচিত ফক্স নিউজের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প।
এর মধ্য দিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করে চার বছর পর ফের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসবেন রিপাবলিকান পার্টির এ নেতা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, অন্য সংবাদমাধ্যমগুলো এখনও নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি।
এদিকে ফক্স নিউজ ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণার পর ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ওয়েস্ট পাম বিচ এলাকার কনভেনশন সেন্টারে উল্লসিত ট্রাম্প সমর্থকরা ‘ইউএসএ! ইউএসএ! ইউএসএ!’ স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত অঙ্গরাজ্য নর্থ ক্যারোলিনা ও জর্জিয়ায় কমলা হ্যারিসকে ডনাল্ড ট্রাম্প হারিয়েছেন বলে এডিসন রিসার্চের পূর্বাভাসে উঠে এসেছে।
ট্রাম্পের এ জয়ের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে জয়ের সম্ভাবনা সংকুচিত হয়ে গেছে কমলার।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দেশজুড়ে শক্তিমত্তা দেখাচ্ছেন ট্রাম্প। সর্বশেষ পাওয়া ফল অনুযায়ী, ট্রাম্প ২৪৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন। বিপরীতে কমলা পেয়েছেন ১৮২টি ইলেকটোরাল কলেজের সমর্থন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে হলে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজে ভোট পেতে হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য