× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Canada appointed adviser to combat Islamophobia
google_news print-icon

ইসলামবিদ্বেষ কাটাতে উপদেষ্টা নিয়োগ করল কানাডা

ইসলামবিদ্বেষ-কাটাতে-উপদেষ্টা-নিয়োগ-করল-কানাডা
কানাডার সাংবাদিক আমিরা এলঘাওয়াবি। ছবি: এএফপি
মানবাধিকার কর্মী এলঘাওয়াবি কানাডার দাতব্য সংস্থ রেস রিলেশনস ফাউন্ডেশনের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান ও টরন্টো স্টার পত্রিকার একজন কলামিস্ট। এর আগে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিবিসিতে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন তিনি।

ইসলামবিদ্বেষ কাটাতে প্রথমবারের মতো উপদেষ্টা নিয়োগ করলো কানাডা সরকার।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার কানাডার ইসলামবিদ্বেষবিরোধী উপদেষ্টা হিসেবে সাংবাদিক আমিরা এলঘাওয়াবির নাম ঘোষণা করা হয়।

এ নিয়ে বিবৃতিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়, সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট আমিরা এলঘাবাবি ইসলামভীতি, বর্ণবাদ, জাতিগত বৈষম্য এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টাকে উন্নত করতে কাজ করবেন।

মানবাধিকার কর্মী এলঘাওয়াবি কানাডার দাতব্য সংস্থ রেস রিলেশনস ফাউন্ডেশনের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান ও টরন্টো স্টার পত্রিকার একজন কলামিস্ট। এর আগে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিবিসিতে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন তিনি।

এলঘাওয়াবিকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘ইসলামবিদ্বেষ ও সব ধরনের ঘৃণা-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বৈচিত্রতা সত্যিই কানাডার অন্যতম বড় শক্তি, কিন্তু অনেক মুসলমান ইসলামবিদ্বেষের শিকার।’

গত কয়েক বছর ধরে কানাডার মুসলমান সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে একের পর এক ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে।

২০২১ সালের জুনে অন্টারিওতে একটি মুসলিম পরিবারের চার সদস্যকে ট্রাক দিয়ে পিষে হত্যা করেন এক ব্যক্তি। এর চার বছর আগে, কুইবেক সিটির একটি মসজিদে চালানো হামলায় ছয়জন মুসল্লি নিহত এবং পাঁচজন আহত হন।

আরও পড়ুন:
কানাডীয় দূতের সঙ্গে বৈঠক, কিছু জানাবে না বিএনপি
২০২৫ সালে রেকর্ড অভিবাসী নেবে কানাডা
কানাডায় ছুরি হামলার দ্বিতীয় সন্দেহভাজনের মৃত্যু
কানাডায় সন্দেহভাজন হামলাকারীর মরদেহ উদ্ধার
কানাডায় সিরিজ ছুরি হামলায় নিহত ১০

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Asia will lead the world to economic recovery

বিশ্বকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে নেবে এশিয়া

বিশ্বকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে নেবে এশিয়া চীনের হাইনান প্রদেশে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া-২০২৩ এর বার্ষিক সম্মেলন। ছবি: নিউজবাংলা
চীনের হাইনান প্রদেশে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া-২০২৩ এর বার্ষিক সম্মেলন। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর এশিয়ার প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ, যা বছরের চেয়ে দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। এ বছর অঞ্চলটি বিশ্বকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দিকে নিয়ে যাবে।

বিশ্ব অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকা শক্তি এশিয়া অঞ্চল। ২০২৩ সালে এশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। আগের বছর ২০২২ সালে যা ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। সে সুবাদে এই অঞ্চলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ত্বরান্বিত হবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার বাস্তবতায় এটি একটি আশার খবর।

বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া থেকে প্রকাশিত ‘এশিয়ান ইকোনমিক আউটলুক অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন প্রগ্রেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য, ‘একটি অনিশ্চিত বিশ্ব: চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে উন্নয়নের জন্য সংহতি ও সহযোগিতা’।

চীনের হাইনান প্রদেশে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া-২০২৩ এর বার্ষিক সম্মেলন। ছিয়ংহাই সিটির বোয়াও শহরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত তা চলবে। বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ব্যক্তি, ব্যবসায়ী নেতাসহ প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি অংশ নিচ্ছেন এই সম্মেলনে।

বিশ্বকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে নেবে এশিয়া
হাইনান প্রদেশে মঙ্গলবার শুরু হওয়া সম্মেলন চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। ছবি: নিউজবাংলা

ফোরামে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক ঐকমত্যকে সুসংহত করার লক্ষ্যে উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিকরণ, দক্ষতা ও নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি বর্তমান ও ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা হয়।

মূল প্রতিবেদনে আশা করা হয়েছে, ‘এ বছর অঞ্চলটি বিশ্বকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দিকে নিয়ে যাবে। বৈশ্বিক চাহিদা দুর্বল হওয়া এবং অনিশ্চয়তার চাপ সত্ত্বেও এশীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে। যদিও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় এশিয়ান রপ্তানিকারকদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু চীনের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক পরিবর্তন এশিয়ার বাকি অংশ এবং বিশ্বের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত পাঠাচ্ছে।’

বোয়াও ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল লি বাওডং বলেছেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চয়তা থেকে উত্তরণে এশিয়া মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। বিশ্বব্যাপী মন্দার মধ্যে এশিয়া সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিকে ত্বরান্বিত করবে। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক উৎপাদন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আর্থিক একীকরণ এবং সংহতির অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে।’

প্যানেল আলোচনায় বলা হয়, আগামী দিনের অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও চীনের দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে এশিয়ার অর্থনীতি এ বছর শক্তিশালী অবস্থানে যাবে।

বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া একটি বেসরকারি অলাভজনক আন্তর্জাতিক সংস্থা। এশিয়ার ২৮টি দেশ নিয়ে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি এশিয়ায় আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রচার এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছে।

চীন তার পুরো হাইনান দ্বীপকে বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী এবং উচ্চ স্তরের ফ্রি ট্রেড পোর্ট বা এফটিপিতে পরিণত করার লক্ষ্যে ২০২০ সালে একটি মাস্টার প্ল্যান প্রকাশ করে। তারপর থেকে হাইনান এফটিপি-র উন্নয়নে সহায়তার জন্য শূন্য শুল্ক এবং সহজ বাজার ও বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করাসহ নীতি সহজীকরণ করেছে।

বলা হয়, হাইনানে ২০২৩ সালের মধ্যে স্বতন্ত্র কাস্টমস ব্যবস্থা চালুর জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চীন। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ দ্বীপ জুড়ে নিজস্ব কাস্টমস কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বোয়াও ফোরাম এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সংলাপ ও ঐকমত্য তৈরি করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে পরিণত হয়েছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
8 Bangladeshis among those who died in the bus overturn in Saudi

সৌদিতে বাস উল্টে নিহতদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি

সৌদিতে বাস উল্টে নিহতদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি সৌদি আরবের আসির অঞ্চলে ৪৭ জন যাত্রী নিয়ে দুর্ঘটনায় পড়া বাসটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ছবি: সংগৃহীত
স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে মক্কায় যাওয়ার পথে সৌদি আরবের আসির অঞ্চলের আবহা জেলায় ৪৭ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে। ওইসব যাত্রীর মধ্যে ৩৫ জন বাংলাদেশি রয়েছেন। মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২জন।

সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে বাস উল্টে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে পবিত্র নগরী মক্কায় যাওয়ার পথে সৌদি আরবের আসির অঞ্চলের আবহা জেলায় ৪৭ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে। ওইসব যাত্রীর মধ্যে ৩৫ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।

জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলটি জেদ্দা থেকে আনুমানিক ৬০০ কিলোমিটার দূরে। সবশেষ পাওয়া খবরে এই দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৮ বাংলাদেশি রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮ জন বাংলাদেশিকে শনাক্ত করেছেন।

দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দূতাবাস কর্মকর্তারা সার্বিক বিষয় তদারকি করছেন।

এর আগে আরব নিউজ জানায়, সৌদি আরবে বাস উল্টে আগুন ধরে যাওয়ায় অন্তত ২০ ওমরাহ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৯জন।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আল-খাবারিয়া জানায়, আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে একটি সেতুর ওপর বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়। বাসের যাত্রীরা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা নগরীতে যাচ্ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেক কাজ না করায় সেতুর এক পাশে গিয়ে ধাক্কা খায় বাসটি। এতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।

সৌদি প্রেসের তথ্যানুযায়ী, ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আকাবা শারের সড়কটি প্রায় ৪০ বছর আগে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Netanyahus government is under intense pressure in Israel

ইসরায়েলে তীব্র চাপের মুখে নেতানিয়াহুর সরকার

ইসরায়েলে তীব্র চাপের মুখে নেতানিয়াহুর সরকার
দেশটিতে প্রায় সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন, সারা দেশ জুড়ে ডাকা ধর্মঘটের কারণে বিমান ও সমুদ্র বন্দর অচল হয়ে পড়েছে, ব্যাংক ও দোকানপাটও বন্ধ। ডাক্তার ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ধর্মঘটে যোগ দিচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু চাপের মুখে পড়েছেন। বিচারবিভাগে সংস্কারের এক বিতর্কিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে গিয়ে এই চাপে পড়েছেন তিনি।

নেতানিয়াহু এবং তার ডানপন্থি সরকার এ চাপ সামাল দিতে পারবে কি না- সে প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে প্রতিবেদেন জানিয়েছে বিবিসি।

দেশটিতে প্রায় সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন, সারা দেশ জুড়ে ডাকা ধর্মঘটের কারণে বিমান ও সমুদ্র বন্দর অচল হয়ে পড়েছে, ব্যাংক ও দোকানপাটও বন্ধ। ডাক্তার ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ধর্মঘটে যোগ দিচ্ছে।

এর আগে সংস্কারের উদ্যোগ বন্ধ করার ডাক দিয়ে বরখাস্ত হনসরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনীও এর বিরোধিতা করছে, এমনকি ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এই পরিকল্পনা পরিত্যাগ করার জন্য।

এই বিরোধিতাকারীরা বলছেন, বিচার বিভাগে যেসব পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে- তা ইসরায়েলের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেবে।

সূত্র বলছে, তীব্র বিক্ষোভের মুখে নেতানিয়াহু শিগগিরই এ পরিকল্পনা কয়েক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করার করার কথা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। তবে এ খবর নিশ্চিত করা যায়নি।

সোমবার সকালের দিকে, এক টুইটারে এক বার্তা পোস্ট করে নেতানিয়াহু সব পক্ষের প্রতিবাদকারীদের দায়িত্বশীল আচরণ করা এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকার ডাক দিয়েছেন।

এমন এক সময় তার এই আহ্বানের কথা জানা গেল যখন ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাতে বলেছে, খুব শিগগিরই তারা উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পাবার আশঙ্কা আছে, কারণ উগ্র দক্ষিণপন্থি কর্মীরাও সোমবার কেনেসেটে বিক্ষোভ করবে বলে ঘোষণা করেছে।

নেতানিয়াহুর বিতর্কিত পরিকল্পনায় সরকারকে বিচারক নিয়োগকারী কমিটির উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে।এ ছাড়া আইনপ্রণেতাদের কেউ দায়িত্ব পালনের জন্য অযোগ্য হলে, তাকে অপসারণ করাটা আদালতের জন্য আগের চাইতে কঠিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছে। তারা মনে করেন, এ বিধানটি ক্ষমতাসীন নেতা নেতানিয়াহুর স্বার্থ বিবেচনা করে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরখাস্ত: ইসরায়েলে বিক্ষোভ তুঙ্গে
আল-আকসায় রমজানের প্রথম জুমায় হাজার হাজার মুসল্লি
জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Defense minister sacked Protests rage in Israel

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরখাস্ত: ইসরায়েলে বিক্ষোভ তুঙ্গে

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরখাস্ত: ইসরায়েলে বিক্ষোভ তুঙ্গে ইসরায়েলের তেল আবিবে রোববার রাতে বিক্ষোভ করেন হাজারো মানুষ। ছবি: এপি
ইসরায়েলের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র তেল আবিবে স্থানীয় সময় রোববার গভীর রাতে গায়ে নীল, সাদা রঙের পতাকা জড়ানো বিক্ষোভকারীরা প্রধান একটি মহাসড়ক অবরোধ করেন। তারা সেখানে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানান।

বিচারিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার বিরোধিতা করায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, যার প্রতিবাদে সড়কে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার ইসরায়েলি।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র তেল আবিবে স্থানীয় সময় রোববার গভীর রাতে গায়ে নীল, সাদা রঙের পতাকা জড়ানো বিক্ষোভকারীরা প্রধান একটি মহাসড়ক অবরোধ করেন। তারা সেখানে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানান।

অন্যদিকে জেরুজালেমে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের।

বিচারিক ব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে নেতানিয়াহু যে পরিকল্পনা করেছেন, তা নিয়ে দেশটিতে কয়েক মাস ধরে সংকট চলছে। এ পরিকল্পনার প্রতিবাদে প্রতিনিয়ত বিক্ষোভ হচ্ছে দেশটিতে।

ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, সাবেক একাধিক নিরাপত্তাপ্রধান নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা নিয়ে শঙ্কিত। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছে উদ্বেগ।

এতকিছুর পরও পরিকল্পনা থেকে সরে আসার কোনো ইঙ্গিত দেননি নেতানিয়াহু। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়েভ গ্যালান্তকে বরখাস্ত করার মধ্য দিয়ে নেতানিয়াহু ও তার মিত্ররা বিচার ব্যবস্থায় বদল আনার পরিকল্পনাটি চলতি সপ্তাহেই বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:
আল-আকসায় রমজানের প্রথম জুমায় হাজার হাজার মুসল্লি
জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত
রকেট ছোড়ার জবাবে গাজায় বিমান হামলা ইসরায়েলের
নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যা ইসরায়েলি বাহিনীর
জেরুজালেমে সিনাগগের কাছে বন্দুক হামলায় নিহত ৭

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Thousands of Muslims on the first Friday of Ramadan at Al Aqsa

আল-আকসায় রমজানের প্রথম জুমায় হাজার হাজার মুসল্লি

আল-আকসায় রমজানের প্রথম জুমায় হাজার হাজার মুসল্লি আল-আকসা মসজিদে রমজানের প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার মুসল্লি। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, জুমায় ৮০ হাজার মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। তবে জর্ডানীয় ওয়াকফ ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল জানায়, এক লাখ মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেছেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র মসজিদটিতে।

জেরুজালেমে মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদে রমজানের প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার মুসল্লি।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই অঞ্চলে ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার রমজান মাসের প্রথম জুমা আদায় করেন মুসল্লিরা।

মসজিদ প্রাঙ্গণের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছে জর্ডানীয় ওয়াকফ ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল।

কাউন্সিলের প্রধান আজম আল খতিব বলেন, শুক্রবার আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ হয় এবং পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, জুমায় ৮০ হাজার মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। তবে জর্ডানীয় ওয়াকফ ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল জানায়, এক লাখ মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেছেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র মসজিদটিতে।

ইসরায়েলি পুলিশ জানায়, রমজানের প্রথম জুমার কথা বিবেচনায় এদিন শহরজুড়ে ২৩০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

পশ্চিম তীরের নাবলুস শহর থেকে আল-আকসায় নামাজ পড়তে আসেন ৬২ বছরের আবুদ হাসান। তিনি বলেন, মুসলিমদের জন্য বছরের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস রমজান। তাই আল-আকসায় নামাজ আদায় করতে এসেছি।

শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করতে পেরে তিনি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রমজানে সহিংসতা হ্রাসে চলতি মাসে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল মিসরে বৈঠকে সম্মত হয়েছে। তবে পশ্চিমতীরে গত বৃহস্পতিবার রমজানের শুরুতেই ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এক ফিলিস্তিনি যুবক নিহত হন। গত জানুয়ারি থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সহিংসতায় ৮৭ ফিলিস্তিনি নিহত হন।

আরও পড়ুন:
জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত
রকেট ছোড়ার জবাবে গাজায় বিমান হামলা ইসরায়েলের
নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যা ইসরায়েলি বাহিনীর
জেরুজালেমে সিনাগগের কাছে বন্দুক হামলায় নিহত ৭
ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত, তীব্র প্রতিবাদ ঢাকার

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
936 crore looted in Poltrikha in 52 days

‘পোল্ট্রি খাতে ৫২ দিনে ৯৩৬ কোটি টাকা লুট’

‘পোল্ট্রি খাতে ৫২ দিনে ৯৩৬ কোটি টাকা লুট’ পোল্ট্রিখাতে হরিলুটের অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন। ছবি: নিউজবাংলা
‘ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক দামের কারণ প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতি পোষাতে না পেরে খামার বন্ধ করে উৎপাদন থেকে ছিটকে পড়েছেন। এ সুযোগে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পোলট্রির ফিড বা খাবার ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রান্তিক খামারি উৎপাদনে গেলে তখন বাজারে দাম কমিয়ে দিয়ে ক্ষতিতে ফেলছে।’

দেশের পোল্ট্রি খাতে হরিলুটের অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সংগঠনটির দাবি, এই খাতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো গত ৫২ দিনে মুরগি ও বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৯৩৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

বিপিএর সভাপতি সুমন হাওলাদারের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশে প্রতিদিন ব্রয়লার মুরগির চাহিদা ৩ হাজার ৫০০ টন। প্রান্তিক খামারিদের ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ এখন কেজিপ্রতি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। আর করপোরেট প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যয় ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। তবে পাইকারি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২৩০ টাকা পর্যন্ত এসব মুরগি বিক্রি হয়েছে। তাতে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কেজিপ্রতি অন্তত ৬০ টাকা বেশি মুনাফা করেছে।’

বিপিএর বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘করপোরেট প্রতিষ্ঠানের (তাদের চুক্তিভিত্তিক ফার্মসহ) মাধ্যমে প্রতিদিন দুই হাজার টন মুরগি বাজারে আসে। সেই হিসাবে প্রতিদিন তাদের অতিরিক্ত মুনাফা হয় ১২ কোটি টাকা। এভাবে গত ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ৫২ দিনে ৬২৪ কোটি টাকা মুরগি বিক্রির মাধ্যমে লাভ করেছে কোম্পানিগুলো। আর এক দিনের মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে তাদের মুনাফা ৩১২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মুরগি ও বাচ্চার দাম বাড়িয়ে ৯৩৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।’

সংগঠনটির দাবি, ‘দেশে প্রতিদিন মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয় ২০ লাখ। এসব বাচ্চা কোম্পানিগুলো উৎপাদন করে। একেকটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদনে খরচ হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকা, যা চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ছিল ১০ থেকে ১৫ টাকা। প্রতিটি এখন ৬২ থেকে ৬৮ টাকায় দেয়ার কথা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। প্রতিটি বাচ্চায় ৩০ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছে কোম্পানিগুলো।’

বিপিএ বলেছে, ‘ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক দামের কারণ প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতি পোষাতে না পেরে খামার বন্ধ করে উৎপাদন থেকে ছিটকে পড়েছেন। এ সুযোগে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো পোলট্রির ফিড বা খাবার ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রান্তিক খামারি উৎপাদনে গেলে তখন বাজারে দাম কমিয়ে দিয়ে ক্ষতিতে ফেলছে।’

সংগঠনটি আরও বলেছে, ‘পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চা শতভাগ উৎপাদন করে করপোরেট প্রতিষ্ঠান। তারাই আবার আংশিক ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে। চুক্তিভিত্তিক খামারও রয়েছে তাদের। এতে করে বাজার তাদের দখলে চলে যাচ্ছে। এটা বন্ধ করা না গেলে এই খাতের অস্থিরতা কমানো সম্ভব নয়।’

আরও পড়ুন:
ব্রয়লারের দামে রেকর্ডের কারণ কী
ব্রয়লার মুরগির মাংস ঝুঁকিপূর্ণ নয়: কৃষিমন্ত্রী
ব্রয়লার মুরগি খাওয়ার ক্ষতিকারক দিক
ব্রয়লারের দামে ধস, হতাশ খামারিরা
ব্রয়লার নিয়ে কৃষিমন্ত্রীর দুঃখ

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
20 years after the removal of Saddam how are the Iraqis?

সাদ্দামকে সরানোর ২০ বছর পর কেমন আছেন ইরাকিরা?

সাদ্দামকে সরানোর ২০ বছর পর কেমন আছেন ইরাকিরা? ইরাকের এক সময়ের প্রতাপশালী প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
আজকের ইরাক একটি জোট সরকার দিয়ে চলছে। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে এই সরকারের অবস্থান যথেষ্টই দুর্বল। সাদ্দাম-পরবর্তী সময়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যোগদানকারীদের অনেকেই সশস্ত্র উপায়ে প্রতিবাদ জানিয়ে চলেছেন। এতে জনসাধারণের স্বাধীনতা আরও সংকুচিত হয়েছে। শান্তি ফেরেনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে।

২০ মার্চ, ২০০৩। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। সেদিন মারণাস্ত্র ধ্বংস করার নামে তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরাকে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট।

তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের দাবি ছিল, ইরাকের ওই সময়ের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কাছে ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র রয়েছে। আর তা থেকে ইরাকি জনগণকে মুক্ত করতে সেনা অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন।

হামলা চালানোর আগে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে বুশ বলেন, আমেরিকান এবং জোট বাহিনী ইরাকের জনগণকে মুক্ত করতে এবং বিশ্বকে মারাত্মক বিপদ থেকে রক্ষা করতে সামরিক অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

সাদ্দামকে সরানোর ২০ বছর পর কেমন আছেন ইরাকিরা?
ইরাক যুদ্ধের ঘোষণা দিচ্ছেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। ছবি: সংগৃহীত

বাস্তবতা হলো, ওই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ২০ বছর পার হয়ে গেলেও ইরাকে আজ পর্যন্ত কএনা মারণাস্ত্র পায়নি যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এই অভিযোগেই ইরাকে হামলা চালানো হয়। দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঝুলানো হয় ফাঁসির দড়িতে।

সাদ্দামবিহীন ইরাকে জঙ্গি উত্থান হয়েছে। পড়ে গেছে দেশটির অর্থনীতিও। দেশটিতে একদিক দিয়ে বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব, আরেকদিকে বেড়েছে ইরানের প্রভাবও।

যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে হামলা চালানোর পর ২ লাখ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। সেখানে আমেরিকার সেনা নিহত হয়েছে মাত্র সাড়ে চার হাজার।

এ যুদ্ধের ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। আর কেনই বা এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তা নিয়েও তৈরি হয়েছে হাজারও প্রশ্ন।

সাদ্দামকে সরানোর ২০ বছর পর কেমন আছেন ইরাকিরা?

ইরাকে যুদ্ধ শুরুর আগেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে হামলার ভিত্তি গড়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদরা। সাদ্দাম ১৯৯০ সালে প্রতিবেশী আরেক তেলসমৃদ্ধ দেশ কুয়েতে আক্রমণ করে বসেন। তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশের বাবা জর্জ এইচডব্লিউ বুশ। তিনি ইরাকে স্বাধীন গণতন্ত্র চালুর পক্ষে ছিলেন। আর এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নব্য রক্ষণশীল রাজনীতিবিদরা সাদ্দামকে সরানোর জন্য মোক্ষম সুযোগ পেয়ে বসেন।

যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে হামলার আরও বেশি সুযোগ পেয়ে যায় ২০০১ সালের ৯/১১ হামলার পর। এর জের ধরেই তারা ইরাকসহ ওই অঞ্চলে গণতন্ত্র ও স্বাধীন করার বিষয়টি বড় করে সামনে আনে। ইরাকে হামলা চালানোর যুতসই ক্ষেত্র তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত সাদ্দামবিরোধীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে বুশ প্রশাসন।

ইরাকে হামলা চালিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। যুদ্ধ শুরুর ১৯ দিন পর অর্থাৎ ৯ এপ্রিল বাগদাদ দখল করে নেয় আমেরিকান জোট। নানা যুক্তি তুলে ইরাকি জনগণকে পক্ষে টেনে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে জোট বাহিনী ফিরদস স্কয়ারে থাকা সাদ্দামের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে।

এ ঘটনার এক মাস না পেরুতেই ২০০৩ সালের ১ মে বড় সেনা অভিযান শেষ করার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট।

এরপর ইরাকজুড়ে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হওয়ায় তখন অনেক আমেরিকান সেনা চাকরি হারান।

ওই বছরের শেষের দিকে সাদ্দামকে তার জন্মস্থান তিরকিট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। হামলাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে তখন দাবি করা হয়েছিল- এক সময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী শাসক সাদ্দাম হোসেন একটি গর্তে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকেই তাকে পাকড়াও করা হয়েছে।

সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর হামলাকারী বাহিনীর মদদপুষ্ট আদালতে তার বিচার করা হয়। গণহত্যা ও মানবাধিকার বিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার দিনে সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়।

তাৎপর্যের বিষয় হলো, মারণাস্ত্র থাকার অজুহাতে ইরাকে হামলা চালানো হয়েছিল, সাদ্দামকে গ্রেপ্তারের পর সেই বক্তব্য থেকে সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র। তারা জানায়, ইরাকে কোনো মারণাস্ত্র বা পরমাণু অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কমিশন ২০০৫ সালে এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরাক নিয়ে তাদের গোয়েন্দাদের প্রতিবেদন ত্রুটিপূর্ণ ছিল।

সাদ্দামকে সরানোর পর ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন প্রভিশনাল অথরিটি নামে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। যার প্রধান ছিলেন পল ব্রেমার। এ সময় ইরাকে সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থা ভেঙে দেয়া হয়। এছাড়া ইরাকে বহু বছর ক্ষমতায় থাকা বাথ পার্টিকেও সরকার গঠনে অংশ নিতে বাধা দেয়া হয়। এসময় দেশটিতে হাজার হাজার প্রশিক্ষিত সেনা সদস্য বেকার হয়ে পড়ে এবং সরকার ও প্রশাসনে শূন্যতা তৈরি হয়।

যুক্তরাষ্ট্র ইরাকিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাঝে হাজার হাজার ইরাকি প্রাণ হারান। দেশটিতে আইএস জঙ্গিবাদের উত্থান হয় এবং গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

সাদ্দামের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি শিয়া ও কুর্দিদের ঘোর বিরোধী। সাদ্দাম-পরবর্তী সময়ে এই সম্প্রদায়গুলোকে ক্ষমতার অংশ বানাতে চেষ্টা চালাতে থাকে কোয়ালিশন প্রভিশনাল অথরিটি।

তারা ইরাক গভর্নিং কাউন্সিলে (আইজিসি) মুহাসা বা কোটাভিত্তিক সরকার ব্যবস্থা চালুর কথা জানায়, যাতে শিয়া ও অন্যান্য সম্প্রদায়কে আনুপাতিক হারে সরকারে রাখার কথা বলা হয়।

তাৎপর্যের বিষয় হলো, এই ব্যবস্থাটি ২০০৩ সালের পর ইরাকের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী দলগুলোর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এটি সাম্প্রদায়িক বিভাজনগুলোকে আরও গভীর করে তোলে। যার জন্য আজও ভুগছে ইরাক ও এর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো।

সংঘাতের মধ্যেই ২০০৫ সালে ইরাকে নির্বাচন হয়। এতে ক্ষমতায় আসে শিয়া সম্প্রদায়ের দল। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নুরি আল মালিকি, যিনি একজন শিয়া মতাবলম্বী। এছাড়া স্পিকার ছিলেন সুন্নি ও প্রেসিডেন্ট ছিলেন একজন কুর্দি।

সাদ্দামকে সরানোর ২০ বছর পর কেমন আছেন ইরাকিরা?
বাগদাদে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সাক্ষাৎ। ছবি: সংগৃহীত

ইরান ও তার সশস্ত্র মিলিশিয়াদের সঙ্গে নুরির সুসম্পর্ক ছিল। ইরাকের সুন্নি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি করতে সরকারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা ও দুর্নীতি এবং অকার্যকরভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার কারণে ইরাকজুড়ে পরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এক সময়ে আনবার ও ফালুজায় সুন্নি বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে এবং দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে শিয়া ধর্মীয় নেতা মুকতাদা আল-সদরের অনুসারীরা তৎপর হয়ে ওঠে। বাড়তে থাকে সহিংসতা।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুন্নি অধ্যুষিত অঞ্চলে কড়া নিরাপত্তা আরোপ করায় তাদের মধ্যে কিছু মানুষ সে সময় আইএসকে সমর্থন করতে শুরু করে। বাড়তে থাকে আইএস-এর কলেবর।

যুক্তরাষ্ট্র ২০১১ সালে তার সেনাদের ইরাক থেকে ফিরিয়ে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে আইএস জঙ্গিদের উত্থান হয়। গোষ্ঠীটি ২০১৪ সালে স্বাধীন খিলাফত ঘোষণা করে। অবশ্য এর তিন বছরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী আইএস-কে অনেকটাই নির্মূল করতে সক্ষম হয়।

ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের যৌথ হামলা ও তাদের প্রস্থানের পর দেশটিতে সবচেয়ে বড় আন্দোলন দেখা দেয় ২০১৯ সালে। ওই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট ইরাক সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। আন্দোলনকারীরা দেশটির সংসদকে একটি নতুন নির্বাচনী আইন গ্রহণ করতে বাধ্য করে। ওই সময় নিরাপত্তা বাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর হাতে প্রাণ হারায় ছয় শতাধিক বিক্ষোভকারী।

ইরাকে ২০২০ সালে ওই আন্দোলন স্থিমিত হয়ে আসে। নেপথ্যের কারণ ছিল করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ।

যাহোক, আজকের ইরাক একটি জোট সরকার দিয়ে চলছে। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে এই সরকারের অবস্থান যথেষ্টই দুর্বল। কেননা ক্ষমতাসীনরা ১৫ শতাংশেরও কম ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছে। বিক্ষোভে যোগ দেয়া অনেক ইরাকি নেতৃত্বহীন রাজনৈতিক দলের অংশ হয়েছেন, কেউ বা আবার সশস্ত্র উপায়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এতে জনসাধারণের স্বাধীনতা আরও সংকুচিত হয়েছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেক ইরাকি শিয়া নেতা আল সদরকে সমর্থন দিচ্ছেন। কারণ সদরের নেতৃত্বাধীন বাহিনী ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।

গত বছরের আগস্টে সদরের সমর্থক ও শিয়াবিরোধীদের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষে ৩০ জন নিহত হন। এ থেকে বোঝা যায় যে, যুদ্ধের দুই দশক পরও অস্থিরতার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে ইরাক।

আরও পড়ুন:
বিক্ষোভে উত্তাল ইরাক, প্রাসাদ যেন খেলাঘর
ইরাকে সহিংসতায় নিহত ৩০
ইরাকে সহিংসতায় নিহত ২০, দেশ ছাড়ছে বিদেশিরা
ইরাকের পার্লামেন্টে ফের হানা সদর সমর্থকদের
ইরাকের পার্লামেন্টে সদর সমর্থকদের হানা

মন্তব্য

p
উপরে