জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের পর পাকিস্তানে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার সময় বেঁধে দিয়েছিল দেশটির সরকার। তবে নির্ধারিত সময়ের পরেও লাহোর, করাচি, ইসলামাবাদসহ পাকিস্তানের বড় শহরগুলোতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কাটেনি।
এদিকে সোমবার রাতে একটি টুইট বার্তায় পাকিস্তানের জ্বালানিমন্ত্রী খুররম দস্তগীর জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিতরণ পুনরায় শুরু হয়েছে।
টুইটারে পাকিস্তানের জ্বালানিমন্ত্রী লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ আমরা সারাদেশে বিদ্যুৎ বিতরণ শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে এটি সম্ভব হয়েছে।’
এর আগে খুররম রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন রাত ১০টার মধ্যেই পুরো পাকিস্তাজুড়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের পরেও লাহোর, ইসলামাবাদ ও করাচির মতো বড় শহরগুলোতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ছিল।
এর আগে গত অক্টোবরে বিদ্যুৎ নিয়ে এমন সংকটে পড়েছিল পাকিস্তান। তখন ১২ ঘণ্টার চেষ্টায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয় দেশজুড়ে।
স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৭টা ৩৪ মিনিটে পাকিস্তানের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দেয়।
একটি স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী বলেন, শীতকালে দেশজুড়ে চাহিদা কম থাকায় রাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিটগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে জাতীয় গ্রিড। সকালে ইউনিটগুলো এক এক করে চালু করা হচ্ছিল। খন সিন্ধু প্রদেশের দুটি শহরের মধ্যে ফ্রিকোয়েন্সির তারতম্যের ঘটনা ঘটে। এ সময় ভোল্টেজ ওঠানামা করতে করতে একের পর এক বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট বন্ধ হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন:[]
— Engr. Khurram Dastgir-Khan (@kdastgirkhan) January 23, 2023
Alhamdulillah we have begun restoration of electricity across the country
This is made possible in leadership of PM Shehbaz Sharif & the multi-party government he leads.
[] pic.twitter.com/3Amgibvcgp
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নতুন করে সরকারবিরোধী আন্দোলন করলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। সোমবার মুলতানে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নাওয়াজের (পিএমএল-এন) একটি সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এমনটি জানান।
নির্বাচনের দাবিতে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান নতুন করে আন্দোলন শুরুর পরিকল্পনার কথা জানানোর কয়েকদিনের মধ্যে রানা সানাউল্লাহ এমন হুমকি দিলেন।
শনিবার নিজের জামান পার্কের বাসভবন থেকে দেয়া এক ভাষণে ইমরান তার দলের নেতাকর্মীদের সরকারের জুলুমের প্রতিবাদে স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হতে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান।
ইমরান তার দলের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ফাওয়াদ চৌধুরী ও সাবেক এমপি শানদানা গুলজারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করার পর এ ঘোষণা দেন।
এর জবাবে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, ইমরান খান যদি ‘জেল ভরো’ কর্মসূচি এগিয়ে নিতে চান তাহলে সরকার বসে থাকবে না। সরকার ইমরান খানকে গ্রেফতারে প্রস্তুত।
২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন ইমরান খান। ২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান তিনি। ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চলতি বছরের অক্টোবরেই শেষ হচ্ছে পাকিস্তানের বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল পারভেজ মোশাররফের মৃত্যু হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে ৭৯ বছর বয়সী এ সেনাশাসকের মৃত্যু হয় বলে পাকিস্তানভিত্তিক জিও টিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মোশাররফের পরিবার রোববার তার মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুবাইয়ের আমেরিকান হসপিটালে চিকিৎসা চলছিল মোশাররফের।
ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতের দিল্লিতে ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট জন্ম হয় পারভেজ মোশাররফের। পাকিস্তানের কাকুলে দেশটির মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে ১৯৬১ সালের ১৯ এপ্রিল কমিশন পান তিনি।
কমিশনপ্রাপ্তির পর স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপে যোগ দেন মোশাররফ। তিনি ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৯৮ সালে সেনাবাহিনীতে জেনারেল পদে উন্নীত হন পারভেজ মোশাররফ। ওই বছর তিনি চিফ অফ আর্মি স্টাফ (সিওএএস) হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরের বছরের ১২ অক্টোবর সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতার দখল নেন এ জেনারেল।
পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট ছিলেন পারভেজ মোশাররফ। ২০০২ সালে গণভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হয়ে ২০০৮ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
নাইন-ইলেভেনের পর পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের সঙ্গী বানাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন মোশাররফ।
২০০৪ সালে পাকিস্তানের সংবিধানের ১৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে সেনাশাসিত সরকারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যপ্রদেশে প্রচলিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে উত্তপ্ত রড দিয়ে ৫১ বার খোঁচা দেয়া হয়েছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুকে।
এ ঘটনার দুই সপ্তাহ পর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৩ মাস বয়সী মেয়েটির।
রাজ্যের শাহদোল জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে এনডিটিভির শনিবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, সমাধিস্থ করার পর শিশুটির মরদেহ আবার তোলা হয়েছে। শনিবার শিশুটির ময়নাতদন্ত হবে।
শাহদোল জেলা প্রশাসক বন্দনা বৈধ জানান, নারী ও শিশু উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে পৌঁছার পর দেখতে পায়, অন্ধ বিশ্বাস থেকে ১৫ দিন আগে এমন ঘটনা ঘটানো হয়। নিউমোনিয়ার চিকিৎসা না করানোয় শিশুটির অবস্থার অবনতি হয়।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় এক স্বাস্থ্যকর্মী শিশুটিকে গরম রড দিয়ে খোঁচা না দিতে তার মাকে অনুরোধ করেছিলেন।
মধ্যপ্রদেশের অনেক আদিবাসী-অধ্যুষিত এলাকায় নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করার জন্য উত্তপ্ত রড দিয়ে খোঁচা দেয়ার রীতি প্রচলিত।
স্থানীয় চিকিৎসক ও যুব কংগ্রেসের সভাপতি বিক্রান্ত ভুরিয়া জানান, রড দিয়ে খোঁচা দিলে মৃত্যু হতে পারে, এটি ব্যথা কমানোর একটি উপায়, কিন্তু সমস্যা হলো সংক্রমণটি ছড়িয়ে মৃত্যু হতে পারে।
বিজেপির মুখপাত্র ডা. হিতেশ বাজপেয়ি বলেন, ‘এই ধরনের রীতি এখনও প্রচলিত এবং আমি এলাকার প্রধান মেডিক্যাল অফিসারকে একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।’
আরও পড়ুন:ভারতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যবসায়ী গৌতম আদানির বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন।
বিরোধী রাজনৈতিক দলের এমপিরা এই অভিযোগের ব্যাপারে তদন্তের দাবি জানিয়ে সংসদের অধিবেশন শুক্রবারও দ্বিতীয় দিনের মতো ভণ্ডুল করে দিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা
অনেকের অভিযোগ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে গৌতম আদানি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিনডেনবার্গ রিসার্চ নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে গত সপ্তাহে গৌতম আদানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজি ও আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়। এই অভিযোগ ওঠার পর থেকেই আদানি গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্য আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
ভারতীয় সংসদ লোকসভায় শুক্রবার সকালের অধিবেশনে বিরোধী নেতারা অভিযোগের তদন্ত দাবি করলে উভয় কক্ষের অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি অথবা সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে একটি প্যানেল গঠনের দাবি জানায় বিরোধীরা।
আরও পড়ুন:অর্থনীতিসহ নানা সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমেছে। কমতে কমতে দেশটির রিজার্ভ নেমেছে ৩১০ কোটি ডলারে। এই পরিমাণ রিজার্ভ দিয়ে দেশটির তিন সপ্তাহেরও কম সময়ের আমদানি খরচ মেটানো সম্ভব।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের (এসবিপি) সর্বশেষ ২৭ জানুয়ারির তথ্যের বরাতে বিশ্লেষকরা এমন ধারণা করছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির পর এই মুহূর্তে পাকিস্তানের রিজার্ভ সবচেয়ে কম। এখন যে রিজার্ভ আছে তাতে সবমিলিয়ে হয়তো ১৮ দিনের আমদানি ব্যয়ের খরচ মেটানো যাবে।
স্থানীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আরিফ হাবিব লিমিটেডের (এএইচএল) গবেষক তাহির আব্বাস রয়টার্সকে বলেছেন, দেশের সঙ্কট এড়াতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন অর্থপ্রবাহ এবং আইএমফের সহায়তা দরকার।
অর্থাভাবে বিদেশ থেকে আমদানি যখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, সে সময় বাজারে অনেক নিত্যপণ্য নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এর কারণ, বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির জন্য পর্যাপ্ত ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে চাইছে না। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, তারা এই ধরনের কোনো নির্দেশ দেয়নি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সুনির্দিষ্ট, আর সেই বিষয়টি কেবল একজন বলেননি, বহু ব্যবসায়ীই দিচ্ছেন একই তথ্য।
সম্প্রতি স্থবিরতা কাটিয়ে আর্থিক সহায়তার ব্যাপারে আইএমএফের সঙ্গে পাকিস্তানের আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল পৌঁছেছে পাকিস্তানে।
এ অবস্থায় শুক্রবার টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমরা অকল্পনীয় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। আইএমএফের যেসব শর্ত, সেগুলো ধারণাতীত। তবে আমাদের শর্তগুলো মেনে নিতে হবে।’
রিজার্ভে নতুন অর্থ যোগ না হলে এই মজুদ দিয়ে যে আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে তা সত্যিকার অর্থেই আশঙ্কাজনক। অবশ্য একটি দেশের আমদানির জন্য তিন মাসের রিজার্ভকে ধরা হয় নিরাপদ।
রিজার্ভে প্রতিনিয়ত অর্থ যোগ হতে থাকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের কারণে। পাকিস্তানে এই দুটি আয়েও দেখা দিয়েছে ভাটা।
বিপদের এই সময়ে রেমিট্যান্স গতি হারিয়েছে দেশটিতে। ব্যাংকিং চ্যানেলের বদলে হুন্ডিতেই অর্থ পাঠাচ্ছে প্রবাসীদের একটি বড় অংশ। কারণ, ব্যাংকের চেয়ে সেখানে দর পাওয়া যায় বেশি। খোলাবাজারে এক ডলারে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭১ রুপিতে।
যদি আইএমএফ হাত বাড়িয়ে না দেয় এবং আরও কিছু সহায়তা না আসে, তাহলে শ্রীলঙ্কার পর দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পাকিস্তানও। চলতি বছরও কয়েক বিলিয়ন ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হবে তাদের। কিন্তু রিজার্ভ যেভাবে কমছে, তাতে নিত্যপণ্য আমদানিতেই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা, সেখানে ঋণ পরিশোধ হবে বিলাসিতা।
দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ইতোমধ্যেই পাকিস্তানে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। গত জুলাই-নভেম্বর অর্থবছরে পাকিস্তানে ৪৩০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে; যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১ শতাংশ কম।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজারে দরপতনের হিড়িকের মধ্যে স্বল্পমেয়াদি বাড়তি নজরদারি ব্যবস্থায় (এএসএম) রাখা হয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানকে।
ভারতের মুম্বাইভিত্তিক বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) ও ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) থেকে বৃহস্পতিবার পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার এ খবর জানায় এনডিটিভি।
নজরদারিতে থাকা প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো- আদানি এন্টারপ্রাইজ, আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনোমিক জোন এবং আম্বুজা সিমেন্টস।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ গ্রুপের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে লেনদেনে প্রতারণা ও শেয়ার দরে কারসাজির অভিযোগ করা হয়। এর পর থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দরে ধস নামে।
ওই প্রতিবেদনকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে আদানি গ্রুপ বলেছে, তাদের কোম্পানিগুলো সব আইন মেনে চলছে।
বেশ কয়েকটি বিষয়ের ভিত্তিতে কোনো কোম্পানিকে এএসএমের আওতায় রাখা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কোম্পানির আয়ের ওপর গ্রাহকদের অংশীদারত্ব, প্রাইস-আর্নিং রেশিও ইত্যাদি।
এনএসই ও বিএসই জানিয়েছে, আদানি গ্রুপের তিনটি কোম্পানি নির্ধারিত মানদণ্ডে পড়ায় এগুলোকে এএসএমের আওতাভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবারও আদানি গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ার ২৬ শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে। গ্রুপের অন্য কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দরপতনও অব্যাহত রয়েছে।
সব মিলিয়ে ছয় দিনে পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিগুলোর ৮ লাখ ৭৬ হাজার কোটি রুপি উধাও হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:ভারতের উত্তর প্রদেশে দলিত তরুণীকে ‘ধর্ষণের’ পর হত্যার বিষয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া কেরালার আলোচিত সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান বৃহস্পতিবার কারামুক্ত হয়েছেন।
দুই মামলায় জামিন পাওয়ার এক মাসের বেশি সময় পর লক্ষ্ণৌর বিশেষ আদালত কাপ্পানের মুক্তির আদেশে সই করে বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
উত্তর প্রদেশের রাজধানীর কারাগার থেকে বের হয়ে এনডিটিভিকে কাপ্পান বলেন, ‘নির্মম আইনের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখব। জামিন পাওয়ার পরও তারা আমাকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে।
‘আমাকে জেলে রেখে কার লাভ হয়েছে, জানি না। এ দুই বছর খুবই কঠিন ছিল, তবে আমি কখনোই শঙ্কিত ছিলাম না।’
কারাগার থেকে কাপ্পানের মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল বুধবার সন্ধ্যায়, তবে অর্থপাচার প্রতিরোধবিষয়ক বিশেষ আদালতের বিচারক বার কাউন্সিল নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মুক্তির আদেশে সই করতে পারেননি।
উত্তর প্রদেশে দলিত তরুণীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ পর হত্যার সংবাদ সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থল হাথরাসে যাওয়ার পথে ২০২০ সালের অক্টোবরে গ্রেপ্তার হন সিদ্দিক কাপ্পান।
রাজ্য পুলিশ সে সময় জানিয়েছিল, দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করা ঘটনা কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিক হাথরাসে অস্থিরতা তৈরি করতে যাচ্ছিলেন।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের দুই সপ্তাহ পর দিল্লির একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল দলিত তরুণীর। পরে মধ্যরাতে তরুণীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করে হাথরাস জেলা প্রশাসন, যাকে অনেকে ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা হিসেবে অভিহিত করে ব্যাপক সমালোচনা করে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের।
কাপ্পানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ করা হয়, যাকে অভিযুক্ত করা হয় সন্ত্রাসবিরোধী কঠোর আইন ইউএপিএতে। নিষিদ্ধ সংগঠন পিপল’স ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের অভিযোগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার নামে অর্থ পাচারের মামলা করে ভারতের অর্থ গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
এ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠনিক কোনো অভিযোগ গঠন না করায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাকে জামিন দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য