সেনাবাহিনীর হয়ে কাজ করার সময় আফগানিস্তানে ২৫ জনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি। তার দাবি, নিহতদের সবাই তালেবান যোদ্ধা ছিলেন।
আত্মজীবনীমূলক ‘স্পেয়ার’ নামক বইতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন হ্যারি। আগামী ১০ জানুয়ারি প্রকাশ হতে যাচ্ছে বইটি।
ডিউক অব সাসেক্স খ্যাত হ্যারি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হয়ে ১০ বছর কাজ করেছেন। দুবার আফগানিস্তানে মিশনে গিয়েছিলেন তিনি। তার দাবি, দ্বিতীয় দফা দায়িত্ব পালনকাল এক সামরিক হেলিকপ্টার থেকে ২৫ জনকে তিনি হত্যা করেন।
দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রিন্স হ্যারি অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের পাইলট ছিলেন। পাইলট হিসেবে ছয়টি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন তিনি। ‘স্পেয়ার’ নামক বইতে হ্যারি বলেছেন, ওই অভিযানে মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
তবে হ্যারি জানিয়েছেন, ওই ২৫ জনকে তার কাছে মানুষ মনে হয়নি। এর বদলে তাদের ‘দাবার গুটি’ মনে হয়। যাদের তিনি দাবার বোর্ড থেকে কেবল সরিয়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ৩৮ বছর বয়সী হ্যারি তার বইয়ে বলেছেন, ‘এটি এমন কোনো ঘটনা নয়, যার জন্য আমি গর্বিত কিংবা লজ্জিত।’
এর আগে ২০১৩ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবারের এ সদস্য জানিয়েছিলেন, তিনি আফগানিস্তানে অভিযানে গিয়ে মানুষ হত্যা করেছিলেন। তবে এবারই প্রথমবার প্রকাশ করলেন ঠিক কতজনকে তিনি হত্যা করেছেন।
এর আগে বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের হাতে মার খাওয়ার কথা জানান হ্যারি।
তার বইতে তিনি জানান, স্ত্রী মেগান মার্কেলকে নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে বর্তমান প্রিন্স অফ ওয়েলসের আক্রমণের শিকার হন হ্যারি। কলার ধরে হ্যারিকে মেঝেতে ফেলে দেন উইলিয়াম।
আরও পড়ুন:সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হচ্ছে তুরস্কে সোমবারের ভূমিকম্পে ভয়াবহতার চিত্র। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে হৃদয়বিদারক কিছু ছবি।
সিএনএনের বুধবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছে কাহরামানমারাসে মর্মান্তিক একটি দৃশ্য ধরা পড়েছে এএফপির ক্যামেরায়। এতে দেখা যায়, কংক্রিটের নিচে চাপা পড়া মেয়ের নিথর হাতটি ধরে বসে আছেন এক ব্যক্তি।
ধ্বংসস্তূপে বসা ওই ব্যক্তির নাম মেসুত হানজার। তার মেয়েটির বয়স ছিল ১৫ বছর।
ভূমিকম্পের পর প্রায় জমে যাওয়া তাপমাত্রায় উদ্ধার তৎপরতার সময় পরিবারটির বাসার ভাঙা জানালা, তছনছ হয়ে যাওয়া ফার্নিচার চোখে পড়ে উদ্ধারকারীদের।
স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় এরই মধ্যে প্রায় ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ।
ভূমিকম্পের ৪৮ ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধার করা হচ্ছে। কাহরামানমারাসে মঙ্গলবার ১৪ বছর বয়সী এক শিশুকে উদ্ধারের অভিযান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ওই ঘটনার মধ্য দিয়ে আরও অনেককে জীবিত উদ্ধারের আশা করা হচ্ছিল, তবে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেড়েই চলছে মৃতের সংখ্যা।
আরও পড়ুন:তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে সোমবার ভোররাতের ভয়াবহ ভূমিকম্পে দেশটি ও সীমান্তবর্তী সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার আট শর বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এখনও বিভিন্ন ভবনের নিচে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
ব্যাপকতার কারণে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা অনেক বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেছেন, কয়েক হাজার শিশুর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। তবে ১৯৯৯ সাল থেকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের পর ধীর ও অপর্যাপ্ত উদ্ধার তৎপরতার অভিযোগ করে তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন শহরের বাসিন্দারা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
বাড়ি ও স্বজন হারানো মালাতিয়ার বাসিন্দা মুরাত আলিনাক বলেন, ‘এখানে একজনও আসেনি। বরফের মধ্যে আমরা আছি। নেই ঘর কিংবা সহায়-সম্বল। আমি কী করব? কোথায় যাব?’
সোমবারের ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টা পরই প্রায় সমশক্তিশালী আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয় তুরস্কে। এতে ধসে পড়ে হাজারো বাড়ি, হাসপাতাল, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় হাজার হাজার মানুষ আহত হন; গৃহহীন হয়ে পড়েন অসংখ্য মানুষ।
ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, বাজে আবহাওয়া, প্রয়োজনীয় রসদ ও ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় প্রবেশে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। কিছু কিছু এলাকা জ্বালানি ও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন:ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কে উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য ১৬টি বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর পাঠাচ্ছে মেক্সিকো।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই কুকুরগুলো ২০১৭ সালে মেক্সিকোতে ভূমিকম্পের পর রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে উদ্ধারকাজে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। ওই ভূমিকম্পে দেশটিতে শত শত মানুষ প্রাণ হারান।
এই কুকুরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ফ্রিডা। ছয় বছর আগে হওয়া ভূমিকম্পে ১২ জন মানুষকে জীবন্ত উদ্ধারে সহায়তা করেছিল এটি । গত বছরের নভেম্বরে কুকুরটি মারা যায়।
তবে ফ্রিডা না থাকলেও তুরস্কে আসছে তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকটি কুকুর।
মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো ইব্রার্ড কুকুরগুলোকে প্লেনে ওঠানোর আগের একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন।
১৯৮৫ সালে মেক্সিকোতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে পাঁচ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
শক্তিশালী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ১০টি প্রদেশে আগামী তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
মঙ্গলবার তুরস্কের এ প্রেসিডেন্ট এ ঘোষণা দেন।
এদিকে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত এলাকায় তীব্র ঠান্ডার কারণে উদ্ধার কাজ ব্যহত হচ্ছে।
টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে এরদোয়ান বলেন, আমাদের উদ্ধার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি
প্রায় এক শতক পর এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প দেখল তুরস্ক। এরইমধ্যে উদ্ধারকাজের ধীরগতি নিয়ে দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা হচ্ছে।
স্থানীয় সোমবার ভোররাতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি আফটারশকও হয়েছে। ভয়াবহ এ দুর্যোগে তুরস্কে ৩ হাজার ৫৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি সিরিয়ায়ও মারা গেছে ১ হাজার ৬০২ জন।
আরও পড়ুন:ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া তুরস্কের বেশ কয়েকটি শহরের মতো একটি আদানা। সেখানে ধসে যাওয়া ভবনগুলোকে সরানো হচ্ছে ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে। ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত অথবা মৃত উদ্ধার হলেই আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে প্রকম্পতি হচ্ছে ওই শহর।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ধ্বংস্তূপে পরিণত হওয়া তুরস্কের শহরটিতে আন্তর্জাতিক উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত হয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাত ৩টা ২০ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার প্রথম ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রায় ৯০ সেকেন্ড ধরে কাঁপতে থাকে পুরো শহর। এসময় অনেকেই জুতা-জামা কাপড় না নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়েন। এরমধ্যেই শহরটির তাপমাত্রা আরও কমছে।
তুরস্কের চেয়ে অবস্থা আরও ভয়াবহ সিরিয়ার। দেশটির সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় সেখানে আন্তর্জাতিক উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি।
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে প্রায় ১৭ লাখ বাস্তচ্যুত মানুষ বাস করে। তারা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে ওই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান দেশে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ তুরস্কে ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন:
ভোর থেকে ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়া ওমের এল কুনেদের বান্ধবী ও তার পরিবারের সদস্যরা এখন কেমন আছেন, কেউ তা জানে না। দুপুর পর্যন্তও ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল, তবে এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগের নম্বরটি।
তুরস্কের সানলিউরফা শহরের এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে যুবক ওমের বিষণ্ন হয়ে তার বান্ধবী ও তাদের স্বজনদের খবরের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।
গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, ‘এই ধ্বংসস্তূপের নিচে একটি পরিবার আছে, আমি জানি।’
বান্ধবী ও তার পরিবারের সদস্যরা হয়তো বেঁচে ফিরবেন, উদ্ধারকর্মীরা তাদের বের করে আনবেন চূর্ণবিচূর্ণ হওয়া এই ভবন থেকে- এ আশায় কয়েক ঘণ্টা সময় কেটে গেছে তার।
ওমের বলেন, ‘সকাল ১১টা, পরে দুপুরেও তো ওকে আমি ফোনে পাচ্ছিলাম। এরপর থেকে নম্বর বন্ধ পাচ্ছি। ওদের কাউকে পাচ্ছি না। ও এখানেই আছে। হয়তো তার ফোনের ব্যাটারির চার্জ চলে গেছে।’
যেখানে ওমের দাঁড়িয়ে ছিলেন তার পাশেই ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ ও জীবিতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছিল অসংখ্য গাড়ি। বিপর্যস্ত এক পরিবারকে বৃষ্টির মধ্যে হেঁটে আশ্রয় খুঁজতে দেখা গেল।
শুধু ওমের না, এমন আরও বহু মানুষ অপেক্ষায় আছেন তাদের স্বজনদের। কেউ হারিয়েছেন স্বজন, কেউ বা বন্ধুবান্ধব। অবশ্য জীবিতও উদ্ধার হয়েছেন অনেকে।
স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয় সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে, যার উৎপত্তিস্থল কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক জেলায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) সংস্থার তথ্যমতে, প্রথমে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এরপর অন্তত ১০০ বার কেঁপে ওঠে (আফটার শক) এ দুই দেশ।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল সোমবার দুপুর দেড়াটার দিকে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি। এর উৎপত্তিস্থল ছিল তুর্কির কাহরামানমারাস শহর।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ৪ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে বিবিসি, সিএনএন ও রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
এরই মধ্যে বিশ্বের ৬৫টি দেশ থেকে আর্থিকসহ নানা ধরনের সহায়তা পাঠানো হয়েছে তুরস্কে। উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন ১৩ হাজারের বেশি কর্মী।
বৃষ্টি, অতি ঠান্ডা এবং তুষারপাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। অনেক মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:বিধ্বস্ত তুরস্কে আবারও এক শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে; বহু মরদেহ উদ্ধারের মধ্যেই আঘাত হানা এ ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ দশমিক ৫।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ৩টার দিকে দেশটির গোলবছি শহরের ছয় কিলোমিটার দূরে ভূঅভ্যন্তর এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সিএনএন বলছে, সোমবার ভোরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর তুরস্কে দিনভর অন্তত ১০০টি ‘আফটার শক’ হয়েছে।
এদিকে তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ৪ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে মঙ্গলবার সকালে বিবিসি জানায়, তুরস্কের জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা ২৯২১ মরদেহ উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে। এ দেশে আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৮৩৪ জন। আর সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫১।
সবমিলিয়ে এ দুই দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৩৭২ জনে। তুরস্কে প্রায় আট হাজার মানুষকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। দেশজুড়ে ধসে গেছে অন্তত ৪ হাজার ৭৪৮টি ভবন।
সিএনএন জানিয়েছে, উদ্ধার তৎপরতা চলছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। অনেক মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উদ্ধারকাজে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয় সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে, যার উৎপত্তিস্থল কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক জেলায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) সংস্থার তথ্যমতে, প্রথমে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এরপর অন্তত ১০০ বার কেঁপে ওঠে (আফটার শক) এ দুই দেশ।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল সোমবার দুপুর দেড়াটার দিকে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি। এর উৎপত্তিস্থল ছিল তুর্কির কাহরামানমারাস শহর।
সর্বশেষ তুরস্কে ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
মন্তব্য