ভারতের কলকাতার একটি বারে মারামারি ও ভাঙচুরের অভিযোগে বাংলাদেশি বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার শহরের নিউমার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সিরাজুল খান ও নাইফু খান। তারা দুজনই গাজীপুরের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, মদ পানের পর বাবা ও ছেলের মধ্যে ঝামেলা শুরু হলে বারের কর্মীরা তাতে বাধা দেন। এরপর তাদের ওপর চড়াও হন ওই দুই বাংলাদেশি। এ ঘটনায় সুজিত বক্সী ও শংকর রুদ্র নামে বারের দুই কর্মী আহত হন ।
পরে তাদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়। পরে বার কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিউমার্কেট থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের খবর কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। তাদের ভিসা পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য যাচাইয়ের জন্য কমিশনকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্য পছন্দ করছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এই বার্তা পৌঁছে দিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রিকে অনুরোধ করেছে ঢাকা। একইসঙ্গে দেশটিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে নাক না গলাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাকে ফেরানোর উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ আসার বিষয়। আর এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
‘সিদ্ধান্ত যখন হবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখন ব্যবস্থা নেবে। এটা এফওসিতে কেন, যে কোনো পর্যায়ে হতে পারে। সেটা কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমেও হতে পারে। দিল্লিতে আমাদের যে মিশন আছে তার মাধ্যমেও জানানো যায়।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করে যে বক্তব্য দিচ্ছেন সে বিষয়ে আমরা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আপনারা গতকাল শুনেছেন তিনি (শেখ হাসিনা) একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। এটা এই সরকার পছন্দ করছে না এবং তারা যে কথাটা বলেছেন, তার উপস্থিতি দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
পররাষ্ট্র সচিব জানান, ধর্মীয় ও সংখ্যালঘু ইস্যুতে বিভ্রান্তি ও অপপ্রচারের সুযোগ নেই জানিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতকে নাক না গলানোর বার্তা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আজকের বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা বলেছি, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড কাম্য নয় এবং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সঙ্গে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আমরা সবসময় বলেছি, সীমান্ত হত্যা যেন শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হয়। তাদের দিক থেকে তারা বলেছে, সীমান্তে নানা ধরনের অপরাধ হয়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এসব অপরাধের সংযোগ আছে।’
জসীম উদ্দিন বলেন, ‘বৈঠকে আমরা বলেছি, আমরা কোনো অপরাধ সমর্থন করি না। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডকেও সমর্থন করি না। কাজেই দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের যে কথা বলছি, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের যে অঙ্গীকার এবং রাজনৈতিক অঙ্গীকার হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার, সেটার বিষয়ে তারা যেন শ্রদ্ধাশীল থাকে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে ভারতীয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা ও নানা ধরনের হুমকির বিষয়ে জোরালোভাবে জানানো হয়েছে।’
তিনি জানান, ভারতে চিকিৎসাপ্রার্থীদের ভিসা সহজ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের সহায়তা কামনা এবং দেশটিতে আটক বাংলাদেশি জেলে ও অন্যান্য নাগরিককে ফেরত দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের পরাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সোমবার সকালে ঢাকায় আসেন। এদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবদের মধ্যে এফওসি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকার হয়ে নেতৃত্ব দেন জসীম উদ্দিন।
অন্যদিকে, দিল্লির পক্ষে নেতৃত্বে ছিলেন বিক্রম মিশ্রি। দুই সচিবের মধ্যে একান্ত আলাপসহ প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক চলে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেছেন, ‘গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে দুদেশের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ আছে। দু’দেশের জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারত। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায়।’
ঢাকায় সোমবার দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর বিক্রম মিশ্রি এসব কথা বলেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বৈঠকের আলোচনায় দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিষয়গুলো এসেছে। অত্যন্ত খোলামেলা ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।
‘আমি জোর দিয়ে বলেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক চায়। আমরা সবসময়... অতীতেও দেখেছি এবং আমরা ভবিষ্যতেও এ সম্পর্ককে একটি জনকেন্দ্রিক এবং জনমুখী সম্পর্ক হিসেবে দেখব। আর সে সম্পর্কের কেন্দ্রে থাকবে সব মানুষের কল্যাণ।’
বিক্রম মিশ্রি বলেন, পরস্পরের জন্য সহায়ক এই সহযোগিতা আমাদের উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে অব্যাহত থাকবে না এটা ভাবার কারণ নেই। আমি আজ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য ভারতের আগ্রহের কথা তুলে ধরেছি। একই সময়ে, আমরা কিছু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং সমস্যা নিয়ে আলোচনার সুযোগ পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আলোচনায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের সঙ্গে সম্পর্কিত আমাদের উদ্বেগগুলো জানিয়েছি। আমরা সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং কূটনৈতিক সম্পত্তির ওপর হামলার কিছু দুঃখজনক ঘটনা নিয়েও আলোচনা করেছি।’
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘পারস্পরিক সুবিধাজনক সহযোগিতা উভয় দেশের জনগণের স্বার্থে অব্যাহত না থাকার কোনো কারণ নেই এবং এর জন্য আমি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ভারতের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছি।’
এর আগে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি তার দেশের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের আগে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব একান্তে বৈঠক করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বিশেষ ফ্লাইটে আজ সকালে ঢাকায় অবতরণ করেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের গাড়িবহর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রবেশ করে। আনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে দুই পররাষ্ট্র সচিব একান্তে বৈঠক করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে এটি বিক্রম মিশ্রির প্রথম বাংলাদেশ সফর। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠকও এটি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উভয় পক্ষ রাজনৈতিক দূরত্ব কমানোর বিষয়ে জোর দিয়েছেন। ঢাকার পক্ষ থেকে ভারতে বসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সক্রিয়তা বন্ধ, ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার ও ভিসার জট খোলার বিষয়ে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ও ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে পারস্পরিক উদ্বেগ নিরসন এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সোমবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এফওসিতে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন এবং সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি যথাক্রমে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
বিকেলে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দীন বিকেল সাড়ে ৫টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৃথক ব্রিফিং করবেন।
ফরেন অফিস কনসালটেশনসহ বেশ কয়েকটি বৈঠক করতে সোমবার সকালে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।
শাহজালাল বিমানবন্দরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া উইং) ইশরাত জাহান।
পররাষ্ট্র সচিব মিসরি আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে পারেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে দুই প্রতিবেশী দেশ যে ধরনের অচলাবস্থা প্রত্যক্ষ করেছে, বাংলাদেশ ও ভারত তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।
‘আমরা আশা করছি এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারব। এ ধরনের অচলাবস্থা নিরসনে পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন ও সাক্ষাৎ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সেমিনারে তিনি বলেন, এটাও মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কে পরিবর্তন এসেছে এবং উভয় পক্ষকেই এই পরিবর্তিত বাস্তবতা মেনে নিয়ে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে গত কয়েক মাসে দু'দেশের মধ্যে যে মন্দা দেখা দিয়েছে তা বাংলাদেশ ও ভারত উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই ভারত সরকারের কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।
পররাষ্ট্র সচিবদের নেতৃত্বাধীন এফওসি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি কাঠামোগত সম্পর্ক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব উপাদানকে আলোচ্যসূচিতে রাখার চেষ্টা সব সময় রয়েছে।
‘বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসহযোগিতা করলে আমরা একা ক্ষতিগ্রস্ত হবো না, ভারতও হবে। ভারত আমাদের বিনা পয়সায় কিছু দেয় না, টাকার বিনিময়ে দেয়। কাজেই তারা যদি রপ্তানি বন্ধ করে তাহলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এর সঙ্গে দু’দেশের লাখ-লাখ লোক জড়িত।’
নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেছেন।
শনিবার দুপুরে ভোমরা স্থলবন্দরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত।
তিনি বলেন, ‘আর্থিক ক্ষতির কথা চিন্তা করে তারা রপ্তানি বন্ধ করবে বলে আমার মনে হয় না। তবে যা হচ্ছে তা সবই রাজনৈতিক।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘কখনও কি শুনেছেন যে সব পলিটিক্যাল পার্টি এক জায়গায় বসে কথা বলেছে। আজ হোক কাল হোক রাজনীতিবিদরা দেশ চালাবেন। সে জায়গাতে যদি রাজনীতিবিদদের মধ্যে ঐকমত্য না হয় তাহলে জাতীয় যে পথ নির্ধারণ করার কথা সেটা তখন এলোমেলো হয়ে যায়। একদল একরকম বলবে, আরেক দল সেটা অপোজ করবে। এখন সবাই একত্রে বসেছেন- এটা একটা বড় অর্জন। এটা একটা উদাহরণ হয়েছে।’
পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ভোমরার কার্যক্রম চালু করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংকটের বিষয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এক হাজার ১০০ কোটি টাকার চলমান উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলে ভোমরা স্থলবন্দর তার কার্যক্রম পুরোদমে চালাতে পারবে।’
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি আবু হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খানসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন এর আগে ভোমরা স্থল বন্দরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন:ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশ ড্রোন মোতায়েন করেছে মর্মে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার এ তথ্য জানানো হয়।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, সীমান্তে ড্রোন মোতায়েন নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর ভুয়া ও বানোয়াট।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশ তার রুটিন কার্যক্রম ছাড়া দেশের কোনো অংশে কোনো ড্রোন মোতায়েন করেনি। খবরটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি সাজানো অভিযানের অংশ।’
এর আগে সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কাছে তুরস্ক নির্মিত ড্রোন মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ। এমন খবরের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি জোরদার করছে ভারত।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কে উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে। হাসিনার পতনের পর সীমান্তজুড়ে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের পটভূমিতে নড়েচড়ে বসেছে ভারত।
গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, ভারত সীমান্তের কাছে তুরস্ক নির্মিত বায়রাক্তার টিবি-২ নামের ড্রোন মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ, যা যাচাই করে দেখছে দিল্লি।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, সীমান্তে মোতায়েন করা এসব ড্রোন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং নজরদারি মিশনের জন্য পরিচালনা করে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী।
আরও পড়ুন:ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অবিচ্ছিন্ন, স্থিতিশীল ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
হাইকমিশনার বলেন, শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ভারত।
দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে ‘বহুমুখী ও ব্যাপক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি বিষয় বা এজেন্ডা নিয়ে বসে থাকতে পারি না। অনেক আন্তঃনির্ভরশীলতা রয়েছে এবং পারস্পরিক স্বার্থে আমরা এটি গড়ে তুলতে চাই।’
এর আগে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন প্রণয় ভার্মা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘তাকে (ভারতীয় হাইকমিশনার) আসতে বলা হয়েছে।’
এরপর ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতীয় হাইকমিশনার।
সেনা ও পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ মন্ত্রণালয়ের আশপাশে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে ‘উগ্রবাদী বক্তব্য’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত বলেছে, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই সংখ্যালঘুদের রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘চরমপন্থী বক্তব্য, সহিংসতা ও উসকানির ক্রমবর্ধমান ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনাকে শুধু গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন বলে উড়িয়ে দেয়া যাবে না।’
‘আমরা আবারও বাংলাদেশকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জয়সওয়াল বলেন, ‘ভারত সরকার বিষয়টি বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরেছে।
‘বাংলাদেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা খুব স্পষ্ট করে বিরোধিতা করেছি। আমরা বাংলাদেশের কাছে এ বিষয়টি উত্থাপন করেছি যে, সংখ্যালঘুদের রক্ষা ও তাদের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে এবং তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দিতে হবে।’
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ও কারাদণ্ড প্রসঙ্গে জয়সওয়াল বলেন, ‘এ বিষয়ে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। আমরা ইসকনকে বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত সংস্থা হিসেবে দেখছি। সংস্থাটির সমাজসেবায় ব্যাপক কর্মকাণ্ডের নজির রয়েছে।’
ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা ও আইনি প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আশা ও প্রত্যাশা করি যে ব্যক্তি এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি পূর্ণ সম্মান নিশ্চিত করে এই প্রক্রিয়াগুলো ন্যায্য, ন্যায়সঙ্গত ও স্বচ্ছভাবে মোকাবিলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য