আফগানিস্তানে পাঁচটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে। তালেবান দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংস্থায় দেশটির নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ ঘোষণার পর এনজিওগুলো এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
সংস্থাগুলো হলো কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, দ্য নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি), সেভ দ্য চিলড্রেন, ইসলামিক রিলিফ ও দি ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি)।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারী কর্মীদের ছাড়া কাজ চালানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সংস্থাগুলো।
দেশটির তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার শনিবার জানায়, আফগানিস্তানে এনজিওতে নারীরা কাজ করতে পারবেন না। নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা বন্ধ করার কয়েক দিনের মধ্যে নতুন এ নির্দেশ জারি করে তালেবান।
আফগান অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল রহমান হাবিব দাবি করেন, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারী কর্মীরা পোশাকবিধি মানছেন না।
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নারীরা কাজে যোগ দিতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।
নিষেধাজ্ঞা না মানলে সংস্থাগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তালেবান সরকার।
নারীদের কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসার পর কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, এনআরসি ও সেভ দ্য চিলড্রেন এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় নারীদের সহযোগিতা না পেলে ২০২১ সালের আগস্ট থেকে লাখও আফগানের প্রয়োজনে তাদের কাছে তারা পৌঁছাতে পারত না।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তালেবানের এ নির্দেশ শোনার পর আমরা কার্যক্রম স্থগিত করেছি। আফগানিস্তানে আমাদের পরিচালিত জীবন রক্ষাকারী কর্মকাণ্ডে যাতে নারী ও পুরুষ সমানভাবে সহযোগিতা করে যেতে পারবে, সেই দাবি জানাচ্ছি।’
ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) বলেছে, আফগানিস্তানজুড়ে আমাদের প্রায় ৩ হাজার নারী কর্মী রয়েছে। আমাদের সেবা আফগানদের পৌঁছে দিতে আমরা সব পর্যায়ের নারী কর্মীর ওপর নির্ভরশীল। যদি তাদের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়, তবে আমরা প্রয়োজনের সময় সেবা পৌঁছাতে পারব না।
তালেবান সরকার এনজিওতে কর্মরত নারীদের বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে ইসলামিক রিলিফ তা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক শীর্ষ সমন্বয়ক রমিজ অলকবারোভ বলেন, জাতিসংঘ এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করাতে চেষ্টা করছে। এটি পুরো মানবিক সহায়তাকারী সম্প্রদায়গুলোর জন্য একটি লালরেখা।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, এনজিওগুলোতে দেশটির নারীদের কাজ করার ওপর থেকে তালেবান নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে জাতিসংঘ মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারে।
তবে তালেবান তাদের আদেশে আসলে কী বোঝাতে চেয়েছে, তা পরিষ্কার নয় বলে জানান রমিজ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তালেবানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতিসংঘকে বলেছেন, সংস্থাটি তাদের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারবে এবং নারীরাও এ-সংক্রান্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্কে টালমাটাল হয়ে উঠেছে ভারতের অর্থনীতি। সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজারে আঘাত লাগায় এর প্রভাব পড়েছে মুদ্রা ও শেয়ারবাজার উভয় খাতেই।
মঙ্গলবার ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপি নেমে গেছে প্রতি ডলারে ৮৮ দশমিক ১৬ রুপিতে যা রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
গত সোমবার এক পর্যায়ে রুপি আরও কমে দাঁড়ায় ৮৮ দশমিক ৩৩-এ, যদিও দিনের শেষে সামান্য ঘুরে ৮৮ দশমিক ১০-এ স্থির হয়। ফরেক্স ব্যবসায়ীদের মতে, ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক তহবিল প্রত্যাহার ও ডলারের বাড়তি চাহিদাই রুপির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে।
গত তিন সেশনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছেন। সিআর ফরেক্স অ্যাডভাইজর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমিত পাবাড়ি বলেন, ‘এ ধরনের ব্যাপক বহিঃপ্রবাহ শুধু রুপিকে চাপে ফেলছে না, বরং স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ প্রবণতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপে ভারতীয় রপ্তানির প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রুপির জন্য ৮৮ দশমিক ৫০ বড় প্রতিরোধ সীমা হতে পারে আর ৮৭ দশমিক ৫০ সমর্থন সীমা। তবে মার্কিন শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটতে না পারায় ঝুঁকি এখনো নিম্নমুখী।
গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববাজারে ডলারের সূচক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৮৪-তে। একই সময়ে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ০.৪৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬৮ দশমিক ৪৫ ডলার।
ভারতের শেয়ারবাজারে অবশ্য দিনের শুরুতে কিছুটা উত্থান দেখা গেছে। সেনসেক্স বেড়েছে ২০৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৫৭১ দশমিক ৯৪-এ। নিফটি সূচক বেড়েছে ৬০ দশমিক ৮ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৬৮৫ দশমিক ৮৫-এ। তবে সোমবার বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ১ হাজার ৪২৯ কোটি রুপির শেয়ার বিক্রি করেছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত সোমবার দাবি করেছেন, ভারত মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক শূন্যে নামানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে তার মন্তব্য, এই সিদ্ধান্ত অনেক দেরিতে এসেছে। তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে লেখেন, ‘ওরা এখন শুল্ক শূন্যে নামানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু সময় ফুরিয়ে আসছে। অনেক বছর আগেই এটা করা উচিত ছিল। ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এতদিন ধরে ‘একতরফা বিপর্যয়’ ছাড়া কিছুই নয়।’
গাজা যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি করার আহ্বান জানিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন ইসরায়েলি চিকিৎসকরা। হামাসের কাছ থেকে বন্দীদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একটি বিস্তৃত চুক্তির দাবি জানিয়ে তেল আবিবের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করেন তারা। খবর আল জাজিরার।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এবং আল জাজিরার সানাদ ফ্যাক্ট-চেকিং এজেন্সির যাচাই করা ফুটেজে বিক্ষোভকারীদের একটি দলকে প্ল্যাকার্ড ধরে, ট্র্যাফিক অবরোধ করে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চিকিৎসকরা বলেন, যুদ্ধ বন্ধ করুন এবং সবাইকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনুন। তাদের দাবি, তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে এবং ইসরায়েলকে ভুল পথ থেকে সরিয়ে আনতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ আগ্রাসন নিহতের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকালে নতুন করে আরও ১৭ জনকে ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে যাদের মধ্যে ছয়জনই ত্রাণের অপেক্ষায় ছিলেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী সেখানে অনাহারে এখন পর্যন্ত ৩৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজা শহরে নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার সময় শাতি শরণার্থী শিবিরের কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করেছে।
১০ বছরের জন্য গাজার নিয়ন্ত্রণ চায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য গাজা উপত্যকা পরিচালনা করার এবং এটিকে একটি পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট গাজার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের একটি সংঘাতপরবর্তী পরিকল্পনার বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এই পরিকল্পনা গাজা উপত্যকাকে কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে পরিচালিত একটি ট্রাস্টিশিপে পরিণত করবে। একই সঙ্গে একে পর্যটন অবকাশকেন্দ্র এবং উচ্চ প্রযুক্তির উৎপাদন ও প্রযুক্তিকেন্দ্রে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা করছে।
এ পরিকল্পনা গত ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্পের করা এক মন্তব্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করবে, অধিবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নেবে এবং উপত্যকাটি পুনর্নির্মাণ করবে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার আওতায় গাজার ২০ লাখের বেশি মানুষকে অস্থায়ীভাবে অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে। তারা স্বেচ্ছায় সরে যেতে পারে অথবা উপত্যকার ভেতরে সীমিত ও সুরক্ষিত এলাকার মধ্যে থাকতে পারে।
ইসরায়েল পশ্চিম তীর দখলে নেবে
যুক্তরাষ্ট্র যেখানে গাজার দখল নিতে চাচ্ছে, সেখানে পশ্চিম তীরের দখল নিতে চাইছে ইসরায়েল। তিনজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে এএফপি জানায়, ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েল পশ্চিম তীরকে নিজের সঙ্গে একীভূত করবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় সংঘাত চলছে।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পের পর মঙ্গলবার উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য জোর তল্লাশী চালিয়ে যাচ্ছে।
ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগটিতে ৮শ’ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
আফগানিস্তানে রোববার মধ্যরাতে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে পাহাড়ি প্রদেশগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প এবং তার পরে কমপক্ষে পাঁচটি আফটারশক (ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন) আঘাত হানে।
কুনার প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান এহসানুল্লাহ এহসান বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, ‘জীবিতদের সন্ধানে রাতভর অনুসন্ধান চালানো হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘দূরবর্তী গ্রামে এখনও আহত মানুষ রয়ে গেছেন, যাদের হাসপাতালে পাঠানো প্রয়োজন।’
গ্রামবাসীরা উদ্ধার প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে। তারা উপত্যকায় নির্মিত ঘরবাড়ির ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করছে।
গ্রামবাসীরা লাশ দাফনের আগে তাদের জানাজা পড়েছে। লাশগুলো সাদা কাফনের কাপড়ে মুড়িয়েছিল। মৃতদের মধ্যে কয়েকটি শিশুও ছিল।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, অবরুদ্ধ রাস্তার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কিছু গ্রাম এখনও দুর্গম।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার (১৭ মাইল) দূরে একটি অগভীর ভূকম্পন আঘাত হানে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের আট কিলোমিটার গভীরে।
কয়েক দশক ধরে সংঘাতের পর, আফগানিস্তান বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ, দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকটের মুখোমুখি এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবেশী পাকিস্তান ও ইরান থেকে লাখ লাখ আফগানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে বিদেশি সাহায্য হ্রাস পেয়েছে।
২০২৫ সালের প্রথম দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বৃহত্তম সাহায্য দাতা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর আফগানিস্তানে সামান্য তহবিল ছাড়া বাকি সব তহবিল বাতিল করা হয়েছে।
জাতিসংঘ এই বছর জুন মাসে তাদের বৈশ্বিক মানবিক সহায়তা কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে।
সোমবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেছেন, তারা ‘দ্রুত চাহিদা মূল্যায়ন, জরুরি সহায়তা প্রদান ও অতিরিক্ত সহায়তা সংগ্রহের প্রস্তুতির’ জন্য আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে এবং প্রাথমিকভাবে ৫ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং একাধিক আফটারশকের প্রভাবে ৮০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে বিশাল উদ্ধার অভিযান চলছে।
রিখটার স্কেলে ৬.০ মাত্রার এই ভূমিকম্পটি গত রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের দুর্গম উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুনার প্রদেশে আঘাত হানে। এতে কাবুল থেকে প্রতিবেশী পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ পর্যন্ত কেঁপে ওঠে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য অনুসারে, ১২ লাখেরও বেশি মানুষ সম্ভবত খুব শক্তিশালী কম্পন অনুভব করেছেন।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের পূর্বে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে শুধুমাত্র প্রত্যন্ত কুনার প্রদেশেই প্রায় ৮০০ জন নিহত এবং ২ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, পার্শ্ববর্তী নাঙ্গারহার প্রদেশে আরও ১২ জন নিহত এবং ২৫৫ জন আহত হয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।’
আফগানদের বেশিরভাগই মাটির ও ইটের তৈরি নিচু বাড়িতে বাস করেন। সেগুলো অল্পতেই ধসে পড়ার ঝুঁকিতে থাকে।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, দুর্গম কুনার প্রদেশের কিছু গ্রামে রাস্তাঘাট বন্ধ থাকার কারণে এখনো পৌঁছানো যায়নি।
তালেবান কর্তৃপক্ষ এবং জাতিসংঘ দুর্গত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৪০টি বিমানে উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
কুনারের নুরগাল জেলার কৃষি বিভাগের সদস্য ইজাজ উলহাক ইয়াদ বলেন, ‘প্রচণ্ড ভয় এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে, শিশু এবং নারীরা চিৎকার করছিল। আমরা আমাদের জীবনে কখনো এমন কিছু অনুভব করিনি।’
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে আসা ৪০ লাকেরও বেশি আফগানের মধ্যে ভূমিকম্পবিধ্বস্ত গ্রামে বসবাসকারী অনেকেই রয়েছেন।
ইউএসজিএস অনুসারে, নাঙ্গারহার প্রদেশের জালালাবাদ শহর থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ ভোরে দেশটিতে আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর আমি আফগানিস্তানের জনগণের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি।’
এদিকে, প্রাথমিক ভূমিকম্পের পর সারারাত ধরে কমপক্ষে পাঁচটি আফটারশক অনুভূত হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটি ছিল ভোর ৪টার ঠিক পরে ৫.২ মাত্রার।
আফগানিস্তানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়, বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালায়। সেখানে ইউরেশিয়ান এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল।
প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত শুক্রবার থেকে শনিবার রাতভর নাঙ্গারহার প্রদেশে বন্যাও দেখা দিয়েছে, যেখানে পাঁচজন নিহত এবং ফসল-সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে পশ্চিম হেরাত প্রদেশ ৬.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়। এর ফলে তখন ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং ৬৩ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শুরু করা বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার বিশ্ব দেখলো- তিন শীর্ষ নেতার করমর্দন, হাসি ও বন্ধুর মতো অভিবাদন। চীনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে এমন দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছেন আলোকচিত্রীরা। ওই তিন শীর্ষ নেতা হলেন শি চিনপিং, ভ্লাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দৃশ্যের শুরুতেই দেখা যায় সভা কক্ষে হাত ধরে প্রবেশ করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে তখন বিশ্বের অন্য দেশের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। পুতিন ও মোদি কক্ষে প্রবেশ করে সরাসরি চীনের প্রসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের কাছে যান। একে অপরের সঙ্গে হাত মেলান। তখন ওই তিনজনকে ঘিরে অনুবাদকসহ অন্যদের একটি বৃত্ত তৈরি হয়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে পুতিন হেসে ওঠেন। অট্টহাসি হাসেন নরেন্দ্র মোদিও।
পুতিন ও মোদির ওই কক্ষে প্রবেশের একটি ভিডিও প্রচার করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিও। সেখানে দেখা যায়, ওই দুই নেতার হেঁটে আসার সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। টেলিভিশনে তখন শাহবাজ শরিফকে বৃত্ত দ্বারা চিহ্নিত করে দেখানো হয়। টেলিভিশনটির লাইভ অনুষ্ঠান চলার সময় ভিডিওটির ওই অংশটুকু একাধিকবার দেখানো হয়।
তিন বৃহৎ অর্থনীতির দেশের প্রধানদের এমন বন্ধুত্বপূর্ণ কথোপকথন কী বার্তা দেয়? বিশ্লেষকরা বলছেন, ওই দৃশ্য একাধিক বার্তা বহন করে। শি চিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধুত্ব দেখায় তারা যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানানো পরিবর্তনশীল বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আছেন। আর নরেন্দ্র মোদি দেখাতে চেয়েছেন চীন, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ঠিক কতটা গভীর।
কোনো কোনো সম্মেলনে কিছু দৃশ্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রেও সেটাই হচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর তক্ষশিলা ইনস্টিটিউশনের ইন্দো-প্যাসিফিক স্টাডিজের প্রধান মনোজ কেওয়ালরামানি। তিনি বলছেন, এখন হোয়াইট হাউসকে বুঝতে হবে যে তাদের নেওয়া নীতিই অন্য দেশগুলোকে বিকল্প খুঁজতে বাধ্য করছে।
চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) ওই সম্মেলন দেখাচ্ছে, বাণিজ্য যুদ্ধের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভূরাজনীতিতে যে ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন, তা অনেকগুলো দেশকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসেছে। ওই সম্মেলনে ২০টিরও বেশি দেশ অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূরাজনীতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন, সেটিই এখন চীন-রাশিয়াকে একটি প্ল্যাটফর্মে নেতৃত্বে দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলো এখন অংশীদারত্বের সম্পর্ক গভীর করছে।
এদিকে এসসিও সম্মেলনের আগে তিন নেতাকেই ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোদি সেই ছবি পোস্ট করেছেন।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মোদি কিছু একটা বলছেন- তা যেন মনোযোগ দিয়ে শুনছেন পুতিন ও শি। সেসময় শিকে মোদির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে তারা কী নিয়ে আড্ডায় মজেছেন তা জানা যায়নি।
এছাড়া আরও কিছু ছবি পোস্ট করেছেন মোদি। সেইসব ছবিতে মোদি-পুতিনকে করমর্দন ও কোলাকুলি করতে দেখা যাচ্ছে এবং তারা দুইজনে ছিলেন হাস্যোজ্বল। মোদি তার পোস্টে লিখেছেন, পুতিনের সঙ্গে দেখা করা সবসময় আনন্দের।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের আবহে মোদি-পুতিন এবং শির ওই ঘনিষ্ঠতাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ধাক্কা খেয়েছে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণেই ওই শুল্কের বোঝা চাপানো হয়েছে, দাবি ওয়াশিংটনের।
তবে চীনের উপর কোনও বাড়তি শুল্ক এখনো আরোপ করা হয়নি। ওই পরিস্থিতিতে তিন রাষ্ট্রপ্রধানের ঘনিষ্ঠতায় ত্রিদেশীয় কোনো অক্ষ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
শি’র সঙ্গে ইতোমধ্যে বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছেন মোদি। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস রিপোর্ট করেছে, বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি মোদিকে বলেন, চীন ও ভারত পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়– বরং তারা হলো সহযোগিতার অংশীদার (কোঅপারেশন পার্টনারস)।
দুদেশ যে পরস্পরের কাছে হুমকি নয়, বরং একে অন্যের কাছে ‘উন্নয়নের সুযোগ’, সে কথাও বলেছেন শি।
গাজায় ‘অবিলম্বে’ মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি করতে জার্মান সরকারের মানবাধিকার ও মানবিক সহায়তা প্রতিনিধি আহ্বান জানান। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি অঞ্চল সফরের আগে সোমবার তিনি এ কথা বলেন।
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত ইসরাইল জার্মানির রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সমর্থন পেয়ে আসছিল। তবে গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎসের সুর ইসরাইলের প্রতি কঠোর হয়েছে।
জাতিসংঘ গত মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। এর আগে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছিল যে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলের পাঁচ লাখ মানুষ ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতির মুখোমুখি রয়েছে।
জার্মানির মের্ৎস কনজারভেটিভ সরকার জোটের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস পার্টির আইনপ্রণেতা লার্স কাস্তেলুচ্চি বলেন, ‘ইসরাইল সরকারকে অবশ্যই অবিলম্বে, পুরোপুরি ও টেকসইভাবে এবং মানবিক নীতি ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গাজার মানবিক পরিস্থিতি উন্নত করতে হবে।’
তিনি এই সংঘাতে আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে শিশুদের ‘অপরিসীম’ দুর্ভোগের নিন্দা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এই দুর্ভোগের জন্য তাদের কোনো দোষ বা দায় নেই।’
কাস্তেলুচ্চি আরও বলেন, গাজায় জার্মানির মানবিক সহায়তা ‘কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে’ তবে যাদের সাহায্যের প্রয়োজন তাদের কাছে তা না পৌঁছালে এর কোন অর্থ নেই।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরাইলের নিরাপত্তার প্রতি জার্মানির ‘বিশেষ দায়িত্ব’ রয়েছে।
এছাড়া হামাসের হাতে জিম্মি থাকা বন্দীদের ‘অবিলম্বে মুক্তি’ দেওয়ারও দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি যুদ্ধবিরতির জরুরি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান’-এর পক্ষে কথা বলেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলের ওপর হামাসের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরাইলের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ওই হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
ওই হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনও গাজায় রয়েছে। ধারণা করা হয়, তাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত আছেন।
জাতিসংঘের নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরাইলের পাল্টা হামলায় অন্তত ৬৩ হাজার ৪৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের কুনার প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ছয় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ।
স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) এক বিৃবতিতে তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে ৬ দশমিক শূন্য মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে কুনার প্রদেশে ৬১০ জন এবং পাশের নানগারহার প্রদেশে ১২ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দেড় হাজারের বেশি মানুষ। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার দূরত্ব এবং সেখানে পৌঁছানোর অসুবিধার কারণে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বিবিসির এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ওই ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। এরপর থেকে অন্তত আরও তিনটি কম্পন অনভূত হয়েছে। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
স্থানীয়রা জানান, ভূমিকম্পকেন্দ্রের কাছাকাছি ভূমিধস হয়েছে। এতে অনেক এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং উদ্ধারকারীদের জন্য সেখানে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, কুনার প্রদেশের নুর গাল, সাওকি, ওয়াতপুর, মানোগি এবং চাপা দারা জেলায় হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, নিহত ও আহতদের সংখ্যা চূড়ান্ত নয়, কারণ কর্মকর্তারা এখনো অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ভূমিধসের কারণে সাওকি জেলার দেওয়া গুল এবং নূর গুল জেলার মাজার দারা যাওয়ার সড়কগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে উদ্ধারকারী দলগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে অসুবিধা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, দুঃখের বিষয়, রোববার রাতের ভূমিকম্পে আমাদের পূর্বাঞ্চলীয় কিছু প্রদেশে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তা এবং বাসিন্দারা উদ্ধার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত আছেন। বাসিন্দাদের জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য