পৃথিবী শান্তির দুর্ভিক্ষে ধুঁকছে বলে মন্তব্য করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। ভ্যাটিকান থেকে বড়দিন বার্তায় রোববার এ মন্তব্য করেন পোপ।
এ সময় ইউক্রেনে ‘যুক্তিহীন যুদ্ধ’ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সংকটে ‘অস্ত্র হিসেবে খাদ্য’ ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানান পোপ।
বিশ্বের মোট চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ গম রপ্তানি করে ইউক্রেন। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ান আক্রমণের পর থেকে বিশ্বজুড়েই গমের দাম বেড়ে যায়।
ফ্রান্সিসের পোপ পদ গ্রহণের পর থেকে এটি ছিল তার দশম বড়দিনের ভাষণ। পোপের ১০ মিনিটের বক্তৃতার বেশিরভাগ অংশই ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গ।
তিনি বলেন, ‘এই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাট্যমঞ্চে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলও ‘শান্তির দুর্ভিক্ষ’-এ ভুগবে।’
ভাষণে পোপ মধ্যপ্রাচ্য, মিয়ানমার, হাইতি এবং আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে সংঘাত ও মানবিক সংকটের কথা তুলে ধরেন।
ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্যও প্রার্থনা করেন পোপ। ইসলামিক শাসনের ইরানে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রবল সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাবে, বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৬৯ শিশুসহ ৫ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারের ব্যাসিলিকার বারান্দা থেকে দেয়া বক্তৃতায় ৮৬ বছর বয়সী পোপ যুদ্ধের মানবিক মূল্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় খাবারের অপচয় এবং অস্ত্রের জন্য সম্পদ ব্যয় বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
পোপ বলেন, ‘ইউক্রেনের যুদ্ধ এই পরিস্থিতিকে আরও চাঙা করেছে। বিশেষ করে আফগানিস্তানে এবং হর্ন অফ আফ্রিকার দেশগুলোর জনগণকে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
‘আমরা জানি যে প্রতিটি যুদ্ধ ক্ষুধা সৃষ্টি করে। খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। লোকজন ইতোমধ্যেই তা টের পাচ্ছে।’
পোপ বলেন, ‘যারা রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করে তাদের উচিত খাদ্যকে কেবল শান্তির উপকরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।’
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু।
বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকীকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার ‘তোমার আলোয় উজ্জ্বল বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আলোচনায় টুকু বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধ, শহীদের সংখ্যা, সংবিধান ও নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করে, তারা বাংলাদেশকে অস্বীকার করে।’
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হবে স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তির মধ্যে লড়াই।
জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতির হাজার বছরের দর্শন ও সংস্কৃতিকে মথিত করে প্রমাণ করেছেন, এ দেশের তৃণমূল জনগোষ্ঠী অসাম্প্রদায়িক।’
স্মার্ট বাঙালি আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে তার জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত ষড়যন্ত্র হয়েছে। নাশকতা ও হিংসাত্মক অপকর্মের মধ্য দিয়ে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক দর্শন ও সম্প্রীতির পরিবেশ ধ্বংসের অপচেষ্টা হয়েছে। তার ধারাবাহিকতা অর্ধশতক পেরিয়ে আজও মাঝেমধ্যে দেখা যায়।’
আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম তুলে ধরে আলোচনা করেন রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন মতিন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. রশিদ আসকারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিমান বড়ুয়া, ড. অসীম কুমার সরকার, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. আহমদ আবুল কালাম ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালযের গবেষক ড. চিন্ময় হাওলাদার।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশুদিবসে মেট্রো ট্রেনে চড়ার সুযোগ পেল ৭০ এতিম ও পথশিশু।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ শুক্রবার সকালে সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুকে ট্রেনে চড়ার ব্যবস্থা করে।
বিভাগের উপসচিব আবু নাছের জানান, বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশুদিবসে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মেট্রো ট্রেনে ভ্রমণ করানো হয়েছে। ট্রেনে চড়তে পেরে তারা বেশ আনন্দ পেয়েছে।
তিনি আরও জানান, সকালে আগারগাঁও স্টেশন থেকে উত্তরা (উত্তর) এবং উত্তরা (উত্তর) স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত মেট্রো ট্রেনে চড়ে শিশুরা। উত্তরা (উত্তর) স্টেশনে কাটা হয় কেক।
উপসচিব আরও জানান, ট্রেনে চড়া শিশুদের বিআরটিসির ছাদখোলা দোতলা বাসে করে জাতীয় সংসদ ভবন, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা চত্বর ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার দেখানো হবে।
ছোটদের নোবেল প্রাইজখ্যাত ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার’-এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান। এবার বিশ্বের লাখ লাখ শিশু ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার’ বিজয়ী নির্বাচনের জন্য বৈশ্বিক ভোটাভুটিতে অংশ নেবে।
সারা বিশ্বের শিশুদের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী ইতোমধ্যে নৌকাস্কুলের উদ্ভাবক রেজোয়ানসহ শিশুদের কল্যাণে নিবেদিত আরও দুই কীর্তিমান ব্যক্তিকে ‘শিশু অধিকার নায়ক’ নির্বাচন করেছে। তারা হলেন- কানাডার সিন্ডি ব্ল্যাকস্টক ও ভিয়েতনামের থিচ নু মিন তু।
এবার লাখ লাখ শিশুর বৈশ্বিক ভোটাভুটির মাধ্যমে এই তিনজনের একজনকে সেরা নির্বাচনের পালা, যার হাতে উঠবে ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার (ডাব্লিউসিপি), ২০২৩’।
সুইডেনভিত্তিক এই পুরস্কারটিকে বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোতে ‘ছোটদের নোবেল প্রাইজ’ আখ্যা দেয়া হয়।
এ পর্যন্ত যারা এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন তারা গত প্রায় ১০০ বছর ধরে বিশ্বের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে চলেছেন। বাংলাদেশের স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান তাদেরই একজন। গত সিকি শতাব্দী ধরে তিনি বাংলাদেশে জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে ক্রমবর্ধমান বন্যা ও দারিদ্র্য সত্ত্বেও সব শিশু, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত কন্যাশিশুদের স্কুলে পড়ালেখা শেখার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে চলেছেন।
রেজোয়ান ও তার প্রতিষ্ঠান ‘সিধুলাই স্ব-নির্ভর সংস্থা’ শিশুদের জন্য ২৬টি ভাসমান স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেগুলো দেশ-বিদেশে খ্যাতি পেয়েছে রেজোয়ানের নৌকা স্কুল নামে। বিশেষভাবে ডিজাইনকৃত নৌকায় ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি রয়েছে ভাসমান লাইব্রেরি ও স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক। কিশোরী-তরুণীদের জন্য রয়েছে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। রেজোয়ানের উদ্ভাবিত ভাসমান স্কুলের এই ধারণাটি বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৃথিবীর আরও কয়েকটি দেশে বাস্তবায়ন হয়েছে।
সিনডি গত ৩০ বছর ধরে আদিবাসী শিশুদের সুশিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, ঘরে নিরাপদে বেড়ে ওঠা এবং নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব করার অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করছেন।
আর বৌদ্ধ নান থিচ নু এতিম ও অসহায় পরিবারের শিশুদের রক্ষায় প্রায় ৪০ বছর ধরে সংগ্রাম করে চলেছেন।
২০০০ সাল থেকে এই পুরস্কারের মাধ্যমে বিশ্বের ৪ কোটি ৬০ লাখ শিশু জেনে আসছে ‘শিশু অধিকার নায়ক’রা কীভাবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। পরে এই শিশুরাই বৈশ্বিক ভোটাভুটিতে অংশ নিয়ে তিনজন শিশু অধিকার নায়কের মধ্য থেকে একজনকে বিশ্ব শিশু পুরস্কারের জন্য নির্বাচন করে।
আগামী ৪ অক্টোবর সুইডেনের মেরিফ্রেডে গ্রিপশোলম প্রাসাদে এবারের ২০তম বিশ্ব শিশু পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মোহাম্মদ রেজোয়ানসহ তিনজন শিশু অধিকার নায়ককে সম্মাননা দেয়া হবে। অনুষ্ঠানের হোস্ট হিসেবে থাকবে ১২টি দেশের শিশুরা। পুরস্কার প্রদান করার কাজে সেখানে উপস্থিত থেকে শিশুদের সহযোগিতা করবেন সুইডেনের রানী সিলভিয়া।
এই পুরস্কারের অর্থমূল্য সুইডিশ মুদ্রায় ৫ লাখ ক্রোনা, যা প্রায় ৫০ লাখ টাকার বেশি। এই অর্থ তিনজন শিশু অধিকার নায়ককে ভাগ করে দেয়া হবে, যা তাদের কাজে সহায়তা করবে। এভাবে এই অর্থ সেই ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের লাখ লাখ অসহায় শিশুর জীবনমান উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে।
মর্যাদাশীল এই পুরস্কারের পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে রয়েছেন মালালা ইউসুফজাই, প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলা ও ডেসমন্ড টুটু, রানী সিলভিয়াসহ সুইডেনের বেশ কয়েকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী। তাছাড়া এই ‘বিশ্ব শিশু পুরস্কার’ প্রোগ্রামে ১২০টি দেশের ৭৬ হাজার স্কুল ও ৮৪৯টি সংগঠনের সহযোগিতা রয়েছে।
বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ফারাহ জাবিন শাম্মীর বই ‘করোনাপঞ্জি’।
সোমবার বিকেলে মেলায় বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান।
বইটির মুখবন্ধও লিখেছেন ড. গোলাম রহমান। তিনি বলেন, করোনাকালীন সারাবিশ্বের ভয়াবহ যে সংকট এবং সেই সংকটকালে নতুন জীবনযাপন ব্যবস্থায় মানুষের যে বেঁচে থাকার তাগিদ, যে চাহিদা মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়, মানুষ মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে যে সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে এই বইতে লেখিকা তা প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরেছেন। এই বইটি একটা দীর্ঘ কর্মের ফসল। আমি এর বহুল প্রচার কামনা করি।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন করোনাপঞ্জির লেখক ফারাহ জাবিন শাম্মী, এনটিভি অনলাইনের সম্পাদক ফকরউদ্দিন জুয়েল, বইটির প্রকাশক আবু সাঈদ সুরুজসহ শুভাকাঙ্খীরা।
বইটিতে মূল্যবান মতামত রয়েছে দৈনিক ইত্তেফাক সম্পাদক ও পাক্ষিক অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান এবং বিজ্ঞানী, লেখক, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা অ্যাট বার্মিংহামের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাগিব হাসান। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন অঙ্কন শিল্পী মাসুক হেলাল। প্রকাশিত হয়েছে স্বপ্ন ৭১ প্রকাশন থেকে।
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ১৯ ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানের হাতে ‘একুশে পদক-২০২৩’ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার পর দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার হস্তান্তর শুরু করেন সরকারপ্রধান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা।
একুশে পদক প্রদান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেন।
১৯৫২ সালে মাতৃভাষার জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে জাতি ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করে।
বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে একুশে পদকপ্রাপ্তদের দেয়া অর্থের পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে তা বাড়িয়ে চার লাখ টাকা করা হয়।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সরকার নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য একুশে পদকের জন্য ১৯ বিশিষ্ট নাগরিক ও দুটি সংস্থার নাম ঘোষণা করে।
এ বছর ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে তিনজন, মুক্তিযুদ্ধে একজন, শিল্পকলায় আটজন (অভিনয়, সংগীত, আবৃত্তি, চারু ও চিত্রকলা), রাজনীতিতে দুজন, শিক্ষায় এক ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান, সমাজসেবায় এক ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান এবং সাংবাদিকতা, গবেষণা এবং ভাষা ও সাহিত্যে একজন করে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হন।
ভাষা আন্দোলন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের জন্য খালেদা মঞ্জুর-ই খুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক (মরণোত্তর) এবং হাজী মোহাম্মদ মজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়।
শিল্পকলা বিভাগে অভিনয় ক্যাটাগরিতে মাসুদ আলী খান ও শিমুল ইউসুফ এবং সংগীত বিভাগে মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আবদুল হাকিম ও ফজল-এ-খোদা (মরণোত্তর), আবৃত্তি বিভাগে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, শিল্পকলায় নওয়াজিশ আলী খান এবং চিত্রকলা বিভাগে কনক চাঁপা চাকমা পুরস্কার পাচ্ছেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে পুরস্কার পাচ্ছেন মমতাজ উদ্দিন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), গবেষণায় ডা. মো. আবদুল মজিদ, শিক্ষায় অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম (মরণোত্তর), সমাজসেবায় সাইদুল হক, অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইসলাম (মরণোত্তর), রাজনীতিতে আখতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে ড. মনিরুজ্জামান পুরস্কার পাচ্ছেন।
শিক্ষা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং সমাজসেবায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এ পুরস্কার পাচ্ছে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ‘একুশে পদক’ প্রবর্তন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্বর্ণপদক, সম্মাননা সনদ ও নগদ অর্থ দিয়ে পুরস্কার দেয়।
গত বছর ২৪ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে মর্যাদাপূর্ণ এ পদক দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:বিশ্ব ভালোবাসার দিনে ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিন জানালেন জীবনের প্রতি, মানুষের প্রতি ভালোবাসার কথা।
মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট দিয়ে এ কথা জানান তিনি।
তসলিমা লিখেছেন, ‘আমার কাছে প্রতিটি দিনই ভালোবাসার দিন। আকাশ বাতাস ভালোবাসি, জল মাটি ভালোবাসি, বৃক্ষরাজি প্রাণীকুল ভালোবাসি। ভালোবাসি মানুষ। কালো সাদা হলুদ বাদামি মানুষ। ভালোবাসি নারী পুরুষ।’
তিনি লিখেছেন, ‘আমার কাছে প্রতিটি দিনই ভালোবাসার দিন। ভালোবাসি সততা আর সরলতা। ভালোবাসি স্বনির্ভরতা। সাহস আর সভ্যতা। আমার কাছে প্রতিটি দিনই ভালোবাসার দিন। ভালোবাসি জীবন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত।’
সুইডেনের পাসপোর্টধারী হিসেবে দিল্লিতে বসবাস করছেন তসলিমা। ১৯৯৪ সালে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে তখন আন্দোলনের মুখে পড়তে হয় তাকে।
সম্প্রতি ভারতে ভুল চিকিৎসার শিকার হওয়ার তথ্য জানিয়ে ফেসবুকে টানা পোস্ট দেন এই লেখক। সেখানকার চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আনেন নানা অভিযোগ।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে যে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছিল, ১০ দিন বাদে তার বার্ষিকী। এ সময়ে প্রাণ গেছে হাজারো সামরিক-বেসামরিক মানুষের। একটু নিরাপদে বাঁচার আশায় ঘর ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে গেছে ৮০ লাখের বেশি ইউক্রেনীয়। যুদ্ধ তবুও চলছে সমরের নিয়মে।
করোনাভাইরাস মহামারি আকারে এসে পৃথিবীকে উলট-পালট করে দিয়ে যখন একটু ক্ষান্ত দিয়েছিল, তখনই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে এলো দৃশ্যত অন্তহীন এ যুদ্ধ। এ দুইয়ের প্রভাব ও সুনীতির অভাবে একে একে ঘায়েল হতে থাকে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি। বাদ পড়েনি মোড়ল রাষ্ট্রগুলোও।
মহামারি ও যুদ্ধের মধ্যে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে যায় গত বছরের মে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি হয়ে পড়ে ঋণখেলাপি।
এ অঞ্চলের আরেক দেশ পাকিস্তানের অবস্থাও সঙ্গিন। রিজার্ভ কমতে কমতে ৩০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে। সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে সহায়তার অর্থ পেতে আদাজল খেয়ে নেমেছেন রাষ্ট্রের কর্তারা।
প্রতিবেশীদের মতো রিজার্ভ ছাড়াও নানামাত্রিক সংকটে আমরা। আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি পেলেও আমাদের ঘর আলোকিত করার বিদ্যুতের দাম বেড়েছে; রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের মূল্য চড়া। মাছ, মাংস, তরিতরকারির দর বাড়ার প্রতিযোগিতা চলছে। শীতে কিছুটা কমে আসা লোডশেডিং গরমে ঘন ঘন হওয়ার শঙ্কাও আছে।
দুই মহাদেশ বিস্তৃত তুরস্ক ও যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিবেশী সিরিয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারির সর্বনাশা ভূমিকম্পে মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ৩৬ হাজার ছাড়িয়েছে। জমে যাওয়া শীতে ভয়াবহ দুর্যোগে রাতারাতি ফকির হয়ে গেছেন অনেক ‘বাদশাহ’। আকস্মিক শূন্যতা সঙ্গী হয়েছে লাখ লাখ মানুষের।
চারিদিকে এত দুর্দশা আর হতাশার মধ্যে আনন্দের তীব্র সংকটে থাকা বাংলাদেশিদের কাছে নবযৌবনের বার্তা নিয়ে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। শুধু যোগ-বিয়োগের খেলাময় জীবনে এ যেন ক্ষণিকের বিরতি।
অফিস-বাসা-অফিসে নিয়মিত হয়ে পড়া মধ্যবিত্ত আজ কিছু সময়ের জন্য থাকতে চাইবেন আত্মভোলা হয়ে; বর্ণিল জামা গায়ে উৎসবের রঙে রাঙাতে চাইবেন ক্রমশ বিবর্ণ হয়ে পড়া চিত্তকে। উচ্চবিত্তও পহেলা ফাল্গুন আর ভ্যালেন্টাইন’সকে জায়গা করে দেবেন রুটিনে।
নিম্নবিত্তের জীবনেও লাগবে ফাগুনের ঢেউ। তার ফেরি করা জিনিসে তৃপ্ত হবে বাকি দুই বিত্তের চিত্ত।
শীতে আড়াল হয়ে যাওয়া রূপের আগুন ফাগুনে ফিরে পাবে প্রকৃতি। পত্রময় বৃক্ষে দেখা যাবে নতুন পাতার বাহার। আপন রঙে ভুবন রাঙাবে ফুল গাছগুলো।
ফলদ গাছের মুকুলগুলো ধীরে ধীরে হতে থাকবে রসের আধার। পুষ্প, বৃক্ষের এই রূপের মুকুটে পালক যুক্ত করবে বর্ণিল পাখিরা। এককথায় দুর্যোগ আর দুর্ভাবনায় একাকার পৃথিবীকে ক্ষণিকের জন্য রূপ, রসে ভরিয়ে দেবে ফাল্গুন।
মৃত্যুর মিছিল আর পাশবিকতার উৎসবের মধ্যে যেমন বন্ধ থাকে না সন্তান জন্মদান, তেমনই দুঃখ-দুর্দশার মধ্যেও থেমে থাকে না বসন্তের জয়গান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য