সাউথ আফ্রিকার গাউটেং প্রদেশের বক্সবার্গ শহরে জ্বালানিবাহী ট্যাংকার বিস্ফোরণে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবারের এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন।
জরুরি পরিষেবা বিভাগের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি হাসপাতালের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) থাকা ট্যাংকারটিতে শনিবার সকালে আগুন ধরে।
স্থানীয় জরুরি পরিষেবা বিভাগের মুখপাত্র উইলিয়াম এনটিলাডি বলেন, ‘ট্যাংকারটি সেতুর নিচে ছিল। তাতে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সেখানে যান। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ট্যাংকারটিতে পরে বিস্ফোরণ হয়।’
উইলিয়াম জানান, আহতদের মধ্যে ট্যাংকারটির চালকও রয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় প্রথমে নয়জন নিহত হলেও পরে আরেকজনের মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা স্থিতিশীল; বাকিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, সেতুর নিচে বিশাল আগুনের গোলা। ট্যাংকারটিতে ৬০ হাজার লিটার এলপিজি ছিল। এ গ্যাস সাধারণত রান্নার কাজে ব্যবহার হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী জিন ম্যারি বুয়েসেন বলেন, ‘ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ হয়। পরে আমি দৌড়ে বাড়ির ওপর তলায় গিয়ে দেখি বিশাল অগ্নিশিখা।ভেবেছিলাম কোনো বাড়িতে হয়তো আগুন লেগেছে।’
১২ স্ত্রীর ঘরে ১০২ সন্তান আর নাতি-নাতনির সংখ্যা ৫৭৮ জন। এটি হচ্ছে উগান্ডার বুতালেজা জেলার বুগিসা গ্রামের বাসিন্দা মুসা হাসহ্যা কাসেরার সংসারে চিত্র।
৬৮ বছর বয়সী মুসা এএফপিকে বলেন, ‘প্রথমে এটি মজার বিষয় ছিল। এখন এটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এত বিশাল পরিবারের জন্য মাত্র দুই একর জমি রয়েছে। আমার দুই স্ত্রী চলে গেছেন কারণ আমি খাদ্য, শিক্ষা, পোশাকের মতো মৌলিক চাহিদা মেটাতে পারিনি। ’
এক সময়ের গরু ব্যবসায়ী মুসার এখন বেকার, তবে তাকে দেখতে অনেক পর্যটক তার বাড়িতে ভিড় জমান।
৬৮ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ বলেন, ‘আমার স্ত্রীরা গর্ভনিরোধক ব্যবহার করছে, কিন্তু আমি নই। আমি আর সন্তানের আশা করি না কারণ আমি আমার দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ থেকে শিক্ষা নিয়েছি।’
মুসা প্রথম বিয়ে করেন ১৯৭২ সালে। ১৮ বছর বয়সে তিনি প্রথম সন্তানের বাবা হন।
মুসা জানান, পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতেই আত্মীয় স্বজনদের পরামর্শ শুনে বেশি স্ত্রী ও সন্তান নিয়েছেন তিনি।
মুসার ১০২ সন্তানের বয়স ১০ থেকে ৫০-এর মধ্যে ও সবচেয়ে কম বয়সী স্ত্রীর বয়স ৩৫।
সন্তানদের নাম জিজ্ঞেস করা হলে মুসা বলেন, ‘আমি শুধু প্রথম ও শেষ জনের নাম মনে রাখতে পারি। বাকিদের নাম মনে নেই।
আরও পড়ুন:ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো বা ডিআর কঙ্গোর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি নদীতে অতিরিক্ত যাত্রী, পণ্য ও পশুবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় কমপক্ষে ১৪৫ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান বলে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই নৌ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছেন প্রায় ৫৫ জন।
ডিআর কঙ্গোর কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবেশী দেশ কঙ্গোর উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে বাসানকুসু শহরের কাছে লুলঙ্গা নদীতে ডুবে যায় নৌকাটি।
যে অঞ্চলে নৌকাটি ডুবে যায়, সেখানকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী পক্ষগুলোর প্রেসিডেন্ট জ্যাঁ-পিয়েরে ওয়াঙ্গেলা সাংবাদিকদের জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে কমপক্ষে ১৪৫ জন।
তার ভাষ্য, অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তবে স্থানীয়দের এভাবে গাদাগাদি করে পারাপার ছাড়া কোনো বিকল্পও নেই।
ওয়াঙ্গেলা বলেন, নৌকাটিতে ২০০ জনের মতো যাত্রী ছিল।
ডিআর কঙ্গোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে নৌকা ডুবে বিপুল প্রাণহানি নতুন কিছু নয়। সেসব এলাকায় সড়কপথে সময়মতো পৌঁছানো অসম্ভব।
যাত্রীবাহী নৌকাগুলোর বেশির ভাগই পণ্যের পাশাপাশি যাত্রীতে বোঝাই থাকে, যাদের অনেকে সাঁতার জানে না।
আফ্রিকার দেশগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা নেই বললেই চলে।
গত বছরের অক্টোবরে ডিআর কঙ্গোর ইকোয়েটর প্রদেশে কঙ্গো নদীতে নৌকা ডুবে ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল।
আরও পড়ুন:আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার গাড়িচাপায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ-পূর্বের শহর ক্যালাবারে মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
ফেডারেল রোড সেফটি কর্পসের স্থানীয় কমান্ডার মাইকানো হাসান বলেন, ‘ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে একটি টয়োটা ক্যামরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্থানীয় একটি কার্নিভালে ঢুকে পড়ে।
‘এতে সাতজন মারা গেছেন এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। চালক বেঁচে গেলেও আহত হয়েছেন।’
স্থানীয় মিডিয়াগুলো বলছে, দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। অন্যদিকে বিবিসি মৃতের সংখ্যা ১৪ বলছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার কারণে দুই বছর পর এই কার্নিভালের আয়জন করা হয়েছিল। এটিকে ঘিরে স্থানীয়দের পাশাপাশি অনেক বিদেশি পর্যটক নাইজেরিয়ায় আসেন।
পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি আরও জানায়, গাড়ির চালক মদ্যপ ছিলেন। এ কারণে তিনি গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন।
সাউথ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের অন্যতম ধনী একটি এলাকায় বড় সমাবেশে সন্ত্রাসীরা হামলার পরিকল্পনা করছে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কিছু দেশ। অপ্রত্যাশিত এই সতর্কবার্তা সাউথ আফ্রিকার সরকারের পাশাপাশি দেশটির জনগণকেও অবাক করেছে। ফলাফল, জোহানেসবার্গের রাস্তায় পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি।
সতর্কতাটি ছিল ২৯ অক্টোবর ঘিরে। তবে উত্তেজনায় পানি ঢেলে শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা সাউথ আফ্রিকার সরকারও পরে ওই হুমকি নিয়ে আর কথা বলেনি।
তবে বিশেষজ্ঞরা এই সতর্কতাকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না। তারা বলছেন, সমস্ত কর্মকাণ্ড সাউথ আফ্রিকায় একটি অসম্ভাব্য-নীরব অপরাধকে ইশারা করছে...মধ্যপ্রাচ্যের উগ্রবাদী সংগঠন-আইএস।
ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের (আইএসএস) প্রধান বিশ্লেষক মার্টিন ইউই বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিশ্চিতভাবে হামলার প্রমাণ ছিল। এটি ছিল সুনির্দিষ্ট একটি সতর্কতা। কারণ, কখন এবং কোথায় হামলা হতে যাচ্ছে তা তারা প্রকাশ করেছিল। খুব কম সতর্কতায় এই ধরনের বিবরণ থাকে।’
শুরুতে সাউথ আফ্রিকা কর্তৃপক্ষ হুমকিটিকে অতটা গুরুত্ব দেয়নি। ২৯ অক্টোবর কোনো হামলা না হলেও, এই খবরে গোটা দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যবস্থা নিতে দেরি হয়ে গেছে। যে ভয়টা করা হচ্ছিল সেটাই হয়েছে। সাউথ আফ্রিকায় ইতোমধ্যে তারা ঢুকে পড়েছে। আইএস একটি দ্রুত সম্প্রসারিত নেটওয়ার্ক। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে আফ্রিকাকে তারা তাদের দ্বিতীয় বাড়ি (সেকেন্ড হোম) বানিয়েছে।
আফ্রিকায় আইএসের উপস্থিতি মোজাম্বিকে সবচেয়ে চোখে পড়ে। সেখানে আইএস নেতা আহলু সুন্নাহ ওয়া জামা’আ (এএসডব্লিওজে) দেশটির ৩ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে; প্রায় ১০ লাখ মানুষকে করেছে বাস্তুচ্যুত। বিলিয়ন ডলারের গ্যাস বিনিয়োগের ওপর হুমকিও দিয়েছে৷
তবে প্রতিবেশী সাউথ আফ্রিকায় আইএস সমর্থকদের একটি উদীয়মান নেটওয়ার্ক। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ মুসলিম।
সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ জেসমিন ওপারম্যান বলেন, ‘আইএসের হুমকি এখানে বাড়ছে। সাউথ আফ্রিকানরা আসলে বোকা। তারা জোর করে এটা বিশ্বাস করতে চাইছে যে তাদের সঙ্গে কখনোই এমন কিছু ঘটতে পারে না।
‘সাউথ আফ্রিকা সরকার বিষয়টিকে হালকাভাবে নিয়েছে। কয়েক বছর আগে ৬০ থেকে ১০০ সাউথ আফ্রিকান আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া এবং ইরাকে চলে গিয়েছিল। তাদের কেউ কেউ ফিরে গেছেন।
‘আমাদের সজাগ হতে হবে, চোখ খুলে হুমকিটা দেখতে হবে।’
মধ্যপ্রাচ্যে ২০১৯ সালে আঞ্চলিক পরাজয়ের স্বাদ নেয় আইএস। তারপর থেকে তারা আফ্রিকায় পুনরায় সংগঠিত হয়েছে। আফ্রিকায় থিতু হতে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, দুর্বল সীমান্ত ও শাসনের দেশগুলোকে বেছে নেয় আইএস।
ইউই বলেন, ‘আফ্রিকার অন্তত ২০ দেশের আইএসের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। মধ্যপ্রাচ্যের পর আফ্রিকাকে একটি সক্রিয় হাব বানিয়েছে তারা।’
মধ্যপ্রাচ্যে আইএস খিলাফত প্রতিষ্ঠার নামে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তবে সেখানে ব্যাপক মার খেয়েছে সংঠনটি। আফ্রিকায় তাই কৌশল পাল্টেছে আইএস। সরাসরি শাসনে না গিয়ে স্থানীয় বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করছে তারা। শুধু তা-ই নয়, ‘চিরশত্রু’ আল-কায়েদার সঙ্গেও আফ্রিকায় আঁতাত করেছে আইএস।
যেসব দেশ আইএস নির্মূলে দৃঢ় অবস্থানে ছিল, সংগঠনটির পুনর্গঠনের পর সেসব দেশও হতবাক হয়েছে। একসময় আইএস এবং আল-কায়েদার মতো সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ফায়দা নিত নিরাপত্তা বাহিনীগুলো। আফ্রিকায় সেই দিনগুলো হয়তো শেষ হয়ে যাবে।
ইউই বলেন, ‘নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ। যখন জঙ্গিরা ইরাক এবং সিরিয়ায় ছিল তখন তাদের তাড়িয়ে দেয়া সহজ ছিল।
‘কিন্তু এখন যখন তারা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আপনি কীভাবে তাদের তাড়িয়ে দেবেন’?
২০১৪ সালের দিকে আফ্রিকা মহাদেশে ঢুকতে শুরু করে আইএস। মধ্যপ্রাচ্য কোণঠাসা হয়ে পড়লে তাদের মূল ফোকাস হয়ে উঠে আফ্রিকা৷ আফ্রিকান শাখাগুলো এখন মধ্যপ্রাচ্যের ঘাঁটিগুলোর চেয়েও শক্তিশালী হতে পারে।
আইএসের পাশাপাশি আফ্রিকায় অনেকগুলো সন্ত্রাসী সংগঠন সক্রিয়। তাদের কর্মকাণ্ড দিন দিন বাড়ছেই। পেন্টাগনের অর্থায়নে পরিচালিত আফ্রিকা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ অনুসারে, গত এক দশকে তাদের হামলার হার ৩০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। জঙ্গি হামলায় গত বছর ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
দক্ষিণ সাভানা অঞ্চল থেকে উত্তরে সাহারা এবং সোমালিয়াকে আলাদা করেছে বিস্তীর্ণ শুষ্ক ভূমি সাহেল। এখানে মালি, বুরকিনা ফাসো এবং নাইজারের সীমানা মিলেছে। ত্রি-সীমান্ত এই অঞ্চলটিই এখন জঙ্গিদের হটস্পট। স্থানীয়রা এখানে জঙ্গি হামলার শিকার হন; তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয় মুক্তিপণ।
এসব জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে অন্যতম ইসলামিক স্টেট গ্রেটার সাহারা-আইএসজিএস। ২০২২ সালে সাহেলে আনুমানিক ১ হাজার ২০০ বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় সংগঠনটি অভিযুক্ত।
লেক চাদ অঞ্চলে উগ্রবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট পশ্চিম আফ্রিকা প্রদেশের (আইএসডব্লিওএপি) আধিপত্য রয়েছে। জুনে মূল সংগঠন আইএসআইএসকে নাইজেরিয়ায় হামলা চালাতে সহায়তা করেছিল আইএসডব্লিওএপি।
ইউই বলেন, ‘সোমালিয়া, লিবিয়া, মিশর এবং কঙ্গোয় তাদের সক্রিয় নেটওয়ার্ক রয়েছে। তানজানিয়া, নাইজার এবং কেনিয়ার তাদের শাখাগুলোকেও এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আসলে প্রতিটি দেশই বিপদে আছে।’
সাউথ আফ্রিকার স্যান্ডটনে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহান্তে হামলা হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি হতো। সেদিন শহরে বার্ষিক কুচকাওয়াজের (প্রাইড মার্চ) আয়োজন ছিল; যেখানে যোগ দিয়েছিল হাজার হাজার মানুষ। সেখান থেকে মাত্র ৩০ মিনিট দূরে আরেকটি সমাগমস্থল ছিল।
জোহানেসবার্গ প্রাইডের প্রতিষ্ঠাতা কায় অ্যালি বলেন, ‘কিছু হলে অনেক মানুষের জীবনে তা প্রভাব ফেলত। তারপরও আমরা সেখানে উপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
‘কোভিডের কারণে গত দুই বছর অনলাইনে আয়োজন হয়েছে। এবারও যদি আয়োজন বাতিল করি তবে তা হতো সন্ত্রাসীদের কাছে নতিস্বীকার করা।
‘পুলিশের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা ছিল। নিরাপত্তাও ১০ গুণ বেশি ছিল। আমাদের কারও মনেই হয়নি যে আমরা বিপদে আছে।’
বিশ্লেষকরা ধারণা করেছিলেন প্রাইড মার্চ হতে পারে হামলার লক্ষ্য। সেখানে সাধারণত দেড় লাখ মানুষ উপস্থিত হন। নিরাপত্তা সতর্কতা ভাইরাল হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এবং সাউথ আফ্রিকা সরকার অ্যালিকে হুমকির বিষয়টি জানিয়েছিল।
তবে অ্যালি দাবি করেন, তার ইভেন্টে সরাসরি হুমকি ছিল না।
‘যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগে ছিল। কারণ, তাদের কর্মীদের ইভেন্টে থাকার কথা ছিল। তারাও কিছু বলেনি।’
সাউথ আফ্রিকার ডারবান এবং কেপটাউনকে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, আইএসআইএস নেটওয়ার্কগুলো মোজাম্বিক এবং ডিআর কঙ্গোর শাখাগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে বলে মনে হচ্ছে৷
ইউই বলেন, উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর বেশির ভাগ সদস্য বৈধ ব্যবসায় জড়িত। এ কারণে তাদের আটক বা গ্রেপ্তার করা কঠিন। এখনও সন্দেহভাজনদের আটক বা সতর্কতার প্রতিক্রিয়া জানাতে খুব একটা সক্রিয় না সাউথ আফ্রিকা সরকার।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার ভাইস ওয়ার্ল্ড নিউজের মন্তব্যের অনুরোধে সরাসরি সাড়া দেয়নি। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস ঘটনার পর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘হোয়াইট হাউস সাউথ আফ্রিকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
‘যখন আমাদের কাছে একটি সম্ভাব্য হুমকির বিষয়ে তথ্য থাকে, তখন আমরা আমেরিকান কর্মীদের (দূতাবাস কর্মী) তা সরবরাহ করি।’
আইএসের কয়েকজন সদস্যের তালিকা করেছে সাউথ আফ্রিকা। কোয়াজুলু-নাটালে দুই ব্রিটিশ উদ্ভিদবিদকে হত্যার দায়ে এক দম্পতিসহ তিনজনের বিচার চলছে। হত্যার পর দুই ব্রিটিশ নাগরিকের মরদেহ খুনিরা কুমিরের মুখে ফেলে দিয়েছিল। এ ছাড়া বোমা হামলার পরিকল্পনা এবং আইএসে যোগ দেয়ার অভিযোগে দুইজনকে জেলে ঢুকিয়েছে সাউথ আফ্রিকা সরকার।
ওপারম্যান বলেন, ‘অক্টোবরের নাটক সত্ত্বেও সাউথ আফ্রিকা আপাতত আইএস থেকে কিছুটা নিরাপদ। তারপরও হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। সতর্কতা না পেলে কর্তৃপক্ষ হয়তো বিষয়টি ধরতেই পারবে না।’
আরও পড়ুন:পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। গত কয়েক মাসে দেশটিতে কিডনি অকার্যকর হয়ে ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুদের এমন মৃত্যুতে তদন্ত শুরু করে গাম্বিয়া সরকার। তারা দেখতে পায়, মারা যাওয়া শিশুরা একটা নির্দিষ্ট কোম্পানির কাশির সিরাপ খাওয়া পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ভারতের মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই সিরাপগুলো রপ্তানি করে।
ঘটনাটি নজরে আসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও)। তদন্তের পর তারাও একই কথা জানায়। এরপর ভারতে তৈরি চারটি কাশির সিরাপে ‘পণ্য সতর্কতা’ জারি করে ডব্লিওএইচও। নিয়ন্ত্রকদের এসব সিরাপ বিক্রি বন্ধ করার পরামর্শও দিয়েছে তারা।
ডব্লিওএইচও-র ওয়েবসাইটে সতর্কতাটি প্রকাশ হয়েছে। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক এখনও ডব্লিওএইচও-র ‘পণ্য সতর্কতা’ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি।
ভারতের সরকারি সূত্রগুলো নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, ২৯ সেপ্টেম্বর বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে, অভিযোগের প্রমাণ চেয়েছে।
গাম্বিয়া শিশু মৃত্যুর সঙ্গে ভারতের কাশির সিরাপের সম্পর্কের বিষয়টি বুধবার জানান ডব্লিওএইচও-র মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস।
তিনি বলেন, ‘সিরাপ চারটির নমুনা পরীক্ষার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। সিরাপগুলো হলো- প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কোফেক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, মাকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ।
‘সিরাপগুলোতে ‘অগ্রহণযোগ্য পরিমাণে’ ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল রয়েছে; যা মানুষের জন্য বিষাক্ত। সেবনে পর এসব ‘মারাত্মক’ প্রমাণিত হতে পারে।’
ভারত বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ ওষুধ উৎপাদন করে; বেশিরভাগই জেনেরিক ওষুধ আকারে। দ্রুত বর্ধনশীল কিছু ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির আবাসস্থল ভারত ‘বিশ্বের ফার্মাসি’ নামেও পরিচিত। আফ্রিকান দেশগুলোর বেশিরভাগ চিকিৎসা চাহিদা পূরণ করে থাকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।
মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানায় অবস্থিত। রয়টার্স বলছে, এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে তারা পণ্য রপ্তানি করে থাকে।
কয়েক ডজন শিশুর কিডনিতে গুরুতর সমস্যা ধরা পড়ার পর গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জুলাইয়ে প্রথম সতর্কতা জারি করেন।
গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিচালক মুস্তাফা বিত্তায়ে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মৃত্যু কমেছে। তারা এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে।
‘তারপরও কিছু বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে এখনও এই ওষুধ বিক্রি হচ্ছে।’
৩৭ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়োজাহাজের ককপিটে ঘুমিয়ে পড়া ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের দুই পাইলটকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
আকাশযান সংক্রান্ত সংবাদমাধ্যম দ্য এভিয়েশন হেরাল্ডের খবরে বলা হয়, ঘটনার দিন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের মাধ্যমে ঘুমন্ত ওই দুই পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না, তবে অটোপাইলট ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর অ্যালার্মে ঘুম ভাঙে তাদের।
সজাগ হওয়ার পর পরিস্থিতি সামলে নিতে সক্ষম হন পাইলটদ্বয়। পরে ২৫ মিনিট দেরিতে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় নিরাপদে উড়োজাহাজটি অবতরণে সক্ষম হন তারা।
আরও পড়ুন: ৩৭ হাজার ফুট ওপরে ঘুমাচ্ছিলেন পাইলটরা
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা অনুযায়ী, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে সঠিক পথ ধরেই আদ্দিস আব্বার দিকে যাচ্ছিল, কিন্তু অবতরণ না করে এটি ৩৭ হাজার ফুট উঁচুতে ঝুলে থাকে।
ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস শনিবার জানিয়েছে, পরবর্তী তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে পাইলটদ্বয়কে।
এয়ারলাইনসটি আরও জানায়, তদন্ত শেষে দুজনের বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য