× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Messi is part of the Saudi billion dollar project
google_news print-icon

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি

সৌদি-বিলিয়ন-ডলার-প্রজেক্টের-অংশ-মেসি
২০১২ সালে প্রথম সৌদি সফরে যান মেসি। ছবি: এএফপি
সৌদি আরবের ভাবমূর্তি উন্নয়নের মিশনে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি যোগ দেন চলতি বছর। আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তির লক্ষ্য সৌদি পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন।

কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিস্ময়কর জয় পেয়েছে সৌদি আরব। এটি ছিল গ্রুপ সি-এর প্রথম ম্যাচ। একই সঙ্গে এটি ছিল মাঠের বাইরে একটি যুদ্ধের পটভূমি, যা আগামী বেশ কয়েক বছর ধরে চলবে।

সৌদি আরবের ভাবমূর্তি উন্নয়নের মিশনে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি যোগ দেন চলতি বছর। আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তির লক্ষ্য সৌদি পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন।

তবে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস কোম্পানির মালিকানাধীন স্পোর্টস ওয়েবসাইট দ্য অ্যাথলেটিকের নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, রিয়াদের সঙ্গে মেসির গাঁটছড়া ২০৩০ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হতে সৌদি আরবের প্রচেষ্টাকে শক্তি জোগাবে। আর সে ক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে পারে তার নিজের দেশ আর্জেন্টিনা।

২০২৬ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে। এরপর ২০৩০ সালের আয়োজক দেশ ঠিক করতে চলতি বছরের জুনেই বিডিং উন্মুক্ত হয়েছে। আয়োজক দেশের নাম চূড়ান্ত হবে ২০২৪ সালে ফিফার ৭৪তম কংগ্রেসে।

এখন পর্যন্ত স্পেন, পর্তুগাল ও ইউক্রেনের যৌথ উদ্যোগের বিডিং নিশ্চিত হয়েছে। এ বছরের শুরুতেই দেশ তিনটি এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়। তবে আরও দুটি প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে জমা পড়ার কথা।

এর একটি হলো দক্ষিণ আমেরিকান দেশ আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে ও চিলির যৌথ উদ্যোগ। অন্যটি সৌদি আরব, মিশর ও গ্রিসের। একাধিক দেশের যৌথ আয়োজক হিসেবে বিডে অংশগ্রহণের ফলে ২০২৬ সাল থেকে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব ৪৮ দলের প্রতিযোগিতায় পরিণত হচ্ছে।

২০৩০ সালের জন্য দক্ষিণ আমেরিকান বিড খুব শক্ত প্রতিপক্ষ হবে বলে মনে করছেন এর কো-অর্ডিনেটর ফার্নান্দো মারিন। দ্য অ্যাথলেটিককে তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলটি অজস্র প্রতিভার জন্ম দিয়েছে, যারা সারা বিশ্বে সুপরিচিত। এ ছাড়া ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়। এর ১০০তম বার্ষিকীতে ২০৩০ সালে দক্ষিণ আমেরিকাই হবে বিশ্বকাপের সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান।’

১৯৩০ সালে স্বাগতিক উরুগুয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট জিতেছিল।

দক্ষিণ আমেরিকার যৌথ বিডের বিষয়টি ২০১৭ সালে প্রথম জনসমক্ষে আসে, যখন বার্সেলোনার সতীর্থ উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ এবং আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি তাদের দেশের পক্ষে প্রচারে যুক্ত হন। দুই দেশের মধ্যে একটি ম্যাচের আগে সুয়ারেজ যে জার্সি পরেন তার সামনে ২০ এবং মেসির জার্সিতে ৩০ সংখ্যাটি লেখা ছিল।

পরের বছর ফার্নান্দো মারিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টার সঙ্গে মেসি যোগ দেবেন এবং সুয়ারেজ তো অবশ্যই। আমরা তাকে (মেসি) আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে জানিয়েছি এবং তিনি মনে করেন এটা সম্ভব। তিনি আমাদের সাহায্য করতে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি অবশ্যই আমাদের জন্য বিশ্বকাপের পতাকাবাহী হবেন।’

তবে গত মে মাসে ঘটনার নতুন বাঁক তৈরি হয়। বর্তমানে এই গ্রহের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে বিখ্যাত ফুটবলার সৌদি আরবের প্রচারের দায়িত্ব নিতে একটি আকর্ষণীয় চুক্তিতে সই করেন।

প্রথম কথাটি হলো, চুক্তিটি হয়েছে সৌদির পর্যটন-সংক্রান্ত প্রচারের জন্য, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপের বিডের প্রসঙ্গ সেখানে নেই।

তবে সৌদি আরবের জাতীয় লক্ষ্যগুলো দেশটির ‘ভিশন ২০৩০’-এর সঙ্গে যুক্ত। সরকারি ভাষ্যগুলোতে একে ‘সৌদি আরবকে বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত করার একটি অনন্য রূপান্তরমূলক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের নীলনকশা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

তাই ২০৩০ সালের বিশ্বকাপের বিড সৌদি আরবের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে প্রবলভাবে যুক্ত বলে মনে হয় এবং পর্যটনের প্রচার সেই লক্ষ্যটি অর্জনে অনেকভাবে সাহায্য করবে।

অন্য উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌম সম্পদ তহবিল- পিআইএফের মাধ্যমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব নিউকাসল ইউনাইটেডকে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত, সেই সঙ্গে এলআইভি গলফ ব্রেকওয়ে ট্যুরকে সহায়তাদান। এ ছাড়া ১০ বছরের জন্য ফর্মুলা ওয়ান রেসের পৃষ্ঠপোষকতা এবং ২০১৯ সালে অ্যান্টনি জশুয়া এবং অ্যান্ডি রুইজের হেভিওয়েট বক্সিং আয়োজনের জন্য ৬৫ কোটি ডলারের চুক্তি।

সৌদিতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কানাডার রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন ডেনিস হোরাক। তিনি বলেন, ‘বিনোদন ও ক্রীড়ায় এই বিপুল অংশগ্রহণ সৌদির ভিশন ২০৩০-এর একটি বড় অংশ। এলআইভি গলফ (সৌদি আরবের অর্থায়নে) এবং এখন এগুলোর সঙ্গে মেসির মতো তারকাদের উচ্চমূল্যে যুক্ত করার মাধ্যমে তারা বিষয়টিকে নতুন স্তরে নিয়ে যাওয়ার এবং আরও বৈশ্বিক করার চেষ্টা করছে। বিশ্বব্যাপী সৌদির সুনাম বাড়াতে হবে এবং এসবের মাধ্যমে দেশটি নিজেদের নতুন ব্র্যান্ড তৈরির চেষ্টা করছে।’

মেসির চুক্তির মেয়াদ এবং শর্ত কোনো পক্ষই প্রকাশ করেনি।

যুক্তরাজ্যের ডেইলি টেলিগ্রাফ আগে এক প্রতিবেদনে জানায়, ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো সৌদি পর্যটনের প্রচারে কাজ করার জন্য প্রতিবছর ৫০ লাখ পাউন্ডের বেশি অর্থের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই আলোচনায় যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘনিষ্ঠ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

উপসাগরীয় অঞ্চলে রাষ্ট্রদূতদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র দ্য অ্যাথলেটিককে বলেছে, মেসির সঙ্গে সৌদির চুক্তিটির আর্থিক মূল্য রোনালদোকে দেয়া প্রস্তাবের চেয়ে ৫ গুণ বেশি হতে পারে।

সৌদি এজেন্সিগুলোর তৎপরতার বিভিন্ন উদাহরণ পর্যালোচনা করলে বিষয়টি আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। যেমন এলআইভি গলফ ট্যুরে টাইগার উডসকে ভেড়াতে ৭০-৮০ কোটি ডলারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, তবে তিনি সেটি প্রত্যাখ্যান করেন৷

মেসির প্রতিনিধিরা বলেছেন, গোপনীয়তার শর্তের কারণে তারা চুক্তির পরিসংখ্যানগত দিকগুলো প্রকাশ করতে পারবেন না। অন্যদিকে এ-সংক্রান্ত ই-মেইলের কোনো জবাব দেয়নি সৌদি সরকার।

মেসি গত মে মাসে লোহিত সাগরের তীরের রিসোর্ট শহর জেদ্দায় ভ্রমণের সময় প্রথমবার তাকে সৌদির পর্যটনদূত হিসেবে প্রচার করে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মেসিকে স্বাগত জানিয়ে সৌদি পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খতিব এক টুইটে লেখেন, ‘সৌদি আরবে এটি তার প্রথম সফর নয় এবং এটি শেষও হবে না।’

পরে ইয়টে সূর্যাস্ত দেখার সময়কার নিজের একটি ছবি প্রকাশ করেন মেসি।

ইনস্টাগ্রামে ছবির শিরোনামে তিনি লেখেন, ‘লোহিত সাগরের বুকে #ভিজিটসৌদি’। ইনস্টাগ্রামে মেসির ফলোয়ারের সংখ্যা ৩৭ কোটি। পোস্টটিতে সৌদি পর্যটন কর্তৃপক্ষের সহায়ক সংস্থা ভিজিট সৌদির ‘পেইড পার্টনারশিপ’ লেবেল যুক্ত ছিল।

মেসি পরে সৌদির সহকারী পর্যটনমন্ত্রীর প্রিন্সেস হাইফা আল-সৌদের সঙ্গে পুরোনো জেদ্দা সফরে যোগ দেন।

প্রিন্সেস হাইফা পরে টুইটারে লেখেন, ‘এই শহরের অন্তর্নিহিত রূপ, ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের প্রতি তার (মেসি) মুগ্ধতা দেখে আমি আনন্দিত।’

ভিজিট সৌদির ওয়েবসাইটে এখন মেসির একটি ল্যান্ডিং পেজ রয়েছে। এর শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘লিওনেল মেসি চান আপনি নিজের ভেতরের রোমাঞ্চ-সন্ধানী সত্তাকে উন্মোচন করুন এবং অকল্পনীয় দিকগুলো উদ্ঘাটন করুন।

‘আপনি নতুন বা পুরোনো কিছু আবিষ্কার করতে অথবা শুধু নিজের ভেতরে নতুন কিছু জাগানো- যে উদ্দেশ্যেই ভ্রমণ করুন না কেন, সৌদি প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাকে সন্তুষ্টি জোগাবে। তাহলে আর কিসের জন্য অপেক্ষা করছেন? এখনই আপনার অ্যাডভেঞ্চারের পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলুন।’

সৌদি আরবের প্রচারে মেসির এই অবস্থান ২০৩০ সালে বিশ্বকাপ আয়োজনে তার নিজের দেশের প্রচেষ্টার সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে মেসির সাপোর্ট টিম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। একইভাবে পর্যটন প্রচারের চুক্তির অংশ হিসেবে তিনি কতবার সৌদি সফরে যাবেন, সে বিষয়ে তথ্য দিতেও অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।

আরও তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, তারা এমন একটি দেশের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের চেক নেয়ার বিষয়ে মেসির প্রস্তুতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি, যে দেশটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

এসব অভিযোগের মধ্যে আছে ভিন্নমতাবলম্বী ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যা, নারী অধিকারকর্মী ও এলজিবিটি গোষ্ঠী এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) শাসনের বিরুদ্ধাচরণকারীদের ওপর ক্র্যাকডাউন।

মানবাধিকার সংস্থা ইউনিসেফ গত বছর জানায়, প্রতিবেশী ইয়েমেনে সংঘাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট জড়িয়ে পড়ার পর থেকে ১০ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে। মেসি ২০১০ সাল থেকে ইউনিসেফের একজন ‘শুভেচ্ছাদূত’।

মেসির প্রতিনিধিরা ইয়েমেন বিরোধের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি, একই সঙ্গে ইউনিসেফও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

মেসির অগণিত অংশীদারত্বের মধ্যে একটি হলো ফরাসি চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেন্ট-জার্মেইনের হয়ে খেলা, যেখানে তিনি ৩ কোটি ইউরোর বেশি আয় করেন। এটি কাতারের সঙ্গে যুক্ত একটি তহবিলের মালিকানাধীন ক্লাব, যে দেশটির বিরুদ্ধেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

মেসি সম্প্রতি ক্রিপ্টো ফ্যান টোকেন ফার্ম সোসিওস-এর প্রচারের জন্য ২ লাখ ডলারের চুক্তি করেছেন, পাশাপাশি তিনি এনএফটিভিত্তিক গেম সোরারেও একজন বিজ্ঞাপনী মুখ। এ ছাড়া তিনি আডিডাস, পেপসি, বাডওয়াইজার, ওরেডু, প্রো অ্যাভ্যুলিউশন সকার, লুই ভ্যুইতন, ইসরায়েলি কোম্পানি ওরক্যাম, দ্য দুবাই এক্সপো-২০২০, তার নিজস্ব শো সার্ক দ্যু সোলেইল এবং চীনা দুগ্ধ কোম্পানি মেংনিউ-এর সঙ্গে স্পনসরশিপ চুক্তি করেছেন।

ফোর্বস ম্যাগাজিন গত মে মাসে যে অনুমান প্রকাশ করে সে অনুযায়ী, গত বছর মেসি ১২ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছেন।

সৌদি নাগরিক খালিদ আল-জাবরির বোন সারা এবং ভাই ওমর বর্তমানে দেশটির একটি কারাগারে বন্দি। খালিদ আল-জাবরির বাবা সৌদি আরবের একজন সাবেক শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

দ্য অ্যাথলেটিক-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে খালিদ অভিযোগ করেন, তার বাবা ড. সাদ আলজাবরির ওপর চাপ দেয়ার জন্য কারাবন্দি দুই ভাইবোনকে ‘দর-কষাকষির হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে সৌদি সরকার।

খালিদ বলছেন, ‘সৌদি ক্রাউন প্রিন্স বিন সালমান দেশকে স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং মেসির দূতের ভূমিকা এতে অবদান রাখছে।

‘মেডিক্যাল স্কুলে পড়ার সময় তাকে (মেসি) দেখতে আমরা একসঙ্গে জড়ো হতাম। তিনি বিশ্বে সুপরিচিত এটাই একমাত্র কারণ নয়, দেশের ভেতরেও সবাই তাকে ভালোবাসে। ফুটবলের ক্ষেত্রে তার অবস্থান ঈশ্বরের ঠিক পরেই। এই চুক্তির মাধ্যমে তারা (সৌদি সরকার) সেই কেন্দ্রবিন্দুটিতে আঘাত করেছে।’

মেসি ২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরব সফর করেন।

তার ফ্লাইট অবতরণের পর ভক্তদের হুড়োহুড়ি লেগে যায়। নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত কঠোর। ভিড়ের চাপ সামলাতে ব্যতিব্যস্ত সশস্ত্র রক্ষীদের একজনের বন্দুকের নল ঘটনাক্রমে মেসির মুখের দিকে ঘুরে গিয়েছিল।

তারপর থেকে সম্পর্কটি ক্রমশ উষ্ণ হয়েছে। এর পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন তুর্কি আল-শেখ নামের এক ব্যক্তি। তিনি সৌদি জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান। এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য দেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটানো।

বিশিষ্ট সৌদি রাজনীতিক ও স্প্যানিশ লা লিগা ফুটবল ক্লাব আলমেরিয়ার মালিক আল-শেখকে ২০২০ সালের মে মাসে অনলাইনে একটি শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান মেসি।

উপলক্ষটি ছিল সৌদি ফুটবল ক্লাব আল-নাসর এফসির সাবেক সভাপতি সৌদ আল-সুওয়াইলেমের বিপক্ষে একটি চ্যারিটি প্লেস্টেশন ফুটবল ম্যাচে আল-শেখের প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

সৌদি আরবের অভাবী মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে ম্যাচটি আয়োজন করা হয়। সেখানে মেসি ছাড়াও ডিয়েগো ম্যারাডোনা, সাবেক ব্রাজিল তারকা কাফু, রবার্তো কার্লোস এবং রোনালদিনহো, ইতালীয় ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চিও শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন। চার্লি শিনের মতো বিখ্যাত অভিনেতা এবং র‌্যাপার স্নুপ ডগও বার্তা দিয়েছিলেন।

সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী খাশোগজিকে ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমেরিকান গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে ওই হত্যায় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুমোদন ছিল।

খাশোগজির মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা একটি সাক্ষাৎকার পরে নিউজউইকে প্রকাশ হয়। সেখানে খাশোগজি বলেন, ‘তুর্কি আল-শেখ এবং সৌদ আল-কাহতানি ছাড়া মোহাম্মদ বিন সালমানের আর কোনো রাজনৈতিক উপদেষ্টা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরা গুণ্ডা প্রকৃতির। মানুষ তাদের ভয় পায়। তুর্কি আল-শেখ খেলাধুলার দায়িত্বে আছেন। গুজব রয়েছে খেলাধুলার পেছনে ব্যয় এবং তরুণদের এতে ব্যস্ত রাখতে তার হাতে কয়েক বিলিয়ন ডলার রয়েছে।’

মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্য মিডিয়া অপারেশন এবং প্রচারের দায়িত্ব সামলাতেন সৌদ আল-কাহতানি। আমেরিকান গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাকে খাশোগজি হত্যার চক্রান্তে যুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়। তবে সৌদি আদালত ২০১৯ সালে তাকে এই অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়।

আল-শেখ ছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমানের সাবেক নিরাপত্তাকর্মী। ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে ধীরে ধীরে তার প্রচণ্ড বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার হাতে তুলে দেয়া হয় সৌদি স্পোর্টস কমিশন চালানোর দায়িত্ব।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ বিন সালমান তার ক্ষমতা সংহত করতে সৌদি আরবের শত শত ধনী ব্যবসায়ীকে রিটজ-কার্লটন হোটেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিলেন। ওই সময়ে আল-শেখ অত্যন্ত তৎপর ভূমিকা পালন করেন। পরে ঘটনাটিকে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখানো হয়।

সৌদি স্পোর্টস কমিশন পরিচালনার সময় আল-শেখ ক্রীড়ায় অর্থ বিনিয়োগে আগ্রহীদের জন্য একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হন। তিনি ২০১৯ সালে সৌদিতে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার একটি ম্যাচ আয়োজন করেন।

মেসিও প্রকাশ্যে ৪০তম জন্মদিনে আল-শেখকে শুভেচ্ছা জানান। এর আগে তিনি আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের নিয়ে রিয়াদে তার বাড়িতে ঘুরতে যান।

জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আল-শেখ ২০২২ সালের রিয়াদ সিজনের (একটি বিনোদন উৎসব) বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডে মেসির ছবি ব্যবহার করেন। এসব বিলবোর্ড লন্ডন, দুবাই ও নিউকাসলে স্থাপন করা হয়।

পিএসজির জার্সিতেও রিয়াদ সিজনের প্রচার চালানোর একটি ভিডিওতেও দেখা যায় মেসিকে।

এটি বিশেষ এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। পিএসজির সঙ্গে যুক্ত দেশ কাতারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আল-শেখ কাতারের উপর সৌদি অবরোধের কেন্দ্রীয় শক্তির অংশ ছিলেন। এমনকি টুইটারে তিনি বলেছিলেন, কাতার নৈতিকতা লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজন ইংল্যান্ড বা যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেয়া উচিত।

অবশ্য পিএসজির সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী মেসির অন্য কোনো বাণিজ্যিক চুক্তি করায় বাধা নেই। পাশাপাশি গত বছর থেকে সৌদি ও কাতারের সম্পর্কের শীতলতা কাটতে শুরু করেছে। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের দিন রোববার ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর দুই পাশে বিন সালমান ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে বসতে দেখা গেছে।

মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে অটোয়ার বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ২০১৮ সালে কানাডার রাষ্ট্রদূত হোরাক সৌদি আরব থেকে বহিষ্কৃত হন। তিনি তার মূল্যায়নে সৌদির নেতৃত্ব সম্পর্কে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ব্যাখ্যা দেন।

হোরাক বলেন, বিন সালমান সৌদির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে পশ্চিমা রাজনীতিকদের মনে আশার সঞ্চার ঘটিয়েছিলেন। তবে খাশোগজির হত্যা, নারী অধিকার কর্মীদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গীকে তার শাসনের বিরুদ্ধে নিয়ে যায়।

আল-শেখ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি তার প্রভাবের কথা শুনেছি। তাকে নিশ্চিতভাবে রাজকীয় ব্যবস্থায় মোহাম্মদ বিন সালমানের অতি ঘনিষ্ঠদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

‘তিনি (আল-শেখ) অবশ্যই ক্ষমতাকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত এবং মেসিকে যুক্ত করার বিষয়টি বিন সালমান অবশ্যই পছন্দ করবেন। তার (মোহাম্মদ বিন সালমান) চোখে বিশ্বে সৌদি আরবের অবস্থান উপলব্ধির আরেকটি সুযোগ ঘটাবে এই বিষয়টি। তিনি বুঝবেন সৌদি বিচ্ছিন্ন কোনো মরুরাজ্য নয়।

‘আন্তর্জাতিকভাবে মেসির যে প্রোফাইল রয়েছে, সেটি সৌদিকে স্বাভাবিকতার একটি বৃহত্তর অনুভূতি দেবে। তাই আমি মনে করি এ বিষয়টি ২০৩০ সালে তাদের বিশ্বকাপ বিডের ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে।’

হোরাক বলেন, ‘খাশোগজি হত্যার কারণে মোহাম্মদ বিন সালমান ব্র্যান্ডটির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। একইসঙ্গে সৌদি আরবের ব্র্যান্ডও কলঙ্কিত হয়েছে। এমন অবস্থায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিশ্বের সেলিব্রিটিদের কাছে যত বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ তৈরি করা যাবে এবং সে অনুযায়ী সৌদি আরবের ব্র্যান্ডটিকে আবারও ঝকঝকে করে তোলা সম্ভব হবে।’

সৌদি কারাগারে বন্দি দুই স্বজনের ভাই খালিদ আল-জাবরি বলেন, ‘মেসির মতো খেলোয়াড়দের একটি দলের অংশ হিসেবে সৌদিতে খেলতে যাওয়া নিয়ে আমার আপত্তি নেই। কারণ দেশের শাসকদের নৃশংসতার কারণ দেখিয়ে সৌদি ভক্তদের তাদের প্রিয় দলের খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। আমার সমস্যা হলো মেসি নিজেকে সৌদি স্পোর্টস ওয়াশিংয়ের হাতিয়ারে পরিণত করেছেন।

‘তিনি নিজেকে শয়তানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।’

এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ সি ম্যাচের আগে সোমবার সন্ধ্যায় দোহায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন মেসি। মাঠে যে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন তাদের হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। আর প্রতিপক্ষ দেশটি ছিল তারা, যারা তাদের প্রচারে ব্যবহার করছে মেসির ছবি।

কাতারের টেলিভিশনে সম্প্রচার হচ্ছে সৌদি আরবে মেসির সফর নিয়ে তৈরি বিজ্ঞাপন।

সেই সংবাদ সম্মেলনে মেসির আগমনকে ওহ, আহা ধ্বনি এবং ফোনের ক্যামেরায় ছবি তুলে স্বাগত জানানো হয়। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে কয়েকজন করতালি দিচ্ছিলেন।

ব্যস্ত ওই মিডিয়া সেশনে দ্য অ্যাথলেটিক কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ পায়নি। মেসি এক ডজনেরও বেশি প্রশ্ন নিয়েছিলেন, তবে তার একটিও সৌদি আরবকে নিয়ে প্রচার চালানো বিষয়ক চুক্তি সংক্রান্ত ছিল না। দক্ষিণ আমেরিকান বা আরব মিডিয়া থেকে এসব প্রশ্ন করা হয়েছিল।

চলমান বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে রোববার সন্ধ্যায় ইনফান্তিনোর পাশে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বসার দৃশ্য সৌদির সামনে আরও একবার আশা জাগিয়ে তুলেছে। এই জুটিকে গত সপ্তাহে জি টোয়েন্টি সম্মেলনে বালিতেও একসঙ্গে দেখা গেছে। এর আগেও তারা একসঙ্গে বক্সিং ম্যাচ দেখেছেন।

সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য মিশর ও গ্রিসের সঙ্গে যৌথভাবে সৌদি আরবের বিডকে ফিফা গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করবে বলে রিয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। সৌদিরা ২০৩০ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপোর আয়োজক দেশ হতেও একটি বিড জমা দিয়েছে, এটিও ভিশন ২০৩০ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ।

বিশিষ্ট আর্জেন্টাইন ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কথোপকথনে মেসিকে ঘিরে সমালোচনায় অস্বস্তি মৃদু আকারে হলেও বোঝা যায়।

বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হতে আর্জেন্টিনার আগ্রহের বিপরীতে প্রতিপক্ষের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে মেসি সাহায্য করছেন, এটি অদ্ভুত লাগছে কিনা- এমন প্রশ্নে তার সাবেক আন্তর্জাতিক সতীর্থ ম্যাক্সি রদ্রিগেজ বলেন, ‘সত্যি বলতে কি এটা ঠিক, তবে… আপনি জানেন না শেষ পর্যন্ত কী ঘটতে যাচ্ছে।

‘আপনি নিজ দেশে বিশ্বকাপ দেখতে চান, তবে এ জন্য অনেক কিছু করতে হবে। কারণ, বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়া সহজ নয়। টুর্নামেন্টের আয়োজক নির্বাচনের সময় কী ঘটছে আমরা দেখতে পাব। আর্জেন্টাইন হিসেবে আমরা আবারও আমাদের দেশে এই আয়োজন দেখতে চাই।’

দক্ষিণ আমেরিকার যৌথ বিডের কো-অর্ডিনেটর ফার্নান্দো মারিন বলেন, ‘মাঠে এবং মাঠের বাইরে মেসির এক অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি একটি সুউচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছেন। মেসি নিজেই একটি ব্র্যান্ড এবং এটি খুব শক্তিশালী।

‘তিনি সমস্ত ফুটবলের জন্য একটি ব্র্যান্ড, কোনো দেশের নয়। তিনি ২০৩০ সালের জন্য দক্ষিণ আমেরিকান বিডের একটি মৌলিক অংশ হিসেবে থাকবেন।’

আরও পড়ুন:
এখনও ক্রীতদাস
পদ্মা সেতু নিয়েছে জমি, দিয়েছে অহংকার
কী ঘটেছিল জিয়ার মৃত্যুর পর
যে গ্রামে অপরাধ কম, কালেভদ্রে পুলিশ  
অ্যামাজন, গুগল ও অ্যাপলে নিউজবাংলা পডকাস্ট

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Israeli forces killed in Gaza

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় নিহত ৬০

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় নিহত ৬০ গাজা শহর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনী অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করেছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬২ জন। এর মধ্যে গতকাল রোববার ভোর থেকে চালানো হামলাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।

ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের হামলা শুরু করার পর থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ শিশু নিহত হচ্ছে।

গাজার ১০ লাখেরও বেশি শিশু এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পাচ্ছে না বলেও সতর্ক করেছে ইউনিসেফ। গাজায় আগ্রাসনের সময় চলতি বছরের ২৩ মার্চ ১৫ জন জরুরি চিকিৎসা কর্মীকে হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাতে এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল আইডিএফ।

হত্যার শিকার রেফাত রাদওয়ানের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওটি প্রকাশের পর বিষয়টি সামনে আসে। ত্রাণবাহী একটি দল নিহত চিকিৎসা কর্মীদের মরদেহগুলো খুঁজে পায়। এ সময় তারা রিফাত রাদওয়ানের মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছিল।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী পরিকল্পিতভাবে চিকিৎসাকর্মী ও ত্রাণকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে, যা নতুন প্রকাশিত একটি ভিডিওতে অকাট্যভাবে প্রমাণিত। এটি আন্তর্জাতিক আইনে একটি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’

গাজায় ১৫ জন চিকিৎসা ও ত্রাণকর্মীর হত্যাকাণ্ডকে ‘নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধাপরাধ’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক সাবেক প্রধান এবং মেডিয়েশন গ্রুপ ইন্টারন্যাশনালের বর্তমান নির্বাহী পরিচালক মার্টিন গ্রিফিথস। ওই ঘটনায় আটজন রেড ক্রিসেন্ট কর্মী, ছয়জন দমকল কর্মী ও একজন জাতিসংঘের কর্মী নিহত হন। রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এ ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এ সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে বেশির ভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়টির দেওয়া হিসাবে বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধার আলাদা হিসাব দেওয়া হয়নি। তথ্যমতে নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েল প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করার দাবি করলেও এর সমর্থনে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।

চলমান এই যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংস করেছে। বেশির ভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলার মাত্রা এত বেশি যে, ভূখণ্ডটির জনসংখ্যার ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

রাফাকে গাজা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায় ইসরায়েল

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি নতুন সামরিক করিডোর স্থাপনের কাজ শুরু করেছে ইসরায়েল। তারা এর নাম দিয়েছে ‘মোরাগ করিডোর’। ২০০৫ সালে উচ্ছেদ করা একটি অবৈধ ইসরায়েলি বসতির নামানুসারে করিডোরটির নামকরণ করা হয়েছে। এই করিডোর রাফাহ শহরকে গাজার বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।

গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন, রাফাহ ও খান ইউনিসের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সেনারা যে কাউকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে। তিনি ওই এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন।

খোদারি বলেন, এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনিদের জন্য একমাত্র খোলা পথ হলো উপকূলীয় রাস্তার আল-রাশিদ করিডোর। এর মানে হলো, আরও বেশি ফিলিস্তিনিকে খান ইউনিস ও দেইর আল-বালাহ এলাকায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং ইসরায়েল আরও বেশি ভূমি দখলের চেষ্টা করছে।

রাফা শহর কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যকার প্রধান বাণিজ্য পথ ‘কারেম আবু সালেম’ ক্রসিংয়ের প্রধান পথ এই শহরটির ভেতর দিয়েই গেছে। পাশাপাশি এটি রাফাহ সীমান্ত দিয়ে বাইরের জগতের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের অন্যতম প্রধান সংযোগস্থলও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই করিডোর নির্মাণ গাজার ভূখণ্ড ভাগ করে ফেলার একটি পরিকল্পিত কৌশল, যা মানবিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

১৫ স্বাস্থ্যকর্মীকে গুলি করে হত্যা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। গত ২৩ মার্চ দক্ষিণ গাজায় জরুরি বিভাগের ওই কর্মীদের হত্যা করা হয়। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে তাদের সৈন্যরা ভুল করে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

রাফার কাছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) অ্যাম্বুলেন্স, জাতিসংঘের একটি গাড়ি এবং গাজার সিভিল ডিফেন্সের একটি অগ্নিনির্বাপক ট্রাকে গুলি চালানো হয়।

ইসরায়েল প্রথমে দাবি করেছিল, হেডলাইট বা কোনো ধরনের আলো ছাড়াই অন্ধকারে ‌‘সন্দেহজনকভাবে’ গাড়ি বহর এগিয়ে আসার কারণে সৈন্যরা গুলি চালিয়েছিল। যানবাহনের চলাচলের আগে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়নি বা তাদের সম্মতি নেওয়া হয়নি।

কিন্তু নিহত হওয়া প্যারামেডিকদের একজনের মোবাইলের ফুটেজ খুঁজে দেখা গেছে যে, আহতদের সহায়তা দেওয়ার সময় যানবাহনগুলোতে আলো জ্বলছিল। অর্থাৎ ইসরায়েলি বাহিনীর ওই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী জোর দিয়ে বলছে, কমপক্ষে ছয়জন চিকিৎসক হামাসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তারা এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। তারা এটাও স্বীকার করেছে যে, সৈন্যরা যখন গুলি চালায় তখন জরুরি বিভাগের ওই কর্মীরা নিরস্ত্র ছিল।

আরও পড়ুন:
গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা, হামাস নেতাসহ পাঁচজন নিহত
ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধানকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ
ইসরায়েলি হামলায়, গাজায় নারী-শিশুসহ নিহত ৪ শতাধিক

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israeli attacks at Gaza Hospital killed five people including Hamas leader

গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা, হামাস নেতাসহ পাঁচজন নিহত

গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা, হামাস নেতাসহ পাঁচজন নিহত ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে সহিংসতার মধ্যে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন উপত্যকার বেশকিছু বাসিন্দা। ছবি: ইউএনবি
হামলায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার এক নেতাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের গাজার দক্ষিণের সবচেয়ে বড় হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

এ হামলায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার এক নেতাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

হাসপাতালটিতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও গার্ডিয়ান এমন তথ্য দিয়েছে।

খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতালের অস্ত্রোপচার ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এমন এক সময়ে হামলা চালানো হয়েছে, যখন হতাহতে পরিপূর্ণ ছিল ভবনটি।

হামলার ঘটনাটি নিশ্চিত করে ইসরায়েল বলছে, একজন হামাস সদস্য সেখান থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন বলে তারা এ অভিযান চালিয়েছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের খবর বলছে, হামলায় হামাসের রাজনৈতিক নেতা ও চিকিৎসকসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হন।

গেল মঙ্গলবার থেকে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৭ মাসের যুদ্ধে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিনটিতে চার শতাধিক মানুষ নিহত হন।

এ সময়ে বেশ কয়েকজন হামাস নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলে ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে।

গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে এ কয়েক দিনে নিহত হন ৬০০ জনের বেশি মানুষ, যার মধ্যে দুই শতাধিক শিশু রয়েছে।

১৫ মাস যুদ্ধের পর গাজা উপত্যকায় কিছুটা শান্তির দেখা মিলেছিল। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছুড়ে ফেলে দিয়ে ফের সর্বাত্মক হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

এর আগে শনিবার খান ইউনিসে ইসরায়েলের আরেক হামলায় হামাসের আরেক নেতা সালাহ বারদাইল নিহত হন।

ইসমাইল ও সালাহ দুজনই হামাসের ১৯ সদস্যের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ইউনিটের সদস্য। ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ ইউনিটের আরও ১১ সদস্য নিহত হন।

উত্তর-দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় রবিবার সকাল থেকেই বিস্ফোরণের শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এসব এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

দক্ষিণ ইসরায়েলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ঢুকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের হামলাকে কেন্দ্র করে গাজায় ১৮ মাসব্যাপী এ যুদ্ধের সূচনা হয়। এ বছরের ১৯ জানুয়ারিতে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়। তারপরও এ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন।

আরও পড়ুন:
ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধানকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ
ইসরায়েলি হামলায়, গাজায় নারী-শিশুসহ নিহত ৪ শতাধিক
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত কমপক্ষে ৩২৬

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
More than 500 killed in the Israeli attack including women and children in Gaza

ইসরায়েলি হামলায়, গাজায় নারী-শিশুসহ নিহত ৪ শতাধিক

ইসরায়েলি হামলায়, গাজায় নারী-শিশুসহ নিহত ৪ শতাধিক গাজায় ধ্বংসস্তুপের সামনে বসে ইফতার করছেন ফিলিস্তিনবাসীরা।ছবি:সংগৃহীত
অন্তত চার শতাধিক ফিলিস্তিনি মঙ্গলবারের এই বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছে আরও অনেকে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের।

পরিবার নিয়ে ভোর রাতে সেহরি খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল গাজার বাসিন্দারা, তখনই মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণে কেঁপে ওঠে উপত্যকা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) হামলা থেকে আবাসিক ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে শরণার্থী শিবির—কিছুই রেহাই পায়নি।

অন্তত চার শতাধিক ফিলিস্তিনি মঙ্গলবারের এই বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছে আরও অনেকে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের।

ইউনিসেফের মুখপাত্র রোসালিয়া বোলেন বলেছেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় ১০ লাখের বেশি (ফিলিস্তিনি)শিশুর জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। তাদের যুদ্ধের ধকল সহ্য করতে হচ্ছে। শিশুদের জীবন এভাবে হুমকিতে পড়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

গাজা সিটির কেন্দ্রস্থলে আত-তলিবিন নামের একটি স্কুলে বাস্তুহারা নারী ও শিশুরা আশ্রয় নিয়েছিল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় মাটিতে মিশে গেছে স্কুলটি। এ সময় ঘটনাস্থলেই নারী-শিশুসহ অন্তত ২৫ জন প্রাণ হারান বলে মিডল ইস্ট আইয়ের খবর থেকে জানা গেছে।

গাজায় ইসরায়েল নতুন করে হামলা শুরু করায় দুমাসের অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভেঙে গেছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

খবর বলছে, হামাসের কাছ থেকে জিম্মিদের মুক্ত করতে আরও বলপ্রয়োগের হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালিয়ে ২৫০ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে হামাস, তাদের মধ্যে ৫৯ জন এখনও সশস্ত্র গোষ্ঠীটির কাছে রয়েছে। হামাস অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করার পর এই ঘটনা ঘটল।

এই হামলার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে হামাস। এর মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি চুক্তির জন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টা আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের।

এদিকে, হামাসের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই হামলাকে ‘নিবৃত্তিমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছে আইডিএফ।

হামাসের ‘মাঝারি সারির’ সামরিক কমান্ডার, শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও বিভিন্ন অবকাঠামো হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।

পুরোনো শত্রু হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার শপথ নিয়েছেন নেতানিয়াহু। স্থল হামলার পাশাপাশি আকাশ থেকে অবিরত বোমা ফেলা হচ্ছে।

গাজা সিটি ছাড়াও উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থিত বেসামরিক নাগরিকদের বাড়ি ও শরণার্থী শিবিরেও নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

গাজা সিটির বাসিন্দা রাবিহা জামাল (৬৫) বলেন, ‘এটা যেন রাতের গভীরতা ভেদ করে নরকের আগুন জ্বলে উঠেছে। যুদ্ধের প্রথম দিনের মতোই হামলা করা হয়েছে।’

পাঁচ সন্তানের মা এই নারী বলেন, ‘সেহরি খাওয়ার জন্য আমরা যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন বিস্ফোরণ শুরু হয় এবং ভবনগুলো কেঁপে উঠতে শুরু করে। ভেবেছিলাম যুদ্ধ শেষ, কিন্তু তা আবার ফিরে এলো!’

নতুন দফায় এই হামলায় নিহতদের মধ্যে হামাসের রাজনৈতিক শাখার দীর্ঘদিনের সদস্য ইসাম আল-দালিসও রয়েছেন। গাজার সরকারের প্রশাসনিক কমিটির প্রধান ছিলেন তিনি। এছাড়া উপ-বিচারমন্ত্রী আহমেদ আল-হাত্তা, উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আবু ওয়াতফাও নিহত হয়েছেন।

ব্যাপক পরিসরে এই হামলায় রমজান মাসেও নতুন করে প্রাণ সংকটে পড়ে গেল গাজাবাসী।

আরও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত কমপক্ষে ৩২৬
ট্রাম্পের গলফ রিসোর্টে হামলা
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল
ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করল ইসরায়েল
গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করবেন নেতানিয়াহু

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
At least 120 killed in Israeli attacks in Gaza

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত কমপক্ষে ৩২৬

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত কমপক্ষে ৩২৬
গাজার একটি হাসপাতালে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আল জাজিরা
আল জাজিরা জানায়, উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস ও রাফাহ, উত্তরাঞ্চলীয় গাজা সিটি এবং মধ্যাঞ্চলীয় দেইর এল-বালাহসহ বিভিন্ন স্থানে এসব হামলা হয়।

হামাসের সঙ্গে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৩২৬ জন নিহত হয়েছেন।

আল জাজিরা জানায়, উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস ও রাফাহ, উত্তরাঞ্চলীয় গাজা সিটি এবং মধ্যাঞ্চলীয় দেইর এল-বালাহসহ বিভিন্ন স্থানে এসব হামলা হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে এখন পর্যন্ত ৩২৬ শহিদকে নেওয়া হয়েছে। এখনও অনেক ভুক্তভোগী ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে।

গাজার শাসক দল হামাস মনে করছে, ইসরায়েলের এ হামলা গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি থেকে একতরফা সরে আসার শামিল।

অন্যদিকে গাজার আরেক সংগঠন প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) অভিযোগ, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সব ধরনের প্রচেষ্টা ইচ্ছাকৃতভাবে নস্যাৎ করছে ইসরায়েল।

আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের গলফ রিসোর্টে হামলা
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল
ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করল ইসরায়েল
গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করবেন নেতানিয়াহু
উত্তর গাজায় ফিরল ২ লাখ ফিলিস্তিনি

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The clash in Syria leaves a thousand killed in revenge attacks

সিরিয়ায় সংঘর্ষ, প্রতিশোধমূলক হামলায় নিহত হাজার ছাড়াল

সিরিয়ায় সংঘর্ষ, প্রতিশোধমূলক হামলায় নিহত হাজার ছাড়াল সিরিয়ার একটি এলাকায় জানাজায় স্থানীয়রা। ছবি: এপি
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর অনুসারে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির ১৪ বছরে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা এটি।

সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগতদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় সময় শনিবার যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী একটি গোষ্ঠী এমন তথ্য দিয়েছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর অনুসারে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির ১৪ বছরে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা এটি।

ব্রিটিশভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, ৭৪৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৫ সদস্য ও আসাদসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠীর ১৪৮ জন নিহত হন। খুব কাছ থেকে গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়।

এ ছাড়া লাতাকিয়া শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ও খাবার পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এ সংঘাতের শুরু হয়েছে, যা সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে মাস তিনেক আগে সিরিয়ার কর্তৃত্ব গ্রহণ করে বিদ্রোহীরা।

সরকার জানিয়েছে, আসাদ বাহিনীর অবশিষ্টাংশের হামলার জবাব দিচ্ছে তারা। আর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার জন্য ব্যক্তিগত হামলার ঘটনাকে দায়ী করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে দুই স্পিডবোটের সংঘর্ষে তিনজন নিহত, একজন আহত
বাগেরহাটে মার্চ ফর ইউনিটির গাড়িবহরে হামলা, সংঘর্ষে আহত ২০
সিরিয়ার পুনর্গঠনে বিশ্বকে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জাতিসংঘের
ইজতেমা মাঠে নিহত ৪, খুনিদের ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সিরিয়ার গণকবরে কমপক্ষে ১ লাখ মরদেহ সমাহিত করার দাবি

মন্তব্য

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত গাজার বিভিন্ন স্থাপনা। ছবি: এএফপি
নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের মতে, ইসরায়েল ও হামাস আলোচনার অচলাবস্থায় রয়েছে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তাবলীতে তাৎক্ষণিকভাবে তারা একমত হতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে উইটকফ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় রবিবার জানিয়েছে, পবিত্র রমজান মাস ও এপ্রিলের মাঝামাঝি ইহুদিদের বসন্তকালীন উৎসব ‘পাসওভার’ ছুটির দিন পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইসরায়েল।

জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।

স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতের ঠিক পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, রমজানে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ইসরাইল, যা মার্চের শেষের দিকে শেষ হবে এবং এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে আট দিনের ইহুদি পাসওভার পালন করা হবে।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শনিবার শেষ হয়েছে। এর পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পক্ষ থেকে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সায় থাকার কথা জানানো হলো।

এই চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্দেশ্য ছিল গাজায় এখনও থাকা কয়েক ডজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া এবং যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের পথ প্রশস্ত করা।

নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের মতে, ইসরায়েল ও হামাস আলোচনার অচলাবস্থায় রয়েছে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তাবলীতে তাৎক্ষণিকভাবে তারা একমত হতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে উইটকফ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।

আরও পড়ুন:
অশ্রু, আলিঙ্গনে বরণ মুক্ত ৯০ ফিলিস্তিনিকে
১৫ মাস পর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি কার্যকর রোববার: কাতার
গাজায় যুদ্ধবিরতি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আনবে, আশা পুতিনের
আমার প্রশাসন চাপ না দিলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতো না: ট্রাম্প

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israel suspends the release of Palestinian prisoners

ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করল ইসরায়েল পশ্চিম তীরের রামাল্লায় শনিবার ফিলিস্তিনি বন্দিদের গ্রহণ করার অপেক্ষায় তাদের স্বজনরা। ছবি: এপি
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘লজ্জাজনক অনুষ্ঠান ছাড়াই পরবর্তী জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শনিবারের নির্ধারিত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

আরও জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় চলমান ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করেছে ইসরায়েল।

স্থানীয় সময় রবিবার সকালে ইসরায়েল এ ঘোষণা দেয়।

এর আগে শনিবার হামাস ছয় জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েল প্রায় ৬২০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে বলে আশা করা হয়েছিল। তিন ধাপের চুক্তির প্রথম ধাপে মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও জীবিত জিম্মিদের মধ্যে এ ছয়জনই ছিল শেষ দল।

এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘লজ্জাজনক অনুষ্ঠান ছাড়াই পরবর্তী জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শনিবারের নির্ধারিত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করে এমন লজ্জাজনক (জিম্মি মুক্তি) অনুষ্ঠান এবং প্রচারণার উদ্দেশ্যে জিম্মিদের নিন্দনীয় ব্যবহারসহ বারবার (চুক্তি) লঙ্ঘন করেছে হামাস।’

হামাস ও ইসরায়েল উভয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণার জন্য বন্দিদের ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।

হামাস মঞ্চে জিম্মিদের ওঠায়। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের পরিহিত ব্রেসলেট ও টি-শার্টে অবমাননাকর লেখা সংযুক্ত করে এবং অসম্মানজনক ভঙ্গিতে তাদের ছবি তোলে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি তথ্য অনুযায়ী, মোট ৬৩ জন জিম্মি গাজায় রয়ে গেছে, যাদের অর্ধেকেরও বেশি মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:
গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু করবেন নেতানিয়াহু
উত্তর গাজায় ফিরল ২ লাখ ফিলিস্তিনি
যুদ্ধ শুরুর পর ১০ থেকে ১৫ হাজার যোদ্ধা নিয়োগ হামাসের
গাজায় ধ্বংসস্তূপ থেকে ২ শতাধিক মরদেহ উদ্ধার
অশ্রু, আলিঙ্গনে বরণ মুক্ত ৯০ ফিলিস্তিনিকে

মন্তব্য

p
উপরে