× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Messi is part of the Saudi billion dollar project
google_news print-icon

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি

সৌদি-বিলিয়ন-ডলার-প্রজেক্টের-অংশ-মেসি
২০১২ সালে প্রথম সৌদি সফরে যান মেসি। ছবি: এএফপি
সৌদি আরবের ভাবমূর্তি উন্নয়নের মিশনে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি যোগ দেন চলতি বছর। আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তির লক্ষ্য সৌদি পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন।

কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিস্ময়কর জয় পেয়েছে সৌদি আরব। এটি ছিল গ্রুপ সি-এর প্রথম ম্যাচ। একই সঙ্গে এটি ছিল মাঠের বাইরে একটি যুদ্ধের পটভূমি, যা আগামী বেশ কয়েক বছর ধরে চলবে।

সৌদি আরবের ভাবমূর্তি উন্নয়নের মিশনে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি যোগ দেন চলতি বছর। আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তির লক্ষ্য সৌদি পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন।

তবে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস কোম্পানির মালিকানাধীন স্পোর্টস ওয়েবসাইট দ্য অ্যাথলেটিকের নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, রিয়াদের সঙ্গে মেসির গাঁটছড়া ২০৩০ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হতে সৌদি আরবের প্রচেষ্টাকে শক্তি জোগাবে। আর সে ক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে পারে তার নিজের দেশ আর্জেন্টিনা।

২০২৬ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে। এরপর ২০৩০ সালের আয়োজক দেশ ঠিক করতে চলতি বছরের জুনেই বিডিং উন্মুক্ত হয়েছে। আয়োজক দেশের নাম চূড়ান্ত হবে ২০২৪ সালে ফিফার ৭৪তম কংগ্রেসে।

এখন পর্যন্ত স্পেন, পর্তুগাল ও ইউক্রেনের যৌথ উদ্যোগের বিডিং নিশ্চিত হয়েছে। এ বছরের শুরুতেই দেশ তিনটি এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়। তবে আরও দুটি প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে জমা পড়ার কথা।

এর একটি হলো দক্ষিণ আমেরিকান দেশ আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে ও চিলির যৌথ উদ্যোগ। অন্যটি সৌদি আরব, মিশর ও গ্রিসের। একাধিক দেশের যৌথ আয়োজক হিসেবে বিডে অংশগ্রহণের ফলে ২০২৬ সাল থেকে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব ৪৮ দলের প্রতিযোগিতায় পরিণত হচ্ছে।

২০৩০ সালের জন্য দক্ষিণ আমেরিকান বিড খুব শক্ত প্রতিপক্ষ হবে বলে মনে করছেন এর কো-অর্ডিনেটর ফার্নান্দো মারিন। দ্য অ্যাথলেটিককে তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলটি অজস্র প্রতিভার জন্ম দিয়েছে, যারা সারা বিশ্বে সুপরিচিত। এ ছাড়া ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়। এর ১০০তম বার্ষিকীতে ২০৩০ সালে দক্ষিণ আমেরিকাই হবে বিশ্বকাপের সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান।’

১৯৩০ সালে স্বাগতিক উরুগুয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট জিতেছিল।

দক্ষিণ আমেরিকার যৌথ বিডের বিষয়টি ২০১৭ সালে প্রথম জনসমক্ষে আসে, যখন বার্সেলোনার সতীর্থ উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ এবং আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি তাদের দেশের পক্ষে প্রচারে যুক্ত হন। দুই দেশের মধ্যে একটি ম্যাচের আগে সুয়ারেজ যে জার্সি পরেন তার সামনে ২০ এবং মেসির জার্সিতে ৩০ সংখ্যাটি লেখা ছিল।

পরের বছর ফার্নান্দো মারিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টার সঙ্গে মেসি যোগ দেবেন এবং সুয়ারেজ তো অবশ্যই। আমরা তাকে (মেসি) আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে জানিয়েছি এবং তিনি মনে করেন এটা সম্ভব। তিনি আমাদের সাহায্য করতে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি অবশ্যই আমাদের জন্য বিশ্বকাপের পতাকাবাহী হবেন।’

তবে গত মে মাসে ঘটনার নতুন বাঁক তৈরি হয়। বর্তমানে এই গ্রহের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে বিখ্যাত ফুটবলার সৌদি আরবের প্রচারের দায়িত্ব নিতে একটি আকর্ষণীয় চুক্তিতে সই করেন।

প্রথম কথাটি হলো, চুক্তিটি হয়েছে সৌদির পর্যটন-সংক্রান্ত প্রচারের জন্য, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপের বিডের প্রসঙ্গ সেখানে নেই।

তবে সৌদি আরবের জাতীয় লক্ষ্যগুলো দেশটির ‘ভিশন ২০৩০’-এর সঙ্গে যুক্ত। সরকারি ভাষ্যগুলোতে একে ‘সৌদি আরবকে বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত করার একটি অনন্য রূপান্তরমূলক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের নীলনকশা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

তাই ২০৩০ সালের বিশ্বকাপের বিড সৌদি আরবের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে প্রবলভাবে যুক্ত বলে মনে হয় এবং পর্যটনের প্রচার সেই লক্ষ্যটি অর্জনে অনেকভাবে সাহায্য করবে।

অন্য উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌম সম্পদ তহবিল- পিআইএফের মাধ্যমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব নিউকাসল ইউনাইটেডকে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত, সেই সঙ্গে এলআইভি গলফ ব্রেকওয়ে ট্যুরকে সহায়তাদান। এ ছাড়া ১০ বছরের জন্য ফর্মুলা ওয়ান রেসের পৃষ্ঠপোষকতা এবং ২০১৯ সালে অ্যান্টনি জশুয়া এবং অ্যান্ডি রুইজের হেভিওয়েট বক্সিং আয়োজনের জন্য ৬৫ কোটি ডলারের চুক্তি।

সৌদিতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কানাডার রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন ডেনিস হোরাক। তিনি বলেন, ‘বিনোদন ও ক্রীড়ায় এই বিপুল অংশগ্রহণ সৌদির ভিশন ২০৩০-এর একটি বড় অংশ। এলআইভি গলফ (সৌদি আরবের অর্থায়নে) এবং এখন এগুলোর সঙ্গে মেসির মতো তারকাদের উচ্চমূল্যে যুক্ত করার মাধ্যমে তারা বিষয়টিকে নতুন স্তরে নিয়ে যাওয়ার এবং আরও বৈশ্বিক করার চেষ্টা করছে। বিশ্বব্যাপী সৌদির সুনাম বাড়াতে হবে এবং এসবের মাধ্যমে দেশটি নিজেদের নতুন ব্র্যান্ড তৈরির চেষ্টা করছে।’

মেসির চুক্তির মেয়াদ এবং শর্ত কোনো পক্ষই প্রকাশ করেনি।

যুক্তরাজ্যের ডেইলি টেলিগ্রাফ আগে এক প্রতিবেদনে জানায়, ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো সৌদি পর্যটনের প্রচারে কাজ করার জন্য প্রতিবছর ৫০ লাখ পাউন্ডের বেশি অর্থের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই আলোচনায় যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘনিষ্ঠ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

উপসাগরীয় অঞ্চলে রাষ্ট্রদূতদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র দ্য অ্যাথলেটিককে বলেছে, মেসির সঙ্গে সৌদির চুক্তিটির আর্থিক মূল্য রোনালদোকে দেয়া প্রস্তাবের চেয়ে ৫ গুণ বেশি হতে পারে।

সৌদি এজেন্সিগুলোর তৎপরতার বিভিন্ন উদাহরণ পর্যালোচনা করলে বিষয়টি আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। যেমন এলআইভি গলফ ট্যুরে টাইগার উডসকে ভেড়াতে ৭০-৮০ কোটি ডলারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, তবে তিনি সেটি প্রত্যাখ্যান করেন৷

মেসির প্রতিনিধিরা বলেছেন, গোপনীয়তার শর্তের কারণে তারা চুক্তির পরিসংখ্যানগত দিকগুলো প্রকাশ করতে পারবেন না। অন্যদিকে এ-সংক্রান্ত ই-মেইলের কোনো জবাব দেয়নি সৌদি সরকার।

মেসি গত মে মাসে লোহিত সাগরের তীরের রিসোর্ট শহর জেদ্দায় ভ্রমণের সময় প্রথমবার তাকে সৌদির পর্যটনদূত হিসেবে প্রচার করে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মেসিকে স্বাগত জানিয়ে সৌদি পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খতিব এক টুইটে লেখেন, ‘সৌদি আরবে এটি তার প্রথম সফর নয় এবং এটি শেষও হবে না।’

পরে ইয়টে সূর্যাস্ত দেখার সময়কার নিজের একটি ছবি প্রকাশ করেন মেসি।

ইনস্টাগ্রামে ছবির শিরোনামে তিনি লেখেন, ‘লোহিত সাগরের বুকে #ভিজিটসৌদি’। ইনস্টাগ্রামে মেসির ফলোয়ারের সংখ্যা ৩৭ কোটি। পোস্টটিতে সৌদি পর্যটন কর্তৃপক্ষের সহায়ক সংস্থা ভিজিট সৌদির ‘পেইড পার্টনারশিপ’ লেবেল যুক্ত ছিল।

মেসি পরে সৌদির সহকারী পর্যটনমন্ত্রীর প্রিন্সেস হাইফা আল-সৌদের সঙ্গে পুরোনো জেদ্দা সফরে যোগ দেন।

প্রিন্সেস হাইফা পরে টুইটারে লেখেন, ‘এই শহরের অন্তর্নিহিত রূপ, ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের প্রতি তার (মেসি) মুগ্ধতা দেখে আমি আনন্দিত।’

ভিজিট সৌদির ওয়েবসাইটে এখন মেসির একটি ল্যান্ডিং পেজ রয়েছে। এর শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘লিওনেল মেসি চান আপনি নিজের ভেতরের রোমাঞ্চ-সন্ধানী সত্তাকে উন্মোচন করুন এবং অকল্পনীয় দিকগুলো উদ্ঘাটন করুন।

‘আপনি নতুন বা পুরোনো কিছু আবিষ্কার করতে অথবা শুধু নিজের ভেতরে নতুন কিছু জাগানো- যে উদ্দেশ্যেই ভ্রমণ করুন না কেন, সৌদি প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাকে সন্তুষ্টি জোগাবে। তাহলে আর কিসের জন্য অপেক্ষা করছেন? এখনই আপনার অ্যাডভেঞ্চারের পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলুন।’

সৌদি আরবের প্রচারে মেসির এই অবস্থান ২০৩০ সালে বিশ্বকাপ আয়োজনে তার নিজের দেশের প্রচেষ্টার সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে মেসির সাপোর্ট টিম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। একইভাবে পর্যটন প্রচারের চুক্তির অংশ হিসেবে তিনি কতবার সৌদি সফরে যাবেন, সে বিষয়ে তথ্য দিতেও অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।

আরও তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, তারা এমন একটি দেশের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের চেক নেয়ার বিষয়ে মেসির প্রস্তুতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি, যে দেশটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

এসব অভিযোগের মধ্যে আছে ভিন্নমতাবলম্বী ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যা, নারী অধিকারকর্মী ও এলজিবিটি গোষ্ঠী এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) শাসনের বিরুদ্ধাচরণকারীদের ওপর ক্র্যাকডাউন।

মানবাধিকার সংস্থা ইউনিসেফ গত বছর জানায়, প্রতিবেশী ইয়েমেনে সংঘাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট জড়িয়ে পড়ার পর থেকে ১০ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে। মেসি ২০১০ সাল থেকে ইউনিসেফের একজন ‘শুভেচ্ছাদূত’।

মেসির প্রতিনিধিরা ইয়েমেন বিরোধের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি, একই সঙ্গে ইউনিসেফও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

মেসির অগণিত অংশীদারত্বের মধ্যে একটি হলো ফরাসি চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেন্ট-জার্মেইনের হয়ে খেলা, যেখানে তিনি ৩ কোটি ইউরোর বেশি আয় করেন। এটি কাতারের সঙ্গে যুক্ত একটি তহবিলের মালিকানাধীন ক্লাব, যে দেশটির বিরুদ্ধেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

মেসি সম্প্রতি ক্রিপ্টো ফ্যান টোকেন ফার্ম সোসিওস-এর প্রচারের জন্য ২ লাখ ডলারের চুক্তি করেছেন, পাশাপাশি তিনি এনএফটিভিত্তিক গেম সোরারেও একজন বিজ্ঞাপনী মুখ। এ ছাড়া তিনি আডিডাস, পেপসি, বাডওয়াইজার, ওরেডু, প্রো অ্যাভ্যুলিউশন সকার, লুই ভ্যুইতন, ইসরায়েলি কোম্পানি ওরক্যাম, দ্য দুবাই এক্সপো-২০২০, তার নিজস্ব শো সার্ক দ্যু সোলেইল এবং চীনা দুগ্ধ কোম্পানি মেংনিউ-এর সঙ্গে স্পনসরশিপ চুক্তি করেছেন।

ফোর্বস ম্যাগাজিন গত মে মাসে যে অনুমান প্রকাশ করে সে অনুযায়ী, গত বছর মেসি ১২ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছেন।

সৌদি নাগরিক খালিদ আল-জাবরির বোন সারা এবং ভাই ওমর বর্তমানে দেশটির একটি কারাগারে বন্দি। খালিদ আল-জাবরির বাবা সৌদি আরবের একজন সাবেক শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

দ্য অ্যাথলেটিক-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে খালিদ অভিযোগ করেন, তার বাবা ড. সাদ আলজাবরির ওপর চাপ দেয়ার জন্য কারাবন্দি দুই ভাইবোনকে ‘দর-কষাকষির হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে সৌদি সরকার।

খালিদ বলছেন, ‘সৌদি ক্রাউন প্রিন্স বিন সালমান দেশকে স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং মেসির দূতের ভূমিকা এতে অবদান রাখছে।

‘মেডিক্যাল স্কুলে পড়ার সময় তাকে (মেসি) দেখতে আমরা একসঙ্গে জড়ো হতাম। তিনি বিশ্বে সুপরিচিত এটাই একমাত্র কারণ নয়, দেশের ভেতরেও সবাই তাকে ভালোবাসে। ফুটবলের ক্ষেত্রে তার অবস্থান ঈশ্বরের ঠিক পরেই। এই চুক্তির মাধ্যমে তারা (সৌদি সরকার) সেই কেন্দ্রবিন্দুটিতে আঘাত করেছে।’

মেসি ২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরব সফর করেন।

তার ফ্লাইট অবতরণের পর ভক্তদের হুড়োহুড়ি লেগে যায়। নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত কঠোর। ভিড়ের চাপ সামলাতে ব্যতিব্যস্ত সশস্ত্র রক্ষীদের একজনের বন্দুকের নল ঘটনাক্রমে মেসির মুখের দিকে ঘুরে গিয়েছিল।

তারপর থেকে সম্পর্কটি ক্রমশ উষ্ণ হয়েছে। এর পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন তুর্কি আল-শেখ নামের এক ব্যক্তি। তিনি সৌদি জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান। এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য দেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটানো।

বিশিষ্ট সৌদি রাজনীতিক ও স্প্যানিশ লা লিগা ফুটবল ক্লাব আলমেরিয়ার মালিক আল-শেখকে ২০২০ সালের মে মাসে অনলাইনে একটি শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান মেসি।

উপলক্ষটি ছিল সৌদি ফুটবল ক্লাব আল-নাসর এফসির সাবেক সভাপতি সৌদ আল-সুওয়াইলেমের বিপক্ষে একটি চ্যারিটি প্লেস্টেশন ফুটবল ম্যাচে আল-শেখের প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

সৌদি আরবের অভাবী মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে ম্যাচটি আয়োজন করা হয়। সেখানে মেসি ছাড়াও ডিয়েগো ম্যারাডোনা, সাবেক ব্রাজিল তারকা কাফু, রবার্তো কার্লোস এবং রোনালদিনহো, ইতালীয় ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চিও শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন। চার্লি শিনের মতো বিখ্যাত অভিনেতা এবং র‌্যাপার স্নুপ ডগও বার্তা দিয়েছিলেন।

সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী খাশোগজিকে ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমেরিকান গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে ওই হত্যায় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুমোদন ছিল।

খাশোগজির মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা একটি সাক্ষাৎকার পরে নিউজউইকে প্রকাশ হয়। সেখানে খাশোগজি বলেন, ‘তুর্কি আল-শেখ এবং সৌদ আল-কাহতানি ছাড়া মোহাম্মদ বিন সালমানের আর কোনো রাজনৈতিক উপদেষ্টা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরা গুণ্ডা প্রকৃতির। মানুষ তাদের ভয় পায়। তুর্কি আল-শেখ খেলাধুলার দায়িত্বে আছেন। গুজব রয়েছে খেলাধুলার পেছনে ব্যয় এবং তরুণদের এতে ব্যস্ত রাখতে তার হাতে কয়েক বিলিয়ন ডলার রয়েছে।’

মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্য মিডিয়া অপারেশন এবং প্রচারের দায়িত্ব সামলাতেন সৌদ আল-কাহতানি। আমেরিকান গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাকে খাশোগজি হত্যার চক্রান্তে যুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়। তবে সৌদি আদালত ২০১৯ সালে তাকে এই অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়।

আল-শেখ ছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমানের সাবেক নিরাপত্তাকর্মী। ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে ধীরে ধীরে তার প্রচণ্ড বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার হাতে তুলে দেয়া হয় সৌদি স্পোর্টস কমিশন চালানোর দায়িত্ব।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ বিন সালমান তার ক্ষমতা সংহত করতে সৌদি আরবের শত শত ধনী ব্যবসায়ীকে রিটজ-কার্লটন হোটেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিলেন। ওই সময়ে আল-শেখ অত্যন্ত তৎপর ভূমিকা পালন করেন। পরে ঘটনাটিকে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখানো হয়।

সৌদি স্পোর্টস কমিশন পরিচালনার সময় আল-শেখ ক্রীড়ায় অর্থ বিনিয়োগে আগ্রহীদের জন্য একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হন। তিনি ২০১৯ সালে সৌদিতে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার একটি ম্যাচ আয়োজন করেন।

মেসিও প্রকাশ্যে ৪০তম জন্মদিনে আল-শেখকে শুভেচ্ছা জানান। এর আগে তিনি আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের নিয়ে রিয়াদে তার বাড়িতে ঘুরতে যান।

জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আল-শেখ ২০২২ সালের রিয়াদ সিজনের (একটি বিনোদন উৎসব) বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডে মেসির ছবি ব্যবহার করেন। এসব বিলবোর্ড লন্ডন, দুবাই ও নিউকাসলে স্থাপন করা হয়।

পিএসজির জার্সিতেও রিয়াদ সিজনের প্রচার চালানোর একটি ভিডিওতেও দেখা যায় মেসিকে।

এটি বিশেষ এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। পিএসজির সঙ্গে যুক্ত দেশ কাতারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আল-শেখ কাতারের উপর সৌদি অবরোধের কেন্দ্রীয় শক্তির অংশ ছিলেন। এমনকি টুইটারে তিনি বলেছিলেন, কাতার নৈতিকতা লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজন ইংল্যান্ড বা যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেয়া উচিত।

অবশ্য পিএসজির সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী মেসির অন্য কোনো বাণিজ্যিক চুক্তি করায় বাধা নেই। পাশাপাশি গত বছর থেকে সৌদি ও কাতারের সম্পর্কের শীতলতা কাটতে শুরু করেছে। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের দিন রোববার ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর দুই পাশে বিন সালমান ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে বসতে দেখা গেছে।

মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে অটোয়ার বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ২০১৮ সালে কানাডার রাষ্ট্রদূত হোরাক সৌদি আরব থেকে বহিষ্কৃত হন। তিনি তার মূল্যায়নে সৌদির নেতৃত্ব সম্পর্কে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ব্যাখ্যা দেন।

হোরাক বলেন, বিন সালমান সৌদির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে পশ্চিমা রাজনীতিকদের মনে আশার সঞ্চার ঘটিয়েছিলেন। তবে খাশোগজির হত্যা, নারী অধিকার কর্মীদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গীকে তার শাসনের বিরুদ্ধে নিয়ে যায়।

আল-শেখ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি তার প্রভাবের কথা শুনেছি। তাকে নিশ্চিতভাবে রাজকীয় ব্যবস্থায় মোহাম্মদ বিন সালমানের অতি ঘনিষ্ঠদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

‘তিনি (আল-শেখ) অবশ্যই ক্ষমতাকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত এবং মেসিকে যুক্ত করার বিষয়টি বিন সালমান অবশ্যই পছন্দ করবেন। তার (মোহাম্মদ বিন সালমান) চোখে বিশ্বে সৌদি আরবের অবস্থান উপলব্ধির আরেকটি সুযোগ ঘটাবে এই বিষয়টি। তিনি বুঝবেন সৌদি বিচ্ছিন্ন কোনো মরুরাজ্য নয়।

‘আন্তর্জাতিকভাবে মেসির যে প্রোফাইল রয়েছে, সেটি সৌদিকে স্বাভাবিকতার একটি বৃহত্তর অনুভূতি দেবে। তাই আমি মনে করি এ বিষয়টি ২০৩০ সালে তাদের বিশ্বকাপ বিডের ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে।’

হোরাক বলেন, ‘খাশোগজি হত্যার কারণে মোহাম্মদ বিন সালমান ব্র্যান্ডটির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। একইসঙ্গে সৌদি আরবের ব্র্যান্ডও কলঙ্কিত হয়েছে। এমন অবস্থায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিশ্বের সেলিব্রিটিদের কাছে যত বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ তৈরি করা যাবে এবং সে অনুযায়ী সৌদি আরবের ব্র্যান্ডটিকে আবারও ঝকঝকে করে তোলা সম্ভব হবে।’

সৌদি কারাগারে বন্দি দুই স্বজনের ভাই খালিদ আল-জাবরি বলেন, ‘মেসির মতো খেলোয়াড়দের একটি দলের অংশ হিসেবে সৌদিতে খেলতে যাওয়া নিয়ে আমার আপত্তি নেই। কারণ দেশের শাসকদের নৃশংসতার কারণ দেখিয়ে সৌদি ভক্তদের তাদের প্রিয় দলের খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। আমার সমস্যা হলো মেসি নিজেকে সৌদি স্পোর্টস ওয়াশিংয়ের হাতিয়ারে পরিণত করেছেন।

‘তিনি নিজেকে শয়তানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।’

এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ সি ম্যাচের আগে সোমবার সন্ধ্যায় দোহায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন মেসি। মাঠে যে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন তাদের হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। আর প্রতিপক্ষ দেশটি ছিল তারা, যারা তাদের প্রচারে ব্যবহার করছে মেসির ছবি।

কাতারের টেলিভিশনে সম্প্রচার হচ্ছে সৌদি আরবে মেসির সফর নিয়ে তৈরি বিজ্ঞাপন।

সেই সংবাদ সম্মেলনে মেসির আগমনকে ওহ, আহা ধ্বনি এবং ফোনের ক্যামেরায় ছবি তুলে স্বাগত জানানো হয়। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে কয়েকজন করতালি দিচ্ছিলেন।

ব্যস্ত ওই মিডিয়া সেশনে দ্য অ্যাথলেটিক কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ পায়নি। মেসি এক ডজনেরও বেশি প্রশ্ন নিয়েছিলেন, তবে তার একটিও সৌদি আরবকে নিয়ে প্রচার চালানো বিষয়ক চুক্তি সংক্রান্ত ছিল না। দক্ষিণ আমেরিকান বা আরব মিডিয়া থেকে এসব প্রশ্ন করা হয়েছিল।

চলমান বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে রোববার সন্ধ্যায় ইনফান্তিনোর পাশে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বসার দৃশ্য সৌদির সামনে আরও একবার আশা জাগিয়ে তুলেছে। এই জুটিকে গত সপ্তাহে জি টোয়েন্টি সম্মেলনে বালিতেও একসঙ্গে দেখা গেছে। এর আগেও তারা একসঙ্গে বক্সিং ম্যাচ দেখেছেন।

সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য মিশর ও গ্রিসের সঙ্গে যৌথভাবে সৌদি আরবের বিডকে ফিফা গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করবে বলে রিয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। সৌদিরা ২০৩০ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপোর আয়োজক দেশ হতেও একটি বিড জমা দিয়েছে, এটিও ভিশন ২০৩০ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ।

বিশিষ্ট আর্জেন্টাইন ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কথোপকথনে মেসিকে ঘিরে সমালোচনায় অস্বস্তি মৃদু আকারে হলেও বোঝা যায়।

বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হতে আর্জেন্টিনার আগ্রহের বিপরীতে প্রতিপক্ষের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে মেসি সাহায্য করছেন, এটি অদ্ভুত লাগছে কিনা- এমন প্রশ্নে তার সাবেক আন্তর্জাতিক সতীর্থ ম্যাক্সি রদ্রিগেজ বলেন, ‘সত্যি বলতে কি এটা ঠিক, তবে… আপনি জানেন না শেষ পর্যন্ত কী ঘটতে যাচ্ছে।

‘আপনি নিজ দেশে বিশ্বকাপ দেখতে চান, তবে এ জন্য অনেক কিছু করতে হবে। কারণ, বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়া সহজ নয়। টুর্নামেন্টের আয়োজক নির্বাচনের সময় কী ঘটছে আমরা দেখতে পাব। আর্জেন্টাইন হিসেবে আমরা আবারও আমাদের দেশে এই আয়োজন দেখতে চাই।’

দক্ষিণ আমেরিকার যৌথ বিডের কো-অর্ডিনেটর ফার্নান্দো মারিন বলেন, ‘মাঠে এবং মাঠের বাইরে মেসির এক অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি একটি সুউচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছেন। মেসি নিজেই একটি ব্র্যান্ড এবং এটি খুব শক্তিশালী।

‘তিনি সমস্ত ফুটবলের জন্য একটি ব্র্যান্ড, কোনো দেশের নয়। তিনি ২০৩০ সালের জন্য দক্ষিণ আমেরিকান বিডের একটি মৌলিক অংশ হিসেবে থাকবেন।’

আরও পড়ুন:
এখনও ক্রীতদাস
পদ্মা সেতু নিয়েছে জমি, দিয়েছে অহংকার
কী ঘটেছিল জিয়ার মৃত্যুর পর
যে গ্রামে অপরাধ কম, কালেভদ্রে পুলিশ  
অ্যামাজন, গুগল ও অ্যাপলে নিউজবাংলা পডকাস্ট

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
20 Umrah pilgrims killed in Saudi bus overturn

সৌদিতে বাস উল্টে ২০ ওমরাহ যাত্রী নিহত

সৌদিতে বাস উল্টে ২০ ওমরাহ যাত্রী নিহত আসির প্রদেশে বাস উল্টে আগুন ধরে অন্তত ২০ ওমরাহ যাত্রী নিহত হয়েছেন। ছবি: আরব নিউজ
আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় বিকেল ৪টার দিকে একটি সেতুর ওপর বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়। বাসের যাত্রীরা ওমরাহ পালনের উদ্দেশে মক্কায় যাচ্ছিলেন।

সৌদি আরবে বাস উল্টে আগুন ধরে অন্তত ২০ ওমরাহ যাত্রী নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় সময় সোমবার দেশটির আসির প্রদেশের এ দুর্ঘটনায় আরও ২৯ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আল-খাবারিয়া বলছে, আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় বিকেল ৪টার দিকে একটি সেতুর ওপর বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়। বাসের যাত্রীরা ওমরাহ পালনের উদ্দেশে মক্কায় যাচ্ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেক কাজ না করায় সেতুর এক পাশে গিয়ে ধাক্কা খায় বাসটি। এতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।

সৌদি প্রেসের তথ্যানুযায়ী, ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আকাবা শারের সড়কটি প্রায় ৪০ বছর আগে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়।

আরও পড়ুন:
পুরুষ ছাড়াই নারীদের ওমরাহ পালনের সুযোগ
দুই ওমরাহর মধ্যে ব্যবধান ১০ দিন
চীনা টিকা নিলে ওমরাহে যেতে বাধা নেই
শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধের ওমরাহ পালনে বাধা
ওমরাহ পালনে শর্ত কী, জানাল ধর্ম মন্ত্রণালয়

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The king invited the president of Iran to Saudi Arabia

সফরের আমন্ত্রণ সৌদি বাদশাহর, স্বাগত জানালেন ইরানের প্রেসিডেন্ট

সফরের আমন্ত্রণ সৌদি বাদশাহর, স্বাগত জানালেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুলাজিজ আল সৌদি ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। কোলাজ: নিউজবাংলা
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে রোববার এক পোস্টে আমন্ত্রণের বিষয়টি জানান ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির প্রেসিডেন্টের রাজনীতিবিষয়ক ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ মোহাম্মদ জামশিদি।

সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চীনের মধ্যস্থতায় সাম্প্রতিক মতৈক্যের পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুলাজিজ আল সৌদ।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে রোববার এক পোস্টে আমন্ত্রণের বিষয়টি জানান ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির রাজনীতিবিষয়ক ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ মোহাম্মদ জামশিদি।

তিনি বলেন, এক চিঠিতে ইরানের প্রেসিডেন্টকে সফরের আমন্ত্রণ জানান সৌদি বাদশাহ।

টুইটে জামশিদি লিখেন, ‘প্রেসিডেন্ট রাইসিকে দেয়া চিঠিতে সৌদি আরবের বাদশাহ বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের মধ্যকার চুক্তিকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি তাকে (ইরানের প্রেসিডেন্ট) রিয়াদ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’

তিনি লিখেন, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান।

ইরানের জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সালমানের আমন্ত্রণকে স্বাগত জানিয়েছেন রাইসি।

শিয়া ও সুন্নি দ্বন্দ্বের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদ্বন্দ্বীর ভূমিকায় ছিল সৌদি আরব ও ইরান। চীনের মধ্যস্থতায় দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগের পর সে শত্রুতা কমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

সর্বশেষ বাদশাহ সালমান যে চিঠি দিয়েছেন, তাকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

টানা কয়েক দিন বড় পরিসরে আলোচনার পর গত ১০ মার্চ ইরান, সৌদি আরবকে নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয় চীন।

এ ‍চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের বড় দুই শক্তি কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপনের পাশাপাশি দূতাবাস ও মিশনগুলো দুই মাসের মধ্যে ফের চালু করতে সম্মত হয়।

আরও পড়ুন:
ট্রাম্পকে হত্যার সুযোগ খুঁজছে ইরান
সৌদির প্রথম নারী নভোচারী হচ্ছেন রায়ানা
ইরানে ২৬ দিনে ৫৫ ফাঁসি
সাবেক উপমন্ত্রীকে ফাঁসিতে ঝোলাল ইরান
ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্টের মেয়ের ৫ বছরের কারাদণ্ড

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Saudi Iran is once again united by the mediation of China

চীনের মধ্যস্ততায় ফের এক হচ্ছে সৌদি-ইরান

চীনের মধ্যস্ততায় ফের এক হচ্ছে সৌদি-ইরান চীনে ইরান ও সৌদি কর্মকর্তাদের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে উভয় দেশে পুনরায় দূতাবাস চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হয়েছে সৌদি আরব ও ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে দুই দেশের আলোচনায় এই সমঝোতা হয়েছে।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করে একটি বিবৃতিতে জানায়, তিন দেশের আলোচনার মাধ্যমে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে সৌদি আরব ও ইরান।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরব ও ইরানের ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রধান চীনে একটি বৈঠকে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক একটি চুক্তি করেছেন।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে উভয় দেশে পুনরায় দূতাবাস চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

২০১৬ সালে তেহরান ও রিয়াদ কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে অতীতে বেশ কয়েক দফা উভয় দেশের কর্মকর্তারা আলোচনা চালিয়ে আসছিলেন।

ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের সঙে লড়াই করছে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী।

আরও পড়ুন:
দূর থেকে চুমু খাওয়ার যন্ত্র উদ্ভাবন!
ট্রাম্পকে হত্যার সুযোগ খুঁজছে ইরান
চীনে কয়লা খনি ধসে দুই প্রাণহানি, নিখোঁজ অর্ধশত
সৌদির প্রথম নারী নভোচারী হচ্ছেন রায়ানা
এবার চীনের জলসীমায় উড়ন্ত বস্তু

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
6 Palestinians were killed by Israeli forces in Jenin

জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত

জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের সময় সড়কে জড়ো হন অনেকে। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনের হুওয়ারা গ্রামের কাছে অবৈধ বসতির বাসিন্দা দুই ভাইয়ের ওপর গুলি চালানো এক ফিলিস্তিনি রয়েছেন।

দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে মঙ্গলবার ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের সময় কমপক্ষে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছে।

ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, আহত দুজনের অবস্থা গুরুতর।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, একটি বাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখে ইসরায়েলের বাহিনী। সে বাড়িতে রকেট হামলা চালানো হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যায়, বেশ কিছু সামরিক যানের সঙ্গে সঙ্গে হেলিকপ্টার প্রবেশ করছে জেনিন শহরে।

ইসরায়েলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনের হুওয়ারা গ্রামের কাছে অবৈধ বসতির বাসিন্দা দুই ভাইয়ের ওপর গুলি চালানো এক ফিলিস্তিনি রয়েছেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতির দুই বাসিন্দাকে যে বন্দুকধারী খুন করেছিলেন, তাকে ‘নির্মূল’ করেছেন সেনারা।

পশ্চিম তীরের রামাল্লা থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক সারা খাইরাত জানান, জেনিনে তল্লাশি অভিযানের দিন সন্ধ্যায় নাবলুসের দক্ষিণে একটি শরণার্থী ক্যাম্পে একই ধরনের তৎপরতা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।

আরও পড়ুন:
ইসরায়েলে নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
আল-আকসায় ইসরায়েলি মন্ত্রী: উদ্বেগ জাতিসংঘের
আল-আকসায় ইসরায়েলি মন্ত্রী, ফুঁসে উঠল আরব বিশ্ব   
ইসরায়েলে নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা নেতানিয়াহুর
মোসাদকে সহায়তা, ইরানে ৪ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israel strikes Gaza in response to rocket fire

রকেট ছোড়ার জবাবে গাজায় বিমান হামলা ইসরায়েলের

রকেট ছোড়ার জবাবে গাজায় বিমান হামলা ইসরায়েলের গাজা শহরের উত্তরাঞ্চলে বুধবার গভীর রাতে ইসরায়েলি বিমান থেকে হামলা চালানো হয়। ছবি: এএফপি
গাজা শহরের উত্তরাঞ্চলে বুধবার গভীর রাতে হামলা চালায় ইসরায়েলি বিমান। ওই অঞ্চলে ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী দেখা যায়।

দখলকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ১১ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার প্রতিবাদে রকেট ছুড়েছে গাজা উপত্যকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। এর জবাবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, বুধবার গভীর রাতে গাজা শহরের উত্তরাঞ্চলে বোমা ছোড়া হয় ইসরায়েলি বিমান থেকে। ওই অঞ্চলে ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী দেখা যায়।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের সেদেরত ও অ্যাশকেলন শহরে রকেট ছোড়া হয়। সেসব এলাকায় বেজে ওঠে সাইরেন।

রকেট হামলায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ফিলিস্তিনের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কমপক্ষে আটটি রকেট ছোড়া হয় গাজা থেকে। অন্যদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে, দেশটিকে লক্ষ্য করে ছোড়া রকেটের সংখ্যা ছয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাঁচটি রকেটকে আটকে দেয়। আরেকটি রকেট পড়ে জনবসতিহীন এলাকায়।

রকেট ছোড়ার দায় স্বীকার করেনি ফিলিস্তিনের কোনো সংগঠন।

গাজা থেকে রকেট ছোড়ার আগে উপত্যকাভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন ইসলামিক জিহাদ নাবলুসে বুধবার ইসরায়েলি অভিযানের নিন্দা জানিয়ে একে ‘বড় অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দেয়। অভিযানে প্রাণহানির বদলা নেয়ার ঘোষণাও দেয় সংগঠনটি।

অন্যদিকে হামলার নিন্দা জানিয়ে হুঁশিয়ারি দেয় উপত্যকার শাসক দল হামাসও।

আরও পড়ুন:
নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যা ইসরায়েলি বাহিনীর
জেরুজালেমে সিনাগগের কাছে বন্দুক হামলায় নিহত ৭
ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত, তীব্র প্রতিবাদ ঢাকার
নেতানিয়াহুর সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ফুঁসেছে ইসরায়েল
ইসরায়েলে নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israeli forces killed an unarmed Palestinian man

নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যা ইসরায়েলি বাহিনীর

নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যা ইসরায়েলি বাহিনীর দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, কালালওয়েহের মৃত্যুতে এ বছর এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আট শিশু ও বয়স্ক এক নারীসহ ৩৬ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এ সময়ে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এক শিশুসহ  ইসরায়েলি ছয় বেসামরিক এবং ইউক্রেনের এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

দখলকৃত পশ্চিম তীরে শুক্রবার ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিরস্ত্র এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, নাবলুসের দক্ষিণে হুওয়ারা শহরের কাছে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে ২৬ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সামি কালালওয়েহ নিহত হন।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের মুখপাত্র আহমাদ জিব্রিল স্থানীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফাকে জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গুরুতর আহত হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই কালালওয়েহর মৃত্যু হয়।

ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, কালালওয়েহের মৃত্যুতে এ বছর এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আট শিশু ও বয়স্ক এক নারীসহ ৩৬ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এ সময়ে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এক শিশুসহ ইসরায়েলি ছয় বেসামরিক এবং ইউক্রেনের এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, সন্দেহভাজন একজন হুওয়ারা এলাকায় সেনা ঘাঁটি সংলগ্ন সামরিক ফাঁড়ির দিকে হেঁটে যাওয়ার পর বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

সেনাবাহিনী আরও জানায়, কালালওয়েহ এক সেনাকে আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন। ওই স্থানে থাকা আরেক সেনা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান।

ফিলিস্তিনি ওই যুবক নিরস্ত্র ছিলেন বলে স্বীকার করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

এর আগে শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক পূর্ব জেরুজালেমসহ দখলকৃত পশ্চিম তীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সব কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে পরিচালনা করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি এক বিবৃতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভিযানগুলোতে নিয়ম মেনে বলপ্রয়োগের ওপর জোর দেন।

আরও পড়ুন:
আল-আকসায় ইসরায়েলি মন্ত্রী, ফুঁসে উঠল আরব বিশ্ব   
ইসরায়েলে নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা নেতানিয়াহুর
মোসাদকে সহায়তা, ইরানে ৪ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
রকেটের জবাবে গাজায় বোমা হামলা, ইইউর উদ্বেগ
ইসরায়েলের নির্বাচনে নেতানিয়াহুর জয়

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
7 killed in a gun attack near a synagogue in Jerusalem

জেরুজালেমে সিনাগগের কাছে বন্দুক হামলায় নিহত ৭

জেরুজালেমে সিনাগগের কাছে বন্দুক হামলায় নিহত ৭ পূর্ব জেরুজালেমে শুক্রবার হামলাস্থলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: এএফপি
হামলাস্থল ইসরায়েলের অবৈধ বসতি নেভে ইয়াকুব থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক জেমস বেইজ জানান, তার কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, সিনাগগের সামনে গাড়ি থেকে বেরিয়ে গুলি চালান বন্দুকধারী, যাতে কমপক্ষে সাতজন প্রাণ হারান।

দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে শুক্রবার ইহুদি বসতিতে সম্প্রদায়টির উপাসনালয় সিনাগগের কাছে বন্দুকধারীর হামলায় কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছে।

ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে বৃহস্পতিবার শরণার্থী ক্যাম্পে দেশটির সেনাদের তল্লাশির সময় ৯ জন নিহত হওয়ার পরের দিন বন্দুক হামলার ঘটনাটি ঘটে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে পূর্ব জেরুজালেমের হামলাকারী নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম জানায়, বন্দুকধারীর গুলিতে আহত ১০ জনকে তারা চিকিৎসা দিচ্ছে, যাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

হামলাস্থল ইসরায়েলের অবৈধ বসতি নেভে ইয়াকুব থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক জেমস বেইজ জানান, তার কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, সিনাগগের সামনে গাড়ি থেকে বেরিয়ে গুলি চালান বন্দুকধারী, যাতে কমপক্ষে সাতজন প্রাণ হারান।

পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, সন্দেহভাজনের ইতোপূর্বে নিরাপত্তা লঙ্ঘনজনিত কোনো রেকর্ড নেই।

তাৎক্ষণিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো পক্ষ।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থার মতে, গুলিতে ১০ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭০ বছর বয়সী এক পুরুষ ও ১৪ বছরের এক কিশোর রয়েছে।

সিনাগগের কাছাকাছি জায়গার বাসিন্দা ১৮ বছর বয়সী ম্যাটানেল আলমালেম বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমি অনেক ‍গুলির শব্দ শুনেছি।’

আরও পড়ুন:
ইসরায়েলে নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা নেতানিয়াহুর
মোসাদকে সহায়তা, ইরানে ৪ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
রকেটের জবাবে গাজায় বোমা হামলা, ইইউর উদ্বেগ
ইসরায়েলের নির্বাচনে নেতানিয়াহুর জয়
ফিলিস্তিনি ইস্যুতে দুই রাষ্ট্র সমাধানে আগ্রহী ইসরায়েল

মন্তব্য

p
উপরে