ভারতের প্রবীণ রাজনীতিবিদ মল্লিকার্জুন খারগে। ৮০ বছরের খারগে কংগ্রেসের নেতৃত্ব প্রশ্নে ভোটে ক্যারিশম্যাটিক সংসদ সদস্য শশী থারুকে আট গুণ বেশি ভোটে হারিয়েছেন।
নতুন প্রধানকে বুধবার অভিনন্দন জানিয়ে শশী থারু বলেছেন, ‘কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন আজ সত্যি সত্যিই শুরু হয়েছে। এটা আমি বিশ্বাস করি।’
২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম পার্টির নেতৃত্বে এমন একজন এসেছেন যিনি গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ। শেষবার গান্ধী পরিবারের বাইরে কংগ্রেসের দায়িত্ব সামলেছেন সীতারাম কেশরী। তবে তিনি তার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি। দায়িত্ব নেয়ার দুই বছরের মাথায় ১৯৯৮ সালে অনাকাঙ্খিতভাবে তাকে অপসারণ করা হয়েছিল।
মল্লিকার্জুন খারগে সোনিয়া গান্ধীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সোনিয়া ১৯ বছর ধরে কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজীব-সোনিয়ার ছেলে রাহুল গান্ধী ২০১৭ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে দলের ভরাডুবির দায় নিয়ে দুই বছর পর তিনি পদত্যাগ করেন। তারপর থেকে মা সোনিয়া গান্ধী অন্তর্বর্তী প্রধান হিসেবে দল সামলেছেন।
গান্ধী পরিবারের অনুগত খারগে যে দলের নেতৃত্বে আস্তে যাচ্ছেন তার আভাস আগেই মিলেছিল। তাই এই জয়কে প্রত্যাশিতই বলা যায়। সাবেক ফেডারেল মন্ত্রী খারগে দলে সাংগঠনিক সংস্কার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ঘোষণা করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।
খারগের হাতে এমন এক সময়ে দলের বৈঠা এলো, যখন ভারতের প্রাচীন রাজনৈতিক দলটি অস্তিত্ব সংকটের মুখে রয়েছে। তার উপর দরজায় কড়া নাড়ছে জাতীয় নির্বাচন। প্রস্তুতি নিতে ১৮ মাসের কম সময় পাচ্ছেন খারগে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উড়তে থাকা ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) চ্যালেঞ্জ জানাতে কংগ্রেসে বড় ধরনের সংস্কার সময়ের দাবি।
কে এই খারগে?
দক্ষিণ রাজ্য কর্ণাটকের দলিত সম্প্রদায়ের সদস্য খারগের রাজনৈতিক জীবন দীর্ঘ।
মল্লিকার্জুন খারগের জন্ম ১৯৪২ সালে বিদার জেলায়। পাশের জেলা গুলবার্গায় তিনি বেড়ে ওঠেন। পড়াশোনা করেছেন আইন বিভাগে। ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলোতে প্রতিনিধিত্ব করেছেন শ্রমিক সংগঠনগুলোর। ছাত্রাবস্থা থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯৬৯ সালে যোগ দেন ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টিতে।
তরুণ খারগের মধ্যে দারুণ কিছু দেখতে পেয়েছিলেন রাজ্যের তৎকালীন কংগ্রেস প্রধান দেবরাজ উরস। উচ্চ বর্ণ-অধ্যুষিত গুরমিতকাল আসন থেকে ১৯৭২ সালে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করান দেবরাজ। আশাহত করেনি খারগে। টানা ৯বার সেই আসন থেকে জিতেছিলেন তিনি। পরে চিতাপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সেখানেও বাজিমাত করেন খারগে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইন্দুধরা হোন্নাপুরা বলেন, ‘তিনি একজন দলিত নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তবে অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গেও অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ছিলেন।’
একজন চৌকস প্রশাসক খরগে বিভিন্ন রাজ্য সরকারে মন্ত্রী পদে কাজ করেছেন।
অবসরপ্রাপ্ত একজন আমলা বলেন, ‘খারগে সবসময় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি নম্র ছিলেন। যদিও তার নিজস্ব একটা জগত আছে। সেখানে তার অবস্থান স্পষ্ট ছিল।’
ভারতের রাজনৈতিক কেন্দ্র দিল্লিতে খারগের আগমন ঘটে ২০০৯ সালে। সেবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা নির্বাচনে গুলবার্গা আসন থেকে জয় পান তিনি। এই আসন থেকে ২০১৪ সালে দ্বিতীয় মেয়াদেও জয় পান খারগে। তবে ২০১৯ সালে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। ২০২১ সালে তিনি উচ্চকক্ষে নির্বাচিত হন।
প্রবীণ রাজনীতিবিদ খারগে পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে কাজ করেছেন। রেলওয়ে এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দেখভালকারী ফেডারেল সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে বর্তমান কার্যভারটি খারগের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদি এবং পার্টির সভাপতি অমিত শাহের নেতৃত্বে বিজেপির অভূতপূর্ব উত্থানের বিপরীতে কংগ্রেস পার্টির অবস্থা হয়েছে শোচনীয়।
২০১৯ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস কেবল ৫৩ আসনে জয় পেয়েছিল। যেখানে ৫৪৫ সদস্যের পার্লামেন্টের ৩০৩টি গিয়েছিল বিজেপির পক্ষে।
কংগ্রেস তার সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যগুলোতেও ক্ষমতা হারিয়েছে। এখন কেবল দুই রাজ্য শাসন করছে ন্যাশনাল কংগ্রেস।
খারগে কি পারবেন বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে?
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিজেপিকে মোকাবিলা করতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন নতুন কংগ্রেস প্রধান। শুরুতেই তাকে প্রমাণ করতে হবে, তিনি কেবল গান্ধী পরিবারের একজন প্রক্সি নন; দলের নিয়ন্ত্রণ তার হাতেই।
সোমবার ভোট চলাকালে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি জানান, সব সিদ্ধান্ত তিনি নেহেরু-গান্ধী পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে পারবেন না। তবে তাদের নির্দেশনা এবং পরামর্শ চাইবেন। কারণ গান্ধীদের দল পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা আছে।
অভ্যন্তরীণ বিবাদ মেটানো খারগের দ্বিতীয় শক্ত চ্যালেঞ্জ। দলীয় কোন্দলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা দল ছেড়েছেন। দলে থাকলেও অনেকে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আসছেন।
রাজনৈতিক ভাষ্যকার কে বেনেডিক্ট বলেন, ‘খারগে অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা কমাতে যথেষ্ট দক্ষ। কারণ তিনি দলেরই একজন। তাকে শ্রদ্ধা করে দলের লোকজন।’
তবে কেউ কেউ বলছেন, দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিক হয়ে উত্তর প্রদেশ এবং বিহারের মতো উত্তরের রাজ্যগুলোতে খুব বেশি আবেদন তৈরি করতে পারবেন না খারগে। ১২০ আসনের এই দুই রাজ্যে কংগ্রেসের অবস্থা ভীষণ নড়বড়ে।
ভারতের সিনিয়র সাংবাদিক পূর্ণিমা যোশী অবশ্য বলছেন, জাতীয়ভাবে দলকে নতুন করে এগিয়ে নেয়ার মতো সক্ষমতা নেই নতুন কংগ্রেস প্রধানের।
‘তিনি একজন শালীন মানুষ, শিকড়যুক্ত একজন রাজনীতিবিদ। কেউ তাকে হালকাভাবে নিতে পারবে না। তবে কংগ্রেসের পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে, মানে দলের মধ্যে যে শূন্যতা রয়েছে তা পুরোপুরি পূরণ করতে পারবেন না খারগে।
‘মোদি-শাহ জোটকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তিনি সক্ষম হবেন, এমন সম্ভাবনা কম। কংগ্রেসের এমন একজন দরকার যে তাদের (মোদি-অমিত) ভাষা বুঝতে পারে। এমন একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি যিনি নানা কৌশলে বিজেপিকে পরাজিত করতে পারবে। তবে বিজেপির সঙ্গে আদর্শিকভাবে লড়াই করতে পারবেন খারগে। যেটা দেখে জনগণ হয়ত তাকে বেছে নিতে পারে।’
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য