নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইসলামি বিপ্লবের পর সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ইরান। এরই মধ্যে চাপে পড়েছে দেশটির ক্ষমতাসীনরা।
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর প্রভাবশালী অনেকেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন। নিজেদের ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে বলেও স্বীকার করেছেন।
কিন্তু এমন বিক্ষোভের মধ্যেও ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদকে কোনো বক্তব্য রাখতে দেখা যাচ্ছে না, এমনকি তাকে গণমাধ্যমকর্মীরা পাচ্ছেনও না।
অনেকেই ভেবেছিলেন ইরানের বর্তমান ক্ষমতাসীনদের বিরোধী হিসেবে তিনি ক্যামেরাপ্রেমী, পপুলিস্ট রাজনীতিবিদের মতো সুযোগটাকে ব্যবহার করবেন। কিন্তু তিনি একেবারেই নীরব।
আহমাদিনেজাদের জন্য সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার কাউন্সিলের সদস্যপদ রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এখন তিনি দেখেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও হাসান রুহানিকে কাউন্সিলের সদস্যপদে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বিবেচনা করেননি। এই সদস্যপদ ছাড়া ইরানে তার (আহমেদিনেজাদ) সরকারি অবস্থান থাকবে না।
আয়তুল্লাহ আলি খামিনির সঙ্গে তার মতবিরোধ অজানা কিছু নয়। কিংবা বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির বিরুদ্ধে তার অবস্থান গোপন কিছু নয়। এর পরও তিনি তাদের সমালোচনা করছেন না, তেমনি নিজের সুবিধার জন্য সরকারকে সমর্থন করছেন বলেও মনে হচ্ছে না।
খামেনির সঙ্গে আহমাদিনেজাদের বিরোধ
আহমাদিনেজাদ ক্ষমতায় থাকার সময়েও খামেনির সঙ্গে তার চাপা বিরোধ ছিল। ২০১১ সালে যখন তিনি খামেনির অনুগত গোয়েন্দামন্ত্রী হেইদার মোসলেহিকে বরখাস্ত করেন, সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার সঙ্গে তার বিরোধের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এমনকি সে সময় কয়েক সপ্তাহ তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে অস্বীকার করেছিলেন।
খামেনির সঙ্গে বিরোধের পরও চুপ কেন আহমাদিনেজাদ
বর্তমান ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ও সর্বোচ্চ নেতা খামেনির সঙ্গে চাপা বিরোধ থাকলেও কেন আহমেদানিজাদ চুপ করে আছেন তার একটি ব্যাখ্যা সংস্কারপন্থি সংবাদমাধ্যম ফারারুকে দিয়েছেন আহমেদানিজাদের সাবেক উপদেষ্টা ও বিতর্কিত রাজনীতিবিদ আবদুল রেজা দাভারি।
তিনি বলেন, ‘আহমাদিনেজাদের জন্য সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার কাউন্সিলের সদস্যপদ রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এখন তিনি দেখেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও হাসান রুহানিকে কাউন্সিলের সদস্যপদে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বিবেচনা করেননি। এই সদস্য পদ ছাড়া ইরানে তার (আহমাদিনেজাদ) কোনো সরকারি অবস্থান থাকবে না।’
এমন একজন যে আপনার চোখের দিকে তাকাবে এবং মিথ্যা বলবে।
তার জন্য এক্সপেডিয়েন্সি কাউন্সিলে অবস্থান রক্ষা করা অত্যাবশ্যক, যদিও কাউন্সিলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব একটা উষ্ণ নয়।
অর্থাৎ সরকারিভাবে আহমাদিনেজাদ যে সম্মান ও মর্যাদা পান তার চাবি সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতে। যেকোনো সময় তিনি তা কেড়ে নিতে পারেন।
সমর্থকদের এড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি
সংস্কারপন্থি সংবাদমাধ্যম ফারারু জানিয়েছে, চলমান বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া এড়াতে পূর্ব তেহরান বা উত্তর তেহরানে তার সমর্থকদের সঙ্গে হওয়া সাপ্তাহিক বৈঠক তিনি বাতিল করেছেন।
রক্ষণশীল পত্রিকা সারাটের সম্পাদক আলী গাফফারিয়ান বলেছেন যে- হয় আহমাদিনেজাদ নীরব থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বা সরকার তাকে নীরব করেছে। যাই হোক, তিনি এমন ব্যক্তিত্ব যে তার ওপর আরোপিত কিছুর কাছে নতি স্বীকার করার সম্ভাবনা নেই। সম্ভবত, বিদ্রোহের মধ্যে সাইড লাইনে (নিরপেক্ষ) থাকা তার নিজের সিদ্ধান্ত।
আহমাদিনেজাদ-আইআরজিসি বিতর্ক
মাহমুদ আহমাদিনেজাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ২০০৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের জন্য তিনি আইআরজিসির সাহায্য নিয়েছিলেন। সেই বছরের নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ সময় আহমাদিনেজাদের বিরুদ্ধে হওয়া বিক্ষোভ কঠোরভাবে দমন করে আইআরজিসি। ইরানের জনগণের এত দ্রুত সেই বিষয়টি ভোলার কথা নয়।
সেই হিসেবে আইআরজিসির বিরুদ্ধে বিবৃতি দেয়াও আহমাদিনেজাদের জন্য মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়।
বরাবরই বিতর্কিত আহমাদিনেজাদ
রোইদাদ২৪ ওয়েবসাইটে তার বিষয়ে লেখা হয়েছে, আহমাদিনেজাদের কিছু মন্তব্য তাকে বিখ্যাত সংস্কার ফ্রন্টের রাজনীতিবিদদের চেয়ে বেশি সংস্কারবাদী হিসেবে তুলে ধরে। তবে তিনি রক্ষণশীল নন, সংস্কারপন্থিও নন। তিনি তৃতীয় ধরনের রাজনীতিবিদ।
২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আহমাদিনেজাদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সংস্কারপন্থি মীর হোসেন মুসাভি তার সম্পর্কে বলেছেন, ‘এমন একজন যে আপনার চোখের দিকে তাকাবে এবং মিথ্যা বলবে।’
গত এক দশক ধরে আহমাদিনেজাদ পরিবর্তনের কথা বলে আসছেন। অথচ যখন জনগণের থেকে পরিবর্তনের ডাক এসেছে। তিনি নীরবতার পথ বেছে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।
প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য