× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Are the Iranian rulers in the face of collapse?
google_news print-icon

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

ইরান
ইরানে মাহসা আমিনির মৃত্যু কেন্দ্র করে নারীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে দেশজুড়ে।
অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কুলের খেলার মাঠে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর গণগ্রেপ্তার শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মনে হচ্ছে ইরান একটি পুরো উল্টো দুনিয়ায় বসবাস করছে, যেখানে নিরাপত্তারক্ষীরা ক্যাম্পাসে টহল দিচ্ছে ও ছাত্ররা কারাগারের সেল দখল করছে।

পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে ইরানে। দিনে দিনে জোরাল হচ্ছে বিক্ষোভ। রাজধানী তেহরানসহ দেশের নানা অঞ্চলে প্রায় মাসব্যাপী আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন নারী-শিশুসহ অন্তত ১৮৫ জন।

ইরান বিক্ষোভের পরিণতি কী হতে পারে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়েন। সংবাদমাধ্যমটির ডিপ্লোম্যাটিক এডিটর প্যাট্রিক উইন্টুরের লেখা নিবন্ধটি অবলম্বনে বিশ্লেষণ তুলো ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।

ইব্রাহিম রাইসি ২০২১ সালে জুনে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান গত মাসে। তিনি যখন নিউ ইয়র্কের মিলেনিয়াম হিল্টন হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন নিজ দেশে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদের বিক্ষোভ ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে রাইসির এই সাক্ষাতের শুরুতে ১০ মিনিটে একটা শর্ট ফিল্ম দেখানো হয়। তাতে ছিল দেশভ্রমণ ও ইরানিরা কীভাবে ‘নতুন ধারার গণতান্ত্রিক শাসনে সুখে-শান্তিতে বাস করছে’ সে বিষয়ক গুণগান। ইরানে ওই মুহূর্তে যা ঘটছিল সেটার পরিপ্রেক্ষিতে এই ভিডিওটি অযৌক্তিক প্রোপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। একইসঙ্গে এটি প্রমাণ করে, দেশটির শাসকদল কতটা ভ্রান্তিতে ভুগছে।

রাইসির প্রতিনিধিরা বিক্ষোভের বিষয়ে প্রশ্ন শুনতে শুরুতে রাজি হননি। এরপর রাইসি শুনতে রাজি হলেও তিনি পশ্চিমা দ্বিমুখী নীতি সম্পর্কে তীব্র সমালোচনামুখর হয়ে ওঠেন। অনেক জোরে কথা বলা শুরু করায় হেডফোনের মাধ্যমে মৃদু স্বভাবের অনুবাদকের কথাগুলো বোঝা কঠিন হয়ে যায়।

রাইসি বলেন, আমিনির মৃত্যুর কারণ সম্বন্ধে চূড়ান্ত কিছু জানা যায়নি। তবে প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে তার স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। পাশাপাশি তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ছয় মাসে যুক্তরাজ্যে ৮১ নারীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে প্রতিদিন কতজন পুরুষ ও নারী নিহত হন?’

বিক্ষোভের দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর পরিষ্কার যে, ইরানে কতটা বিস্ফোরক পরিস্থিতি বিরাজ করছে সে সম্বন্ধে রাইসির খুব বেশি ধারণা নেই। গণগ্রেপ্তার ও অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর পরেও বিক্ষোভ শেষের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এটাও পরিষ্কার নয়, ইরানের পুরনো নেতৃত্ব নিজেদের অস্তিত্বকে হুমকির সম্মুখীন মনে করছে কিনা, যে কারণে তাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে।

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের শুভেচ্ছাদূত ও বৃটিশ-ইরানিয়ান অভিনেতা নাজানিন বোনিয়াদি মনে করেন, ইরানের রাজপথে নতুন কিছুর উত্থান ঘটেছে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার নিয়ে ১৪ বছর ধরে কাজ করছি। এ দীর্ঘ সময়ে আমি ইরানের শাসকদের বিপক্ষে এমন অসন্তোষ ও মোহভঙ্গের বহিঃপ্রকাশ দেখিনি। অবশ্য ইরান প্রতি দশকেই এমন ব্যাপক বিক্ষোভে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। এর পরেও ১৯৯৯ সালের ছাত্র বিক্ষোভ বা ২০০৯ সালের গ্রিন মুভমেন্ট বা ২০১৯ এর নভেম্বরের বিক্ষোভের সঙ্গে বর্তমান বিক্ষোভের উত্তেজনা বা মাত্রার তুলনা করা যায় না।’

বিক্ষোভকারীরা যেভাবে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তাদের গাড়ি উলটে দিচ্ছে ও আয়াতুল্লাহ খোমেনির বিলবোর্ড ছিড়ে ফেলেছে- সেসব উদাহরণ সামনে আনছেন বোনিয়াদি।

তিনি যোগ করেন, “অভূতপূর্ব বিষয়টি হলো বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। আন্দোলনের যে স্লোগান ‘নারী, জীবন ও স্বাধীনতা’ সেটি ইরানের ইসলামিক মত বিরুদ্ধ। দেশটি নারীবিদ্বেষী, দমনমূলক ও ইসলামের পথে আত্মত্যাগের পক্ষে নিজেদের গড়ে তুলেছে। এ প্রতিবাদ শুধু কঠোর পোশাক নীতির বিরুদ্ধে নয়, বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরোধিতা ইরানি নারীদের বৃহত্তর সংগ্রামের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

ইনস্টিটিউট অফ গ্লোবাল চেঞ্জ-এর ইরান বিষয়ক বিশ্লেষক কাসরা আরাবির মতে, ইরানের এ প্রতিবাদ এখন বিপ্লবাত্মক।

তিনি বলেন, ‘যেসব মানুষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে তারা বলেছেন, তারা একটি বিপ্লবের মধ্যে আছেন এবং পিছু হঠবেন না। শাসক দলের পতনের শুরু এর মাধ্যমে। এটা সংস্কারের কোনো বিষয় নয়। এটা শাসক বদলের ডাক।’

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিংক ট্যাংক চ্যাটহ্যাম হাউজের সদস্য ড. সানাম ভাকিল অবশ্য এ আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্ক। তার মতে, এ আন্দোলনের মাধ্যমে ধর্মতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি একটি বিশাল বিভাজন প্রকাশ পেয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের শক্তি, গতি ও সাহসিকতা শাসক দলকে নিয়ন্ত্রণ হারানোর কাছাকাছি নিয়ে গেছে। তবে তাদের এ ধরনের আন্দোলনকে দমনের জন্য একটি ছঁক বাঁধা আছে, যেটি তারা অতীতে প্রয়োগ করেছে এবং এবারও করছে।’

ভাকিলের মতে নারী ও শিশুদের মারধরের বিষয়টি দৃশ্যমান হওয়ার কিছুটা বিব্রত ইরান। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মোবাইল ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়াম যা নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে।

বৈশ্বিক সংহতি

প্রবাসী ইরানি, ইরানের ভেতর ও বাইরের সেলিব্রিটি ও ক্রীড়া তারকাদের অন্তর্ভুক্তি বিক্ষোভকে বৈশ্বিক মাত্রা দিয়েছে। ২৫ লাখ ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ার রয়েছে ইরানি পপ তারকা দোনিয়া দাদরাসানের। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী এই তারকা নৈতিকতা পুলিশ নিয়ে একাধিক পোস্ট করেছেন। অন্য অনেকের মতো তিনিও ইরানের নারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে নিজের চুল কাটার ভিডিও পোস্ট করেছেন টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে।

ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সুইডিশ সদস্য ও ইরাকি বংশোদ্ভূত আবির আল-সাহলানি গত ৪ অক্টোবর বক্তব্য দেয়ার সময় কাঁচি দিয়ে নিজের চুল কেটে ফেলেন। একই কাজ করেন যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী সাবেক রাজনৈতিক বন্দি নাজানিন জাগারি-র‍্যাটক্লিফ। এরপর একে একে চুল কাটেন অস্কারজয়ী ফরাসি অভিনেত্রী মারিয়ঁ কোতিয়াদ, জুলিয়েট বিনোশে ও শার্লট গেইনসবুর্গ।

তবে ইরানের শাসকদল, যাদের বেশিরভাগ নেতার বয়স আশির ওপরে, তারা যেন ভিন্ন কোনো জগতে বাস করেন। তাদের মতে, বাধ্যতামূলক হিজাব নারীকে বন্দি নয়, বরং মুক্তির পথ দেখায়; যা একটি বিশুদ্ধ ইসলামি সমাজ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলি খামেনি বিচার বিভাগের সাবেক প্রধান রাইসিকে নিজ হাতে বেছে নিয়েছিলেন। রাইসির দায়িত্ব ছিল খামেনির পাঁচটি মিস্টিক পর্যায় অর্জন করা। এগুলো হলো ইসলামি বিপ্লব, ইসলামি শাসন, ইসলামি সরকার, ইসলামি সমাজ ও ইসলামি সভ্যতা।

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

আগস্টে ক্ষমতা পাওয়ার পরপরই রাইসি ইরানের ইসলামি দণ্ডবিধির ৬৩৮ অনুচ্ছেদে বর্ণিত সার্বজনীন স্থানে হিজাব ব্যবহারের আইন কীভাবে প্রয়োগ হচ্ছে তা পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেন।

ইরানে হিজাবের প্রতি সমর্থন বহু বছর ধরেই কমে আসছে। ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রায় ৭০ শতাংশ নারী এতে বিশ্বাস করেন না বা মনে করেন তাদের ‘অন্যায়ভাবে পর্দা করানো’ হয়েছে।

তবে রক্ষণশীলরা এখন ইরানের রাজনীতির প্রতিটি স্তরে আধিপত্য বিস্তার করছেন। রাইসি ‘সতীত্বের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ার কৌশল’ নামে একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন। এগুলো মূলত ২০০৫ সালে গৃহীত নীতির পুনরাবৃত্তি।

১১৫ পৃষ্ঠার পরিকল্পনার মূল নীতিগুলো প্রকাশ করেছে ইরানভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ইরানওয়্যার। এগুলো হলো:

  • হিজাববিহীন নারীদের খুঁজে বের করে তাদের জরিমানা করা বা তাদের কাউন্সেলিংয়ে পাঠানো।
  • সামাজিক এলাকাগুলোতে বাসিন্দারা কীভাবে পোশাক পরেন তা নজরদারিতে রাখতে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ ছাত্রদের আবাসিক ভবনে রাখা।
  • অস্ত্রোপচার করতে যাওয়া নারী রোগীদের ‘উপযুক্ত পোশাক’ সরবরাহ করতে হবে হাসপাতালের কর্মীদের।
  • ‘অশ্লীল পোশাক’-এর আমদানিকারক, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ডিজাইনারকে জরিমানা করা হবে।
  • সরকারি মাধ্যমে কাজ করা অভিনেত্রীদের জন্য শৃঙ্খলার নতুন নীতিমালা প্রণয়ন।
  • বাধ্যতামূলক হিজাব আইনের বিরোধিতা বা একে প্রশ্ন করে কেউ অনলাইনে পোস্ট করলে কারাদণ্ড দেয়া।

আগস্টের শেষ দিকে যে সব নারী এ নিয়ম মানেন না তাদেরকে সরকারি ব্যাংক, অফিসে প্রবেশ বা গণপরিবহনে উঠতে দেয়া হয়নি। বিশেষ করে বাস ও মেট্রোতে, এমনকি উত্তর তেহরান মেট্রোপলিটনের বাইরের এলাকাতেও কুখ্যাত নৈতিকতা পুলিশের দল আরও সক্রিয় ও সহিংস হয়ে ওঠে।

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

তাদের টহলের জন্য নতুন গাড়ি কেনা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশ কর্মকর্তারা নারীদের আটকাচ্ছে ও গাড়িতে তুলে নেয়ার পর এক ঘণ্টা ‘নতুন করে নৈতিকতা শিক্ষা’ দিচ্ছে।


মিডিয়া ক্র্যাকডাউন

এ রকম এক পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় কুর্দি নারী মাহসা আমিনির। মাহসা আমিনি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খালার বাড়িতে ভ্রমণ ও কেনাকাটার জন্য পাঁচ দিনের জন্য তেহরানে এসেছিলেন। সদা হাস্যোজ্জ্বল তরুণী মাহসা সম্প্রতি উত্তর-পশ্চিম ইরানের সবচেয়ে বড় উর্মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান।

তেহরানে তিনি একটি মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে তালাকানি পার্কে ঢোকার পর কী ঘটেছিল তা এখনও অস্পষ্ট। মাহসা তার ভাই কিয়ারশ আমিনিসহ তিনজন নারী ও দুজন পুরুষ আত্মীয়ের সঙ্গে হাঁটার সময় পুলিশ তাদের আটকায়।

নৈতিকতা পুলিশের অন্তত পাঁচজন সদস্য দাবি করেন মাহসা ইসলামি পোশাক আইন লঙ্ঘন করেছেন। স্বজনদের বাধা উপেক্ষা করে তাকে একটি ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

চাচাতো ভাই এরফান মোর্তেজার অভিযোগ, মাহসাকে পুলিশ ভ্যানে মারধর করা হয়। কয়েকদিন পর পুলিশের প্রকাশিত একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সংশোধন কেন্দ্রে মাহসা দাঁড়িয়ে থাকার একপর্যায়ে প্রথমে একটি চেয়ারের ওপর এবং পরে মেঝেতে পড়ে যান। তার স্ট্রোক অথবা হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং কাসরা হাসপাতালে পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টা লাগে।

মাহসা কার্যত ব্রেন ডেড ছিল। সাময়িকভাবে তার হৃৎযন্ত্র সচল করে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এর তিন দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এর তিন সপ্তাহ পর ইরানি কর্তৃপক্ষ মাহসার মৃত্যুর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অবশ্য এর আগেই মাহসার এক্স-রে ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছিল। সরকারি ভাষ্য অনুসারে, মাথায় আঘাতের কারণে মাহসা মারা যাননি। তার মৃত্যুর কারণ ছিল দীর্ঘমেয়াদি হৃদস্পন্দনজনিত জটিলতায়।

পরিবারের দাবি, আট বছর বয়সে মাহসার সামান্য স্নায়ু জটিলতা ধরা পড়ে, মস্তিষ্কের সম্ভাব্য টিউমার এর কারণ হতে পারে। তবে লেভোথাইরক্সিন ব্যবহারের মাধ্যমে সেটি নিয়ন্ত্রণে ছিল। সম্প্রতি একজন চিকিৎসক তাদের জানান, মাহসা সম্পূর্ণ সেরে উঠেছেন।

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

গ্রেপ্তারের পর মানসিক আঘাতের ফলে মাহসার মস্তিষ্কে খিঁচুনির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। তেমনটা হলে বিষয়টি পুলিশের পক্ষে যাবে, তারা বলতে পারবে মাহসাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়নি। নৈতিকতা পুলিশ মাহসার পরিবারকে বলেছে, গ্রেপ্তার করার সময় পুলিশ সদস্যরা বডি ক্যামেরা পরা ছিলেন না, যে কারণে ভ্যানে কী ঘটেছিল তার কোনো ফুটেজ নেই।

ইরানি কর্মকর্তাদের প্রতি মাহসার পরিবারের আইনজীবীদের আস্থা শূন্যের কাছাকাছি। সালেহ নিখবাখত শীর্ষস্থানীয় কুর্দি সংবাদ মাধ্যম রুদাওকে এক সাক্ষাত্কারে বলেন, “জিনার (মাহসার কুর্দি ডাকনাম) বিষয়ে (ইরানি) সংস্থাগুলো যে সমস্ত দাবি করছে, যেমন তার দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা ছিল সেসব মিথ্যা ও গুরুত্ব দেয়ার মতো নয়।

‘এ অঞ্চলে বন্দি হত্যা নতুন কিছু নয় বা শুধু জিনাই প্রথম এমনটি নয়। তাকে কুর্দিস্তানে হত্যা করা হলে তারা সত্যকে বিকৃত করার সুযোগ পেত। তবে এবার সেটি পারেনি।’

মাহসার বাবা এখনও শোকার্ত এবং সরকারি তদন্তে সহযোগিতা করতে রাজি নন। তিনি মাহসার মৃত্যুর কারণ পরীক্ষা করতে সরকারি প্রভাবমুক্ত নিউরোলজিস্টদের একটি তালিকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

নিরাপত্তা বাহিনী যে সমস্ত সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করেছে তাদের অধিকাংশ মাহসার মৃত্যুর খবর প্রকাশের সঙ্গে জড়িত। এ থেকে বোঝা যায়, কর্তৃপক্ষ সত্য অনুসন্ধানে উদাসীন।

সংস্কারবাদী শার্গ পত্রিকার সাংবাদিক নিলুফার হামেদির উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। তিনি হাসপাতাল করিডোরে মাহসার মা-বাবার ছবি তুলেছেন এবং মাহসার মৃত্যুশয্যার যে ছবিটি পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে সেটিও তার তোলা।

হামেদিকে পরে তার বাড়ি থেকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়। তার টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে। তার স্বামী জানান, কারাবাসের ১৩তম দিনে তিনি জেল থেকে ফোন করেন। হামেদির স্বামী টুইট করেছে, হামেদি অন্য আটজনের সঙ্গে একটি কক্ষে ভালো আছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

ইরানের সাংবাদিকরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। সমালোচনামূলক টুইটের জন্য বরখাস্ত বা এমনকি কারারুদ্ধ হতে হয়েছে তাদের। ‘জনমতকে ব্যাহত করা’ ও ‘সরকারবিরোধী প্রচারণা’র মতো অভিযোগ সাংবাদিকদের স্বাধীন মতপ্রকাশের সীমার কথা মনে করিয়ে দেয়।

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

হামেদিকে হয়ত পুলিশ বাহিনী আলাদাভাবে চিহ্নিত করে রেখেছিল। কারণ তিনি আগেও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে নৈতিকতা পুলিশের একটি ঘটনা প্রকাশ করেন। নৈতিকতা পুলিশ ২৮ এপ্রিল একটি পার্কে শিশুকে নিয়ে হাঁটতে থাকা এক দম্পতিকে অভিযুক্ত করে এবং তাদের পরিচয়পত্রের নম্বর জানানোর দাবি করে।

তারা পরীক্ষা করতে চেয়েছিল ওই নারী আগে কোনো নৈতিক আইন লঙ্ঘন করেছেন কিনা। বাগবিতণ্ডার পর পুলিশ মারিয়া আরেফি নামে ওই নারীর ওপর মরিচের গুড়া স্প্রে করে এবং তার স্বামী সাবেক ইরানি বক্সিং চ্যাম্পিয়ন রেজা মোরাদখানিকে চারবার গুলি করে। জরুরিভিত্তিতে রেজার ১২ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার করা হয়।

সংস্কারপন্থি হাম্মিহান পত্রিকার প্রতিবেদক এলাহেহ মোহাম্মদিকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। তার দোষ, তিনি মাহসার শহর সাকযে অনুষ্ঠিত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার একটি মর্মান্তিক বিবরণ প্রকাশ করেছিলেন।

তিনি শুধু মাহসার পরিবারের যন্ত্রণা তুলে ধরেননি, একই সঙ্গে পুরো ঘটনাকে পুলিশ যে ধামাচাপা দিচ্ছে সেটা নিয়ে পরিবারের অভিযোগও তুলে ধরেন। করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময় কারচাক কারাগারের অভ্যন্তরে নাজুক পরিস্থিতি প্রকাশ করার পর ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এক বছরের জন্য লেখালেখিতে নিষিদ্ধ ছিলেন মোহাম্মদি।

গণগ্রেপ্তার

অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কুলের খেলার মাঠে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর গণগ্রেপ্তার শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে মনে হচ্ছে ইরান একটি পুরো উল্টো দুনিয়ায় বসবাস করছে, যেখানে নিরাপত্তারক্ষীরা ক্যাম্পাসে টহল দিচ্ছে ও ছাত্ররা কারাগারের সেল দখল করছে।

সরকার অনিবার্যভাবে পুলিশের প্রতি সহিংসতার অভিযোগের বিরুদ্ধে দৃষ্টিনিবদ্ধ করছে এবং শাসক দলের সমর্থনে রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত মিছিল বের করা হচ্ছে। তারা নারীদের ওপর সহিংসতার মাত্রা বাড়ানোর বিষয়টিও অস্বীকার করছে।

১৭ বছর ছুঁইছুঁই নিকা শাকরামির মৃত্যুও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে। তারা বলেছেন, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বিক্ষোভে নিকাকে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবার কয়েক দিন ধরে তাকে খুঁজছিল। পরে তার মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়।

কর্মকর্তারা সরকারি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, নিকার মৃত্যু বিক্ষোভ দমনের সঙ্গে যুক্ত নয়, তিনি দুর্ঘটনাবশত ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। তবে নিকার মার দাবি, তার মেয়ে আত্মহত্যা করেননি। তাদের যেসব আত্মীয় শাসকদের টিভিতে গিয়ে সরকারের প্রতি আনুগত্য জানিয়েছেন, তার পুরোটাই সাজানো।

অন্যদিকে, ১৬ বছর বয়সী সারিনা ইসমাইলজাদেহর মায়ের দাবি তার মেয়ে পুলিশের ব্যাটনের আঘাতে নিহত হয়েছেন। এখানেও পুলিশ বলছে সারিনা আত্মহত্যা করেছেন।

কয়েকজন বিক্ষোভকারী গার্ডিয়ানকে বলেছেন, তাদের এখন আর পিছু হটার সম্ভাবনা নেই।

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

একজন বলেন, ‘আমরা তাদের (শাসক) বিধিনিষেধ সহ্য করব না। কঠোর পোশাক নীতি মেনে চলব না। আমাদের জীবন ও আমাদের পছন্দের অধিকার আছে। আমি রাস্তা-ঘাটে মৃতদেহ দেখেছি, তাদের রক্ত ​​আমরা বৃথা যেতে দেব না।’

গ্রেপ্তারের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের কৌশল নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়েনি, জোর করে তাদের পিছু হটিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা আছে। একইসঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ক্ষীণ প্রত্যাশা রয়েছে, সরকার স্বেচ্ছায় নৈতিকতা পুলিশের ভূমিকায় সংশোধন আনবে।

বিক্ষোভের মূল কারণ জানতে রাজনৈতিক অভিজাতরা আত্ম-অনুসন্ধান করেছেন। তারা এও বোঝার চেষ্টা করছেন নৈতিকতা পুলিশের নৃশংস পদ্ধতি তরুণ প্রজন্মের মন পরিবর্তনে সক্ষম কিনা। বিশেষ করে যখন তরুণদের অনেকেই ধর্মের প্রতি বিশ্বাস হারাচ্ছেন।

অভিজাতদের মধ্যে কেউ কেউ স্বীকার করছেন, ২০২১ সালে রাইসি নির্বাচনে জয়ী হলেও প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ভোটে ক্ষমতায় এসেছেন তিনি। রাইসি ভোটারদের মাত্র ২৫ শতাংশের সমর্থন পান।

তেহরান সম্মিলিতভাবে ইরানে চলমান রাজনৈতিক প্রহেলিকা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এমন অবস্থায় কেবল সরকারি আদেশ দিয়ে একটি সাংস্কৃতিক ক্র্যাকডাউন চাপিয়ে দেয়া ঝামেলাপূর্ণ।

ইরানি শাসকরা কি পতনের মুখে?

আয়াতুল্লাহ খামেনির ব্যক্তিগত উপদেষ্টা ও আত্মীয় গোলামালি হাদ্দাদ-আদেল তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সেমিনারে বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমাদের সমাজ দ্রুত আল্লাহবিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের মেরুকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমারা আমাদের দেশের জন্য যে সমস্যাটি তৈরি করেছে তা হলো পরিবারকে ধ্বংস করা। কারণ পরিবার হল ধার্মিকতার শয্যা। পরিবার নড়বড়ে হয়ে গেলে ধার্মিকতা শেকড়সহ পুড়ে যাবে।’

ইরানের বয়োজ্যেষ্ঠ ধর্মনেতাদের একজন নাসের মাকারেম শিরাজি দাঙ্গার জন্য তিনটি কারণকে দায়ী করেছেন: ‘বিদেশি শত্রু, ভার্চুয়াল বা অনলাইন জগত ও মানুষের অর্থনৈতিক ও জীবিকা সমস্যা।’

অন্যরা ইরানের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিকে ঘিরে পশ্চিমা ঈর্ষাকে দায়ী করেছেন। ইসলামবাদের বিপরীতে জাতীয়তাবাদকে অবলম্বন করে তারা ইরানকে ভেঙে ফেলার পশ্চিমা ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছেন।

তবে সরকার স্পষ্টতই বিক্ষোভের তীব্রতা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। বিক্ষোভকারীদের তারা দুর্বল হিসেবে বিবেচনা করছে। কট্টরপন্থিরা নজিরবিহীন ক্র্যাকডাউনের মাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের দমনের আহ্বান জানাচ্ছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে হিরব বা আল্লাহ বিরোধিতার অভিযোগ এনে বিচারের দাবি তুলছেন। ইরানে এই অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এটি পরিস্থিতিকে আরও অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

আরও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের তোপের মুখে ইরানি প্রেসিডেন্ট
ইরানে নারী অধিকার দমনে চরিত্রহননের পুরোনো কৌশল
মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করা ইরানি পুলিশ সদস্য কারা?
আঘাতে নয়, মাহসার মৃত্যু অসুস্থতায়: ইরানি চিকিৎসক সংগঠনের দাবি
ইরানি নারীদের পাশে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Russia hopes to progress on ceasefire at a meeting in Saudi

সৌদিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতির আশা রাশিয়ার

সৌদিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতির আশা রাশিয়ার সুউচ্চ দুই ভবনের মাঝে সৌদি আরবের পতাকা। ছবি: এএফপি
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।

তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।

সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।

সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।

তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"

আরও পড়ুন:
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা মঙ্গলবার
ইউক্রেন সংঘাত নিষ্পত্তি চুক্তিতে রাজি হবে রাশিয়া, আশা ট্রাম্পের
এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন পুতিন?
রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার হামলা বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র
অবিলম্বে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Netanyahu dismisses the chief of Israeli intelligence agency Shin Bette

ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধানকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু


ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধানকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের বরখাস্তকৃত প্রধান রোনেন বার। ছবি: এএফপি
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।

বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।

জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।

এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।

বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।

ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।

আরও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ
ইসরায়েলি হামলায়, গাজায় নারী-শিশুসহ নিহত ৪ শতাধিক
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত কমপক্ষে ৩২৬
ট্রাম্পের গলফ রিসোর্টে হামলা

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Former President of the Philippines Duterte arrested at the ICC warrant

আইসিসির পরোয়ানায় ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট দুতার্তে গ্রেপ্তার

আইসিসির পরোয়ানায় ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট দুতার্তে গ্রেপ্তার ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। ছবি: ইউএনবি
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।

আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।

দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।

আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।

আরও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ভূমিকম্পে মৃত ৪, আহত ৬০
ফিলিপাইনে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প
প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক অক্সফোর্ড জালিয়াতের
ফিলিপাইনে নোবেলজয়ী সাংবাদিকের সাইট বন্ধের নির্দেশ
ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হলেন প্রেসিডেন্টকন্যা

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Attack at Trumps Golf Resort

ট্রাম্পের গলফ রিসোর্টে হামলা

ট্রাম্পের গলফ রিসোর্টে হামলা টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। ছবি: ইউএনবি
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।

স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।

স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।

টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।

সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।

তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’

ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।

আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের নিন্দা সাবেক প্রতিরক্ষাপ্রধানদের
ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করল ইসরায়েল
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চায়, ধারণা ট্রাম্পের
পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে শিগগিরই: ট্রাম্প
বাংলাদেশে সরকার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল না: ট্রাম্প

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trumps proposal to discuss Khamenei on the nuclear program

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে খামেনিকে আলোচনার প্রস্তাব ট্রাম্পের

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে খামেনিকে আলোচনার প্রস্তাব ট্রাম্পের ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোলাজ: বাসস
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’

একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।

যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।

এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।

আরও পড়ুন:
পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে শিগগিরই: ট্রাম্প
বাংলাদেশে সরকার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল না: ট্রাম্প
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বৈঠক করতে সম্মত পুতিন: ট্রাম্প
দক্ষিণ আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ
কানাডাকে ফের যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাব ট্রাম্পের

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
China will increase fuel oil imports from Iran

ইরান থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন

ইরান থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন জ্বালানি তেলের স্থাপনার পাশে ইরানের পতাকা। ছবি: বাসস
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে।

ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।

নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।

অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।

কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।

নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আরও পড়ুন:
ইরানে বোমা হামলার দায় স্বীকার পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর
চীনে ভূমিধস: নিখোঁজ ২৯
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি চীনের অর্থনীতিকে চাপে ফেলতে পারে
চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা বাইডেনের: প্রতিবেদন

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Pakistan based terrorist group

ইরানে বোমা হামলার দায় স্বীকার পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর

ইরানে বোমা হামলার দায় স্বীকার পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ছবি: বাসস
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।

ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।

স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।

পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।

প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।

তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।

পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।

আরও পড়ুন:
জাতিগত সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারের বিবৃতি
পাকিস্তানে ফিরতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’ মালালা
ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা বাইডেনের: প্রতিবেদন
যুক্তরাষ্ট্রে বর্ষবরণ উৎসবে ট্রাক নিয়ে হামলা, নিহত ১৫
বাগেরহাটে মার্চ ফর ইউনিটির গাড়িবহরে হামলা, সংঘর্ষে আহত ২০

মন্তব্য

p
উপরে