মারিয়ানা মামোনোভা একজন সামরিক চিকিৎসক। পরিবার ছেড়ে মারিউপোল শহরে আহত সেনাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন এই ইউক্রেনীয় নারী। এপ্রিলে রুশ সেনাদের হাতে যখন বন্দি হন, মারিয়ানা তখন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
মারিয়ানাকে আরও অনেক যুদ্ধবন্দির সঙ্গে রাখা হয় পূর্ব ইউক্রেনের কালমিউস্কে রায়ওন অঞ্চলের ‘কুখ্যাত’ জেল-ওলেনিভকায়। কারাগারটি ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার দখলে। এখানকার পরিস্থিতি এতটায় বাজে যে বিভিন্ন সময়ে কারাগারটি খবরের শিরোনাম হয়েছে।
মারিয়ানার স্বামী ভাসিলি। স্ত্রীর বন্দি হওয়ার বিষয়টি তিনি জানতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে।
ভাসিলি বলেন, ‘আমার প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আসছে। দুঃখের বিষয় হলো, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত আমার স্ত্রীকে সরাসরি দেখতে পাইনি। সে মারিউপোলে সম্মুখ সারির যোদ্ধা ছিল।
‘আমার মনে হয়, খুশির খবরটি ও আমাকে সরাসরি বলতে চেয়েছিল। তাই ইন্টারনেটে সে আমাকে ইঙ্গিতপূর্ণ একটা ইমোজি পাঠিয়েছিল। এটি ছিল নবজাতকের সঙ্গে বাবা-মায়ের একটি ইমোজি।’
বাবা হতে যাচ্ছেন খবরটি জানার কয়েক সপ্তাহ পর, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভাসিলি জানতে পারেন তার স্ত্রী রুশ বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছেন।
রুশ অধিকৃত দোনেৎস্ক অঞ্চলের ওলেনিভকা কারাগারটির অবস্থা নাজুক। সম্প্রতি এক হামলায় এই জেলের কমপক্ষে ১২ জন ইউক্রেনীয় নিহত হন। ওই হামলার জন্য একে-অপরকে দুষছে মস্কো ও কিয়েভ।
চলতি মাসের শেষদিকে প্রথম সন্তানের জন্ম দেবেন মারিয়ানা। এ কারণে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় দ্রুত মারিয়ানাকে মুক্ত করার উদ্যোগ নিতে ইউক্রেন সরকারের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার।
মারিয়ানার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তথ্য খুব কম; যদি মুক্তি না পান তবে কারাগারেই জন্ম দিতে হবে সন্তান। জেলে জন্ম নেয়া নবজাতকের ভাগ্যে কী ঘটবে, তা স্পষ্ট নয়।
ইউক্রেনীয় সরকার বলছে, মারিয়ানা ভালো আছেন। বিষয়টিকে সরকার বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
ওলেনিভকায় মারিয়ানার সঙ্গে একসময় বন্দি ছিলেন আনা ভোরোশেভা। দু’মাস আগে জুলাইয়ে মুক্তি পান তিনি।
ভোরোশেভা বলেন, ‘শুরুতে মারিয়ানা ২০ জনেরও বেশি বন্দির সঙ্গে একটি রুমে ছিলেন, তাকে মেঝেতে ঘুমাতে হতো।
‘আমরা নিজেদের মধ্যে অনেক কথা বলতাম। সে বলেছিল যে সে গর্ভবতী। এটা শুনে ওর প্রতি আমরা বাড়তি যত্ন নিতাম। ঠিকমত খাবার পাচ্ছে কি না, রুমে তাজা বাতাস আসছে কি না... এসব।’
এক সময় মারিয়ানাকে ছোট একটি রুমে সরিয়ে নেয়া হয়। ওই রুমে তুলনামূলক কম বন্দি, বিছানাও দুটি। একটিতে ঘুমাতেন মারিয়ানা।
ভোরোশেভার বলেন, ‘প্রথম দিকে বন্দি বিনিময়ের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী ছিলেন মারিয়ানা। আমরা সবাই ভেবেছিলাম গর্ভাবস্থার কারণে তাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
‘তিনি একজন চিকিৎসক। শরীরের অবস্থান তিনি ভালোই বোঝেন। শিশুটি সময়মতো লাথি মারতে শুরু করায় তিনি বলেছিলেন সবকিছু ঠিকঠাক চলছে।’
জুনের শেষের দিকে এক কারারক্ষী মারিয়ানাকে জানান, আরও অন্তত দেড় মাস তাকে বন্দি থাকতে হবে, অর্থাৎ সন্তান জন্মের ছয় সপ্তাহ আগে মুক্তি পাবেন তিনি।
ভোরোশেভার বলেন, ‘এ খবরে মারিয়ানা চিন্তায় পড়ে যান। তার মনে হতে থাকে, বন্দি অবস্থায় হয়ত সন্তান জন্ম দিতে হতে পারে তাকে।
‘দোনেৎস্ক অঞ্চলের চিকিৎসা সেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এখানে সন্তান জন্ম দেয়া সত্যিই ভয়ের বিষয়।’
সঠিক চিকিৎসা ছাড়া সন্তান জন্ম দেয়ার বিপদের পাশাপাশি মারিয়ানা অন্য একটা কারণেও উদ্বিগ্ন। তার ভয়, শিশুটিকে কেড়ে নেয়া হবে। একই শঙ্কায় দিন কাটছে মারিয়ানার স্বামী ভাসিলিরও।
ভাসিলি বলেন, ‘আমার সন্তানকে এই অবস্থায় রাখা যাবে না। তারা ওকে নিয়ে যেতে পারে। মারিয়ানাকে এখনই ঝুঁকি নিতে হবে।’
মারিয়ানার কাছের বন্ধু কেসনিয়া ফারিনা। তিনিও এক সময় বন্দি ছিলেন। ওই কারাগারের অনেক সাবেক বন্দির সঙ্গে যোগাযোগ আছে ফারিনার।
তিনি বলেন, ‘মারিয়ানাকে বলা হয়েছিল, তার সন্তানের বয়স তিন বছর হওয়ার পর, তাকে তার থেকে আলাদা করা হতে পারে।’
মারিয়ানার স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিবিসির প্রশ্নের উত্তর দেয়নি দোনেৎস্ক কর্তৃপক্ষ বা রাশিয়ান সামরিক বাহিনী। বন্দি অবস্থায় সন্তান জন্ম দিলে কী হবে, তাও জানতে পারেনি বিবিসি।
মারিয়ানার বন্ধুবান্ধব এবং পরিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা রাশিয়ান প্রোপাগান্ডা ভিডিও থেকে মারিয়ানার বন্দি হওয়ার বিষয়টি জানতে পারে।
ভিডিওটি ৪ এপ্রিল টেলিগ্রামে পোস্ট করেন চেচনিয়ার শাসক রমজান কাদিরভ। এতে দেখানো দুই শতাধিক ইউক্রেনী বন্দিকে। দাবি করা হয়, তারা রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। ওই ভিডিও দেখে মারিয়ানাকে চিনতে পারেন তার বন্ধুরা।
মারিয়ানাকে মুক্ত করতে ইউক্রেন সরকারের ওপর চাপ দিতে থাকে তার পরিবার। কিয়েভ শাসকরা তাদের অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয়।
ভাসিলি বলেন, এ সময়ে কয়েক দফায় বন্দি বিনিময় হয়। তবে কেন জানি সে বাদ পরে যেত।’
ফারিনা বলেন, ‘শুরুতে মারিয়ানা আশাবাদী এবং ইতিবাচক ছিলেন। তবে মারিউপোলের অবস্থার অবনতি হওয়ায়, বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেন তিনি। মারিয়ানার কাছ থেকে ১৭ মার্চের শেষ বার্তাটি পেয়েছিলাম। তাতে লেখা ছিল, আমি বেঁচে আছি।’
আরও পড়ুন:রাশিয়ার মস্কোতে গত শুক্রবার কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার দায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্বীকার করলেও এ ধরনের আক্রমণের সামর্থ্য জঙ্গি সংগঠনটির আছে বলে বিশ্বাস করে না রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার তার দেশের এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাখারোভা বলেন, মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আইএসের আছে, এমনটি বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন।
সাম্প্রতিক ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১৪৩ জন। আহত অনেককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
মস্কোর উপকণ্ঠে ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। যদিও এ দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
রাশিয়ায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার পর দায় স্বীকার করে আইএস। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেন, তাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাটি চালায় আইএসের আফগান শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে ইউক্রেন, তবে জাখারোভার ভাষ্য, ইউক্রেনকে হামলার দায় থেকে বাঁচাতে ত্বরিত গতিতে আইএসের ওপর দায় চাপায় পশ্চিমা দেশগুলো।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর উপকণ্ঠে শুক্রবার রাতে কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী বন্দুক হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাশিয়ার অভ্যন্তরে দুই দশকের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় শোক পালনের অংশ হিসেবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয় চার ব্যক্তিকে।
বন্দুক হামলার পর জড়িত সবাইকে শাস্তির আশ্বাস দিয়ে রোববারকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
কনসার্ট শুরুর আগে হলে আগত লোকজনের ওপর ওই হামলায় প্রাণ যায় তিন শিশুসহ ১৩৭ জনের। এ ঘটনায় আহত হন ১৮২ জন।
হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০০ জনের বেশি এখনও হাসপাতালে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
বন্দুক হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে রোববার সন্ধ্যায় মস্কোর বাইরে নিজ বাসভবন এলাকার একটি গির্জায় মোমবাতি প্রজ্বালন করেন পুতিন।
এর আগে ঘটনাস্থল ছয় হাজার ২০০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ক্রোকাস সিটি হলের বাইরে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রুশ নাগরিকরা। এ হলে সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ড ‘পিকনিক’ পারফর্ম শুরু করার আগে হামলা চালান চার বন্দুকধারী।
বিশ্বজুড়ে নিন্দিত ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস), তবে পুতিন তার বক্তব্যে জঙ্গি সংগঠনটির কথা উল্লেখ না করে বলেছেন, হামলাকারীরা পালিয়ে ইউক্রেন যেতে চেয়েছিল।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে যে চার বন্ধুকধারী হামলা চালিয়েছে সেই চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
১৩৩ জনকে হত্যা ও ১৪০ জনের বেশি মানুষকে আহত করার ওই হামলার দায় নিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে রাশিয়া দাবি করেছে, এই হামলার সঙ্গে ইউক্রেন জড়িত।
পুতিন বলেছেন, সবমিলিয়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন বন্ধুকধারী ইউক্রেনে যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার হয়েছে।
শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, হামলাকারীদের ইউক্রেনে সরিয়ে নেয়ার জন্য সীমান্তে প্রস্তুতি রাখা হয়েছিল।
ভয়াবহ এ হামলার ঘটনাটিকে ‘বর্বর সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন।
শনিবার টেলিগ্রামে আইএসের প্রচারমাধ্যম আমাক চার মুখোশধারীর একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করেছে এরাই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। অবশ্য আইএসের দাবি নিয়ে রাশিয়া কোনো মন্তব্য করেনি।
রাশিয়ায় ২০০৪ সালে বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার পর শুক্রবারের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী। মস্কোর ঠিক পশ্চিমে ছয় হাজার ২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হল কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর আসা লোকজনের ওপর গুলি ছোড়ে বন্দুকধারীরা। ‘পিকনিক’ নামের সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ডের পারফরম্যান্স শুরুর ঠিক আগে এ হামলা হয়।
আরও পড়ুন:রাজধানী মস্কোয় অনুষ্ঠিত হওয়া কনসার্টে ভয়াবহ হামলার ঘটনাটিকে ‘বর্বর সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শুক্রবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় তিনি রোববার দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে।
টেলিভিষণে দেয় ভাষণে পুতিন বলেন, ‘হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার পর চার বন্দুকধারী ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। সীমান্তে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে তারা ধরা পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্য অনুসারে তারা ইউক্রেনের দিকে যাচ্ছিল, তাদের সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি রাখা ছিল।
‘তারা যে-ই হোক, যারাই তাদের নির্দেশ দিক, আমি আবারও বলছি, যারা সন্ত্রাসীদের ইন্ধন দিয়েছে, আমরা তাদের চিহ্নিত করব; তাদের শাস্তি দেব।’
দেশের জনগণের উদ্দেশে পুতিন বলেন, ‘শত্রুরা আমাদের বিভক্ত করতে পারবে না।’
রাশিয়ার এফএসবি নিরাপত্তা সার্ভিসের দাবি, হামলাকারীরা দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টার আগে ইউক্রেনে নিজেদের লোকজনের সঙ্গে ‘সংযুক্ত’ ছিল।
তবে রাশিয়ার এ দাবিকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে কিয়েভ। অবশ্য তাদের আশঙ্কা, এ ঘটনার পর ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে।
শুক্রবার ক্রোকাস সিটি কমপ্লেক্সের কনসার্ট হলে বন্দুক হামলা চালান ছদ্মবেশী হামলাকারীরা। গুলি করার পর ভবনের বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরক ছিটিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কনসার্টে আসা লোকজনের ওপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান বন্দুকধারীরা, যার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, (মুসলিম বিরোধী) বিভিন্ন দেশে তাদের নিয়মিত হামলার অংশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে আইএসের কোন আঞ্চলিক সংগঠনটি এ হামলা করেছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করেনি সংগঠনটি।
ভেরিফায়েড ভিডিওতে দেখা যায়, হলে নিজেদের আসন গ্রহণ করছেন লোকজন। এরপর আর্তচিৎকারের সঙ্গে গুলির মুহুর্মুহু আওয়াজ পাওয়া যায়। ওই সময় লোকজনকে দৌড়ে বের হতে দেখা যায়।
অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কিছু মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন বন্দুকধারীরা। ওই সময় কনসার্ট হলে রক্তের মধ্যে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।
রাশিয়ায় ২০০৪ সালে বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার পর গতকালের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।
মস্কোর ঠিক পশ্চিমে ছয় হাজার ২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হল কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর আগত লোকজনের ওপর গুলি ছোড়েন বন্দুকধারীরা।
‘পিকনিক’ নামের সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ডের পারফরম্যান্স শুরুর ঠিক আগে এ হামলা চালানো হয়।
আরও পড়ুন:কনসার্ট হলে মুখোশ পরা বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ১৩৩ জনে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় তদন্ত কর্তৃপক্ষ আজ শনিবার এ তথ্য বিশ্ব মিডিয়াকে জানিয়েছে।
তদন্তকারী কমিটি আরও জানিয়েছে, এখনও ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উৎসবের আমেজে চলছিল কনসার্ট। সেখানে হামলা হয় দুর্বৃত্তদের। রাশিয়ার মস্কোর এই ঘটনায় পুরো বিশ্ব হতবাক। এই হামলাকে পরিকল্পিত বলছে রাশিয়া।
এদিকে ক্রেমলিনের বরাতে রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন সরাসরি জড়িত বলে জানা গেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বন্দুকধারীরা কনসার্ট হলে ঢুকে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে ভিড়ের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকেন।
এর আগে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় তদন্ত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, হামলায় এখন পর্যন্ত ১১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তার আগে, নিহতের সংখ্যা ৯৩ জন বলে জানানো হয়েছিল।
এ ঘটনাকে ‘রক্তাক্ত সন্ত্রাসী হামলা’ উল্লেখ করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যদিও রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ হামলায় কারা জড়িত তেমন কিছুই নিশ্চিত করেনি।
কয়েক দশকের মধ্যে রাশিয়ায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর একটি এটি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি, কিউবাসহ বিশ্বনেতারা।
আরও পড়ুন:মস্কোর উপকণ্ঠে কনসার্ট হলে শুক্রবারের প্রাণঘাতী হামলার বেশ আগে চলতি মাসের শুরুতে রাশিয়াকে সতর্ক করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ক্রোকাস সিটি হলে ছদ্মবেশী বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ৬০ জন নিহত ও প্রায় ১৫০ জন আহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউস এমন দাবি করে বলে জানিয়েছে এএফপি।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের নারী মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসনের বরাতে বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, মার্চের শুরুতে মস্কোতে কনসার্টসহ বড় জমায়েতে সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে তথ্য পায় যুক্তরাষ্ট্র। সে তথ্যটি মস্কোকে জানায় ওয়াশিংটন।
তার ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সতর্কবার্তা দেয়ার দায়িত্বকেন্দ্রিক দীর্ঘদিনের নীতি মেনে চলছে। এর অংশ হিসেবে অপহরণ বা বেশ কিছু মানুষকে হত্যার সুনির্দিষ্ট হুমকি সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য বিভিন্ন দেশ বা গোষ্ঠীকে জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কনসার্টে আসা লোকজনের ওপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান বন্দুকধারীরা, যার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
রাশিয়ায় ২০০৪ সালে বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার পর গতকালের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।
মস্কোর ঠিক পশ্চিমে ছয় হাজার ২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হল কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর আগত লোকজনের ওপর গুলি ছোড়েন বন্দুকধারীরা।
‘পিকনিক’ নামের সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ডের পারফরম্যান্স শুরুর ঠিক আগে এ হামলা চালানো হয়।
ভেরিফায়েড ভিডিওতে দেখা যায়, হলে নিজেদের আসন গ্রহণ করছেন লোকজন। এরপর আর্তচিৎকারের সঙ্গে গুলির মুহুর্মুহু আওয়াজ পাওয়া যায়। ওই সময় লোকজনকে দৌড়ে বের হতে দেখা যায়।
অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কিছু মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন বন্দুকধারীরা। ওই সময় কনসার্ট হলে রক্তের মধ্যে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার মস্কোর উপকণ্ঠে শুক্রবার কনসার্ট হলে ছদ্মবেশী বন্দুকধারীদের গুলিতে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত ও ১৪৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, কনসার্টে আসা লোকজনের ওপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান বন্দুকধারীরা, যার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
রাশিয়ায় ২০০৪ সালে বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার পর গতকালের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।
মস্কোর ঠিক পশ্চিমে ছয় হাজার ২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হল কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর আগত লোকজনের ওপর গুলি ছোড়েন বন্দুকধারীরা।
‘পিকনিক’ নামের সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ডের পারফরম্যান্স শুরুর ঠিক আগে এ হামলা চালানো হয়।
ভেরিফায়েড ভিডিওতে দেখা যায়, হলে নিজেদের আসন গ্রহণ করছেন লোকজন। এরপর আর্তচিৎকারের সঙ্গে গুলির মুহুর্মুহু আওয়াজ পাওয়া যায়। ওই সময় লোকজনকে দৌড়ে বের হতে দেখা যায়।
অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কিছু মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন বন্দুকধারীরা। ওই সময় কনসার্ট হলে রক্তের মধ্যে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য