ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়ে জার্মানি চূড়ান্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বার্লিনে মস্কোর রাষ্ট্রদূত সের্গেই নেচায়েভ সোমবার এ কথা জানান। তিনি বলেছেন, কিয়েভে অস্ত্র মস্কোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সমঝোতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে বার্লিন।
রুশ দূত বলেন, ‘ইউক্রেন সরকারকে জার্মানীতে তৈরি প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব অস্ত্র কেবল রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেই নয়, ডনবাসের বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধেও ব্যবহার হচ্ছে। এটা নিশ্চিতভাবে সীমা লঙ্ঘন।’
নাৎসি অপরাধের জন্য আমাদের জনগণের সামনে জার্মানির নৈতিক ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করছেন রুশ দূত।
তিনি বলেন, ‘তারা এমন একটা সীমা অতিক্রম করেছে, যেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব না।’
ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে যোগদানে ‘সশস্ত্র সংঘাতের অঞ্চলে’ অস্ত্র না পাঠানোর দীর্ঘদিনের নীতি বাতিল করেছে বার্লিন। জার্মান সরকার বলছে, কিয়েভকে সমর্থন করার নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে তাদের, যেন তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো মতো রুশ অর্থনীতিতে ধস নামানোর প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে জার্মানিও। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে থেকেই জার্মান ব্যবসাগুলো রাশিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভর করছে।
রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জার্মান সরকার একতরফাভাবে (রাশিয়ার সঙ্গে) দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ধ্বংস করার কাজ করছে। এই সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কয়েক দশক ধরে তা তৈরি হয়েছিল।’
এই কূটনীতিকের ভাষ্য, রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নিজেই ধুঁকছে জার্মানি। গ্যাস, বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে।
নেচায়েভ বলেন, ‘মস্কোর বিরুদ্ধে “নিষেধাজ্ঞার যুদ্ধ” এখন জার্মানিতে “নিজেকে পায়ে গুলি করা” হিসেবে দেখা হচ্ছে।
‘রাশিয়া এই ক্ষয়ক্ষতি দেখে একদম খুশি না।’
আরও পড়ুন:
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো বিদেশি শক্তির চাপের কাছে রাশিয়া কখনো নতি স্বীকার করবে না। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়ার গভীরে কোনো সামরিক হামলা হলে দেশটি অপ্রতিরোধ্য ও ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া দেখাবে।
গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন এই মন্তব্য করেন। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এই পদক্ষেপের ফলে বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক তেলের দাম প্রায় ৫ শতাংশ বেড়ে যায় এবং ভারত রুশ তেল আমদানি কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞাগুলো অবন্ধুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা কিছু প্রভাব ফেলবে বটে, কিন্তু রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্থিতি বা কল্যাণে তা বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না। তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার জ্বালানি খাত এখনো আত্মবিশ্বাসী ও স্থিতিশীল।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি নিঃসন্দেহে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা। কিন্তু কোনো সম্মানিত দেশ বা সম্মানিত জনগণ কখনো চাপের মুখে সিদ্ধান্ত নেয় না।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে রসিকতা করতে গিয়ে পুতিন বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে হয়তো পশ্চিমারা রাশিয়ার টয়লেটও আমদানি করতে পারবে না। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন।
পুতিন আরও সতর্ক করেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়ার রপ্তানি ব্যাহত হলে তেলের দাম হু-হু করে বেড়ে যাবে, যার প্রভাব মার্কিন বাজার ও জ্বালানি স্টেশনগুলোতেও পড়বে।
যদিও স্বল্পমেয়াদে নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলোর অর্থনৈতিক প্রভাব সীমিত হতে পারে, বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে তিনি রাশিয়ার আর্থিক প্রবাহে চাপ তৈরি করে ক্রেমলিনকে যুদ্ধবিরতির দিকে ঠেলে দিতে চান।
তবে ভারত রুশ অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
লেবাননের বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর ধোঁয়া উঠছে। ছবি: সংগৃহীত
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লেবাননের দক্ষিণ ও বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে, যেগুলোকে তারা ‘সন্ত্রাসী অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। বৃহস্পতিবারের এসব হামলায় একাধিক নিরীহ বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে মেহের নিউজ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই হামলাগুলোকে ‘সন্ত্রাসী ও আগ্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে নিহতদের পরিবার ও লেবাননের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, ইসরায়েলি দখলদার শাসনকেই এসব অপরাধের জন্য বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া উচিত।
বাঘাই বলেন, ইসরায়েলের এই দায়মুক্তির সংস্কৃতি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তা থেকেই উৎসারিত।
তার মতে, লেবাননের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার ওপর বারবার হামলা এবং যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিক লঙ্ঘন ইসরায়েলের ‘অন্তর্নিহিত সন্ত্রাসী ও আধিপত্যবাদী চরিত্রের’ই প্রমাণ বহন করে।
তিনি আরও বলেন, এসব কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যা পুরো অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
ইরানি মুখপাত্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা ইসরায়েলের এসব অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয় এবং লেবাননসহ অঞ্চলের অন্যান্য স্থানে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
’নতুন আক্রমণ হবে আরেকটি ব্যর্থতা’
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান বলেছেন, তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে ‘পুনরায় শক্তি প্রয়োগের’আশঙ্কা করছেন তিনি। চলতি বছরের জুনের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে একটি নজিরবিহীন বোমা হামলা চালায়। ফলে যুদ্ধ শুরু হলে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনাগুলোর পাশাপাশি আবাসিক এলাকাগুলোকে টার্গেট করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়।
এই সংঘাত এপ্রিলে শুরু হওয়া তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পরমাণু আলোচনাকে ব্যাহত করে। ২৪ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।
সুইস সংবাদপত্র ‘লে টেম্পসের’ সঙ্গে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, ‘যদি কূটনীতি ব্যর্থ হয়, তাহলে আমি পুনরায় শক্তি প্রয়োগের আশঙ্কা করছি’। তার এই সাক্ষাৎকারটি বুধবার প্রকাশিত হয়।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বৃহস্পতিবার বলেছেন, গ্রোসির মন্তব্য ‘উদ্বেগের বশে নাকি হুমকি হিসেবে’ তা স্পষ্ট নয়।
তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘কিন্তু যারা এই ধরনের হুমকি দিচ্ছেন তাদের বুঝতে হবে যে একটি ব্যর্থ অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি করলে তা কেবল আরেকটি ব্যর্থতার দিকেই নিয়ে যাবে’।
১২ দিনের যুদ্ধের পরপরই ইরান এবং আইএইএ’র মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তেহরান ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার পর্যাপ্ত নিন্দা জানাতে আইএইএ’র ব্যর্থতার কারণে সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে।
সেপ্টেম্বরে, ইরান এবং আইএইএ একটি নতুন সহযোগিতা কাঠামোতে সম্মত হয়। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অধীনে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো ফিরিয়ে আনার পর তেহরান সেই কাঠামোটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে।
২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে আসার পর এই চুক্তি কার্যকরভাবে বাতিল হয়ে যায়।
সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেছেন, যুদ্ধের পর থেকে ইরান ‘পরিদর্শনের ওপর সীমা আরোপ করেছে কারণ, এটি তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ এবং শুধুমাত্র পরিদর্শকদের ‘অল্প পরিমাণে’ অনুমতি দিয়েছে।
নিউজিল্যান্ড ব্যবসায়িক বিনিয়োগকারীদের জন্য কর্ম ভিসা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। বিদেশি অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের স্থানীয় ব্যবসায় বিনিয়োগের পাশাপাশি স্থায়ী বসবাসের সুযোগও দেবে দেশটি। এই ভিসা আবেদনকারীরা তাদের অংশীদার এবং নির্ভরশীল সন্তানদেরও নিউজিল্যান্ডে নিয়ে আসার অনুমতি পাবেন। একবার দেশটিতে প্রবেশ করতে পারলে পুনরায় আবেদন ছাড়াই চার বছর পর্যন্ত পরিবারের সদস্যরা বৈধ বসবাস করতে পারবেন। সে সঙ্গে যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে স্থায়ী হওয়ার সুযোগও থাকছে। খবর দ্য ইকোনমিক টাইমসের।
এ ভিসাপ্রাপ্তির যোগ্যতার মানদণ্ড হিসেবে দুটি বিকল্প রাখা হয়েছে। তা হলো- নিউজিল্যান্ডে ১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা। এর ফলে তিন বছরের কর্ম ভিসা প্রদান করা হবে। এরপর স্থায়ী হওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনা করা হবে। অপরটি হলো, নিউজিল্যান্ডে ২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা। এর ফলে ১২ মাস পরেই স্থায়ী বসবাসের পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তবে স্থায়ী হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের জন্য আবেদনকারীদের কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে পরিচালিত একটি ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে হবে। কমপক্ষে ৫০০,০০০ নিউজিল্যান্ড ডলার রিজার্ভ তহবিল থাকতে হবে। উল্লেখযোগ্য, ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা প্রদর্শন করতে হবে। যেমন, পাঁচ বা তার বেশি পূর্ণ-সময়ের কর্মচারীসহ একটি কোম্পানির মালিকানা বা বার্ষিক ১ মিলিয়ন নিউজিল্যান্ড ডলার আয় করা।
আবেদনকারীদের ৫৫ বছরের কম বয়সি হতে হবে। থাকতে হবে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা। স্বাস্থ্য ও চরিত্র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
তবে কিছু ধরনের ব্যবসায় বিনিয়োগ করলে অযোগ্য বিবেচিত হবেন। যার মধ্যে রয়েছে ছাড়ের দোকান, ড্রপ-শিপিং কার্যক্রম, ফাস্ট ফুড আউটলেট, জুয়া, তামাক এবং ভ্যাপিং ব্যবসা, প্রাপ্তবয়স্কদের বিনোদন, গৃহভিত্তিক ব্যবসা, ফ্র্যাঞ্চাইজড ব্যবসা এবং অভিবাসন পরামর্শ পরিসেবা।
প্রয়োজনীয় সময়কাল ধরে ব্যবসা পরিচালনা করার পরে বিনিয়োগকারীরা ব্যবসায়িক বিনিয়োগকারী আবাসিক ভিসার জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। যোগ্য হওয়ার জন্য তাদের সক্রিয়ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে, মালিকানা বজায় রাখতে হবে, কমপক্ষে পাঁচটি ফুলটাইম সমতুল্য চাকরির সুযোগ তৈরি করে রাখতে হবে। নিউজিল্যান্ডের নাগরিক বা বাসিন্দার জন্য একটি নতুন ফুলটাইম চাকরির পদ তৈরি করতে হবে, ব্যবসাকে সচ্ছল রাখতে হবে এবং স্বাস্থ্য ও চরিত্র পরীক্ষা ছাড়াও তিন বছর ধরে প্রতি বছর ১৮৪ দিন নিউজিল্যান্ডে অবস্থান করতে হবে।
নতুন ভিসা প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো- স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য অভিবাসীদের একটি আইনগত সুবিধা দেওয়া। পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বিদেশি অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করা।
তুরস্কের বোডরুম শহরের অবকাশ যাপন কেন্দ্রের কাছে ইজিয়ান সাগরে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে।
আজ শুক্রবার তুরস্কের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ইস্তাম্বুল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
সংবাদ সংস্থা ডিএইচএ জানায়, নৌকাডুবির পর একজন সাঁতরে তীরে উঠেছে এবং আরেকজনের সন্ধানে অভিযান চলছে।
বোডরুম শহরটি গ্রিসের কস দ্বীপের কাছে অবস্থিত। ইউরোপীয় দেশগুলোয় পৌঁছানোর চেষ্টাকারীদের কাছে এটি পছন্দের পথ। তবে, এই পথে যাত্রাকালে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, এ বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৪০০ অভিবাসনপ্রত্যাশীর প্রাণহানি ঘটেছে।সূত্র - বাসস
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও গাজায় সাহায্য পাঠানোর পরিমাণ খুব একটা উন্নতি হয়নি। এমনকি ক্ষুধারও কোনো লক্ষণীয় হ্রাস পায়নি।
জেনেভা থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়াসুস জেনেভা সদর দপ্তরে বক্তৃতাকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ কারণ, যে পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশ করছে তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়।’
তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ১০ অক্টোবর থেকে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ‘ক্ষুধাও কমেনি। ইসরাইলি বাধার কারণে পর্যাপ্ত খাদ্য গাজায় প্রবেশ করতে পারছেনা।’
যুদ্ধের সময় ইসরাইল বারবার গাজা উপত্যকায় সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে, যা মানবিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এ কারণে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় চুক্তিতে প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক প্রবেশের ব্যবস্থা থাকলেও টেড্রোস বলেছেন, বর্তমানে প্রতিদিন মাত্র ২শ’ থেকে ৩শ’ ট্রাক প্রবেশ করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেছেন, সম্পদ নেই। ‘এতে সুবিধাভোগীর সংখ্যা কমে যায়’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি বহাল থাকার প্রশংসা করেছেন, কিন্তু সতর্ক করে বলেছেন, ‘সঙ্কট এখনও শেষ হয়নি এবং চাহিদাও প্রচুর।
‘যদিও সাহায্যের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, তারপরও এইসব সাহায্য প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের অতর্কিত হামলার পর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দুই বছরের যুদ্ধের সময় গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়েছিল।
টেড্রোস বলেছেন, ‘গাজায় সম্পূর্ণরূপে কার্যকর কোনো হাসপাতাল নেই এবং ৩৬টির মধ্যে মাত্র ১৪টিই কাজ করছে’। ‘প্রয়োজনীয় জরুরি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, সরঞ্জাম এবং স্বাস্থ্যকর্মীর তীব্র ঘাটতি রয়েছে’।
তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হাসপাতালগুলোতে আরও বেশি চিকিৎসা সরবরাহ পাঠাচ্ছে। অতিরিক্ত জরুরি চিকিৎসা দল মোতায়েন করছে এবং চিকিৎসা স্থানান্তর বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।
তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘গাজার স্বাস্থ্য কাঠামো পুনর্নির্মাণের মোট খরচ হবে কমপক্ষে ৭ বিলিয়ন ডলার’।সূত্র : বাসস
ইমরান খান
পাকিস্তানের সংসদবিষয়ক মন্ত্রী ড. তারিক ফজল চৌধুরী জানিয়েছেন, যদি তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে তাহলে কারাবন্দি নেতা ইমরান খানকে আদিয়ালা কারাগার থেকে তার নিজ বাড়ি বানিগালা রেসিডেন্সে স্থানান্তর করা হতে পারে।
বুধবার এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী বলেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা বর্তমানে কোনো বাধা ছাড়াই জেলে তার পুরো পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। যদি দেখা করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে, আমরা তা পর্যালোচনা করবো। তারা যদি আবেদন করে, আমরা তাকে বানিগালায় স্থানান্তর করতে প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, আমরা অবশ্যই তাকে স্থানান্তর করব, সেখানে তিনি মানুষের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, লুডু খেলতে পারবেন—যা ইচ্ছা করতে পারবেন। আমরা চাই পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করুন।
চৌধুরী আরও জানান, কারাগারে ইমরান খানের জন্য ফার্স্ট-ক্লাস মানের ব্যায়াম সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে।
এদিকে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) বৃহস্পতিবার আদিয়ালা জেল সুপারিনটেনডেন্টকে নির্দেশ দিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সপ্তাহে দুইবার সাক্ষাতের অনুমতি সংক্রান্ত আদালতের আগের আদেশ বাস্তবায়ন করতে।
পিটিআই ও ইমরানের পরিবারের অভিযোগ, কারাগার কর্তৃপক্ষ বারবার ইচ্ছাকৃতভাবে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ বাধাগ্রস্ত বা সাবোটাজ করছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিগগিরই এশিয়ায় একটি ‘বড় সফরে’ আসছেন। সেখানে সকলের নজর চীনা নেতা সি চিনপিংয়ের সঙ্গে তার প্রত্যাশিত বৈঠকের দিকে। শুল্ক এবং ভূরাজনৈতিক দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে এই বৈঠকের ফলাফল বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর বিশাল প্রভাব ফেলবে।
গত বুধবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি মালয়েশিয়া, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি ‘বড় সফর’ শুরু করতে যাচ্ছেন।
সফরের বেশিরভাগ সময়টা অনিশ্চয়তার মধ্যে ঢাকা। হোয়াইট হাউসেও তেমন কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। ট্রাম্প এও আশঙ্কা করছেন, চলমান উত্তেজনার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় সির সঙ্গে তার প্রত্যাশিত বৈঠক নাও হতে পারে।
কিন্তু ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি চীনের সঙ্গে একটি ‘ভালো চুক্তি’ সই করতে এবং বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চলমান তিক্ত বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান ঘটানোর আশা করছেন।
মালয়েশিয়া এবং জাপান
২৬-২৮ অক্টোবর দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংগঠন (আসিয়ান)-এর শীর্ষ সম্মেলনে তার প্রথম গন্তব্য মালয়েশিয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে এই সম্মেলনগুলো খুব একটা পাত্তা দেননি।
ট্রাম্প মালয়েশিয়ার সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি সই করতে প্রস্তুত- তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি সইয়ের তত্ত্বাবধান করা। কারণ তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম গত বুধবার বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার আরও ইতিবাচক ফলাফল দেখতে আগ্রহী।’
দুই দেশের কর্মকর্তারা এএফপিকে জানিয়েছেন, কয়েক মাসের টানাপোড়েনের পর সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন নেতা ব্রাজিলের নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার সঙ্গেও দেখা করতে পারেন।
ট্রাম্পের পরবর্তী গন্তব্য টোকিও হবে বলে মনে করা হচ্ছে- যেখানে তিনি রক্ষণশীল নেতা সানাই তাকাইচির সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সানাই এই সপ্তাহে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
‘চূড়ান্ত পর্ব’ দক্ষিণ কোরিয়ায়
এই সফরের চূড়ান্ত পর্ব দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেখানে ট্রাম্প আগামী ২৯ অক্টোবর এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য পৌঁছাবেন এবং এখানেই সম্ভবত শি’র সঙ্গে দেখা করবেন।
ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর দুই নেতার প্রথম বৈঠকের মাধ্যমে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান হতে পারে। তবে বেইজিংয়ের বিরল খনিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করেছে।
ট্রাম্প প্রথমে বৈঠক বাতিলের হুমকি দিয়েছিলেন এবং নতুন করে শুল্কারোপ করেছিলেন। তারপর বলেছিলেন, তিনি সর্বোপরি এগিয়ে যাবেন।
গত মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘হয়তো (বৈঠক) এটি ঘটবে না।’ কিন্তু গত বুধবার বলেন, তিনি ‘সবকিছুর বিষয়ে’ শি’র সঙ্গে একটি চুক্তি করতে আশাবাদী। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চীনা নেতা রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর ‘বড় প্রভাব’ রাখতে পারবেন।
উত্তর কোরিয়াও আলোচনার আলোচ্য সূচিতে থাকবে। ট্রাম্পের সফরের ঠিক কয়েকদিন আগে গত বুধবার কিম জং উনের দেশ একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গেও দেখা করার আশা করছেন। তবে এবারের এশিয়া সফরে নতুন কোনো বৈঠকে নাও হতে পারে।
মন্তব্য