রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে বড় ধরনের অগ্রগতির খবর দিয়েছে ইউক্রেন। বলা হয়েছে, দেশটির সেনারা রাশিয়ার দখলে থাকা উত্তর-পূর্বাংশে খারকিভ অঞ্চলে বড় যুদ্ধক্ষেত্র পুনরুদ্ধার করে নিজেদের কব্জায় নিয়েছে।
রুশ বাহিনীর দখলে থাকা অঞ্চল পুনরুদ্ধারে চলতি সপ্তাহে পাল্টা আক্রমণ শুরুর পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দেশের পূর্বাঞ্চলে এমন বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করেছে।
এপ্রিলে কিয়েভের আশপাশের এলাকাগুলো থেকে রাশিয়া সেনা প্রত্যাহার করার পর থেকে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী শনিবার বলেছে, তারা পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভে কুপিয়ানস্ক শহরে প্রবেশ করেছে।
কুপিয়ানস্ক পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ান বাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্র। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যে এই এলাকা দখল করে নিয়েছিল ক্রেমলিন।
কিয়েভের পক্ষ থেকে দেশটির উত্তর ও দক্ষিণে যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্যের কথাও জানিয়েছে।
ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি প্রকাশ করে বলেছে, তাদের অফিসারদের কুপিয়ানস্ক শহরে দেখা গেছে। স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বহনকারী কিছুসংখ্যক ছদ্মবেশী সৈন্য একটি সাঁজোয়া যানের চারপাশে জড়ো হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের একজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা পৃথকভাবে একটি পোস্ট দিয়েছেন। প্রায় ২৭ হাজার জনঅধ্যুষিত কুপিয়ানস্ক শহরের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন- ‘কুপিয়ানস্ক ইউক্রেনের’।
ইউক্রেনের সৈন্যরা উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চলে অভিযানে দ্রুত অগ্রসর হয়ে রুশ লাইনের গভীরে ঢুকে পড়েছে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর দ্রুতই কুপিয়ানস্ক এলাকা দখল করে নেয় রাশিয়া। এরপর থেকে কুপিয়ানস্ককে গুরুত্বপূর্ণ রেল কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল ক্রেমলিন।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র ওলেক্সান্ডার শুপুন বলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেনের এক হাজার বর্গকিলোমিটারেরও বেশি এলাকা দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে। খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ানদের দখল করে নেয়া ৩০টিরও বেশি বসতি মুক্ত করা হয়েছে বা নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে।’
ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ইজিয়ামেও অগ্রাভিযান চালিয়েছে। সেখানে ৪৫ হাজার জনঅধ্যুষিত একটি শহর মুক্ত করা হয়েছে, যেটি রুশ সামরিক অভিযানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চায়নস্থল হিসেবে কাজ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক যুদ্ধবিষয়ক থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট বলেছে, ‘খারকিভ সিটি-ইজিয়াম লাইনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর এই সাফল্য সাফল্য রাশিয়ান তথ্যগত যোগাযোগে ফাটল তৈরি করছে। আর ইউক্রেনীয় বাহিনীর এই অগ্রাভিযান রাশিয়ান কমান্ডের প্রতি আস্থাকেও সজোরে ধাক্কা দিয়েছে। এমনকি মে মাসের মধ্যভাগ থেকে একজন রাশিয়ানকেও এখানে নদী পারাপার থেকে দেখা যায়নি।’
দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র নাটালিয়া গুমেনিউক শনিবার স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘দক্ষিণ ফ্রন্ট লাইন ধরে ইউক্রেনীয় সেনারা কয়েক ডজন কিলোমিটার পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এসব এলাকা আগ্রাসনের শুরুতে রুশ বাহিনী দখল করে নিয়েছিল।’
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, শুক্রবার রাশিয়ান সামরিক যানবাহনগুলোকে খারকিভের একটি মহাসড়ক ধরে এগিয়ে চলেছে এবং দুটি হেলিকপ্টার মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে বলা হয়েছে যে খারকিভ অঞ্চলে শক্তি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
খারকিভ অঞ্চলে রুশ-সমর্থিত প্রশাসনের প্রধান ভিটালি গানচেভ বলেছেন, ‘খারকিভ অঞ্চলে ইউক্রেনের অগ্রগতি খুবই জোরালো ও দ্রুত হয়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী বেশ কয়েকটি বসতি পুনরুদ্ধার করেছে।
‘শত্রুকে যতটা সম্ভব বিলম্বিত করা হচ্ছে। তবে বেশ কয়েকটি বসতি ইতোমধ্যে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এ অবস্থায় ইজিয়াম, কুপিয়ানস্ক এবং ভেলিকি বুরলুক শহর থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।’
‘রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘খারকিভে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অভিযানে যে রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেখানে শক্তি বৃদ্ধির উদ্যোগে তার প্রমাণ মেলে।
‘ইউক্রেনে বিপুলসংখ্যক রুশ সেনা রয়েছে। দুঃখজনকভাবে, পুতিন চড়া মূল্য দিয়ে এসব রাশিয়ানকে এখানে নিক্ষেপ করছেন।’
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে লড়াই মস্কোর সৈন্যদের পক্ষে ভাল যাচ্ছে না।’
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, ‘ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী দেশটির পূর্বে রুশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে।
রাশিয়ার বাহিনী সম্ভবত অবাক হয়ে গেছে। সেক্টরটি শুধু হালকাভাবে দখল করা হয়েছিল এবং ইউক্রেনীয় ইউনিটগুলো বেশ কয়েকটি শহর দখল করেছে বা ঘিরে রেখেছে।’
মুক্ত বাসিন্দারা
প্রায় সাত মাস রাশিয়ার দখলে ছিল খারকিভ। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর হাতে এই অঞ্চল মুক্ত হওয়ার পর নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি এখানকার গ্রাকোভো গ্রামের বাসিন্দারা।
মুক্ত খারকিভে গ্রাকোভো গ্রামের বাসিন্দা সেরহি লুতসাই শুক্রবার ইউক্রেন পুলিশকে একটি জায়গা দেখান, যেখানে মার্চ মাসে বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধারা তাকে দুজনের মরদেহ দাফন করতে বাধ্য করেছিল।
খারকিভ অঞ্চলের পুলিশ তদন্তের প্রধান সেরহি বলভিনভ ওই দুই যুবকের মরদেহ নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ওদের মাথার পেছনে গুলির ক্ষত ছিল এবং তাদের কান কেটে দেয়া হয়েছিল। লুৎসাই ও অন্য একজন বাসিন্দা এই লোকদের কবর দিয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন:রাশিয়ার মস্কোতে গত শুক্রবার কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার দায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্বীকার করলেও এ ধরনের আক্রমণের সামর্থ্য জঙ্গি সংগঠনটির আছে বলে বিশ্বাস করে না রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার তার দেশের এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাখারোভা বলেন, মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আইএসের আছে, এমনটি বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন।
সাম্প্রতিক ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১৪৩ জন। আহত অনেককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
মস্কোর উপকণ্ঠে ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। যদিও এ দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
রাশিয়ায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার পর দায় স্বীকার করে আইএস। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেন, তাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাটি চালায় আইএসের আফগান শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে ইউক্রেন, তবে জাখারোভার ভাষ্য, ইউক্রেনকে হামলার দায় থেকে বাঁচাতে ত্বরিত গতিতে আইএসের ওপর দায় চাপায় পশ্চিমা দেশগুলো।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর উপকণ্ঠে শুক্রবার রাতে কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী বন্দুক হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাশিয়ার অভ্যন্তরে দুই দশকের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় শোক পালনের অংশ হিসেবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয় চার ব্যক্তিকে।
বন্দুক হামলার পর জড়িত সবাইকে শাস্তির আশ্বাস দিয়ে রোববারকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
কনসার্ট শুরুর আগে হলে আগত লোকজনের ওপর ওই হামলায় প্রাণ যায় তিন শিশুসহ ১৩৭ জনের। এ ঘটনায় আহত হন ১৮২ জন।
হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০০ জনের বেশি এখনও হাসপাতালে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
বন্দুক হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে রোববার সন্ধ্যায় মস্কোর বাইরে নিজ বাসভবন এলাকার একটি গির্জায় মোমবাতি প্রজ্বালন করেন পুতিন।
এর আগে ঘটনাস্থল ছয় হাজার ২০০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ক্রোকাস সিটি হলের বাইরে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রুশ নাগরিকরা। এ হলে সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ড ‘পিকনিক’ পারফর্ম শুরু করার আগে হামলা চালান চার বন্দুকধারী।
বিশ্বজুড়ে নিন্দিত ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস), তবে পুতিন তার বক্তব্যে জঙ্গি সংগঠনটির কথা উল্লেখ না করে বলেছেন, হামলাকারীরা পালিয়ে ইউক্রেন যেতে চেয়েছিল।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে যে চার বন্ধুকধারী হামলা চালিয়েছে সেই চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
১৩৩ জনকে হত্যা ও ১৪০ জনের বেশি মানুষকে আহত করার ওই হামলার দায় নিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে রাশিয়া দাবি করেছে, এই হামলার সঙ্গে ইউক্রেন জড়িত।
পুতিন বলেছেন, সবমিলিয়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন বন্ধুকধারী ইউক্রেনে যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার হয়েছে।
শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, হামলাকারীদের ইউক্রেনে সরিয়ে নেয়ার জন্য সীমান্তে প্রস্তুতি রাখা হয়েছিল।
ভয়াবহ এ হামলার ঘটনাটিকে ‘বর্বর সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন।
শনিবার টেলিগ্রামে আইএসের প্রচারমাধ্যম আমাক চার মুখোশধারীর একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করেছে এরাই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। অবশ্য আইএসের দাবি নিয়ে রাশিয়া কোনো মন্তব্য করেনি।
রাশিয়ায় ২০০৪ সালে বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার পর শুক্রবারের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী। মস্কোর ঠিক পশ্চিমে ছয় হাজার ২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হল কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর আসা লোকজনের ওপর গুলি ছোড়ে বন্দুকধারীরা। ‘পিকনিক’ নামের সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ডের পারফরম্যান্স শুরুর ঠিক আগে এ হামলা হয়।
আরও পড়ুন:রাজধানী মস্কোয় অনুষ্ঠিত হওয়া কনসার্টে ভয়াবহ হামলার ঘটনাটিকে ‘বর্বর সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শুক্রবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় তিনি রোববার দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে।
টেলিভিষণে দেয় ভাষণে পুতিন বলেন, ‘হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার পর চার বন্দুকধারী ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। সীমান্তে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে তারা ধরা পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্য অনুসারে তারা ইউক্রেনের দিকে যাচ্ছিল, তাদের সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি রাখা ছিল।
‘তারা যে-ই হোক, যারাই তাদের নির্দেশ দিক, আমি আবারও বলছি, যারা সন্ত্রাসীদের ইন্ধন দিয়েছে, আমরা তাদের চিহ্নিত করব; তাদের শাস্তি দেব।’
দেশের জনগণের উদ্দেশে পুতিন বলেন, ‘শত্রুরা আমাদের বিভক্ত করতে পারবে না।’
রাশিয়ার এফএসবি নিরাপত্তা সার্ভিসের দাবি, হামলাকারীরা দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টার আগে ইউক্রেনে নিজেদের লোকজনের সঙ্গে ‘সংযুক্ত’ ছিল।
তবে রাশিয়ার এ দাবিকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে কিয়েভ। অবশ্য তাদের আশঙ্কা, এ ঘটনার পর ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে।
শুক্রবার ক্রোকাস সিটি কমপ্লেক্সের কনসার্ট হলে বন্দুক হামলা চালান ছদ্মবেশী হামলাকারীরা। গুলি করার পর ভবনের বিভিন্ন জায়গায় বিস্ফোরক ছিটিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কনসার্টে আসা লোকজনের ওপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান বন্দুকধারীরা, যার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, (মুসলিম বিরোধী) বিভিন্ন দেশে তাদের নিয়মিত হামলার অংশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে আইএসের কোন আঞ্চলিক সংগঠনটি এ হামলা করেছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করেনি সংগঠনটি।
ভেরিফায়েড ভিডিওতে দেখা যায়, হলে নিজেদের আসন গ্রহণ করছেন লোকজন। এরপর আর্তচিৎকারের সঙ্গে গুলির মুহুর্মুহু আওয়াজ পাওয়া যায়। ওই সময় লোকজনকে দৌড়ে বের হতে দেখা যায়।
অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কিছু মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন বন্দুকধারীরা। ওই সময় কনসার্ট হলে রক্তের মধ্যে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।
রাশিয়ায় ২০০৪ সালে বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার পর গতকালের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।
মস্কোর ঠিক পশ্চিমে ছয় হাজার ২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হল কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর আগত লোকজনের ওপর গুলি ছোড়েন বন্দুকধারীরা।
‘পিকনিক’ নামের সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ডের পারফরম্যান্স শুরুর ঠিক আগে এ হামলা চালানো হয়।
আরও পড়ুন:কনসার্ট হলে মুখোশ পরা বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে এখন পর্যন্ত ১৩৩ জনে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় তদন্ত কর্তৃপক্ষ আজ শনিবার এ তথ্য বিশ্ব মিডিয়াকে জানিয়েছে।
তদন্তকারী কমিটি আরও জানিয়েছে, এখনও ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উৎসবের আমেজে চলছিল কনসার্ট। সেখানে হামলা হয় দুর্বৃত্তদের। রাশিয়ার মস্কোর এই ঘটনায় পুরো বিশ্ব হতবাক। এই হামলাকে পরিকল্পিত বলছে রাশিয়া।
এদিকে ক্রেমলিনের বরাতে রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন সরাসরি জড়িত বলে জানা গেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বন্দুকধারীরা কনসার্ট হলে ঢুকে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে ভিড়ের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকেন।
এর আগে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় তদন্ত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, হামলায় এখন পর্যন্ত ১১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তার আগে, নিহতের সংখ্যা ৯৩ জন বলে জানানো হয়েছিল।
এ ঘটনাকে ‘রক্তাক্ত সন্ত্রাসী হামলা’ উল্লেখ করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যদিও রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ হামলায় কারা জড়িত তেমন কিছুই নিশ্চিত করেনি।
কয়েক দশকের মধ্যে রাশিয়ায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর একটি এটি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি, কিউবাসহ বিশ্বনেতারা।
আরও পড়ুন:মস্কোর উপকণ্ঠে কনসার্ট হলে শুক্রবারের প্রাণঘাতী হামলার বেশ আগে চলতি মাসের শুরুতে রাশিয়াকে সতর্ক করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ক্রোকাস সিটি হলে ছদ্মবেশী বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ৬০ জন নিহত ও প্রায় ১৫০ জন আহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউস এমন দাবি করে বলে জানিয়েছে এএফপি।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের নারী মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসনের বরাতে বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, মার্চের শুরুতে মস্কোতে কনসার্টসহ বড় জমায়েতে সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে তথ্য পায় যুক্তরাষ্ট্র। সে তথ্যটি মস্কোকে জানায় ওয়াশিংটন।
তার ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সতর্কবার্তা দেয়ার দায়িত্বকেন্দ্রিক দীর্ঘদিনের নীতি মেনে চলছে। এর অংশ হিসেবে অপহরণ বা বেশ কিছু মানুষকে হত্যার সুনির্দিষ্ট হুমকি সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য বিভিন্ন দেশ বা গোষ্ঠীকে জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কনসার্টে আসা লোকজনের ওপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান বন্দুকধারীরা, যার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
রাশিয়ায় ২০০৪ সালে বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার পর গতকালের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।
মস্কোর ঠিক পশ্চিমে ছয় হাজার ২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হল কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর আগত লোকজনের ওপর গুলি ছোড়েন বন্দুকধারীরা।
‘পিকনিক’ নামের সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ডের পারফরম্যান্স শুরুর ঠিক আগে এ হামলা চালানো হয়।
ভেরিফায়েড ভিডিওতে দেখা যায়, হলে নিজেদের আসন গ্রহণ করছেন লোকজন। এরপর আর্তচিৎকারের সঙ্গে গুলির মুহুর্মুহু আওয়াজ পাওয়া যায়। ওই সময় লোকজনকে দৌড়ে বের হতে দেখা যায়।
অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কিছু মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন বন্দুকধারীরা। ওই সময় কনসার্ট হলে রক্তের মধ্যে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।
আরও পড়ুন:রাশিয়ার মস্কোর উপকণ্ঠে শুক্রবার কনসার্ট হলে ছদ্মবেশী বন্দুকধারীদের গুলিতে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত ও ১৪৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, কনসার্টে আসা লোকজনের ওপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান বন্দুকধারীরা, যার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
রাশিয়ায় ২০০৪ সালে বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার পর গতকালের হামলাটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।
মস্কোর ঠিক পশ্চিমে ছয় হাজার ২০০ আসনের ক্রোকাস সিটি হল কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর আগত লোকজনের ওপর গুলি ছোড়েন বন্দুকধারীরা।
‘পিকনিক’ নামের সোভিয়েত আমলের রক ব্যান্ডের পারফরম্যান্স শুরুর ঠিক আগে এ হামলা চালানো হয়।
ভেরিফায়েড ভিডিওতে দেখা যায়, হলে নিজেদের আসন গ্রহণ করছেন লোকজন। এরপর আর্তচিৎকারের সঙ্গে গুলির মুহুর্মুহু আওয়াজ পাওয়া যায়। ওই সময় লোকজনকে দৌড়ে বের হতে দেখা যায়।
অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কিছু মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন বন্দুকধারীরা। ওই সময় কনসার্ট হলে রক্তের মধ্যে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য