ইরাকের রাজধানী বাগদাদের বাসিন্দাদের আজ সকালে ঘুম ভেঙেছে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে। বাগদাদের গ্রিন জোনে সহিংসতায় এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
ইরাকের চিকিৎসা বিভাগের এক সূত্রের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সূত্রটি জানিয়েছে, ৩০ জন নিহত ছাড়াও শুধু গ্রিনজোনেই আরও ৭০০ জন আহত হয়েছেন, এর মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন ১১০ জন।
দুবাইভিত্তিক এমিরেটস এয়ারলাইনস বাগদাদ বিমানবন্দরে মঙ্গলবারের সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বাগদাদে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত গ্রেগোরি গ্যালিগান।
তুরস্ক সব পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার রাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষে সুরক্ষিত ও কূটনৈতিক এলাকা গ্রিন জোন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ এখনও একই মাত্রায় চলছে।
দেশটির শিয়া ধর্মীয় গুরু ও রাজনীতিবিদ মুকতাদা আল-সদর তার সমর্থকদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে অনশন শুরু করেছেন।
এর আগে সহিংসতা বন্ধ ও শান্তির স্বার্থে রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন এই শিয়া ধর্মগুরু। সেই সঙ্গে সারা দেশে তার দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। তার রাজনীতি থেকে অব্যাহতির এই ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সমর্থকরা।
বিদেশিরা ছাড়ছে ইরাক
রাজধানী বাগদাদে কুয়েতের দূতাবাস সে দেশে অবস্থানরত তাদের নাগরিকদের ইরাক ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
রয়টার্সের বরাত দিয়ে কুয়েতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কুনা জানিয়েছে, যাদের ইরাকে যাওয়ার কথা ছিল, তাদের এখন সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
সহিংসতার মধ্যে নাগরিকদের ইরাকে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তেহরান।
সেই সঙ্গে ইরাকমুখী সব ধরনের ফ্লাইট বাতিল করেছে প্রতিবেশী ইরান।
ইরাকের সঙ্গে স্থলবন্দরও বন্ধ করে দিয়েছে তেহরান।
ইরাকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সংঘাতে জড়িয়ে পরা সব দলকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
গত ২৮ জুলাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রধানমন্ত্রী পদে মোহাম্মদ আল-সুদানির মনোনয়নের বিরোধিতা করে ইরাকের শিয়া ধর্মগুরু মুকতাদা আল সদরের সমর্থকরা বাগদাদের উচ্চ নিরাপত্তা এলাকা ভেঙে ইরাকের পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে।
যখন শত শত বিক্ষোভকারী পার্লামেন্টে প্রবেশ করে, তখন সেখানে কোনো পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন না।
বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করলেও পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ আটকাতে পারেনি।
গত বছর ১২ অক্টোবর ইরাকের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগণনায় প্রাথমিকভাবে বড় ব্যবধানে যান শিয়া ধর্মীয় নেতা মুকতাদা আল-সদরের দল।
ইরানপন্থি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী নির্বাচনের প্রাথমিক ফল প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ভোট কারচুপির অভিযোগ করে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল রেকর্ড নিম্ন ৪১ শতাংশ। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অভিযানে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেটি পঞ্চম সাধারণ নির্বাচন।
আরও পড়ুন:Deeply alarmed by clashes across #Iraq this evening. The situation is very dangerous and could quickly spiral beyond control. Canada urges all parties to take steps to quickly deescalate the situation and to resolve differences through negotiation for the benefit of all Iraqis.
— Gregory Galligan 🇨🇦 (@Greg_Galligan) August 29, 2022
ইসরায়েলের একর শহরের উত্তরে দেশটির ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলের এত ভেতরে এটিই হিজবুল্লাহর প্রথম হামলা।
হিজবুল্লাহ মঙ্গলবার বিবৃতিতে জানায়, ফাঁদ সৃষ্টিকারী ও বিস্ফোরক ড্রোন দিয়ে আকাশপথ থেকে সমন্বিত হামলা চালানো হয়েছে, যার লক্ষ্যবস্তু ছিল একর ও নাহারিয়ার মধ্যবর্তী ইসরায়েলের দুটি ঘাঁটি।
ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির ভাষ্য, ইসরায়েলি হামলায় তাদের এক যোদ্ধা নিহত হওয়ার বদলা হিসেবে ইসরায়েলে হামলাটি চালানো হয়।
হামলার একটি ছবি প্রকাশ করেছে হিজবুল্লাহ, যেটি দৃশ্যত স্যাটেলাইট চিত্র। এতে হামলাস্থল চিহ্নিত করা হয়েছে লাল দাগ দিয়ে।
হিজবুল্লাহর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়, তাদের কোনো স্থাপনায় হিজবুল্লাহর হামলার বিষয়ে তথ্য নেই।
এর আগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলের কাছে ‘আকাশপথে আসা দুটি লক্ষ্য’ প্রতিহত করা হয়েছে।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ জানায়, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হানিনে আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে দুজন নিহত ও ছয়জন আহত হন।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দেশটির একটি সামরিক স্থাপনায় বুধবার হামলা চালিয়েছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
ওই হামলায় কমপক্ষে ১৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
হামলার দায় স্বীকার করে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর কয়েকজন সদস্য নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইহুদি রাষ্ট্রটিতে প্রতিশোধমূলক আক্রমণ করা হয়েছে।
ইরান সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীটির ভাষ্য, লেবানন সীমান্তবর্তী উত্তর ইসরায়েলের আরব সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাম আরব আল-আরামশেতে ইসরায়েলের নতুন একটি সামরিক পর্যবেক্ষণ কমান্ড সেন্টারে দূর নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরক ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, গতকালের হামলায় তাদের ১৪ সেনা আহত হন, যাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর।
সেনাবাহিনী আরও জানায়, পূর্ব লেবাননে ‘সন্ত্রাসীদের অবকাঠামোতে’ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান।
দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার হিজবুল্লাহর একজন ফিল্ড কমান্ডারসহ তিনজন নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
ওই সময় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তাদের হামলায় হিজবুল্লাহর স্থানীয় দুই কমান্ডার ও অন্য একজন সদস্য নিহত হন।
আরও পড়ুন:গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ২৫ হাজার টন বিস্ফোরকদ্রব্য ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডগুলোর জন্য নিয়োজিত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সিসকা আলবানিজ।
তার ভাষ্য, এসব বিস্ফোরকের বেশির ভাগ ছোড়া হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে।
আল জাজিরা বৃহস্পতিবার জানায়, ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া হামলার প্রথম সপ্তাহে গড়ে ২৫০ জন নিহত হন বলে জানান আলবানিজ।
জাতিসংঘের বিশেষ দূতের ভাষ্য, গাজায় হামলার শুরুর সপ্তাহে ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়’ ইসরায়েল দুই হাজার পাউন্ড বাঙ্কার বাস্টার বোমা ছোড়ে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জিপি হটভলির এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লিখিত কথাগুলো বলেন আলবানিজ।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম স্কাই নিউজকে হটভলি বলেন, ‘শুধু ভাবুন, জেরুজালেমের মতো কোনো শহরের মাঝখানে বিশাল একটি ক্ষেপণাস্ত্র পড়লে বিষয়গুলো কেমন ঠেকত।
‘শুধু ভাবুন, এটি লোকালয় এবং জনগণ ও শিশুদের ওপর আঘাত করছে।’
গত শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
জিপির দাবি, ইরানের হামলায় ক্ষতি হয়নি বললেই চলে।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনের গাজায় অসম যুদ্ধে লিপ্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ আলি খামেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে (একসময়ের টুইটার) বুধবার দেয়া পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন সৌদি আরব, ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা।
ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে এক্সে ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে বেশ কয়েকটি পোস্ট দেন খামেনি, যার একটিতে তিনি বলেন, এটা পরিতাপের যে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কিছু দেশের সরকার গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তা করছে। এ ধরনের অংশীদারত্ব সহায়তাকারী দেশগুলোর ধ্বংস ডেকে আনবে।
একটি পোস্টে ইসরায়েলের সঙ্গে অন্তত সাময়িকভাবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানান আয়াতুল্লাহ।
আরেক পোস্টে তিনি বলেন, ‘জায়নবাদী (ইসরায়েল) সরকারের সঙ্গে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সম্পর্ক ছিন্ন করা শুধু আমাদের প্রত্যাশার বিষয় নয়। এটি মুসলিম উম্মাহর প্রত্যাশা।
‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো গণভোট আয়োজন করলে প্রত্যেকে সন্দেহাতীতভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে সরকারগুলোকে ভোট দেবেন।’
আরও পড়ুন:পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেয়া বার্তায় ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর ইসরায়েলি হামলা অবিলম্বে বন্ধের প্রয়োজনীয়তার ওপর সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ আল সৌদ জোর দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সৌদি গেজেট।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদবার্তায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিরাপদ মানবিক ও ত্রাণ করিডর স্থাপন, স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠাসহ ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য সব অধিকার অর্জনে সক্ষমতা তৈরির মাধ্যমে তাদের দুর্ভোগের অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন পবিত্র দুই মসজিদের জিম্মাদার।
মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা। অন্য অনেক ভূখণ্ডের মতো ঈদ এসেছে ফিলিস্তিনের গাজাতেও, তবে ১৮০ দিনের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের হামলায় থাকা অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে আনন্দের উপলক্ষ হয়ে আসেনি বিশেষ দিনটি।
বার্তায় রমজান শেষ করতে পারায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন সৌদি বাদশাহ। একই সঙ্গে সবার রোজা ও ইবাদত কবুলের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন তিনি।
বাদশাহ সালমান তার বার্তায় জাতীয় ঐক্য, পবিত্র দুই মসজিদের জিম্মাদারি এবং হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের স্বাগত জানানোর মতো অনেক নিয়ামত সৌদি আরবকে দেয়ায় আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা। অন্য অনেক ভূখণ্ডের মতো ঈদ এসেছে ফিলিস্তিনের গাজাতেও, তবে ১৮০ দিনের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের হামলায় থাকা অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে আনন্দের উপলক্ষ হয়ে আসেনি বিশেষ দিনটি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজাবাসী নিজেদের মতো করে ঈদুল ফিতরের ঐতিহ্য চর্চার চেষ্টা করলেও যুদ্ধের ছায়া সর্বত্র, যা উদযাপনকে কঠিন করে তুলেছে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের দোকানি আহমেদ ইসমাইল আল জাজিরাকে বলেন, ‘কোনো আনন্দ নেই। পবিত্র উপলক্ষটি উদযাপনের কোনো ক্ষুধাও নেই।
‘এমনকি শিশুরাও খেলনার প্রতি আগ্রহ হারিয়েছে, যেমনটা অতীতে ছিল। আমাদের জীবদ্দশায় সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছি।’
রাফাহর বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা জাবর হাসান বলেন, ‘আমরা সব দিক থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। লোকজন কোনো রকমে বেঁচে আছে।
‘তারা পরিবারের সদস্যদের খাওয়াতে পারছে না বললেই চলে। আমরা ঈদ, উদযাপন কিংবা অন্য কোনো ধরনের আনন্দের কথা চিন্তা করতে পারছি না।’
ইসরায়েলে ঢুকে গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজার শাসক দল হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে উপত্যকায় প্রায় বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সামরিকভাবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্রটি।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রাণ গেছে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির, যাদের বড় অংশ নারী ও শিশু। অন্যদিকে হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলির সংখ্যা এক হাজার ১৩৯।
বিরামহীন হামলার পাশাপাশি গাজায় বড় পরিসরে ত্রাণসামগ্রীও ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল, যা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলসহ অনেক অংশে দুর্ভিক্ষের কাছাকাছি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তবে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ব্যাপক মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ এবং ইসরায়েলি অনেক সেনার প্রাণহানির পরও টেকসই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারেনি হামাস ও ইসরায়েল।
আরও পড়ুন:সিরিয়ার দারা প্রদেশে রোববার সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। বিস্ফোরণে বেশ কিছু শিশু নিহত হওয়ার একদিন পর ঘটনাটি ঘটল।
‘দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ এ কথা জানিয়েছে। খবর বাসসের
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে শুরু হওয়া বিক্ষোভের মূল কেন্দ্র ছিল এ দারা প্রদেশ। সরকার ২০১৮ সালে প্রদেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তখন থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশটিতে অস্থিরতা চলছে।
সূত্র মতে, একটি সশস্ত্র গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী আহমাদ আল লাব্বাদের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ অভিযোগ করেছে, শনিবার সিরিয়ার আল সানামাইন জেলায় লাব্বাদের পুঁতে রাখা বিস্ফোরণে ৮ শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
পূর্বে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করা লাব্বাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে রোববার প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গ্রুপটি সানামাইন শহরে প্রবেশের পর সংঘর্ষ শুরু হয়। হামলাকারীরা লাব্বাদের বাড়িতে হামলা চালায় এবং সেখানে বসবাসরতদের হত্যা করে।
পর্যবেক্ষক সংস্থাটি বলেছে, নিহত ২০ জনের মধ্যে তিনজন লাব্বাদের পরিবারের এবং ১৪ জন তার যোদ্ধা সিরিয়ার সরকারি সংবাদ মাধ্যম তাৎক্ষণিকভাবে এ সংঘর্ষের বিষয়ে কিছু জানায়নি।
দারায় প্রায়ই হামলা, সশস্ত্র সংঘর্ষ এবং হত্যার ঘটনা ঘটছে।
এদিকে সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য