ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পর গত এক মাসে ১০ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ষষ্ঠ মাসে ২২ জুলাই তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক ও বহুল প্রত্যাশিত চুক্তি সইয়ের পর ১ আগস্ট থেকে এই বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য রপ্তানি হয়েছে। তুরস্কের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার এই তথ্য দিয়েছে।
শনিবার ছেড়ে যাওয়া তিনটি শস্যবাহী জাহাজসহ এ পর্যন্ত ১০৩টি জাহাজ ইউক্রেনের বিভিন্ন বন্দর ছেড়েছে।
তুরস্কের সংবাদ মাধ্যম আনাদৌলু এজেন্সি ও কামহুরিয়েতের প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তিনটি দেশের প্রতিনিধিদের নজরদারিতে একটি যৌথ কমিশনের মাধ্যমে এসব জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের নৌযানের ওপর রাশিয়ার দেয়া অবরোধ তুলে নেয়ার পর শুরু হয় রপ্তানির প্রক্রিয়া।
রাশিয়ার হামলা শুরুর পর বন্ধ হয়ে যায় ইউক্রেন থেকে গমসহ খাদ্যপণ্য রপ্তানি। এই দেশ দুটি বিশ্বের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক দেশ। এতে বড় ধরনের খাদ্যসংকটে পড়ে যায় গোটা বিশ্ব।
তবে ২২ জুলাই বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকট সমাধানে প্রতীক্ষিত এক চুক্তিতে পৌঁছায় রাশিয়া ও ইউক্রেন। ওই চুক্তির আওতায় কৃষ্ণসাগরে অবরোধ তুলে নেয় রাশিয়া। এতে ইউক্রেন থেকে জাহাজে করে খাদ্য রপ্তানির পথে সব বাধা ওঠে যায়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির কার্যালয় জানিয়েছে, খাদ্যশস্য নিয়ে ওইসব জাহাজ যেকোনো সময় রওনা হতে পারে।
গত ২২ জুলাই মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শস্যপণ্য রপ্তানি নিয়ে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী সব মিলিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ টন খাদ্যশস্য পাঠানো হবে ইউক্রেন থেকে।
এসব খাদ্যশস্য যাচ্ছে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। জাহাজগুলো নির্ধারিত নিরাপদ চ্যানেল ব্যবহার করছে।
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় সময় শুক্রবার ওডেসার চেরনোমর্স্ক বন্দর পরিদর্শন করেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। খাদ্যশস্য বহনের দায়িত্বে থাকা নাবিকদের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করেন তিনি।
পাঁচ মাস আগে যুদ্ধ শুরুর পরপরই ইউক্রেন উপকূলের কাছে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়া নৌ অবরোধ দিলে মুখ থুবড়ে পড়ে ইউক্রেনের রপ্তানি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন বেশ কয়েকটি জাহাজে খাদ্যশস্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল ইউক্রেনের পক্ষে। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতিতে এসব জাহাজ রওনা হতে না পারলে খাদ্যসংকেটে ভোগা দেশগুলো আরও দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে পারে।
খাদ্যশস্য রপ্তানি নিয়ে দুই দেশের হওয়া চুক্তিটি ১২০ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে। চুক্তির মেয়াদ আরও আলোচনা ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়তে পারে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
যুদ্ধে বহু মানুষ হয়েছে বাস্তুচ্যুত। হতাহতের সংখ্যাও অনেক। এরই মধ্যে কয়েক দফা যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে চুক্তি হলেও কার্যত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি এখনও।
গত ৪ আগস্ট খাদ্যশস্য বোঝাই আরও তিনটি জাহাজ যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ছাড়ে। সেই সঙ্গে শস্যবোঝাই ১৬টি জাহাজ দেশটির ওডেসা বন্দর ছেড়ে যায়। তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার এমনটি জানায়।
প্রথম জাহাজটি ২৬ হাজার টন ভুট্টা নিয়ে ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে ইস্তানবুল হয়ে লেবাননের উদ্দেশে যায়।
সিয়েরালিয়নের পতাকাবাহী রাজনি নামের জাহাজটি বসফরাস প্রণালি পাড়ি দেয়ার সময় বুধবার ইউক্রেন ও রাশিয়ার পরিদর্শকদল এটিকে পর্যবেক্ষণ করে।
জাহাজের যাত্রার পুরো পথটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদল, তুরস্ক ও জাতিসংঘের সদস্যরা নজরদারিতে রাখে।
পর্যবেক্ষকদল জানিয়েছে, এই জাহাজের সফল ও নিরাপদ যাত্রাই বলে দেবে যুদ্ধরত দুই পক্ষ তাদের মধ্যকার চুক্তির বিষয়ে কতটা শ্রদ্ধাশীল।
তুরস্ক জানিয়েছে, এই চুক্তির যথাযথ কার্যকারিতাই পরবর্তীতে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে দুই দেশের প্রতিনিধিদের সহায়তা করবে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে যুদ্ধবিরতির বিষয় জোর প্রচেষ্টা চালান।
আরও পড়ুন:বিভিন্ন রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন অর্থনীতিবিদ।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, এবার অর্থশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ড্যারন আচেমোগলু, সাইমন জনসন ও জেমস রবিনসনকে। তারা প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে গড়ে ওঠে এবং সমৃদ্ধিতে কীভাবে প্রভাব রাখে, তা নিয়ে গবেষণা করেছেন।
সাইটে উল্লেখ করা হয়, নোবেলজয়ী তিনজন উদ্ভাবনী গবেষণা করেছেন, যাতে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলা বিষয় উঠে এসেছে।
তিনজনের গবেষণার বিষয়ে সাইটে আরও বলা হয়, সমৃদ্ধিতে প্রতিষ্ঠানের প্রভাব নিয়ে তাদের অন্তর্দৃষ্টি অনুযায়ী, গণতন্ত্র সহায়ক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধের শঙ্কার মধ্যে ইহুদি রাষ্ট্রটিতে সেনা ও উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা পাঠানো হবে বলে রোববার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ১ অক্টোবর ইরান থেকে ইসরায়েলে ১৮০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর তেল আবিবের পাল্টা হামলার পরিকল্পনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা পাঠানোর এ ঘোষণা দিল।
রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলকে সুরক্ষা দিতে সেনা ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননের পর মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর যুদ্ধ ঠেকাতে ইসরায়েলকে ভেবেচিন্তে পাল্টা হামলা করতে গোপনে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রকাশ্যে দেয়া বক্তব্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিরোধিতা এবং জ্বালানি অবকাঠামোতে আক্রমণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার সেনা ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনকে দেশটির সেনাবাহিনী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যে বৃহত্তর সমন্বয় করেছে, তার অংশ হিসেবে আখ্যা দেন।
তার ভাষ্য, সামরিক এ সহায়তার উদ্দেশ্য ইসরায়েলকে সমর্থনের পাশাপাশি ইরান এবং তেহরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর হামলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের রক্ষা।
আরও পড়ুন:মালয়েশিয়ায় নির্মাণাধীন একটি ভবন ধসে জিদান (২২) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হন দুই পাকিস্তানি নাগরিক।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে দেশটির মেলাকা রাজ্যের বান্দা হিলিরের জালান বুকিত সেনজুয়াংয়ে এ ঘটনা ঘটে।
মেলাকার সহকারী পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যাটিট বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ কমিশনার জানান, ওই দিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকের দুর্ঘটনার সময় ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী তিন শ্রমিক কংক্রিটের বাঁধন খোলার কাজ করছিলেন। হঠাৎ করে ভবনটি ধসে পড়লে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন বাংলাদেশি শ্রমিক জিদান।
নিহত বাংলাদেশির মরদেহ ওই দিন রাত ১০টার দিকে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার করা হয়।
পাকিস্তানি দুই শ্রমিক জুবায়ের আহমেদ (৩২) ও আব্বাস গুলমকে (৪৯) উদ্ধার করা হয়।
বেঁচে যাওয়া দুই পাকিস্তানিকে সফলভাবে সরানো হলেও আঘাতের কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের মেলাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন:শান্তিতে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার পেয়েছে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া জাপানিদের সংগঠন ‘নিহন হিদানকিও’।
পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালিয়ে আসছে সংগঠনটি।
নরওয়ের অসলোতে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে শান্তিতে নোবেলজয়ী হিসেবে নিহন হিদানকিওর নাম ঘোষণা করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসন বলেন, নিহন হিদানকিওর প্রচার ‘পারমাণবিক ট্যাবু’ প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক অবদান রেখেছে।
নিহন হিদানকিও নামের সংগঠনটি হিবাকুশা নামেও পরিচিত। ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলা বিপর্যয়ের প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে নিয়ে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব অর্জনের প্রচেষ্টায় ‘পারমাণবিক অস্ত্র আর কখনও ব্যবহার করা উচিত নয়’ ধরনের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে সংগঠনটি পাচ্ছে ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর অর্থমূল্য প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ ছাড়াও একটি মেডেল, সনদপত্র দেয়া হবে।
গত বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন ইরানে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদী।
চলতি বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ২৮৬ প্রার্থীর নাম নিবন্ধিত হয়েছিল, যার মধ্যে ১৯৭ জন ব্যক্তি ও ৮৯টি সংস্থা।
ডিসেম্বরের ১০ তারিখ আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুদিবসে বিজয়ীদের হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন:সাহিত্যে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার জিতেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান ক্যাং।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বেলা একটা (বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটা) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক হ্যান্স এলেগ্রেন ২০২৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জয়ীর নাম ঘোষণা করেন।
একাডেমির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হানকে পুরস্কার দেয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়, তার ঐকান্তিক কাব্যিক গদ্য ঐতিহাসিক মর্মাঘাত সামনে নিয়ে আসে। এগুলো মানবজীবনের ভঙ্গুরতা উন্মোচন করে।
হান ক্যাং ১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার শহর গোয়াংজুতে জন্মগ্রহণ করেন। ৯ বছর বয়সে তিনি পরিবারের সঙ্গে সিউল চলে আসেন।
সাহিত্যিক বেষ্টিত পরিবেশে জন্ম নেন হান। তার বাবাও নামী ঔপন্যাসিক।
আরও পড়ুন:ভুয়া তথ্য নিয়ে বিরোধের কারণে ব্রাজিলে ইলন মাস্কের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সের (সাবেক টুইটার) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। তবে মোটা অঙ্কের জরিমানা দেয়ার পর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
রায়ে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরায়েস বলেন, ‘অবিলম্বে ব্রাজিলে এক্সের কার্যক্রম পুনরায় শুরুর অনুমতি দিতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এজন্য যোগাযোগ কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টা সময় দেয়া হলো।’
আল জাজিরার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, কয়েক মিলিয়ন ডলার জরিমানা দেয়ার পর আদালত এই রায় দিয়েছে।
তবে জরিমানার পরিমাণ ঠিক কত, তা প্রকাশ করা হয়নি।
এই রায়ের বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং স্বঘোষিত ‘বাক-স্বাধীনতা নিরঙ্কুশবাদী’ ইলন মাস্ক।
এর আগে ব্রাজিলে ভুয়া তথ্য প্রচারে অভিযুক্ত অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করতে এক্সকে নির্দেশ দেয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। তবে বাক-স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার কারণ দেখিয়ে আদালতের রায় মানবেন না বলে জানিয়েছিলেন মাস্ক।
এমনকি আইনি লড়াইয়ের জন্য আদালতের দেয়া সময়সীমাও লঙ্ঘন করে সামাজিক প্ল্যাটফর্মটি। এরপর ব্রাজিলে এক্সের কার্যক্রম ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
আদালত এক্স বন্ধের নির্দেশ দেয়ার পর বিচারপতি দে মোরায়েসকে ‘শয়তান স্বৈরশাসক’ আখ্যা দেন মাস্ক। সে সময় ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকদের প্রতিও সহানুভূতি প্রকাশ করেন তিনি।
২০২২ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে নির্বাচন সম্পর্কে যাচাইবিহীন তথ্য প্রচারের অভিযোগ ওঠে বলসোনারোর বিরুদ্ধে। এরপর ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি বলসোনারোর পরাজয় ঠেকাতে সামরিক অভ্যুত্থানের ডাক দিয়ে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোর ওপর হামলা চালায় তার অনুসারীরা। পার্লামেন্ট, সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে ভাঙচুর করে তারা।
ওই ঘটনায় উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য বলসোনারোকে দায়ী করা হয় এবং ২০৩০ সাল পর্যন্ত তাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় অযোগ্য ঘোষণা করে দে মোরায়েসের আদালত। তার পর থেকে মাস্কের মতো তিনিও বিচারপতি দে মোরায়েসের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত রয়েছেন।
লেবাননের ভূখণ্ডে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা দু’হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে ২৬১ জন নারী ও ১২৭টি শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আল-জাজিরা ও বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৫১। এ নিয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা দু’হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
জানা গেছে, শুক্রবার রাতেও রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আর লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা এলাকাগুলোতে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল।
এদিকে ইসরায়েলি হামলার মুখে লেবাননে ১২ লাখের বেশি মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। অব্যাহত বিমান হামলার মুখে রাজধানী বৈরুতের হাজারও বেসামরিক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়িঘর ছেড়েছেন।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ গত বছর থেকে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালাচ্ছে। গোষ্ঠীটির ওপর পাল্টা আক্রমণ চালাত ইসরায়েলও। তবে সম্প্রতি হিজবুল্লাহর ওপর হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল বাহিনী। গত ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর লেবাননজুড়ে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ ঘটায় ইসরায়েল।
বিবিসি জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ব্যবহৃত কয়েক হাজার পেজারে একযোগে বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ ১২ জন নিহত ও কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়। ওই বিস্ফোরণে নিহত কয়েকজনের জানাজার সময়ও সেখানে কিছু বিস্ফোরণ ঘটে। এ ছাড়া ওয়াকিটকিসহ যোগাযোগের নানা ধরনের তারহীন যন্ত্র বিস্ফোরণে নিহত হয় ২০ জন। আহত হয় ৪৫০ জনের বেশি।
এরপর গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ২৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাদের পিছু হটতে বাধ্য করল হিজবুল্লাহ
লেবাননের সীমান্ত গ্রাম আদাইসেহতে ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ বাহিনী। মধ্যরাতে আদাইসেহ নামের ওই গ্রামে হিজবুল্লাহর প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
লেবাননে প্রবেশ করতে গত তিন-চারদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলের সেনারা। তারা শুক্রবার রাতে আদাইসেহ নামের ওই সীমান্তবর্তী গ্রাম দিয়ে আবারও প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এতে আদাইসেহ গ্রামে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের তীব্র লড়াই হয়। ওই সময় ইসরায়েলি সেনারা পিছু হটে।
আদাইসেহ গ্রামের লড়াই নিয়ে দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিবিসি। তবে এ ব্যাপারে তারা কোনো তথ্য জানাতে রাজি হয়নি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য