ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর সাতটি গ্রামের শত শত বাসিন্দা পিঁপড়ার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তারা বলছেন, পিঁপড়ার দল তাদের গবাদিপশুকে আক্রমণ করছে। তাদের ফসলি জমি, তাদের ঘরবাড়ি কিছুই উপদ্রব থেকে বাদ পড়ছে না।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার অনুসারে, হলুদ পিঁপড়া বা ইয়েলো ক্রেজি অ্যান্ট বিশ্বের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক প্রজাতির মধ্যে অন্যতম। এই প্রজাতির পিঁপড়া কামড় দেয় না। তবে তারা এক ধরনের ফরমিক অ্যাসিড ছোড়ে, যা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এই পিঁপড়ার বৈজ্ঞানিক নাম অ্যানোপ্লোলেপিস গ্র্যাসিলিপস। এদের বাস গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে। তারা অনিয়মিত, সমন্বয়হীনভাবে চলাফেরা করে। তবে চলাফেরার সময় তারা কোনো বাধা পেলে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রজাতির পিঁপড়া দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করতে পারে। তারা দেশীয় বন্য প্রাণীর প্রচুর ক্ষতি করতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার অনেক অংশে এই পিঁপড়ার উপদ্রবের খবর পাওয়া গেছে।
ড. প্রণয় বৈদ্য একজন কীটবিজ্ঞানী। তিনি হলুদ পিঁপড়ার ওপর অনেক গবেষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই প্রজাতির পিঁপড়া সুবিধাবাদী।
কোনো একটা খাবার তারা বেশি পছন্দ করে এমনটি নয়। তারা সবকিছুই খায়। এই হলুদ পিঁপড়ারা অন্য প্রজাতির পিঁপড়া, মৌমাছি কোনো কিছু খেতেই বাদ রাখে না।
তামিলনাড়ুর ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো ডিন্ডিগুল জেলার কারান্থামালাই বনের চারপাশে একটি পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষিকাজ করেন অথবা গবাদিপশুর মালিক।
তামিলনাড়ুর সেলভাম নামের এক কৃষক বলেছেন, হলুদ পিঁপড়ার উপদ্রবে তারা বনের কাছাকাছি কাজ করতে পারছেন না।
৫৫ বছর বয়সী সেলভাম বলেন, ‘বনের কাছাকাছি গেলেই পিঁপড়া আমাদের গা বেয়ে উঠতে শুরু করে। আমরা খাবার তো দূরের কথা, পানি পর্যন্ত সঙ্গে নিয়ে যেতে পারি না। পিঁপড়া পানির পাত্রের মধ্যে গিয়েও বসে থাকে। আমরা জানি না এই উপদ্রব থেকে কীভাবে মুক্তি পাব।’
গ্রামবাসী জানান, তারা কয়েক বছর ধরে আশপাশের জঙ্গলে এই পিঁপড়া দেখছেন। কিন্তু সম্প্রতি গ্রামের মধ্যেও তাদের উপদ্রব বেড়েছে। পিঁপড়ার দল তাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
বনের আশপাশে বসবাসকারী গবাদিপশু পালকরা বলছেন, উপদ্রবের কারণে তারা সেসব স্থান ছেড়েছেন।
নাগাম্মল নামের এক বাসিন্দা ছাগল পোষেণ। তার খামারের ছাগলগুলোকে পিঁপড়ার দল আক্রমণ করেছিল। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়িতে এই পিঁপড়ার দল হানা দিয়েছিল। তাই আমি গ্রামে চলে এসেছি। আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। তাদের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছেই।’
স্থানীয় বন কর্মকর্তা প্রভু বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর এ বিষয়ে কথা বলতে পারব।’
ডা. সিঙ্গামুথু একজন সরকারি পশু চিকিৎসক। তিনি বলেছেন, পিঁপড়াগুলো সাধারণ পিঁপড়ার মতোই দেখতে। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কেন পিঁপড়ার সংখ্যা এত পরিমাণে বাড়ছে। তাদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব সেটিও বুঝতে পারছি না। গ্রামবাসীকে আপাতত বনে গবাদিপশু চড়াতে মানা করা হয়েছে।’
গ্রামবাসীর অভিযোগ, পিঁপড়ার আক্রমণে শুধু গবাদিপশু নয়, ইতোমধ্যে সাপ এবং খরগোশও মারা গেছে।
কীটবিজ্ঞানী ড. প্রণয় বৈদ্য বলেছেন, শত শত পিঁপড়া যে ফরমিক অ্যাসিড ছুড়ে দেয় তা প্রাণীর চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে তারা বিশেষভাবে চোখকে লক্ষ্য করে কি না তা রেকর্ড করা হয়নি। এই অ্যাসিড মানুষের দেহে অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তবে এটি প্রাণঘাতী না-ও হতে পারে।
পোকামাকড়ের এই বিস্তার অঞ্চলটির পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ড. বৈদ্য জানান, এই পিঁপড়াগুলো প্রথম অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস দ্বীপে আক্রমণ করে। তারা প্রথম সেখানকার স্থানীয় পিঁপড়াদের আক্রমণ করে এবং তাদের খাদ্যের উৎস দখল করে নেয়। স্থানীয় পিঁপড়াদের স্থানচ্যুত করে। সেই সঙ্গে দ্বীপের লাখ লাখ লাল কাঁকড়াকে অন্ধ করে মেরে ফেলে।
ড. প্রিয়দর্শন ধর্মরাজন একজন কীটতত্ত্ববিদ। তিনি বলেছেন, এই পিঁপড়ার ফসলের রসচোষক ক্ষুদ্র এক ধরনের পোকা এফিডের সঙ্গে সহজীবী সম্পর্ক রয়েছে। এফিড রস চুষে ফসলের ক্ষতি করে।
ধর্মরাজন বলেছেন, ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পিঁপড়ার আক্রমণ এখন আরও বাড়তে পারে। কারণ যখন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, তখন তাদের হজমক্ষমতা বাড়ে। যার ফলে তারা আরও বেশি খায়। এটি একটি কারণ হতে পারে।
তবে তিনি এও বলেছেন, এটি ধারণামাত্র। এ ব্যাপারে এখনও কোনো তথ্য আমরা পাইনি। আমাদের সংক্রমণের এলাকার আবহাওয়ার ধরন সম্পর্কিত আরও তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং এটি বিশ্লেষণ করতে হবে। তারপরই নিশ্চিত করে বলা যাবে।
ভারতের তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
‘প্রশ্নঘুষ’ কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট তারা শুক্রবার জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, কংগ্রেস এবং বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে স্পিকারের কাছে সময়ের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার সময় দেননি।
বহিষ্কারের ঘোষণা হওয়ার পর পরই সংসদের বাইরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মহুয়া মৈত্র। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার শেষ দেখে তিনি ছাড়বেন। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভেতরে এবং বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত এই সংসদ সদস্য।
লোকসভা থেকে বেরিয়ে মহুয়া বলেন, লোকসভার এথিক্স কমিটিতে ‘এথিক্স’ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তারা সব নিয়ম ভেঙে ফেলেছে। এমন একটা কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হলো, যা লোকসভার সব সদস্যের মধ্যে প্রচলিত একটি অভ্যাস। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনো উপহার নিয়েছি, তার কোনো প্রমাণ নেই।
তিনি আরও বলেন, মোদি সরকার যদি ভেবে থাকে, আমাকে এভাবে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা মুক্তি পাবে, তবে ভুল ভাবছে।
লোকসভা থেকে বহিষ্কারের পর এবার তার কাছেও সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থা পাঠানো হবে, আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মহুয়া। তিনি বলেন, এবার আমার কাছে সিবিআই আসবে। ছয় মাস আমাকে সিবিআই দিয়ে হেনস্থা করা হবে।
শুক্রবার লোকসভায় তৃণমূল, কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলের পক্ষে মহুয়াকে নিজের বক্তব্য জানানো এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই অনুরোধও রাখেননি স্পিকার।
অতীতের দৃষ্টান্ত টেনে তিনি জানান, আগেও এই ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত সদস্য কিছু বলার সুযোগ পাননি। পাশাপাশি বিজেপির যুক্তি ছিল, মহুয়া আগে নিজের কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় তিনি সভাকক্ষ থেকে ওয়াক আউট করে বেরিয়ে যান।
অন্যদিকে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেয়া হয়নি। একজন নারীকে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যেভাবে হেনস্থা করল, তাতে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হলো। দল মহুয়ার পাশে ছিল, আছে। বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি প্রমাণিত।
সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তার অভিযোগ, লোকসভায় প্রশ্ন করার বিনিময়ে মহুয়া শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছে থেকে ঘুষবাবদ নগদ এবং উপহার নিয়েছিলেন।
আগামী বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের আগে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের মার্চ নাগাদ এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেইন ট্রেডের (ডিজিএফটি) বৃহস্পতিবার জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পেঁয়াজ রপ্তানি নীতি ‘অবাধ’ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, নিষেধাজ্ঞা শুক্রবার কার্যকর হলেও তিনটি শর্তে পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে।
এতে বলা হয়, প্রজ্ঞাপন জারির আগে জাহাজে বোঝাইকৃত পেঁয়াজ; পরিবহন মূল্য পরিশোধ, পেঁয়াজ বোঝাইয়ের জন্য জাহাজের ভারতের বন্দরে আগমন ও প্রজ্ঞাপনের আগে জাহাজগুলোর রোটেশন নম্বর বরাদ্দ এবং প্রজ্ঞাপনের আগে পেঁয়াজের চালান কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর ও নিবন্ধিত হলে পণ্যটি রপ্তানি করা যাবে।
ভারতজুড়ে বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজের গড়মূল্য ছিল ৫৭ দশমিক ১১ রুপি। এ দর এক বছর আগের এ সময়ের তুলনায় ৯৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন:ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে ভারতের চেন্নাইসহ তামিলনাড়ুর ৭ জেলা। একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে চেন্নাইয়ের বহু এলাকা। ফলে কার্যত পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সেখানকার লাখ লাখ মানুষ। শহরের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে নৌকার বিকল্প নেই। এমন অবস্থায় চেন্নাইয়ে গিয়ে ফেঁসে গিয়েছেন বলিউড অভিনেতা আমির খান।
একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেন্নাইয়ে গিয়ে জলাবদ্ধতায় আটকে পড়েন আমির। এ ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর নৌকায় করে উদ্ধার করা হয় এ অভিনেতাকে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অভিনেতা বিশাল বিষ্ণু।
নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে বেশকিছু ছবি পোস্ট করেছেন বিশাল। ওই ছবিগুলোতে আমিরকেও দেখা যাচ্ছে। ছবিগুলো দেখা যাচ্ছে, উদ্ধারকারী দল গিয়ে তাদের উদ্ধার করেছেন। সেখানে আর পাঁচজন সাধারণ নাগরিকের মতোই উদ্ধারকারী দলের নৌকায় দেখা যাচ্ছে আমির খানকে, আরও দেখা যাচ্ছে ভারতের ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার জ্বালা গুপ্তাকে।
উদ্ধার হওয়ার পর তামিলনাড়ু সরকার ও উদ্ধারকারী দলকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি অভিনেতা বিশাল বিষ্ণু। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, কারাপাক্কামে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৩টি নৌকা কাজ করছে।
বিশালের এক্স পোস্ট থেকে জানা যায়, তিনি তামিলনাড়ুর কারাপাক্কামের বাসিন্দা। সেখানে বন্যার কারণে, তার বাড়িতে জল ঢুকে যায়। সেখান থেকেই একটু এক্স বার্তায় সাহায্য চেয়েছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, সেখানে বিদ্যুৎ নেই, ওয়াইফাই নেই, ফোন সিগন্যাল নেই, কিছুই নেই। শুধুমাত্র বারান্দার একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে তিনি নেটের কিছু সিগন্যাল পান।
এদিকে আমির খানকে সাধারণ নাগরিকের মতো নৌকায় ভাসতে দেখে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ তামিলনাড়ুর মন্ত্রী ড. টিআরবি রাজা। অভিনেতা বিশাল বিষ্ণুর এক্স পোস্টের উত্তরে তিনি লিখেছেন, ‘আপনার পাশের মানুষটি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। উনি সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষ হয়েও উদ্ধারের জন্য আলাদা করে ব্যবস্থা চাননি। আর পাঁচজনের সঙ্গেই নৌকায় ভেসে এসেছেন।’
বিশাল বিষ্ণুর ওই পোস্টের পরই দ্রুত তার কাছে সাহায্য পৌঁছে যায়। সেখানে তাঁদের উদ্ধার করতে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল।
উল্লেখ্য, আমির খানের মা চেন্নাইয়ে থাকেন। তিনি বহুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ।
আরও পড়ুন:বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ অল্প সময়ের মধ্যে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলের বাপাাটলা অতিক্রম করতে পারে বলে মঙ্গলবার সকালে জানিয়েছে এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, মিগজাউমের প্রভাবে চেন্নাইয়ে ভারি বর্ষণ হয়েছে। বৃষ্টিজনিত কারণে তামিলনাড়ুর রাজধানীতে কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অন্ধ্র প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে এক থেকে দেড় মিটার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে নিচু এলাকাগুলো। রাজ্যের বাপাটলা ও কৃষ্ণ জেলায় ঝড়ের প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মিগজাউম প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এতে বাতাসের একটানা গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
অন্ধ্র প্রদেশ সরকার এরই মধ্যে আটটি জেলায় সতর্কতা জারি করেছে। সেগুলো হলো তিরুপতি, নেল্লোর, প্রকাসম, বাপাটলা, কৃষ্ণ, ওয়েস্ট গোদাভরি, কনাসিমা ও কাকিনাড়া।
এদিকে পুদুচেরির উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেখানে সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ মানুষের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:ভারতের চারটি রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা ও ছত্তিশগড়ে বিধানসভা নির্বাচনে নভেম্বরে ভোট গ্রহণের পর রোববার সকাল থেকে শুরু হয় ভোট গণনার পর্ব।
কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের তিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে বিধানসভা নির্বাচনে তিনটি রাজ্যেই জয় পেতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল, বিজেপি।
এ দিকে তেলেঙ্গানায় হার স্বীকার করে নিয়েছে বিআরএস। ১১৯টি আসনের মধ্যে ৬৫টি আসনে বড় ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছে কংগ্রেস।
চার রাজ্যের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে লড়াই হচ্ছে ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মধ্যে। আর তেলেঙ্গানায় লড়াই কংগ্রেসের সঙ্গে ‘ভারত রাষ্ট্র সমিতি’র (বিআরএস)।
এই চার রাজ্যের পাশাপাশি গত মাসে মিজোরামেও বিধানসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়েছিল। রাজ্যটিতে ভোট গণনার তারিখ এক দিন পিছিয়ে সোমবার করেছে নির্বাচন কমিশন।
পাকিস্তানের চিলাস শহরের কাছে একটি বাসে বন্দুকধারীদের হামলায় আটজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ও আঞ্চলিক কর্মকর্তারা।
আঞ্চলিক সরকারের মুখপাত্র মুহাম্মদ আলী জোহরের বরাত দিয়ে রয়টার্সের রোববারের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় একটি শহরে শনিবার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা বাসে হামলা চালায়।
গিলগিত-বালতিস্তান পুলিশের মুখপাত্র গোলাম আব্বাস ডিপিএ নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে দুজন সেনাসদস্যও রয়েছেন।
আব্বাসের মতে, হামলায় আহতদের মধ্যে কিছু গুলিবিদ্ধও আছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বাসটি কারাকোরাম হাইওয়ে দিয়ে যাতায়াত করছিল, যা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু সড়কগুলোর একটি।
কোনো গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
আরও পড়ুন:ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন ও আহত হয়েছেন নয়জন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মারাউই শহরের মিন্দানাও স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সমাবেশ চলাকালে রোববার এ ঘটনা ঘটে।
আঞ্চলিক পুলিশ ডিরেক্টর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অ্যালান নোবেলেজা জানান এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তিনি এ হামলার জন্য ইসলামিক স্টেটপন্থীদের (আইএস) দায়ী করেছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মারাউই শহরটি ২০১৭ সালে ইসলামিক স্টেটপন্থী দল প্রায় পাঁচ মাস অবরুদ্ধ করে রাখে। এর পর মারাউই শহরকে মুক্ত করে ফিলিপাইন্স সেনাবাহিনী। পাঁচ মাসব্যাপী ওই লড়াইয়ে প্রাণ যায় এক হাজারেরও বেশি মানুষের। বাস্তুহারা হন প্রায় তিন লাখ।
ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনী বলছে, তারা শনিবার মাগুইন্দানাও দেল সুর প্রদেশে একটি সামরিক অভিযান চালিয়ে ইসলামিক স্টেটপন্থী দল দাওলাহ ইসলামিয়া-ফিলিপাইনের সদস্যসহ ১১ জনকে হত্যা করেছে। এর প্রতিশোধ নিতেই ক্যাথলিক সমাবেশে হামলা চালানো হয়েছে বলে তাদের ধারণা।
লানাও দেল সুর প্রদেশের গভর্নর মামিনতাল আদিয়ং জুনিয়র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য