যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়ায় স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে ঘিরে বৃহস্পতিবার এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করে চীন। এর অংশ হিসেবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাশাপাশি বেশ কিছু যুদ্ধবিমান ও রণতরি মোতায়েন করে বৈশ্বিক পরাশক্তিটি।
তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ মনে করে চীন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দ্বীপরাষ্ট্রটিতে পেলোসির সফরকে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মারাত্মক, বেপরোয়া ও দায়িত্বজ্ঞানহীন উসকানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বেইজিং।
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা’ রক্ষায় তাদের দৃঢ়সংকল্প প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে মহড়াটির আয়োজন করা হয়েছে, যেটি শেষ হবে আগামী রোববার।
এমন বাস্তবতায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে এনে সেগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
চীনের সামরিক মহড়া কতটা উদ্বেগজনক
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন (সিসিটিভি) জানিয়েছে, তাইওয়ানের আশপাশে ছয়টি অঞ্চলে ১৮০ কিলোমিটার উপকূলজুড়ে সমুদ্র ও আকাশপথে এ মহড়া হচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছে যুদ্ধ, বোমারু বিমানসহ শতাধিক উড়োজাহাজ ও ১০টি রণতরি।
মহড়ার সমালোচনা করে তাইওয়ান বলেছে, এটি তাদের জলসীমায় অনুপ্রবেশ এবং সমুদ্র ও আকাশপথ অবরোধের শামিল।
মহড়ার প্রথম দিনে তাইওয়ানের জলসীমার আশপাশে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে চীন, যেটি ১৯৯৬ সালের পর প্রথম। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে চীন, যেগুলো দংফেং ব্যালিস্টিক অস্ত্র।
তাইওয়ান সীমান্তবর্তী দেশ জাপান বলেছে, চীনের ছোড়া কমপক্ষে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) পড়েছে। দেশটি চীনের এমন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মহড়াস্থলের আশপাশে থাকা জাহাজ ও উড়োজাহাজগুলোকে বিকল্প পথ বেছে নেয়ার তাগিদ দিয়েছে তাইওয়ানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী তাইপের তাওইউয়ান বিমানবন্দরে বেশ কিছু ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, চীনের মহড়ার কারণে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে তাইওয়ানগামী কোরিয়ান এয়ার এবং এশিয়ানা এয়ারলাইনসের ফ্লাইট সর্বোচ্চ দুই দিন পর্যন্ত বাতিল রাখা হয়েছে।
চীন কি তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে
চীনের নজিরবিহীন মহড়ায় দেশটি আসলেই তাইওয়ানে হামলা চালাতে চায় কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য নিচ্ছে, যাদের একজন মহড়াকে ‘চীনের পুনঃএকত্রীকরণের’ প্রদর্শনী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
চীনের মূল ভূখণ্ডের সামরিক বিশ্লেষক সং ঝংপিংকে উদ্ধৃত করে সিসিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বর্তমানে যে আভিযানিক পরিকল্পনার মহড়া চলছে, ভবিষ্যৎ কোনো সামরিক সংঘাতের ক্ষেত্রে সেটি সরাসরি সমর অভিযানে রূপ নিতে পারে।’
এ ধরনের বক্তব্যের পরও বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, তাইওয়ানে অন্তত নিকট ভবিষ্যতে কোনো যুদ্ধ চায় না চীন কিংবা তাদের বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান মার্শাল ফান্ডের এশিয়া কর্মসূচির পরিচালক বনি গ্লেজার আল জাজিরাকে বলেন, ‘চীনের চূড়ান্ত সীমাকে চ্যালেঞ্জ করে বাড়তি কোনো ব্যবস্থা না নিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাইছে চীন।
‘তাইওয়ানের ওপর অবরোধ আরোপ করতে তারা (চীন) সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন করছে, তবে (প্রেসিডেন্ট) শি চিনপিং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। তিনি তাইওয়ানে হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা নেননি।’
সামরিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামরিক বাহিনী থাকা চীন গায়ের জোরে তাইওয়ান দখল করতে চাইলেও উল্লেখযোগ্য ঝুঁকিতে পড়বে। সে ক্ষেত্রে চীনকে লক্ষাধিক সেনা নিয়ে তাইওয়ান প্রণালি পাড়ি দিতে হবে। সে পথে বিমান ও নৌবাহিনীর গোলায় পড়তে হবে চীনাদের।
পর্যবেক্ষকরা আরও বলছেন, তাইওয়ান প্রণালি অতিক্রম করে দেশটির উপকূলে চীনের সেনারা পৌঁছাতে পারলেও আরেকটি বিপত্তিতে পড়তে হবে তাদের। তাইওয়ানের অমসৃণ সমুদ্রতীরজুড়ে খুব কম সৈকতই আছে যেখানে চীনারা তাদের সশস্ত্র সেনা, ট্যাংক কিংবা কামানের মতো অস্ত্র খালাস করতে পারে।
তাইওয়ানে যেকোনো ধরনের হামলা চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর সংঘাতে রূপ নেয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও ১৯৭৯ সালের তাইওয়ান রিলেশনস অ্যাক্ট অনুযায়ী, আত্মরক্ষার্থে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সাহায্যে বাধ্য আমেরিকা। চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তাইওয়ানে চীনের যেকোনো আক্রমণকে সামরিকভাবে প্রতিহত করা হবে।
ভবিষ্যৎ কোনো হামলার ক্ষেত্রে তাইওয়ানকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেয়ার বিষয়টি বাইডেন শুধু মূল্যবোধতাড়িত হয়েই বলেননি। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দ্বীপরাষ্ট্রটি কৌশলগত দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
‘এটা এ কারণে যে, পিপলস লিবারেশন আর্মির (চীনের সামরিক বাহিনী) আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার জন্য বিবেচিত প্রথম কয়েকটি দ্বীপের একটি এটি (তাইওয়ান)’, বলেন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক জুন তেউফেল দ্রেয়ার।
তিনি আরও বলেন, তাইওয়ানের দখল নেয়ার মানে হলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বন্দর কাওহসিউংয়ে প্রবেশাধিকার পাওয়া। এ বন্দর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড গুয়ামে যাওয়া যাবে।
পেলোসির সফর নিয়ে চীনের সমস্যা কী
চীন কখনও তাইওয়ান শাসন করেনি, তবে দেশটি ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের ভূখণ্ডটিকে নিজেদের অংশ মনে করে।
ওয়াশিংটন ও তাইপের মধ্যে যেকোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের খোলাখুলি বিরোধিতা করে আসছে চীন সরকার। বৈশ্বিক পরাশক্তিটি পেলোসির সফরকে উসকানি ও তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে দেখেছে।
পেলোসি এমন এক সময়ে তাইওয়ান সফর করেছেন, যার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর ২০তম সম্মেলনে বসবেন চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। ওই সম্মেলনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আলাপকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনংপি ‘তাইওয়ান নিয়ে আগুনের খেলা’ না খেলতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে দেন।
শি আরও বলেন, তাইওয়ানের স্বাধীনতা এবং স্বশাসিত দ্বীপটিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের ঘোর বিরোধী তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও পেলোসির এ সফরে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের ক্ষতিগ্রস্ত সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। এটি একই সঙ্গে তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।
প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য