চীনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ান সফর করছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। চীন আগেই বলেছিল, এমন পরিস্থিতিতে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে বেইজিং।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে, পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের বিভিন্ন স্থানে লক্ষ্যযুক্ত সামরিক অভিযান পরিচালনা করবে বেইজিং।
আলাদাভাবে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড বলেছে যে মঙ্গলবার রাত থেকেই তাইওয়ানের কাছে যৌথ সামরিক অভিযান ও মহড়া পরিচালনা করবে তারা।
ইস্টার্ন কমান্ড জানিয়েছে, এই সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হবে পুরো তাইওয়ানকে ঘিরে। দ্বীপটির উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বে সমুদ্রে বিমান ও যুদ্ধজাহাজ মহড়ায় অংশ নেবে। এসব মহড়ায় দূরপাল্লার লাইভ ফায়ারিং ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাও থাকবে। ৪ থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত এই মহড়া চলবে।
তবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষিত সামরিক অভিযানে লক্ষ্যবস্তু কী হবে এবং ইস্টার্ন কমান্ডের মহড়া থেকে এটি আলাদা হবে কি না, তার বিশদ বিবরণ দেয়নি বেইজিং।
এদিকে বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যানসহ চারটি যুদ্ধজাহাজ পূর্ব তাইওয়ানের কাছে মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বহরে আরও রয়েছে মিসাইল ক্রুজার ও ডেস্ট্রয়ার।
ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির দিনে নিজের স্বপ্নের ভারতের কথা এক টুইট বার্তায় জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি এমন এক ভারতের কথা বলেছেন, যেখানে বিভেদকামী শক্তি থাকবে না, বইবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ, যেখানে কোনো মানুষ অভুক্ত থাকবে না।
মমতা টুইটে বলেন, ‘ভারতের জন্য আমার একটা স্বপ্ন আছে। আমি এমন একটি দেশ গঠন করতে চাই, যেখানে কেউ অভুক্ত থাকবে না। যেখানে কোনো নারী নিরাপত্তা হীনতায় ভুগবে না । যেখানে প্রতিটি শিশু শিক্ষার আলো দেখবে। যেখানে সবাইকে সমান চোখে দেখা হবে। যেখানে কোনো বিভেদকামী শক্তি থাকবে না। সম্প্রীতির দিন আসবে।’
মমতা এদিনের টুইটে আরও লিখেছেন, ‘দেশের মহান মানুষের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি, আমি স্বপ্নের ভারতের জন্য প্রতিদিন চেষ্টা করে যাব।’
তবে মুখমন্ত্রীর এই টুইটকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তাই এ ধরনের টুইট করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের নারীদের নিরাপত্তা নেই। পেটের জ্বালায় শ্রমিকরা অন্য রাজ্যে কাজে যাচ্ছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী ভারত গড়ার দিবাস্বপ্ন দেখছেন।’
আরও পড়ুন:পাকিস্তানে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে একটি তেলবাহী ট্যাংকারের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন।
দ্য নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার মুলতান-সুককুর মোটরওয়েতে(এম-ফাইভ) এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বাস কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্লিপার কোচটিতে ২ জন ড্রাইভার ও ২৪ জন যাত্রী ছিল।
মোটরওয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, অতিরিক্ত গতির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দ্রুতগামী একটি স্লিপার বাস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে একটি তেলের ট্যাংকারের সঙ্গে ধাক্কা খায়।
মোটরওয়ে পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংঘর্ষের পরপরই তেল ট্যাংকার ও যাত্রীবাহী বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
দুর্ঘটনার পরপরই দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা।
আগুনে পুড়ে যাওয়া বাস থেকে অন্তত ৯ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাদের নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আগুন এতটাই তীব্র ও ভয়ংকর ছিল যে অনেক দূর থেকেও তা দেখা যাচ্ছিল এবং তা নেভাতে উদ্ধারকারী দলের কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছিল।
দুর্ঘটনার পর কয়েক ঘণ্টা হাইওয়েতে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
আরও পড়ুন:মধ্য সোমালিয়ায় আমেরিকার বিমান হামলায় ১৩ আল-শাবাব জঙ্গি নিহত হয়েছেন।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার সোমালিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভশনে দেশটির কর্মকর্তারাই এমনটা জানিয়েছেন।
সোমালি ন্যাশনাল টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, সোমালি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
সোমালিয়ার সামরিক কর্মকর্তাদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমোদন নেই, তাই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সেনা কর্মকর্তা আনাদোলুকে জানিয়েছেন, আমেরিকা বিমান হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানা ধ্বংস করেছে।
যদিও আমেরিকার সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে বিমান হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
এর আগে আমেরিকার সশস্ত্র বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছিল, ৯ আগস্ট সোমালিয়ার প্রদেশ হিরানের রাজধানী বেলেডওয়েনের লাচজে সোমালি ন্যাশনাল আর্মির ওপর যারা আক্রমণ করেছিল, সেই আল শাবাব গোষ্ঠীর ওপর তিনটি বিমান হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলাগুলোতে আল-শাবাবের ৯ সদস্য নিহত হন।
আরও পড়ুন:টহল দেয়ার সময় তুষারধসে নিখোঁজ হওয়ার ৩৮ বছর পর সিয়াচনের একটি পুরোনো বাঙ্কারে এক ভারতীয় সেনা জওয়ানের দেহ পাওয়া গেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রানিক্ষেতের সৈনিক গ্রুপ সেন্টার মরদেহটি শনাক্ত করেছে।
মরদেহটি নাইন্টিন কুমায়ন রেজিমেন্টের সেনা চন্দ্রশেখর হারবোলার।
হারবোলা ছিলেন ২০ সদস্যের সৈনিকের দলের একজন সদস্য, যাদেরকে ১৯৮৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ‘অপারেশন মেঘদূত’ এ বিশ্বের সর্বোচ্চ শিখরে পাঠানো হয়েছিল।
সে সময় টহল দেয়ার সময় তুষার ঝড়ের কবলে পড়ে ২০ জন সেনাই মারা যান। সে সময় ১৫ জন সেনার মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বাকি পাঁচজনের দেহ আর পাওয়া যায়নি। তাদের মধ্যেই একজন হারবোলা।
মরদেহ পাওয়ার পর এবার পরিপূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তার শেষকৃত্য করা হবে।
হরবোলার স্ত্রী শান্তি দেবী বলেছেন, পরিবারের থেকেও দেশকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন তার স্বামী। এতে তিনি গর্বিত।
তিনি জানিয়েছেন, যখন তার স্বামী নিখোঁজ হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৮ বছর। তার বড় মেয়ের বয়স ছিল ৪ বছর এবং ছোট মেয়ের বয়স দেড় বছর।
১৯৮৪ সালে সবশেষ হারবোলা বাড়ি ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ঘর ছেড়েছিলেন, এমনটাই জানান তার সহধর্মিনী।
১৯৭৫ সালে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
হরবোলার পাশাপাশি অন্য আরেকজন সেনার মৃতদেহ পাওয়া গেলেও তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ হলে ৫০০ কোটির ওপর মানুষ মারা যাবে শুধু খাদ্যাভাবে।
নেচারে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এমনটাই বলা হয়েছে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, দুই দেশের পারমাণবিক যুদ্ধের পর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ছাইয়ে ঢেকে যাবে। ফলে সূর্যালোক পৃথিবীতে আসতে পারবে না। বিপর্যয় ও খাদ্যাভাব নেমে আসবে পৃথিবীতে।
আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করবে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের রুডগার্স ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, সত্যিকার বিপর্যয় হবে সংঘাতের পরের বছরগুলোতে। তখন বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে এবং খাদ্যশস্যের ওপর নিউক্লিয়ার উইন্টারের প্রভাব পড়বে।
এই নিউক্লিয়ার উইন্টার তখনই আসবে যখন পারমাণবিক সংঘাতের ফলে সৃষ্ট ছাই বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে এবং পরের ১-২ বছর সূর্যালোক প্রবেশে বাধা দেবে। ফলে মানুষের যেই প্রধান খাদ্য উপাদানগুলো রয়েছে তার মধ্যে চাল, গম, ভুট্টা, সয়াবিন ছাড়াও মাছ উৎপাদন ব্যাহত হবে। বিশ্বব্যাপী দেখা দেবে খাদ্যসংকট।
তবে নিউক্লিয়ার উইন্টার পুরো পৃথিবীতেই একসঙ্গে হবে না। এটি নির্ভর করবে বায়ুর গতির ওপর।
গবেষকরা এ ক্ষেত্রে জলবায়ুর মডেল ব্যবহার করে দেখেছেন, আকাশে ধোঁয়া ও ছাইয়ের মেঘের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে খাদ্য সরবরাহ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।
এ খাদ্যসংকট এতই ভয়াবহ হবে যে এর ফলে ৫০০ কোটির বেশি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে।
রাশিয়া ও আমেরিকা দুই দেশই বিশ্বের প্রধান খাদ্য রপ্তানিকারক দেশ। তো এই দুই দেশেই পারমাণবিক যুদ্ধ লাগলে খাদ্য আমদানিনির্ভর দেশগুলোর ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়বে। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে এর কিছুটা আঁচ পাওয়া গেছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও গবেষণাপত্রের সহলেখক অ্যালান রোবক বলছেন, ‘তথ্যগুলো আমাদের একটি জিনিসই বলে, আমাদের অবশ্যই একটি পারমাণবিক যুদ্ধকে ঘটতে বাধা দিতে হবে।’
আরও পড়ুন:দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে এবং অর্থনীতির চাকা আরও শক্তিশালি করতে ২০১২ সালে আইন করে শিল্পায়নের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) মডেল গ্রহণ করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু শিল্পের ঘাটতি পূরণের এই চেষ্টাও এখন ব্যর্থ হওয়ার পথে।
ইউরোপ ভিত্তিক থিংক ট্যাংক জিওপলিটিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদেশিক বাণিজ্যেও দেশটির অবস্থান খুব একটা ভালো নয়। কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) থাকলেও তা দেশটির অর্থনীতিতে খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না।
রিজার্ভ সংকটে ভুগতে থাকা পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে এসইজেডগুলো চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করছেন দেশটির অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। রিজার্ভ তৈরির জন্য রপ্তানির পরিবর্তে এখন বৈদেশিক সাহায্যের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে দেশটিকে।
আবার স্থানীয়রা মনে করছেন, অসামঞ্জস্যপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্য নীতির পাশাপাশি পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ নিশ্চিত করতে না পারা সহ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং দুর্নীতির কারণে এসইজেডগুলোর অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে পাকিস্তান।
অর্থনীতির এই টালমাটাল নিম্নগতি পাকিস্তানকে বর্তমানে এক কঠিন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি, আইন শৃংখলার ক্রম অবনতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান না থাকায় পাকিস্তানের অবস্থা অনেকটা শ্রীলংকার খুব কাছাকাছি। যে কোন মূহুর্তে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে দেশটি। বিশ্ব অর্থনীতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোও এমন ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছে গত কয়েক মাস ধরে।
গত মাসে বিশ্বসেরা অর্থনীতি বিশ্লেষক সংস্থা মুডিস, ফিচ ও এসঅ্যান্ডপি এর রেটিং পাকিস্তানের নাজুক অর্থনীতির সূচককে আরও কয়েক ধাপ নিচে নামিয়ে দিয়েছে।
চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডোর (সিপিইসি) এর আওতাধীন বর্তমানে পাকিস্তানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৯টি এসইজেড রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি পুরনো। এগুলোর বেশিরভাগই রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্যই মূলত এসইজেডগুলো স্থাপন করা হয়েছে।
পাকিস্তান তার সমস্ত মূলধন এবং প্রযুক্তিগত প্রয়োজনের জন্য প্রতিবেশী চীনের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল। আর এই নির্ভরতা ক্রমন্বয়ে দেশটির ওপর এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ বলয় তৈরি করেছে। এ জন্যই এসইজেডগুলোর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধারেকাছেও যেতে পারেনি গত এক দশক ধরে।
এই কারণটি দেশটির অর্থনীতির চাকাকে শ্লথ করতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করছে জিওপলিটিকা। বিশ্বজুড়ে ভৌগলিক রাজনীতি ও অর্থনীতি পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
জিওপলিটিকার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) এর আওতায় এসইজেড প্রকল্পগুলো নেয়া হয়েছিল। তবে চীনের রক্ষণশীল বিনিয়োগ নীতি এবং বিনিয়োগে বিলম্বিত সিদ্ধান্তের কারণে প্রকল্পগুলো তেমন ফলপ্রসূ হয়নি।
এ ছাড়াও এসইজেড প্রকল্পকে ঘিরে স্থানীয় লোকজনও ক্ষোভ ও রোষে উত্তাল ছিল সবসময়।
২০১৬ সালে পাকিস্তান এসইজেড আইন সংশোধন করে আমদানি করা সমস্ত মূলধনী পণ্যের জন্য ১০ বছরের শুল্ক ও কর অব্যাহতি দেয়ার পথ প্রশস্ত করেও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারেনি।
জিওপলিটিকার বিশ্লেষনে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেইজিং অনেক শর্ত জুড়ে দিয়েছিল। যা ছিল অধিকমাত্রায় শোষণমূলক।
এমনকি শর্তগুলোতে ইসলামাবাদের নিঃশর্ত সমর্থন এবং ২০১৬ সালের সংশোধনীর পরও সিপিইসি-এর অধীনে ৯টি এসইজেড এর মধ্যে মাত্র তিনটিতে কিছু অগ্রগতি দেখা গেছে।
এর মধ্যে রয়েছে পাঞ্জাবের ফয়সলাবাদের আল্লামা ইকবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি, সিন্ধুর ধবেজিতে চায়না স্পেশাল ইকোনমিক জোন এবং বেলুচিস্তানের বোস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন।
অবশিষ্ট প্রকল্পগুলো চীনা আলোচনা, অধ্যয়ন এবং জরিপের মধ্যে আটকে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে।
এ অবস্থায় শিল্প খাতে চীনা বিনিয়োগের বিষয়ে সাধারণ পাকিস্তানিদের মোহভঙ্গ হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান বা অন্যান্য সুবিধার কথা বলা হয়েছিল বাস্তবে এসইজেডগুলোতে তা হয়নি। স্থানীয় কর্মী এবং ব্যবসায়ীরাও চীনা বিনিয়োগ নিয়ে সতর্ক থেকেছে। যে কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চীনা বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের যৌথ উদ্যোগ তেমন একটা গড়ে উঠেনি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- সিপিইসির এর অধীনে সহজ অর্থায়নের প্রস্তাবে অন্ধভাবে চীনা নির্দেশ অনুসরণ করছে পাকিস্তান। এ কারণে পাকিস্তানে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের বেশিরভাগ সুযোগ চীনের দখলে চলে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
আরও পড়ুন:গরু পাচার মামলায় ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (সিবিআই) হেফাজতে থাকা তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট এখন মানসিকভাবে চাঙ্গা। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক জনসভায় তার প্রশংসা করায় কেষ্ট বেজায় খুশি। আইনজীবী মারফত এ কথা জেনে কেষ্ট বলেছেন, ‘জানতাম, দিদি পাশে থাকবেন’
আইনজীবী অনির্বাণ গুহ জানান, দল পাশে আছে কিনা তা জানতে উদগ্রীব ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তার মারফত মমতার বার্তা পেয়ে খুশি হয়ে যান অনুব্রত।
আইনজীবীর কাছে কেষ্ট মণ্ডল বলেছেন, ‘গরু পাচারের এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোন যোগ নেই। আমি নির্দোষ। জানতাম, দিদি বুঝতে পারবেন, পাশে থাকবেন। এটাই কাম্য ছিল।’
রোববার বেহালার একটি সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘অনুব্রতকে গ্রেপ্তার কেন? কী করেছিল? কেষ্টকে জেলে আটকালে কী হবে? এজেন্সির কিছু লোক আছে, ওদের টাকা দিয়ে পোষে। মাঝ রাতে কেন সিবিআই বাড়িতে ঢুকছে?
‘কেষ্টরা ভয় পাবে না। একটা কেষ্ট ধরলে লক্ষ কেষ্ট রাস্তায় তৈরি হবে। গরু পাচার রোখার দায়িত্ব বিএসএফের। তাহলে তো তাদের মন্ত্রী অমিত শাহের জেলে যাওয়া উচিত।’
সোববার অনুব্রতর আইনজীবী তার সঙ্গে দেখা করেন এবং মমতার সমর্থনের কথা জানান।
১১ আগস্ট বীরভূমের নিচু পট্টির বাড়ি থেকে সিবিআই আটক করে অনুব্রত মণ্ডলকে। গরু পাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তুলে ১০ দিনের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ আগস্ট।
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট মণ্ডল এর আগে অসুস্থতার অজুহাত তুলে ১০ বার সিবিআই নোটিশ এড়িয়ে যান। এবার তাকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি শুক্রবার সকালে কলকাতার আলিপুর কমান্ডো হাসপাতালে প্রায় ঘণ্টাখানেক তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। ৪ সদস্যের বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়ে দেয়, কেষ্ট মণ্ডলের বড় কোনো শারীরিক সমস্যা নেই।
বীরভূমের প্রভাবশালী এ নেতাকে গরু পাচার মামলায় সিবিআই কর্মকর্তারা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করলেও স্বীকারোক্তি মেলেনি। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে কেষ্ট জবাব দিচ্ছেন দায় এড়িয়ে।
কলকাতার নিজাম প্যালেসের ১৪ তলায় সিবিআই গেস্ট রুমে রাখা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডল কেষ্টকে। শ্বাসকষ্টের পুরনো সমস্যার কারণে তার শোবার চৌকির পাশে রাখা আছে অক্সিজেন সিলিন্ডার। ১০ দিনের হেফাজতে তাকে ডায়েট চার্ট মেনে খাবার দিতে বলেছে আদালত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য