গত কয়েক দিনে ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। তীব্র হামলায় মরিয়া ইউক্রেনীয় সেনারা শক্ত প্রতিরোধের পাশাপাশি পাল্টা হামলায় জবাব দিচ্ছে।
এ অবস্থায় শুক্রবার মস্কো দাবি করেছে, ইউক্রেনের হামলায় তাদের দখল করা এলাকার একটি কারাগারের ৪০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে সেখানে বন্দি ছিলেন, অর্থাৎ সবাই ইউক্রেনপন্থি।
দোনেৎস্কের ওলেনিভকার জেল ক্যাম্পে রকেট হামলায় আরও ৭৫ জন আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে রাশিয়া। তবে স্বাধীনভাবে এ দাবি যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
মারিউপোলের আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্টে দীর্ঘ অবরোধের পর রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করা অনেক ইউক্রেনীয় সেনাকে এই কাগাগারে রাখা হয়েছিল।
ওলেনিভকা কারাগার। ফাইল ছবি
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী হামলার কথা অস্বীকার করেছে। কারাগারে হামলার জন্য তারা উল্টো রাশিয়াকে দুষেছে। বলছে, অপরাধের প্রমাণ ঢাকতে চাইছে পুতিনের বাহিনী।
ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত করা, দখলদার প্রশাসনের আদেশ এবং ফেডারেশনের সশস্ত্র বাহিনীর অপরাধকে আড়াল করার জন্য এসব করছে রাশিয়ান দখলদাররা।
‘প্রপাগান্ডা রাশিয়ার পুরোনো অস্ত্র। এবারও তারা সে পথে হাঁটছে। তথ্যযুদ্ধ করছে। নিজেদের ঘৃণ্য কাজগুলোর দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চাইছে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভিতে প্রচাতির ফুটেজে দেখা গেছে, একটি ভবনের কিছু অংশ ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে ধোঁয়া উঠছে।
বিবিসি স্বাধীনভাবে ফুটেজটি যাচাই করতে পারেনি। তবে বিশ্লেষণে এটা স্পষ্ট যে হামলায় নিয়মিত আর্টিলারি ব্যবহার হয়নি।
রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী ডোনেটস্ক পিপলস রিপাবলিকের মুখপাত্র ড্যানিল বেজসোনভ বলেন, ‘হামলার লক্ষ্যই ছিল বন্দিশিবির। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।’
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হিমার্স আর্টিলারি দিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে উসকানি দেয়ার অভিযোগ তুলেছে মস্কো।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কোনাশেনকভও বলেন, ‘হামলায় কারাগারের আটজন নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:মিয়ানমার থেকে ঢোকা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কী হবে, তা নিয়ে ভারতের দুই মন্ত্রণালয় থেকে দুই তথ্য এসেছে। এক মন্ত্রণালয় বলছে, ফ্ল্যাটে রাখা হবে তাদের। আরেক মন্ত্রণালয় বলছে, এই রোহিঙ্গাদের নেয়া হবে ‘বন্দিশালায়’।
সরকারের দুই মন্ত্রণালয়ের এমন বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের ভাগ্য নিয়ে সংকটময় অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে বুধবার জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
চেকপোস্টে হামলার অভিযোগ এনে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ওই বছরের ২৫ আগস্ট টেকনাফ এবং উখিয়া সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। একের পর এক রোহিঙ্গা মুসলিম ঢুকতে থাকে বাংলাদেশে।
সে সময় এবং তার আগে-পরে কিছু রোহিঙ্গা গেছে ভারতেও। এই সংখ্যা সব মিলিয়ে ১৭ হাজারের মতো। আর শুধু নয়াদিল্লিতে আছে ১ হাজার ১০০-এর মতো রোহিঙ্গা। এ রোহিঙ্গাদের বসবাসের জায়গা দেয়া নিয়ে ভারত সরকারের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।
রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানিয়ে বুধবার প্রথমে একটি টুইট করেন ভারতের আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি। তিনি লিখেছেন, ভারতে এসে যে শরণার্থীরা আশ্রয় চান, সরকার তাদের স্বাগত জানায়। শরণার্থীদের নিয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দিল্লির বক্করওয়ালা এলাকায় ফ্ল্যাটে স্থানান্তরিত করা হবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের।
মন্ত্রী লেখেন, সেখানে বসবাসের মৌলিক সব সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করবে।
এই টুইটের কিছু সময় পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক টুইট বার্তায় বিষয়টি নিয়ে অন্য তথ্য দেয়া হয়। আবাসন মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যের বিপরীত অবস্থান দেখা যায় এতে।
রোহিঙ্গাদের অবৈধ বিদেশি আখ্যা দিয়ে অমিত শাহের মন্ত্রণালয়ের টুইট বলা হয়, বন্দিশালায় রেখে পরে আইন অনুযায়ী এসব রোহিঙ্গার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টুইটে লেখা হয়েছে, অবৈধ বিদেশি রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। স্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে, নয়াদিল্লির বক্করওয়ালা এলাকায় ফ্ল্য়াট অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের দেয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো নির্দেশ দেয়নি।
পরে আরেক টুইটবার্তায় বলা হয়, দিল্লি সরকার রোহিঙ্গাদের নতুন স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বর্তমান স্থানেই অবৈধ বিদেশি রোহিঙ্গাদের রাখতে বলেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের সংশ্লিষ্ট দেশে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সিভিল আদালত সম্পতি ৩১ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ১৫ লাখ উয়ন জরিমানা করেছে। ঝগড়ার একপর্যায়ে তিনি তার প্রাক্তন বান্ধবীর লুই ভিটন ব্যাগে প্রসাব করেছিলেন বলে এই জরিমানা করা হয়।
অডিটি সেন্ট্রালের প্রতিবেদনে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি (গোপনীয়তার স্বার্থে যার নাম প্রকাশ করা হয়নি) গত বছরের অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়ার গাংনাম-গু শহরে বান্ধবীর বাড়িতে ছিলেন। বান্ধবীর বাড়তি খরচের প্রবণতা নিয়ে হঠাৎ তারা তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তর্কের একপর্যায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি ভিতরের রুমে গিয়ে লুই ভিটন ব্যাগটি নিয়ে আসেন এবং বান্ধবীর সামনেই সেটার মধ্যে প্রস্রাব করে দেন।
ভদ্রমহিলা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেননি। তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।
দক্ষিণ কোরিয়ার অনলাইন পত্রিকা গ্যাগ ডট কে-আইডোলার প্রতিবেদনে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। আদালতকে জানান, তিনি প্রস্রাব করার ভান করেছিলেন শুধু।
আদালত ব্যাগটিকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠালে ব্যাগের মধ্যে প্রস্রাবের নমুনা পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, প্রস্রাবের ডিএনএ অভিযুক্ত ব্যক্তির ডিএনএর সঙ্গেও মিলে যায়। এ পর্যায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ স্বীকার করে নেন।
দামি ব্যাগটি নষ্ট করার কারণে সিউল সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক পার্ক হাই-রিম অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ১৫ লাখ উয়ন বা ১ লাখ ৮ হাজার টাকা জরিমানা করেন। বিচারক বলেন, তাকে কম শাস্তি দেয়া হলো কারণ এটা তার প্রথম অপরাধ।
আরও পড়ুন:ওয়াইওমিং অঙ্গরাজ্যে প্রাথমিক নির্বাচনে হেরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ‘চির শত্রু’ হিসেবে পরিচিত তারই দলের হয়ে কংগ্রেস সদস্য হওয়া লিজ চেনি।
স্থানীয় সময় বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রাজনীতিতে অপেক্ষাকৃত নতুন ও ট্রাম্প সমর্থিত প্রার্থী হ্যারিয়েট হেগম্যানের কাছে পরাজিত হয়েছেন চেনি। নির্বাচনে তার এমন পরাজয়ে রাজনীতি হিসাব-নিকাশ অনেকটাই বদলে গেছে।
তিন মেয়াদে কংগ্রেস সদস্য থাকা চেনি একসময় উঠতি রিপাবলিকান তারকা ছিলেন। সাবেক ভাইসপ্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে তিনি। ট্রাম্পের বিদ্বেষের মুখে পড়া ১০ রিপাবলিকান নেতার শেষজন হলেন এই চেনি।
বিবিসি বলছে, গত বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার পর তাকে অভিশংসিত করার পক্ষে ভোটাভুটি হয়। সে সময় যে ১০ রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ভোট দেন, এদের প্রত্যেককেই প্রতিশোধের লক্ষ্যবস্তু হতে হয়।
এখন পর্যন্ত ওই ১০ জনের চারজন রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন। আর চেনিসহ চারজন হেরেছেন ট্রাম্প সমর্থিত প্রার্থীর কাছেই।
তবে দুজন এখনও অবশ্য টিকে আছেন। প্রাথমিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে আগামী নির্বাচনের টিকিট পেয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক মঙ্গলবার বিষয়টি জানিয়েছেন।
দুজারিক বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির আমন্ত্রণে বৃহস্পতিবার লাভিভে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন (জাতিসংঘের) মহাসচিব।’
গুতেরেসের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পরের দিন শুক্রবার কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর ওডেসায় যাবেন জাতিসংঘের মহাসচিব ও দুই প্রেসিডেন্ট। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় চুক্তি অনুযায়ী ওডেসা দিয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানি শুরু হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়।
এমন বাস্তবতায় জাতিসংঘ ও তুরস্কের সঙ্গে গত ২২ জুলাই আলোচিত চুক্তিতে সই করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। ওই চুক্তি অনুযায়ী ইউক্রেনের বন্দর ছেড়ে যায় শস্যবাহী জাহাজ।
ইউক্রেনে জাতিসংঘ মহাসচিবের কর্মসূচি নিয়ে দুজারিক আরও বলেন, জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে জাপোরিজ্জা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলবেন গুতেরেস। পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধান নিয়েও আলোচনা করবেন তিনি।
সামরিক অভিযান শুরুর পরপরই জাপোরিজ্জা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দখল নেন রুশ সেনারা। পূর্ব ইউক্রেনের এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গোলাবর্ষণের জন্য পরস্পরকে দায়ী করে আসছে ইউক্রেন ও রাশিয়া।
আরও পড়ুন:মঙ্গলবার ইউক্রেনের রুশ অধীকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপে একটি সামরিক ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে ওই এলাকা থেকে ৩ হাজারেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, মেসকোয়ের একটি গোলাবারুদ সংরক্ষণ কেন্দ্রে বড় আকারের এই বিস্ফোরণটি ঘটে।
২০১৪ সালে দখল করা অঞ্চলটিতে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।
প্রাথমিকভাবে এই বিস্ফোরণকে ‘নাশকতা’ হিসেবে অভিহিত করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহেও ক্রিমিয়ার সাকি বিমান ঘাঁটিতে এক হামলায় ৯টি রুশ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে দেয়া হয়।
বিস্ফোরণের ঘটনায় ইউক্রেন দায় স্বীকার না করলেও দেশটির প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক এক টুইটে মন্তব্য করেন, রুশদের দখলে থাকা ক্রিমিয়া হচ্ছে বিস্ফোরণ এবং আক্রমণকারী ও চোরদের জন্য মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন স্থান।
রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিপোতে আগুন লাগার ফলে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিদ্যুৎলাইন, রেললাইন ও কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এতে কেউ গুরুতর আহত হননি।
ইউক্রেনের পোদোলিয়াক দাবি করেছেন, বিস্ফোরণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশন জাপোরিজ্জিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করত।
আরও পড়ুন:ভারতের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘খেলা হবে’ দিবসে রাজ্যজুড়ে রাস্তায় নেমে ইডি সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন তৃণমূল সমর্থকরা।
সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর মুখোশ পরা একজন লোকের কোমরে দড়ি বেঁধে মিছিলে ঘোরানো হয়। গায়ে লেখা আমি চোর। মিছিল থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, শুভেন্দু অধিকারীকে ছাড় দেয়া হচ্ছে কেন?
মঙ্গলবার সকালে তৃণমূলের খেলা হবে দিবসে টুইট করে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘সবাইকে খেলা হবে দিবসের শুভেচ্ছা। গতবার এই দিনটি সাফল্যের সঙ্গে উদযাপিত হয়েছে। এ বছর আরও বেশি যুবক-যুবতী এতে অংশগ্রহণ করুক।’
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের খেলা হবে স্লোগানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। রাজ্যে তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খেলা হবে স্লোগানটিকে চিরস্থায়ী করতে প্রতি বছর ১৬ আগস্ট খেলা হবে দিবস হিসেবে পালন করার কথা ঘোষণা করেন।
স্কুলশিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব ইডির হাতে গ্রেপ্তার হলে দল কারও পাপের দায় নেবে না বলে দলীয় ও প্রশাসনিক সব পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেয়া হয়। বর্তমানে ইডি হেফাজতে রয়েছেন তিনি।
এর মধ্যে আবার গরু পাচার মামলায় বীরভূমের প্রতাপশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যত চাপের মুখে পড়ে যায়। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ধাক্কা খায়।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার বেহালার একটি দলীয় অনুষ্ঠানে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘১৬ আগস্ট থেকে আন্দোলন আবার শুরু হবে । খেলা হবে দিবসে মিটিং মিছিল, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, কাজকর্মও করবেন। রাস্তায় নামতে হবে । রাস্তাই আমাদের রাস্তা দেখাবে। সেই যুদ্ধটা হবে, খেলা দিবস থেকে । খেলা হবে। সকলে খেলা দিবসে অংশগ্রহণ করবেন। একটু খেলাধুলা করবেন । খেলতে খেলতে রাস্তায় মিছিল করুন না, ভালো লাগবে।’
অন্যদিকে জেলায় জেলায় চোর ধরো, জেলে ভরো কর্মসূচিতে পথে নেমেছে সিপিএম, বিজেপি।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ তৃণমূলের দিবসটিকে কটাক্ষ করে মঙ্গলবার বলেন, ‘আমরাও দেখব, কী খেলা হয়। খেলা তো শুরু হয়ে গিয়েছে। দুটো গোল খেয়েছে । তিন নম্বর হলেই চিৎ।’
এ দিন খেলা হবে দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি হয় কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে । অনুষ্ঠানে কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী অচিন্ত্য শিউলি ও ব্রোঞ্জ পদকজয়ী সৌরভ ঘোষালকে বিশেষ সম্মান জানানো হয়।
কয়েকদিন আগে কয়েক হাজার কোটি টাকার সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মূল হোতা সুদীপ্ত সেন সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ তোলেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ব্ল্যাকমেইল করে তার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
আর সুদীপ্ত সেনের এই অভিযোগকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের প্রশ্ন, সুদীপ্ত সেন নিজে যখন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন, তখন তাকে গ্রেপ্তার করা হবে না কেন? বিজেপিতে আছেন বলেই কি সিবিআই গ্রেপ্তারি থেকে ছাড়া পেয়ে চলেছেন শুভেন্দু?
আরও পড়ুন:
ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির দিনে নিজের স্বপ্নের ভারতের কথা এক টুইট বার্তায় জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি এমন এক ভারতের কথা বলেছেন, যেখানে বিভেদকামী শক্তি থাকবে না, বইবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ, যেখানে কোনো মানুষ অভুক্ত থাকবে না।
মমতা টুইটে বলেন, ‘ভারতের জন্য আমার একটা স্বপ্ন আছে। আমি এমন একটি দেশ গঠন করতে চাই, যেখানে কেউ অভুক্ত থাকবে না। যেখানে কোনো নারী নিরাপত্তা হীনতায় ভুগবে না । যেখানে প্রতিটি শিশু শিক্ষার আলো দেখবে। যেখানে সবাইকে সমান চোখে দেখা হবে। যেখানে কোনো বিভেদকামী শক্তি থাকবে না। সম্প্রীতির দিন আসবে।’
মমতা এদিনের টুইটে আরও লিখেছেন, ‘দেশের মহান মানুষের কাছে আমার প্রতিশ্রুতি, আমি স্বপ্নের ভারতের জন্য প্রতিদিন চেষ্টা করে যাব।’
তবে মুখমন্ত্রীর এই টুইটকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তাই এ ধরনের টুইট করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের নারীদের নিরাপত্তা নেই। পেটের জ্বালায় শ্রমিকরা অন্য রাজ্যে কাজে যাচ্ছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী ভারত গড়ার দিবাস্বপ্ন দেখছেন।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য