ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পুরো বিশ্বের মতো জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে বিপাকে পড়েছে অস্ট্রেলিয়াও। এরই মধ্যে পেট্রলের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির ট্রাকচালকদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা গেছে।
অস্ট্রেলিয়ায় ক্রমবর্ধমান জ্বালানির দামের প্রতিবাদে ক্ষিপ্ত ট্রাকচালকরা দেশটির মহাসড়কে নেমে এসেছেন। যেসব রাস্তায় ট্রাকবহর চলাচল করছে সেসব স্থানে সাধারণ গাড়িগুলো ট্রাফিকে পড়ছে এবং তাদের চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। কারণ ট্রাফিকের চাপ থাকার সময়ই ট্রাকবহরগুলো রাস্তায় বের হয়েছিল।
বুধবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে প্রায় ১০০টি ট্রাকের একটি কনভয় ওয়েস্ট গেট ফ্রিওয়ের পথ ধরে বেলা ১১টায় সংসদ ভবনের দিকে রওনা দেয়। যাওয়ার সময় ট্রাকগুলোর গতি ছিল মাত্র ঘণ্টায় ১৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার।
ভিক্টোরিয়ান টিপার্স ইউনাইটেডের কোষাধ্যক্ষ রিকি উলককও একটি ট্রাক চালাচ্ছিলেন। এই ট্রাকবহরের যাত্রার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ট্রাকচালকরা সরকারকে বার্তা দিতে একটি বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছিলেন।
দেশটিতে জ্বালানির দাম ৫০-৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চাপে পড়েছে দেশটির ট্রাকচালকরা। কারণ অনেক ট্রাকচালকের সপ্তাহে ১ হাজার লিটারের মতো জ্বালানি তেল লাগে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি তাদের বিপাকে ফেলছে।
এদিকে শুধু জ্বালানি তেলের সংকটের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ায় মাসখানেক আগে থেকেই প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট শুরু হয়েছে।
দেশটিতে লাখ লাখ নাগরিকের বাসাবাড়িতেই নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে দেশটির কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের জানিয়ে দিয়েছে, নিউসাউথওয়েলস ও তাসমানিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হবে।
প্রাকৃতিক গ্যাসের ঘাটতি দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহেও ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। গত মাসেই সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, ৫টি রাজ্যেই বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎনির্ভর রাজ্য কুইন্সল্যান্ডও ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার স্মরণকালের সবচেয়ে তীব্র বিদ্যুৎসংকট সামাল দিতে দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন ও শক্তিবিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস বাউন জনগণকে সাশ্রয়ী ও সংযমী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:Australian truckers are furious. Over 100 truckers protested about soaring fuel costs, and caused traffic to stop in Melbourne on Wednesday. Take a look:pic.twitter.com/WXrt2ajYOA
— Steve Hanke (@steve_hanke) July 20, 2022
বাসভবনে এফবিআইয়ের অভিযান কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে জবাব দিতে চাইছেন তিনি। তাই তো অভিযানের কয়েক ঘণ্টা মধ্যেই, নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে নির্বাচনি প্রচারের আদলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন এ রিপাবলিকান।
ফক্স নিউজের খবরে বলা হয়, তিন মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ভিডিওটি ফ্লোরিডার পাম বিচের বাড়িতে ফেডারেল এজেন্টদের অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় আপলোড করা হয়। একাধিক সূত্রের বরাতে ফক্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত বাসভবনে যে সামগ্রী নিয়ে এসেছেন, অভিযান সেসবের সঙ্গে সম্পর্কিত।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ চেয়েছিল। অভিযানে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বাসভবন থেকে অন্তত ১৫ বাক্সে গোপনীয় তথ্য-সামগ্রী মিলেছে বলে জানিয়েছে এফবিআই।
ভিডিওর শুরুতে আমেরিকাকে ‘পতনশীল জাতি’ বলে বর্ণনা করেন ট্রাম্প। আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার থেকে শুরু করে আকাশছোঁয়া জ্বালানির দাম, এমন অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি জাতি যারা রাশিয়াকে একটি দেশ (ইউক্রেন) ধ্বংস করার অনুমতি দিয়েছি। তারা সেখানে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
‘আমরা এমন একটি জাতি যারা বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারীদের লেলিয়ে দিয়েছি, যা আগে কখনও হয়নি।’
নিজের আমেরিকান ফার্স্ট নীতি থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরোক্ষ সমালোচনা করেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি জাতি যারা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে নেয়া ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার ব্যবহারে চীনকে অনুমতি দিচ্ছি। এই অর্থ দিয়ে তারা (চীন) সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে।
দুঃখ প্রকাশ করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি জাতি যারা গত দুই বছরে সারা বিশ্বে নিজেদের সম্মান খুইয়েছি। আমেরিকা বিভিন্ন কারণে এখন হাসির পাত্র হয়ে গেছে। তবে পরিশ্রমী দেশপ্রেমিকরা আমেরিকাকে রক্ষা করবে।
‘এমন কোনো পর্বত নেই যেখানে আমরা আরোহণ করতে পারি না। এমন কোনো চূড়া নেই যেখানে আমরা পৌঁছাতে পারি না। এমন কোনো চ্যালেঞ্জ নেই যা আমরা মোকাবিলা করতে পারি না। আমরা মচকাব না, ভাঙবও না।
‘আমরা যে অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি, তাদের পরাজয় নিশ্চিত। কারণ আমেরিকানরা ঈশ্বর কেবল ঈশ্বরের কাছেই নতজানু হয়। আমাদের এই মহানুভবতা আবার শুরু করার সময় এসেছে।’
ভিডিওটি একটি উদ্ধৃতি পড়ার মাধ্যমে শেষ হয়। ট্রাম্প বলেন, ‘সেরাটা এখনও আসতে বাকি।’
আরও পড়ুন:রাশিয়া থেকে ইউরোপে পৌঁছানো তেলের পাইপলাইন বন্ধ করে দিয়েছে ইউক্রেন। মস্কো বলছে, ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় তেল পাইপলাইন অপারেটর ইউক্রট্রান্সনাফতা ড্রুজবা সিস্টেমের দক্ষিণ শাখার মাধ্যমে ইইউতে রাশিয়ান অশোধিত তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা আরআইএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, পাইপলাইন বন্ধ হওয়ায় হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্লোভাকিয়ায় তেল পাঠানো যাচ্ছে না। তবে বেলারুশ হয়ে পোল্যান্ড ও জার্মানির দিকে ট্রানজিট সচল বলে জানায় রাশিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত পাইপলাইন ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি ট্রান্সনেফ্টের।
কোম্পানির প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইগর ডেমিন বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কারণে ট্রানজিটের টাকা দিতে পারছে না রাশিয়া। এই অবস্থায় ইউক্রেনীয় কোম্পানি তেল পরিবহন পরিষেবার পুরো টাকা আগাম চাইছে।
‘ইউক্রেনের ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে ট্রানজিটের জন্য দেয়া টাকা ট্রান্সনেফ্টের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেয়া হয়েছিল। বেসরকারি ব্যাংক গ্যাজপ্রমব্যাংক আমাদের জানিয়েছে, ইইউ প্রবিধান অনুযায়ী টাকা ফেরত পাঠিয়েছে।’
ট্রান্সনেফ্ট জানায়, ইউক্রেনের মাধ্যমে তেল ট্রানজিট পরিষেবাগুলোতে অর্থ প্রদানের বিকল্প খুঁজছে তারা। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি আবেদন পাঠানো হয়েছে গ্যাজপ্রমব্যাংকে।
ড্রুজবা বিশ্বের দীর্ঘতম পাইপলাইন নেটওয়ার্কগুলোর একটি। এটি ইউরোপীয় রাশিয়ার পূর্ব অংশ থেকে চেক প্রজাতন্ত্র, জার্মানি, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড এবং স্লোভাকিয়ার শোধনাগারগুলোতে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার অপরিশোধিত তেল বহন করে।
এদিকে পাইপলাইন বন্ধের খবরে তেলের দামের পতন কমেছে। বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ফিউচার ১.৬ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৯৮ ডলারের কাছাকাছি বাণিজ্য করছে। ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ব্যারেল প্রতি দাম নিচ্ছে ৯২ ডলার।
আরও পড়ুন:শ্রীলঙ্কা বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘পাবলিক ইউটিলিটি কমিশন অব শ্রীলঙ্কা’ (পিইউসিএসএল) বিদ্যুতের দাম ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে।
পিইউসিএসএল চেয়ারম্যান জনকা রথনায়েক বুধবার এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘৯ বছরে সব পণ্য এবং পরিষেবার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমদানি করা তিন ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানির খরচ বেড়েছে আড়াইশ শতাংশের বেশি।
‘আমরা বিদ্যুতের হার স্থিতিশীল রাখতে পেরেছি। ৯ বছরে এক মেট্রিক টন কয়লার দাম ১৪৩ ডলার থেকে বেড়ে ৩২১ ডলার হয়েছে। লঙ্কান মুদ্রায় তা বেড়েছে ৫৫০ শতাংশ। এক লিটার ডিজেলের দাম ১২১ থেকে ৪৩০ রুপি (শ্রীলঙ্কান মুদ্রা) হয়েছে। এই বৃদ্ধির পরিমাণ ২৫৫ শতাংশ। এক লিটার ফার্নেস অয়েলের দাম ২০১৩ সালে ছিল ৯০ রুপি। যা এখন মিলছে ৪১০ রুপিতে।
রথনায়েক বলেন, ‘নতুন শুল্ক সংশোধনের পরও ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যদিও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের দাবি, সামগ্রিক খরচের ওপর মাসিক ফি নেয়া অন্যায্য।
‘তাই পিইউসিএসএল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের মোট খরচ থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ বাদ দিয়ে নেট খরচের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট চার্জ নির্ধারণ করা হবে।
‘এসব বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।’
এর আগে গত ৪ আগস্ট ডিজেল ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারযোগ্য এলপি গ্যাসের দাম কমায় শ্রীলঙ্কা সরকার। তার এক সপ্তাহের মাথায়ই বিদ্যুতের দাম ৭৫ শতাংশ বাড়াল রনিল বিক্রমাসিংহ নেতৃত্বাধীন সরকার।
আরও পড়ুন:পশ্চিম তীরের নাবলুসে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের সময় সিনিয়র এক কমান্ডারসহ তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে খবর ছিল শহরের একটি ভবনে অবস্থান করছে আল-আকসা শহীদ ব্রিগেডের কমান্ডার ইব্রাহিম আল-নাবুলসি। তারা সেখানে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। কয়েক ঘণ্টার বন্দুকযুদ্ধে ইব্রাহিমসহ তিনজন নিহত হন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ৩০ বছরের ইব্রাহিম আল-নাবুলসির সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন ইসলাম সাব্বুহ এবং হুসেইন জামাল তাহার নামে দুই সঙ্গী। অভিযানে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন, চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আল জাজিরার জন হলম্যান বলেন, ‘আল-নাবুলসি নিহত হওয়ার আগে ‘আত্মসমর্পণ’ করতে অস্বীকার করেছিলেন।
‘ওনাকে ধরার চেষ্টা এটাই প্রথম না। আগেও বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। সবশেষ জুলাইয়ে একটি অভিযান চালিয়েছিল তেল আবিব। ওই অভিযানে দুজন নিহত হন।’
আল-নাবুলসি ‘নাবলুসের সিংহ’ নামে পরিচিত। অনেক দিন ধরেই তিনি পলাতক ছিলেন। ইসরায়েলের একাধিক হত্যাচেষ্টা থেকেও বেঁচে ফিরেছিলেন। সহকর্মীদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় তার প্রকাশ্য উপস্থিতি ইসরায়েলি বাহিনীর ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিবৃতিতে জানিয়েছে, সন্ত্রাসী ইব্রাহিম আল-নাবুলসিকে নাবলুস শহরে হত্যা করা হয়েছে। সেই বাড়িতে থাকা আরেক সন্ত্রাসীও মারা গেছে।
আল-আকসা শহীদ ব্রিগেড হলো ফাতাহর সশস্ত্র শাখা, যে আন্দোলন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের পশ্চিম তীরে সীমিত স্ব-শাসন রয়েছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে আল-নাবুলসির একটি অডিও ক্লিপ। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে এটি তিনি রেকর্ড করেছিলেন।
এতে আল-নাবুলসিকে বলতে শোনা যায়, ‘মাতৃভূমির যত্ন নিন। আমি এখন ঘেরাও। তবে শহীদ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করব। আমি আমার মাকে ভালোবাসি, অস্ত্র ছেড়ে দিও না।’
ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দলগুলো এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। এ পদক্ষেপকে ‘কাপুরুষ’ বলে অভিহিত করেছে তারা।
ফাতাহ মুখপাত্র মুনথার আল-হায়েক বলেন, ‘আমরা আমাদের শহীদ ইব্রাহিম আল-নাবুলসি, ইসলাম সাব্বুহ এবং হুসেন তাহার জন্য শোক জানাচ্ছি।
‘হত্যার এই কাপুরুষোচিত অপরাধটি ইসরায়েলের দখলদারত্বের অবসান ঘটানোর পাশাপাশি জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে জনগণের দৃঢ় সংকল্পকে বাড়িয়ে তুলবে।’
الشهيد إبراهيم النابلسي (اب فتحي) في لباسه العسكري محمولاً على الاكتاف بعد اخراجه من المنزل الذي كان يتحصن به هو ورفيقه الشهيد اسلام ابو صبح.
— شجاعية (@shejae3a) August 9, 2022
تصوير @HShaqrah pic.twitter.com/AXc7afIhqf
বামপন্থি পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি) গ্রুপ বলছে, নিহতদের প্রতিরোধ ইসরায়েলের ব্যর্থতার প্রকাশ। হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম যোদ্ধাদের ‘মহাকাব্য বীরত্ব’কে স্বাগত জানিয়েছেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পশ্চিম তীরে প্রায় প্রতিদিন অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় শুক্রবার ইসলামিক জিহাদের অবস্থানগুলোতে আর্টিলারি বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, মিশরের মধ্যস্থতায় রোববার যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ফলে তিন দিনের তীব্র লড়াইয়ের অবসান ঘতেছিল। ওই লড়াইয়ে ১৬ শিশুসহ ৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়, আহতের সংখ্যা ৩৬০।
আরও পড়ুন:ভারতের আপত্তির মুখে চীনা জাহাজের নির্ধারিত সফর পিছিয়ে দিতে দেশটিকে অনুরোধ করেছে শ্রীলঙ্কা। গত সপ্তাহেই সামরিক জাহাজটিকে আসার অনুমতি দিয়েছিল কলম্বো। লঙ্কান সরকার বলছে, প্রতিবেশী ভারতের কূটনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে তারা।
ইউয়ান ওয়াং ৫ সামরিক জাহাজটি বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে পৌঁছানোর কথা। অঞ্চলটির ইজারা নিয়ে সেখানে বন্দর নির্মাণ করেছিল চীন। জাহাজটি এখন পূর্ব ভারত মহাসাগরে অবস্থান করছে।
ইউয়ান ওয়াং ৫-কে চীনের সর্বশেষ প্রজন্মের স্পেস-ট্র্যাকিং জাহাজগুলোর একটি হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিদেশি নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। এটি স্যাটেলাইট, রকেট এবং আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
পেন্টাগন বলছে, পিপলস লিবারেশন আর্মির স্ট্র্যাটেজিক সাপোর্ট ফোর্স এসব জাহাজ পরিচালনা করছে।
নয়াদিল্লির আশঙ্কা, তাদের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী চীন, হাম্বানটোটাকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করবে। ১.৫ বিলিয়ন ডলারে নির্মিত বন্দরটি এশিয়া থেকে ইউরোপে প্রধান শিপিং রুটের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১২ জুলাই পাঁচ দিনের জন্য জাহাজটিকে আসার অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। সোমবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, পরিস্থিতি বিবেচনায় হাম্বানটোটা বন্দরে উল্লিখিত জাহাজের পরিদর্শন পিছিয়ে দেয়ার জন্য তারা চীনা দূতাবাসে যোগাযোগ করেছে।
ভারত গত মাসের শেষ দিকে বলেছিল, জাহাজটির পরিকল্পিত সফর পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নয়াদিল্লি তার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ অবশ্যই রক্ষা করবে। শ্রীলঙ্কা সরকারের কাছে মৌখিক প্রতিবাদ জানায় ভারত।
জাহাজ নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ‘তৃতীয় কোনো দেশকে লক্ষ্য করে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। শ্রীলঙ্কাকে চাপে রাখার জন্য কিছু দেশের তথাকথিত ‘নিরাপত্তা উদ্বেগ’ একেবারেই অযৌক্তিক।
‘শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থাকে পুঁজি করে শ্রীলঙ্কার স্বাভাবিক বিনিময় ও সহযোগিতায় হস্তক্ষেপ করা নৈতিকভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালনাকারী মৌলিক নিয়মের পরিপন্থি।’
দুই বছর আগে হিমালয় সীমান্তে সশস্ত্র সংঘর্ষে অন্তত ২০ ভারতীয় এবং চার চীনা সেনা নিহত হওয়ার পর থেকে দেশ দুটির সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছায়। চীন এবং ভারত দুই দেশই শ্রীলঙ্কায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।
ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ভারত চলতি বছর অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি সাহায্য করেছে শ্রীলঙ্কাকে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তা পেতে নিজেদের অবকাঠামো ঋণ পুনর্গঠনে চীনের চুক্তি শ্রীলঙ্কার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জাতিগত তামিল বিদ্রোহীদের সঙ্গে গৃহযুদ্ধের সময় শ্রীলঙ্কাকে সমর্থন করেছিল চীন। ২০০৯ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে শ্রীলঙ্কাকে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে বেইজিং।
আরও পড়ুন:আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাকতিকা প্রদেশে বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) জ্যেষ্ঠ নেতা ওমর খালিদ খোরাসানি।
স্থানীয় সময় রোববার চালানো ওই হামলায় টিটিপির আরও দুই সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনটির মুখপাত্র মোহাম্মদ খোরাসানি।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, হামলায় নিহত টিটিপি নেতার প্রকৃত নাম আবদুল ওয়ালি মোহমান্দ। আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মোহমান্দ অঞ্চল টিটিপির সাবেক প্রধান ছিলেন তিনি।
সোমবার এক বিবৃতিতে টিটিপির নেতারা বলেছেন, পাকতিকা প্রদেশের বার্মাল জেলার কাছে রোববার সন্ধ্যায় ওমরকে বহনকারী গাড়িতে হামলা হয়। এতে দুই সঙ্গীসহ তিনি নিহত হন।
টিটিপি ঘটনাটি তদন্তের জন্য আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারকে তাগিদ দিয়েছে। সংগঠনটির ভাষ্য, ওমরকে হত্যায় জড়িত থাকতে পারে ‘গুপ্তচররা’।
ওমর ছাড়া নিহত অপর দুজন হলেন মুফতি হাসান ও হাফেজ দৌলত খান। ২০১৪ সালে আইএসে যোগ দেয়া কিছু টিটিপি নেতার মধ্যে ওই তিনজনও ছিলেন।
পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা, পশতু সালিশি বৈঠক এবং ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকে টিটিপি প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন নিহত ওমর।
আরও পড়ুন:আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গ্রেপ্তার পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তার ঘনিষ্ঠ মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দিন কাটছে কারাগারে। মাঝেমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া বেশ অলস সময় কাটছে তাদের।
কর্তৃপক্ষ অবশ্য সাবেক মন্ত্রীর ছোটখাটো আবদার মেটাতে কার্পণ্য করছে না। আলুর চপ আর বেগুনি খেতে চেয়েছিলেন তিনি। সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। অন্যদিকে, শুয়ে-বসে দিন পার হচ্ছে অর্পিতার।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, প্রেসিডেন্সি কারাগারে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই এখন যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সোমবার দুপুরে কারা অফিসে এক আইনজীবীর সঙ্গে মিনিট পনেরো কথা বলেন তিনি।
কারাগার সূত্র জানিয়েছে, সকালে চা এবং মাখন টোস্ট খেয়েছেন পার্থ। দুপুরে ভাত-ডাল-তরকারি। বিকেলে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা পার্থের সেল পরিদর্শনে গেলে তিনি তাদের জানান, তেলেভাজা খেতে চান।
আপত্তি ছিল কারাগারের চিকিৎসকদের। কিন্তু সাবেক মন্ত্রী আপত্তি শুনতে নারাজ। তার আগেই তিনি খবর নিয়ে জেনেছিলেন, গরম গরম চপ আর বেগুনি তৈরি হচ্ছে কারা ক্যান্টিনে। শেষে চিকিৎসকরা অনুমতি দেন।
সূত্র বলছে, এদিন ক্যান্টিন থেকে দুটি আলুর চপ, দুটি বেগুনি এবং অল্প মুড়ি দেয়া হয় পার্থকে।
কারা ক্যান্টিন থেকে নিজের টাকায় কোনো খাবার কিনে খেতে পারেন বিচারাধীন বন্দিরা। পার্থের খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্য চিকিৎসকদের নানা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। চিকিৎসকদের বেঁধে দেয়া খাদ্যতালিকা অনুসারেই তাকে খাবার দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তবে কারা চিকিৎসকদের মতে, এক দিন তেলেভাজা খাওয়া যেতে পারে। তাতে তেমন শারীরিক অসুবিধা হওয়ার কোনো কারণ নেই।
সোমবার সকালে চিকিৎসকেরা পার্থকে পরীক্ষা করতে গেলে তিনি জানান, কোমরে ও হাঁটুতে যন্ত্রণা হচ্ছে। তার সেই বক্তব্যের ভিত্তিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরকে চিঠি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক কারা কর্মকর্তা।
এদিকে পার্থের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় সোমবার আলিপুর মহিলা জেলে স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়া করেছেন। তিনি অধিকাংশ সময়ই শুয়ে-বসে কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত একটি মানি লন্ডারিং কেলেঙ্কারি মামলায় তদন্ত চালাচ্ছে দেশটির এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এরই মধ্যে ২৩ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সদ্য সাবেক শিল্পমন্ত্রী পার্থ এবং তার সহযোগী অর্পিতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের আগের দিন অর্পিতার একটি ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটি রুপি এবং পরে আরেকটি ফ্ল্যাট থেকে ২৯ কোটি রুপি ও পাঁচ কেজি স্বর্ণের গহনা জব্দ করে ইডি। অর্পিতার দুই ফ্ল্যাট থেকে সব মিলিয়ে ৫০ কোটি রুপি জব্দ করা হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেয়া হয়। তৃণমূল সভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্থর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেন।
মন্ত্রী পার্থর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা দক্ষিণ কলকাতার নাকতলা উদয়ন সংঘের পূজার মডেল হয়ে পরিচিতি পেয়েছিলেন। নাকতলা পার্থ চ্যাটার্জির পূজা বলে সুপরিচিত। এ ছাড়া সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর আইনি উপদেষ্টা ছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
তার কাছে বিপুল পরিমাণ রুপি কোথা থেকে এলো তদন্তকারীদের সেই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এই মডেল। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কাছে গচ্ছিত টাকার সঙ্গে শিক্ষক দুর্নীতি মামলার কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা খতিয়ে দেখছেন ইডির তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য