ক্ষমতা নেয়ার ১৮ মাসের মাথায় মধ্যপ্রাচ্য সফর করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার এ সফর শুরু হয়েছে গত বুধবার। চার দিনের সফরে তিনি প্রথমে যান ইসরায়েলে। এরপর গেছেন অধিকৃত পশ্চিম তীরে। সৌদি আরবও সফর করেছেন বাইডেন।
শুরু থেকেই তার এই সফর নিয়ে নানা ধরনের কথা শোনা যাচ্ছিল। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে বাইডেন দূরত্ব বজায় রেখে ওইসব দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং হাতও মেলাবেন না।
তবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকের যেসব ছবি সামনে এসেছে তাতে হোয়াইট হাউসের এ বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
জেদ্দায় সৌদি যুবরাজের সঙ্গে হাত মেলানোর সময় বাইডেনকে বেশ উৎফুল্ল দেখা গেছে ছবিতে।
বাইডেনের এ সফর নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে। তার দেশেরই অনেকে বলছেন, প্রেসিডেন্ট তার নীতির সঙ্গে আপস করেছেন।
কয়েক দশক ধরে ওয়াশিংটনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ কৌশলগত অংশীদারদের অন্যতম রিয়াদ। তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে-পরে বাইডেনের অঙ্গীকারের সঙ্গে তার এই সফরের কোনো সামঞ্জস্য নেই বলে মনে করছেন অনেকে।
ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরবের ভূমিকা নিয়ে জো বাইডেন ক্ষুব্ধ ছিলেন। এরপর সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগজির হত্যা নিয়েও তিনি যুবরাজ সালমান এবং সৌদি রাজপরিবারের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।
এর আগে ২০১৮ সালে তুরস্কের আঙ্কারায় ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যার পেছনে সৌদি যুবরাজের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলে যুক্তরাষ্ট্র।
খাশোগজির হত্যার পর নির্বাচনি প্রচারে বাইডেন বলেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি সৌদি শাসকদের ‘একঘরে’ করে ছাড়বেন।
এরপর নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় গিয়েও তিনি সৌদি যুবরাজের সঙ্গে দেখা করতে বা কথা বলতে অস্বীকার করেন। পরে অবশ্য সৌদি বাদশাহ অসুস্থ হলে বাইডেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
ক্ষমতা নেয়ার ১৮ মাসের মাথায় এসে বাইডেন কেন উল্টোপথে হাঁটতে শুরু করেছেন, তা নিয়ে চলছে জোর বিতর্ক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে প্রধান কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
সফরের আগে মত বদলের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন বাইডেন। ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় এক নিবন্ধও লিখেছেন তিনি। তিনি লিখেছেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের পাল্টা ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমাদের শক্ত অবস্থান প্রয়োজন। এ কারণে সেসব দেশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ করতে হবে, যারা আমাদের সাহায্য করতে পারে। সৌদি আরব তেমনই একটি দেশ।’
এরপর শুক্রবার দুই নেতা বৈঠক করেন। তবে বৈঠকে বাইডেন ফের খাশোগজি হত্যার বিষয়টি তোলেন।
এ সময় সৌদি যুবরাজ পাল্টা ইস্যু হিসেবে ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ হত্যার বিষয়টি তুলে আনেন। এ হত্যার তদন্ত না করা এবং ইরাকের আবু গারেব কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার জন্য ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ‘ভণ্ডামি’ করার অভিযোগ আনেন তিনি।
বাইডেন সৌদি আরবে যাওয়ার আগে ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীর সফর করেন।
সফরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাত থামাতে দ্বিরাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে নিজের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন বাইডেন। ইসরায়েলি নেতাদের একদিকে খুশি করেছেন তিনি, অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের হতাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, শান্তি আলোচনার জন্য ফিলিস্তিন এখনও তৈরি নয়।
সৌদি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলি শিহাবি বলেছেন, ‘বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের উদ্দেশ্যই ছিল সৌদি যুবরাজের সঙ্গে দেখা করা।
‘এটাই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধু তেল নয়, এই সফরের পেছনে অন্য কারণও রয়েছে। বাইডেন দেরিতে হলেও উপলব্ধি করেছেন, সৌদি আরব কেবল আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল নয়, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গেও দেশটির ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এই দেশগুলো অস্ত্র বিক্রি করে এবং ইরানের ওপর এদের প্রভাব রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নেই। মোট কথা আপনি যদি মধ্যপ্রাচ্যে কিছু করতে চান, তবে আপনি সৌদি আরবকে উপেক্ষা করতে পারবেন না।’
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ৪০ বছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটিতে পেট্রল, খাদ্য ও বাসা ভাড়া বেড়েছে। জুনে বেশি বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। এটি বেড়ে ৯ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ১৯৮১ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ।
বাইডেনের কাছে মূল্যস্ফীতি চ্যালেঞ্জিং রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি সামনে নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের সরাসরি প্রভাবিত করছে।
তেল মজুতের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দেশ সৌদি আরব। তেলের দাম সহনীয় থাকবে নাকি রেকর্ড মাত্রায় ছাড়িয়ে যাবে, তা দেশটি অনেকাংশেই নির্ধারণ করতে পারে।
বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সুরাহা করতে না পেরে শনিবার সৌদি আরবেই চলে গেলেন বাইডেন।
তার এই সফরের আরেক কারণ হতে পারে আগামী মাসে পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর (ওপেক) শীর্ষ সম্মেলন। ওপেকের নেতৃত্বে রয়েছে সৌদি আরব। যেকোনো সংকটে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে দেশটির।
এই সম্মেলনে সুখবরের আশায় সৌদি আরব সফর করছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।
প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য