যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাক্ষাৎ চায় পশ্চিম তীরে গুলিতে খুন হওয়া আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর পরিবার।
বাইডেনকে পাঠানো এক চিঠিতে এই সাংবাদিকের ভাতিজি লিনা আবু আকলেহ এ অনুরোধ করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ইসরায়েল সফরের আগে এই চিঠি পাঠানো হয়। তবে সাক্ষাতের পরিবর্তে তারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের কাছ থেকে সে দেশ সফরের জন্য একটি ফোন কল পেয়েছেন।
গত ১১ মে পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর তল্লাশির খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন ৫১ বছর বয়সী শিরিন আকলেহ।
ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট নয়।
লিনা আবু আকলেহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণের জন্য তারা দেশটির প্রশংসা করছেন। তবে শিরিন আবু আকলেহ যেখানে জন্মেছেন সেই জেরুজালেমে বাইডেনের সঙ্গে তাদের পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করাটাও জরুরি।
তিনি বলেন, আবু আকলেহ ফিলিস্তিনে ছিলেন, দিন শেষে খুনও হলেন সেখানেই। এটার অর্থ অনেক কিছু্। এসব কারণে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আমাদের বসা দরকার।
আবু আকলেহ হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা তথ্যই সামনে এসেছে এখন পর্যন্ত। তবে যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি নিয়ে কাউকেই দোষারোপ করেনি।
জেনিনের এক বাসিন্দা ভিডিও ধারণ করেছেন; যারা সত্যতা যাচাই করেছে আল জাজিরা। এতে দেখা গেছে, এলাকাটি খুবই শান্ত। ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলিদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষের ঘটনাও ছিল না সেখানে।
ভিডিওতে কিছু লোককে কথা বলতে এবং হাসতে দেখা যায়। এ সময় আকলেহ এবং তার সহকর্মীরা প্রেস লেখা জ্যাকেট পরা অবস্থায় ছিলেন। গুলি শুরুর পর লোকজন দিকবিদিক দৌড়াতে শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন সাংবাদিক আকলেহ।
২০০০ সালে ফিলিস্তিনে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরুর সময় থেকে আল জাজিরার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শিরিন আলেহ।
খুন হওয়ার সময় তার মাথায় ছিল হেলমেট, গায়ে ছিল ভেস্ট। গুলি হেলমেট ও ভেস্টের ঠিক মাঝখান দিয়ে শিরিনের ঘাড়ে বিদ্ধ হয়। এ সময় শিরিনের সহকর্মীরা এবং পথচারীরা তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করলে গুলি চলতে থাকে। তাই তারা এগিয়ে আসতে পারেননি। নিথর পড়ে ছিল শিরিনের দেহ।
শুরুতে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিষয়টি প্রমাণে একটি ভিডিও প্রকাশ করে তেল আবিব। যেখানে দেখা যায়, একদল ফিলিস্তিনি গুলি ছুড়তে ছুড়তে একটি সরু গলি পার হচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থা- বিটস্লেম ওই ভিডিও ধারণের স্থানটি খুঁজে পায়। তারা জানায়, ওই ভিডিওটি শিরিন হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে ৩০০ মিটার (৯৮৫ ফুট) দূরের একটি স্থান।
শিরিনের কর্মস্থল আল জাজিরার সানাদ নিউজ ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটও বিষয়টি খতিয়ে দেখে। তারাও দাবি করে, ভিডিওটি ভুয়া।
আরও পড়ুন:বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই জাপানি তরুণদের মদ্যপানে অনীহা দেশটির কর্তৃপক্ষকে চিন্তায় ফেলেছে।
বর্তমান প্রজন্ম তাদের বাবা-মায়ের তুলনায় অনেক কম মদ পান করে। ১৯৯৫ সালে একজন জাপানি যেখানে বছরে গড়ে ১০০ লিটার মদ পান করতেন, ২০২০-এ এসে তা হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৭৫ লিটার।
জাপান টাইমস বলছে, ১৯৮০ সালে মোট সংগৃহীত ট্যাক্সের ৫ শতাংশ ছিল মদশিল্প থেকে, সেখানে ২০২০ সালে মদশিল্প থেকে ট্যাক্স সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র ১.৭ শতাংশ।
ফলে সেকের (রাইস ওয়াইন) মতো মদ থেকে যে পরিমাণ ট্যাক্স সংগ্রহ করত তা অনেক কমে এসেছে।
ট্যাক্স কমে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
এমন পরিস্থিতে মদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া তরুণ প্রজন্মকে মদে আকৃষ্ট করতে ‘সেক ভাইভা’ নামে প্রচারাভিযান শুরু করেছে জাপানের ট্যাক্স বিভাগ।
কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, নতুন এই প্রচারাভিযানে তরুণসমাজ মদের প্রতি আগ্রহী হবে। যদিও মদ্যপানের ক্ষতিকর দিক থাকায় কেউ কেউ এর সমালোচনাও করেছেন।
‘সেক ভাইভা’ প্রচারাভিযানে এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী জাপানিদের মদসংক্রান্ত ব্যাবসায়িক ধারণাগুলো তাদের সমবয়সীদের মধ্যে শেয়ার করতে হবে। তারা গ্রুপ হয়েও কাজটি করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে গ্রুপের সদস্য হতে হবে ৩ জনের বেশি।
পরিকল্পনা অনলাইনেই সাবমিশন করতে হবে এবং প্রতিযোগিতায় যোগদানের জন্য কোনো এন্ট্রি ফি রাখা হয়নি।
প্রতিযোগীদের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের ব্যাবসায়িক পরিকল্পনা পেশ করার সুযোগ পাবেন। নভেম্বরে চূড়ান্ত প্রস্তাব উপস্থাপনের আগে বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে সেরা প্রকল্পগুলো তৈরি করা হবে।
আরও পড়ুন:ল্যানসেটের মেডিক্যাল জার্নালে মানুষ থেকে কুকুরে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা নথিভুক্ত হওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রাণী থেকেও বিচ্ছিন্ন থাকার জন্য একটি সতর্কতা জারি করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মাঙ্কিপক্স সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত বিভাগের প্রধান রোসামাউন্ড লিউইস জানিয়েছেন, মানুষ থেকে প্রাণীতে মাঙ্কিপক্স ছড়ানোর এটিই প্রথম ঘটনা।
ডব্লিউএইচওর জরুরি বিভাগের পরিচালক মাইক রায়ান বলছেন, মানুষ থেকে কুকুরে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনাটি মোটেও অপ্রত্যাশিত নয়।
একই সঙ্গে রায়ান মনে করেন, ঘটনাটি শঙ্কার। ভাইরাস যদি অন্য প্রজাতিতে ছড়িয়ে যায়, তাহলে তা বিবর্তিত হয়ে অন্য প্রজাতিতে রয়ে যেতে পারে।
এটি এমন একটি ঘটনা, যার পুনরাবৃত্তি চাচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
মহামারি বিশেষজ্ঞরা এর আগেই বলেছিলেন, এই ধরনের ঘটনা সম্ভব। অনেক জনস্বাস্থ্য সংস্থা এরই মধ্যে সংক্রমিতদের ‘তাদের পোষা প্রাণী থেকে বিচ্ছিন্ন’ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু ল্যানসেন্টের প্রতিবেদনের আগে এমন ঘটনার নজির দেখা যায়নি।
যদিও ডব্লিউএইচওর বিশ্বব্যাপী সংক্রামক ঝুঁকি প্রস্তুতির পরিচালক সিলভি ব্রায়ান্ড এখনও বিপদের কোনো কারণ দেখছেন না।
তিনি বলেন, এটি প্রথমবার। তার মানে কুকুর সংক্রমিত হতে পারে। এর অর্থ এই নয় যে কুকুরটি রোগ ছড়াতে পারে এবং অন্য কুকুরকে সংক্রমিত করতে পারে বা কুকুরটি সংক্রমিত হলে পরে তা মানুষকেও সংক্রমিত করতে পারে।
ল্যানসেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যারিসের একটি অ্যাপার্টমেন্টে দুজন সমকামী পুরুষ তাদের এক ইতালীয় গ্রেহাউন্ডের সঙ্গে একসঙ্গে থাকতেন। তারা কুকুরের ওপর ক্ষত লক্ষ করার ১২ দিন পরে তাদেরও মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ দেখা দেয়।
জেনেটিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কুকুরকে সংক্রমিত করা স্ট্রেনটি এবং সমকামী দম্পতিকে সংক্রমিত স্ট্রেন একই ছিল।
এরই মধ্যে দেশজুড়ে নতুন রোগী বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে মাঙ্কিপক্সকে গণস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে মাঙ্কিপক্সকে বিশ্বজুড়ে গণস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
সারা বিশ্বে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩৫ হাজারের বেশি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন।
এ পর্যন্ত বিশ্বের ৯২টি দেশ থেকে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মাঙ্কিপক্স একটি জুনোটিক ভাইরাস; যার উপসর্গ গুটি বসন্তের মতো, তবে কম গুরুতর। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগাযোগের মাধ্যমে সংক্রমিত প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে এটির বিস্তার ঘটে।
এ ছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তির ত্বক, ক্ষত বা ড্রপলেটের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি।
মাঙ্কিপক্স অবশ্য নতুন কোনো রোগ নয়, আফ্রিকার দেশগুলোতে এর আগে কয়েকবার এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। ১৯৫০-এর দশকে প্রথম এ রোগ শনাক্ত হয় মধ্য আফ্রিকায়।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ১০ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) তহবিল থেকে এ টাকা দেয়া হয়।
গণভবনে বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ১০ কোটি টাকার চেক তু্লে দেন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।
মাঙ্কি বা বানরের সঙ্গে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার তেমন কোনো সম্পর্ক না থাকলেও কিছু দেশে বানরকেই এ জন্য দায়ী করা হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে আর কোনো উপায় না পেয়ে এবার ভাইরাসটির নাম বদলে দিতে চায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের অবিতর্কিত নাম বাছাইয়ের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। এ নিয়ে ওয়েবসাইটে দেয়া হচ্ছে পরামর্শ।
জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ফাদেলা চাইব- এ কথা জানিয়েছেন বলে মঙ্গলবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ফাদেলা চাইব বলেন, মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের নামকরণ আগেই হয়েছে। এখন অমর্যাদাকর নয় এমন একটি নাম খুঁজছি আমরা।
তিনি বলেন, কোনো জাতিগত গোষ্ঠী, অঞ্চল, দেশ বা প্রাণীর প্রতি যেন কোনো অপরাধ করা না হয়, সে জন্যই ভাইরাসটির নতুন নাম খোঁজা হচ্ছে।
সম্প্রতি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের জন্য বানরকে দায়ী করে এই প্রাণী নিধনের খবর মিলেছে ব্রাজিলসহ অনেক দেশে। এরপরই ভাইরাসের নতুন নামকরণ নিয়ে ভাবতে শুরু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
১৯৫৮ সালে ডেনমার্কে গবেষণার জন্য রাখা বানরের মধ্যে প্রথম শনাক্ত হয় এক ভাইরাস, যার নাম দেয়া হয় মাঙ্কিপক্স।
এত বছর ধরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ততটা গুরুতর না হলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি এই ভাইরাস নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দেয়।
গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে মাঙ্কিপক্সকে বিশ্বজুড়ে গণস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও। সবশেষ করোনাসহ ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সাতবার বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সংস্থাটি।
চিকেন পক্সে আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিব্যথা এবং শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। চিকেন পক্স পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যায়। বর্তমানে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে গুটি বসন্ত ও চিকেন পক্স উভয়েরই মিল রয়েছে।
মাঙ্কিপক্সে প্রাণহানির সংখ্যা খুবই কম। এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটলেও তা সীমিত। কাঠবিড়ালি, গাম্বিয়ান ইঁদুর, ডর্মিসের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বানরসহ কিছু প্রাণীর মধ্যে মাঙ্কিপক্স পাওয়া গেছে।
তবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া কঠিন। এর সংক্রমণ সাধারণত ফ্লুইড ট্রান্সফার, ঘা, দূষিত পোশাক বা দীর্ঘস্থায়ী মুখোমুখি যোগাযোগ কিংবা সহাবস্থানের মাধ্যমে ঘটে, যা শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।
আরও পড়ুন:বিশ্ববাজারে আরও কমেছে জ্বালানি তেলের দাম। সোমবার ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত তেল ৩ ডলার করে কমে ৯০ ডলারের নিচে নেমেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশ চীনে চাহিদা নিয়ে উদ্বেগ এবং ইরানের পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাবের পর দেশটি থেকে তেল রপ্তানি বেড়ে গেছে। এর ফলেই বিশ্ববাজারে তেলের দাম আরেক দফা কমেছে।
সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানায়, ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারে দাম ৩ দশমিক ৪৯ ডলার বা ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৯৪ দশমিক ৬৬ ডলারে নেমেছে, যা গত শুক্রবারের চেয়ে দেড় শতাংশ কম।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটে অপরিশোধিত তেলের দাম ৩ দশমিক ৩২ ডলার বা ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেলে দাম এখন ৮৮ দশমিক ৭৭ ডলার, যা ২ দশমিক ৪ শতাংশ আগের সেশন থেকে কম।
চীন সরকারের এক তথ্য বলছে, গত মাস থেকে দেশটির অর্থনীতি অপ্রত্যাশিতভাবে ধীর হয়ে এসেছে। এতে তেল শোধনাগারগুলোতে উৎপাদন দিনে ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যারেলে নেমে এসেছে, যা ২০২০ সালের মার্চের পর সর্বনিম্ন।
আইএসজি ব্যাংক তাদের পূর্বাভাসে বলছে, ২০২২ সালে চীনের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ হবে, যা আগে ছিল ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। সেই সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
পাশাপাশি করোনাভাইসের কারণে চীনের মূল ভূখণ্ডে কমে গেছে কর্মসংস্থানও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাবে ২০১৫ সালের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। ফলে ইরান থেকে তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে। আর সেটি উঠে গেলে ইরান থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তেল আমদানি করতে পারবে।
এমন অবস্থায় বিশ্ববাজারে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এবং তেলের দাম কমে গেছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরআব্দুল্লাহিয়ান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরমাণু চুক্তি বিষয়ে নেয়া পদক্ষেপে তারা সোমবারই সাড়া দেবে। তবে পরমাণু চুক্তিটি এখানেই রফাদফা হতে পারে যদি যুক্তরাষ্ট্র তিনটি বিষয়ে ইরানের প্রস্তাব রাখে।
আরও পড়ুন:সার্চ ইঞ্জিন গুগলে কত কি না খুঁজে বেড়ায় মানুষ। গুগলও হতাশ করে না। প্রশ্ন যত উদ্ভটই হোক, গুগলের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে উত্তর দেয়ার। আর এ কাজ করতে গিয়ে বিপত্তিও ঘটে অনেক।
তবে এখন থেকে গুগলকে বাজে প্রশ্ন করে সহজে উত্তর পাওয়া যাবে না। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিষেবা উন্নত করতে ‘বৈশিষ্ট্যযুক্ত স্নিপেট’ যুক্ত হয়েছে এই সার্চ ইঞ্জিনে। ফলে বোকাসোকা প্রশ্নের উত্তর সহজে মিলবে না।
ধরা যাক গুগলকে আপনি প্রশ্ন করলেন, স্নুপি (কার্টুন চরিত্র) কখন আব্রাহাম লিঙ্কনকে হত্যা করেছিল? জবাবে গুগল এতদিন যেভাবেই হোক একটি বর্ণনা হাজির করত যার সঙ্গে বাস্তবের কোনো সংযোগই নেই। এই দোষটা গুগলের নয়, এটি দায় আসলে অর্থহীন প্রশ্নটির।
এবার সেই অর্থহীন প্রশ্নকে শনাক্ত করে নিশ্চুপ থাকবে গুগল।
গুগলের অনুসন্ধানপ্রধান পান্ডু নায়ক বলেন, ‘আমরা আমাদের সিস্টেমগুলোকে এ ধরনের প্রশ্ন শনাক্তের উপযোগী করেছি। তবে এমন কিছু ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে এটি কার্যকর নয়। আমরা ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটিয়েছি।’
২০১৭ সালে ভুয়া খবর প্রচারের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছিল গুগল।
একজন প্রশ্ন করেছিলেন, ওবামা কি অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করছেন? উত্তরে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট কৌতুক করে বলেছিল, ‘ওবামা আসলে ২০১৬ সালে তার মেয়াদ শেষে একটি কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
গুগল এখন থেকে এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেবে অনেক ভেবেচিন্তে। এ ছাড়া ‘অ্যাবাউট দিস রেজাল্ট’ নামে একটি অপশনও চালু হচ্ছে। এটি ক্ষেত্রবিশেষে আজেবাজে প্রশ্নকারীদের সতর্ক করবে।
পান্ডু নায়ক বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে কোনো সহায়ক তথ্য পাওয়া যাবে না। আপনি সব সময় আপনার প্রশ্নের ফলাফল দেখতে পারেন, এমনকি সতর্কতা জারির পরও।’
সুতরাং পরের বার যখন গুগলকে জিজ্ঞাসা করবেন, কীভাবে ইলুমিনাতির সঙ্গে যোগাযোগ করব?
জবাবে ‘ধনী হতে চান? আজই আবেদন করুন এবং ইলুমিনাতিতে যোগ দিন’- এমন উত্তরের চেয়ে আরও ভালো কিছু আপনাকে জানাবে গুগল।
আরও পড়ুন:ইকনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) বাসযোগ্য শহরের বার্ষিক তালিকায় এবারও একেবারে নিচের দিকে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।
ইআইইউ গত বৃহস্পতিবার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেটি অনুযায়ী, ১৭২টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ১৬৬তম। ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ৩৯ দশমিক ২।
ঢাকার নিচে রয়েছে পাপুয়া নিউগিনির পোর্ট মোর্সবি, পাকিস্তানের করাচি, আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স, লিবিয়ার রাজধানী শহর ত্রিপোলি, নাইজেরিয়ার লাগোস এবং সবশেষে সিরিয়ার দামেস্ক, যার স্কোর ৩০ দশমিক ৭।
বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে এবার রয়েছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী শহর ভিয়েনা। ভিয়েনার স্কোর ৯৯ দশমিক ১। ৯৮ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ডেনমার্কের কোপেনহেগেন এবং ৯৬ দশমিক ৩ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ।
কয়েকটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে ‘দ্য গ্লোবাল লিভাবিলিটি ইনডেক্স ২০২২’ প্রকাশ করেছে ইআইইউ। এগুলো হলো স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামো।
সূচকে ১৬৬ নম্বরে থাকা ঢাকার মোট পয়েন্ট ৩৯.১। মানদণ্ডগুলোর মধ্যে স্থিতিশীলতায় ঢাকা পেয়েছে ৫৫ পয়েন্ট। অন্যদিকে স্বাস্থ্যে ২৯.২, সংস্কৃতি ও পরিবেশে ৪০.৫, শিক্ষায় ৪১.৭ ও অবকাঠামোতে ২৬.৮ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী।
২০২১ সালে এ তালিকার ১৪০টি শহরের মধ্যে ১৩৭ নম্বরে ছিল ঢাকা।
এবারের তালিকায় বাসযোগ্য শহরের শীর্ষে থাকা অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার পয়েন্ট ৯৯.১। শহরটি স্থিতিশীলতা ও স্বাস্থ্যসেবায় শতভাগ স্কোর পেয়েছে। সংস্কৃতি ও পরিবেশে ৯৬.৩, শিক্ষা ও অবকাঠামোতেও ১০০ করে পয়েন্ট পেয়েছে।
ইআইইউ বলছে, করোনাভাইরাস মহামারিতে স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা দিতে শহরগুলো কতটা সক্ষম ছিল, সেটি জরিপে এবার অনেক বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
যখন এ বছরের জরিপ কাজ শুরু করে তার মাঝামাঝি সময় ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর ইআইইউ ইউক্রেনের শহর কিয়েভে শেষ পর্যন্ত আর জরিপ পরিচালনা করেনি। তবে রাশিয়ার মস্কো এবং পিটার্সবার্গে জরিপ পরিচালিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার রাশিয়ার শহর মস্কো ১৫ এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ ১৩ ধাপ নিচে নেমে গেছে।
অবশ্য রাশিয়ায় চলমান অস্থিরতার কারণে পশ্চিমাদের দেয়া অর্থনৈতিক অবরোধে সেখানে দেয়া বিভিন্ন ধরনের সেন্সরশিপ সংস্কৃতি ও পরিবেশে প্রভাব ফেলেছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।
গত বছর ১৪০ শহরের ওপর জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও এবার ৩৩টি শহর বেশি নেয়া হয়। অবশ্য জরিপ পরিচালনা করার সময় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে কিয়েভকে পরে বাদ দেয়া হয়েছে তালিকা থেকে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য