শ্রীলঙ্কায় চলছে বিক্ষোভ। দেশটির রাজধানী কলম্বোসহ বেশ কয়েকটি স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কাভিত্তিক পত্রিকা ডেইলি মিররে বলা হয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনী আজ বলছে, বিক্ষোভকারীরা দুই সেনাকে আক্রমণ করে আহত করে এবং তাদের কাছ থেকে গোলবারুদসহ দুটি স্বয়ংক্রিয় টি-৫৬ অ্যাসল্ট রাইফেল কেড়ে নিয়ে গেছে।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার নীলান্ত প্রেমরত্ন জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির পার্লামেন্টের গোলচত্বরে। এসব চুরির অস্ত্র সহিংসতা ছড়াতে ব্যবহার হতে পারে বলে জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার নীলান্ত।
তিনি আরও জানিয়েছেন, গতকাল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সেনাদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৬ জন সেনা আহত হয়েছেন এবং তারা সেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের তাদের নিজের জীবনের বিনিমিয়ে হলেও দেশের জনগণ, জনসাধারণের সম্পদ এবং দেশকে রক্ষা করার জন্য আইন প্রয়োগের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
এদিকে শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া টিয়ার শেলে আহত এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
টিয়ার শেলে আহত ২৬ বছর বয়সী ওই বিক্ষোভকারী শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। তিনি কলম্বোর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭৫ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল সন্ধ্যায় পার্লামেন্ট গোলচত্বরের কাছে পোলডুয়া জংশনে বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর ৩৩ জনকে কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তাও গুরুতর আহত হয়েছেন।
এদিকে ফ্লাওয়ার রোডে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে সংঘর্ষে আহত ৪২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এর আগে বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার পদত্যাগী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে শনিবার কলম্বোয় তার সরকারি বাসভবন থেকে পালান।
আরও পড়ুন:একেই বলে ধৈর্য। নয়তো ২০ রুপির জন্য দীর্ঘ ২২ বছর কেউ মামলা চালিয়ে যায়? তাও আবার সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে! অবশেষে গত সপ্তাহে মামলার রায় আসে তার পক্ষে।
সময়টা ১৯৯৯ সাল। উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা তুঙ্গনাথ চতুর্বেদী রেলযাত্রার জন্য দুটি টিকিট কিনেছিলেন। সেদিন তার কাছ থেকে নির্ধারিত টাকার চেয়ে ২০ রুপি বেশি নেয়া হয়েছিল।
ঘটনাটি ঘটে মথুরা সেনানিবাস রেলওয়ে স্টেশনে। পেশায় আইনজীবী চতুর্বেদী বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি।
ভোক্তা আদালত গত সপ্তাহে চতুর্বেদীর পক্ষে রায় দেয়। রেলওয়েকে বলা হয়, সুদসহ অর্থ ফেরত দিতে বাদীকে।
চতুর্বেদী বলেন, ‘এই মামলায় ১০০টিরও বেশি শুনানিতে অংশ নিয়েছি। মামলা লড়তে যে শক্তি এবং সময় হারিয়েছি, তার মূল্য আপনি দিতে পারবেন না।’
ভারতে ভোক্তা আদালত বিশেষভাবে পরিষেবা সম্পর্কিত অভিযোগগুলোর ফয়সালা করে। তবে এসব আদালত থাকে মামলায় ঠাসা। কখনো কখনো সাধারণ মামলাগুলোর সমাধানে কয়েক বছর লেগে যায়।
ঘটনায় সময় চতুর্বেদীর বয়স ছিল ৪২ বছর। মথুরা থেকে মোরাদাবাদে যাচ্ছিলেন তিনি। একজন টিকিট-বুকিং কেরানি তার কেনা দুটি টিকিটের জন্য অতিরিক্ত চার্জ করেছিলেন।
প্রতিটি টিকিটের দাম ৩৫ রুপি ছিল। চতুর্বেদী দুটি টিকিট নিয়ে কেরানিকে ১০০ রুপির একটি নোট দিয়েছিলেন। ৭০ টাকার পরিবর্তে কেরানি তার কাছ থেকে নিয়েছিলেন ৯০ রুপি। ১০ রুপি তাকে ফেরত দেয়া হয়।
চতুর্বেদী সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তারা বিষয়টিকে পাত্তা দেয়নি। তাই উত্তর-পূর্ব রেলওয়ের (গোরখপুর) বুকিং ক্লার্কের বিরুদ্ধে মথুরার একটি ভোক্তা আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন চতুর্বেদী৷
তিনি জানান, ভারতে বিচারব্যবস্থা যে ধীর গতিতে কাজ করে, তার জন্য এত বছর লেগেছে।
‘রেলওয়ে মামলাটি খারিজ করার চেষ্টা করেছিল। তারা জানিয়েছিল, রেলওয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ একটি রেলওয়ে ট্রাইব্যুনালে সুরাহা করা উচিত, ভোক্তা আদালতে নয়। তবে আমি ২০২১ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখিয়ে প্রমাণ করি বিষয়টির শুনানি ভোক্তা আদালতে হতে পারে।’
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর, বিচারক রেলওয়েকে ১৫ হাজার রুপি জরিমানা করেন। অর্থাৎ আদালত রেলওয়েকে ১৯৯৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১২ শতাংশ হারে সুদে ২০ রুপি ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আর যদি ৩০ দিনের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্থ প্রদান না করা হয়, তবে সুদের হার হবে ১৫ শতাংশ।
চতুর্বেদী বলেন, ‘যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছি তা খুব অল্প। মামলাটি আমাকে যে পরিমাণ মানসিক যন্ত্রণা দিয়েছে তা অপূরণীয়। আমার পরিবার বহুবার মামলা তুলে নিতে চাপ দিয়েছিল।
‘এটা আসলে অর্থের বিষয় নয়। এটা ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই। তাই মামলাটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর যেহেতু আমি নিজে একজন আইনজীবী, তাই নিজেই মামলাটি লড়েছি। বাড়তি অর্থ খরচ হয়নি।
‘কোনো ব্যক্তির সরকারি পদমর্যাদা যাই হোক না কেন, তাকে জনগণের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এটাই নিয়ম। আপনি যদি এমন করেন, তবে দুর্নীতি ঠেকানোর জন্য অনেকটাই সহজ হবে।‘
মামলা অন্যদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে বিশ্বাস তুঙ্গনাথ চতুর্বেদীর। তিনি বলেন, ‘লড়াই কঠিন মনে হলেও, হাল ছেড়ে দেবেন না।’
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে গুলিতে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বান্দিপোর জেলার আজাজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত মোহম্মদ আমরেজ বিহার থেকে ওই এলাকায় এসেছিলেন।
আমরেজকে গুলি করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এরপর হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এর আগে এদিন সকালে রজৌরিতে ভারত ও পাকিস্তানকে বিভক্তকারী সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) কাছে হামলায় নিহত হন তিন সেনা সদস্য।
কাশ্মীর পুলিশের টুইট বার্তায় গুলিতে শ্রমিক নিহতের তথ্য নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নেয়ার পরও তাকে বাঁচানো যায়নি।
গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে জম্মু-কাশ্মীরে দেশটির অন্য রাজ্যের শ্রমিকদের গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটছে। গত সপ্তাহে বিহার থেকে আসা এক শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
এর আগে অক্টোবরে বিহারের বাসিন্দা ফুচকা বিক্রেতা অরবিন্দ কুমার শাহকে শ্রীনগরে এবং উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা কাঠমিস্ত্রি সাগির আহমেদকে পুলওয়ামায় খুন করা হয়েছিল।
এর পর কুলগামের ওয়ানপো এলাকায় বিহারের তিন শ্রমিককে গুলি করা হয়। চলতি বছরের জুনে চাদুরা এলাকায় মগ্রেপোরায় একটি ইটভাটার দুই বিহারি শ্রমিককেও একই কায়দায় খুন করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কাছে নিরাপত্তার দাবিতে বিহার, উত্তর প্রদেশসহ কয়েকটি রাজ্যের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:সাময়িক অবস্থানের জন্য থাইল্যান্ডে পৌঁছেছেন সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মুখে গত মাসে পালিয়ে সিঙ্গাপুরে যাওয়া শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ব্যাংককের ডন মুয়েং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে গোতাবায়াকে বহনকারী বেসরকারি উড়োজাহাজটি।
থাইল্যান্ড সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিমানবন্দরে পৌঁছার পর প্রায় ৪০ মিনিট ভিআইপি সেকশনে অবস্থান করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। পরে একটি কালো প্রাইভেট কারে চড়ে তিনি গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হন।
অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্টের থাইল্যান্ডমুখী হওয়ার খবরটি বুধবারই জানিয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির কর্মকর্তারা।
থাই কর্মকর্তারা বলেছিলেন, গোতাবায়াকে প্রবেশের সুযোগ দেয়ার অনুরোধ করেছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। এর ভিত্তিতে তাকে অস্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেয়া হবে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচা বলেছিলেন, গোতাবায়ার আগমনের বিষয়টি নিয়ে তিনি অবগত। শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয় খুঁজছিলেন বলে মানবিক বিবেচনায় তাকে থাইল্যান্ডে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
গোতাবায়া থাইল্যান্ডে কতদিন থাকবেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি প্রায়ুত চান। তিনি বলেছেন, ব্যাংককে বসে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেবেন না লঙ্কার সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান।
আরও পড়ুন:ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি সেনাক্যাম্পে বন্দুকধারীর হামলায় ৩ সেনা নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারীরা এ সময় সেনাক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। সেনা সদস্যের পাল্টা গুলিতে ২ বন্দুকধারীও নিহত হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মুকেশ সিং বলেন, ‘কয়েকজন সন্ত্রাসী পারগালের আর্মি ক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করলে রক্ষীরা তাদের চ্যালেঞ্জ জানায়। এ সময় গোলাগুলি শুরু হয়।’
ক্যাম্পের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে আরো সেনা পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ বলছে, এই হামলার পেছনে রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তাইয়্যেবা।
২০১৮ সালে জম্মুর সুনজোয়ান ক্যাম্পে হামলার পর এটিই সেনা ক্যাম্পে সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা।
২০১৬ সালে উরি ক্যাম্পে একই ধরনের হামলায় ১৮ সেনা নিহত হন।
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এক টুইট বার্তায় নিহত সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহত সেনাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
আরও পড়ুন:শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে থাইল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টায় আছেন বলে জানিয়েছে থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে তিনি কখন সফর করতে চেয়েছিলেন, তা প্রকাশ করা হয়নি।
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তানি সাংগ্রাট বলেন, ‘গোটাবায়ার একটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট আছে, যা তাকে ৯০ দিনের জন্য যেকোনো দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়। তিনি ব্যাংককে অস্থায়ীভাবে বসবাস করতে চাইছেন।
‘শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যে সাবেক প্রেসিডেন্টের থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। পরে তিনি অন্য দেশে চলে যাবেন।’
সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও অফিসে হামলা চালায়। পরদিন ১৪ জুলাই সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান গোটাবায়া রাজাপাকসে।
সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগ করেন গোটাবায়া। তিনিই শ্রীলঙ্কার প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি মধ্যবর্তী মেয়াদে পদত্যাগ করেছেন।
গোটাবায়া বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর ছেড়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সূত্রের বরাতে রয়টার্স এ খবর ছেপেছে। শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে এ মন্তব্যের জবাব দেয়নি। সিঙ্গাপুরে শ্রীলঙ্কার দূতাবাস থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গোটাবায়ার এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী কলম্বোতে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার তার সিঙ্গাপুর ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এক্সটেনশনের জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। তবে বুধবার সকাল পর্যন্ত তা হয়নি।’
প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবারের সদস্য গোটাবায়া। তিনি শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর পর প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রতিরক্ষা সচিব থাকাকালীন সরকারি বাহিনী ২০০৯ সালে তামিল টাইগার বিদ্রোহীদের পরাজিত করে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। কিছু অধিকার গোষ্ঠী এখন চাইছে, গোটাবায়া যে যুদ্ধাপরাধ করেছেন, তা তদন্ত করা হোক। গোটাবায়া এর আগে কঠোরভাবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোটাবায়া যদি শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসেন, তবে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করা হলে, আইন তাকে নাও বাঁচাতে পারে।
আরও পড়ুন:সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় বিরোধীদের বিরুদ্ধে পাল্টা দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিযোগ তুলেছেন শাসক দল তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীরা।
তৃণমূল বলছে, ‘আমাদের কোন লুকোচাপা নেই। তবু দুর্নীতিগ্রস্ত বলে দাগ লাগানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা।’
বুধবার বিধানসভায় ডাকা তৃণমূলের সংবাদ সম্মেলনে ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক, অরূপ রায়, শিউলি সাহা, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিরোধীদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন।
এ দিন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত দুদিন ধরে রাজ্যে সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের ১৯ নেতা মন্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধি এবং জনস্বার্থ মামলা। আদালতের রায় নিয়ে কিছু বলার নেই। আইন আইনের মতো চলবে।’
এ দিন ব্রাত্য বলেন, 'সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে অধীর রঞ্জন চৌধুরী, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, আবু হেনা, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, নেপাল মাহাতো, ধীরেন বাগদি সহ একাধিক ব্যক্তির। তালিকায় তাদের নামও রয়েছে। সেগুলো নিয়ে কোন চর্চা হচ্ছে না কেন ? একটা ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তৃণমূলই কেবল দুর্নীতিগ্রস্ত।’
অন্যদিকে ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'নির্বাচনী হলফনামায় আয়-ব্যয়ের সমস্ত হিসাব দিয়েছি । আয়কর দপ্তর কোন পদক্ষেপ করেনি। রোজগার করা, সম্পত্তি বাড়ানো কোন অন্যায় নয়। এটা জনস্বার্থ মামলা নয়, রাজনৈতিক স্বার্থে করা মামলা।'
২০১১ সাল থেকে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় দেয়া সম্পত্তির পরিমাণ বহুগুণ বেড়েছে। ২০১৭ সালে এ বিষয়ে বিপ্লব কুমার চৌধুরী ও অনিন্দ্য সুন্দর দাস নামে দুই ব্যক্তি কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন। এই মামলায় ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অরূপ রায়, ব্রাত্য বসু, জাভেদ খান, শিউলি সাহা ও অন্যান্য নেতা মন্ত্রীদের নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন:মহানবী (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে বিজেপি নেতা নূপুর শর্মাকে জুনে বরখাস্ত করে তার দল। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মামলা হয় নূপুরের নামে। নানান সময়ে তাকে ডাকা হয় বিভিন্ন থানায়। আছে প্রাণনাশের হুমকিও। এ অবস্থায় ভীষণ বিপাকে পড়েছেন নূপুর। মুক্তি পেতে তাই তিনি আকুতি জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের কাছে। হতাশ করেননি বিচারক।
নূপুর শর্মার অনুরোধে তার বিরুদ্ধে সব মামলা একত্রিত করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, এতে বিভিন্ন রাজ্যে তাকে আর হাজিরা দিতে হবে না।
বিচারকরা জানান, তারা নূপুরের হত্যার হুমকি বিবেচনা করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের জন্য দিল্লি হাইকোর্টে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এর আগে ১ জুলাই এ ইস্যুতে শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। মহানবীকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার জন্য আদালতের বিচারক সে সময় নূপুরকে এককভাবে দায়ী করেন। এদিন নূপুর তার বিরুদ্ধে মামলাগুলোকে একত্রিত করতে সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, সেগুলো যেন দিল্লিতে স্থানান্তর করা হয়।
১৯ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নয়টি মামলায় গ্রেপ্তার করা যাবে না নূপুরকে। এদিন নূপুর আদালতকে জানিয়েছিলেন, ১ জুলাইয়ের আদেশের পর আজমির দরগাহের এক কর্মচারী তাকে গলা কেটে হত্যার হুমকি দিয়েছেন, শিরোশ্ছেদের হুমকি পেয়েছেন উত্তর প্রদেশের আরেক বাসিন্দার কাছ থেকেও।
নূপুরের বিরুদ্ধে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, কাশ্মীর এবং আসামে মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য