২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুণ হতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়। কার্বন নিঃসরণ কমাতে সরকারের বিশেষ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাড়তি টাকা গুনতে হবে অস্ট্রেলীয় পরিবারগুলোকে। ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামাতে চাইছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। দ্য ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
দ্য ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বলছে, এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া এবং কুইন্সল্যান্ডে ছয়টি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হলে গ্রাহকদের বছরে গড়ে ৩ হাজার ২৪৮ ডলার বিল দিতে হবে।
সাশ্রয়ী মূল্যের বেসলোড পাওয়ারের অভাবে আট বছরের মধ্যে পাইকারি বিদ্যুতের দাম চার গুণ হয়ে যাবে। ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে খুচরা দাম হবে দ্বিগুণ, পাইকারি মূল্য ১০৩ শতাংশ বাড়বে; যা বিদ্যুৎ বিলের এক-তৃতীয়াংশ।
অস্ট্রেলিয়ানরা এখন বিদ্যুতের জন্য বছরে গড়ে ১ হাজার ৬০০ ডলার; প্রতি তিন মাসে ৪০০ ডলার দিচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দাম ১০৩ শতাংশ বাড়লে বছরে তা দাঁড়াবে ৩ হাজার ২৪৮ ডলারে।
পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্টস ইনস্টিটিউট আইপিএ আশঙ্কা করেছিল, ইয়ালোর্ন ডব্লিউ, ইরারিং, বেসওয়াটার, লিডেল, ভ্যালস পয়েন্ট বি এবং কলাইড বি প্ল্যান্টের বিলুপ্তিতে ১১ গিগাওয়াট বা ১১ বিলিয়ন ওয়াট উত্পাদনক্ষমতা হারাবে অস্ট্রেলিয়া।
এই ছয়টি কেন্দ্র ন্যাশনাল এনার্জি মার্কেটের মোট চাহিদার ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এগুলো যথাক্রমে ২০২৮, ২০২৫, ২০৩০, ২০২৩, ২০২৯ এবং ২০২৮ সালে বন্ধ হওয়ার কথা রয়েছে।
এই কেন্দ্রগুলো বন্ধ করার ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতীয় পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৩১০ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হয়েছিল।
আইপিএ প্রতিবেদনের লেখক কেভিন ইউ এবং ড্যানিয়েল ওয়াইল্ড বলছেন, ‘পরবর্তী দশকে নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যের প্রতিস্থাপন বেসলোড পাওয়ার সাপ্লাই সুবিধার অভাবে ভুগবে গ্রাহকরা। তারা বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুণেরও বেশি দেখতে পারে।’
২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৪৩ শতাংশ কমানো হবে বলে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ গত সপ্তাহে জাতিসংঘের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার পূর্বসূরি স্কট মরিসনের লিবারেল পার্টি এই সময়ের মধ্যে ২৬ থেকে ২৮ শতাংশ কমানোর কথা জানিয়েছিল। তবে দুই পক্ষই ২০৫০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা শূন্যে নামাতে বদ্ধপরিকর ছিল।
আইপিএ বলছে, ‘২০৫০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অস্ট্রেলিয়ার জ্বালানি-নির্ভরতায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।’
নতুন নীতিতে পেট্রল গাড়ি পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৈদ্যুতিক গাড়িগুলো গ্রিডের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। গত বছর ইলেকট্রিক গাড়ির বাজার শেয়ার ছিল মাইনাস ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
অস্ট্রেলিয়ায় বৈদ্যুতিক গাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অরিজিন এনার্জি এবং অস্ট্রেলিয়ান রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সি বলছে, পিক সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বাড়তে পারে ইভি রিচার্জিংয়ের ফলে। প্রতিবেদনে তাই ইভি মালিকদের পিক টাইমের বাইরে রিচার্জে উৎসাহিত করতে আর্থিক প্রণোদনার সুপারিশ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে তাসমানিয়া অস্ট্রেলিয়ার প্রথম রাজ্য হয়ে ওঠে, যেটি বিস্তীর্ণ বন থাকার কারণে শূন্য কার্বন নিঃসরণের স্বীকৃতি অর্জন করে। তা সত্ত্বেও আইপিএর পূর্বাভাস বলছে, দ্বীপ রাজ্যের গড় বিদ্যুতের বিল বছরে ১২৫ শতাংশ বেড়ে সাড়ে ৪ হাজার ডলারে পৌঁছাবে; যা ২০৩০ সালের জন্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভবিষ্যদ্বাণী।
মূল ভূখণ্ডের অন্য রাজ্যগুলোতেও বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী উচ্চ গড় বার্ষিক বিল ৩ হাজার ২০০ ডলার হবে। নিউ সাউথ ওয়েলসে ২ হাজার ৬০০ এবং কুইন্সল্যান্ড ও ভিক্টোরিয়া হবে ২ হাজার ৫০০ ডলার।
কয়লাচালিত পাওয়ার স্টেশনগুলো চলতি বছর দুর্বল হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের আর আপগ্রেড করতে চাইছে না।
অস্ট্রেলিয়ান এনার্জি মার্কেট অপারেটর (এইএমও) বলছে, এর ফলে পাইকারি বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে; মার্চ পর্যন্ত বেড়েছে ১৪১ শতাংশ। এ অবস্থায় খুচরা বিক্রেতারা ১ জুলাই থেকে অন্য সরবরাহকারী খোঁজার পরামর্শ দিচ্ছে গ্রাহকদের।
কনজিউমার গ্রুপ- ওয়ান বিগ সুইচের ক্যাম্পেইন ডিরেক্টর জোয়েল গিবসন বলেছেন, গ্রাহকদের ২৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছে ডিসকভার এনার্জি।
তিনি বলেন, ‘কয়েক লাখ পরিবারকে শিগগিরই সরবরাহকারী বদলাতে হবে। নইলে বিদ্যুৎ বিল ৫০ শতাংশ থেকে ২৮৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।’
বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে অর্থনীতিতে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা সাময়িক। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘অর্থনীতির সামগ্রিক পরিস্থিতি’বিষয়ক এক আলোচনা সভায় রোববার এ কথা বলেন আলোচকরা।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এতে ঢাকা চেম্বারের অন্য সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
ডিসিসিআইয়ের নেতারা মনে করেন, বৈশ্বিক যে সংকট চলছে, তা শুধু বাংলাদেশেই প্রভাব ফেলছে না, সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়েছে। এতে করে সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে, যার প্রভাব বাংলাদেশেও এসে পৌঁছেছে। বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। চাপে পড়েছে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি। এ সংকট বেশি দিন থাকবে না বলে মত দেন বক্তারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘সৃষ্ট সংকট দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কারণ বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সবকিছুর দাম কমছে। কাজেই অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কোনো কারণ দেখছি না।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রিজার্ভের চাপ কমাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত ঋণ পাওয়া যাবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকে আমানতের সুদের হার কিছুটা বাড়ানোর বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করা যেতে পারে বলে অভিমত দেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, গত অর্থবছরে দেশের উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ২৩ শতাংশ, ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান হয়। কর আহরণ বৃদ্ধি এবং করজাল সম্প্রসারণে দেশের রাজস্ব কাঠামোর অটোমেশনের কোনো বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।
গত অর্থবছরে দেশ থেকে ১০ লাখ শ্রমিক বিদেশ গেছে। ফলে আমাগীতে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ্য সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় সব দেশই জ্বালানি সংকটে রয়েছে। আমাদের টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অফশোর গ্যাসকূপ অনুসন্ধান কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি বাপেক্সকে আরও শক্তিশালী করা দরকার।’
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী আমাদের রপ্তানি আয় প্রায় ৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে যেতে পারে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে বিদ্যমান শুল্ক প্রতিবন্ধকতা দূর করা, বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সেপা) স্বাক্ষর এবং দ্রুত ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তা মোকাবিলা করতে হলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। কর নেট বৃদ্ধি এবং পুরো রাজস্ব বিভাগের অটোমেশনের বিকল্প নেই।’
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের ঋণের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ আশাব্যঞ্জক নয় বলে মত প্রকাশ করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি।
জ্বালানি তেলের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি এবং ডলারের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে চলতি অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তরুণ এই ব্যবসায়ী নেতা।
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্ট্রাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে মতবিনিময় সভা ও দোয়া মহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর বাড্ডায় র্যাংগস আরএল টাওয়ারে স্ট্রাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে রোববার বিকেল ৫টায় আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, শেখ মুজিব ছিলেন আপোষহীন নেতা, তিনি প্রথমে মুজিব ভাই ছিলেন, পরে শেখ মুজিব হয়েছেন, তার পর বঙ্গবন্ধু হয়েছে। আমাদের সবাইকে তাকে অনুসরণ করা উচিত। আমরা যারা স্বধীনতার পরের প্রজন্ম, আমাদের সবারই তার সম্পর্কে বিশদ জানতে হবে। তার আদর্শ আমাদের লালন করতে হবে।
সভায় কানাডিয়ান ইউনির্ভাসিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে আমদের ৭ কোটি মানুষ খেয়ে না খেয়ে থাকত, আর এখন ১৬ কোটির উপর মানুষ নিয়ে ভালো ভাবে খেয়ে পরে বেঁচে আছি। সবই সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর কারণে। কারণ, তিনি স্বাধীনতা না এনে দিলে আমরা এই অবস্থানে আসতে পারতাম না।’
স্মরণসভায় বক্তব্যে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক হাসান ইমাম রুবেল বলেন, ‘ন্যায্যতার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপোষহীন, তিনি সারা জীবন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে গেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি, তিনি বেঁচে থাকলে এখন বাংলাদেশ যে অবস্থানে আছে, সেটা আরও ৩০-৪০ বছর আগে হতো। কিন্তু আশার কথা হলো, বঙ্গবন্ধুর রক্ত এখনো কারো ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনিই এখন এই দেশটাকে উন্নত করে যাচ্ছেন। তিনি হলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
এসএফআইএলের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর তামিম মারজান হুদার সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন এসএফআইএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতেজা আহমেদ খান।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আমি যতোবার শুনি ততবারই নতুন মনে হয়। এই ভাষণের মধ্যে তিনি যত দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, সেটা তখনকার জন্য যেমন প্রযোজ্য, এখনকার জন্যও তেমনি প্রযোজ্য।
‘তখন তার নির্দেশে দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছে, আর এখন আমরা করছি অর্থনৈতিক যুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করলে দেশে যত বাধাই আসুক, আমরা সেটা কাটিয়ে উঠতে পারব।’
স্বরণ সভায় এসএফআইএলের হেড অফ রিটেইল মো. সাজেদুল হক মৃধাসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:জ্বালানি সাশ্রয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে সরকার যে লোডশেডিং করছে, এক মাসের মধ্যে সেটির সমাধান হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। জানিয়েছেন, জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমন্বয় করা হবে নিয়মিত।
জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো নিয়ে সমালোচনার মধ্যে রোববার বিদ্যুৎ ভবনে ‘জ্বালানি নিরাপত্তা ও বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ বিষয়ে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আশা করছি আগামী মাসের শেষেই লোডশেডিং বিদায় নেবে। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা ভালো আছি। ভালো থাকব। সকলের সহায়তা প্রয়োজন।’
গত ১৯ জুলাই থেকে দিনে ১ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করার ঘোষণা দেয়ার পর বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো সূচি তৈরি করে। তবে সূচিতে ১ ঘণ্টা দেয়া থাকলেও এমনকি ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তীব্র গরমে এই পরিস্থিতিতে জনক্ষোভ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এর মধ্যে গত ৫ আগস্ট মধ্যরাত থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা এবং পেট্রলের দাম ৪৪ টাকা আর অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়ায় সরকার।
লোডশেডিংয়ের মধ্যে জ্বালানি নিয়ে এই সিদ্ধান্ত আগুনে যেন ঘি ঢালে। এর প্রতিক্রিয়ায় বাড়াতে হয়েছে বাস ভাড়া, এমনিতে বেড়ে যাওয়া নিত্যপণ্যের বাজার দিয়েছে আরেক লাফ।
এর মধ্যে তেলের দাম কমানোর উপায় খুঁজছে সরকার। ভ্যাট ও ট্যাক্স কমিয়ে জনসাধারণকে কিছুটা স্বস্তি দেয়া যায় কি না, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীও এই বিষয়ে ইঙ্গিত দিলেন। তিনি বলেন, ‘কেবল তো দর সমন্বয় করা হলো। আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে বলব। এক-দুই মাসের মধ্যেই মূল্য সমন্বয় করা হবে।’
দেশে দেশে জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে ওঠানামা করলেও বাংলাদেশে সরকার কিছুদিন পর পর একটি দর ঠিক করে দেয়। ২০১৬ সালে একবার লিটারপ্রতি তেলের দাম ৩ টাকা করে কমানোর পর বাস ভাড়া থেকে কোনো কিছু না কমার পর দাম আর কমায়নি সরকার, যদিও সে সময় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম অনেকটাই কমে গিয়েছিল।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে জ্বালানি তেলের দাম ঠিক করার ইঙ্গিতও দেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ‘বারবার সমন্বয় করা হবে। যতবার বিশ্ববাজারে দাম কমবে, ততবারই দাম সমন্বয় হবে।’
সরকার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারদর বেশি থাকার যে বিষয়টি জানিয়েছিল, সেটি আবার তুলে ধরলেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ‘জ্বালানি দাম বাড়ানোর বিষয়টি সাময়িক। এটা আমি বারবার বলছি। বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে অনেকটা বাধ্য হয়ে সরকারকে সমন্বয়ে যেতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ভারতের পুঁজিবাজারে অন্যতম বিনিয়োগকারী ও দেশটির ৩৬তম ধনী রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার মৃত্যু হয়েছে। তার এয়ারলাইনস আকাশা এয়ারের বাণিজ্যিকভাবে উদ্বোধনের এক সপ্তাহের মাথায় মৃত্যু হয় তার।
সেই অনুষ্ঠানে হুইলচেয়ারে করে এসেছিলেন তিনি। পরে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বেশ কয়েক দিন ধরেই তিনি শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন তিনি। মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে নেয়ার আগে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
তার মৃত্যুতে পুঁজিবাজার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোক প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শোকবার্তায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অদম্য ও কিংবদন্তি বিনিয়োগকারী রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার অবদান ভোলার নয়। গোটা দেশের উন্নয়ন নিয়ে তিনি অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। তার এই প্রয়াণ অনেক দুঃখের। তার পরিবার ও অনুরাগীদের প্রতি আমার সমবেদনা।’
পুঁজিবাজারের অন্যতম নিয়ন্ত্রক এই প্রভাবশালী ঝুনঝুনওয়ালাকে বলা হয় ভারতের ওয়ারেন বাফেট। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ারেন বাফেটকে বলা হয় সর্বকালের সেরা বিনিয়োগকারী।
সব মিলিয়ে তিন ডজনেরও বেশি কোম্পানিতে ঝুনঝুওয়ালার ব্যাপক মাত্রায় বিনিয়োগ ছিল। টাইটান, স্টার হেলথ, টাটা মোটরস এবং মেট্রো ব্র্যান্ড ছিল তার সবচেয়ে বড় হোল্ডিং। তিনি হাঙ্গামা মিডিয়া ও অ্যাপটেকের চেয়ারম্যানও ছিলেন।
প্রভাবশালী এই ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী দালাল স্ট্রিটের ‘বিগ বুল’ নামে পরিচিত। ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক তিনি। তিনি ভারতের ৩৬তম ধনী বিলিয়নেয়ার ছিলেন।
জি গ্রুপের চেয়ারম্যান, রাজ্যসভার সাবেক সংসদ সদস্য ও ব্যাবসায়িক অংশীদার সুভাষ চন্দ্র, জেট এয়ারের সিইও ভিনয় দুবে, ইন্ডিগো প্রধান অদিত্য ঘোষও শোক জানিয়েছেন।
সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুনির্দিষ্ট তথ্য চায়নি বলে ঢাকায় সুইস রাষ্ট্রদূত যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে সাংঘর্ষিক মনে করছে হাইকোর্ট।
উচ্চ আদালত বলেছে, দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি; বরং এটা সাংঘর্ষিক।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ মন্তব্য করে।
গত ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড বলেন, ‘সুইস ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির জন্য তথ্য চায়নি। সুইস ব্যাংকের ত্রুটি সংশোধনে সুইজারল্যান্ড কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, তবে আমি আপনাদের জানাতে চাই, সুইজারল্যান্ড কালো টাকা রাখার কোনো নিরাপদ ক্ষেত্র নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছে, তবে উভয় দেশের সম্মতিতে ব্যাংকিং তথ্য লেনদেন হতে পারে এবং সেটা সম্ভবও। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
সুইস রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্য সব সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি নজরে নিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি, তা রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যসংবলিত সংবাদের অনুলিপিও জমা দিতে বলে আদালত।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর রাষ্ট্রপক্ষ আর দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্টের বেঞ্চ বলে, ‘আপনারা যে ডকুমেন্ট দিয়েছেন, তাতে তো মনে হয়, সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের সত্যতা নাই; বরং সাংঘর্ষিক।’
ওই বেঞ্চ আরও বলেন, ‘আপনারা যে তথ্য চেয়েছিলেন, সেটি জাতির সামনে প্রকাশ করুন, যাতে বিষয়টি পরিষ্কার হয়।’
তখন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য জানাতে আদেশ চান। তিনি বলেন, ‘একজন রাষ্ট্রদূত সঠিক তথ্য না নিয়ে এভাবে একটা বক্তব্য দিলেন আর তাতে দুদক সবার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। উনি কীভাবে এমন বক্তব্য দিলেন, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’
পরে আদালত দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে হলফনামা আকারে তাদের বক্তব্য জমা দিয়ে আগামী রোববার পরবর্তী দিন ঠিক করে দেয়।
কী আছে বিএফআইইউর প্রতিবেদনে
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক আদালতে বিএফআইইউর প্রতিবেদন জমা দেন।
ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সুইস ব্যাংক চলতি বছরের ১৬ জুন বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরের দিন এগন্ট সিকিউর ওয়েবের (ইএসডব্লিউ) মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যাংক ও ব্যক্তির জমানো অর্থের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে অনুরোধ করা হয়, তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধ, অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিএফআইইউ বিদেশি এফআইইউদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে, তবে বিশ্বব্যাপী এসব তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হলো ইএসডব্লিউ।
২০১৩ সালের জুলাইতে ইএসডব্লিউর সদস্য হওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চায় বাংলাদেশ। ইএসডব্লিউর মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে এ তথ্য দেওয়ার অনুরোধ করা হয়, কিন্তু ২০১৪ সালে একজন ছাড়া অন্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানায় সুইজারল্যান্ড। আর ওই একজনের তথ্য দুদককে দিয়েছে বিএফআইইউ।
আরও পড়ুন:সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ রাখার বিষয়ে তথ্য জানাতে গত ১৭ জুন সর্বশেষ চিঠি দেয়া হয়েছিল বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে রোববার বিএফআইইউর প্রতিবেদনটি জমা দেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
বিএফআইইউর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সুইস ব্যাংক চলতি বছরের ১৬ জুন বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরের দিন এগন্ট সিকিউর ওয়েবের (ইএসডব্লিউ) মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যাংক ও ব্যক্তির জমানো অর্থের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে অনুরোধ করা হয়, তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
অর্থপাচার ও সন্ত্রাসীকাজে অর্থায়ন প্রতিরোধ, অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিএফআইইউ বিদেশি এফআইইউদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে, তবে বিশ্বব্যাপী এসব তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হলো ইএসডব্লিউ।
২০১৩ সালের জুলাইতে ইএসডব্লিউর সদস্য হওয়ার পর চুক্তি অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চায় বাংলাদেশ। ইএসডব্লিউর মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে এ তথ্য দেওয়ার অনুরোধ করা হয়, কিন্তু ২০১৪ সালে একজন ছাড়া অন্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানায় সুইজারল্যান্ড। আর ওই একজনের তথ্য দুদককে দিয়েছে বিএফআইইউ।
গত ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড বলেন, ‘সুইস ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির তথ্য চায়নি। সুইস ব্যাংকের ত্রুটি সংশোধনে সুইজারল্যান্ড কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, তবে আমি আপনাদের জানাতে চাই, সুইজারল্যান্ড কালো টাকা রাখার কোনো নিরাপদ ক্ষেত্র নয়।’
সুইস রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘গত বছর সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছে, তবে উভয় দেশের সম্মতিতে ব্যাংকিং তথ্য লেনদেন হতে পারে এবং সেটা সম্ভবও। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
সুইস রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্য সব সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়। গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি নজরে নিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি, তা রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য নজরে এনে প্রকাশিত সংবাদের অনুলিপিও জমা দিতে বলা হয়।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রোববার বিএফআইইউর প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
সুইস রাষ্ট্রদূত সঠিক তথ্য দেননি বলে আদালতকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও দুদকের আইনজীবী। রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য জানাতে নির্দেশনা চেয়েছেন দুদকের আইনজীবী।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাতে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ কমবে বলে মনে করছেন পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান।
তিনি বলেছেন, ‘নতুন গভর্নর মহোদয় এসে ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠনে ব্যাংকগুলোর ওপর যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই নির্দেশনা মানলে, সঠিকভাবে এ-সংক্রান্ত সার্কুলার ব্যাংকগুলো অনুসরণ করলে আমরা আমাদের ব্যাংকব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারব। ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ সামনের দিনে কমে আসবে।’
নিউজবাংলাকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এই আশার কথা শুনিয়েছেন তারেক রিয়াজ খান।
২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পদ্মা ব্যাংকের নবযাত্রা হয়। নবজন্মের পর সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এ সময়ে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ কমেছে, মূলধন বেড়েছে। আমানত বেড়েছে কয়েক গুণ।
ব্যাংকটির ৬০ শতাংশ ইক্যুইটি রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কাছে। ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পদ্মা ব্যাংক। এ বছরের শেষ নাগাদ বেসরকারি খাতের এই ব্যাংকটিতে আসছে বিদেশি বিনিয়োগ।
মহামারি করোনার ধকল কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের চ্যালেঞ্জ, মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা, খেলাপি ঋণ, নতুন গভর্নরের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপসহ ব্যাংক খাতের নানা বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলছেন পদ্মা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী তারেক রিয়াজ খান।
নিউজবাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খান। ছবি: নিউজবাংলা
নিউজবাংলা: করোনা-যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশ এর বাইরে নেই। করোনার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংক খাত গ্রাহকদের সেবা দিয়েছে। সেই ব্যাংক খাতের সার্বিক অবস্থা এখন কেমন?
তারেক রিয়াজ খান: করোনার সময় সরকার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কিছু পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিটা থেমে যায়নি। বিভিন্ন সময়ে লকডাউন দেয়া হয়। সব কিছু বন্ধ থাকলে পুরো সময় ব্যাংক খাতের কর্মীরা প্রচণ্ডভাবে এবং সাংঘাতিক একটা হেরোইক পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের অর্থনীতির পাশে থেকেছেন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকারের বড় পদক্ষেপ ছিল প্রণোদনা প্যাকেজ। বাংলাদেশ ব্যাংক এটা বাস্তবায়নে সব সময় সাপোর্ট দিয়েছে। এ জন্য আমি সাধুবাদ জানাই। প্রণোদনার সুফল প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়ার ফলে অর্থনীতির অগ্রযাত্রা থেমে যায়নি।
করোনায় এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি, তৃতীয় ঢেউ চলমান। করোনা-পরবর্তী এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে। গ্লোবাল ইকোনমিতে এটার প্রভাব পড়ছে। জ্বালানি তেল, খাদ্যপণসহ সব কমোডিটির মূল্যের ওপর বেশি প্রভাব পড়েছে।
সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। ফলে কৃচ্ছ্রসাধন করছে সবাই। আমাদের দেশেও কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এটা ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে আমি মনে করি।
নিউজবাংলা: সারাবিশ্বে অস্থির ডলার বাজার। মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। মানি এক্সচেঞ্জ ও ব্যাংকগুলোতে চলছে পরিদর্শন কার্যক্রম। ডলার সাশ্রয়ে আমদানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ফলে আমদানি কমতে শুরু হয়েছে। আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে কি এর সুফল পাওয়া যাবে?
তারেক রিয়াজ খান: ডলারের যে সংকট হচ্ছে- এটা কমন ফেনোমেনা। কারণ আমদানি খরচ বেড়েছে। কমোডিটি প্রাইস বেড়েছে। আমরা আমদানিনির্ভর দেশ। রপ্তানির চেয়ে আমদানি অনেক বেশি করতে হয়। কমোডিটি, ফুয়েল, এনার্জি প্রাইস ওভার না হলে ঘাটতি হতো না।
এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্যও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। টাকা অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমদানি কমানোর জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এর সুফল আমরা পাচ্ছি।
ব্যাংক রেটের সঙ্গে কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলারের পার্থক্য বেশি। কার্ব মার্কেটে বা মানি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো চড়া দামে ডলার বিক্রির কারণে আমাদের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আরও কঠোর হয়েছে। বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করছে। কিন্তু দেশের নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠানের লাভের আগে দেশের ভালো সবার মাথায় রাখতে হবে। দেশ ভালো থাকলে আমরাও ভালো থাকব।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে আমরা ভালো দিন দেখতে পাব। আমিও সে ব্যাপারে আশাবাদী।
নিউজবাংলা: ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ। এ থেকে উত্তরণের উপায় কী? ঋণখেলাপিদের বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার কারণে অনেকে ইচ্ছা করে ঋণ পরিশোধ করেন না। এই ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি’দের থেকে ঋণ আদায় কি ধরণের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন।
তারেক রিয়াজ খান: খেলাপি ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ‘আগ্রাসী ব্যাংকিং’ শব্দটা মাঝে মাঝে আমরা ব্যবহার করি। আগ্রাসী ব্যাংকিং ও প্রুডেন্ট ব্যাংকিং-এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রফেশনাল ব্যাংকারদের এ বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।
আমরা অনেক ক্ষেত্রে বলছি, ঋণগ্রহীতারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। তাদের দোষ দেয়ার আগে নিজের কাঁধে দোষটা নিতে হবে। আমি কেন, ওই লোনগুলো এক্সটেন করছি, কেন আননেসাসারিলি নর্মস ও ক্রেডিটের যে স্ট্যান্টার্ডগুলো আছে, ক্রেডিট পলিসির যে গাইডলাইন আছে সেগুলো বাইপাস করে কেন আমরা একটা অসুস্থ প্রতিয়োগিতায় লিপ্ত?
ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রি ও প্রফেশনাল ব্যাংকাররা যদি স্ট্রং হয়ে যায়, কঠিন একটা জায়গায় যদি চলে যায় যে, না আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাব, দেশকে বাঁচাব তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের অবস্থা অনেক ভালো হবে।
সোয়া লাখ কোটি টাকার ওপর যে খেলাপি ঋণ সেখানে বসে থাকলে হবে না। এর থেকে আলোর পথে এগোতে হবে। সেই পথে এগোনোর জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেয়া পদক্ষেপের আবারও স্যালুট জানাই। কারণ সম্প্রতি ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠনে মাস্টার সার্কুলার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নির্দেশনার আলোকে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবাদিহি নিশ্চিত করা হয়েছে। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ অপারেশনাল না। নতুন গভর্নর এসে ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠনে ব্যাংকগুলোর ওপর যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই নির্দেশনা মানলে, সঠিকভাবে সার্কুলার অনুসরণ করলে আমরা আমাদের ব্যাংকব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারব। ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ সামনের দিনে কমে আসবে।
পদ্মা ব্যাংক সম্পর্কে বলতে হয়, ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি ব্যাংকটির নবজন্ম হয়েছে। এরপর থেকে আমাদের টিম খেলাপি ঋণ কমিয়ে এনেছে। ৭৮ শতাংশ খেলাপি ঋণ এখন ৬৭ শতাংশে নেমেছে। এ বছরে আরও ১০ শতাংশ কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের লোন রিকভারি ডিভিশনকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। রিকভারি রিলেশনশিপ অফিসার হিসেবে যারা ফ্রন্ট লাইনে আছেন তারা ছাড়াও হেড অফিসের মনিটরিং আরও জোরদার করা হয়েছে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে আমরা খেলাপি ঋণের কশাঘাত থেকে বেরিয়ে আসব।
নিউজবাংলা: নতুন গভর্নর যোগদান করার পর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো দুর্বল ১০ ব্যাংককে সবল করার উদ্যোগ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা চাই না কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাক, যারা দুর্বল তাদের সবল করতে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আমানতকারীদের ব্যাংক খাতের ওপর আস্থা ধরে রাখতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ নতুন গভর্নরের নতুন এ প্রচেষ্টা আপনি কিভাবে দেখছেন?
তারেক রিয়াজ খান: নতুন গভর্নর মহোদয় যোগদানের পর ব্যাংক খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন, সেগুলো খুবই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। দিকনির্দেশনাগুলো খুব ইউনিক। আমাদের বর্তমানে ৬২টি ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি নয়, খেলাপি ঋণ, মূলধন পর্যাপ্ততার হারের দিকে এ সংখ্যা আরও বেশি হবে। ব্যাসেল-৩-এর গাইডলাইন অনুসরণ করে মূলধন সংরক্ষণের বিষয়ে যা বলা হয়েছে, অধিকাংশ ব্যাংক সেটা বাস্তবায়নে স্ট্রাগল (লড়াই) করে যাচ্ছে। কিন্তু চারটি প্রাইমারি ইন্ডিকেটরের (সূচক) ওপর বেজ করে ১০টি ব্যাংককে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের হার, লিকুইডিটি, মূলধন সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা সঞ্চিতি- এ চারটি ইন্ডিকেটর ছাড়াও আরও কিছু সাব-ইন্ডিকেটর রাখা হয়েছে।
নতুন গভর্নর যে স্ট্রাটেজিক প্ল্যান নিয়েছেন, সেটা শুধু ব্যাংকগুলো বাঁচানোর জন্য নয়। এরা যেন আরও শক্তিশালী হয়, সে চেষ্টাও করছেন। এসব ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক একটা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করে কিছু ইন্ডিকেটরের ব্যাপারে উল্লেখ করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসব তদারকি করবেন।
পদ্মা ব্যাংকে রেগুলেটর হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অলরেডি তিনটি পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে। যেমন- আমাদের ফিন্যানশিয়াল স্টেটমেন্ট রিস্ট্রাকচারিং করে দিয়েছে।দ্বিতীয়ত- ক্যাপিটাল রিস্ট্রাকচারিংয়ের ফলে পেইড আপ ক্যাপিটাল ফিরে পেয়েছি। তৃতীয়ত-রিভাইজড লিক্যুইডিটি ফ্রেমওয়ার্ক। এটার ফলে ব্যাংকে নগদ জমার হার (সিআরআর) ও বিধিবদ্ধ সংরক্ষণের হারের (এসএলআর) ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু সুবিধা দিয়েছে। ফলে আমাদের লিক্যুইডিটির অনেক উন্নতি হয়েছে। রিভাইজড লিক্যুইডিটির ফলে আমরা এ মুহূর্তে মানি মার্কেটে নেট বরোয়ার না, নেট লেন্ডার। আমরা অন্যান্য ব্যাংককে লিক্যুইডিটি সাপোর্ট দিচ্ছি।
নিউজবাংলা: এখন দেশে অনেক ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এ সময়ে ব্যাংক খাতের সামনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে?
তারেক রিয়াজ খান: আমাদের ব্যাংক খাত ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাডিশনাল ব্যাংকিং দিয়ে আমরা বেশি দিন চালাতে পারব না। নতুন জেনারেশন ব্যাংকে যায় না। মোবাইল অ্যাপ-ইন্টারনেটে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। এ কম্পিটিশনে বেঁচে থাকা এবং নিজেকে সেভাবে গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ।
পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে অলরেডি কোর ব্যাংকিং সিস্টেম মাইগ্রেশন অ্যাপ্রুভাল পেয়েছি। পদ্মা ওয়ালেট ও পদ্মা ইন্টারনেট ব্যাংকিং পুরোপুরি ঢেলে সাজাচ্ছি। আমরা নিজেদের ভালোভাবে তৈরি করছি, আগামী ৫-৭ বছরের মধ্যে ডিজিটাল স্যাভিব্যাংকে পরিণত হওয়ার জন্য। এ প্রতিযোগিতায় পদ্মা ব্যাংক অবশ্যই টিকে থাকবে।
পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক রিয়াজ খানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক মৌসুমী ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা
নিউজবাংলা: পদ্মা ব্যাংকের গ্রাহকদের উদ্দেশে কিছু বলুন।
তারেক রিয়াজ খান: গ্রাহকের বলতে চাই, ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি পদ্মা ব্যাংকের নবযাত্রা হয়েছে। ব্যাংকের ৬০ শতাংশ ইক্যুইটি হোল্ড করছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ। আমাদের শক্তিশালী পরিচালনা পর্ষদ আছে। এখানে ইনডিভিজ্যুয়াল কোনো ডিরেক্টর নেই। সবাই প্রাতিষ্ঠানিক ও নমিনেটেড। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নির্দেশে খুব তাড়াতাড়ি একটা এমওইউ করব। সেখানে অনেকে কী পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর এগ্রি করব। বেশ কিছু সাপোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পেয়েছি। এ বছরের শেষ নাগাদ পদ্মা ব্যাংকে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্টের (এফডিআই) মাধ্যমে ফরেন ইক্যুইটি ইনজেক্ট করে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থান আরও বাড়িয়ে নেব।
আমানতকারীদের উদ্দেশে বলতে চাই, ব্যাংকের কাছে আপনাদের যে টাকা জমা সেটা সম্পূর্ণ নিরাপদ। গত বছরের তুলনায় আমানত চার গুণ বেড়েছে এবং এটা হয়েছে আমানতকারীদের আস্থার কারণে। আমানতকারীদের এই আস্থার প্রতিদান দিতে ব্যাংকের ম্যানেজমেন্ট ও পরিচালনা পর্ষদ বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য