মানুষের জীবনে ভালোবাসার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। অনেকে বলেন, ভালোবাসাই সবকিছু। ভালোবাসাকে ঘিরেই জীবনের বাকি সব উপাদান টিকে আছে। কিন্তু সত্যিকার ভালোবাসা কয়জনের কপালেই বা জোটে। এবার ক্যাথলিক ধর্মগুরু ও ভ্যাটিক্যান সিটির পোপ ফ্রান্সিস সত্যিকার ভালোবাসার নতুন এক পথ বাতলে দিলেন।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, সতীত্ব থেকেই সত্যিকার ভালোবাসা আসে।
দম্পতিদের সঙ্গে কাজ করতে নিযুক্ত পুরোহিত ও ডায়োসিসের জন্য নতুন নথির মুখবন্ধে পোপ ফ্রান্সিস লিখেছেন, সত্য, সূক্ষ্ম ও উদার প্রেমের উপযুক্ত সময় ও উপায় শেখায় সতীত্ব।
তিনি দাবি করেন, এখনকার দাম্পত্য সম্পর্কগুলো দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, কিন্তু সতী দম্পতিরা যৌন সম্পর্কের চাপ ছাড়াই কীভাবে একসঙ্গে থাকতে হয় তা শিখতে সক্ষম হয়। যখন তাদের বয়স হয়ে যায়, যৌন চাহিদা আর থাকে না। তখনও এই শিক্ষা তাদের সাহায্য করে। তারা সুখে বসবাস করতে থাকে।
সদ্য ভ্যাটিকান থেকে প্রকাশিত ৯৭ পৃষ্ঠার নথিতে পোপ যেই বক্তব্য দিয়েছে, এর আগে তালাকপ্রাপ্ত ও সমকামী দম্পতিদের প্রতি পোপের খোলামেলা পূর্বের অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত। এর আগে পোপ সমকামীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনারা যেমন, সেভাবেই ঈশ্বর আপনাকে ভালোবাসেন। এমন কি তালাক হয়ে যাওয়া নারীদের বিষয়েও তার চিন্তাভাবনা ছিল প্রগতিশীল।
অথচ নতুন নথিতে বলা হয়েছে, চার্চ কখনই সতীত্বের মূল্যবান গুণের প্রকাশ করতে সাহস দেখানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থ হবে না, যদিও এটি এখন সাধারণ মানসিকতার সরাসরি বিপরীত। সতীত্বকে অবশ্যই খাঁটি প্রেমের মিত্র হিসেবে তুলে ধরতে হবে। প্রেমে অস্বীকারকারী হিসেবে নয়।
যদিও ধর্মতত্ত্ববিদরা যৌনতার বিষয়ে ক্যাথলিক চার্চের অবস্থানের বিষয়ে একমত নন। তাদের মতে, বিয়ের বিষয়ে চার্চের ধারণা সেকেলে।
ইতালীয় ধর্মতত্ত্ববিদ ভিটো মানকুসো বলেন, ‘ক্যাথলিকরা সব সময় যৌনতাকে বাদ দিয়ে এসেছে। এটি একটি গুরুতর নৈতিক ত্রুটি।’
রাতের আঁধার ঘনিয়ে এলেই গোপন আবাস ছেড়ে বেরিয়ে আসে এরা। ধীর পায়ে কিলবিল করে মুখজুড়ে। খাওয়া-দাওয়া করে, এমনকি সুযোগ বুঝে সেরে নেয় সঙ্গম। ত্বকের মৃত কোষ এদের দারুণ পছন্দ। রাতভর উদরপূর্তি শেষে ভোরের আলো ফুটতেই এরা আবার ফিরে যায় নিজেদের গোপন ডেরায়।
প্রতি রাতে মানুষের মুখের ওপর এভাবে রাজত্ব কায়েম করে ডেমোডেক্স ফলিকুলরাম নামের এক ধরনের মাইট। এদের জন্ম মানুষের মুখের লোমকূপে, মুখের মৃত কোষ খেয়েই বাড়বাড়ন্ত; প্রায় দুই সপ্তাহের জীবনকাল কেটে যায় মানুষের মুখমণ্ডলে বিচরণ করেই।
সুদীর্ঘকাল ধরে মানুষের মুখকে পোষক বানিয়ে টিকে আছে এই প্রজাতির মাইট। তৈরি করেছে মানব মুখমণ্ডলের সঙ্গে এক গভীর আন্তসম্পর্ক। শুনতে ভয়ের মনে হলেও এদের আবাস হওয়ার বিনিময়ে বিশেষ কিছু সুবিধাও কিন্তু আদায় করে নিচ্ছে আমাদের মুখের ত্বক। এসব মাইট মৃত কোষভোজী হওয়ার কারণে পরিষ্কার থাকছে মানুষের মুখের লোমকূপ।
ডেমোডেক্স ফলিকুলরাম ছাড়াও আরও বেশ কিছু মাইটের অস্তিত্ব দেখা যায় মানুষের শরীরে। তবে এগুলোর কোনোটির পুরো জীবনচক্র মানুষের দেহনির্ভর নয়। কেবল ডেমোডেক্স ফলিকুলরামের একমাত্র আবাসস্থল মানুষ। এরা আমাদের মুখের লোমকূপে জন্মায়, খাওয়া-দাওয়া করে; এমনকি সঙ্গমের জায়গা হিসেবে বেছে নেয় মুখের নরম ত্বক। এদের খাবারের সবটা জোগান দেয় মানুষের মুখের মৃত কোষ।
মলিকুলার বায়োলজি অ্যান্ড ইভোলিউশনে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ডেমোডেক্স ফলিকুলরাম মানুষনির্ভরতা জোরদার করতে নিজেদের জিনগত বিবর্তনও ঘটিয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘আণুবীক্ষণিক মাইটগুলো একটি বাহ্যিক পরজীবী থেকে ক্রমশ মানবত্বকের অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যে বিকশিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এটি হোস্টের (মানুষ) সঙ্গে পারস্পরিক সুবিধার সম্পর্ক তৈরি করেছে।’
অন্যকথায় মাইটগুলো ধীরে ধীরে আমাদের দেহের অংশ হয়ে যাচ্ছে। গবেষকেরা বিভিন্ন অণুজীবের জিন বিন্যাস করে দেখেছেন ডেমোডেক্স ফলিকুলরামের মতো মানুষনির্ভরতা অন্য প্রজাতির মাইটের মধ্যে নেই।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ রিডিংয়ের অমেরুদণ্ডী প্রাণী বিশেষজ্ঞ আলেজান্দ্রা পেরোত্তি বলেন, ‘এই মাইটে অনুরূপ প্রজাতির চেয়ে জিনগত আলাদা বিন্যাস রয়েছে। এরা লোমকূপের ভেতর আশ্রিত জীবনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
‘ডিএনএতে এই পরিবর্তনের কারণে কিছুটা অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য এবং আচরণ দেখা যায় এগুলোর মধ্যে।’
ডেমোডেক্স ফলিকুলরামের একমাত্র খাদ্য মানুষের ত্বকের অবশেষ বা মৃত কোষ। এগুলো কেবল রাতে বেরিয়ে আসে। নিকষ আঁধারে সঙ্গী খুঁজে বেড়ায়। এ জন্য ত্বকজুড়ে এরা হামাগুড়ি দিতে থাকে। খাদ্যগ্রহণ এবং সঙ্গীর সঙ্গে সহবাস শেষে ভোরের আগে এরা আবার লোমকূপের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে যায়।
দৈর্ঘ্যে এরা এক মিলিমিটারের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। সসেজ আকৃতির দেহের এক প্রান্তে একগুচ্ছ পা এবং একটি মুখ আছে।
যুক্তরাজ্যের ব্যাঙ্গর ইউনিভার্সিটির জিনতত্ত্ববিদ গিলবার্ট স্মিথের নেতৃত্বে একদল গবেষক মাইটটির জিনগত কিছু আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলছেন, ‘এদের জীবন খুবই সরল। এদের কোনো প্রাকৃতিক শিকারি নেই। নেই কোনো প্রতিযোগিতা। কেবল প্রোটিন তাদের বাঁচিয়ে রাখে। এরা রাতে বেরিয়ে আসে।
‘এর কারণ যেসব জিন সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিরুদ্ধে প্রাণীর ত্বককে সুরক্ষা দেয়, এই মাইটদের মধ্যে সেই জিন নেই। এ জন্য দিনের পরিবর্তে এরা রাতে ঘুরে বেড়ায়।’
এসব মাইট মেলাটোনিন হরমোন তৈরি করতে পারে না, এই হরমোন বেশির ভাগ জীবিত প্রাণীর মধ্যে পাওয়া যায়। মেলাটোনিন মানুষের ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া এই হরমোন ক্ষুদ্র অমেরুদণ্ডী প্রাণীর প্রজনন ও গতিশীলতায় সাহায্য করে।
ডেমোডেক্স ফলিকুলরাম নিজের দেহে মেলাটোনিন তৈরি করতে না পারলেও খুব একটা অসুবিধায় পড়ে না, কারণ এই হরমোন তারা ছেঁকে নেয় মানুষের মুখের ত্বক থেকে।
বিশেষ এই মাইটের প্রজনন অঙ্গ থাকে দেহের সামনের দিকে, যা অন্যান্য মাইটের চেয়ে ভিন্ন। মাইটটির পুরুষাঙ্গ তাদের পিঠ থেকে ওপরের দিকে নির্দেশ করা। এর অর্থ, সঙ্গমের সময় স্ত্রীর নিচে রাখতে হয় নিজেকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, লার্ভা এবং প্রাপ্তবয়স্কের বিকাশ অল্প সময়ে ঘটে। এরা প্রাপ্তবয়স্ক পর্যায়ে পৌঁছানোর পর ধীরে ধীরে দেহকোষ হারাতে শুরু করে।
বছরের পর বছর ধরে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, ডেমোডেক্স ফলিকুলমের মলদ্বার নেই। এর পরিবর্তে এরা মারা গেলে বিস্ফোরিত হয়। এ সময় এদের শরীরে বর্জ্যে ত্বকের প্রদাহ সৃষ্টি হয়। তবে নতুন গবেষণায়, এই মাইটদের ছোট মলদ্বার পাওয়া গেছে। ফলে রাতভর মানুষের মুখের ত্বক মাইটের মলে ছেয়ে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
এতে আঁতকে ওঠার কিছু নেই, আপনি চাইলেও মুখ থেকে ওদের তাড়ানোর কোনো উপায় নেই। বরং এসব মাইটের উপকারী দিক নিয়ে ভাবতে পারেন। আর্জেন্টিনার ব্যাঙ্গর ইউনিভার্সিটি এবং সান জুয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রাণিবিদ হেঙ্ক ব্রেইগ যেমনটি বলছেন, ‘বিভিন্ন মাইটকে অনেক কিছুর জন্য দায়ী করা হয়। তবে এই মাইটগুলো আমাদের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষ করে এদের কারণেই আমাদের মুখের লোমকূপগুলো মরা কোষের কারণে অবরুদ্ধ হয়ে যায় না।’
আরও পড়ুন:আমাদের জীবনে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক চুক্তি। দুজন মানুষ একসঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতিকেই আমরা যারা বিয়ের সংজ্ঞা হিসেবে মনে করি। তাদের জন্য নতুন করে ভাবনার খোড়াক জোগানোর মতোই অনেক খবর এখন নেট দুনিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ নিজেই নিজে বিয়ে করছেন, কেউ বা বিয়ে করছেন পোষা কুকুরকে কিংবা মানবাকৃতির কোনো পুতুলকে।
এবার মেক্সিকোর এক ছোট্ট শহরের মেয়র এক জমকালো অনুষ্ঠানে বিয়ে করেছেন। কিন্তু তার কনে কোনো মানুষ নন, একটি কুমির।
বৃহস্পতিবার হওয়া বিয়ের অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী সংগীত বাজানো হয় এবং শহরের বাসিন্দারা তাদের মেয়র ভিক্টর হুগো সোসাকে নতুন কনেকে চুম্বনের মাধ্যমে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার অনুরোধ করেন। সে সময় নতুন কনেও সাজানো হয় বিয়ের সাজে।
পরে মেয়র চুমু দিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। কিন্তু কনের পক্ষে সৌভাগ্য হয়নি বরকে চুমু দেয়ার, কারণ দুর্ঘটনা এড়াতে কনের মুখ বেঁধে রাখা হয়েছিল।
মেক্সিকোর ওক্সানা রাজ্যের চোন্টাল ও হুয়াভ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাক-হিস্পানিক যুগের আচার অনুষ্ঠান লক্ষ করা যায়, যা ক্যাথলিক আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে মিশে এক নতুন রূপ ধারণ করেছে।
ভিক্টর হুগো সোসা শুধু একজন মেয়রই নন, তিনি একজন আদিবাসী নেতা।
সাত বছর বয়সী ছোট এই সরীসৃপ কেম্যান, যাকে রাজকুমারী বলা হচ্ছে। মাতৃভূমির প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থানীয় নেতার সঙ্গে তার বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের মিলন হয় বলে বিশ্বাস করে এসব আদিবাসী সম্প্রদায়।
এই বিয়ে পরিচালনাকারী পুরোহিত এলিয়া এডিথ আগুইলার, যিনি গডমাদার হিসেবে পরিচিত। এই বিয়ে পরিচালনা করতে পারায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন। তিনি বলেন, ‘এই বিয়ের ঘটনা আমাকে আমার শিকড় নিয়ে গর্বিত করে।’
আরও পড়ুন:গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের (ডিআর কঙ্গো) দুটি সশস্ত্রগোষ্ঠীর সদস্যরা এক কঙ্গোলিজ নারীকে দুবার অপহরণ করেন। পালা করে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই নারীকে দিয়ে মানুষের মাংস রান্না করিয়ে তা খেতে বাধ্য করানো হয়।
স্থানীয় সময় বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এমনটি জানিয়েছে দেশটির অধিকারবিষয়ক একটি সংগঠন।
নারী অধিকারবিষয়ক সংগঠন ফিমেল সলিডারিটি ফর ইন্টিগ্রেটেড পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এসওএফইপিএডিআই) প্রেসিডেন্ট জুলিয়েন লুসেঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্য দেয়ার সময় ওই নারীর বিভীষিকাময় কাহিনি তুলে ধরেন।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের সামনে তিনি সংঘাতে বিধ্বস্ত ও বিপর্যস্ত পূর্ব কঙ্গোর এই দেশটি নিয়ে বক্তব্য দেন।
নিরাপত্তা পরিষদ কঙ্গো সম্পর্কে একটি নিয়মিত ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে। গত মে মাসের শেষের দিকে ডিআর কঙ্গোর সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ লড়াই ও সহিংসতা ব্যাপকহারে বেড়ে যায়।
লুসেঞ্জ বলেন, যে নারীকে সশস্ত্রগোষ্ঠী কোডেকোর সদস্যরা অপহরণ করেন তিনি অপহৃত আরেকজনের জন্য মুক্তিপণ দিতে গিয়েছিল।
অধিকার সংগঠনকে ওই নারী বলেন, অপহরণের পর তাকে বারবার পালা করে ধর্ষণ এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
অপহরণের শিকার নারী বলেন, ‘সশস্ত্রগোষ্ঠীর সদস্যরা আমার সামনে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা করেন। তার নাড়িভুঁড়ি টেনে বের করে ফেলে দেন। দেহটি কেটে টুকরো টুকরো করেন এবং আমাকে সেগুলো রান্না করতে বলেন। এ সময় তারা আমাকে দুটি রান্নার পাত্রও এনে দেন। পরে তারা সব বন্দিকে মানুষের রান্না করা মাংস খেতে দেন।’
নিরাপত্তা পরিষদের সামনে এভাবে ওই নারীর বীভৎস স্মৃতির কথা তুলে ধরেন লুসেঞ্জ।
লুসেঞ্জ বলেন, ‘কয়েক দিন পর ওই নারীকে ছেড়ে দেয়া হয়। বাড়ি ফেরার সময় অন্য একটি মিলিশিয়া গ্রুপ তাকে আবারও অপহরণ করে। ওই সশস্ত্রগোষ্ঠীর সদস্যরাও তাকে পালা করে ধর্ষণ করেন।’
ওই নারী বলেন, ‘অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তারা আমাকে আবারও মানুষের মাংস রান্না করতে বলেন। আমাকে তা খেতে বাধ্য করেন। অবশেষে সেখান থেকে আমি পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হই।’
লুসেঞ্জ তার কাউন্সিল ব্রিফিংয়ের সময় দ্বিতীয় সশস্ত্রগোষ্ঠীর নাম উল্লেখ করেননি। মন্তব্যের জন্য কোডেকোর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলেও জানান তিনি।
কোডেকোসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্রগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে কঙ্গোর খনিজসমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলের জমি এবং সম্পদ দখলে নিতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাত চালিয়ে যাচ্ছে। এমন সংঘাতে গত এক দশকে কয়েক হাজার মানুষ হত্যা করা হয়। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।
কঙ্গোর সেনাবাহিনী গত মে মাস থেকে এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১২-১৩ সালে এই গোষ্ঠী দেশটির বড় কয়েকটি অঞ্চল দখল করে নেয়।
২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
আরও পড়ুন:ইন্দোনেশিয়ায় মদ প্রচারে বিতর্কিত পন্থা অবলম্বন করায় ৬ জন ব্যক্তিকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ।
মালয়েশিয়ার দ্য স্টার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার হলিউইংস বার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রতি বৃহস্পতিবার মুহাম্মদ নামের পুরুষ ও মারিয়া নামের নারীদের বিনামূল্যে জিনের বোতল দেয়া হবে বলে জানায়। সেক্ষেত্রে গ্রাহককে তার আইডিকার্ড দেখাতে হবে।
এই পোস্টের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কের ঝড় ওঠে। কারণ ইন্দোনেশিয়ার অধিকাংশ প্রদেশ রক্ষণশীল ইসলামিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত। হলিউইংস কর্তৃপক্ষ দ্রুতই পোস্টটি তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলে।
ইসলামিক আইনের অধীনে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ। যদিও ইন্দোনেশিয়া কোনো শরীয়াহ শাসিত দেশ নয় এবং দেশটিতে অ্যালকোহল নিষিদ্ধও নয়। কিন্তু মুহাম্মদ নামের ব্যক্তিদের বিনামূল্যে মদের বোতল দেয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি দেশটির ধর্মপ্রাণ নেটিজেনরা।
বেশ কয়েকটি যুব সংগঠন পুলিশকে ব্লাসফেমি অপরাধ করায় এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানায়, এমনকি অনেক যুব সংগঠন নিজেরাই মদের দোকানে অভিযান চালানোর হুমকি দেয়।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ হলিউইংসের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর এবং এই বারের প্রচারমূলক দলের প্রধানসহ ৬ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেছে।
দক্ষিণ জাকার্তার পুলিশ প্রধান বুফহি হার্দি সুসিয়ানতো বলেছেন, ‘আটক সন্দেহভাজন ৬ হলিউইংসের জন্য কাজ করে।’
সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা ৬ জনের সবাই কমলা রংয়ের শার্ট পড়া ছিল, যা সাধারণত ইন্দোনেশিয়ায় অপরাধীদের পড়ানো হয়।
এই দলটির বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি ও ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানোসহ একাধিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ বলছে, দোষী প্রমাণিত হলে তাদের ১০ বছরের জেলও হতে পারে।
এদিকে সাধারণ ইন্দোনেশীয়দের ক্ষোভের মুখে হলিউইংস এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছে এবং জানিয়েছে বারটির ব্যবস্থাপনা বিভাগ এই প্রচারনার বিষয়টি জানতো না।
আরও পড়ুন:যৌনকর্মীর বিল পরিশোধের জন্য বাবার দেয়া টাকাই ব্যবহার করতেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন। তবে জো বাইডেন বিষয়টি জানতেন কি না তা স্পষ্ট নয়।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন এক্সামিনার সোমবার এক রিপোর্টে দাবি করেছে, হান্টার বাইডেন কিয়েভ ও মস্কোতে একটি মডেল এজেন্সিকে এসকর্টের (যৌনকর্মীর) বিল বাবদ ৩০ হাজার ডলার (২৭ লাখ টাকা) পরিশোধ করেন।
ওয়াশিংটন এক্সামিনারের প্রতিবেদন অনুসারে, এই ৩০ হাজার ডলারের বিল তিনি শোধ করেন ২০১৮-এর নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত। এই সময়ে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নিজেকে তৈরি করছিলেন। এই সময়জুড়ে জো বাইডেন তার ছেলেকে ১ লাখ ডলার দিয়েছিলেন বিল পরিশোধের জন্য। হান্টার বাইডেন কীভাবে এই অর্থ ব্যয় করছেন তা জো বাইডেন জানতেন কি না, স্পষ্ট নয়।
হান্টার বাইডেনের ফাঁস হওয়া মেইলে দেখা যায়, তিনি ‘উবারজিএফই’ নামের একটি এক্সক্লুসিভ মডেল এজেন্সির কর্মচারী ইভার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময়ে তাদের মধ্যে অর্থ পরিশোধসংক্রান্তও অনেক বিষয়ে কথাবার্তা হয়।
উবারজিএফই যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, প্যারিস ও দুবাইতে এসকর্ট সার্ভিস দিয়ে থাকে।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে যখন হান্টার বাইডেনের ল্যাপটপের বিষয়বস্তু নিয়ে নিউ ইয়র্ক পোস্ট প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তখন বাইডেন টিম বিষয়টিকে বিভ্রান্তিকর প্রচারণার অংশ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, এর সঙ্গে জড়িত রাশিয়া।
পরে তার মেইলের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়েছে এবং নিউ ইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্টও বলছে হান্টার বাইডেনের মেইলগুলো আসল।
হান্টার বাইডেনও যৌনকর্মী ভাড়া নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেননি। বরং তিনি সংবাদপত্রে বার্তা পাঠান, ‘আপনার কী সমস্যা?’
আরও পড়ুন:ভালো ঘুমের জন্য ভালো বালিশের বিকল্প নেই। অনেকেরই রাতে ঘুম হয় না। একটু ভালো বালিশের জন্য বাড়তি কিছু টাকা খরচ করা তাদের কাছে কোনো ব্যাপারই নয়। কিন্তু সেই বাড়তি অঙ্কটা ঠিক কত?
বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও উন্নত বালিশ তৈরির দাবি করেছেন ডাচ ডিজাইনার ভ্যান ডার হিলস্ট, যিনি একজন সার্ভিক্যাল (কাঁধ ও গলার সমস্যা) বিশেষজ্ঞও। তার তৈরি বালিশ ‘টেইলরমেড পিলো’ আপনাকে দিতে পারে আরামদায়ক ঘুমের নিশ্চয়তা।
তবে এই বালিশে শান্তির ঘুম দিতে চাইলে বাড়তি কিছু খরচ করলেই হবে না, আপনাকে খরচ করতে হবে বেশ বড় অঙ্কের অর্থ।
টেইলরমেড পিলোর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই বালিশের দাম হবে ৫৩ লাখ টাকা (৫৭ হাজার ডলার)।
দামি এই বালিশের ভেতর দেয়া হয়েছে মিসরীয় তুলা, এর কাপড় তুত সিল্কের তৈরি। এতে ২৪ ক্যারেট সোনার আবরণ রয়েছে ও এর জিপারে রয়েছে ২২ ক্যারেটের একটি নীলকান্তমণি ও চারটি হীরা।
তাদের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়, বালিশে যে ২৪ ক্যারেটের সোনার আবরণ রয়েছে তা ক্ষতিকর ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণকে ঠেকিয়ে দিতে পারে। ফলে এই বালিশে ঘুমানোর অভিজ্ঞতা হবে আরামদায়ক, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর।
এই বালিশের নকশাকার ভ্যান ডার হিলস্ট এটি তৈরিতে গবেষণা করেছেন দীর্ঘ ১৫ বছর।
হিলস্ট দাবি করেছেন, বালিশটি অনিদ্রায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের শান্তিতে ঘুমাতে সাহায্য করবে।
বালিশটি হবে একেবারেই ব্যক্তিগত বালিশ। একজন ব্যক্তির কাঁধ, মাথা ও ঘাড় থ্রিডি স্ক্যানারের মাধ্যমে সাবধানে হিসাব করে প্রতিটি গ্রাহকের জন্য আলাদাভাবে তৈরি করা হবে। বালিশ তৈরির আগে গ্রাহকের ঘুমানোর ভঙ্গিও পর্যবেক্ষণ করা হবে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, আপনি ছোট বা বড়, পুরুষ বা নারী। পাশ ফিরে ঘুমান, নাকি পেছন ফিরে ঘুমান। যেভাবেই ঘুমান না কেন? টেইলরমেড বালিশ আপনাকে সবভাবেই আরামদায়ক ঘুমের নিশ্চয়তা দেবে।
আরও পড়ুন:ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় পবিত্র সরায়ু নদীতে গোসল করার সময় স্ত্রীকে চুম্বন করায় এক ব্যক্তিকে মারধর করে ক্ষিপ্ত জনতা। নিপীড়নের এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিন্দার ঝড় ওঠে। ভিডিও হাতে পেয়েই তদন্তে নামে অযোধ্যা পুলিশ।
গঙ্গার সাতটি উপনদীর একটি সরায়ু। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি পবিত্র নদী বলে বিবেচিত হয়। বলা হয়ে থাকে, ভগবান রামের জন্মস্থান এই সরায়ু নদীর তীরে।
গত বুধবার সরায়ু নদীর ‘রাম কি পায়দি’ ঘাটে এই ঘটনা ঘটে। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘাটের কাছে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গোসল করছে এক যুবক। পানিতে ডুব দিয়ে ওঠার পর খানিকটা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন স্ত্রী। তিনি স্বামীকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করেন। ওই সময় স্ত্রীর ঠোঁটে চুমু খান যুবক। এতে মুহূর্তেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে গোসলরত অনেকে। প্রথমে এক ব্যক্তি এগিয়ে যুবককে আঘাত করেন এবং হুঁশিয়ারি দেন, ‘এটা অযোধ্যা, এখানে এমন অসভ্যতামি, অশ্লীলতা চলবে না।’
अयोध्या: सरयू में स्नान के दौरान एक आदमी ने अपनी पत्नी को किस कर लिया. फिर आज के रामभक्तों ने क्या किया, देखें: pic.twitter.com/hG0Y4X3wvO
— Suneet Singh (@Suneet30singh) June 22, 2022
এ কথা বলতে না বলতে যুবককে মারতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। স্ত্রী তাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আরও কয়েকজন এগিয়ে এসে মারতে থাকেন যুবককে। চলতে থাকে একের পর এক চড়, ঘুষি আর লাথি।
ভিডিওতে দেখা যায় প্রাণপণে তাদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন তরুণী। ততক্ষণে অনেকে ঘিরে ফেলে যুবককে। শেষ পর্যন্ত ওইভাবে মারতে মারতেই তাকে পানি থেকে টেনে-হিঁচড়ে ঘাটে তুলে দেয়া হয়। ওই দম্পতিকে ঘাট এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন ওই দলে থাকা ১০-১২ জন পুরুষ।
নিপীড়নের এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই অনেকে প্রশ্ন তোলেন, ‘অযোধ্যা হোক বা অন্য কোনো পবিত্র স্থানই হোক, স্ত্রীকে চুমু খেয়েছেন বলে স্বামীকে মারধর করা হবে? কিসের ভিত্তিতে এই কাজকে অপরাধ বলা হচ্ছে?
এরই মধ্যে ঘটনার ভিডিও পৌঁছায় পুলিশের কাছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
অযোধ্যার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (এসএসপি) শাইলেস পান্ডে বলেন, ‘ভিডিওটি এক সপ্তাহ আগের, তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অযোধ্যা কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ করলে নিপীড়নের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য