সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ডেলওয়্যারের অবকাশকালীন বাড়ির কাছে সাইকেল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পড়ে যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকা ফ্রিডম ট্যুরের এক র্যালিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমি আশা করি (জো বাইডেন) তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। না, আমি সিরিয়াস। আশা করি সে ঠিক আছে। আমি আপনাদের কাছে আজ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি কখনও সাইকেলে চড়ব না।’
এদিকে ট্রাম্পের তৈরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। যেখানে বাইডেনের সাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার দৃশ্যের সঙ্গে নিজের গলফ খেলার ভিডিও যুক্ত করে দেন।
স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের রেহোবোত সমুদ্রসৈকতের কাছে বাইডেন সাইকেল থেকে পড়ে যান।
স্ত্রীর সঙ্গে ৪৫তম বিবাহবার্ষিকী উদযাপনে ওই এলাকায় যান প্রেসিডেন্ট বাইডেন। বিবাহবার্ষিকীর উদযাপন ছাড়াও দুর্ঘটনার কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকল তার এই বিশেষ সময়টা।
ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজনের সঙ্গে লাইন ধরে সাইকেল চালিয়ে আসছেন বাইডেন। একপর্যায়ে হঠাৎ পড়ে যান তিনি। তাকে টেনে তোলেন কয়েকজন।
রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য থামলে তখন সাইকেল থেকে তিনি পড়ে যান। স্থানীয় লোকজন ছাড়াও এ সময় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সাইকেল থেকে দুম করে পড়ে গেলেন বাইডেন
নিচ থেকে উঠে গিয়েই বাইডেন বলতে থাকেন, ‘আমি ভালো অছি’, ‘আমি ভালো আছি’।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে জো বাইডেনের সাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার ভিডিও ও ছবি।
অবশ্য এমন দুর্ঘটনা বাইডেনের জীবনে এটিই প্রথম নয়। ২০২০ সালে ডিসেম্বরে নিজের পোষা কুকুরের সঙ্গে খেলতে গিয়ে পড়ে পা ভাঙেন বাইডেন। চিকিৎসার পাশাপাশি সে সময় তাকে কয়েক সপ্তাহের জন্য মেডিক্যাল বুট পরে থাকতে হয়েছিল।
ক্ষমতা গ্রহণের পর গত বছরের মার্চে বিমানে ওঠার সময় সিঁড়িতে তিনবার হোঁচট খান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আটলান্টা যাওয়ার জন্য এয়ার ফোর্স ওয়ানে উঠছিলেন বাইডেন। একপর্যায়ে বিমানটির সিঁড়িতে তিনবার হোঁচট খান তিনি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশিত হয়। পরে অবশ্য ঠিকমতো বিমানের কেবিন পর্যন্ত পৌঁছান বাইডেন। সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে স্যালুটও দেন।
আরও পড়ুন:BREAKING: Donald Trump has responded to the Biden Bike video on Truth Social. pic.twitter.com/NiSCAykj8w
— Benny Johnson (@bennyjohnson) June 18, 2022
অবশেষে অস্ত্র আইন পাস হলো যুক্তরাষ্ট্রে। বলা হচ্ছে, তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র আইন হতে যাচ্ছে এটি। এই আইন তরুণ ক্রেতাদের ওপর কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি হুমকি হিসেবে বিবেচিত মানুষদের অস্ত্র কিনতে নিরুৎসাহী করবে।
কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ১০০ সদস্য বৃহস্পতিবার ভোট দেন। আইন সংস্কারের পক্ষে পড়ে ৬৫ ভোট, বিপক্ষে ৩৩টি।
বিলটি নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে পাস হলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সইয়ের মধ্য দিয়ে কার্যকর হবে। ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষে শিগগিরই ভোট হবে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘দ্বিদলীয় এই বিলে’ দ্রুত ভোট আয়োজনের তাগিদ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘২৮ বছরের নিষ্ক্রিয়তার পর কংগ্রেসের দ্বিদলীয় সদস্যরা তাদের পরিবারের আহ্বানে একত্রিত হয়েছিলেন। সম্প্রদায়গুলোতে বন্দুক সহিংসতার অভিশাপ মোকাবিলায় আইন পাস হয়েছে।’
নিউ ইয়র্কের বাফেলোর একটি সুপারমার্কেটে এবং টেক্সাসের উভালদেতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্দুক হামলার পর আইন সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। ওই দুই হামলায় নিহত হন ৩১ জন।
সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে ২১ বছরের কম বয়সী ক্রেতাদের জন্য বিস্তারিত পরিচয় নিশ্চিত করা, মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্প এবং স্কুল নিরাপত্তাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে ১৫ বিলিয়ন ডলার ফেডারেল তহবিল গঠন এবং হুমকি হিসেবে বিবেচিতদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ফিরিয়ে নেয়ার জন্য ‘লাল পতাকা’ আইন বাস্তবায়নে রাজ্যগুলোকে উৎসাহিত করতে অর্থায়ন করা হবে।
এ ছাড়া যারা ইতোমধ্যে অস্ত্রের অপব্যাবহারের দায়ে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন, তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করা যাবে না।
গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
বিলটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এটি কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর একটি, যেটি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই পক্ষের সমর্থন পেয়েছে।
ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক আইন শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা দেখা গেছে রিপাবলিকানদের মধ্যে। এবার ১০০ সদস্যের সিনেটে ভোট পড়েছে ৬৫-৩৩।
দলের সবচেয়ে রক্ষণশীল সদস্য সিনেটর জো মানচিন এবং কার্স্টেন সিনেমাসহ ৫০ জন ডেমোক্র্যাট বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
তাদের সঙ্গে প্রস্তাব তৈরিকারী রিপাবলিকানরা যোগ দিয়েছিলেন। যার মধ্যে পার্টির সিনেট নেতা মিচ ম্যাককনেল এবং লিন্ডসে গ্রাহাম আছেন। গ্রাহাম সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং বন্দুক-নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরোধী ছিলেন। দুই-তৃতীয়াংশ রিপাবলিকান এই আইনের বিরোধিতা করেছেন।
টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ বলেন, ‘শিশুদের সুরক্ষার জন্য গুরুতর ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে আইন মেনে চলা নাগরিকদের নিরস্ত্র করার চেষ্টা এটি।’
বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছে বন্দুক সুরক্ষা গ্রুপ মার্চ ফর আওয়ার লাইভস। ফ্লোরিডায় ২০১৮ সালে পার্কল্যান্ড স্কুলের বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি।
টুইটে সংগঠনটি জানায়, ‘আমরা জানি এই মহামারি শেষ করতে আরও অনেক কাজ করতে হবে। আমরা ছাড় দিতে বা দমে যেতে রাজি নই। বন্দুক সহিংসতা বন্ধ করা আমাদের জীবনের লড়াই।’
ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ) বিলটির বিরোধিতা করেছে। তাদের যুক্তি, এটি কোনোভাবেই সহিংসতা বন্ধ করবে না।
কেন বন্দুক নিয়ন্ত্রণে এত বড় চুক্তি?
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে আনুমানিক ৩৯৩ মিলিয়ন আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রে মৃত্যুর সর্বোচ্চ হার এই যুক্তরাষ্ট্রেই।
গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের হিসাবে, চলতি বছর দেশটিতে বন্দুক সহিংসতায় ২ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ, যেখানে বন্দুক রাখার অধিকারের কথা বলা হয়েছে দেশটির সংবিধানে।
সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য ফেডারেল বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯৪ সালে পাস হয়েছিল। অ্যাসল্ট রাইফেল এবং বড় ক্ষমতার ম্যাগাজিনগুলো বেসামরিক ব্যবহারের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এতে। তবে এক দশক পর আইনটি বাতিল হয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের একটি আইন বাতিল করে। এই আইনে যেকোনো নাগরিক বন্দুক বহন করতে পারে।
জরিপ বলছে, বেশির ভাগ আমেরিকান বন্দুক নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে। অনেক রিপাবলিকান সিনেটর বন্দুকপন্থি বড় সম্প্রদায়ের রাজ্যগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। এসব রাজ্যের রিপাবলিকান সমর্থকরা আইন সংস্কারের ঘোর বিরোধী।
আরও পড়ুন:গুজরাট দাঙ্গায় ২০০২ সালে সহিংসতায় নিহত কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অব্যাহতি দেয়া এক রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি আর্জি নাকচ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে মোদির অব্যাহতিই বহাল রাখা হয়েছে।
৮৪ বছর বয়সী জাকিয়া জাফরি গুজরাট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার নতুন তদন্ত চেয়েছিলেন। তার মতে, এটি ছিল একটি বড় চক্রান্ত, যেখানে রাজনীতিবিদ, পুলিশ জড়িত ছিল।
জাকিয়া জাফরির স্বামী এহসান জাফরি একজন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ। গুজরাট দাঙ্গার সময় দাঙ্গাকারীরা তাকে টেনে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করে।
জাকিয়া বলেছিলেন, দাঙ্গাকারীদের আক্রমণের আগেই তিনি সাহায্যের জন্য পুলিশ কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদদের ফোন করেন, কিন্তু তার ফোনের উত্তর দেয়া হয়নি।
বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) ঘটনার ১০ বছর পরে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি রিপোর্ট জমা দেয়, যেখানে ‘কোনো বিচারযোগ্য প্রমাণ’ না থাকায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অন্য ৬৩ জনকেও অব্যাহতি দেয়া হয়।
তবে জাকিয়া জাফরির আইনজীবী এই কপিল সিবল জানিয়েছিলেন, এসআইটি তদন্ত করেনি, অভিযুক্তদের রক্ষার চেষ্টা করেছিল।
পশ্চিম ভারতে ২০০২ সালে হওয়া গুজরাট দাঙ্গা তিন দিন ধরে চলেছিল। যে দাঙ্গায় ১ হাজারের বেশি মুসলিম মারা যান। সে সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে চলমান রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যেই এবার দেশটির রাজধানী মস্কো থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রিয়াজান শহরের কাছে শুক্রবার সকালে একটি সামরিক পরিবহন বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বেশ কয়েকজন ক্রু নিহত হয়েছেন।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামরিক বিমান ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তবে দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত করেনি রুশ সামরিক বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে, সামরিক বিমানটিতে ৯ বা ১০ জন আরোহী ছিলেন।
দেশটির জরুরি বিভাগ বলছে, দুর্ঘটনায় অন্তত দুইজন মারা গেছেন এবং ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে যাওয়া ৬ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল ইলিউশিন টু-৭৬। বিমানটি একটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনা করছিল। দুর্ঘটনার সময় বিমানে কোনো কার্গো ছিল না।
প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনার সময় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে পাইলট রুক্ষ মাটিতে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়।
ভূমিতে আঘাত কিংবা কোনো অবকাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি। বিমানটি দৃশ্যত একটি খালি মাঠে জরুরি অবতরণ করে এবং অবতরণের আগেই বিমানটির ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছেন।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ বর্তমানে তুরস্ক সফরে আছেন। দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ইস্তাম্বুলে ইসরায়েলিদের ক্ষতি করার এক ইরানি চক্রান্ত বানচাল করতে সাহায্য করার জন্য তুর্কিয়েকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুর্কিয়ে গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুর্কিয়ে কর্তৃপক্ষ লাপিদের সফরের আগে ইসরায়েলিদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করার সন্দেহ পাঁচজন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ বলেছেন, ইসরায়েলিরা ইরানের হুমকির মুখে অলস বসে থাকবে না।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল এবং তুরস্কের মধ্যে নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সহযোগিতার জন্য সম্প্রতি ইসরায়েলি নাগরিকদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে এবং এই প্রচেষ্টা চলমান আছে।
‘আমরা কেবল ইসরায়েলি পর্যটকদের হত্যার কথাই বলছি না, ইরানি সন্ত্রাসের দ্বারা তুর্কিয়ে সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘনের কথাও বলছি। আমরা নিশ্চিত তুর্কিয়ে জানে এই বিষয়ে ইরানিদের কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।’
লাপিদ বৃহস্পতিবার তুরস্ক সফরে এসেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুর সঙ্গে আলোচনা করতে। ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনের কারণে দুই দেশের মধ্যে যে উত্তেজনাপূর্ণ তা মেরামত করার প্রচেষ্টা হিসেবে এই সফর।
এদিকে হুরিয়েত পত্রিকা জানিয়েছে, তুর্কিয়ে কর্তৃপক্ষ বুধবার ইস্তাম্বুলে ইসরায়েলি নাগরিকদের ক্ষতি করতে কথিত ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার সন্দেহে পাঁচজন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে।
সন্দেহভাজনদের অবস্থান করা বাড়ি ও হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ দুটি পিস্তল এবং দুটি সাইলেন্সার জব্দ করেছে।
তবে ইরানের পক্ষ থেকে কোনো তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এর আগেই এই মাসের শুরুতেই ইসরায়েল তার নাগরিকদের তুর্কিয়ে ভ্রমণ এড়াতে সতর্কবার্তা জারি করেছিল ও দেশটিতে অবস্থান করা নাগরিকদের তুর্কিয়ে ত্যাগের আহ্বান জানানো হয়েছিল। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছিল, ইসরায়েলি নাগরিকরা ইরানি হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
আরও পড়ুন:আফগানিস্তানে পাকতিকা প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ৫০০ বাড়িঘর ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দশকের মধ্যে আফগানিস্তানে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে যারা বেঁচে গেছেন, তাদের খাবার নেই, আশ্রয় নেই। সম্ভাব্য কলেরা প্রাদুর্ভাবেরও আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষ করে আহত ব্যক্তিদের অবস্থা দুর্বিষহ, কারণ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে কাছের বড় শহরে যেতেও তিন ঘণ্টা গাড়িতে যাওয়া লাগে এবং রাস্তাটিও দুর্গম, ফলে আহত ব্যক্তিদের পরিবহন কঠিন হয়ে গেছে। আহত কয়েকজনকে তালেবানের সামরিক হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসা দিতে সরঞ্জাম ও ওষুধেও ঘাটতি রয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাকতিকা প্রদেশের চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘তাদের অঞ্চলে ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে।’
ভূমিকম্পের ফলে অনেক পরিবারই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হলো আশ্রয়। কিন্তু পর্যাপ্ত আশ্রয়ের ব্যবস্থা সেখানে করা যাচ্ছে না।
টোলো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত খোস্ত ও পাকতিকা থেকে আহত মানুষদের গজনি ও কাবুলের মতো অন্যান্য প্রদেশে নিয়ে যাচ্ছে তালেবান। পাকতিকা প্রদেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।
আফগানিস্তানে এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সম্ভাব্য কলেরা প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে সতর্ক করেছে। এরই মধ্যে সংস্থাটি বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার কাছে ১৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে।
এদিকে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে।
জীবিত ও উদ্ধারকারীরা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া গ্রাম, রাস্তাঘাট ও মোবাইল টাওয়ারের কথা জানিয়েছে।
দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে হওয়া সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা বর্তমান তালেবান সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটি মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটে আছে। তালেবানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা আব্দুল কাহার বলখি আফগান সরকারের সীমাবদ্ধতাও স্বীকার করে নিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আর্থিকভাবে জনগণকে যতটা সহায়তা দেয়া প্রয়োজন ততটা দিতে অক্ষম বর্তমান প্রশাসন।‘
বলখি জানিয়েছেন, সাহায্য সংস্থা, প্রতিবেশী দেশ ও বিশ্বশক্তিগুলো সাহায্য করছে। কিন্তু তার মতে, সহায়তা আরও বাড়ানো দরকার, কারণ এটি একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প, যা কয়েক দশকের মধ্যে হয়নি।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল পাকতিকার খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে, ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইএমএসসি জানিয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পাশাপাশি পাকিস্তানের ইসলামাবাদেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে পাকতিকার গায়ন ও বারমাল জেলায়। গায়নের একটি গ্রাম পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে।
পাকতিকার একজন স্থানীয় সাংবাদিক জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে মোবাইল টাওয়ারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ করা আরও কঠিন হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। দেশটির অবস্থান টেকটোনিকভাবে সক্রিয় অঞ্চলে।
জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের রিপোর্ট অনুসারে, গত এক দশকে দেশটিতে ভূমিকম্পে ৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। দেশটিতে ভূমিকম্পে বছরে গড়ে মারা যায় ৫৬০ জন।
গত জানুয়ারিতেও দেশটির পশ্চিমে ভূমিকম্পে ২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় ও শতাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়।
আরও পড়ুন:ক্লিনিকটিতে মাত্র পাঁচটি শয্যা আছে। তবে মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের ফলে এই সামান্য সরঞ্জাম দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ক্লিনিকের স্টাফ মুহাম্মদ গুল বিবিসিকে বলেন, ‘ক্লিনিকের সব কক্ষ ধ্বংস হয়ে গেছে।
‘একটি হেলিকপ্টার পাকতিকা প্রদেশের প্রত্যন্ত জেলা থেকে মুষ্টিমেয় কিছু রোগীকে চিকিৎসার জন্য শহরে নিয়ে গেছে। দুজন ডাক্তার একটি অস্থায়ী আউটডোর ক্লিনিক পরিচালনা করছেন এমন লোকদের জন্য, যাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’
ক্লিনিকটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম জেনারেটর। তাও জ্বালানির সংকটে বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অন্য প্রদেশ থেকে সাহায্য আসার প্রতিশ্রুতি থাকলেও, তা এখনও পৌঁছায়নি।
পাকতিকা প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে অনেক বাড়িঘর ধসে পড়েছে। এরই মধ্যে মৃত হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি। চাপা আছেন অনেকেই।
বাড়ছে হতাহত
বিবিসিকে গুল বলেন, ‘এমন অন্তত ৪০-৫০ জন আছেন, যাদের অবিলম্বে চিকিৎসাসহায়তা প্রয়োজন। মনে হয় না তারা রাত পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন।’
ভূমিকম্পটি দরিদ্র পাহাড়ি অঞ্চলে আঘাত করেছিল, যেখানকার ভবনগুলো ভীষণ দুর্বল। কম্পনে ঘরবাড়িগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে; অনেক জায়গায় ভূমিধসও হয়েছে।
গিয়ান শহরটি ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি। এখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও আটকে আছেন বহু মানুষ।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো কয়েক বছর আগে সেখানে ক্লিনিক স্থাপন করে। তবে সেগুলো ছোটখাটো স্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য। এগুলোতে কোনো জরুরি বিভাগ ছিল না।
গত আগস্টে কট্টরপন্থি তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে অনেক আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা দেশ ছেড়েছে। এতে তীব্র চিকিৎসা-সংকটে ভুগছে আফগানিস্তান।
তালেবানের ভারপ্রাপ্ত জেলা গভর্নর মঙ্গলবার গিয়ান সফর করেন। তাকে দেখে স্থানীয়রা ক্ষেপে উঠেছিলেন। পার্শ্ববর্তী একটি জেলার একজন স্বেচ্ছাসেবক বিবিসিকে এসব জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘তালেবানরা এই বিপর্যয় মোকাবিলা করতে সক্ষম না । সেখানে কোনো ব্যবস্থা নেই।
‘আমরা আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য আশাবাদী হতে পারি না। বিশ্ব আফগানিস্তানকে ভুলে গেছে।’
তালেবান দখলের আগেও দেশটির বৃহত্তর শহরগুলোতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাড়া দেয়ার ক্ষমতা সীমিত ছিল জরুরি পরিষেবাগুলোর। সেখানে কয়েকটি বিমান এবং হেলিকপ্টার পাওয়া যায়।
পাকতিকার চিকিৎসা কর্তৃপক্ষের মতে, এই অঞ্চলে ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাকতিকা প্রদেশের চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘তাদের অঞ্চলে ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে।’
পাকতিকার একটি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, একজন অল্পবয়সী বাবা বুকে ব্যথা নিয়ে কাঁদছেন। তিনি তার পরিবার ও ছোট সন্তানদের বলছেন, ‘তারা (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) যদি আমাকে না চিকিৎসা দিতে পারে, তবে যেন মেরে ফেলে।’
চিকিৎসকরা বলছেন, বেশির ভাগ রোগীই পুরুষ। কারণ নারী ও শিশুদের ধ্বংসাবশেষ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারেনি। কিছু শিশু তাদের পিতামাতা ছাড়াই ক্লিনিকে ছিল। যার মধ্যে আট বছরের একজনের অবস্থা গুরুতর।
একজন চিকিৎসক বলেন, ‘ছেলেটি লোকজনের কাছে তার বাবা-মা ও বোনকে বাঁচানোর আকুতি জানাচ্ছে। তারা ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে।
‘তারপর সে শুনতে পেল একজন আমাকে বলছে, তারা সবাই মারা গেছে। সে তখন চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যায়।’
বিভিন্ন এলাকায় অনেক মরদেহ মাটিতে পড়ে আছে বলে জানা গেছে। সেখানে কোনো সরকারি সাহায্যকর্মী উপস্থিত নেই। তাই প্রতিবেশী এলাকা থেকে লোকজন উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করতে আসছেন।
পাশের শহর উরগুন থেকে একজন স্বেচ্ছাসেবী ধ্বংসস্তূপ থেকে আটকে পড়াদের বের করতে সাহায্য করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে ৪০টি মরদেহ পেয়েছি, বেশির ভাগই ছোট বাচ্চাদের।’
যারা জীবিত উদ্ধার হয়েছেন তাদের অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন। একজন চিকিৎসক বলেন, ‘ক্ষত ধোয়ার জন্য পরিষ্কার পানি নেই। মনে হচ্ছে শিগগিরই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে।’
আরও পড়ুন:মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সু চিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাজধানীর নেপিদোর একটি কারাগারে তাকে রাখা হয়েছে। এতদিন গৃহবন্দি ছিলেন সু চি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী তার নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে। সে সময় গ্রেপ্তার হন শান্তিতে নোবেল জয়ী ৭৭ বছরের সু চি। এক বছর ধরে তাকে রাজধানীর অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়েছিল।
সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কয়েকটি মামলা করে জান্তা সরকার। এসবের কয়েকটিতে ইতোমধ্যে ১১ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন তিনি। যদিও সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন সু চি। বলেছেন, এসব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এর আগেও গৃহবন্দিত্ব কাটিয়েছেন সু চি। দেশটির সামরিক শাসকরা তাকে ১৫ বছর বন্দি রেখেছিল। এ সময়ে সু চি হয়ে ওঠেন গণতন্ত্রের আইকন। তবে জেল-হাজতে পাঠানোর ঘটনা এটাই প্রথম।
ধারণা করা হচ্ছে, জনপ্রিয় এই নেতা কারাগারের ভেতরে স্থাপিত একটি বিশেষ আদালত থেকে বিচারের শুনানিতে অংশ নেবেন।
আদালতের বরাতে বিবিসি বার্মিজ বলছে, সু চিকে বুধবার কারাগারের ভেতর বিশেষভাবে নির্মিত আবাসনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তার সহকর্মী ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট একই রকম নির্জন কারাবাসে আছেন।
সূত্র আরও জানিয়েছে, নতুন জায়গায় ভালো আছেন সু চি। তার দেখভালে তিনজন নারী কর্মীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সামরিক সরকারের সংক্ষিপ্ত বিবৃতি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়, মিয়ানমারের ফৌজদারি আইন অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ‘গোপন বিচারকে’ প্রতারণা বলে নিন্দা জানিয়েছে। কারণ শুনানিতে জনসাধারণ এবং সংবাদকর্মীদের উপস্থিত থাকতে দেয়া হয় না। কেবল তা-ই নয়, সু চির আইনজীবীদের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলাও নিষেধ।
বিবিসির জোনাথন হেড বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর জনসাধারণের দৃষ্টি থেকে উধাও হয়ে যাওয়া সু চি কতদিন নির্জন কারাবাসে থাকবেন তা স্পষ্ট নয়। যদিও তার গৃহবন্দিত্বের অবস্থান প্রকাশ করা হয়নি। তবে তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ছিল বলে জানা গেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, সু চির গৃহকর্মী এবং তার কুকুর তাকে কারাগারে রাখার অনুমতি দেয়া হয়নি।
উসকানি, দুর্নীতি, কোভিড নিয়ম লঙ্ঘন এবং টেলিযোগাযোগ আইন ভঙ্গের অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন সু চি। আরও কয়েকটি মামলার বিচার এখনও শুরু হয়নি। সব অভিযোগ প্রমাণ হলে, ১৯০ বছরের বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ড পেতে পারেন সু চি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন বলেন, ‘আমরা যা দেখছি তা হলো, মিয়ানমারের জান্তা অং সান সুচির প্রতি আরও বেশি কঠোর হচ্ছে।
‘জান্তা সরকার স্পষ্টতই তাকে এবং তার সমর্থকদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।’
সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সাধারণ নির্বাচনে বড় জয় পেলেও, কয়েক মাসের মধ্যে গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে অভ্যুত্থান ঘটে।
সামরিক বাহিনী সু চির বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তোলে। যদিও স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলেছিলেন অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। সে সময় সু চির সঙ্গে গ্রেপ্তার হন তার কমপক্ষে ১৪ হাজার নেতা-কর্মী, ভক্ত।
অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (বার্মা) বলছে, ‘ভিন্নমতের বিরুদ্ধে দমন অভিযানে অন্তত দুই হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য