সামনের বছরেই দেড় শ বছরে পা দিতে যাচ্ছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ট্রাম পরিষেবা। পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ও পরিবেশ দূষণ কমাতে ট্রামসেবা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পরিবহন সংস্থা নিগম।
নিগমের পরিচালক রাজনবীর সিং বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন হিসেবে ট্রামের বিকল্প নেই।’
ঐতিহ্যবাহী কলকাতার ট্রামকে আবারও স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনতে কয়েকটি রুটে এরই মধ্যে সমীক্ষা শুরু করেছেন খড়গপুর আইআইটির অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ভার্গব মিত্র ও তার সহযোগীরা।
রাজনবীর জানিয়েছেন, সমীক্ষা শেষ হতে ৫-৬ মাস সময় লাগতে পারে। শুধু সেবাই নয়, ট্রাম সংস্থা কীভাবে লাভের মুখ দেখতে পারে তাও খতিয়ে দেখবে সমীক্ষক দল।
এর আগে কলকাতার মেট্রোরেল, রাস্তার নির্মাণকাজ, বাস-অটোর মতো যানবাহন চলাচলের সুবিধার জন্য এবং রাস্তায় গতি বাড়াতে বেশির ভাগ রুটে ট্রাম চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০১৬ সালেও ট্রাম রুটের সংখ্যা ছিল ২৫টি। বর্তমানে মাত্র ২টি রুটে ট্রাম চলছে।
কলকাতার মেয়র ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন,দুর্গা পূজার আগেই আবার খিদিরপুর-অ্যাসপ্ল্যানেড, রাজাবাজার-বিধাননগর রুটে ট্রামসেবা চালুর চেষ্টা করছে পরিবহন দপ্তর।
আইআইটি অধ্যাপক ভার্গব মিত্র বলেন, ‘কলকাতার ট্রাম শুধু ঐতিহ্যবাহী নয়, দূষণমুক্ত এবং বাসের থেকেও গণপরিবহনে ট্রামের কার্যকারিতা অনেক বেশি।’
ভারতের প্রথম ও একমাত্র কলকাতার ট্রাম গণপরিবহনে যুক্ত হয় ১৮৭৩ সালে। প্রথমে ঘোড়ায় টানা হলেও ১৯০২ সালে এশিয়ার প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রাম চালু হয় কলকাতায়।
কলকাতা শহরের এই ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে এবং সস্তায় পরিবেশবান্ধব পরিবহন সেবা দিতে রাজ্য পরিবহন দপ্তর দেড় শ বছরের কলকাতার ট্রামকে পুনরায় নতুনভাবে আরও কার্যকর করে শহরের বিভিন্ন রুটে আনতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
আরও পড়ুন:গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ নির্বাচনে মোট ৪৫টি আসনের মধ্যে ২৭টি আসনে জয় পেয়েছে অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (বিজিপিএম)। দলটি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে জিটিএ বোর্ড গঠন করছে।
১০ বছর পর রোববার জিটিএ নির্বাচনের ৪৫টি আসনের ভোট গ্রহণ হয়। এবারের নির্বাচনে ভারতীয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং হামরো পার্টি প্রত্যেকটি আসনে প্রার্থী দেয়। তৃণমূল কংগ্রেস ১০টিতে, সিপিএম ১২টিতে এবং কংগ্রেস ৫টি আসনে প্রার্থী দেয়।
এবারের নির্বাচনে জিটিএ-এর বিরোধিতা করে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, বিজেপি ও জিএনএলএফ। গোর্খা লিগ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি।
বুধবার সকাল আটটা থেকে কড়া নিরাপত্তায় গণনা শুরু হয়। ভোটের ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায় অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ২৭টি আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। তারাই এবার জিটিএ বোর্ড গঠন করছে।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস এবারই ৫টি আসনে জয় পেয়েছে। অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি ৮টি এবং নির্দলীয় প্রার্থীরা ৫টি আসনে জয়লাভ করেছে। সিপিএম ও কংগ্রেস কোনো আসনে জিততে পারেনি।
তৃণমূল নেতা বিনয় তামাং ডালি আসন থেকে ৫০০-এর বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই জয় পাহাড়ের জয়।’
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন হামরো পার্টি প্রধান অজয় এডওয়ার্ড।
আর নিজে দুটি আসনে জয় পেয়েছেন অনিত থাপা। তার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
জয়ের পর অনিত থাপা বলেন, ‘প্রথম থেকেই জেতার বিষয়ে আমরা আশাবাদী ছিলাম। যারা জিতেছেন, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর এটা মানুষের নির্বাচন, তাই তাদের মতামতকে সম্মান দিতে হবে। আমাদের আসল উদ্দেশ্য, পাহাড়ে শান্তি ফেরানো।’
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা এসেছে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর; তবে উল্টো পথেও হেঁটেছে কেউ কেউ। সেই তালিকায় এবার যোগ হলো পাকিস্তানের নাম। সস্তায় রাশিয়ার তেল কেনার কথা ভাবছে এ দেশ।
এরই মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রণালয় শিল্প বিশ্লেষকদের কাছে মত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে বুধবার জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম জিও টিভি।
অর্থনৈতিকসহ নানা সংকটে পড়েছে এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। জ্বালানি আমদানিও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ছাড়ে যে জ্বালানি বিক্রি করছে; তার সুযোগ নিতে চায় শাহবাজ শরিফের দেশ।
এর আগে ভারত ও শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশই রাশিয়ার তেল আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়। এর প্রভাব পড়েছে তেলসমৃদ্ধ দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর। যুদ্ধরত অবস্থাতেও জ্বালানি বিক্রি করে তাদের আয় বেড়েছে অনেক।
পাক-আরব শোধনাগারর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জাতীয় শোধনাগার এবং পাকিস্তানি শোধনাগারসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠিয়ে রাশিয়ার তেল আমদানি নিয়ে যৌক্তিক মত চেয়েছে পাক মন্ত্রণালয়।
জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোসাদিক মালিক বলেন, সস্তায় রাশিয়া থেকে তেল কেনার কথা ভাবছে পাকিস্তান।
তিনি বলেন, রাশিয়া অমাদের কাছে অল্প দামে তেল বেচতে চায়। তবে ব্যাপারটি বিশ্লেষণ করে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে রাশিয়ার জ্বালানি খাত বড় ধাক্কার মুখে পড়ার শঙ্কা ছিল, তবে এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে ভারত-চীনের মতো দেশ। তবে ছাড়ে পাওয়া বেশি পরিমাণ তেল কিনে নিয়েছে চীন।
পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থি বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে গত ফেব্রুয়ারিতে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০১৪ সাল থেকে এ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই শুরু করেন।
এমন প্রেক্ষাপটে বেশ কিছুদিন সীমান্তে সেনা মোতায়েন রেখে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক, সমাজকর্মী গ্রেপ্তারের বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, ‘সাংবাদিকরা যা লেখেন, যা টুইট করেন এবং যা বলেন তার জন্য জেলে যাওয়া উচিত নয়।‘
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের অল্টনিউজের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে স্টিফেন বলেন, ‘জনগণকে কোনো হয়রানির হুমকি ছাড়াই স্বাধীনভাবে নিজের মত প্রকাশের অনুমতি দেয়া গুরুত্বপূর্ণ।’
অল্ট নিউজের সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিন্হা জানান, ২০২০ সালে একটি অন্য মামলায় জুবায়েরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। যে মামলায় আদালত ইতোমধ্যে তাকে যাতে গ্রেপ্তার করা না হয় তার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তাকে অন্য একটি মামলায় সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাতে নিয়েই জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার জুবায়েরকে আদালতে তোলা হবে।
অল্ট নিউজ একটি অলাভজনক ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ সংবাদমাধ্যম। এই ওয়েবসাইটে মূলত খবরের সত্য-মিথ্যাকে বিশ্লেষণ এবং যাচাই করে প্রকাশ করা হয়। অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক আর জুবের।
জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের দুই দিন আগে, গ্রেপ্তার করা হয় তিস্তা সেতালবাদকে। সমাজকর্মী তিস্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি ও আদালতে নিরপরাধ ব্যক্তিদের হেনস্তা করতে মিথ্যা প্রমাণ দেয়ার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা তিস্তা সেতালভাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছে।
আরও পড়ুন:
ভারতজুড়ে আলোড়ন তোলা উদয়পুরের হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দেশবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার সকালে এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘সহিংসতা ও উগ্রপন্থা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। উদয়পুরে যা ঘটেছে, আমি তার তীব্র নিন্দা করছি । আইন যা করার করবে। আমি সকলকে শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানাচ্ছি।’
বিজেপি নেত্রী নুপূর শর্মার হজরত মুহাম্মদ (স.)-কে নিয়ে করা মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন রাজস্থানের উদয়পুরে কানহাইয়া লাল নামের এক দর্জি।
নুপূর শর্মাকে সমর্থন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে কানহাইয়ার শিরোচ্ছেদ করেন মোহাম্মদ রিয়াজ আখতার ও মোহাম্মদ গোশ নামের দুই যুবক।
এই ঘটনার পুরোটাই ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পোস্ট করেন তারা। সেই ভিডিওতে তারা বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার শিরোচ্ছেদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকেও খুনের হুমকি দেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে রাজস্থানজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে রাজ্যটিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ১ মাসের জন্য জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
এক টুইটে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেন, ‘আমি উদয়পুরে এক যুবকের জঘন্য হত্যার নিন্দা জানাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ অপরাধের তলানিতে যাবে।
‘আমি সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাই। এ ধরনের জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে কঠোরতম শাস্তি দেয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়া উচিত।’
আরও পড়ুন:ভারতের জনপ্রিয় ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট AltNews-এর প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়ের ও সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘বিজেপি একটি অপদার্থ দল।’
আসানসোলে মঙ্গলবার এক কর্মিসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলেন।
বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘যখন আপনাদের নেতারা ধর্ম নিয়ে মিথ্যা বলেন, ঘৃণা ছড়ান, তখন আপনারা তাদের গ্রেপ্তার করেন না। আর আমরা কথা বললে খুনি বানিয়ে দেন। জুবায়েরকে কেন গ্রেপ্তার করলেন? তিস্তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে? ওরা কী করেছেন? গোটা দুনিয়া এর নিন্দা করছে।’
AltNews-এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবায়েরকে সোমবার গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বিভিন্ন খবরকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন এই জুবায়ের। দিল্লি পুলিশের তরফে বলা হয়, দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলে জুবায়েরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয় সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদকে। গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে গুজরাট এটিএস মুম্বাইয়ের বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
মহানবীকে (সা.) নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার নাম উল্লেখ না করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমি নাম নেব না। আমরা নাম নিতে চাই না। কিন্তু যারা ধর্ম তুলে গালাগালি করেন, তাদের আপনারা গ্রেপ্তার করেন না কেন? তবে আমাদের সরকার তাকে সমন পাঠিয়েছে। আমরা ছাড়ব না।’
আরও পড়ুন:ভারতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানবীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে ক্ষমতাসীন বিজেপির বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়ে খুন হয়েছেন এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুজনকে। তাদের রাজসমন্দ জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজস্থানের উদয়পুরে মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি পেশায় দর্জি। তার শিরোশ্ছেদ করা হয়।
এক টেলিভিশন বিতর্কে গত মাসের শেষ দিকে মহানবীকে নিয়ে নূপুর শর্মা এমন এক মন্তব্য করেন, যা ভারতের মুসলিমদের পাশাপাশি গোটা মুসলিম বিশ্বকে চরম ক্ষুব্ধ করে। বাধ্য হয়ে তাকে মুখপাত্রের পদ থেকে বহিষ্কার করে বিজেপি। জোরদার করা হয় তার নিরাপত্তা।
মঙ্গলবারের ঘটনায় শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। রাজস্থানজুড়ে ২৪ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে জারি হয়েছে এক মাসের ১৪৪ ধারা।
এডিজি ’ল অ্যান্ড অর্ডার হাওয়া সিং ঝুমারিয়া বলেছেন, ‘জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ৬০০ পুলিশ সদস্যকে উদয়পুরে পাঠানো হচ্ছে। রাজস্থান সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুজন কানহাইয়ালাল নামে পরিচিত এক দর্জির সঙ্গে কাপড়ের মাপ দেয়ার কথা বলে দেখা করেছিলেন। তাদের একজনের করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দর্জি এক ব্যক্তির মাপ নিচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর ব্যক্তিটি একটি ক্লেভার বের করে দর্জির ঘাড়ে আঘাত করেন। এমন সময় দর্জিকে বলতে শোনা যায়, ‘কেয়া হুয়া বাতাও তো সাহি (কী হয়েছে? আমাকে বলুন!)’
দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, একজন নিজেকে মোহাম্মদ রিয়াজ বলে পরিচয় দেন, অন্যজন তার বন্ধু। এই ‘শিরোশ্ছেদ’ নিয়ে গর্ব করতে দেখা যায়। পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি ‘একটি সতর্কবাণী’ দেন তারা।
এক টুইটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেন, ‘আমি উদয়পুরে এক যুবকের জঘন্য হত্যার নিন্দা জানাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ অপরাধের তলানিতে যাবে।
‘আমি সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাই। এ ধরনের জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে কঠোরতম শাস্তি দেয়া হবে। এই পরিস্থিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়া উচিত।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গেহলট বলেন, ‘এসব ভিডিও শেয়ার না করার আহ্বান জানাচ্ছি। শেয়ার করলে অপরাধীদের সমাজে ঘৃণা ছড়ানোর উদ্দেশ্য সফল হবে।’
ভারতের বাণিজ্যিক নগরী মুম্বাইয়ে ভবনধসে মৃত বেড়ে হয়েছে ১৯। আহত আছেন ছয়জন। স্থানীয় সময় সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুর্লার নায়েকনগর সোসাইটির একটি আবাসিক ভবনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া তহবিল দল।
বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (বিএমসি) জানায়, ধ্বংসাবশেষ থেকে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। ঘাটকোপারের রাজাওয়াদি হাসপাতালে আনাদের মধ্যে ২৮ ও ৩০ বছর বয়সী দুজন পুরুষকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শিবসেনা নেতা আদিত্য ঠাকরে সোমবার রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযানের দেখভাল করেন।
মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী সুভাষ দেশাই জানিয়েছেন, নিহতদের পরিবারকে প্রত্যেককে ৫ লাখ রুপি এবং আহতদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘মৃতদের পরিবারকে ৫ লাখ রুপি এবং আহতদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেয়া হবে। ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে জন্য বৈঠক ডাকা হয়েছে।’
সাবেক স্থানীয় করপোরেটর প্রবীনা মোরাজকার বলেন, ‘ভবনের বাসিন্দাদের এবং এলাকার অন্য তিনজনকে ভবনটি খালি করার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তবে যারা ভাড়ায় থাকছিলেন তারা চলে যাননি।’
ভবনের মালিক কে এখনও তা জানা যায়নি বলে জানান তিনি।
বিএমসির অতিরিক্ত কমিশনার অশ্বিনী ভিদে বলেন, ‘ধসে পড়া ভবনটি জরাজীর্ণ ছিল। ২০১৩ সাল থেকে প্রথমে মেরামত, পরে ভবনটি ভেঙে ফেলার নোটিশ দেয়া হয়েছিল।’
এএনআইয়ের সঙ্গে কথা বলার সময় ঠাকরে বলেছিলেন, ‘যখনই বিএমসি নোটিশ জারি করে, তখনই (বিল্ডিংগুলো) নিজেদের খালি করে দেয়া উচিত। অন্যথায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে, যা দুর্ভাগ্যজনক। এখন এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
‘সবাইকে উদ্ধার করাই ছিল অগ্রাধিকার। এরপর এই ভবনগুলো সরিয়ে নেয়া বা ভেঙে ফেলার দিকে নজর দেব। এতে আশপাশের মানুষ সমস্যায় পড়বে না।’
ঘটনাস্থলে ধারণ করা ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, উদ্ধারকর্মীরা ভবনের অবশিষ্টাংশগুলোতে ছাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ধ্বংসাবশেষের নিচে অন্তত চারজনের চাপা পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এনসিপি নেতা সুপ্রিয়া সুলে বলেন, “ভবনধসের কারণে ‘জীবনের ক্ষতিতে অত্যন্ত দুঃখিত।”
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই সময় ভবনটিতে অন্তত ২১ জন ছিলেন।
চলতি মাসে মুম্বাইয়ে এটি তৃতীয় বড় ভবনধসের ঘটনা।
মন্তব্য