ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান চলছে। ক্রেমলিন দাবি করছে, রুশ সামরিক অভিযান পরিকল্পনামাফিকই চলছে। তবে ইউক্রেনের দাবি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রুশ সেনারা। এদিকে পূর্ব ইউক্রেনে বৃদ্ধি পেয়েছে লড়াইয়ের তীব্রতা।
এমন পরিস্থিতিতে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) বলছে, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের ফলে বিশ্বব্যাপী যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে তা স্নায়ুযুদ্ধের ৩৫ বছর ধরে কমতে থাকা পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা আগামী কয়েক দশকে আবার বৃদ্ধি করবে।
সোমবার প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসআইপিআরআই বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ এবং কিয়েভের প্রতি পশ্চিমা সমর্থন বিশ্বের ৯টি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনটি বলছে, স্নায়ুযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো আগামী বছরগুলোতে বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা বাড়বে।
এসআইপিআরআইয়ের ডিরেক্টর ড্যান স্মিথ বলেছেন, যদিও পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও পারমাণবিক অস্ত্র অপসারণের ক্ষেত্রে কিছু সাফল্য এসেছিল, স্নায়ুযুদ্ধের পর বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
জানুয়ারি ২০২১ থেকে জানুয়ারি ২০২২-এর মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা সামান্য কমলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশগুলো কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তবে কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিশ্বে পারমাণবিক ওয়ারহেড সংখ্যা বাড়বে।
স্টকহোমভিত্তিক এই পিস রিসার্চের গণবিধ্বংসী অস্ত্র কর্মসূচির পরিচালক উইলফ্রেড ওয়ান জানিয়েছেন, প্রতিটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র তাদের অস্ত্রাগার বাড়াচ্ছে এবং সামরিক কৌশলেও পারমাণবিক অস্ত্রের ভূমিকাকে তীক্ষ্ণ করছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক প্রবণতা।
বিশ্বে পারমাণবিক মোট পারমাণবিক অস্ত্রের ৯০ শতাংশই আছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। রাশিয়ার কাছে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দেশটির কাছে রয়েছে মোট ৫ হাজার ৯৭৭টি ওয়ারহেড, যা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা পারমাণবিক ওয়ারহেডের থেকে ৫৫০টি বেশি।
সম্প্রতি রুশ পরমাণু বাহিনীর প্রায় ১ হাজার সেনা এক মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ১০০টিরও বেশি সামরিক যান ও আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল লঞ্চার ইয়ারসও সে মহড়ায় ব্যবহৃত হয়েছে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের শুরুর দিকেই পরমাণু বাহিনীকে ‘বিশেষ’ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পুতিনের এ বক্তব্য আসলে অন্য দেশগুলোর প্রতি সতর্কবার্তা। এর মানে যুদ্ধে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আকাঙ্ক্ষা নয়।
ইউক্রেন পরিস্থিতিতে পারমাণবিক যুদ্ধ কতটা বাস্তব?
ইউক্রেনে রুশ বাহিনী কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসছে, এমন দাবি পশ্চিমাদের। এদিকে ইউক্রেনকে সহায়তায় ন্যাটোভুক্ত দেশ ট্যাংক, দীর্ঘপাল্লার রকেট সিস্টেমের মতো আক্রমণাত্মক অস্ত্র সরবরাহ করছে।
যদিও সরাসরি ন্যাটোভুক্ত কোনো দেশ ইউক্রেন যুদ্ধে জড়ায়নি, এরপরও ইউক্রেনকে অস্ত্র দেয়ার বিষয়টি ভালো চোখে দেখছে না রাশিয়া। এমন অবস্থায় যে কৌশলগত পরমাণু বোমা ব্যবহারকে একসময় অসম্ভব ভাবা হতো, তার সম্ভাবনা এখন বাড়ছে।
১৯৯১ সালে স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রগুলো আর কৌশলগত চিন্তার অংশ নয়। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে এই অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা ক্রমে বাড়ছে।
১৯৬২ সালে কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক সংঘাতে জড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। এখন প্রায় ৫০ বছর পর এসে আবারও ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান পারমাণবিক সংঘাতের বিষয়টি আবারও সামনে নিয়ে আসছে।
রাশিয়ার পারমাণবিক হামলায় পশ্চিমা প্রতিক্রিয়া কী হবে?
রাশিয়া যদি ইউক্রেনে সীমিত পরিসরেও পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করে, তাতে পশ্চিমাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে? তা বলা মুশকিল।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া যদি পারমাণবিক, রাসায়নিক বা জীবাণু অস্ত্রের হামলা চালায়, যুক্তরাষ্ট্র চুপ করে বসে থাকবে না।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এখন পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হয়নি। এদিকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে ওয়ারশোতে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ওয়ারশো মেমোরেন্ডাম নামে পরিচিত।
যদিও সেই চুক্তি পশ্চিমারাই লঙ্ঘন করেছে ও পূর্ব ইউরোপের সোভিয়েত ব্লকের অনেকেই এখন ন্যাটো সদস্য। এমনকি ইউক্রেনের সঙ্গে প্রাথমিক বিরোধও ন্যাটোর সদস্য হওয়া নিয়েই।
এখন প্রশ্ন হলো ইউক্রেনকে পরাজিত করতে পুতিন কী পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা থেকে বেরিয়ে আসবেন?
আরও পড়ুন:রাজস্থানের উদয়পুরে দরজিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন আজমির শরিফের প্রধান দেওয়ান জয়নুল আবেদীন আলী খান। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতে ‘তালেবানি মানসকিতা’ কখনো মেনে নেয়া হবে না। কোনো ধর্মই মানবতার বিরুদ্ধে সহিংসতাকে সমর্থন করে না।
মহানবীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে দেশ-বিদেশে ক্ষোভের মুখে আছেন ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। সমালোচনার মুখে পদ হারান তিনি। নানা হুমকি আসতে থাকায়, তার নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ।
সেই নূপুর শর্মার পক্ষে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন উদয়পুরের ওই দরজি। দুই যুবক মঙ্গলবার সেই দরজির দোকানে গিয়ে তার শিরোচ্ছেদ করে এবং তা ভিডিও করেন। পরে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।
এ প্রসঙ্গে আজমির শরিফের প্রধান দেওয়ান জয়নুল আবেদীন আলী খান বলেন, ‘আমি এই কাজটিকে দৃঢ়ভাবে নিরুৎসাহিত করছি। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি। ভারতের মুসলমানরা কখনই মাতৃভূমিতে তালেবানিকরণের মানসিকতা প্রকাশ করতে দেবে না।
আরও পড়ুন:
পদত্যাগ করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। শুধু তা-ই নয়, মহারাষ্ট্র আইন পরিষদের সদস্যপদও ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহা বিকাশ আঘাদি সরকারের এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, সুপ্রিম কোর্ট এমন প্রমাণ চাওয়ার কিছু পর, এই ঘোষণা দেন উদ্ধব ঠাকরে।
এক অনলাইন ভাষণে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘আমরা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান করি। গণতন্ত্র অবশ্যই অনুসরণ করা উচিত।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, বুধবার সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় সর্বোচ্চ আদালত জানায়, এনসিপির অনিল দেশমুখ ও নবাব মালিক বৃহস্পতিবারের আস্থা ভোট দিতে পারবেন। এ সময় শিবসেনার আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সাফ জানিয়ে দেয়, বৃহস্পতিবারই হবে আস্থা ভোট। তার পরই স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯ টার দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন উদ্ধব।
সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য বলেছে, বৃহস্পতিবারের ভোটের ফল ১১ জুলাই তার রায়ের সাপেক্ষে হবে। এদিন ঠাকরের পক্ষের অনুরোধে শিবসেনার বিধায়কদের একটি অংশকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
নিজ দলের ৩৯ জন বিধায়ক উদ্ধবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এতে নেতৃত্বে দিচ্ছেন একনাথ শিন্ডে, যিনি একজন জ্যেষ্ঠ শিবসেনা নেতা।
তারা বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর দলের চেয়ে শিবসেনা অনেক বড় দল। তাদের অবশ্যই বর্তমান সরকার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধতে হবে। উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহা বিকাশ আঘাদি সরকারের কংগ্রেস এবং শরদ পাওয়ারের এনসিপি রয়েছে।
একনাথ শিন্ডে কিছুদিন আগে বিধায়কদের একটি দল নিয়ে গভীর রাতে মুম্বাইয়ে বিদ্রোহ শুরু করেছিলেন। পরে তারা গুজরাটের সুরাটে রওনা হন; স্পষ্টতই বিজেপির নির্দেশে। একদিন পর ঠাকরের প্রতিনিধিরা তাদের কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করতে করেন। পরে বিদ্রোহীরা গুয়াহাটিতে চলে যায়।
গুয়াহাটিতে শিবসেনার সদস্য দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এখন পর্যন্ত তাদের ৩৯ জন এমএলএ আছে, যা পার্টিকে বিভক্ত করার জন্য এবং ঠাকরের অপসারণ নিশ্চিতের জন্য যথেষ্ট। কেবল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, তার পিতা যে দলের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার সভাপতি পদ থেকে সরে যেতে হচ্ছে ঠাকরেকে।
বলা হচ্ছে, বিজেপি এবং কিছু স্বতন্ত্র বিধায়কের সমর্থন নিয়ে শিন্ড পক্ষ ভোটে ক্ষমতাসীন সরকারকে ছাড়িয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা এসেছে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর; তবে উল্টো পথেও হেঁটেছে কেউ কেউ। সেই তালিকায় এবার যোগ হলো পাকিস্তানের নাম। সস্তায় রাশিয়ার তেল কেনার কথা ভাবছে এ দেশ।
এরই মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রণালয় শিল্প বিশ্লেষকদের কাছে মত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে বুধবার জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম জিও টিভি।
অর্থনৈতিকসহ নানা সংকটে পড়েছে এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। জ্বালানি আমদানিও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ছাড়ে যে জ্বালানি বিক্রি করছে; তার সুযোগ নিতে চায় শাহবাজ শরিফের দেশ।
এর আগে ভারত ও শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশই রাশিয়ার তেল আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়। এর প্রভাব পড়েছে তেলসমৃদ্ধ দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর। যুদ্ধরত অবস্থাতেও জ্বালানি বিক্রি করে তাদের আয় বেড়েছে অনেক।
পাক-আরব শোধনাগারর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জাতীয় শোধনাগার এবং পাকিস্তানি শোধনাগারসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠিয়ে রাশিয়ার তেল আমদানি নিয়ে যৌক্তিক মত চেয়েছে পাক মন্ত্রণালয়।
জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোসাদিক মালিক বলেন, সস্তায় রাশিয়া থেকে তেল কেনার কথা ভাবছে পাকিস্তান।
তিনি বলেন, রাশিয়া অমাদের কাছে অল্প দামে তেল বেচতে চায়। তবে ব্যাপারটি বিশ্লেষণ করে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে রাশিয়ার জ্বালানি খাত বড় ধাক্কার মুখে পড়ার শঙ্কা ছিল, তবে এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে ভারত-চীনের মতো দেশ। তবে ছাড়ে পাওয়া বেশি পরিমাণ তেল কিনে নিয়েছে চীন।
পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থি বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে গত ফেব্রুয়ারিতে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০১৪ সাল থেকে এ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই শুরু করেন।
এমন প্রেক্ষাপটে বেশ কিছুদিন সীমান্তে সেনা মোতায়েন রেখে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:মধ্যপ্রাচ্য থেকে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই সৌদি আরব ও আরব আমিরাত সহ মধ্যপ্রাচ্যের বাকি দেশগুলোতে আগামী ৯ জুলাই ঈদুল আজহা উদযাপন করা হবে।
বুধবার রাতে সৌদি আরবের হারামাইন শারিফাইন নিউজের এক প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়।
খবরে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেছে যে, জিলহজ মাসের ১৪৪৩তম চাঁদ বুধবার সন্ধ্যায় দেখা গেছে। এই হিসেবে বুধবার থেকেই সৌদি আরব ও আশপাশের দেশগুলোতে জিলহজ মাসের গণনা শুরু হয়ে গেছে। এবার জিলহজের ৯ তারিখ অর্থাৎ ৮ জুলাই আরাফাতের দিবস পড়েছে। আর ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে ৯ জুলাই।
জানা গেছে, বাংলাদেশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখতে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিলিত হবে। এদিন হিজরি সনের চাঁদ দেখা গেলে আগামী ১০ জুলাই দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে।
ভারতজুড়ে আলোড়ন তোলা উদয়পুরের হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দেশবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার সকালে এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘সহিংসতা ও উগ্রপন্থা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। উদয়পুরে যা ঘটেছে, আমি তার তীব্র নিন্দা করছি । আইন যা করার করবে। আমি সকলকে শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানাচ্ছি।’
বিজেপি নেত্রী নুপূর শর্মার হজরত মুহাম্মদ (স.)-কে নিয়ে করা মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন রাজস্থানের উদয়পুরে কানহাইয়া লাল নামের এক দর্জি।
নুপূর শর্মাকে সমর্থন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে কানহাইয়ার শিরোচ্ছেদ করেন মোহাম্মদ রিয়াজ আখতার ও মোহাম্মদ গোশ নামের দুই যুবক।
এই ঘটনার পুরোটাই ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পোস্ট করেন তারা। সেই ভিডিওতে তারা বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার শিরোচ্ছেদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকেও খুনের হুমকি দেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে রাজস্থানজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে রাজ্যটিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ১ মাসের জন্য জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
এক টুইটে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেন, ‘আমি উদয়পুরে এক যুবকের জঘন্য হত্যার নিন্দা জানাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ অপরাধের তলানিতে যাবে।
‘আমি সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাই। এ ধরনের জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে কঠোরতম শাস্তি দেয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়া উচিত।’
আরও পড়ুন:গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ নির্বাচনে মোট ৪৫টি আসনের মধ্যে ২৭টি আসনে জয় পেয়েছে অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (বিজিপিএম)। দলটি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে জিটিএ বোর্ড গঠন করছে।
১০ বছর পর রোববার জিটিএ নির্বাচনের ৪৫টি আসনের ভোট গ্রহণ হয়। এবারের নির্বাচনে ভারতীয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং হামরো পার্টি প্রত্যেকটি আসনে প্রার্থী দেয়। তৃণমূল কংগ্রেস ১০টিতে, সিপিএম ১২টিতে এবং কংগ্রেস ৫টি আসনে প্রার্থী দেয়।
এবারের নির্বাচনে জিটিএ-এর বিরোধিতা করে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, বিজেপি ও জিএনএলএফ। গোর্খা লিগ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি।
বুধবার সকাল আটটা থেকে কড়া নিরাপত্তায় গণনা শুরু হয়। ভোটের ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায় অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ২৭টি আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। তারাই এবার জিটিএ বোর্ড গঠন করছে।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস এবারই ৫টি আসনে জয় পেয়েছে। অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি ৮টি এবং নির্দলীয় প্রার্থীরা ৫টি আসনে জয়লাভ করেছে। সিপিএম ও কংগ্রেস কোনো আসনে জিততে পারেনি।
তৃণমূল নেতা বিনয় তামাং ডালি আসন থেকে ৫০০-এর বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই জয় পাহাড়ের জয়।’
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন হামরো পার্টি প্রধান অজয় এডওয়ার্ড।
আর নিজে দুটি আসনে জয় পেয়েছেন অনিত থাপা। তার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
জয়ের পর অনিত থাপা বলেন, ‘প্রথম থেকেই জেতার বিষয়ে আমরা আশাবাদী ছিলাম। যারা জিতেছেন, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর এটা মানুষের নির্বাচন, তাই তাদের মতামতকে সম্মান দিতে হবে। আমাদের আসল উদ্দেশ্য, পাহাড়ে শান্তি ফেরানো।’
আরও পড়ুন:ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক, সমাজকর্মী গ্রেপ্তারের বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, ‘সাংবাদিকরা যা লেখেন, যা টুইট করেন এবং যা বলেন তার জন্য জেলে যাওয়া উচিত নয়।‘
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের অল্টনিউজের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে স্টিফেন বলেন, ‘জনগণকে কোনো হয়রানির হুমকি ছাড়াই স্বাধীনভাবে নিজের মত প্রকাশের অনুমতি দেয়া গুরুত্বপূর্ণ।’
অল্ট নিউজের সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিন্হা জানান, ২০২০ সালে একটি অন্য মামলায় জুবায়েরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। যে মামলায় আদালত ইতোমধ্যে তাকে যাতে গ্রেপ্তার করা না হয় তার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তাকে অন্য একটি মামলায় সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাতে নিয়েই জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার জুবায়েরকে আদালতে তোলা হবে।
অল্ট নিউজ একটি অলাভজনক ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ সংবাদমাধ্যম। এই ওয়েবসাইটে মূলত খবরের সত্য-মিথ্যাকে বিশ্লেষণ এবং যাচাই করে প্রকাশ করা হয়। অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক আর জুবের।
জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের দুই দিন আগে, গ্রেপ্তার করা হয় তিস্তা সেতালবাদকে। সমাজকর্মী তিস্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি ও আদালতে নিরপরাধ ব্যক্তিদের হেনস্তা করতে মিথ্যা প্রমাণ দেয়ার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা তিস্তা সেতালভাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য