ইরানে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির তাবাস শহর থেকে ইয়াজদে যাওয়ার পথে বুধবার ওই ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
কর্তৃপক্ষ বলছে, ট্রেনে ৩৪৮ জন যাত্রী ছিলেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। নিহতের সংখ্যাও বাড়তে পারে। দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে তদন্ত শুরু হয়েছে।
জরুরি সেবার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রওনা হওয়ার পর ৫০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে একটি এক্সকাভেটরের সঙ্গে ধাক্কা খায় ট্রেনটি। হাসপাতালে ভর্তি অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
তাবাসের কাউন্টি গভর্নর আলী আকবর রহিমি বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটির সাতটি বগির চারটিই লাইনচ্যুত হয়েছে।
জাতীয় উদ্ধারকারী সংস্থার মুখপাত্র মুজতবা খালেদ সাংবাদিকদের জানান, হতাহতদের উদ্ধারে তৎপরতা চলছে। দুর্ঘটনাস্থলে তিনটি হেলিকপ্টার ও ১০টি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে।
এর আগে ২০০৪ সালে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনায় ইরানে ৩২০ জন নিহত হন।
ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা এসেছে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর; তবে উল্টো পথেও হেঁটেছে কেউ কেউ। সেই তালিকায় এবার যোগ হলো পাকিস্তানের নাম। সস্তায় রাশিয়ার তেল কেনার কথা ভাবছে এ দেশ।
এরই মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রণালয় শিল্প বিশ্লেষকদের কাছে মত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে বুধবার জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম জিও টিভি।
অর্থনৈতিকসহ নানা সংকটে পড়েছে এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। জ্বালানি আমদানিও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ছাড়ে যে জ্বালানি বিক্রি করছে; তার সুযোগ নিতে চায় শাহবাজ শরিফের দেশ।
এর আগে ভারত ও শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশই রাশিয়ার তেল আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়। এর প্রভাব পড়েছে তেলসমৃদ্ধ দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর। যুদ্ধরত অবস্থাতেও জ্বালানি বিক্রি করে তাদের আয় বেড়েছে অনেক।
পাক-আরব শোধনাগারর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জাতীয় শোধনাগার এবং পাকিস্তানি শোধনাগারসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠিয়ে রাশিয়ার তেল আমদানি নিয়ে যৌক্তিক মত চেয়েছে পাক মন্ত্রণালয়।
জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোসাদিক মালিক বলেন, সস্তায় রাশিয়া থেকে তেল কেনার কথা ভাবছে পাকিস্তান।
তিনি বলেন, রাশিয়া অমাদের কাছে অল্প দামে তেল বেচতে চায়। তবে ব্যাপারটি বিশ্লেষণ করে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে রাশিয়ার জ্বালানি খাত বড় ধাক্কার মুখে পড়ার শঙ্কা ছিল, তবে এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে ভারত-চীনের মতো দেশ। তবে ছাড়ে পাওয়া বেশি পরিমাণ তেল কিনে নিয়েছে চীন।
পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থি বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে গত ফেব্রুয়ারিতে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০১৪ সাল থেকে এ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই শুরু করেন।
এমন প্রেক্ষাপটে বেশ কিছুদিন সীমান্তে সেনা মোতায়েন রেখে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক, সমাজকর্মী গ্রেপ্তারের বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, ‘সাংবাদিকরা যা লেখেন, যা টুইট করেন এবং যা বলেন তার জন্য জেলে যাওয়া উচিত নয়।‘
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের অল্টনিউজের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে স্টিফেন বলেন, ‘জনগণকে কোনো হয়রানির হুমকি ছাড়াই স্বাধীনভাবে নিজের মত প্রকাশের অনুমতি দেয়া গুরুত্বপূর্ণ।’
অল্ট নিউজের সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিন্হা জানান, ২০২০ সালে একটি অন্য মামলায় জুবায়েরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। যে মামলায় আদালত ইতোমধ্যে তাকে যাতে গ্রেপ্তার করা না হয় তার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তাকে অন্য একটি মামলায় সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাতে নিয়েই জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার জুবায়েরকে আদালতে তোলা হবে।
অল্ট নিউজ একটি অলাভজনক ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ সংবাদমাধ্যম। এই ওয়েবসাইটে মূলত খবরের সত্য-মিথ্যাকে বিশ্লেষণ এবং যাচাই করে প্রকাশ করা হয়। অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক আর জুবের।
জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের দুই দিন আগে, গ্রেপ্তার করা হয় তিস্তা সেতালবাদকে। সমাজকর্মী তিস্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি ও আদালতে নিরপরাধ ব্যক্তিদের হেনস্তা করতে মিথ্যা প্রমাণ দেয়ার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা তিস্তা সেতালভাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছে।
আরও পড়ুন:
ভারতজুড়ে আলোড়ন তোলা উদয়পুরের হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দেশবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার সকালে এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘সহিংসতা ও উগ্রপন্থা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। উদয়পুরে যা ঘটেছে, আমি তার তীব্র নিন্দা করছি । আইন যা করার করবে। আমি সকলকে শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানাচ্ছি।’
বিজেপি নেত্রী নুপূর শর্মার হজরত মুহাম্মদ (স.)-কে নিয়ে করা মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন রাজস্থানের উদয়পুরে কানহাইয়া লাল নামের এক দর্জি।
নুপূর শর্মাকে সমর্থন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে কানহাইয়ার শিরোচ্ছেদ করেন মোহাম্মদ রিয়াজ আখতার ও মোহাম্মদ গোশ নামের দুই যুবক।
এই ঘটনার পুরোটাই ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পোস্ট করেন তারা। সেই ভিডিওতে তারা বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার শিরোচ্ছেদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকেও খুনের হুমকি দেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে রাজস্থানজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে রাজ্যটিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ১ মাসের জন্য জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
এক টুইটে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেন, ‘আমি উদয়পুরে এক যুবকের জঘন্য হত্যার নিন্দা জানাচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িত সব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ অপরাধের তলানিতে যাবে।
‘আমি সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাই। এ ধরনের জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে কঠোরতম শাস্তি দেয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়া উচিত।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয় নিশ্চিতের পর ক্যাপিটল হিলে এক নারকীয় তান্ডব চালিয়েছিল তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা। যার তদন্ত এখনও চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন সহকারী ক্যাসিডি হাচিনসন ৬ জানুয়ারি ২০২১-এর দাঙ্গা তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেয়ার সময় জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলকে উল্টে দিতে ২০২০ সালে সমর্থকদের ক্যাপিটলে ঝড় তোলার আহ্বান যখন জানিয়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প, তিনি তখন জানতেন যে তার সমর্থকদের কাছে অস্ত্র আছে।
হাচিনসন জানান, শুধু ট্রাম্পই নন, হোয়াইট হাউসের অনেক শীর্ষকর্তাও সহিংসতার সম্ভাব্যতা সম্পর্কে অবগত ছিলেন।
তিনি বলেন, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও ক্যাপিটলে মিছিলে যোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।
হাচিনসন জানান, ট্রাম্প সে সময় বলেন, ‘তারা এখানে আমাকে আঘাত করতে আসেনি, ওদের ভেতরে (ক্যাপিটল হিলে) যেতে দাও।’
সে সময় ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টর জন র্যাটক্লিফ হোয়াইট হাউসকে বলেন, এমন ঘটনা প্রেসিডেন্টের উত্তরাধিকারের (জো বাইডেন) জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
হোয়াইট হাউসের কৌঁসুলি প্যাট সিপোলোন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, দেখে মনে হচ্ছে হোয়াইট হাউস দাঙ্গা উসকে দিচ্ছে।
ট্রাম্প সমর্থকেরা কীভাবে ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের অফিস ক্যাপিটল হিলে আক্রমণ করেছিল সে বিষয়ে কংগ্রেসের একটি কমিটি এখনও তদন্ত করছে।
এই প্রথমবারের মতো তদন্তকারীরা সেই দাঙ্গার সময় হোয়াইট হাউসের ভেতরে ঠিক কী চলছিল সেই বিষয়ে ধারণা পেলেন হাচিনসনের সাক্ষ্য থেকে।
তবে ডনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই তার বিরুদ্ধে করা হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের সিলেক্ট কমিটির তদন্তকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহি:প্রকাশ হিসেবে দেখছেন। সম্প্রতি ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় একটি মোটেলে বন্দুক নিয়ে খেলার সময় গুলিতে এক বছর বয়সী একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ওই শিশুটির দুই বছর বয়সী বোন। বন্দুকটি ছিল আট বছর বয়সী একটি ছেলেশিশুর বাবার।
এ ঘটনায় ওই ছেলেশিশুর বাবা রোডেরিক ডায়নে র্যানডেলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এসক্যাম্বিয়া কাউন্টির পুলিশপ্রধান চিপ সাইমন্স বলেন, ‘একজন আসামির বন্দুক রাখার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৫ বছর বয়সী র্যানডেলকে। তার বিরুদ্ধে অপরাধ কর্মকাণ্ডের প্রমাণ নষ্ট করা, আগ্নেয়াস্ত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থতা ও হেয়ালিপনার অভিযোগ আনা হয়েছে।’
ঘটনার বর্ণনায় পুলিশপ্রধান জানান, ফ্লোরিডার একটি মোটেলের রুমে আট বছরের এক শিশুর হাতে ছিল তার বাবার বন্দুক। গুলিভর্তি বন্দুকটি নিয়ে অন্য দুই শিশুর সঙ্গে খেলায় মেতেছিল সে। এ সময় হঠাৎ একটি গুলি সরাসরি বিদ্ধ হয় এক বছরের একটি শিশুর শরীরে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। আহত হয় তাদের সঙ্গে খেলারত দুই বছরের আরেকটি শিশু।’
গুলির সময় মোটেলের অন্য কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন র্যানডেল ও তার বান্ধবী।
আট বছরে ছেলেশিশুটির বাবা হলেন র্যানডেল। আর এক ও দুই বছর বয়সী কন্যাশিশু দুটির মা হচ্ছেন র্যানডেলের বান্ধবী। গুলিতে নিহত শিশুটির নাম ‘কাচে ব্যাস’।
পুলিশ জানায়, ওই দুই শিশুর মাকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়নি।
র্যানডেল তার অস্ত্রটি শিশু তিনটি যে রুমে খেলছিল সেখানে একটি আলমারিতে রেখেছিলেন। র্যানডেলের ছেলে অস্ত্রটি খুঁজে পায় এবং অন্য শিশু দুটির সঙ্গে তা দিয়ে খেলতে শুরু করে। এ সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
গুলির শব্দ শুনে র্যানডেল শিশুদের রুমটিতে আসেন এবং অস্ত্রটিসহ এক ব্যাগ সন্দেহভাজন মাদক সেখান থেকে সরিয়ে ফেলেন।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘এভাবে অবহেলায় আমরা আমাদের সন্তানদের প্রতিপালন করতে চাই না, তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করতে চাই না। এটি খুবই হতাশাজনক এবং অপ্রত্যাশিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘র্যানডেলের বিরুদ্ধে রয়েছে ১২৯ পৃষ্ঠার অপরাধের দলিল। এগুলোর মধ্যে ১৪টি বড় ধরনের অপরাধ। ৪১ হাজার ডলার বন্ড দিয়ে জামিনে রয়েছেন তিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশপ্রধান আরও বলেন, ‘শিশুর প্রতি অন্যায় ও খামখেয়ালির অপরাধে গত সপ্তাহে এক মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ওই মা তার এক বছর বয়সী ছেলেসন্তানকে গাড়িতে আটকিয়ে রেখে বারে যান। এ সময় গাড়ির সব উইন্ডোজ বন্ধ ছিল। ম্যাডিসন হ্যালি হার্ট নামের ২৭ বছর বয়সী ওই নারীকে সন্তানের প্রতি নিষ্ঠুরতার অপরাধে কারাগারে পাঠানো হয়।’
অস্ত্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা নিয়ে কাজ করা সংগঠন এভরিটাউন ফর গান সেফটির তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর ১৮ বছরের নিচের শিশুদের মাধ্যমে অনিচ্ছাকৃতভাবে কমপক্ষে ৩৯২টি গুলির ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৬৩ জনের।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। পশ্চিমা বাধা উপেক্ষা করে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পরিকল্পনা বুঝতে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে পশ্চিমা গোয়েন্দাদের।
এমন পরিস্থিতিতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জি-সেভেনের সম্মেলন চলাকালে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দাবি করেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নারী হলে ইউক্রেন আক্রমণ করতেন না।
বরিস বলেন, ‘যদি পুতিন একজন নারী হতেন, স্পষ্টই তিনি তা নন, কিন্তু তিনি যদি হতেন, আমি সত্যিই মনে করি না যে তিনি আক্রমণ ও সহিংসতার জন্য একটি পাগলাটে যুদ্ধ শুরু করতেন।’
তার মতে, ইউক্রেনে আক্রমণ বিষাক্ত পুরুষত্বের একটি নিখুঁত উদাহরণ। তাই তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পদগুলোতে নারীদের যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের চার মাস হয়ে গেলেও যুদ্ধ সমাপ্তির কোনো লক্ষণ নেই। ন্যাটো বলছে, যুদ্ধ দীর্ঘ হবে।
তবে জি-সেভেনের নেতারা মরিয়া হয়ে চাইছেন ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি, এমনটাই জানিয়েছেন বরিস জনসন। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, সহসা যুদ্ধ অবসানে কোনো চুক্তির সম্ভাবনা নেই।
তবে জনসনের মতে, পশ্চিমাদের উচিত হবে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাওয়া। ফলে পুতিনের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে জেলেনস্কি ভালো অবস্থানে থাকবেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
দোনবাসের বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক মারিয়া রেসার প্রতিষ্ঠিত অনুসন্ধানী সংবাদ পোর্টালের ওয়েবসাইট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে।
মারিয়া রেসার প্রতিষ্ঠিত ‘র্যাপলার হল’ প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের সমালোচনা করা গুটিকয়েক মিডিয়া আউটলেটের একটি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত এমন সময় নিল, যখন দুতার্তে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার এ মাসেই অর্পণ করতে যাচ্ছেন মে মাসের নির্বাচনে বিজয়ী ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের কাছে। রাজনীতির মাঠে দুতার্তে ও ফার্দিনান্দ মিত্র হিসেবেই পরিচিত।
তবে সহজে হাল ছাড়ছে না র্যাপলার। বুধবার সংবাদমাধ্যমটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবে।
তবে দুতার্তের সমালোচনার কারণে মিডিয়া আউটলেটের ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়নি বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ।
ফিলিপাইন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, একটি আপিলের ভিত্তিতে কোম্পানি পরিচালনার লাইসেন্স প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, কারণ আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌছেছে যে র্যাপলারের ব্যবসায়িক মডেল অসাংবিধানিক।
র্যাপলার হলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ফিলিপাইনের গণমাধ্যমে বিদেশি মালিকানার বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে সংস্থাটি একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে নিজের নিয়ন্ত্রণ বিক্রি করেছিল।
তবে র্যাপলার বলছে, তারা ২০১৫ সালে ওমিদার নেটওয়ার্কের থেকে তহবিল পেয়েছিল। এই নেটওয়ার্ক একটি জনকল্যাণমূলক বিনিয়োগ সংস্থা। ‘ই-বে’র প্রতিষ্ঠাতা বিলিয়নিয়ার পিয়ের ওমিদার এ সংস্থাটি জনহিতৈষী কাজের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন।
এর ঠিক তিন বছর পরই র্যাপলার-কর্মীদের পুরো বিনিয়োগের অর্থ পুরোপুরি দিয়ে দেয় ওমিদার নেটওয়ার্ক। এ ঘটনাই প্রমাণ করে, র্যাপলারের ব্যবসায় ওমিদার নেটওয়ার্ক কোনো নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা নয়।
র্যাপলারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক আদেশ র্যাপলার বন্ধ করার বিষয়টি কার্যকরভাবে নিশ্চিত করেছে।
যদিও মারিয়া রেসা মঙ্গলবার এক মিডিয়া কনফারেন্সে বলেছিলেন যে সাইটটি বন্ধ হবে না।
গত বছর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে র্যাপলারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মারিয়া রেসা রুশ সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশের তালিকায় ফিলিপাইনের নাম রয়েছে।
২০১৬ সালে ফিলিপাইনের ক্ষমতায় বসেন প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। এর পরই রেসা ও তার প্রতিষ্ঠান র্যাপলারকে বেশ কয়েকটি মামলার মুখে পড়তে হয়। বিভিন্ন সময়ে অনলাইনে রেসাকে হুমকিসহ অবমাননাকর বার্তাও পাঠানো হয়।
র্যাপলারকে ‘ভুয়া সংবাদমাধ্যম’ হিসেবে দেখেন দুতার্তে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য