রাশিয়ার হুমকি উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যও ইউক্রেনে দূরপাল্লার রকেট সিস্টেম সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য বলছে, তারা ইউক্রেনে এমটুসেভেনজিরো দূরপাল্লার রকেট সিস্টেম সরবরাহ করবে। ৮০ কিলোমিটার দূরেও এই রকেট সিস্টেম আঘাত হানতে সক্ষম।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছেন, ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থন রাশিয়ার কৌশল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হবে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রও একই ধরনের দূরপাল্লার রকেট সিস্টেম হিমারস সরবরাহ করছে।
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের লঞ্চারগুলো ব্যবহার করতে ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
এর আগে যুক্তরাজ্য ইউক্রেনীয় সেনাদের সাঁজোয়া যান চালানোরও প্রশিক্ষণ দেবে বলে জানিয়েছিল।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেছেন, যে লক্ষ্যবস্তুতে আমরা এখনও আঘাত করিনি, সেগুলোতে নিজেদের অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মস্কো এর উপযুক্ত সমাপ্তিই ঘটাবে।
ভ্লাদিমির পুতিন নতুন লক্ষ্যবস্তু বলতে কোন স্থাপনাগুলোকে বুঝিয়েছেন তা স্পষ্ট করেননি।
পুতিনের মতে, ইউক্রেনকে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহ করার উদ্দেশ্যই হলো যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করা।
এদিকে মস্কো দাবি করেছে, কিয়েভে নতুন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সরবরাহ করা ট্যাংক ও অন্যান্য সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে চলমান রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যেই এবার দেশটির রাজধানী মস্কো থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রিয়াজান শহরের কাছে শুক্রবার সকালে একটি সামরিক পরিবহন বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বেশ কয়েকজন ক্রু নিহত হয়েছেন।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামরিক বিমান ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তবে দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত করেনি রুশ সামরিক বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে, সামরিক বিমানটিতে ৯ বা ১০ জন আরোহী ছিলেন।
দেশটির জরুরি বিভাগ বলছে, দুর্ঘটনায় অন্তত দুইজন মারা গেছেন এবং ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে যাওয়া ৬ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল ইলিউশিন টু-৭৬। বিমানটি একটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনা করছিল। দুর্ঘটনার সময় বিমানে কোনো কার্গো ছিল না।
প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনার সময় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে পাইলট রুক্ষ মাটিতে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়।
ভূমিতে আঘাত কিংবা কোনো অবকাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি। বিমানটি দৃশ্যত একটি খালি মাঠে জরুরি অবতরণ করে এবং অবতরণের আগেই বিমানটির ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছেন।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। ফলে রাশিয়াকে একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হচ্ছে। ইউরোপের রুশ জ্বালানিনির্ভরতাকে কেন্দ্র করে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়াও।
এবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসছে শীতে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে রাশিয়া, এমন আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করে ইউরোপকে সতর্ক করেছেন ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির প্রধান ফাতিহ বিরল।
তিনি বলেছেন, যদিও সম্পূর্ণ সরবরাহ বন্ধ হয়তো হবে না, তবে এমন পরিস্থিতি চিন্তা করে ইউরোপকে জরুরি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউরোপের কয়েকটি দেশ জানিয়েছে, তারা প্রত্যাশার তুলনায় বেশ কম রুশ গ্যাস পাচ্ছে।
যদিও রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, কম গ্যাস সরবরাহ ইচ্ছাকৃত নয়। এ জন্য প্রযুক্তিগত সমস্যা দায়ী।
রুশ এই ব্যাখ্যায় একমত নন ফাতিহ বিরল। তিনি বলছেন, গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়া রাশিয়ার ‘কৌশলগত কারণে’। রাশিয়া মূলত গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার বিভিন্ন অজুহাত খুঁজে বেড়াচ্ছে এবং সম্ভবত পুরোপুরি বন্ধও করে দেবে।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের আগে ইউরোপ তার প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০ শতাংশ আমদানি করত রাশিয়া থেকে। বর্তমানে তা ২০ শতাংশে নেমে এসেছে।
ইউরোপজুড়ে গ্যাস সরবরাহের ঘাটতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার ইতালীয় এনার্জি ফার্ম এনি বলছে যে, রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গ্যাজপ্রম থেকে যে গ্যাস তারা আশা করেছিল তার মাত্র অর্ধেক পেয়েছে।
অন্যদিকে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ার খবর জানিয়েছে স্লোভাকিয়া ও অস্ট্রিয়া।
ফ্রান্স বলেছে, ১৫ জুন থেকে জার্মানি হয়ে কোনো রুশ গ্যাস তারা পায়নি।
এদিকে পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস রুশ মুদ্রা রুবলে গ্যাসের মূল্য পরিশোধে অস্বীকার করায় সেসব দেশে গ্যাস সরবরাহ স্থগিত করে দিয়েছে রাশিয়া।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বন্ধু নয় এমন দেশকে রুশ মুদ্রা রুবলেই গ্যাস কিনতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির প্রধান ফাতেহ বিরল মনে করেন, চলমান গ্যাস সংকটে চাহিদা কমাতে জরুরি স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপকে ন্যায্যতা দিয়েছে, যেমন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবহার বাড়ানো এবং সম্ভব হলে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সময়সীমা দীর্ঘায়িত করা।
যদি রাশিয়ান গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তবে কঠোর ব্যবস্থার প্রয়োজন হতে পারে এবং ইউরোপে পরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খলভাবে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে রেশনিংয়ের প্রয়োজন হতে পারে। এমনটাই মনে করেন ফাতিহ বিরল।
এদিকে রুশ গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে নেদারল্যান্ডসের জলবায়ু ও জ্বালানিমন্ত্রী রব জেটেন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর সব বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত ক্ষতি বিবেচনায় বিশ্বব্যাপী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছিল। ইউরোপের দেশগুলো এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে শুরু থেকেই।
এক অর্থে জার্মানির পর নেদারল্যান্ডসও বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিল।
এর আগে একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার পর জার্মান অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক বলেছেন যে বার্লিনকে রুশ গ্যাসের ঘাটতি মেটাতে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে।
আরও পড়ুন:স্মরণকালের ভয়াবহ তাপদাহে ধুঁকছে ইউরোপ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ঠেকছে যে ফ্রান্সের একটি অঞ্চলে উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের আয়োজন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের গিরন্ড জেলার বন্দর শহর বোর্দোতে আপাতত কনসার্ট এবং বড় জনসমাবেশ করা যাবে না।
গত সপ্তাহে ফ্রান্সের কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কায় করছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।
ফ্রান্সের আবহাওয়া অফিস বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যতীত স্থানগুলোতেও অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ থাকবে। তবে ব্যক্তিগত উদযাপন যেমন বিয়ে করার অনুমতি দেয়া হবে।
স্থানীয় কর্মকর্তা ফ্যাবিয়েন বুসিও ফ্রান্স ব্লু রেডিওকে বলেন, ‘প্রত্যেকই এখন স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন।’
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে তীব্র তাপের সময়কাল আরও বেশি এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, তারা জনগণকে সতর্ক করেছে। এই আবহাওয়ার যেন কেউ বাইরে না বের হয়।
গিরন্ডের আবহাওয়া কর্মকর্তা মেটিও ফ্রান্স বলেন, তীব্র গরমে ধুঁকছে ফ্রান্স। উত্তর আফ্রিকা উড়ে আসা গরম বাতাসের কারণে এমনটা ঘটেছে।
‘প্যারিসে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছতে পারে। এটি খরা দাবানলের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তুলুসের বাসিন্দা জ্যাকলিন বননড। তিনি বলেন, ‘আমি বয়স ৮৬। এখানেই আমার জন্ম। মনে হচ্ছে এটিই আমার দেখা সবচেয়ে খারাপ তাপপ্রবাহ।’
গ্রিড অপারেটর আরটিই জানিয়েছে, এয়ার-কন্ডিশনার এবং ফ্যানের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ফ্রান্সকে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে বাধ্য করছে।
একই দশার মধ্যে আছে স্পেন, ইতালি এবং যুক্তরাজ্যও।
শতাব্দীর উষ্ণতম তাপদাহ অনুভূত হচ্ছে স্পেনে। সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা সর্বোচ্চে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া পরিষেবা-অ্যামেট। আঞ্চলিক সরকার জানিয়েছে, কাতালোনিয়ায় ২০ হাজার হেক্টর জমি দাবানলে পুড়ে গেছে।
ইতালির বৃহত্তম নদী পো-এর বিশাল অংশে পানি এতটাই কম যে, স্থানীয়রা বালির বিস্তৃতির মাঝখান দিয়ে হেঁটে যেতে পারছে। এমনকি যুদ্ধকালীন জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পুনরুত্থিত হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ ইংল্যান্ডে তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় লন্ডনে তৃতীয় স্তরের তাপ-স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি হয়েছে।
চরম তাপ ইউরোপে সীমাবদ্ধ না
গেল সপ্তাহে রেকর্ড তাপমাত্রার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশকে বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। ভারতের দিল্লিতে চলতি গ্রীষ্মের ২৫ দিনে সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে নির্গত হচ্ছে। এ ধরনের গ্যাস সূর্যের তাপকে আটকে রাখে, ফলে গ্রহটি উষ্ণ হয়ে ওঠছে।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের বিরোধিতা শুরু থেকেই করে এসেছে পশ্চিমারা। রাশিয়ার ওপর আরোপ করা হয়েছে একের পর এক অবরোধ।
পশ্চিমা অবরোধের ফলে রুবল তলানিতে গিয়ে ঠেকলে রাশিয়াও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইউরোপের রুশ গ্যাসনির্ভরতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বন্ধু নয় এমন দেশকে রুশ মুদ্রা রুবলেই গ্যাস কিনতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে নেদারল্যান্ডসের জলবায়ু ও জ্বালানিমন্ত্রী রব জেটেন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর সব বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত ক্ষতি বিবেচনায় বিশ্বব্যাপী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছিল। ইউরোপের দেশগুলো এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে শুরু থেকেই।
এক অর্থে জার্মানির পর নেদারল্যান্ডসও বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিল।
এর আগে রোববার একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার পর জার্মান অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক বলেছেন যে বার্লিনকে রুশ গ্যাসের ঘাটতি মেটাতে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে।
আরও পড়ুন:মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে ‘সাহসী লড়াইয়ে’ অবদান রাখার জন্য যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন, সেই পুরস্কারের পদক বিক্রি করে দিয়েছেন রাশিয়ার সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে নিলামে ১০৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারে এই পদক বিক্রি করে যা আয় হয়েছে তার পুরোটাই তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে শরণার্থী হওয়া শিশুদের পেছনে ব্যয় করবেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
গত বছর ১০২তম নোবেল শান্তি পুরস্কার পান ফিলিপিন্স আর রাশিয়ায় কর্তৃত্ববাদী শাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে শাসকের রোষের মুখে পড়া দুই সাংবাদিক ফিলিপিন্সের মারিয়া রেসা এবং রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতভ।
সম্মানজনক এই পুরস্কারের অর্থমূল্য এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার বা ১১ লাখ মার্কিন ডলার। তাদের বিজয়ী নির্বাচন করা হয় বাছাই করা ৩২৯ জনের তালিকা থেকে।
মুরাতভের পদক কারা কিনে নিয়েছেন তা অবশ্য জানায়নি এই মেডেল নিলামে তোলা প্রতিষ্ঠান হেরিটেজ অকশন।
৬০ বছর বয়সী মুরাতভ রাশিয়ার অনুসন্ধানী সংবাদপত্র নোভায়া গেজেটার প্রধান সম্পাদক। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এই পত্রিকার কার্যক্রম স্থগিত করে দেন তিনি।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্ভাচেভের পর সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ হলেন প্রথম রুশ নাগরিক, যিনি শান্তিতে নোবেল পান।
গর্ভাচেভ ১৯৯০ সালে তার নোবেল পুরস্কারের অর্থ দিয়ে নোভায়া গেজেটার পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন। সেই টাকায় কেনা একটি কম্পিউটার এখনও পত্রিকাটির অফিসে প্রদর্শনী হিসেবে রাখা আছে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর ১৯৯৩ সালে একদল সাংবাদিক নোভায়া গেজেটা প্রতিষ্ঠা করেন, যার মধ্যে একজন মুরাতভ। ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তার পত্রিকার ছয়জন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হত্যার শিকার হয়েছেন।
হেরিটেজ অকশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্বর্ণের মেডেল বিক্রি করে পাওয়া অর্থ ইউক্রেন থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়া শিশুদের জন্য ব্যয় করা হবে।
সোভিয়েতের পতনের পর নতুন রাশিয়ায় যে আশাবাদ নিয়ে নোভায়া গেজেটা যাত্রা শুরু করেছিল, তা উবে যেতে সময় লাগেনি। ১৯৯৯ সালে ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সমালোচক আর বিরোধী মতকে ক্রমাগত কোনঠাসা করে ফেলা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতেও মুরাতভ এবং নোভায়া গেজেটা মুক্তমতের পক্ষে লড়াই করে গেছেন। ক্রেমলিনের দুর্নীতি এবং অনিয়মের খবর তারা প্রকাশ করে গেছেন।
১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেয়া শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত আটজন এই পুরস্কারের পদক বিক্রি করে দেন।
ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে স্বল্পস্থায়ী এক চুক্তি রূপায়ন করায় ১৯২৬ সালে এই পুরস্কার পান ফ্রান্সেরই আরিস্তিদ ব্রাঁয়া৷ ২০০৮ সালের এক নিলামে তার পদকের দর ওঠে মাত্র ১৩ হাজার ৬৫০ ডলার৷ এখনও পর্যন্ত এটিই সব থেকে স্বল্পমূল্যে বিক্রিত নোবেল পুরস্কারের পদক।
মার্কিন বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন ১৯৬২ সালে ফ্রান্সিস ক্রিক ও মরিস উইলকিন্সের সঙ্গে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার পান৷ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে জীবিত অবস্থাতেই তিনি প্রায় ৪৮ লাখ ডলারে তার পদকটি বেচে দেন৷
১৯৪৯ সালে সাহিত্যে নোবেল জয়ী উইলিয়ম ফকনারের পরিবার ২০১৩ সালে সেই পদক নিলামে চড়িয়েও প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়৷ কারণ তাদের প্রত্যাশিত মূল্য, ৫ লাখ ডলারের ধারেকাছেও ওঠেনি নিলামের দর৷
আরও পড়ুন:কাস্টিং কাউচ মডেলিং দুনিয়ায় নতুন কিছু নয়। কাজের বিনিময়ে কিংবা কাজের লোভ দেখিয়ে অভিনেত্রী-মডেলদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন কিংবা যৌন হেনস্তাকে বলা হয়ে থাকে কাস্টিং কাউচ। বিষয়টি নিয়ে কয়েক বছর আগে ‘হ্যাশট্যাগ মিটু’ আন্দোলনের ঝড় উঠেছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয়।
এবার মডেলিংয়ের অন্ধকার জগৎ নিয়ে আস্ত একটা তথ্যচিত্র নির্মাণ হয়েছে। স্কাউটিং ফর গার্লস: ফ্যাশনস ডার্কেস্ট সিক্রেট নামে এই তথ্যচিত্রে চারজন নারী নিজেদের সঙ্গে ঘটা যৌন নির্যাতনের কথা শেয়ার করেন। জানান, মডেল হিসেবে কাজ করার সময় তাদের ওপর এ নির্যাতন হয়।
এমন একজনের নাম ক্যারে সাটন। তিনি বলেন, '১৭ বছর বয়সে আমাকে ফ্যাশন জগতের প্রভাবশালী এক পুরুষ ধর্ষণ করেছিলেন।
‘জেরাল্ড মেরি বিয়ে করেছিলেন সুপারমডেল লিন্ডা ইভাঞ্জেলিস্তাকে। তবে যখন তার স্ত্রী শহরের বাইরে থাকতেন, তখন ওই ফরাসি এজেন্ট আমাকে ধর্ষণ করতেন। ১৯৮৬ সালে তো টানা কয়েক সপ্তাহ নির্যাতন চলে।’
জেরাল্ড-ইভাঞ্জেলিস্তার বিয়েবিচ্ছেদ হয় ১৯৯৩ সালে। এর ঠিক ২৭ বছর পর ২০২০ সালে ইভাঞ্জেলিস্তা তার সাবেক সঙ্গী মেরির অভিযুক্তদের সাহসিকতার প্রশংসা করে একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘তাদের কথা শুনে এবং নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমি বিশ্বাস করি তারা সত্যিই বলেছে।’
সাটন যৌন হয়রানির শিকার হওয়া ১১ নারীর মধ্যে একজন যারা প্যারিস প্রসিকিউটরের কাছে সাক্ষী দিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, এলিট মডেলিং এজেন্সির সাবেক ইউরোপীয় প্রধান জেরাল্ড তাদের যৌন হেনস্তা করেছেন।
ফরাসি আইনে, যৌন নির্যাতনের ২০ বছরের মধ্যে এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ৩০ বছরের মধ্যে অভিযোগ করতে হয়।
সাটন বিশ্বাস করেন, দুই দশকে আরও বেশ কয়েকজন জেরাল্ডের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
স্কাই নিউজকে তিনি বলেন, ‘অপরাধীদের কখনও পরিবর্তন হয় না। আমার এগিয়ে আসার কারণ, আমার কন্যাসন্তান আছে। আমি চাই না, সে আমার মতো ট্রমার শিকার হোক।
‘এখনও ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি অনিয়ন্ত্রিত এবং আপত্তিজনক। যে কারণে বেশির ভাগ নাবালিকা এবং অল্পবয়সীদের সঙ্গে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।’
মডেলিংশিল্পের অপব্যবহার
স্কাউটিং ফর গার্লস: ফ্যাশনস ডার্কেস্ট সিক্রেট নামে একটি নতুন তথ্যচিত্রে মডেল হিসেবে কাজ করার সময় সাটন এবং আরও তিনজন নারী যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
তিনি জানান, তিনি জানান, তাকে ফটোগ্রাফারদের বাড়িতে কাস্টিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তাকে শরীর দেখাতে বলা হয়।
‘এটি তাদের কাছে খুব স্বাভাবিক বিষয় ছিল। এমনকি আমাদের গভীর রাতে তাদের কাছে যেতে হতো।’
এজেন্টদের মাধ্যমে বিক্রি
জিল ডড নামে একজন মডেল বলেন, ‘১৯৮০ সালে প্যারিসে একটি নাইট আউটের পর জেরাল্ড আমাকে ধর্ষণ করেছিলেন। আমার বয়স তখন ছিল ২০।’
পরে জিল আদনান খাশোগির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। আদনান প্রয়াত সৌদি অস্ত্র ব্যবসায়ী, যিনি একসময় বিশ্বের ধনী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। ৫০ হাজার ডলারের বিনিময়ে আদনানের সঙ্গে জিলের পরিচয় করিয়ে দেয় মডেল এজেন্সি প্যারিস প্ল্যানিং।
‘আমরা অল্পবয়সী ছিলাম। এজেন্টদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার জন্য আমাদের বিক্রি করে দেয়া হতো।’
ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর রাশিয়ার জ্বালানি খাত বড় ধাক্কার মুখে পড়ার শঙ্কা ছিল, তাদের তেলের ওপর অনেক দেশ থেকে এসেছিল নিষেধাজ্ঞাও। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে চীন। ছাড়ে পাওয়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তেল কিনে নিয়েছে এ দেশ।
সৌদি আরবকে হটিয়ে গত এক বছরে রাশিয়া চীনে সবচেয়ে বেশি তেল রপ্তানি করেছে বলে সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
গত বছরে রাশিয়ার কাছ থেকে চীনের তেল আমদানি বেড়েছে, সংখ্যার হিসাবে আমদানি দাঁড়িয়েছে ৫৫ শতাংশ। সর্বশেষ মে মাসে চীন রাশিয়ার তেল কেনায় রেকর্ড গড়েছে। এতদিন দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশে বেশি তেল বিক্রিতে শীর্ষে ছিল সৌদি আরব।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে দ্বিধাতেই ছিল চীন। রাশিয়া নাকি ইউক্রেনের পক্ষে তাদের সমর্থন দেয়া প্রয়োজন- এ নিয়ে বেশ ভাবতে হয়েছে তাদের। ইউক্রেনের পক্ষে থাকার ইঙ্গিত দিলেও আস্তে আস্তে রাশিয়ার প্রতি দেশটির কোমল মনোভাব ফুটে উঠতে থাকে।
পশ্চিমাসহ ইউরোপের অনেক দেশ যখন রাশিয়ার তেল কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন সেই তেল কেনার ঘোষণা দেয় ভারত ও চীনের মতো কয়েকটি দেশ। চীনের সরকারি তেল আমদানি সংস্থা সাইনোপেসের মতো প্রতিষ্ঠানও তাদের কাছ থেকে তেল নিতে শুরু করে।
চীনা প্রশাসন জানিয়েছে, মে মাসে চীন বন্দর দিয়ে ৮ দশমিক ৪২ মিলিয়ন টন ক্রুড অয়েল আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে। একই সময়ে সৌদি থেকে আমদানি হয়েছে ৭ দশমিক ৮২ মিলিয়ন টন।
সোমবার পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, গত মাসে ইরান থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার ক্রুড অয়েল আমদানি করেছে চীন। রাশিয়া ও সৌদির পর এ দেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করেছে তারা।
ফিনল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিচার্স অ্যান্ড এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে গত সপ্তাহে। ওই প্রতিবেদনে যুদ্ধের প্রথম ১০০ দিনে জ্বালানি বেচে সব মিলিয়ে রাশিয়ার ৯৮ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলার আয়ের তথ্য দেয়া হয়। অর্থাৎ যুদ্ধরত অবস্থায় রাশিয়া দিনে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি রপ্তানি করেছে।
রাশিয়া এই সময়ের মধ্যে জ্বালানি বিক্রি করে যা আয় করেছে, তার একটি বড় অংশ এসেছে ইউক্রেনের বন্ধুপ্রতিম ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো থেকেই। অথচ শঙ্কা ছিল, ইউক্রেন, আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোর আহ্বানে রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ রাখবে তারা।
আল জাজিরা বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ দেশগুলো ইউক্রেনে নগদ অর্থ ও অস্ত্র পাঠায়। একের পর এক রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাও এসেছে এ দেশগুলোর পক্ষ থেকে। একপর্যায়ে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। তার সঙ্গে থাকার আশা দেন যুক্তরাষ্ট্র-ইইউয়ের দেশগুলোর নেতারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে যে পরিমাণ গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দরকার হয়, ইউক্রেন যুদ্ধের আগে তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পাঠাত রাশিয়া। গ্যাসের ৪০ ভাগ এবং জ্বালানি তেলের ২৭ ভাগ যেত এই দেশ থেকে। তবে যুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা এবং ইউরোপের দেশগুলো আমদানির এই মাত্রা আস্তে আস্তে কমিয়ে তিন ভাগের দুই ভাগে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে। অবশ্য উল্টো পথেও হাঁটে কেউ কেউ।
সিআরইএর প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধের প্রথম ১০০ দিনে রাশিয়া যে জ্বালানি রপ্তানি করেছে তার ৬১ ভাগই নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। এর জন্য এসব দেশকে ব্যয় করতে হয়েছে ৬০ বিলিয়ন ডলার। তবে সব মিলিয়ে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানিতে শীর্ষ দেশ চীন। ১৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি কিনেছে দেশটি। এরপর জার্মানি কিনেছে ১২ দশমিক ৭ বিলিয়ন, ইতালি ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন, নেদারল্যান্ড ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন আর ভারত কিনেছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি।
যুদ্ধের ১০০ দিনে জ্বালানির মধ্যে রাশিয়া সবচেয়ে বেশি অর্থ আয় করে ক্রুড অয়েল থেকে। ৪৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে এই জ্বালানি বিক্রি করেছে তারা। গ্যাস বিক্রি হয়েছে ২৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার, তেল বিক্রি হয়েছে ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি বিক্রি করে ৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন এবং কয়লা বিক্রি করে দেশটির আয় হয়েছে ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।
পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থি বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে গত ফেব্রুয়ারিতে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০১৪ সাল থেকে এ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই শুরু করেন।
এমন প্রেক্ষাপটে বেশ কিছুদিন সীমান্তে সেনা মোতায়েন রেখে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য