ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক ও সংগীতশিল্পী ছিলেন আমরিনা ভাট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছিল তার হাজার হাজার ফলোয়ার। গত ২৫ মে গুলি করে তাকে খুন করা হয়। পরিবারের মূল উপার্জনক্ষম সদস্যের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ সবাই।
ঘটনার দিন আমরিনার আত্মীয় যুবায়ের আহমেদ শেখ মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় তিনি গুলির শব্দ শুনতে পান, তারপর চিৎকার।
দ্রুত ছুটে যান ঘটনাস্থলে। দেখেন ঘরে পড়ে আছেন ৩০ বছরের আমরিনা। তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
ঘটনার সময় আমরিনার সঙ্গে ছিলেন তার ১১ বছরের ভাগনে ফারহান। সে জানায়, একটি প্রোগ্রামের বুকিং দেয়ার জন্য দুজন লোক এসেছিল আমরিনার কাছে। প্রোগ্রামের বিষয়ে যখন তাদের কাছে জানতে চান আমরিনা, তখন তারা বন্দুক বের করে গুলি চালায়।
প্রাণ বাঁচাতে আমরিনা ভেতরের দিকে দৌড় দেন। তখন একজন তার পিছু নেয় এবং আবার গুলি করে। ফারহানের হাতেও লাগে একটি গুলি।
আহত আমরিনা এবং ফারহানকে হাসপাতালে নিতে হন্যে হয়ে গাড়ি খুঁজছিল তাদের পরিবার। একসময় গাড়ি পাওয়া যায়। তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যান আমরিনা। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে ভাগনে ফারহান।
ভারত অধ্যুষিত কাশ্মীরে এ ধরনের ধারাবাহিক হামলা কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছে। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই অঞ্চলটির পুরো মালিকানা দাবি করে এলেও দুটি অংশে ভাগ করে কাশ্মীরে শাসন চালাচ্ছে দিল্লি-ইসলামাবাদ। ১৯৮৯ সাল থেকে দিল্লির শাসনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক বিদ্রোহও দেখেছে কাশ্মীরবাসী।
আমরিনার ওপর হামলার কয়েক দিন আগে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন সরকারি কর্মচারীকে তার অফিসের ভেতর গুলি করে হত্যা করা হয় বুদগাম জেলায়। এ সপ্তাহে প্রাণ হারিয়েছেন এক স্কুলশিক্ষক।
আমরিনার মৃত্যুর দুদিন পর কাশ্মীর পুলিশ জানায়, তারা খুনিদের হত্যা করেছে। খুনিরা সম্প্রতি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বায় যোগ দিয়েছিল বলেও দাবি করে পুলিশ। তবে তারা কেন আমরিনাকে টার্গেট করেছিল, তা নিশ্চিত করতে পারেনি কাশ্মীর পুলিশ।
Both killed newly joined local #terrorists identified as Shahid Mushtaq Bhat R/O Hafroo Chadoora #Budgam & Farhan Habib R/O Hakripora #Pulwama. They had #killed TV artist on the instruction of LeT Cmdr Lateef. 01 AK 56 rifle, 4 magazines and a pistol recovered: IGP Kashmir https://t.co/VeoHZRkdEO
— Kashmir Zone Police (@KashmirPolice) May 26, 2022
আমরিনার বাবা খাজির মহম্মদ ভাট বলেন, ‘আমার মেয়ে ছিল পরিবারের মূল উপার্জনকারী ব্যক্তি। ওর ওপর কেন হামলা জানি না। ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ্নে আছি।’
খাজির ভাট জানান, শুরুতে মেয়ের গান গাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে ছিলেন তিনি। সংগীতে মনোযোগ দেয়ার জন্য কিশোর বয়সে তিনি স্কুল ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে আমরিনার মা ২০০৮ সালে মারা গেলে সংগীতে আর বাধা দেননি তিনি।
‘আমার স্ত্রী আমাকে বলেছিল আমরিনা আমার বিরোধিতার কারণে আঘাত পেয়েছিল। তার আবেগকে সম্মান জানানো দরকার আমাদের।’
আমরিনা তার পরিবারের সহযোগিতায় ছোট-বড় কয়েকটি চ্যানেলে কাজ করতে শুরু করেন। তবে জনপ্রিয়তা পান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আপলোড শুরুর পর থেকে।
আমরিনা যখন মারা যান, ইনস্টাগ্রামে তার ২৫ হাজারের বেশি ফলোয়ার ছিল। এই প্ল্যাটফর্মটিতে তিনি সিনেমার গান এবং সংলাপে নিজের লিপ-সিঙ্কিং ভিডিও আপলোড করতেন। শোকবার্তায় প্লাবিত হওয়া সে প্রোফাইলটি এখন মুছে ফেলা হয়েছে।
ইউটিউবে আপলোড করতেন নানা ইস্যু নিয়ে ছোট ছোট ডিভিও। গত সোমবার পর্যন্ত আমরিনার ১৯ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার ছিল। বিদ্যুৎ সংকটসহ নানা সমস্যার তথ্য তুলে ধরায় দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আমরিনা।
খাজির ভাট বলেন, ‘আমরিনা ভারতের স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের মতো অনুষ্ঠানগুলোয় অংশ নিত। বেশ কয়েকটি পুরস্কার রয়েছে তার।
‘সে জনপ্রিয় ছিল, সবাই তাকে চিনত। ওর মৃত্যুর পর বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদরা আমাদের সঙ্গে দেখা করে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন।’
কাশ্মীরের বেশির ভাগ টেলিভিশন শিল্পীদের মতো আমরিনারও অভিনয়ের কাজ পাওয়া কঠিন ছিল। বিশেষ করে যখন থেকে কাশ্মীরে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী দূরদর্শন বন্ধ হয়ে যায়।
প্রবীণ স্থানীয় এক অভিনেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, ‘অভিনয়ের সুযোগ গত কয়েক বছরে কমে গেছে। ২০১৯ সাল থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, যখন ভারত ৩৭০ অনুচ্ছেদ (কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা) প্রত্যাহার করেছিল।’
সরকার কয়েক মাস ধরে চলাফেরা এবং যোগাযোগের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। অনেকটা করোনার সময় লকডাউনের মতো, যা জীবিকাকে আরও চাপে ফেলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সে কারণেই আমরিনা তার দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিরেছিলেন।
ভাগনে ফারহানের কাছে আমরিনা একজন মমতাময়ী খালা, যিনি তার স্কুলের ফি পরিশোধ করতেন, নতুন নতুন জামা কিনে দিতেন, মোবাইলে গেম খেলতে দিতেন।
ফারহান বলে, ‘আগামী বছর আমাকে কম্পিউটার কিনে দেয়ার প্রমিজ করেছিলেন।’
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য