পাকিস্তানে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে উত্তর পাঞ্জাবের মরু অঞ্চল চোলিস্তান। তাপে শুকিয়ে গেছে সব জলাধার। খাওয়ার পানির দেখা দিয়েছে তীব্র সংকট। আর এই সংকটের মুখে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। পানির অভাবে দিন দিন বাড়ছে গবাদিপশুর মৃত্যু। পাকিস্তানের দরিদ্রতম এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবিকা এই গবাদিপশুর ওপর নির্ভর করে।
চোলিস্তানের বাসিন্দাদের দুরবস্থা দেখতে সেখানে চষে বেড়িয়েছে ভাইস নিউজ। মধ্য দুপুরে তারা দেখতে পান, বৃদ্ধ এক খামারি লুটিয়ে পড়েছেন কাদামাটিতে। আশপাশের লোকজন তাকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন। তবে দাঁড়ানোর সক্ষমতা ছিল না বৃদ্ধের।
এ ঘটনার মাত্র কিছু আগে নিজের মারা যাওয়া পশুদের দেহ নিয়ে আসার জন্য ওই কর্দমাক্ত জলাশয়ের কাছে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ ব্যক্তিটি।
একপর্যায়ে তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘হে ঈশ্বর, তাদের (পাকিস্তান সরকার) ধ্বংস করুন। আমার গবাদিপশু তৃষ্ণায় মারা গেছে। আমাদের কোনো রক্ষক নেই। তারা যা করেছে তার জন্য ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
ওই বৃদ্ধের আবেগঘন দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে নিজ দেশের সরকারকে অভিশাপ দিতে দেখা যাচ্ছে অসহায় এই খামারিকে। তার অভিযোগ, সরকারের উদাসীনতার জন্যই চোলিস্তানের মরু অঞ্চলের দরিদ্র কৃষকদের ওপর বিপর্যয় নেমে এসেছে।
سیف سٹی کے ساتھ ساتھ سیف چولستان کے بارے میں بھی سوچیں۔ ایک کیمرہ چولستان پر بھی لگائیں۔۔جہاں بے زبان جانور پانی ہی قلت اور شدید گرمی کی وجہ سے کررہے ہیں۔#چولستان_کو_پانی_دو pic.twitter.com/lsw9UMtpFy
— Valentina Reece (@reece_valentina) May 11, 2022
মার্চের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহে পাকিস্তানের ২২০ মিলিয়ন জনসংখ্যার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশে তীব্রতর হয়েছে, চালিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসযজ্ঞ।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাদ জুগনু বলেন, ‘যদি পরিস্থিতি না বদলায়, তবে আমরা মারা যাব। আপনি খবরে দেখতে পাবেন চোলিস্তানের বাসিন্দারা মারা গেছে।
‘ঈশ্বরের ভালোবাসার জন্য, সরকারকে চোলিস্তান সম্পর্কে ভাবতে হবে। আমাদের পানি দেয়া উচিত। অন্যথায় আমরা মারা যাব।’
বিশ্বের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে ১ শতাংশেরও কম নিঃসরণ করে পাকিস্তান। তবে জার্মানওয়াচের ২০২১ সালের সমীক্ষা বলছে, আবহাওয়ায় পরিবর্তনের কারণে দেশটি এখনও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় অষ্টম অবস্থানে আছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোয় পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই অঞ্চলের মানুষ এবং প্রাণীরা পানিশূন্যতায় ভুগছে, হিটস্ট্রোকের বড় ঝুঁকিতে আছে।
চোলিস্তানে তীব্র তাপমাত্রা এবং কম বৃষ্টিপাতের ফলে কূপগুলো শুকিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ফসল। বাধ্য হয়ে অঞ্চল ছেড়ে যাচ্ছে বহু মানুষ।
রেহাই পাচ্ছে না পশু-পাখিরাও। এই অঞ্চলে বাস করা দুই লাখ মানুষের আয়ের অন্যতম উৎস গবাদিপশু। গত কয়েক দিনে অন্তত ৫০ প্রাণী মারা গেছে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সংখ্যাটা ২০০-র কাছাকাছি।
জুগনু বলেন, ‘চোলিস্তানের পরিস্থিতি ভয়াবহ। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় চারদিকে খরা। অনেক প্রাণী মারা গেছে। কিছুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
বিষয়টি আমলে নিয়েছে প্রশাসন। জরুরি ত্রাণ ও চিকিৎসা শিবির স্থাপন করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বিশুদ্ধ পানি আছে এমন জায়গায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে মানুষ ও গবাদিপশুকে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে আরও পরিকল্পনা নিচ্ছে পাকিস্তান সরকার।
তবে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ব্যবস্থা আগেই নিতে পারত সরকার। এতে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা কমানো যেত অনেক। গ্রীষ্মে যখন থেকে তাপদাহ বাড়তে শুরু করেছিল, সে সময় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভূগর্ভস্থ পানির জন্য ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টের অভাবকে দায়ী করছেন বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য পুকুরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হতো না তাদের। সরকার প্রতিবেশী অঞ্চল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে চোলিস্তানে পানি সরবরাহ করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করলেও, পাইপগুলো শুকিয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে খরা মৌসুমে পানি সরবরাহের জন্য নিয়মিত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:ডলারের বিপরীতে ভারতের মুদ্রা রুপির দাম কমা অব্যাহত রয়েছে এবং জুন মাসে ভারতে বাণিজ্য ঘাটতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মঙ্গলবার আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় ডলারের বিপরীতে খোলা হয়েছিল ৭৯.০৪ রুপি। সোমবার যেখানে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বন্ধ হয়েছিল ডলারের বিপরীতে ৭৮.৯৫ রুপিতে।
অপরিশোধিত তেল ও কয়লা আমদানি বৃদ্ধির ফলে ভারতে জুনে বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড ২৫.৬৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। মে মাসে এই বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৪.৩০ বিলিয়ন ডলার। এই ঘাটতি রুপির ওপর আরও চাপের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
২০২১-এর জুন মাসে এই ঘাটতি ছিল মাত্র ৯.৬১ বিলিয়ন ডলার।
এই বছর ডলারের বিপরীতে রুপির মূল্য ৬ শতাংশ কমেছে এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ডলারের বিপরীতে রেকর্ড পতন হয়েছে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের শেয়ার বাজার থেকে পিছু হটে যাচ্ছে।
স্টক এক্সচেঞ্জের পরিসংখ্যান বলছে, বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সোমবার পুঁজিবাজারে ২ হাজার ১৪৯ কোটি রুপির শেয়ার বিক্রি করেছে।
আরও পড়ুন:ভারত সরকার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের চলমান দ্বন্দ্ব এবার আদালতে গড়িয়েছে। টুইটার ইন্ডিয়া ভারত সরকারের ইলেকট্রনিকস ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের লিখিত নির্দেশের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে।
কর্ণাটক হাইকোর্টে মঙ্গলবার টুইটার ইন্ডিয়ার দাখিল করা আবেদনে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অসম ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর ধারা ৬৯ (ক) এর অধীনে জারি করা মন্ত্রণালয়ের বিষয়বস্তু ব্লক করার আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেছে।
আদালতে দাখিল করা আবেদনে টুইটারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া ব্লকিং আদেশগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি আইনের ৬৯ (ক) এর আলোকে উল্লেখযোগ্যভাবে ঘাটতিপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রেই ব্লক আদেশের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছে যে এটি ঠিক কীভাবে ৬৯(ক) ধারায় পড়ে।
এর আগে ২৭ জুন ভারতের ইলেকট্রনিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে পাঠানো নতুন এক নোটিশে বলা হয়েছিল, মন্ত্রণালয় থেকে ৬ ও ৯ জুন পাঠানো নোটিশ মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে টুইটার।
নোটিশে বলা হয়েছে, সরকারের সব শর্ত মানতে হবে টুইটারকে। অন্যথায় ভারতে তারা অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা হারাবে। ফলে যাবতীয় পোস্টের জন্য দায় নিতে হবে টুইটারকেই।
ভারত সরকার অভিযোগ করে আসছে, ‘তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ধারা ৬৯-এর অধীনে কিছু বিষয়বস্তু প্ল্যাটফর্মটি থেকে সরিয়ে নেয়ার নোটিশগুলোতে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি।’
ভারতের টুইটারের চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসারকে উদ্দেশ করে দেয়া এক বার্তায় বলা হয়েছিল, ‘যদি টুইটার তথ্য ও প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘন করতে থাকে, তাহলে আইনের অধীনেই এর প্রতিক্রিয়া পাবে।’
তথ্যপ্রযুক্তি আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যবহারকারী অপরাধমূলক কিংবা অবমাননাকর কোনো কিছু পোস্ট করলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকেই নিতে হবে। সেটা টুইটার, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ যেকোনো প্রতিষ্ঠানই হতে পারে।
এখন পর্যন্ত ভারতে ব্যবসা পরিচালনা করা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ‘মধ্যস্থতাকারী’র সুবিধা পেয়ে এসেছে। বিতর্কিত ও অনৈতিক কোনো পোস্টের দায় সরাসরি প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়েনি।
ভারত সরকার এবার জানিয়ে দিয়েছে, এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হতে পারে। ফলে দোষী সাব্যস্ত হলে ৭ বছরের জেল এবং জরিমানা হতে পারে টুইটারের কর্মকর্তাদের।
টুইটারের দাবি, কেন্দ্রের কিছু নির্দেশ পুরোপুরি অযৌক্তিক। সেসবের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার আবেদন জানিয়েছে টুইটার। কারণ কিছু কনটেন্ট ব্লক করলে তা বাকস্বাধীনতার লঙ্ঘন হতে পারে।
তবে কেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, টুইটারকে আইন মানতেই হবে।
এর আগে চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে টুইটারের অভ্যন্তরীণ কিছু তথ্য প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক অ্যাকাউন্ট ও টুইট ব্লক করতে বলা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল আন্তর্জাতিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ফ্রিডম হাউস, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে কিছু টুইট।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয় এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি)। প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক ‘দাতুক সেরি’ খেতাবধারী এক ব্যবসায়ী।
কুয়ালালামপুর ও সেলাংগরে এই অভিযান চালানো হয় বলে বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
অভিবাসী শ্রমিকদের নিবন্ধন নিয়ে একটি কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত ছিল এই প্রতিষ্ঠানগুলো।
অভিযানে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে তদন্তের স্বার্থে কয়েকজনকে আটক করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সূত্র বলেছে, কর্মী নিয়োগ নিয়ে পুত্রজায়া ২০১৫ সালে সংস্থাগুলোর তৈরি কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা ব্যবহার করতে সম্মত হয়েছিল। বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকও (এমওইউ) হয়েছিল।
যে ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়েছে, সম্প্রতি অভিবাসী কর্মীদের নিয়োগের জন্য নির্বাচিত ২৫টি বাংলাদেশি এজেন্সির বেশির ভাগই তার নিয়ন্ত্রণে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র বলছে, মালয়েশিয়ায় কাজ করতে চাওয়া বেশির ভাগ বিদেশি কর্মীর কাছ থেকে হাজার হাজার রিংগিতের মতো অতিরিক্ত ফি নেয়া হয় বলে অভিযোগ।
এ সমস্যা নিয়ে বেশ কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং রাজনীতিবিদ সোচ্চার হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া প্রভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। এমন প্রেক্ষাপটে অভিযান শুরু করল এমএসিসি।
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানানের কাছে অভিযানের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চিত কিছু না।'
আরও পড়ুন:ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটাক্ষ করা বিজেপি মুখপাত্রকে শিরশ্ছেদ করতে পারলে নিজের বাড়ি দিয়ে দিবেন এমন বক্তব্য দেয়া ভারতের রাজস্থানের আজমির শরিফের একজন ধর্মগুরুকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পুলিশ।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া এই ধর্মগুরুর নাম সালমান চিশতি।
একটি ভিডিওক্লিপ নিয়ে এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার পর রাজস্থান পুলিশ সালমানের সন্ধানে ছিল।
সেই ভিডিওক্লিপে সালমান চিশতিকে বলতে দেখা যায়, নূপুর শর্মাকে যে তার কাছে নিয়ে আসবে, তিনি তাকে তার বাড়ি দিয়ে দিবেন। তিনি নূপুর শর্মাকে নবীকে অবমাননা করার জন্য গুলি করে মেরে ফেলতেন।
তিনি ভিডিওতে নূপুর শর্মাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনাকে সব মুসলিম দেশকে জবাব দিতে হবে। আমি রাজস্থানের আজমির থেকে বলছি এবং এই বার্তাটি আমি হুজুর খাজা বাবার দরবার থেকে বলছি।’
তবে ভিডিওর সত্যতা এনডিটিভি যাচাই করতে পারেনি।
তবে আজমির শরিফের দেওয়ান জয়নুল আবেদিন আলী খানের অফিস থেকে ভিডিওটির বক্তব্যের নিন্দা জানানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে, বিখ্যাত মাজারটি একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জায়গা।
ভিডিওতে খাদিম যেই বক্তব্য দিয়েছে তা দরগাহর পক্ষ থেকে দেয়া বার্তা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। মন্তব্যটি একজন ব্যক্তির বিবৃতি এবং এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।
এর আগে উদয়পুরের দর্জি কানহাইয়া লাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নুপূর শর্মার পক্ষে পোস্ট দেয়ায় তাকে শিরশ্ছেদ করা হয়।
কানহাইয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই ব্যক্তি রিয়াজ আখতারি ও ঘৌস মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রাজস্থানের রাজ্য পুলিশ সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে- এমন মন্তব্য করা লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আরও পড়ুন:ভারতের উত্তরপ্রদেশে হিন্দু দেবদেবীর ছবি ছাপা ছিল এমন খবরের কাগজে মুড়ে মুরগির মাংসের খাবার বিক্রির অভিযোগে এক রেস্তোরাঁ মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেস্তোরাঁ মালিক মহম্মদ তালেবের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
দেবদেবীর ছবিযুক্ত কাগজে খাবার বিক্রি করে হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ তুলে তালেবের দোকানের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্যটির উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ এই বিক্ষোভ করে।
পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
যেভাবে ঘটনার শুরু
উত্তরপ্রদেশের সম্ভল শহরে তালেবের রেস্তোঁরাটির নাম ‘মেহেক’। বেশ পুরনো এই রেস্তোরাঁ থেকে অনেকেই মাটন কাবাব, চিকেন তান্দুরির মতো খাবার পার্সেল করে নিয়ে যায়।
গত ১ জুলাই থেকে ভারতে পলিথিনের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে দোকানিরা বাধ্য হয়ে কাগজের ব্যাগ বা খবরের কাগজের ঠোঙাতেই ক্রেতাদের হাতে জিনিসপত্র তুলে দিতে শুরু করেছেন। তালেব দোকানে ব্যবহার করছিলেন পুরনো খবরের কাগজ। আর হিন্দুদের নবরাত্রি উৎসবের সময় প্রকাশিত সেই কাগজগুলোতে ছিল নানা হিন্দু দেবদেবীর ছবি।
সেই কাগজে মুড়ে মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি খাবার বিক্রি করা হচ্ছে বলে রোববার খেয়াল করেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। তারা রেস্তোরাঁটির সামনে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন।
হিন্দু জাগরণ মঞ্চের জেলা সভাপতি কৈলাস গুপ্তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তালেব ও তার দোকানের কর্মীরা।
রাজ্য পুলিশ যা বলছে
সম্ভলের পুলিশ সুপার চক্রেশ মিশ্রা মঙ্গলবার টুইটারে জানান, রেস্তোরাঁয় হিন্দু দেবদেবীদের ছবি সংবলিত কাগজে মুড়ে মাংস বিক্রি করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ দোকানের মালিক তালেব ও কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তাদের ওপর ছুরি-চাকু নিয়ে হামলার চেষ্টা চালানো হয়।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ এরপর তালেবকে গ্রেপ্তার করে। আদালতের নির্দেশে তাকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
‘এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। কেউ যাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে না পারে সে ব্যাপারেও পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’
তালেবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো এবং ইচ্ছাকৃতভাবে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
‘সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত’
এদিকে রেস্তোরাঁটির একজন কর্মী জানিয়েছেন, তাদের মালিক কাবাডি বা পুরনো জিনিসপত্রের দোকান থেকেই ওই খবরের কাগজগুলো ঠোঙা বানাতে কিনে এনেছিলেন। তারা কেউ খেয়াল করেননি যে তাতে হিন্দু দেবদেবীর ছবি আছে।
এই ঘটনা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত বলে তিনি দাবি করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়
ভারতে সোশ্যাল মিডিয়াতে এ ঘটনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। একদল বলছেন, হিন্দু দেবদেবীদের যারা এভাবে অপমান করার সাহস পায় তাদের এ ধরনের শাস্তিই প্রাপ্য।
আরেক দল বলছে, তালেব যদি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে গ্রেপ্তার হন তাহলে বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মা এখনও জেলের বাইরে কেন?
প্রটোকল রুটে প্রথমবারের মতো ভারত থেকে বাংলাদেশে দুই হাজার টন ন্যাপথা রপ্তানি করা হয়েছে।
রোববার ওটি সাংহাই এইট নামের একটি বার্জ পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দর থেকে ১৮ কোটি টাকা মূল্যের ন্যাপথা নিয়ে বাংলাদেশের অ্যাকোয়া রিফাইনারি সংস্থার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে আনুষ্ঠানিকভাবে নদীপথে বার্জ যাত্রার সূচনা করেন হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমল কুমার মেহেরা এবং ইন্ডিয়ান অয়েলের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পার্থ ঘোষ।
পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরের আইওসি রিফাইনারি থেকে ১৮ কোটি টাকার ন্যাপথা নিয়ে রওনা হওয়া বার্জটি প্রথমে ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জে পৌঁছবে। সেখান থেকে চালানটি যাবে নরসিংদী জেলায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে আমেরিকান প্রযুক্তিতে গড়ে ওঠা অ্যাকোয়া রিফাইনারিতে।
হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমল মেহরা বলেন, ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে প্রটোকল রুটে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগের কার্যকারিতা দিন দিন বাড়ছে। হলদিয়া বন্দর ও শিল্পগুলোর বাড়তি বাণিজ্যের সুযোগ করে দিয়েছে এই প্রটোকল রুট।’
প্রটোকল রুটের কার্যকারিতাকে গুরুত্ব দিয়ে হলদিয়া বন্দরের রপ্তানি বাড়াতে মাল্টিমোডাম হাব ও জেটি তৈরি করা হয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রটোকল রুটে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বাণিজ্যের সূচনা করেন ভারতের জাহাজ মন্ত্রী।
আইওসির ডিরেক্টর পার্থ ঘোষ বলেন, ‘হলদিয়া থেকে রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে হলদিয়া রিফাইনারির নতুন সম্পর্ক তৈরি হলো। ন্যাপথা ছাড়াও বাংলাদেশে হাই স্পিড ডিজেল, হার্সেল অয়েল, সালফার পেটকোকের বিপুল চাহিদা রয়েছে। আগামী দিনে এই পণ্যগুলো বার্জে করে বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হলো।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢুকেছিলেন হাসনাবাদের হাফিজুল মোল্লা। জামার মধ্যে লোহার রড লুকিয়ে তার কালীঘাটের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢোকার কারণ খতিয়ে দেখছেন লালবাজারের পুলিশ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেড প্লাস নিরাপত্তা বেষ্টনী গলে শনিবার রাত ১টার পর পরগনার হাসনাবাদের নারায়ণগঞ্জের হাফিজুল মোল্লা তার বাড়িতে ঢোকে।
হাফিজুল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কনফারেন্স রুমের পেছনে ৭ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিল। রোববার শিফট পরিবর্তনের সময় নিরাপত্তাকর্মীরা দেখে ফেলে তাকে। তারা তাকে কালীঘাট থানার হাতে তুলে দেয়।
ব্যবস্থা নেয়া হয় ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে। উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদেরও এ বিষয়ে কৈফিয়ত দিতে বলা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেয়া হয়।
পুলিশের গাফিলতি নিয়েও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার।
হাফিজুল মোল্লাকে সোমবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল বলেন, ‘কী উদ্দেশ্যে হাতে লোহার রড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে তিনি বাড়িতে ঢুকলেন, পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে প্রশ্ন করতে হবে।’
পুলিশ জানায়, এর আগেও একবার নবান্নে ঢুকে পড়ায় পুলিশ তাকে ধরেছিল।
হাফিজুলের বাবা এ বিষয়ে বলেন, 'ছেলের মাথা খারাপ। রাত হলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। আগে একবার হাসনাবাদ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল । একবার নবান্নে ঢুকে পড়ায় পুলিশ ধরেছিল । এবার শুনছি, দিদির বাড়িতে ঢুকেছিল।'
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় হাফিজুলের নামে কালীঘাট থানায় এফআইআর করেছেন। তার ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৫৮ ধারায় হাফিজুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মন্তব্য