ইউক্রেনীয় এক শরণার্থী তরুণীর প্রেমে পড়ে স্ত্রীকে ত্যাগ করেছেন টনি গার্নেট নামের এক ব্রিটিশ। দুই সন্তানের বাবা তিনি।
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২২ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় ওই তরুণীর নাম সোফিয়া কারকাদিম। যুদ্ধ থেকে বাঁচতে দেশ থেকে পালিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ইয়র্কশায়ারের ব্রাডফোর্ডে শরণার্থী হিসেবে জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। আর নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করা টনি গার্নেটের পরিবার গত মে মাসের শুরুর দিকে তাকে আশ্রয় দিয়েছিল।
কিন্তু সোফিয়াকে আশ্রয় দেয়ার মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই টনির সংসারে আগুন লাগে। এত দিনের সুখী দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনেছেন তিনি।
টনি জানিয়েছেন, ওই ইউক্রেন সুন্দরীর প্রেমে পড়েছেন তিনি এবং বাকি জীবন তার সঙ্গেই কাটাতে চান।
পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভ শহর থেকে পালিয়ে আসা সোফিয়া দাবি করেছেন, টনির সঙ্গে পরিচয়ের পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার প্রেমে পড়ে গেছেন তিনি। যদিও সেই সময়টিতে টনি আর তার স্ত্রী লর্না খুব প্রেমময় দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছিলেন।
টনি বলেন, ‘সোফিয়ার জন্য আমার যে অনুভূতি কাজ করেছে তা আগে কখনও হয়নি।
টনির পরিবার সোফিয়াকে রাশিয়ার আক্রমণ থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছিল। এ বিষয়ে টনি দ্য সানকে জানিয়েছিলেন, তিনি একটি ভালো কাজ করতে চাইছেন।
একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, টনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে গৃহহীনদের সাহায্য করার জন্য প্রস্তাব দেন।
টনি জানান, সোফিয়া খুব কম সময়ে এত আন্তরিক হয়ে উঠেছিলেন যে তার ছয় বছর বয়সী এবং তিন বছরের মেয়েরাও তাকে খুব পছন্দ করেছিল।
টনি স্লোভাকিয়ান ভাষায় কথা বলেন। আর তার প্রেমিকার ভাষা ইউক্রেনীয়। এই দুই ভাষার মধ্যে কিছুটা মিল থাকায় প্রেমের আলাপ জমাতে তাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। আরেকটি বিষয় হলো- এই দুজন যখন প্রেমের কথা বলত, তখন টনির স্ত্রী বুঝতেই পারতেন না তারা কী বিষয়ে কথা বলছেন।
টনি বলেন, ‘আমাদের সময়টা ভালোই যাচ্ছিল। যেকোনো অজুহাতে আমরা একে অপরের কাছে আসার চেষ্টা করি। আমরা যতই কাছাকাছি আসতে থাকি, লর্না ততই রেগে যেতে শুরু করে এবং প্রশ্ন করে, কেন সোফিয়া আমার সঙ্গে সব সময় থাকতে চায়।’
টনি জানান, সময়ের ব্যবধানে সোফিয়ার সঙ্গে শারীরিকভাবেও ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন তিনি। লর্না অবশ্য এসব বিষয় নিয়ে সোফিয়ার প্রতি বেশ বিরক্ত আর ঈর্ষান্বিত ছিল।
টনি বলেন, 'আমার মধ্যে এমন কিছু কাজ করেছে যে, আমি লর্নাকে বলি- সে যদি যেতে চায়, আমিও তাকে ছেড়ে দেব।’
শেষ পর্যন্ত লর্না আর টনির ১০ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানেই শেষ হয়ে গেল।
সরকারি শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের আশায় মালয়েশিয়ায় যাওয়া বাংলাদেশি প্রবাসীদের পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়েক মাস বা তার বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও অসম্মানজনক।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা বিশেষজ্ঞরা হলেন- দাসত্বের সমসাময়িক রূপ, কারণ ও পরিণতি বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টোমোয়া ওবোকাতা, মানবপাচার বিশেষ করে নারী ও শিশুপাচার সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিনিধি সিওভান মুল্লালি, প্রবাসীদের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত গেহাদ মাদি ও রবার্ট ম্যাককরকোডেল (চেয়ার-র্যাপোর্টিয়ার), ফার্নান্দা হপেনহাইম (ভাইস-চেয়ার), পিচামন ইয়োফানটং, দামিলোলা ওলাউই, এলজবিয়েতা কারস্কা এবং ব্যবসা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা দল।
জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘প্রবাসীদের ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং তাদের শোষণ, অপরাধীকরণ ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করার জন্য মালয়েশিয়ার জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার।’
তারা উল্লেখ করেন, অনেক প্রবাসী মালয়েশিয়ায় এসে দেখেন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি নেই এবং অনেক সময় তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও থাকতে বাধ্য করা হয়।
এর ফলে এসব প্রবাসী গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার ও বহিষ্কারের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রবাসী কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে সক্রিয় অপরাধী চক্র। এতে প্রবাসীরা প্রতারিত হচ্ছেন, ঘন ঘন ভুয়া কোম্পানিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে এবং অতিরিক্ত নিয়োগ ফি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। যে কারণে তাদের ঋণের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে।’
তারা বলেন, ‘আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে উভয় সরকারের কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বা এটি প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এটা অগ্রহণযোগ্য এবং এর অবসান হওয়া দরকার।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘এই শোষণমূলক নিয়োগের অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এখন পর্যন্ত এই বেসরকারি ব্যবসা এবং প্রতারণামূলক নিয়োগ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয় দেশের ভূমিকাই অপর্যাপ্ত।’
তারা আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেক অসহায় প্রবাসীদের অপরাধীতে পরিণত করা হয়েছে এবং শোষণের শিকার হওয়ার কথা জানাতে গিয়ে কেউ কেউ তীব্র প্রতিহিংসার মুখোমুখি হয়েছেন।’
বিবৃতিতে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশকে এসব ঘটনার তদন্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের নীতিমালা মেনে চলতে মালয়েশিয়াকে আহ্বান জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘মালয়েশিয়াকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শ্রম অভিবাসনকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে।’
মালয়েশিয়ার ব্যবসাক্ষেত্রগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাত থেকে প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ষা করতে এবং এই ব্যবসাগুলোতে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে তাদের পরামর্শ হচ্ছে, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ, সুরক্ষা ও সহায়তা, মানবপাচারের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনি সুরক্ষা প্রয়োগ এবং দেশের আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা সমুন্নত রাখতে মালয়েশিয়াকে অবশ্যই প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা এর আগে এসব বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন:ইরানের ইস্পাহানে শুক্রবার ‘ইসরায়েলের’ হামলার তাৎক্ষণিক জবাব দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘ঘটনার বিদেশি উৎসের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা বাইরের কোনো হামলার শিকার হইনি এবং আলোচনা হামলার চেয়ে বেশি হচ্ছে অনুপ্রবেশ নিয়ে।’
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইস্পাহানের কাছে বিস্ফোরণের পর কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়নি।
ইস্পাহান শহরের কাছে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন:ইরানের ইস্পাহানে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলের হামলার খবরে শুক্রবার পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে উল্লেখ করে রয়টার্স জানিয়েছে, এশিয়ার শেয়ার ও বন্ডে ধস নামে, যেখানে উল্লম্ফন দেখা যায় স্বর্ণ ও অশোধিত জ্বালানি তেলের দামে।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলার বিষয়টি জানার পর পুঁজিবাজার ও তেলের বাজারে শুরুতে যে প্রভাব পড়ে, সেটি কমে এসেছে। হামলার পরিসর ছোট এবং কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়নি বলে ইরানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমন বাস্তবতা সৃষ্টি হয়।
শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিভিত্তিক এমএসসিআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সূচকের পতন হয় দুই দশমিক ছয় শতাংশ, যেটি পরবর্তী সময়ে কমে দাঁড়ায় দুই শতাংশে।
অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কায় ব্রেন্টের অশোধিত জ্বালানি তেলের দাম শুরুতে চার দশমিক দুই শতাংশ বাড়লেও পরবর্তী সময়ে তা কমে বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়ায় দুই দশমিক চার শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধি কমার পর ব্যারেলপ্রতি ব্রেন্টের অশোধিত তেলের দাম দাঁড়ায় ৮৯ দশমিক ২২ ডলারে।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইস্পাহানের কাছে বিস্ফোরণের পর কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়নি।
ইস্পাহান শহরের কাছে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের তিনটি ড্রোন ইরান ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে দেশটির মহাকাশ সংস্থা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শুক্রবার কোয়াডকপ্টারের ছবি সংযুক্ত করে দেয়া পোস্টে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান লিখেন, ‘তারা (ইসরায়েল) বলেছে যে, আমরা ৫০০ সুইসাইড ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছি...এখন তারা জবাব দিয়েছে এই তিন কোয়াডকপ্টার (ড্রোনসদৃশ আকাশযান) দিয়ে, যার সবগুলোকে ভূপাতিত করা হয়েছে।’
হাসির ইমোজি দিয়ে ওই পোস্টে দালিরিয়ান আরও লিখেন, ‘তারা শুধু বলেছে যে, তারা (হামলার) আগে আমেরিকাকে জানায়নি।’
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের হামলার খবরের মধ্যে ইরানের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম শুক্রবার বলেছে, দেশটির পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদে আছে।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
এদিকে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে লিখেন, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সফলভাবে কিছু ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এ মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কোনো খবর নেই।
ইস্পাহানের কাছে শেকারি সেনা বিমানঘাঁটিতে তিনটি বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ।
আরও পড়ুন:ইরানের একটি স্থানে ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছে এবিসি নিউজ।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি এ খবর জানায়।
এবিসির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার জানায়, ইরানের কেন্দ্রস্থলে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই ইরানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেল।
এবিসির প্রতিবেদনের সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ইস্পাহান, সিরাজ ও তেহরানে বিমান চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে।
ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে ইস্পাহান প্রদেশে। অঞ্চলটিতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কেন্দ্রে থাকা নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রও রয়েছে।
গত শনিবারের হামলার জবাব দেয়ার কথা জানিয়েছিল ইসরায়েল। দেশটি বড় পরিসরে কোনো হামলা চালালে এবং এর জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা করলে গাজা যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলে রকেট ও ড্রোন হামলার পর ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসরায়েলের ঘনিষ্ট দুই মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হিসেবে ইসরায়েলের ওপর তেহরানের ওই আক্রমণ মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক যুদ্ধের ইন্ধন যোগাতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদন থেকে এ খবর জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি অফিস অফ ফরিন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি) জানিয়েছে, ১৩ এপ্রিলের হামলায় ব্যবহৃত ড্রোন উৎপাদনে জাড়িত ইরানের ১৬ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া ইরানের সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য নিষিদ্ধ গোষ্ঠীকে সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করার অভিযোগ এনে দেশটির ইস্পাত উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত পাঁচটি সংস্থা ও গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাহমান গ্রুপকেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ওএফএসি।
অন্যদিকে, ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত সামরিক বাহিনী-সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি ইরানি সংস্থা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে যুক্তরাজ্য।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান। এসব অস্ত্রের বেশির ভাগ ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো।
হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটিতে কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলে জানা যায়। এ হামলায় সাত বছর বয়সী এক ইসরায়েলি শিশু মারাত্মক আহত হয়। এর বাইরে বড় ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ইতোমধ্যে ইরানের জবাবের পাল্টা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের অবশ্যই নিজেদের সুরক্ষা করার অধিকার রয়েছে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের সামরিক তৎপরতাকে নিরুৎসাহিত করে, দেশটির ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ চালিয়ে যেতে ওএফএসিকে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বাইডেন বলেছেন, ‘যারা ইরানকে হামলায় ইন্ধন দেয় ও তা সমর্থন করে, তাদের সবাইকে এটি স্পষ্ট করতে চাই যে, সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেবে।’
ট্রেজারি বিভাগের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও ইরানের বাণিজ্যিক গ্রেডের মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স শিল্পের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স খাতে ইরানের রাশ টেনে ধরতেই তাদের এ সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটির বাইরে উৎপাদিত প্রযুক্তি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
ইসরায়েলে হামলার পর এ অঞ্চলে ইরানের কার্যকলাপের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে চলতি সপ্তাহেই সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র। তার পরপরই বৃহস্পতিবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানাল ওয়াশিংটন।
ইসলামী প্রজাতন্ত্রের দেশ ইরান ও এর নেতাদের আর্থিক শাস্তির মুখোমুখি করতেই ক্যাপিটল হিলে তড়িঘড়ি করে এসব আইন প্রণয়ন করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারাও ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে তেহরানের মিত্র দেশগুলো তথা গাজা, ইয়েমেন ও লেবাননে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবাহের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।
এ বিষয়ে ইইউ-এর পররাষ্ট্র নীতি বিভাগের প্রধান জোসেফ বরেল বলেছেন, ‘তেহরানকে শাস্তি দিতে ও ইসরায়েলের ওপর ভবিষ্যত হামলা প্রতিরোধে সহায়তায় বিদ্যমান ইইউ নিষেধাজ্ঞা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও প্রসারিত করা হবে।’
তবে একইসঙ্গে ইসরায়েলকেও সংযমী হতে বলেছেন তিনি।
বরেল বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক যুদ্ধ, যা বিশ্বের বাকি অংশ বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। তাই যেকোনো মূল্যে আমাদের এটি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য