বিশ্বে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের দেশ হিসেবে পরিচিতি আছে অস্ট্রেলিয়ার, কিন্তু যখন রাজনীতির বিষয় আসে চিত্রটি ভিন্ন হয়ে যায়, যেখানে ৯৬ শতাংশ কেন্দ্রীয় আইনপ্রণেতা শ্বেতাঙ্গ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্লামেন্টে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য কাটিয়ে ওঠার সুযোগ এ বছরের নির্বাচনে ছিল। কিন্তু বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলই তা বেছে নেয়নি। যেমন ভিয়েতনামি বংশোদ্ভুত তু লে তার আসনে নির্বাচনের জন্য প্রাক মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরে পার্টির কর্তারা একজন শ্বেতাঙ্গ নারী ক্রিস্টিনা কেনেলিকে তার বদলে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়।
অথচ কেনেলিকে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ফেরি, ট্রেন, বাস ও অন্য একটি বাসে সিডনির উত্তর সৈকতে তার বাড়ি থেকে ফাউলারে যেতে ৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। অথচ তু লে ছিলেন এখানকারই বাসিন্দা। ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা এই এলাকার সঙ্গে কেনেলির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রতি পাঁচজন অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে একজন অস্ট্রেলিয়ানের শেকড় ইউরোপে নয়। আবার নাগরিকদের ৪৯ শতাংশ হয় অন্য দেশে জন্মেছেন, নয়তো তাদের অভিভাবকরা অন্য দেশে জন্মেছেন।
১৯০১ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত দেশটিতে অশ্বেতাঙ্গদের অভিবাসন নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু সেখান থেকে দেশটি বেরিয়ে আসলেও রাজনীতির ক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য রয়েই গেছে।
ড. সাউথ পোমাসসেন বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা যে বহু সাংস্কৃতিক চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করি, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে তার কাছাকাছিও নেই।’
অন্য পশ্চিমা বহু সাংস্কৃতিক দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই একই বিষয়টি অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
দুই দশক আগেও অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য রাজনীতির ক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের মধ্যেই ছিল। তবে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক দল সচেতনভাবে পদক্ষেপ নিয়ে এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থা অন্যান্য দেশের গণতন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি বদ্ধ। প্রধান দলগুলো যাদের নির্বাচনের জন্য প্রাথমিক বাছাই করে, তাদের প্রায় সবই পদমর্যাদার সাপেক্ষেই। প্রায়শই তারা বর্তমান এমপিদের কর্মী হিসেবেই কাজ করেন। এমন পরিস্থিতিতে অশ্বেতাঙ্গদের মনোনয়ন পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:ভারতের উত্তরাখণ্ডের কুমায়নের একটি গ্রামের ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা ১০ ফুট লম্বা একটি কুমির পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। গ্রামবাসীর ধারণা ছিল ১২ বছর বয়সী গ্রামের এক শিশুকে কুমিরটি মেরে থাকতে পারে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় কুমায়নের খ্যাতিমান ইউএস নগরে গ্রামবাসীর লাঠির আঘাত থেকে আহত কুমিরটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে এক্স-রে করার পরই তার মৃত্যু হয়।
কুমায়নের তরাই পূর্ব বন বিভাগের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার বলেছেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা গ্রামবাসীর কবল থেকে কুমিরটিকে মুক্ত করে আনে এবং গ্রামবাসীর দাবির মুখে সরকারি হাসপাতালে সেই কুমিরের এক্স-রে করা হয়। আমাদের পশু চিকিৎসকরা তার জীবন বাঁচাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু এক্স-রের পরই কুমিরটির মৃত্যু হয়।’
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এক্স-রে করার পর কুমিরের পেটে ছেলেটির কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাওয়া যায়নি।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, সন্ধ্যায় জেলা সদর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে ইউএস নগরের খাটিমা ব্লকের সুনপাহার গ্রামের ১২ বছরের বালক বীর সিং গবাদি পশু চরাচ্ছিলেন। এ সময় তার একটি মহিষ গ্রামের পাশে বয়ে চলা দেবা নদীতে প্রবেশ করে। ছেলেটি মহিষটিকে ফিরিয়ে আনার জন্য নদীতে ঝাপ দিলে মুহূর্তেই সে নিখোঁজ হয়ে যায়।
গ্রামবাসী তার সাহায্যের জন্য ঘটনাস্থলে ছুটে গেলেও তাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। খাতিমা ফরেস্ট রেঞ্জের বন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
সে সময় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী কুমিরটিকে ধরতে জাল নিয়ে নদীতে নামে এবং সন্দেহ করে যে এই কুমিরটিই ছেলেকে আক্রমণ করেছিল।
কুমিরটিকে ধরে নদীর তীরে নিয়ে এসে মারতে থাকে। গ্রামবাসী ভেবেছিল কুমিরের পেট থেকে শিশুটির দেহ উদ্ধার করবে।
বন কর্মকর্তারা অবশ্য কুমিরটিকে এক্স-রে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রামবাসীর কাছ থেকে মুক্ত করেন। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে সক্ষম হননি।
আরও পড়ুন:ইতালির উত্তরাঞ্চলের আল্পস পর্বতমালার মার্মোলাডা হিমবাহ ধসে অন্তত ৭ জন মারা গেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার হিমবাহ ধসের ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু ছাড়াও আরও ৮ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহতদের আশপাশের হাসপাতালগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উদ্ধার করা ৭ মৃতদেহের মধ্যে ৪ জনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন উদ্ধারকারীরা। যাদের মধ্যে তিনজন ইতালীয় এবং এর মধ্যে দুজন পর্বতের গাইড।
জরুরি সেবা বিভাগের মুখপাত্র মিশেলা ক্যানোভা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট পর্বতারোহীদের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত জানা যায়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, এখনও ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে হেলিকপ্টার ও ড্রোন দিয়ে চালানো উদ্ধার অভিযান খারাপ আবহাওয়ার কারণে স্থগিত করা হয়েছে।
যদিও সেরাক নামের হিমবাহের অংশটি ঠিক কী কারণে ভেঙে পড়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বলেছেন, সন্দেহ নেই যে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত জলবায়ু পরিবর্তন।
তিনি জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেবে সরকার।
উদ্ধারকারী সংস্থার মুখপাত্র ওয়াল্টার মিলান দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এই অঞ্চলটি অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রার সম্মুখীন হচ্ছে। হিমবাহের চূড়ার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি চরম তাপ। স্পষ্টতই এটা অস্বাভাবিক কিছু।’
গত ১৭০ বছরে আল্পস পর্বতের হিমবাহের অর্ধেক গলে গেছে। ১৯৮০ সালের পর থেকে এই গলে যাওয়ার গতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আল্পসে ঘন ঘন হিমবাহ ধসের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:খুব শিগগিরই অ্যাপোলো মিশনের পর আবারও চাঁদে ফিরছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এবার নাসা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ঘুরে আসতে নয়, চাঁদে স্থায়ীভাবে থাকতে চাচ্ছে সংস্থাটি। স্পেসএক্সকে সঙ্গে নিয়ে ‘আর্টিমেস’ নাম দিয়ে নতুন এই চন্দ্র অভিযানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে নাসা। কিন্তু নাসার প্রধান বিল নেলসন উল্টো দাবি করেছে, চাঁদ দখলের চেষ্টা করছে চীন।
তবে রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং পাল্টা ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে মহাকাশকে যুদ্ধের স্থানে পরিণত করার জন্য অভিযুক্ত করেছে।
এর আগে নাসার প্রধান প্রশাসক বিল নেলসন জার্মান পত্রিকা বিল্ডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, চীনের সম্ভাব্য চাঁদে অবতরণ নিয়ে বিশ্বকে উদ্বিগ্ন হতে হবে, কারণ চীন তখন বলবে এটি (চাঁদ) এখন আমাদের এবং আপনি বাইরে থাকুন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান সোমবার বিল নেলসনের অভিযোগের জবাবে বলেন, ‘এমনটা প্রথমবার নয় যে নাসার প্রধান তথ্য উপেক্ষা করেছেন এবং চীন সম্পর্কে দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলেছেন।
‘যুক্তরাষ্ট্র ক্রমাগত চীনের স্বাভাবিক এবং যুক্তিসংগত মহাকাশ প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার চালাচ্ছে এবং চীন দৃঢ়ভাবে এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের বিরোধিতা করে।‘
লিজিয়ানের দাবি, চীন বরাবরই অস্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং দেশটি মহাকাশে মানবজাতির অংশীদারির ভবিষ্যৎ প্রচার করে।
তবে জার্মান পত্রিকা বিল্ডের তরফ থেকে নাসাপ্রধান নেলসনের কাছে চীনের মহাকাশে সামরিক উদ্দেশ্যের গতিপথ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, চীনের মহাকাশচারীরা অন্য দেশের উপগ্রহ কিভাবে ধ্বংস করতে হয় তা শিখছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে বেইজিং তার নিজস্ব চন্দ্র স্টেশন নির্মাণ করতে পারে এবং এর ঠিক এক বছর পরই তার পরীক্ষা শুরু করতে পারে।
৭৯ বছর বয়সী নাসাপ্রধান বিল নেলসন চীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী মহাকাশ কর্মসূচির কঠোর সমালোচক।
বেইজিং বরাবরই বলে আসছে, তাদের মহাকাশ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।
বরঞ্চ চীন বলে আসছে, যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশে স্পেস জাঙ্ক তৈরি করছে, আক্রমণাত্মক মহাকাশ অস্ত্র তৈরি করছে এবং মহাকাশকে একটি অপারেশনাল ফ্রন্টিয়ার হিসেবে প্রকাশ্যে ঘোষণা করে মহাকাশ অস্ত্র অভিযানকে উসকে দেয়ার বাজে রেকর্ড রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের সময় মহাকাশ বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর পঞ্চম শাখা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ইউনাইটেড স্টেটস স্পেস কমান্ড নামে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রই আনুষ্ঠানিকভাবে মহাকাশ বাহিনী গঠন করেছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে স্বাধীনতা দিবসের শোভাযাত্রায় নির্বিচারে গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে এই ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিকাগো বন্দুক হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ম্যানচেস্টার থেকে রবার্ট ই ক্রিমো থ্রি নামের ২২ বছর বয়সী এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, তারা বিশ্বাস করে এই হামলার জন্য ক্রিমোই দায়ী।
এর আগে শিকাগোর ইলিনয় শহরের হাইল্যান্ড পার্কে একজন অস্ত্রধারী ছাদ থেকে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ লক্ষ্য করে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রাইফেল দিয়ে গুলি ছোড়ে।
স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে এই হামলা চালানো শুরু হয়, যা কয়েক মিনিট স্থায়ী থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত হন এবং আরও একজন হাসপাতালে নেয়ার সময় মারা যান।
পাশাপাশি এই হামলায় ২৪ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইলিনয়ের গভর্নর জে রবার্ট প্রিটজকার বলেছেন, নির্বিচার গুলি যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্য হয়ে যাচ্ছে।
শিকাগোর নির্বিচার গুলির ঘটনা এমন সময় ঘটল যখন এ ধরনের নির্বিচার গুলির ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির কংগ্রেস বন্দুক নিয়ন্ত্রণে অস্ত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে দেশটি।
আরও পড়ুন:উজবেকিস্তানের কারাকালপাকস্তান প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অন্তত ২৪৩ জন। স্থানীয় সময় সোমবার উজবেকিস্তান কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
রাশিয়ার বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তি সোমবার রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটর অফিসের কর্মকর্তা আবরর মামাতোভকে উদ্ধৃত করে জানায়, নুকুসে ব্যাপক সংঘর্ষের সময় গুরুতর আঘাতে ১৮ জন মারা গেছে।
উজবেকিস্তানের সংবিধানে কারাকালপাকস্তান প্রদেশকে স্বায়ত্তশাসন দেয়া আছে। উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিওয়েভ সম্প্রতি সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদটি বাতিলের পরিকল্পনা করেন। প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে স্থানীয় জনগণ।
প্রাদেশিক রাজধানী নুকুসে শুক্রবার বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষুব্ধরা।
উজবেকিস্তানের ন্যাশনাল গার্ড জানিয়েছে, শুক্রবার বিক্ষোভের সময় ৫১৬ জনকে আটক করা হয়েছিল। তাদের অনেককেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা এদিন স্থানীয় সরকারি ভবনগুলো অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন।
৩ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার মধ্য এশিয়ার দেশটি গত দুই দশকের মধ্যে এমন সহিংস পরিস্থিতি দেখেনি। উদ্ভূত পরিস্থিতে শনিবার সংবিধান সংশোধনের পরিকল্পনা বাতিল করেছে দেশটির সরকার। কারাকালপাকস্তানে জারি হয় এক মাসের জরুরি অবস্থা।
আরাল সাগরের তীরে কারাকালপাকস্তানে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী কারাকালপাকদের বাস। উজবেকের চেয়ে কাজাখ ভাষার সাবলীল তারা।
আরও পড়ুন:কৃষ্ণসাগরে অবস্থিত স্নেক আইল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ ফের নিল ইউক্রেন। দ্বীপটিতে এখন উড়ছে ইউক্রেনের পতাকা। ইউক্রেন অভিযানের শুরুর দিকে দ্বীপটির দখল নিয়েছিল রুশ বাহিনী।
গত সপ্তাহে দ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয় মস্কো। বন্ধ হয়ে যায় অবিরাম গোলাবর্ষণ। ১২৭ দিন রুশ দখলে থাকার পর দ্বীপটিকে ফের নিজেদের করে নিল কিয়েভ। এটিকে কৌশলগত ও প্রতীকী বিজয় হিসেবে দেখছে তারা।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ডের মুখপাত্র নাটালিয়া হুমেনিউক বলেন, ‘সামরিক অভিযান শেষ হয়েছে। স্নেক আইল্যান্ডকে ইউক্রেনের এখতিয়ারে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।’
ইউক্রেন দ্বীপের নিয়ন্ত্রণকে তার দক্ষিণ বন্দরগুলোতে মস্কোর অবরোধ শিথিল করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করেছে। তবে ইউক্রেনীয় সেনারা সেখানে স্থায়ী উপস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাইবে কি না তা স্পষ্ট নয়।
ইউক্রেনের এক সামরিক কর্মকর্তা রোববার গার্ডিয়ানকে বলেছিলেন, ‘স্নেক আইল্যান্ডের আশপাশে কৃষ্ণসাগরের অঞ্চলটি এখনও একটি ‘ধূসর অঞ্চল’। যার অর্থ, প্রযুক্তিগতভাবে ইউক্রেনীয়রা তাদের বাহিনী ফিরিয়ে আনতে চায়নি।’
লুহানস্কের পর এবার রুশ বাহিনীর চোখ এখন দোনেৎস্ক অঞ্চলে। লুহানস্কের গভর্নর সোমবার এ কথা জানিয়েছেন।
রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গভর্নর সের্হি গাইদাই বলেন, ‘স্লোভিয়ানস্ক এবং বাখমুত শহরে ভারী প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে রুশ বাহিনীকে। কারণ পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়া।’
রাশিয়া জানিয়েছে, লাইসিচানস্ক শহর থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রত্যাহারের পর গোটা লুহানস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। যদিও গাইদাই বলেছেন, দুটি ছোট গ্রামে লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
গাইদাই বলেন, ‘লুহানস্ক অঞ্চলের ক্ষতি বেদনাদায়ক। কারণ এটি ইউক্রেনের ভূখণ্ড। ব্যক্তিগতভাবে এটি আমার জন্য বিশেষ। এটি সেই ভূমি যেখানে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং আমি এই অঞ্চলের প্রধানও।
‘লিসিচানস্ক থেকে সেনা প্রত্যাহার ‘কেন্দ্রীকৃত’ এবং সুশৃঙ্খল ছিল। ইউক্রেনীয় সেনাদের জীবন বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় ছিল এ পদক্ষেপ।’
রুশ বাহিনীর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েও কথা বলেন লুহানস্কের গভর্নর। বলেন, ‘শতভাগ সেনা পাঠাবে না তারা। সারিবদ্ধভাবে এগোবে ওরা। কারণ পাল্টা হামলার আশঙ্কা আছে রুশ বাহিনীর।
‘তবুও তাদের (রুশ বাহিনী) এখন লক্ষ্য দোনেৎস্ক অঞ্চল। স্লোভিয়ানস্ক এবং বাখমুতে তারা প্রতিরোধের মুখে পড়বে। বাখমুতে ইতোমধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়েছে।’
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হামলার পরিকল্পনা বাদ দেয়ার পর সামরিক অভিযানকে কেন্দ্রীভূত করে রাশিয়া। পুতিন বাহিনী শিল্পাঞ্চল ডনবাস দখলের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিয়ে গঠিত ডনবাসে মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেন বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, ইউক্রেনে রুশ ভাষাভাষীদের রক্ষায় এই অভিযান। এর আগে, পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী অধ্যুষিত দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য