অঞ্জলি খারিয়া একজন নারী শ্রমিক। ভারতের আসামের ডিব্রুগড় জেলার চাপাটোলি গ্রামের এক চা-বাগানে কাজ করেন তিনি। অন্যান্য শ্রমিকদের মতো প্রতিদিন তাকেও অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এরপরেও কাজ শেষে এসে তিনি পরিবারকেই সময় দেন।
গত ৪ এপ্রিল মেয়েকে নিয়ে পরিবারের সঙ্গে রাতের খাবার খেতে বসেছিলেন অঞ্জলি খারিয়া। তখনও তিনি জানতেন না, এটিই মেয়ের সঙ্গে খাওয়া তার শেষ খাবার। সারা দিন চা-বাগানে কাজের শেষে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। তাই খাবার শেষে আর অপেক্ষা না করে রাতের ঘুমের জন্য শুয়ে পড়েছিলেন।
রাত ৩টার দিকে তার ছয় বছরের মেয়ে সুস্মিতার বমির শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়। তারপর তার বমিভাব হতে শুরু করে এবং তিনি কাঁপতে থাকেন।
মেয়ের অবস্থা সারা রাত ধরে এমন চলতে থাকলে খারিয়া চিন্তিত হয়ে পড়েন, কিন্তু যখন কয়েক ঘণ্টা পর তার ছেলে ও শ্বশুরের অবস্থাও খারাপ হতে শুরু করে তখন তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
৩৭ বছর বয়সী খারিয়া বলছিলেন, তারা সবাই একযোগে কাঁপছিলেন। এরপর তাদের ভয়ানক ও লাগামহীন ডায়রিয়া শুরু হয়েছিল।
পরে তিনি বুঝতে পারেন, শুধু তাদের ঘরেই এই সমস্যা নয়, আশপাশের আরও কয়েকজনের সেই রাতেই একই সমস্যা হয়েছিল। সবাই যন্ত্রণায় ছটফট করছিল কিন্তু কেউ জানত না কেন?
সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই খারিয়া তার মেয়েকে নিয়ে কাছের একটি ফার্মেসিতে ছুটে যান। সেখানে তাকে স্যালাইন ও ওষুধ দেয়া হয়।
তার শ্বশুর ও ছেলের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়, তাদের চিকিৎসায় তিনি তার শেষ সম্বল ব্যয় করেছিলেন। যদিও অ্যাম্বুলেন্সে তিনি তার মেয়েকে পাঠাননি। খারিয়া বলেন, সে ওষুধ খাওয়ার পর ভালো অনুভব করছিল তাই আমি ভেবেছিলাম সে ঠিক হয়ে যাবে।
২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তার মেয়ে আবার বমি করতে শুরু করে কিন্তু এবার খারিয়ার কাছে অ্যাম্বুলেন্স ডাকার জন্য অবশিষ্ট আর কোনো টাকা নেই। কয়েক ঘণ্টা পরেই তার কোলে মারা যায় সুস্মিতা।
পরে দেখা গেল যে সেদিন যারা অসুস্থ হয়েছিলেন তারা সবাই এক ধরনের বন্য মাশরুম খেয়েছিলেন যা খারিয়ার শ্বশুরই কাছের জঙ্গল থেকে ছিঁড়ে আনেন। তিনি এই মাশরুম তাদের প্রতিবেশীদেরও দিয়েছিলেন।
সরকারি রেকর্ড নিশ্চিত করেছে যে ৬ বছরের সুস্মিতা ছাড়াও সেদিন আরও দুজন মারা গিয়েছিলেন। মোট ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
মাশরুম খেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়াদের একজন ৩৬ বছর বয়সী নেহা লামা। তিনি বলেন, ‘আমি সেই রাতটির কথা কখনই ভুলব না। আমি ভেবেছিলাম, আমরা সবাই মারা যাব। আমরা বহু বছর ধরে মাশরুম সংগ্রহ করছি ও খাচ্ছি। আমরা কীভাবে বুঝব যে সেগুলো বিষাক্ত হতে পারে?’
ভারতের আসাম ও প্রতিবেশী উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে মাশরুমের বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়টি প্রায়ই খবরের শিরোনাম হয়।
বন্য মাশরুম এ অঞ্চলগুলোর দরিদ্র মানুষের জন্য প্রোটিনের অন্যতম উৎস। এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা বন্য মাশরুম দিয়ে ঘন স্যুপ এবং সবজি হিসেবেও রান্না করেন। কিন্তু এই মাশরুমগুলো প্রায়ই বিষাক্ত হয় এবং এর শিকার হন হতদরিদ্র শ্রমিকেরা।
এসব মৃত্যুর কোনো সরকারি রেকর্ড নেই। তবে রাজ্যের দুজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এপ্রিলেও বিষাক্ত মাশরুমে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যাদের বেশির ভাগই চা-বাগানের শ্রমিকদের পরিবারের সদস্য।
এই মৃত্যুর কোনো সরকারি রেকর্ড রাখা হয়নি, তবে রাজ্যের দুজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন এপ্রিলে যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই চা-বাগানের শ্রমিক পরিবারের।
আমি সেই রাতটির কথা কখনই ভুলব না। আমি ভেবেছিলাম, আমরা সবাই মারা যাব। আমরা বহু বছর ধরে মাশরুম সংগ্রহ করছি ও খাচ্ছি। আমরা কীভাবে বুঝব যে সেগুলো বিষাক্ত হতে পারে?
এর আগে ২০০৮ সালে, বিষাক্ত মাশরুম খেয়ে ২০ জন মারা গিয়েছিলেন। যার বেশির ভাগই চা-বাগানের শ্রমিক। এখন পর্যন্ত এক ঘটনায় এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু। রাজ্য সরকার সে সময় বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একটি প্যানেল গঠন করেছিল।
আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এবং প্যানেলের অন্যতম সদস্য দিলিপ কুমার সরমা বলেছিলেন, এই মৃত্যুর বড় কারণ হলো চা-বাগানের শ্রমিকদের সচেতনতার অভাব। তারা জানেন না কোন ধরনের মাশরুম বিষাক্ত আর কোন ধরনের মাশরুম খাওয়ার যোগ্য।
ড. সরমার মতে, বাগানমালিকদেরই দায়িত্ব তাদের শ্রমিকদের রক্ষা করা।
মাশরুমের ব্যাপারে সচেতনতামূলক বার্তা, সতর্কতা ও পরামর্শ সংবাদপত্রে বেশ কয়েকবার ছাপানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তা চা-বাগানের শ্রমিকদের পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছায় না। কারণ অধিকাংশ শ্রমিকই পড়াশোনা জানেন না।
আসামের উর্বর পাহাড়গুলো বিশ্বের সবচেয়ে দামি চায়ের ঠিকানা। এগুলোর মালিক বড় বড় ভারতীয় ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান। এখানে রয়েছে বিলাসবহুল মোটেল যা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
কিন্তু এত কিছুর যারা প্রধান কারিগর, সেসব শ্রমিকের জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত খারাপ।
চাপাতলীতে বিবিসি যে কয়েকজন চা-শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা টিনের ছাদ ও বাঁশের কুটিরে বানানো বাড়িতে বসবাস করেন। যেখানে স্যানিটেশন খুবই খারাপ। মজুরি এতটাই কম যে চা-শ্রমিকেরা প্রায়ই ক্ষুধার্ত অবস্থায় থাকেন। সম্প্রতি করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক ইস্যুতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে।
আরও পড়ুন:‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য