ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব লাদাখের প্যাংগং সো হ্রদের কাছে আরেকটি সেতু তৈরির কাজ শুরু করেছে চীন। এর আগে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি চীন পূর্ব লাদাখে প্যাংগং তসো হ্রদের ওপর একটি সেতু তৈরির কাজ শুরু করে চীন।
স্যাটেলাইট থেকে নেয়া ছবিতে দেখা গেছে, হ্রদের চারপাশে নিজেদের এলাকায় দ্বিতীয় একটি বড় সেতু নির্মাণ করছে বেইজিং।
উত্তর প্যাংগং লেকের কাছে গত সেপ্টেম্বর থেকে ৩১৫ মিটারের সেতু তৈরির কাজ শুরু করে দেশটি। এই সেতুপথেই সামরিক যান ও অস্ত্র বহন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া পাহাড়ি ফিঙ্গার এলাকায় সেনা মোতায়েন করছে চীন সরকার। সমর বিশ্লেষকরা বলছেন, এ পদক্ষেপের ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে সেনা মোতায়েন সহজ হবে চীনের।
দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক তলানিতে। পূর্ব লাদাখের অনেক জায়গায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে বিবাদ পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে কয়েকবার।
এসব ঘটনায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর রোষানলে পড়েছেন ভারতের নরেন্দ্র মোদি। কংগ্রেস যুব শাখার সভাপতি বিবি শ্রীনিবাস মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে লেখেন, “মোদিজি, ভয় পাবেন না - এই ‘ব্রিজে’ কখন ‘বুলডোজার’ চালাবেন?”
সেতু নির্মাণের খবর নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি। তবে বিতর্কিত এলাকায় চীনের কর্মকাণ্ডকে উসকানি হিসেবে দেখছে ভারত। প্যাংগং লেকসহ পূর্ব লাদাখের একাধিক এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারে বেইজিংয়ের ওপর চাপ বাড়িয়েছে দিল্লি।
গালওয়ান নদী উপত্যকা, গোগরা, হট স্প্রিংসহ কিছু এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনাদের সামান্য পিছিয়ে আনা (ডিসএনগেজমেন্ট) ছাড়া তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি চীনকে।
গালওয়ানে সেনার সংখ্যা সামান্যই কমেছে; পরিবর্তে উত্তর লাদাখের দেপসাং ভ্যালিতে নতুন করে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে চীন।
আরও পড়ুন:পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢুকেছিলেন হাসনাবাদের হাফিজুল মোল্লা। জামার মধ্যে লোহার রড লুকিয়ে তার কালীঘাটের বাড়ির পাঁচিল টপকে ঢোকার কারণ খতিয়ে দেখছেন লালবাজারের পুলিশ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেড প্লাস নিরাপত্তা বেষ্টনী গলে শনিবার রাত ১টার পর পরগনার হাসনাবাদের নারায়ণগঞ্জের হাফিজুল মোল্লা তার বাড়িতে ঢোকে।
হাফিজুল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কনফারেন্স রুমের পেছনে ৭ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিল। রোববার শিফট পরিবর্তনের সময় নিরাপত্তাকর্মীরা দেখে ফেলে তাকে। তারা তাকে কালীঘাট থানার হাতে তুলে দেয়।
ব্যবস্থা নেয়া হয় ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে। উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদেরও এ বিষয়ে কৈফিয়ত দিতে বলা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেয়া হয়।
পুলিশের গাফিলতি নিয়েও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার।
হাফিজুল মোল্লাকে সোমবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল বলেন, ‘কী উদ্দেশ্যে হাতে লোহার রড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে তিনি বাড়িতে ঢুকলেন, পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে প্রশ্ন করতে হবে।’
পুলিশ জানায়, এর আগেও একবার নবান্নে ঢুকে পড়ায় পুলিশ তাকে ধরেছিল।
হাফিজুলের বাবা এ বিষয়ে বলেন, 'ছেলের মাথা খারাপ। রাত হলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে। আগে একবার হাসনাবাদ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল । একবার নবান্নে ঢুকে পড়ায় পুলিশ ধরেছিল । এবার শুনছি, দিদির বাড়িতে ঢুকেছিল।'
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় হাফিজুলের নামে কালীঘাট থানায় এফআইআর করেছেন। তার ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৫৮ ধারায় হাফিজুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ভারতের উত্তরাখণ্ডের কুমায়নের একটি গ্রামের ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা ১০ ফুট লম্বা একটি কুমির পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। গ্রামবাসীর ধারণা ছিল ১২ বছর বয়সী গ্রামের এক শিশুকে কুমিরটি মেরে থাকতে পারে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় কুমায়নের খ্যাতিমান ইউএস নগরে গ্রামবাসীর লাঠির আঘাত থেকে আহত কুমিরটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে এক্স-রে করার পরই তার মৃত্যু হয়।
কুমায়নের তরাই পূর্ব বন বিভাগের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার বলেছেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা গ্রামবাসীর কবল থেকে কুমিরটিকে মুক্ত করে আনে এবং গ্রামবাসীর দাবির মুখে সরকারি হাসপাতালে সেই কুমিরের এক্স-রে করা হয়। আমাদের পশু চিকিৎসকরা তার জীবন বাঁচাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু এক্স-রের পরই কুমিরটির মৃত্যু হয়।’
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এক্স-রে করার পর কুমিরের পেটে ছেলেটির কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাওয়া যায়নি।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, সন্ধ্যায় জেলা সদর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে ইউএস নগরের খাটিমা ব্লকের সুনপাহার গ্রামের ১২ বছরের বালক বীর সিং গবাদি পশু চরাচ্ছিলেন। এ সময় তার একটি মহিষ গ্রামের পাশে বয়ে চলা দেবা নদীতে প্রবেশ করে। ছেলেটি মহিষটিকে ফিরিয়ে আনার জন্য নদীতে ঝাপ দিলে মুহূর্তেই সে নিখোঁজ হয়ে যায়।
গ্রামবাসী তার সাহায্যের জন্য ঘটনাস্থলে ছুটে গেলেও তাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। খাতিমা ফরেস্ট রেঞ্জের বন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
সে সময় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী কুমিরটিকে ধরতে জাল নিয়ে নদীতে নামে এবং সন্দেহ করে যে এই কুমিরটিই ছেলেকে আক্রমণ করেছিল।
কুমিরটিকে ধরে নদীর তীরে নিয়ে এসে মারতে থাকে। গ্রামবাসী ভেবেছিল কুমিরের পেট থেকে শিশুটির দেহ উদ্ধার করবে।
বন কর্মকর্তারা অবশ্য কুমিরটিকে এক্স-রে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রামবাসীর কাছ থেকে মুক্ত করেন। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে সক্ষম হননি।
আরও পড়ুন:ভারতের মণিপুরে নোনি জেলায় নির্মাণাধীন ইম্ফল রেলপথের টুপুল ইয়ার্ড ক্যাম্পে ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধারকারী দল নিখোঁজ আরও ২০ জনের সন্ধ্যান করছে।
বুধবার গভীর রাতে এই ভূমিধস হয়।
আটকে পড়াদের উদ্ধারের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী, আসাম রাইফেলস, আঞ্চলিক সেনা এবং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বিপর্যয় বাহিনী কাজ করছে।
নিহতদের মধ্যে আঞ্চলিক বাহিনীর ২৭ জন সেনা ও ১৫ জন রেলওয়ে শ্রমিক, কর্মচারী ও গ্রামবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এ অঞ্চলে বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিকও কাজ করতেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারি বৃষ্টিপাত ও নতুন করে সৃষ্ট ভূমিধসের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
ঘটনাস্থল থেকে ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এস বিরেন সিং এই ঘটনাকে ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেছেন। এরই মধ্যে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ রুপি এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।
এক টুইটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংজির সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছি আমি। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আমি ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষা প্রার্থনা করি।
মৃত ব্যক্তিদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনকে জানাই সমবেদনা। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’
আরও পড়ুন:শ্রীলঙ্কায় চলছে মন্দা। ৭০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনীতির পরিস্থিতির মুখোমুখি দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ দেশটি।
এমন পরিস্থিতিতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি তেলের মজুতের বিষয়ে শ্রীলঙ্কার জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজসেকেরা কঠোর সতর্কতা জারি করেছেন।
রোববার কাঞ্চনা বলেন, নিয়মিত চাহিদার আলোকে দেশটিতে মাত্র এক দিনেরও কম পেট্রলের মজুত আছে এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে আর কোনো পেট্রলের চালান দেশটিতে আসবে না।
এদিকে গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা অপ্রয়োজনীয় যানবাহনের জন্য পেট্রল ও ডিজেল বিক্রি স্থগিত করেছে। ব্যক্তিগত গাড়িতে জ্বালানি দেয়ায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কারণ দেশটি জ্বালানি, খাদ্য এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানির অর্থ প্রদানের জন্য লড়াই করছে।
জ্বালানিমন্ত্রী উইজসেকেরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দেশে ১২ হাজার ৭৭৪ টন ডিজেল ও ৪ হাজার ৬১ টন পেট্রল মজুত রয়েছে।
আশা করা হচ্ছে পরের পেট্রলের চালান শ্রীলঙ্কায় আসবে ২২-২৩ জুলাই। এই সপ্তাহের শেষে ডিজেলের একটি চালান আসবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
তবে উইজসেকেরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, জ্বালানি ও অপরিশোধিত তেল আমদানির জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই দেশটির কাছে।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জ্বালানি কেনার জন্য ১২৫ মিলিয়ন ডলার সরবরাহ করতে পারে, অথচ নির্ধারিত চালানের জন্য অর্থ দরকার ৫৮৭ মিলিয়ন ডলার।
এর আগে দুই কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশে চলতি বছর অর্থাৎ আগামী ছয় মাস চলতে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি আমদানি করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
এ ছাড়া দেশটির রান্নার গ্যাস আমদানি করতে হবে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের।
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশরাজের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছে এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্র।
দেশটিতে নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে বিপর্যস্ত জনজীবন। মূল্যস্ফীতি, দুর্বল সরকারি অর্থব্যবস্থা এবং করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।
লঙ্কান সরকারের অন্যতম রাজস্ব আয়ের খাত পর্যটনশিল্প ধসে পড়েছে, রেমিট্যান্স পৌঁছেছে তলানিতে। বিদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ নেমে এসেছে ২ বিলিয়ন ডলারে।
বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে জ্বালানি আমদানি কমে যাওয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কায় দিনের অর্ধেক বা এর বেশি সময় চলছে লোডশেডিং; খাবার, ওষুধ ও জ্বালানিসংকটে ক্ষোভ ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
গত কয়েক বছর শ্রীলঙ্কার রাজনীতি বেশ টালমাটাল ছিল। এই অবস্থায় দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে।
সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতিকে দায়ী করেন বিক্ষোভকারীরা। এমন প্রেক্ষাপটে বিক্ষোভরতদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও ক্ষমতাসীনদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে প্রাণ গেছে পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজনের।
একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজপাকসেকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়। নতুন করে এই পদে আসেন রনিল বিক্রমাসিংহে। গঠন করা হয়েছে নতুন মন্ত্রিসভাও। তবে দেশটির সংকট কাটছেই না।
আরও পড়ুন:ভারতের হিমাচল প্রদেশে সোমবার সকালে কুল্লুর সাইঞ্জ উপত্যকায় একটি যাত্রীবাহী বাস গভীর খাদে পড়ে স্কুলপড়ুয়া শিশুসহ অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
কুল্লুর জেলা প্রশাসক আশুতোষ গর্গ জানিয়েছেন, বাসটি জংলা গ্রামের একটি খাদে পড়ে গেছে।
স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় এই দুঘটনা ঘটে।
বাসটিতে মোট ৪৫ জন যাত্রী ছিল। দুর্ঘটনায় তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩ জনকে আহতাবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
এক টুইট বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্ঘটনাটিকে হৃদয়বিদারক হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
তিনি টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি নিহতদের পরিবারের জন্য ২ লাখ রুপি ও আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পাঁচিল টপকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ভেতরে ঢুকে পড়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
কলকাতার কালীঘাটের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষীরা রোববার সকালে ওই ব্যক্তিকে বাড়ির ভেতরে দেখতে পান। একইসঙ্গে তারা জানতে পারেন, ওই লোক সেখানে পুরো রাত নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, শনিবার রাত ১টার পর হরিশ চ্যাটার্জী রোডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পাঁচিল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়েন ওই ব্যক্তি। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি রাখার জায়গা পর্যন্ত পৌঁছে যান। এবং সারারাত মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেই কাটান। পরে কালীঘাট থানার পুলিশ তাকে আটক করে।
ওই ব্যক্তি কী উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিলেন তা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কিভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়লেন ওই ব্যক্তি তা তদন্ত করে দেখছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
এ ঘটনার পর রাজ্যের পুলিশ কমিশনার, ডিজি, ডিসি সাউথসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা জরুরি বৈঠকে বসেন।
জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলিধর শর্মা বলেন, ‘সন্দেহজনক উদ্দেশ্য নিয়েই ওই ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিষয়টি বিশেষ জোর দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।’
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। সেই নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে কীভাবে ওই ব্যক্তি কী উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিলেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:মহানবীকে (সা.) নিয়ে আপত্তিকর বিজেপির এক শীর্ষ নেতার মন্তব্যের জেরে ভারতজুড়ে চলছে তোলপাড়। ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্রের পদ থেকে বরখাস্ত হয়েছে নূপুর শর্মা।
৩৭ বছরের নূপুরের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এফআইআর হয়েছে। সব অভিযোগ নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরের আবেদন জানালে সর্বোচ্চ আদালত তার বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেয়।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারক জে বি পারদিওয়ালা মহানবীকে (সা.) নিয়ে নূপুর শর্মার মন্তব্যের কড়া নিন্দা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, পুরো দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত তার। আরেক বিচারক সূর্য কান্তও একই মনোভাব ব্যক্ত করেন।
পর্যবেক্ষণে বিচারকরা এও প্রশ্ন করেছিলেন, কেন নূপুর শর্মাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারা নূপুরকে ‘সারা দেশে আবেগ প্রজ্বলিত করার’ জন্য দায়ী করেছিলেন।
এর পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়ে ওঠে নূপুরের সমর্থকরা।
রোববার এক অনুষ্ঠানে বিষয়টি নজরে আনেন বিচারপতি পারদিওয়ালা। বলেন, ‘বিচারকদের ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণ পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
‘বিচারকদের ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণ বিচার ব্যবস্থাকে বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যায়, যেখানে আইন আসলে কী বলছে তার বদলে মিডিয়া কী করছে, তা নিয়ে ভাবতে হয় বিচারকদের৷ এটি আইনের শাসনের বড় ক্ষতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানের অধীনে আইনের শাসন রক্ষায় সারা দেশে ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
‘আধুনিক প্রেক্ষাপটে বিচার প্রক্রিয়ায় একটি অযাচিত হস্তক্ষেপ হলো ডিজিটাল মিডিয়া।’
বিচারপতি পারদিওয়ালা এ সময় উদাহরণ হিসেবে অযোধ্যা মামলাকে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘ওই মামলায় জমি এবং নাম নিয়ে বিরোধ ছিল। তবে চূড়ান্ত রায় দেয়ার সময় ইস্যুটি রাজনৈতিক মাত্রা পেয়েছিল।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য