অনেকটা আচমকাই পদত্যাগ করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
রাজ্যপালকে এক লাইনের পদত্যাগপত্র লিখে শনিবার থেকেই অব্যহতি চেয়েছেন তিনি।
বিপ্লব দেবের ইস্তফা দেয়ার কারণ স্পষ্ট না হলেও সংবাদমাধ্যমকে বিপ্লব জানিয়েছেন, ‘দল আমাকে যেমন, যে কাজের জন্য ভাববে, আমি রাজি।’
তিনি বলেন, ‘শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই ইস্তফা দিয়েছি। সংগঠন থাকলে তবেই সরকার থাকবে। সংগঠনের কাজ করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি আমার যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এতদিন ত্রিপুরার মানুষের সঙ্গে ন্যায় করেছি, ত্রিপুরার উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করেছি।’
এ দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে বিপ্লব আরও বলেন, ‘সামনে ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচন। দল যেভাবে চাইবে, আমি সেভাবেই কাজ করব। আমরা চাইছি, দীর্ঘ সময় ধরে রাজ্যে বিজেপি সরকার থাকুক। আর সরকার ধরে রাখতে গেলে আমার মতো সংগঠককে প্রয়োজন।’
যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ত্রিপুরা বিজেপিতে দীর্ঘদিন ধরে গণ্ডগোল চলছিল। গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরে সুদীপ রায় বর্মনের মতো কয়েকজন বিধায়ক বিজেপি ত্যাগ করেছেন।
শুক্রবার ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সাবেক সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারপর অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। তার ফলেই আজ শনিবার বিপ্লব দেবের ইস্তফা।
গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব আর প্রতিষ্ঠানবিরোধী আন্দোলনে জর্জরিত ত্রিপুরা বিজেপিকে অক্সিজেন দিতে এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
শনিবারই রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা হতে পারে।
তৃণমূল কংগ্রেস থেকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয়েছে, ‘ত্রিপুরার হাজার হাজার মানুষকে ব্যর্থ করে দেয়া মুখ্যমন্ত্রীকে বিদায়। যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। এতটা ক্ষতি হয়েছে যে, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তার অক্ষমতায় বিরক্ত। রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস যা অর্জন করেছে, তাতেই বিচলিত বিজেপির নেতারা, পরিবর্তন অনিবার্য।’
আরও পড়ুন:ভারতের নেয়া গম রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছিল, দেশটি থেকে গম কেনা পশ্চিমাদেশগুলো। ভারত সেই প্রতিবাদের জবাবে জাতিসংঘে বলেছে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মত গমের বণ্টনের ক্ষেত্রে যাতে অসাম্য না হয় এবং খাদ্যের মূল্য যাতে অযৌক্তিকভাবে না বাড়ে, সেদিকে নজর রাখতে হবে সবাইকে।
জাতিসংঘে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরণ বলেছেন, ‘কিছু সংখ্যক নিম্ন-আয়ের দেশ আজ বাড়তে থাকা ব্যয় এবং খাদ্য শস্য সংগ্রহের অসুবিধার জোড়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এমন কি ভারতের মতো যাদের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, তারাও খাদ্যের দাম অযৌক্তিক বৃদ্ধি দেখেছে। এটা স্পষ্ট যে মজুদ ও ফাটকা-র কারণে কৃত্রিম সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে। আমরা এমনটা চলতে দিতে পারি না। এর প্রতিরোধ করতেই হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সভাপতিত্বে ‘গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি কল টু অ্যাকশন’ বিষয়ে বৈশ্বিক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বক্তৃতা করেছিলেন ভি মুরলীধরণ।
প্রচন্ড গরমের কারণে গমের ঘাটতির কারণে এর উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারত গত শুক্রবার গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করে।
গমের বৈশ্বিক মূল্যের হটাৎ বৃদ্ধি ভারতের উদ্বেগের কথা জানিয়ে মুরলীধরন বলেন, ‘গমের দাম বৃদ্ধিতে আমাদের (ভারতের) খাদ্য নিরাপত্তা, আমাদের প্রতিবেশী ও অন্যান্য দূর্বল অর্থনীতির দেশকেও ঝুঁকিতে ফেলছে।
‘আমাদের নিজস্ব সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার জন্য, প্রতিবেশী ও অন্যান্য দুর্বল উন্নয়নশীল দেশগুলির চাহিদাগুলোকে সমর্থন করার জন্য আমরা ২০২২-এর ১৩ মে গম রপ্তানি সংক্রান্ত কিছু ব্যবস্থা ঘোষণা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে খাদ্য নিরাপত্তার উপর এই ধরনের প্রতিকূল প্রভাব কমিয়ে আনা হবে এবং বিশ্ব বাজারে আকস্মিক পরিবর্তনের বিরুদ্ধে দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে রক্ষা করা হবে।’
অর্থনীতির দিক বিবেচনায় বর্তমান শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের তুলনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। টুইটে রাহুল দাবি করেছেন, বেকারত্ব, জ্বালানির দাম এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ক্ষেত্রে দুই দেশের চিত্র একই রকম।
ভারত ও শ্রীলঙ্কার তিনটি করে মোট ছয়টি গ্রাফ শেয়ার করেছেন রাহুল গান্ধী। লিখেছেন, ‘মানুষকে বিভ্রান্ত করে বাস্তব ঘটনাগুলোর পরিবর্তন ঘটানো যাবে না। ভারতের অবস্থা অনেকটা শ্রীলঙ্কার মতো।’
শেয়ার করা একটি গ্রাফে দেখা গেছে, ২০১৭ থেকে দুই দেশেই বেকারত্ব বেড়েছে। ২০২০ সালে তা অনেকটাই উর্দ্ধমুখী। ওই বছর করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে কঠোর লকডাউন দিয়েছিল মোদি সরকার। পরের বছর লকডাউনের শিথিলতায় তা কিছুটা নিম্নমুখী হয়।
গ্রাফের দ্বিতীয় জোড়া ভারত ও শ্রীলঙ্কায় পেট্রলের দামের তুলনা করেন কংগ্রেস নেতা। ২০১৭ সাল থেকে বাড়তে শুরু করে। ২০২১ সালে তা আরও গতি পায়।
ভারতে মূল্যস্ফীতি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, প্রতিদিন গড়ছে নতুন রেকর্ড। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এপ্রিলের পাইকারি মূল্যস্ফীতি ১৫.০৮-এ পৌঁছেছে; যা প্রায় এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
গ্রাফের তৃতীয় সেটটি দেখা গেছে, দুই দেশে ২০২০-২১ সালে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চরমে পৌঁছেছে।
গ্রাফগুলো তৈরি করা হয়েছে সশস্ত্র সংঘাতের অবস্থান, ইভেন্ট ডেটা প্রকল্প, লোকসভার আনস্টার্ড প্রশ্ন, সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই), পেট্রোলিয়াম প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যানালাইসিস সেল, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ শ্রীলঙ্কা এবং শ্রীলঙ্কা পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-এর পরিসংখ্যান থেকে৷
তীব্র খাদ্য এবং বিদ্যুতের ঘাটতির সঙ্গে লড়াছে শ্রীলঙ্কা। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে কোভিডের সময় সার্বিক লকডাউনের কারণে পর্যটন খাত থেকে আয় শূন্যের কোটায় পৌঁছে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার বিপুল ঘাটতি দেখা দিয়েছে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রটিতে।
এ ছাড়া মহামারী, ক্রমবর্ধমান তেলের দাম এবং জনমোহিনী ট্যাক্স ছাড়ের কারণে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। ঘাটতি দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় সরবরাহে।
আরও পড়ুন:অর্থনৈতিক মন্দায় ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কার জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে। জ্বালানির জন্য আরও দুদিন অপেক্ষা করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা। তারপরও পেট্রোল পাম্পগুলোর সামনে দেখা গেছে মানুষের দীর্ঘ লাইন।
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর বোরেল্লা এলাকার বাসিন্দা এম জিফরি। মোটরসাইকেল নিয়ে জ্বালানির জন্য অপেক্ষা করছিলেন একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে। সেখানে শতাধিক মোটোরসাইকেলচালক জিফরির মতো অপেক্ষায় আছেন এক দিনের বেশি সময় ধরে।
দুই সন্তানের বাবা ৩৫ বছরের জিফরির রুটিরুজির মাধ্যম এই মোটরসাইকেল। উবারে বাইক চালিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ করেন তিনি। জ্বালানি সংকটে তার পরিবারে হাঁড়ি চলার পথও বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর জিফরির মতো লাখো শ্রীলঙ্কান এখন নিত্যপণ্যের চরম সংকটে ধুঁকছে। পণ্যের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোটা তাদের নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জিফরি বলেন, ‘পেট্রোল নিতে পাম্পে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছি কয়েক মাস। এখন অবস্থা আরও খারাপ। এক দিনের বেশি হয়ে গেছে, এখনও পেট্রোল পাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। আমি ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত।’
পেট্রোলের জন্য লাইনে দাঁড়ানো জিফরি এক দিনের বেশি সময় কিছু খাননি। কারণ, একবার লাইন থেকে সরে গেলে আবার তাকে দাঁড়াতে হবে সবার পেছনে।
‘অন্য কেউ আমার জায়গা নেবে এবং তারপর আমাকে আবার নতুন করে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে।’
রান্নার গ্যাস, খাবার, ওষুধ এবং জ্বালানির মতো প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বৈদেশিক মুদ্রা নেই শ্রীলঙ্কা সরকারের হাতে।
আমদানিনির্ভর দ্বীপরাষ্ট্রটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী পর্যাপ্ত পেট্রোল মজুত না থাকার বিষয়টি আগেই সতর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘পাম্পের লাইনে আপনারা দাঁড়াবেন না। কারণ সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে।’
পার্লামেন্টে বুধবার মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেন, ‘লাইনে দাঁড়াবেন না। আগামী দুই দিন আমরা সরবরাহ করতে পারব না। আগামী দুই দিন আপনারা ধৈর্য ধরুন।’
এই ইস্যুতে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেও। পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে রনিল জানান, আমদানির জন্য এক মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রাও নেই সরকারের কাছে।
‘জ্বালানি আমদানির জন্য এই মুহূর্তেই ৫৩০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংক ১৬০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। এই অর্থ দিয়ে কীভাবে জ্বালানি সংকট মোকাবিলা করা যায় তা ভাবছে সরকার।’
জ্বালানির এই তীব্র সংকটের মধ্যে বুধবার আরও খারাপ সংবাদ দিয়েছে দেশটির প্রধান এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লিট্রো। তারা জানিয়েছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্টক আনলোড করতে দেরি হওয়ায় তা বিতরণে প্রভাব ফেলেছে। এ অবস্থায় জনসাধারণকে এলপিজির লাইনেও না দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন লঙ্কান বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী উইজেসেকেরা ।
দুই সন্তানের মা এস ইয়োগা লেচ্ছামি পশ্চিমের মিরিহানা অঞ্চলের বাসিন্দা। তিনি জানান, প্রন ওয়াডে (একটি রাস্তার খাবার) কার্ট নিয়ে বেরিয়েছিলেন তিনি। তবে এলপিজির সংকটের কারণে ফিরে আসতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কয়েকজন গ্রাহককে পরিবেশন করার পর রান্নার গ্যাস ফুরিয়ে গেল। গ্যাসের বা কেরোসিন তেলের খোঁজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমার স্বামী ঘুরে বেড়ালেও খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছে তাকে।
‘সবকিছুই এখন দামি। দিন দিন চিংড়ির দাম বাড়ছে। কীভাবে সন্তানদের খাওয়াব, ব্যবসা চালাব? আমি আর কী করব জানি না।’
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে সরকারের ওপর গত কয়েক মাস ধরে ক্ষুব্ধ দেশটির সাধারণ নাগরিকরা। চলছে বিক্ষোভ। তা দমাতে দুই দফায় জারি হয়েছে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা। এতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় দেয়া হয় কারফিউ। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে।
সবশেষ জ্বালানি ও রান্নার গ্যাসের সংকট জনগণের ক্ষোভে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে বলে খবর দিচ্ছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন শহরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ শ্রীলঙ্কানরা।
প্রধান বিরোধী দল সামগী জনা বালাওয়েগায়া পার্টির সংসদ সদস্য এরান বিক্রমরত্নে বলছেন, ‘অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পূর্বশর্ত হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা; একটি গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য সরকার।
‘আমাদের এখনও তা নেই। নতুন সরকার এখনও গঠন হয়নি। আমরা রাজাপাকসের বাইরে সরকার গঠন করতে পারব না।
‘মৌলিক সমস্যাগুলোর সমাধান করা হয়নি। গত আড়াই বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এই সরকারের রদবদল দরকার। শ্রীলঙ্কায় হৈচৈ হচ্ছে, রাজাপাকসেদের যেতে হবে।’
দুদিন আগে (সোমবার) প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে সতর্ক করেছিলেন, আগামী দুই মাস শ্রীলঙ্কার জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর ওই আহ্বানের বিষয়ে লেচ্ছামি জানান, তার এবং তার পরিবারের আর কত ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অরুণা কুলাতুঙ্গা অবশ্য আলো দেখছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আলি সাবরি ও বিরোধী নেতা হার্শা ডি সিলভা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। এ সপ্তাহের শেষে তারা ঋণ পুনর্গঠনে একটি আইনি ও আর্থিক আলোচনা দল নিয়োগে কাজ করবেন।
‘ঋণ পুনর্গঠনের পাশাপাশি পর্যটন থেকে প্রবাহ এবং প্রবাসী আয়ও ধীরে ধীরে বাড়ছে। এই ইতিবাচক পদক্ষেপে অর্থনীতির বেশির ভাগ খাত স্বল্প মেয়াদে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। কিন্তু যতক্ষণ না বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক সংস্কার আসবে, দীর্ঘমেয়াদি পুনরুদ্ধার অনিশ্চিতই থেকে যাবে।’
আরও পড়ুন:দূষণের কারণে ভারতে মাত্র এক বছরে ২৩ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ লাখ মৃত্যু বায়ুদূষণে, পাঁচ লাখের বেশি মৃত্যু পানিদূষণে আর অন্য দূষণে বাকি মৃত্যু।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট সম্প্রতি ২০১৯ সালের ওই তথ্য প্রকাশ করেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ল্যানসেটের দূষণ ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিশন বলছে, বিশ্বে প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় দূষণের কারণে। প্রায় ৯০ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী দূষণ।
বায়ুদূষণের শিকার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দিকে আছে ভারতের নাম। দেশটিতে প্রতি বছর ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এতে।
গবেষণা বলছে, বাসস্থান ও এ-সংক্রান্ত কারণে যে বায়ুদূষণ এবং পানিদূষণের ঘটনা ঘটে থাকে, তাতে মৃত্যু কিছুটা কমে এসেছে। তবে এই সংখ্যা আবার বাড়িয়ে দিয়েছে শিল্পকারখানার দূষণসহ নানা কারণে তৈরি হওয়া দূষণ।
২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণের কারণে অকালমৃত্যু হয় ৬৭ লাখ মানুষের, পানিদূষণে মারা গেছে ১৪ লাখ। আর সিসা দূষণে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ মানুষের।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণের কারণে ৯০ শতাংশ মৃত্যু হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয়। এ তালিকায় শীর্ষে ভারত, এরপর চীন।
ভয়াবহ বায়ুদূষণের শিকার না হলে ভারতের নয়াদিল্লির মানুষের গড় আয়ু ১০ বছর বেড়ে যেত বলে গত সেপ্টেম্বরে জানায় ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট।
আরও পড়ুন:হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতকে ফুল ও মিষ্টি পাঠাতে বলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে চার দিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে আসেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। আর মমতাও তিন দিনের সফরে একই এলাকায় রয়েছেন।
এদিন মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে উঠে আসে আরএসএস প্রধানের সফরের প্রসঙ্গ।
তিনি বলেন, ‘এখানে নাকি আরএসএস প্রধান আসছেন? দেখে নিও, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওকে ফল মিষ্টি পাঠিও। আমাদের রাজ্যে কেউ এলে আতিথিয়তায় কোনো খামতি রাখি না। আমরা কাউকে ফেলে দিই না।’
‘ভালো করে নিরাপত্তা দিও, আবার বেশি বাড়াবাড়ি করতে যেও না, দেখো, যাতে দাঙ্গা না বাধায়।’
হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন আরএসএসকে মনে করা হয় বিজেপির আঁতুড়ঘর। তাই আরএসএস প্রধানকে মমতার ফুল-মিষ্টি পাঠানোর নির্দেশের ঘটনায় আরএসএসের সঙ্গে মমতার গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলেছে বামেরা।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুরে, মোহন ভাগবতও মেদিনীপুরে, পারস্পরিক দুজন দুজনকে দেখাশোনা করবেন। যাতে কারো কোনো অসুবিধা না হয়। মুখ্যমন্ত্রী ওনার অফিসারদের লাগিয়ে দিয়েছেন, যাতে যত্নের কোনো অসুবিধা না হয়। ফুল-মিষ্টি সব মিলিয়ে ভাগবতকে খুশি রাখার চেষ্টা করছেন।
‘আরএসএস দেশপ্রেমিক এটা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী দেবীদুর্গা, এটা আরএসএস বলেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে আজ পর্যন্ত আরএসএসের সমালোচনা শুনেছেন? মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির সঙ্গে খেলা খেলা ভাব দেখান, লড়াইয়ের ভাব দেখান কিন্তু আরএসএসের কথার বাইরে মুখ্যমন্ত্রী যে যান না, সেটা সবাই বুঝে গিয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজিব গান্ধী হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের একজন এ জি পেরারিভালানকে মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তিনি ৩১ বছর যাবৎ কারাগারে ছিলেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে রাজিব গান্ধী হত্যার অপর আসামি নলিনী শ্রীহরণ ও তার স্বামী মুরুগান, একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিকসহ বাকি ছয় অভিযুক্তের মুক্তির পথ প্রশস্ত করেছে।
রাজিব গান্ধী হত্যার সময় ১৯ বছর বয়সী পেরারিভালানের বিরুদ্ধে ৯ ভোল্টের দুটি ব্যাটারি সিভারাসনের জন্য কেনার অভিযোগ আনা হয়েছিল। সিভারাসন ছিলেন রাজিব গান্ধী হত্যার পরিকল্পনাকারী ও শ্রীলঙ্কার তামিল বিদ্রোহী সংগঠন লিবারেশন টাইগার অফ তামিল ইলমের সদস্য।
পেরারিভালানের কেনা ব্যাটারি দুটি রাজিব গান্ধী হত্যার জন্য বোমায় ব্যবহার করা হয়েছিল।
১৯৯১ সালের ২১ মে এক নির্বাচনী সভায় যোগ দিতে গেলে রাজিব গান্ধীকে লক্ষ্য করে ধানু নামের এক নারী আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। সে হামলায় রাজিব গান্ধীর মৃত্যু হয়।
১৯৯৮ সালে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত পেরারিভালানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং পরের বছর সুপ্রিম কোর্ট সেই সাজা বহাল রাখে। কিন্তু ২০১৪ সালে তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিবর্তন করা হয়। চলতি বছরের মার্চেই শীর্ষ আদালত থেকে তাকে জামিন দেয়া হয়।
তবে পেরারিভালানের দীর্ঘ কারা জীবনে তার খুব ভালো আচরণের রেকর্ড রয়েছে। কারাগারে তিনি পড়াশোনা করেছেন এবং বেশ কিছু শিক্ষাগত যোগ্যতাও অর্জন করেছেন। তিনি একটি বইও লিখেছেন।
পেরারিভালান দাবি করেছিলেন যে তিনি ব্যাটারিগুলোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতেন না। ভারতের অবসরপ্রাপ্ত সিবিআই অফিসার থিয়াগরাজন পরে বলেছেন, তিনি পেরারিভালানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পরিবর্তন করেছিলেন, এই জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের মুদ্রা রুপির সর্বোচ্চ পতন রেকর্ড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার টানা ষষ্ঠ দিন ডলারের বিপরীতে রুপির পতন অব্যাহত রয়েছে। দিনের শুরুতে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের জন্য ১৯৬.১০ রুপি গুনতে হয়েছে।
দেশটির মুদ্রাবিষয়ক সংস্থা ফরেক্স অ্যাসোসিয়েশন অফ পাকিস্তানের (এফএপি) প্রতিবেদন মতে, সোমবারের চেয়ে রুপির দর ডলারের বিপরীতে ১.৫০ কমে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৬.১০ রুপি।
দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত আমদানির কারণে রুপির দরপতন অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
রুপির দরপতন শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার। সেদিন ডলারের বিপরীতে রুপির লেনদেন হয়েছে ১৮৮.৬৬ তে। বুধবার তা আরও বেড়ে হয়েছে ১৯০.৯০। বৃহস্পতি, শুক্র ও সোমবার ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রার বিনিময় হার রেকর্ড করা হয় যথাক্রমে ১৯২, ১৯৩.১০ ও ১৯৪ রুপি। ষষ্ঠ দিন মঙ্গলবার তা হয়েছে ১৯৬.১০ রুপি।
দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরজুড়ে ডলারের উচ্চদরে হিমশিম খাচ্ছিল পাকিস্তানি রুপি। তবে অর্থবছরের শেষ দুই মাসে সেই পতন ভয়াবহ পর্যায়ে নামতে থাকে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য