রাশিয়ার সঙ্গে চলা যুদ্ধ চলতি বছরের শেষের দিকে থামতে পারে বলে মনে করছেন ইউক্রেনের সেনা গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মেজর জেনারেল কিরিলো বুদানভ।
শনিবার যুক্তরাজ্যের টেলিভিশন চ্যানেল স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
যুদ্ধ কবে নাগাদ শেষ হতে পারে, এ নিয়ে এই প্রথমবারের মতো কথা বললেন ইউক্রেনের কোনো কর্মকর্তা। অবশ্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ প্রসঙ্গে এখনও কোনো মন্তব্য আসেনি।
গোয়েন্দাপ্রধান কিরিলো বলেন, ‘আগামী আগস্টের মধ্যভাগে একটা পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাবে পরিস্থিতি। আর বছর শেষে যুদ্ধ হয়ে যাবে। অধিকাংশ অভিযানই এ বছরের শেষের দিকে শেষ হবে।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শেষে আমরা আবার দোনবাস, ক্রিমিয়াসহ সব জায়গাতেই আমাদের ক্ষমতা ফিরে পাব।’
রাশিয়ায় পুতিনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে জানিয়ে এই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেন, ‘রাশিয়া যুদ্ধে হেরে গেলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান হবে। এটি এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে।’
গোয়েন্দা কর্মকর্তা কিরিলো বলেন, ‘পুতিন এখন মানসিক ও শারীরিকভাবে খুব খারাপ অবস্থায় আছেন। তার শরীর খুবই খারাপ।’
শিগগিরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয় পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইউক্রেন যখন যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে, তখন এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল জয়ের পরও যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে রাশিয়া।
পূর্বাঞ্চল দখলের চেষ্টারত রুশ বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনীয়দের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা এমন বার্তা দেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ।
যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব লাদাখের প্যাংগং সো হ্রদের কাছে আরেকটি সেতু তৈরির কাজ শুরু করেছে চীন। এর আগে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি চীন পূর্ব লাদাখে প্যাংগং তসো হ্রদের ওপর একটি সেতু তৈরির কাজ শুরু করে চীন।
স্যাটেলাইট থেকে নেয়া ছবিতে দেখা গেছে, হ্রদের চারপাশে নিজেদের এলাকায় দ্বিতীয় একটি বড় সেতু নির্মাণ করছে বেইজিং।
উত্তর প্যাংগং লেকের কাছে গত সেপ্টেম্বর থেকে ৩১৫ মিটারের সেতু তৈরির কাজ শুরু করে দেশটি। এই সেতুপথেই সামরিক যান ও অস্ত্র বহন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া পাহাড়ি ফিঙ্গার এলাকায় সেনা মোতায়েন করছে চীন সরকার। সমর বিশ্লেষকরা বলছেন, এ পদক্ষেপের ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে সেনা মোতায়েন সহজ হবে চীনের।
দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক তলানিতে। পূর্ব লাদাখের অনেক জায়গায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে বিবাদ পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে কয়েকবার।
এসব ঘটনায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর রোষানলে পড়েছেন ভারতের নরেন্দ্র মোদি। কংগ্রেস যুব শাখার সভাপতি বিবি শ্রীনিবাস মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে লেখেন, “মোদিজি, ভয় পাবেন না - এই ‘ব্রিজে’ কখন ‘বুলডোজার’ চালাবেন?”
সেতু নির্মাণের খবর নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি। তবে বিতর্কিত এলাকায় চীনের কর্মকাণ্ডকে উসকানি হিসেবে দেখছে ভারত। প্যাংগং লেকসহ পূর্ব লাদাখের একাধিক এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারে বেইজিংয়ের ওপর চাপ বাড়িয়েছে দিল্লি।
গালওয়ান নদী উপত্যকা, গোগরা, হট স্প্রিংসহ কিছু এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনাদের সামান্য পিছিয়ে আনা (ডিসএনগেজমেন্ট) ছাড়া তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি চীনকে।
গালওয়ানে সেনার সংখ্যা সামান্যই কমেছে; পরিবর্তে উত্তর লাদাখের দেপসাং ভ্যালিতে নতুন করে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে চীন।
আরও পড়ুন:আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে যেদিন হত্যা করা হয়, সেদিন তার মাথায় ছিল হেলমেট, গায়ে ছিল ভেস্ট। যেখানে স্পষ্ট লেখা ছিল ‘প্রেস’।
গুলি হেলমেট ও ভেস্টের ঠিক মাঝখান দিয়ে শিরিনের ঘাড়ে বিদ্ধ হয়। এ সময় শিরিনের সহকর্মীরা এবং পথচারীরা তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করলে গুলি চলতে থাকে। তাই তারা এগিয়ে আসতে পারেননি। নিথর পড়ে ছিল শিরিনের দেহ।
শুরুতে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিষয়টি প্রমাণে একটি ভিডিও প্রকাশ করে তেল আবিব। যেখানে দেখা যায়, একদল ফিলিস্তিনি গুলি ছুড়তে ছুড়তে একটি সরু গলি পার হচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থা- বিটস্লেম ওই ভিডিও ধারণের স্থানটি খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলছে, ওই ভিডিওটি শিরিন হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে ৩০০ মিটার (৯৮৫ ফুট) দূরের একটি স্থান।
শিরিনের কর্মস্থল আল জাজিরার সানাদ নিউজ ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটও বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। তারাও দাবি করেছেন ভিডিওটি ভুয়া।
প্রপাগান্ডায় কাজ না হওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে আসে ইসরায়েল সরকার। তারা এই হত্যার তদন্ত করার আশ্বাস দেয়। তবে শেষমেশ আগের রূপেই ফিরেছে ইসরায়েল সরকার। তদন্ত না করার ইঙ্গিত দিয়েছে তেল আবিব। অতীতে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় তদন্ত করে নিজ দেশে সমালোচিত হয়েছিল দেশটির সরকার।
পশ্চিম জেরুজালেম থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক ইমরান খান বলেন, ‘আসলে সক্রিয় সামরিক অভিযানে একজন চাকরিরত ইসরায়েলি সেনা অফিসার বা সৈনিকের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি তদন্ত খুলতে হবে। ইসরায়েলের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টা এখন একেবারেই অসম্ভব।
‘তদন্ত হলে সরকারের ওপর হামলা হবে। বিরোধীরা এটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। এ ছাড়া সাধারণত ইসরায়েলিরা সেনাবাহিনীকে অন্য চোখে দেখে। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে সেনারা তাদের রক্ষক।’
ইসরায়েলের জনপ্রিয় দৈনিক হারেটজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় ফৌজদারি আইন লঙ্ঘনের কোনো প্রমাণ নেই। ইসরায়েলি সেনারা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা ভেবেছিল ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের দিকে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সাংবাদিক শিরিনের আশপাশে কোনো গুলি চলেনি।
শিরিনের শরীর থেকে বের করা বুলেটের টুকরা প্রমাণ হিসেবে রেখেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের সামরিক পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলছে, তদন্ত হলে ইসরায়েলি সেনাদের সন্দেহভাজন হিসেবে বিবেচনা করা হবে। বিষয়টি ইসরায়েলি সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ইসরায়েলি দৈনিক হারেটজের বরাতে বৃহস্পতিবার এ খবর ছেপেছে জেরুজালেম পোস্ট।
সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ দুই দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা করেছেন। ২০০০ সালে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহের সময় পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বড় বড় হামলাগুলো কভার করে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শিরিন।
পশ্চিম তীরের শহর জেনিনে গত ১১ মে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের খবর কভার করার সময় গুলিতে নিহত হন ৫১ বছরের শিরিন। প্রত্যক্ষদর্শী এবং তার সহকর্মীদের দাবি, ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন শিরিন।
হারেটজের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় শিরিনের পরিবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী মৃত্যুর তদন্ত না করায় তারা বিস্মিত নয়।
‘আমরা এটিই আশা করছিলাম। এ কারণেই আমরা চাইনি তারা (ইসরায়েল) তদন্তে অংশ নিক। আমরা এই কাজের জন্য দায়ী যে কাউকেই জবাবদিহি করতে চাই।
‘যেহেতু তিনি একজন আমেরিকান নাগরিক, তাই আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। সেই সঙ্গে একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ তদন্ত শুরুর পাশাপাশি এসব হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
জবাব দিয়েছে ওয়াশিংটন। নিজের নাগরিকের হত্যার তদন্তে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
আরও পড়ুন:ভারতের নেয়া গম রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছিল, দেশটি থেকে গম কেনা পশ্চিমাদেশগুলো। ভারত সেই প্রতিবাদের জবাবে জাতিসংঘে বলেছে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মত গমের বণ্টনের ক্ষেত্রে যাতে অসাম্য না হয় এবং খাদ্যের মূল্য যাতে অযৌক্তিকভাবে না বাড়ে, সেদিকে নজর রাখতে হবে সবাইকে।
জাতিসংঘে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরণ বলেছেন, ‘কিছু সংখ্যক নিম্ন-আয়ের দেশ আজ বাড়তে থাকা ব্যয় এবং খাদ্য শস্য সংগ্রহের অসুবিধার জোড়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এমন কি ভারতের মতো যাদের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, তারাও খাদ্যের দাম অযৌক্তিক বৃদ্ধি দেখেছে। এটা স্পষ্ট যে মজুদ ও ফাটকা-র কারণে কৃত্রিম সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে। আমরা এমনটা চলতে দিতে পারি না। এর প্রতিরোধ করতেই হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সভাপতিত্বে ‘গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি কল টু অ্যাকশন’ বিষয়ে বৈশ্বিক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বক্তৃতা করেছিলেন ভি মুরলীধরণ।
প্রচন্ড গরমের কারণে গমের ঘাটতির কারণে এর উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারত গত শুক্রবার গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করে।
গমের বৈশ্বিক মূল্যের হটাৎ বৃদ্ধি ভারতের উদ্বেগের কথা জানিয়ে মুরলীধরন বলেন, ‘গমের দাম বৃদ্ধিতে আমাদের (ভারতের) খাদ্য নিরাপত্তা, আমাদের প্রতিবেশী ও অন্যান্য দূর্বল অর্থনীতির দেশকেও ঝুঁকিতে ফেলছে।
‘আমাদের নিজস্ব সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার জন্য, প্রতিবেশী ও অন্যান্য দুর্বল উন্নয়নশীল দেশগুলির চাহিদাগুলোকে সমর্থন করার জন্য আমরা ২০২২-এর ১৩ মে গম রপ্তানি সংক্রান্ত কিছু ব্যবস্থা ঘোষণা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে খাদ্য নিরাপত্তার উপর এই ধরনের প্রতিকূল প্রভাব কমিয়ে আনা হবে এবং বিশ্ব বাজারে আকস্মিক পরিবর্তনের বিরুদ্ধে দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে রক্ষা করা হবে।’
খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে সুপরিচিত ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের কারণে আগামী কয়েক মাসে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
বিশ্বে মোট গম উৎপাদনের ৩০ শতাংশ হয় ইউক্রেন ও রাশিয়ায়। আর ভুট্টা উৎপাদনের ২০ শতাংশ উৎপাদিত হয় এই দুই দেশে। যুদ্ধের কারণে এরই মধ্যে ভেঙে পড়েছে এই দুই দেশ থেকে গম ও ভুট্টাসহ অধিকাংশ খাদ্যপণ্যের রপ্তানি। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলনিয়সের সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন সব তথ্য।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, ‘ইউক্রেনে রুশ হামলার কারণে আগামী কয়েক মাসে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি হবে।’
স্থানীয় সময় বুধবার নিউ ইয়র্কে বিশ্বসংস্থাটির মহাসচিব এমন সর্তকতার কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধের ফলে দ্রব্যের উচ্চমূল্যের কারণে দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।’
মহাসচিব বলেন, ‘ইউক্রেন যদি যুদ্ধ শুরুর আগের মাত্রায় রপ্তানি আবারও শুরু করতে না পারে, তা হলে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে; আর সেই দুর্ভিক্ষ কয়েক বছর ধরে চলবে।’
এই যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। এসব বন্দর দিয়ে সংঘাতের আগে বিপুল পরিমাণ সূর্যমুখীর তেল, ভুট্টা ও গমের মতো খাদ্যশস্য রপ্তানি হয়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী এসব নিত্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং এর বিকল্প পণ্যগুলোর দামও বেড়ে গেছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় এই বছর বিশ্বে খাদ্যের দাম ৩০ শতাংশের বেশী বেড়েছে।
গুতেরেস বলেন, এই সংঘাত কমপক্ষে এক কোটি মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি করেছে। এর ফলে অপুষ্টি, গণক্ষুধা এবং দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমরা যদি এখন থেকে একযোগে কাজ শুরু করতে পারি, তবে পৃথিবীতে খাদ্যের সংকট দেখা দেবে না। এ সমস্যা যদি আমরা শিগগিরই সমাধানে ব্যর্থ হই তবে সামনের মাসগুলোতেই আমরা খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হতে পারি।’
আরও পড়ুন:সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলি বিমান বাহিনী দেশটির অভ্যন্তরে প্রায়ই হামলা চালিয়ে আসছে। ইসরায়েলের অভিযোগ, সিরিয়ার অস্থিরতাকে কাজে লাগিয়ে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে চলে এসেছে ইরান। সিরিয়ার সেনারা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বরাবরই ইসরায়েলি হামলা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছে।
এবার তাসনিম নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলা প্রতিহত করতে সিরিয়ায় থাকা রুশ সেনারা এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। সিরিয়ায় রাশিয়ার সেনা মোতায়েনের পর এস-৩০০ দিয়ে এটিই ছিল ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে রাশিয়ার সরাসরি হস্তক্ষেপ।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর এফ-১৬এস যুদ্ধবিমান মাসিয়াফ ও বানিয়াস বন্দরের সিরিয়ার বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রের দিকে ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে ১৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। একটি ইসরায়েলি ড্রোনও এ সময় ভূপাতিত করা হয়েছে।
তবে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী সিরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি। ৬টি বিমান ইসরায়েল সীমান্তের ভেতর থেকেই সিরিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
রাশিয়া বলছে, ইসরায়েলি হামলায় ৩ জন সিরীয় সেনা ও ২ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। হামলায় গবেষণাকেন্দ্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যখন অনেকটাই কমে এসেছে তখন ইউরোপে পাওয়া গেছে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার খবর। আক্রান্তের ঘটনাগুলোতে নজর রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের এক বাসিন্দা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার দেশটির সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (সিডিসি) ও ম্যাসাচুসেটসের জনস্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি কানাডা ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তাকে এরই মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি ভালো অবস্থায় আছেন।
কর্তৃপক্ষ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কারা কারা এসেছেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তবে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য বোর্ড বলছে, সাধারণ মানুষের কোনো ঝুঁকি নেই। সাধারণত শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।
এ বছরই যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী প্রথম দেখা গেছে। মাদ্রিদে এরই মধ্যে ২৩ জনের শরীরে এই ভাইরাস সংক্রমিত হলে সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করে। আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জন সমকামী পুরুষ রয়েছে। মাদ্রিদের আঞ্চলিক স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মাদ্রিদে ভাইরাসটি ফ্লুইড কনটাক্টের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ইউরোপে শুধু স্পেনই নয়, লিসবন এবং আশেপাশের এলাকায় পর্তুগিজ যুবকদের মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ২০ টি সন্দেহভাজন ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে।
যুক্তরাজ্যেও মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ৭ ব্যক্তি সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪ জন সমকামী পুরুষ। দেশটিতে প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি নাইজেরিয়ায় গিয়েছিলেন, ধারণা করা হচ্ছে সেখানেই তিনি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হন।
একসময় গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা যেত। এই ভাইরাসটি ১৯৮০ সালে পুরোপুরি নির্মূল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে চিকেন পক্স, এটিকে সাধারণত শৈশবের রোগ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। এতে আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশি ব্যথা এবং শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। চিকেন পক্স পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যায়।
বর্তমানে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে গুটি বসন্ত ও চিকেন পক্স উভয়েরই মিল রয়েছে।
মাঙ্কিপক্সের দুটি রূপ রয়েছে। একটি পশ্চিম আফ্রিকান স্ট্রেন এবং অপরটি মধ্য আফ্রিকান স্ট্রেন। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঙ্কিপক্স হালকা ওয়েস্ট আফ্রিকান স্ট্রেনের।
এর আগে গত বছরও যুক্তরাষ্ট্রে দুজন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়, এই দুজনই সে সময় নাইজেরিয়া ঘুরতে গিয়েছিলেন।
তবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া কঠিন। এর সংক্রমণ সাধারণত ফ্লুইড ট্রান্সফার, ঘা, দূষিত পোশাক বা দীর্ঘস্থায়ী মুখোমুখি যোগাযোগ কিংবা সহাবস্থানের মাধ্যমে ঘটে, যা শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।
অর্থনৈতিক মন্দায় ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কার জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে। জ্বালানির জন্য আরও দুদিন অপেক্ষা করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা। তারপরও পেট্রোল পাম্পগুলোর সামনে দেখা গেছে মানুষের দীর্ঘ লাইন।
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর বোরেল্লা এলাকার বাসিন্দা এম জিফরি। মোটরসাইকেল নিয়ে জ্বালানির জন্য অপেক্ষা করছিলেন একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে। সেখানে শতাধিক মোটোরসাইকেলচালক জিফরির মতো অপেক্ষায় আছেন এক দিনের বেশি সময় ধরে।
দুই সন্তানের বাবা ৩৫ বছরের জিফরির রুটিরুজির মাধ্যম এই মোটরসাইকেল। উবারে বাইক চালিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ করেন তিনি। জ্বালানি সংকটে তার পরিবারে হাঁড়ি চলার পথও বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর জিফরির মতো লাখো শ্রীলঙ্কান এখন নিত্যপণ্যের চরম সংকটে ধুঁকছে। পণ্যের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোটা তাদের নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জিফরি বলেন, ‘পেট্রোল নিতে পাম্পে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছি কয়েক মাস। এখন অবস্থা আরও খারাপ। এক দিনের বেশি হয়ে গেছে, এখনও পেট্রোল পাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। আমি ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত।’
পেট্রোলের জন্য লাইনে দাঁড়ানো জিফরি এক দিনের বেশি সময় কিছু খাননি। কারণ, একবার লাইন থেকে সরে গেলে আবার তাকে দাঁড়াতে হবে সবার পেছনে।
‘অন্য কেউ আমার জায়গা নেবে এবং তারপর আমাকে আবার নতুন করে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে।’
রান্নার গ্যাস, খাবার, ওষুধ এবং জ্বালানির মতো প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বৈদেশিক মুদ্রা নেই শ্রীলঙ্কা সরকারের হাতে।
আমদানিনির্ভর দ্বীপরাষ্ট্রটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী পর্যাপ্ত পেট্রোল মজুত না থাকার বিষয়টি আগেই সতর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘পাম্পের লাইনে আপনারা দাঁড়াবেন না। কারণ সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে।’
পার্লামেন্টে বুধবার মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেন, ‘লাইনে দাঁড়াবেন না। আগামী দুই দিন আমরা সরবরাহ করতে পারব না। আগামী দুই দিন আপনারা ধৈর্য ধরুন।’
এই ইস্যুতে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেও। পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে রনিল জানান, আমদানির জন্য এক মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রাও নেই সরকারের কাছে।
‘জ্বালানি আমদানির জন্য এই মুহূর্তেই ৫৩০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংক ১৬০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। এই অর্থ দিয়ে কীভাবে জ্বালানি সংকট মোকাবিলা করা যায় তা ভাবছে সরকার।’
জ্বালানির এই তীব্র সংকটের মধ্যে বুধবার আরও খারাপ সংবাদ দিয়েছে দেশটির প্রধান এলপিজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লিট্রো। তারা জানিয়েছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্টক আনলোড করতে দেরি হওয়ায় তা বিতরণে প্রভাব ফেলেছে। এ অবস্থায় জনসাধারণকে এলপিজির লাইনেও না দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন লঙ্কান বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী উইজেসেকেরা ।
দুই সন্তানের মা এস ইয়োগা লেচ্ছামি পশ্চিমের মিরিহানা অঞ্চলের বাসিন্দা। তিনি জানান, প্রন ওয়াডে (একটি রাস্তার খাবার) কার্ট নিয়ে বেরিয়েছিলেন তিনি। তবে এলপিজির সংকটের কারণে ফিরে আসতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কয়েকজন গ্রাহককে পরিবেশন করার পর রান্নার গ্যাস ফুরিয়ে গেল। গ্যাসের বা কেরোসিন তেলের খোঁজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমার স্বামী ঘুরে বেড়ালেও খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছে তাকে।
‘সবকিছুই এখন দামি। দিন দিন চিংড়ির দাম বাড়ছে। কীভাবে সন্তানদের খাওয়াব, ব্যবসা চালাব? আমি আর কী করব জানি না।’
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে সরকারের ওপর গত কয়েক মাস ধরে ক্ষুব্ধ দেশটির সাধারণ নাগরিকরা। চলছে বিক্ষোভ। তা দমাতে দুই দফায় জারি হয়েছে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা। এতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় দেয়া হয় কারফিউ। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে।
সবশেষ জ্বালানি ও রান্নার গ্যাসের সংকট জনগণের ক্ষোভে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে বলে খবর দিচ্ছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন শহরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ শ্রীলঙ্কানরা।
প্রধান বিরোধী দল সামগী জনা বালাওয়েগায়া পার্টির সংসদ সদস্য এরান বিক্রমরত্নে বলছেন, ‘অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পূর্বশর্ত হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা; একটি গ্রহণযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য সরকার।
‘আমাদের এখনও তা নেই। নতুন সরকার এখনও গঠন হয়নি। আমরা রাজাপাকসের বাইরে সরকার গঠন করতে পারব না।
‘মৌলিক সমস্যাগুলোর সমাধান করা হয়নি। গত আড়াই বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এই সরকারের রদবদল দরকার। শ্রীলঙ্কায় হৈচৈ হচ্ছে, রাজাপাকসেদের যেতে হবে।’
দুদিন আগে (সোমবার) প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে সতর্ক করেছিলেন, আগামী দুই মাস শ্রীলঙ্কার জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর ওই আহ্বানের বিষয়ে লেচ্ছামি জানান, তার এবং তার পরিবারের আর কত ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অরুণা কুলাতুঙ্গা অবশ্য আলো দেখছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আলি সাবরি ও বিরোধী নেতা হার্শা ডি সিলভা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। এ সপ্তাহের শেষে তারা ঋণ পুনর্গঠনে একটি আইনি ও আর্থিক আলোচনা দল নিয়োগে কাজ করবেন।
‘ঋণ পুনর্গঠনের পাশাপাশি পর্যটন থেকে প্রবাহ এবং প্রবাসী আয়ও ধীরে ধীরে বাড়ছে। এই ইতিবাচক পদক্ষেপে অর্থনীতির বেশির ভাগ খাত স্বল্প মেয়াদে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। কিন্তু যতক্ষণ না বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক সংস্কার আসবে, দীর্ঘমেয়াদি পুনরুদ্ধার অনিশ্চিতই থেকে যাবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য