তামিলনাড়ুর ব্যস্ত রাস্তা মাদুরাই। ভারী যানবাহন চলাচল করে মহাসড়কটিতে। সম্প্রতি এই সড়কে নেমেছিল মানুষের ঢল। এতে একপর্যায়ে সড়কটিতে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। কিন্তু কেন এই ঢল নেমেছিল?
কেরালার মানলুরের গুদাম থেকে একটি চালান নিয়ে এই সড়ক ধরে যাচ্ছিল একটি ট্রাক। পথে নিয়ন্ত্রণ হারায় সেটি, উল্টে যায় ট্রাক। আর এতে ট্রাকে থাকা বাক্সগুলো রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। বেরিয়ে আসে সেগুলোতে থাকা মদের বোতল। আর এই মদের জন্যই হামলে পড়েছিল স্থানীয় লোকজন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে বোতলভর্তি মদ কুড়ানোর দৃশ্য। ভিডিও দেখে মনে হতে পারে, যেন কোনো প্রতিযোগিতা চলছে; কার আগে কে বেশি বোতল নিতে পারে। এসব নিয়ে হট্টগোল বেধে যেতেও দেখা গেছে।
পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বাহিনীটি জানায়, ট্রাকে আনুমানিক ১০ লাখ টাকার মদ ছিল।
ঠিক এমন ঘটনা গত ২০ এপ্রিল ঘটেছিল মধ্যপ্রদেশে। বিয়ারের কার্টন বহনকারী একটি গাড়ির সঙ্গে বারওয়ানি জেলায় অন্য একটি গাড়ির সংঘর্ষ হয়।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আশপাশের লোকজন। তবে এই তৎপরতা উদ্ধারের জন্য না। রাস্তায় পড়ে থাকা বিয়ারের কার্টন নেয়ায় ব্যস্ত ছিলেন তারা। পরে পুলিশ এসে অবশিষ্ট বিয়ায়ের কার্টনগুলো জব্দ করে।
দূষণের কারণে ভারতে মাত্র এক বছরে ২৩ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ লাখ মৃত্যু বায়ুদূষণে, পাঁচ লাখের বেশি মৃত্যু পানিদূষণে আর অন্য দূষণে বাকি মৃত্যু।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট সম্প্রতি ২০১৯ সালের ওই তথ্য প্রকাশ করেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ল্যানসেটের দূষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশন বলছে, বিশ্বে প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় দূষণের কারণে। প্রায় ৯০ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী দূষণ।
বায়ুদূষণের শিকার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দিকে আছে ভারতের নাম। দেশটিতে প্রতি বছর ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এতে।
গবেষণা বলছে, বাসস্থান ও এ সংক্রান্ত কারণে যে বায়ুদূষণ এবং পানিদূষণের ঘটনা ঘটে থাকে, তাতে মৃত্যু কিছুটা কমে এসেছে। তবে এই সংখ্যা আবার বাড়িয়ে দিয়েছে শিল্পকারখানার দূষণসহ নানা কারণে তৈরি হওয়া দূষণ।
২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণের কারণে অকালমৃত্যু হয় ৬৭ লাখ মানুষের, পানিদূষণে মারা গেছে ১৪ লাখ। আর সীসা দূষণে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ মানুষের।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণের কারণে ৯০ ভাগ মৃত্যু হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। এই তালিকায় শীর্ষে ভারত, এরপর চীন।
ভয়াবহ বায়ুদূষণের শিকার না হলে ভারতের নয়াদিল্লির মানুষের গড় আয়ু ১০ বছর বেড়ে যেত বলে গত সেপ্টেম্বরে জানায় ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট।
আরও পড়ুন:হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতকে ফুল ও মিষ্টি পাঠাতে বলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে চার দিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে আসেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। আর মমতাও তিন দিনের সফরে একই এলাকায় রয়েছেন।
এদিন মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে উঠে আসে আরএসএস প্রধানের সফরের প্রসঙ্গ।
তিনি বলেন, ‘এখানে নাকি আরএসএস প্রধান আসছেন? দেখে নিও, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওকে ফল মিষ্টি পাঠিও। আমাদের রাজ্যে কেউ এলে আতিথিয়তায় কোনো খামতি রাখি না। আমরা কাউকে ফেলে দিই না।’
‘ভালো করে নিরাপত্তা দিও, আবার বেশি বাড়াবাড়ি করতে যেও না, দেখো, যাতে দাঙ্গা না বাধায়।’
হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন আরএসএসকে মনে করা হয় বিজেপির আঁতুড়ঘর। তাই আরএসএস প্রধানকে মমতার ফুল-মিষ্টি পাঠানোর নির্দেশের ঘটনায় আরএসএসের সঙ্গে মমতার গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলেছে বামেরা।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুরে, মোহন ভাগবতও মেদিনীপুরে, পারস্পরিক দুজন দুজনকে দেখাশোনা করবেন। যাতে কারো কোনো অসুবিধা না হয়। মুখ্যমন্ত্রী ওনার অফিসারদের লাগিয়ে দিয়েছেন, যাতে যত্নের কোনো অসুবিধা না হয়। ফুল-মিষ্টি সব মিলিয়ে ভাগবতকে খুশি রাখার চেষ্টা করছেন।
‘আরএসএস দেশপ্রেমিক এটা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী দেবীদুর্গা, এটা আরএসএস বলেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে আজ পর্যন্ত আরএসএসের সমালোচনা শুনেছেন? মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির সঙ্গে খেলা খেলা ভাব দেখান, লড়াইয়ের ভাব দেখান কিন্তু আরএসএসের কথার বাইরে মুখ্যমন্ত্রী যে যান না, সেটা সবাই বুঝে গিয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজিব গান্ধী হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের একজন এ জি পেরারিভালানকে মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তিনি ৩১ বছর যাবৎ কারাগারে ছিলেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে রাজিব গান্ধী হত্যার অপর আসামি নলিনী শ্রীহরণ ও তার স্বামী মুরুগান, একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিকসহ বাকি ছয় অভিযুক্তের মুক্তির পথ প্রশস্ত করেছে।
রাজিব গান্ধী হত্যার সময় ১৯ বছর বয়সী পেরারিভালানের বিরুদ্ধে ৯ ভোল্টের দুটি ব্যাটারি সিভারাসনের জন্য কেনার অভিযোগ আনা হয়েছিল। সিভারাসন ছিলেন রাজিব গান্ধী হত্যার পরিকল্পনাকারী ও শ্রীলঙ্কার তামিল বিদ্রোহী সংগঠন লিবারেশন টাইগার অফ তামিল ইলমের সদস্য।
পেরারিভালানের কেনা ব্যাটারি দুটি রাজিব গান্ধী হত্যার জন্য বোমায় ব্যবহার করা হয়েছিল।
১৯৯১ সালের ২১ মে এক নির্বাচনী সভায় যোগ দিতে গেলে রাজিব গান্ধীকে লক্ষ্য করে ধানু নামের এক নারী আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। সে হামলায় রাজিব গান্ধীর মৃত্যু হয়।
১৯৯৮ সালে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত পেরারিভালানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং পরের বছর সুপ্রিম কোর্ট সেই সাজা বহাল রাখে। কিন্তু ২০১৪ সালে তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পরিবর্তন করা হয়। চলতি বছরের মার্চেই শীর্ষ আদালত থেকে তাকে জামিন দেয়া হয়।
তবে পেরারিভালানের দীর্ঘ কারা জীবনে তার খুব ভালো আচরণের রেকর্ড রয়েছে। কারাগারে তিনি পড়াশোনা করেছেন এবং বেশ কিছু শিক্ষাগত যোগ্যতাও অর্জন করেছেন। তিনি একটি বইও লিখেছেন।
পেরারিভালান দাবি করেছিলেন যে তিনি ব্যাটারিগুলোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতেন না। ভারতের অবসরপ্রাপ্ত সিবিআই অফিসার থিয়াগরাজন পরে বলেছেন, তিনি পেরারিভালানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পরিবর্তন করেছিলেন, এই জন্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের মুদ্রা রুপির সর্বোচ্চ পতন রেকর্ড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার টানা ষষ্ঠ দিন ডলারের বিপরীতে রুপির পতন অব্যাহত রয়েছে। দিনের শুরুতে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের জন্য ১৯৬.১০ রুপি গুনতে হয়েছে।
দেশটির মুদ্রাবিষয়ক সংস্থা ফরেক্স অ্যাসোসিয়েশন অফ পাকিস্তানের (এফএপি) প্রতিবেদন মতে, সোমবারের চেয়ে রুপির দর ডলারের বিপরীতে ১.৫০ কমে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৬.১০ রুপি।
দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত আমদানির কারণে রুপির দরপতন অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
রুপির দরপতন শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার। সেদিন ডলারের বিপরীতে রুপির লেনদেন হয়েছে ১৮৮.৬৬ তে। বুধবার তা আরও বেড়ে হয়েছে ১৯০.৯০। বৃহস্পতি, শুক্র ও সোমবার ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রার বিনিময় হার রেকর্ড করা হয় যথাক্রমে ১৯২, ১৯৩.১০ ও ১৯৪ রুপি। ষষ্ঠ দিন মঙ্গলবার তা হয়েছে ১৯৬.১০ রুপি।
দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরজুড়ে ডলারের উচ্চদরে হিমশিম খাচ্ছিল পাকিস্তানি রুপি। তবে অর্থবছরের শেষ দুই মাসে সেই পতন ভয়াবহ পর্যায়ে নামতে থাকে।
আরও পড়ুন:নানা সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় মাত্র এক দিন ব্যবহার করা যাবে, এ পরিমাণ পেট্রল মজুত রয়েছে।
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে আর মাত্র এক দিনের পেট্রল মজুত আছে। আগামী কয়েক মাস আমাদের জন্য খুব কঠিন হবে। আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নিতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
‘অল্প সময়ের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’
রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘জনগণের কাছে মিথ্যা বলার বা সত্য লুকানোর কোনো ইচ্ছা আমার নেই। পরিস্থিতি ভীতিকর, এটাই সত্য। তবে এই সময় দীর্ঘস্থায়ী হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রতিবেশী দেশগুলো আমাদের সহায়তা করবে। তারা এরই মধ্যে সাহায্য করা শুরু করেছে। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।
‘আগামী তিন দিনের মধ্যে ১ হাজার ১৯০ স্টেশনে তেল সরবরাহ করা হবে। অনুরোধ করব তার আগে তেলের জন্য লম্বা লাইন না দিতে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছি। এই পদের জন্য কোনো অনুরোধ করিনি। দেশের সংকট উত্তরণে প্রেসিডেন্ট আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘কেরোসিন, গ্যাস, জ্বালানির লাইন থাকবে না- এমন একটি দেশ গড়ব আমরা। সেখানে কোনো অভাব থাকবে না। জনগণের জন্য এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি। কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা দলকে রক্ষা করা আমার উদ্দেশ্য নয়। সবাই আমার পাশে থাকবেন।’
গত কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চরম মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে, মুদ্রাস্ফীতিও আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।
এ অবস্থায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। এক পর্যায়ে রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।
সরকারবিরোধী আন্দোলন সম্প্রতি আরও বড় রূপ ধারণ করে। আন্দোলনে বসা বিক্ষুব্ধদের ওপর হামলা চালায় সরকার সমর্থকরা। এতে বেশ কিছু জায়গায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে সরকারদলীয় এমপি, পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন নয়জন। আহত হন দুই শতাধিক।
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
আরও পড়ুন:কয়েক হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণা ও আত্মসাৎ ঘটনার হোতা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে আদালতে তোলা হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হেফাজতে থাকা পি কে হালদারসহ ৬ জনকে কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সিবিআই আদালতে নেয়া হবে।
আদালতে তোলার আগে ইডির তদন্তকারীরা টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে পি কে হালদার চক্রের বেআইনি সম্পত্তি, পাচার করা অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্র জানার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে কোন কোন প্রভাবশালীর সঙ্গে তার উঠাবসা রয়েছে বা ছিল এবং তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিস্তারিত জেনে নিতে চাইছেন তারা।
এসব বিষয়ের সদর্থক জবাব না পেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পি কে হালদারসহ পাঁচজনকে আবারও হেফাজতে নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানাতে পারে ইডি।
পাশাপাশি ভুয়া পরিচয়পত্র দিয়ে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, এমনকি পাসপোর্ট জাল করে অবৈধভাবে এদেশে থাকার বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই বা সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন তদন্ত করতে পারে। কারণ ইডি কেবল অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করার এখতিয়ার রাখে।
মঙ্গলবার রুটিন মেডিক্যাল চেকআপের পর পি কে হালদারসহ ৬ জনকে সিবিআই আদালতে তোলা হবে।
‘আমি দেশে ফিরতে চাই’
পি কে হালদারকে সোমবার বিধাননগর মহাকুমা হাসপাতালে রুটিন মেডিক্যাল চেকআপের পর সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির অফিসে ফিরিয়ে আনা হয়। এ সময় লিফটের মধ্যে তিনি বলেন, ‘আমি দেশে ফিরতে চাই। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
ইডি সূত্রে খবর, প্রথম দিকে তদন্তকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে অসহযোগিতা করলেও লাগাতার জেরার মুখে এক পর্যায়ে ভেঙে পড়েন পি কে হালদার। তদন্তে সহযোগিতা করতে রাজি হন তিনি। এদিন কখনও একা, আবার কখনও ইডির রিমান্ডে থাকা সহযোগীদের পাশে বসিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ইতোমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পি কে হালদার জালিয়াত চক্রের বেআইনি বিনিয়োগের বহু তথ্য ও নথি ইডির তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। প্রয়োজনে আরও জেরা করতে ইডি অভিযুক্তদের আবারও হেফাজতে নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানাতে পারে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন:ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ নিয়ে বিতণ্ডার পর এবার রাজ্যটির বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের জায়গা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
পাল্টাপাল্টি দাবির পর সোমবার আদালতের নির্দেশে মসজিদ চত্বরে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া ভূগর্ভস্থ ঘর (তাহখানা), অজুখানা এবং আশপাশের এলাকা সিল করে দিয়েছে প্রশাসন।
সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব দুই হাজার বছরের পুরোনো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে সেখানে গড়েন জ্ঞানবাপী মসজিদ।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার থেকে মসজিদের দুটি গম্বুজ, ভূগর্ভস্থ অংশ, পুকুরসহ সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা এবং ভিডিও করে সোমবার বারাণসীর আদালতে রিপোর্ট পেশ করা হয়।
এরপরই কয়েকটি এলাকা সিল করে সিআরপিএফ মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। বারাণসীর জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারের পাশাপাশি সিআরপিএফের একজন কমান্ডান্ট (সুপার) স্তরের কর্মকর্তাকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন নগর-দায়রা আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর।
আবেদনকারী হিন্দুত্ববাদী পক্ষের আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন সোমবার বলেন, ‘অজুখানার পুকুরে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব মেলার কারণেই আদালত এই পদক্ষেপ করেছে।’
আরেক আইনজীবী মদনমোহন যাদবের দাবি, মসজিদের পশ্চিমের দেয়ালের অদূরে অবস্থিত নন্দীমূর্তির মুখ রয়েছে শিবলিঙ্গের দিকে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট সোমবার জানিয়েছে, জ্ঞানবাপীতে সমীক্ষা ও ভিডিওগ্রাফি বন্ধের দাবিতে করা আবেদনের শুনানি হবে মঙ্গলবার।
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, জ্ঞানবাপী মসজিদ যে জমিতে গড়ে উঠেছে, তা আসলে হিন্দুদের। সুতরাং সেই জমি হিন্দুদের ফিরিয়ে দেয়া হোক।
মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব দুই হাজার বছরের পুরোনো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ গড়ে তোলেন দাবি তুলে সেখানে ‘হিন্দুত্বের ছাপ’ খুঁজতে প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার দাবি জানানো হয় আদালতে।
অন্যদিকে, জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে ‘দেবদেবীর মূর্তি’ আছে দাবি করে সেগুলো পুজো করার অনুমতি চেয়ে ২০২১ সালে আদালতে একটি পৃথক আবেদন করেন পাঁচ নারী।
এরই জেরে গত বৃহস্পতিবার বারাণসীর জেলা আদালত জ্ঞানবাপী মসজিদের প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল।
সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়।
এর আগে ষোড়শ শতকে মোঘল সম্রাট বাবরের সময় তৈরি করা বাবরি মসজিদ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরে হিন্দুত্ববাদী ভিএইচপি, বিজেপি এবং শিবসেনা পার্টির সদস্যরা ধ্বংস করে দেন।
তাদের মতে, মসজিদের ওই জায়গাটি ছিল হিন্দুধর্মের অন্যতম আরাধ্য দেবতা রামের জন্মস্থান এবং সেখানে মসজিদ হওয়ার আগে একটি মন্দির ছিল।
১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পর হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে হওয়া দাঙ্গায় ভারতে দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা যাযন। এরপরও অযোধ্যা ইস্যু নিয়ে ভারতে একাধিকবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রাণহানি হয়েছে বহু মানুষের।
২০২০ সালের নভেম্বরে বিতর্কিত ধর্মীয় স্থানটিতে একটি হিন্দু মন্দির বানানোর পক্ষে রায় দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য