২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ৬৪২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর আট মাস পর ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
২৯ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার কমে ৫৯৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
এই পতনের সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের রেকর্ড ৬৪২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে গেছে ৪৪ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার।
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, সামগ্রিক রিজার্ভের একটি প্রধান উপাদান বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদের জোগানের নিম্নমুখী গতির কারণে এই পতন ঘটেছে। বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদের মধ্যে ইউরো, পাউন্ড এবং ইয়েনের মতো অ-যুক্তরাষ্ট্র ইউনিটগুলোর মূল্যায়ন বা অবমূল্যায়নের প্রভাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের একটি প্রধান কারণ হলো বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের মূলধনের বহিঃপ্রবাহ।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ মুদ্রানীতি কঠোর করা এবং সুদের হার বৃদ্ধি শুরু করার পর থেকে ভারতের পুঁজিবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ২১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার তুলে নেয়। গত মার্চে সবচেয়ে বড় পতন হয়েছিল যখন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৬ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অন্যান্য মুদ্রার অবমূল্যায়ন ছাড়াও তেল ও পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডলারের চাহিদাও বেশি ছিল। মার্কিন ডলারের তুলনায় রুপির মূল্য কমে যাওয়া এবং সোনার দামের পতনও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের একটি ভূমিকা পালন করেছে।
শুক্রবার রুপি ৫৭ পয়সা কমে ৭৬ দশমিক ৯৬-এর সর্বনিম্ন মাত্রা ছুঁয়েছিল; যা ৭৬ দশমিক ৯৭-এর সর্বকালের সর্বনিম্ন মাত্রা থেকে সামান্য নিচে।
তবে পুঁজিবাজার বন্ধের সময় ডলারের বিপরীতে রুপির দাম ছিল ৭৬ দশমিক ৯২। যদি রুপির মূল্য আরও নিচে নামে, তাহলে আরবিআই তার বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে, যা মোট বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চায় না যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামুক।
আরও পড়ুন:বিশ্বজুড়ে মাঙ্কিপক্স নিয়ে উদ্বেগের মাঝে সংক্রমণ মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
বিদেশ থেকে আসা কোনো ব্যক্তির মাঙ্কিপক্স উপসর্গ থাকলে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আইসোলেশন থাকতে হবে তাকে।
ভারত সরকারের নির্দেশ মেনে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
রাজ্যটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘এখনও আমাদের দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সরকার। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ দেখা দিলে ওই ব্যক্তির রক্তের নমুনা পুনেতে পাঠানো হবে পরীক্ষার জন্য।’
২১ দিনের মধ্যে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে এমন দেশ থেকে কোনো ব্যক্তি যদি পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেন সেক্ষেত্রে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আইসোলেশনে রেখে তার চিকিৎসা করা হবে।
ওই ব্যক্তি কাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে রাজ্যটির স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৫টি দেশের ৮০ জনের শরীরে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস মিলেছে।
প্রাণঘাতী না হলেও সপ্তাহ তিনেক জ্বর, ব্যাথাসহ নানা উপসর্গ থাকছে এই রোগে।
এরই মধ্যে আফ্রিকার বাইরে ১৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কিপক্স। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলে ৮০ জনের বেশি সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
যদিও বলা হচ্ছে, এই ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সাধারণত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান।
আরও পড়ুন:সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিতে এবার দলিত পুরোহিতের চিবানো মিষ্টি হাসিমুখে খেয়ে নিলেন ভারতের এক মুসলিম রাজনীতিবিদ।
বেঙ্গালুরুর চামরাজপেট আসনের বিধায়ক (এমএলএ) জামির আহমেদ খান রোববার দলিত সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব আম্বেদকর জয়ন্তী এবং মুসলমানদের ঈদে মিলন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
সেখানে বক্তব্য দেয়ার মাঝে একটি মিষ্টি তিনি তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুরোহিতকে খাইয়ে দেন। এরপর পুরোহিতকে চিবানো মিষ্টি মুখ থেকে বের করে তার মুখে দেয়ার অনুরোধ করেন এমএলএ নিজেই।
এতে পুরোহিত কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বিধানসভার সদস্যের অনুরোধে নিজের চিবানো মিষ্টি পুড়ে দেন এমএলএ-র মুখে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তুলে ধরতে বিধায়কের এমন দৃষ্টান্তমূলক সম্প্রীতির ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
ভারতে হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ইস্যুগুলোকে উসকে দিয়ে ফায়দা আদায় করা রাজনীতিকদের উদ্দেশ করে বিধায়ক জামির আহমেদ খান বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্মীয় উগ্রবাদী দল ভারতের মাটিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
চারবারের বিধায়ক জামির খান এর আগে খাদ্য ও নাগরিক অধিকার, ভোক্তা অধিকার এবং সংখ্যালঘুদের কল্যাণবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ ১ জুন পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।
সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদোশ কোচবিহার ও নিউ জলপাইগুড়ি জংশন (এনজেপি) পরিদর্শনে গিয়ে এমনটি নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক এই ট্রেনের যাত্রা সফল করতে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন সার্ভিসকে পুরোদমে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মিতালী এক্সপ্রেস দুই দেশের পর্যটন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করবে।’
প্রতিবেশী দুই দেশে চালু হওয়া যাত্রীবাহী ট্রেনের মধ্যে মিতালী হচ্ছে তৃতীয় এক্সপ্রেস ট্রেন।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে ৯ ঘণ্টায় ৫১৩ কিলোমিটার দুরত্ব পাড়ি দিয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছাবে মিতালী।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চারটি কেভিন কোচ ও চারটি চেয়ার কার ও ডিজেলচালিত ইঞ্জিন থাকবে এই আন্তর্জাতিক এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে। এতে মোট আসন সংখ্যা ৪৫৬টি।
গত বছর ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ ট্রেন উদ্বোধন করেন। ওই দিন ট্রেনটি চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করে। তবে করোনা মহামারির কারণে ট্রেনটি এত দিন নিয়মিত চলাচল শুরু করতে পারেনি।
চলতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) থেকে চালু হবার কথা ছিল ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে নতুন ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রস্তুতি চূড়ান্ত না হওয়ায় তা চালু হয়নি। এতে হতাশ হয় দুই দেশের পর্যটকরা।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে বলে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের কথা দেশটির পূর্ব রেলের মহাব্যবস্থাপক ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়েকে জানানো হয়। গত ১৯ মে ভারতীয় রেলের এই সিদ্ধান্ত চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশে রেলওয়েকে জানানো হয়।
চিঠিতে আগামী ২৯ মে থেকে ঢাকা থেকে কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস ও কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস চালুর প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া ১ জুন থেকে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর প্রস্তাব করা হয়।
ভারতীয় রেলের চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারতের হাইকমিশন, ঢাকা ও বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয় ক্রস বর্ডার যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা পুনরায় চালুর জন্য অনুরোধ করেছে। সেই অনুযায়ী বিআর রেক দ্বারা ঢাকা থেকে কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং আইআর রেক দ্বারা কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস পুনরায় চালু করার প্রস্তাব করেছে।
এর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছিল, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল দুই দেশের যাত্রীবাহী রেল যোগাযোগ। বন্ধ ছিল দুই দেশের পর্যটন ভিসা প্রক্রিয়াও। পরে শুধু ব্যবসা, শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে দুদেশে জরুরি ভিত্তিতে নাগরিকদের চলাচল করছিলেন।
গত ২৩ মার্চ ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে বৈঠক করেন রেলমন্ত্রী নূরল ইসলাম সুজন। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তর্দেশীয় মৈত্রী, বন্ধন এবং মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে দুই দেশের নিয়মিত পর্যটন ভিসা চালু হলেই বন্ধ ট্রেনগুলো চালু করা হবে বলে মত দেন উভয় দেশের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:ইরানের রাজধানী তেহরানে গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এক কর্নেল।
স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ।
ইরানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত আরেক সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, তেহরানের পূর্বাঞ্চলে বাড়িতে প্রবেশের আগে গাড়ি থেকে বের হওয়ার মুহূর্তে গুলিবিদ্ধ হন হাসান সাইয়েদ খোদায়ি।
মোটরসাইকেলে করা আসা দুই আততায়ী তাকে পাঁচটি গুলি করে পালিয়ে যায়।
বার্তা সংস্থা আইআরআইবি জানিয়েছে, তিনটি গুলি খোদায়ির মাথায় বিদ্ধ হয়। দুটি গুলি লাগে তার হাতে।
খোদায়ি নিহত হওয়ার পরপরই বিবৃতি দেয় আইআরজিসি। এতে বলা হয়, প্রতিবিপ্লবী অংশের আততায়ীদের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন আইআরজিসির এক সদস্য।
বিবৃতিতে নিহত আইআরজিসি কর্নেলের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। পাশাপাশি তার হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানানো হয়।
খোদায়িকে হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রসিকিউটরদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন তেহরানের বিচারিক আদালতের প্রধান আলি আলকাসি।
তিনি বলেন, ‘গুপ্তহত্যার সঙ্গে জড়িতদের চড়া মূল্য দিতে হবে।’
আরও পড়ুন:অক্সিজেন ছাড়াই মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে উঠেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরের পিয়ালী বসাক। এ নিয়ে দ্বিতীয় বার এভারেস্ট জয় করলেন তিনি। তবে এবারের বিশেষত্ব হলো, প্রথম ভারতীয় হিসেবে পরিপূরক অক্সিজেন ছাড়াই তিনি এভারেস্ট জয় করেছেন।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এভারেস্ট পর্বত শৃঙ্গের শীর্ষে পৌঁছে যান পিয়ালী। অক্সিজেন ছাড়া এই নজির ভারতবর্ষে আর কারও নেই।
বিশিষ্ট পর্বতারোহী ও এভারেষ্ট জয়ী বসন্ত সিংহ রায় বলেন, ‘এই সাফল্য বর্ণনা করার ভাষা নেই। ক্যাম্প-থ্রির পর থেকেই অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্ট জয় ভাবাই যায় না। ও এখনো নামেনি। প্রার্থনা করি, সুস্থভাবে নেমে আসুক।’
পিয়ালী পেশায় চন্দননগর কানাইলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্যারাটিচার। বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ বাবা-মা ও বোন তমালী। বাবা-মাকে দিদির এই অনন্য ইতিহাস গড়ার খবরটি দেন বোন তমালী। শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও মেয়ের এই অসাধ্য সাধনে খুশি পিয়ালীর মা।
বাড়িতে ব্যাপক অর্থ সমস্যা ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অক্সিজেন ছাড়া একজন নারী হিসেবে পিয়ালীর এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় অনেক অভিজ্ঞ পর্বতারোহীকেও বিস্মিত করেছে।
সপ্ত শৃঙ্গজয়ী পর্বতারোহী সত্যরূপ বলেন, ‘অসাধারণ সাফল্য! বাঙালি হিসেবে এই সাফল্য গর্বের। এভারেস্টের ৮ হাজার ফুট উচ্চতায় অক্সিজেন ছাড়া যাওয়াটা বিশাল বড় অ্যাডভেঞ্চার। পর্বতারোহীদের কাছে পিয়ালী একটা দিগন্ত খুলে দিয়েছে।’
পিয়ালী বসাক ৩ মে বেস ক্যাম্প থেকে এভারেস্ট জয়ের জন্য রওনা হন। ২২ মে রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় অক্সিজেন ছাড়া প্রথম অসামরিক ভারতীয় হিসেবে এই সাফল্য অর্জন করেন তিনি।
আরও পড়ুন:সব নারী ক্রু দিয়ে এই প্রথম একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে সৌদি আরবের বেসামরিক এয়ারলাইনস ফ্লাইডেল।
স্থানীয় সময় শনিবার ফ্লাইডেল কর্তৃপক্ষ এ কথা জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা আরব নিউজের প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ফ্লাইডেলের মুখপাত্র ইমাদ ইসকানদারানি বলেন, ‘ওই উড়োজাহাজের সাতজন ক্রুর মধ্যে বেশির ভাগই সৌদি নারী। ক্রুদের মধ্যে ফার্স্ট অফিসার একজন সৌদি নারী। তবে ফ্লাইটটির ক্যাপ্টেনের দায়িত্বে ছিলেন বিদেশি একজন নারী।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল দেশটিতে এ ঘটনাকে নারীর ক্ষমতায়নের মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। সৌদি আরবে সাশ্রয়ী খরচে পরিচালিত এয়ারলাইনস ফ্লাইডেল এটি পরিচালনা করে। নতুন মডেলের এয়ারবাস এ-৩২০-এর ফ্লাইটটি শনিবার রাজধানী রিয়াদ থেকে উড্ডয়ন করে উপকূলীয় শহর জেদ্দায় পৌঁছায়।’
ফ্লাইডেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটিই প্রথম ফ্লাইট যেখানে সব নারী ক্রুর পাশাপাশি একজন সৌদি নারী কো–পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রক্ষণশীল এই আরব দেশটিতে গত কয়েক বছর যুবরাজ ও দেশটির কার্যত শাসক মোহাম্মদ বিন সালমান নারীদের গাড়ি চালনায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, পুরুষ অভিভাবক ছাড়া নারীদের বাইরে যাওয়ার ওপর থাকা বিভিন্ন বিধিনিষেধ তুলে দেন।
সৌদি কর্তৃপক্ষ অ্যাভিয়েশন খাতের উন্নয়নে চেষ্টা চালাচ্ছেন, যাতে দেশটি আকাশপথে বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত হয়। দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্লাইট পরিচালনায় নারীদের ভূমিকা আরও জোরালো করার আশ্বাস দেয়।
এই ফ্লাইটে কো-পাইলটের দায়িত্বে ছিলেন ২৩ বছর বয়সী সৌদি নাগরিক ইয়ারা জান। তিনি দেশটির সবচেয়ে কম বয়সী নারী পাইলট।
তিনি বলেন, ‘দেশটির এমন ঐতিহাসিক মুহূর্তের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারায় নিজেকে অনেক গর্বিত মনে হচ্ছে।
‘একজন সৌদি নারী হিসেবে আমি চাইব দেশের এমন সব অগ্রযাত্রার সঙ্গে নিজের নাম স্মরণীয় করে রাখতে।’
ইয়ারা জান ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি ফ্লাইট স্কুল থেকে পাইলট হিসেবে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ফ্লাইডেল এয়ারলাইনসে পাইলট হিসেবে তিনি চাকরি শুরু করেন ২০২১ সালের জুনে।
তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ এই ফ্লাইটটিতে কো-পাইলট হিসেবে পাইলটকে সহযোগিতা করতে নেভিগেশন ও বিভিন্ন চেকলিস্ট সম্পন্ন করতে হয়েছে আমাকে।’
‘যদিও একজন সৌদি নারীর জন্য পাইলট হওয়া নতুন তবে আমাদের প্রজন্মের জন্য এখন এটি আর অসম্ভব কিছু নয়। বিশেষ করে আমরা আমাদের প্রিয় দেশ এবং আমাদের সম্মানিত নেতাদের কাছ থেকে যে সমর্থন পাচ্ছি। এর ফলে আমি সৌদিতে সর্বকনিষ্ঠ নারী পাইলট হতে অনেক সহায়ক হয়েছে। আমি সব সময় একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের পক্ষে সহায়ক হয়ে কাজ করার সুযোগ পেলে আরও বেশি উচ্ছ্বসিত হব।’
সম্প্রতি সৌদি আরবে নারী পাইলটের সংখ্যা বাড়ছে।
এই ক্ষেত্রে আরও তিনটি নাম স্মরণীয় হয়ে আছে। হানাদি জাকারিয়া আল-হিন্দি যিনি সৌদি বাণিজ্যিক পাইলটের লাইসেন্স নিয়ে উড়োজাহাজ পরিচালনা করা প্রথম নারী পাইলট।
রাওয়াইয়া আল-রিফি প্রথম নারী যিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে একটি আন্তর্জাতিক বেসামরিক ফ্লাইট এয়ারবাস এ-৩২০ পরিচালনা করে নিজ দেশ সৌদি আরবে নিয়ে আসেন।
ইয়াসমিন আল-মাইমানি, যিনি সৌদি আরবে প্রথম একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নারী কো-পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন:প্রায় এক দশক পর অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতায় এলো লেবার পার্টির নেতা। শনিবার দেশটির সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভ ও মধ্য-ডানপন্থি স্কট মরিসনকে হারিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন মধ্য-বামপন্থি অ্যান্থনি আলবানিজ।
উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের সামনে সবাইকে নিয়ে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন ৫৯ বছর বয়সী আলবানিজ।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হাজারো সমর্থকদের উদ্দেশে আলবানিজ বলেন, ‘জনগণ পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। আমার কাছে অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে নেতৃত্ব দেয়া এক মহান অর্জন।’
মধ্য-বামপন্থি নতুন প্রধানমন্ত্রী সবাইকে নিয়ে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া সামাজিক সেবাগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণ বন্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। লিবারেল পার্টির প্রধানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণাও দিয়েছেন আলবানিজ।
নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজকে অভিনন্দন জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
পরাজয় মেনে নিয়ে স্কট মরিসন বলেন, ‘ভোটের এই রায়ে অস্ট্রেলিয়ার জনগণের অবিশ্বাস্য এক ক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। নির্বাচনে জয়লাভের পর আমি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি।’
দেশটির নতুন ফার্স্টলেডি হতে যাচ্ছেন আলবানিজের গার্লফ্রেন্ড জোডি হেডন। ৪৩ বছর বয়সী হেডন গত দুই বছর ধরে আলবানিজের বান্ধবী।
হেডন হতে যাচ্ছেন দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় ফার্স্টলেডি যিনি প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী নন তবে বান্ধবী।
লেবার পার্টির সবশেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন কেভিন রুড। ২০১৩ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ লেবারেল ন্যাশনাল কোয়ালিশনের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যান রুড।
২০১৯ সালের নির্বাচনে দলটির পরাজয়ের পর বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লেবার নেতা আলবানিজ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড ও জুলিয়া গিলার্ডের শাসনামলে উপপ্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আলবানিজ।
তবে তিনি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
দ্য সিডনি মর্নিং হ্যারাল্ডের খবরে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের নেতৃত্বে মধ্য-ডান জোট-এলএনপি এখন পর্যন্ত ৫০টি আসনে জয় পেয়েছে।
আইএনডি ১০টি, গ্রিনপার্টি ৩টি ও অন্যান্য দল পেয়েছে ২টি আসন।
আংশিক ফলাফল অনুসারে লেবার পার্টি এখন পর্যন্ত ৭১টি আসনে জয় পেয়েছে। দেশটির পার্লামেন্টে নিম্নকক্ষে আসন সংখ্যা ১৫১টি। আর ৫টি আসনে জয় পেলেই নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে লেবার পার্টির আলবানিজ।
ফলাফলের এই পর্যায়ে দেখা যায়, আইএনডি, গ্রিনপার্টিসহ অন্য দলগুলো যদি স্কট মরিসনের সঙ্গে জোট গঠন করে সেই জোটের পক্ষে নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন এখন আর সম্ভব নয়।
এখন পর্যন্ত ৬৭.০২ শতাংশ ভোট গণনা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য