ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পশ্চিমবঙ্গ সফরের প্রথম দিনেই ঝাড়্গ্রাম জেলা বিজেপিতে বড়সড় ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম বিজেপির নতুন জেলা কমিটির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ১৬ জন জেলা কমিটির সদস্য, ১৮টি মন্ডল, নগরমন্ডল, শক্তিকেন্দ্রসহ একাধিক সংগঠনের সভাপতি, সহসভাপতি, সম্পাদকসহ শতাধিক নেতা লিখিত পদত্যাগ করার জন্য স্থানীয় বিজেপি কার্যালয়ে হাজির হন।
কিন্তু বিজেপি কার্যালয়ে জেলা সভাপতি তুফান মাহাত বা অফিস ইনচার্জ উপস্থিত না থাকায় তারা পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেননি তারা। বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়, পরে তারা ওই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেবেন ।
পদত্যাগপত্র জমা দিতে আসা বিজেপি জেলা কমিটির সদস্য চন্দ্রশেখর প্রতিহার বলেন, ‘আমি বিনপুর মন্ডলে তিন বছর সভাপতি ছিলাম। আমাকে কোন কিছু না জানিয়ে জেলা কমিটির সদস্য করা হয়েছে। কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে, জেলা নেতৃত্ব এই কাজ করেছে। আমরা এই জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে কোনও কর্মসূচি নিতে পারছি না। বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। তাই আমরা জেলা কমিটির সদস্যরা ছাড়াও একাধিক শাখা সংগঠনের পদে পদত্যাগ করছি।
পদত্যাগ পত্রে লেখা হয়েছে, অযোগ্য জেলা কমিটি, কোনও সদস্যকে সম্মান না দেয়ায় আমরা পদত্যাগ করছি, তবে আমরা সবাই দলের সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ করে যাব।
শালবনির মন্ডল সভাপতি পূর্ণচন্দ্র মাহাতকে জেলা কমিটিতে আনা হয়েছে । তিনিও একই অভিযোগে সাংবাদিকদের সামনে সরব হন।
ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি সভাপতি তুফান মাহাতকে এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সরকারি কাজের পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির ভাঙ্গনের কোন্দল সামলাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সাবেক সভাপতি, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দুইদিনের পশ্চিমবঙ্গ সফরে বৃহস্পতিবার রাজ্যে এসেছেন। তার উপস্থিতিতেই ঝাড়গ্রামে বিজেপির ভাঙ্গনের এই দৃশ্যে বিড়ম্বনায় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে উত্তর পাঞ্জাবের মরু অঞ্চল চোলিস্তান। তাপে শুকিয়ে গেছে সব জলাধার। খাওয়ার পানির দেখা দিয়েছে তীব্র সংকট। আর এই সংকটের মুখে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। পানির অভাবে দিন দিন বাড়ছে গবাদিপশুর মৃত্যু। পাকিস্তানের দরিদ্রতম এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবিকা এই গবাদিপশুর ওপর নির্ভর করে।
চোলিস্তানের বাসিন্দাদের দুরবস্থা দেখতে সেখানে চষে বেড়িয়েছে ভাইস নিউজ। মধ্য দুপুরে তারা দেখতে পান, বৃদ্ধ এক খামারি লুটিয়ে পড়েছেন কাদামাটিতে। আশপাশের লোকজন তাকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন। তবে দাঁড়ানোর সক্ষমতা ছিল না বৃদ্ধের।
এ ঘটনার মাত্র কিছু আগে নিজের মারা যাওয়া পশুদের দেহ নিয়ে আসার জন্য ওই কর্দমাক্ত জলাশয়ের কাছে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ ব্যক্তিটি।
একপর্যায়ে তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘হে ঈশ্বর, তাদের (পাকিস্তান সরকার) ধ্বংস করুন। আমার গবাদিপশু তৃষ্ণায় মারা গেছে। আমাদের কোনো রক্ষক নেই। তারা যা করেছে তার জন্য ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
ওই বৃদ্ধের আবেগঘন দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে নিজ দেশের সরকারকে অভিশাপ দিতে দেখা যাচ্ছে অসহায় এই খামারিকে। তার অভিযোগ, সরকারের উদাসীনতার জন্যই চোলিস্তানের মরু অঞ্চলের দরিদ্র কৃষকদের ওপর বিপর্যয় নেমে এসেছে।
سیف سٹی کے ساتھ ساتھ سیف چولستان کے بارے میں بھی سوچیں۔ ایک کیمرہ چولستان پر بھی لگائیں۔۔جہاں بے زبان جانور پانی ہی قلت اور شدید گرمی کی وجہ سے کررہے ہیں۔#چولستان_کو_پانی_دو pic.twitter.com/lsw9UMtpFy
— Valentina Reece (@reece_valentina) May 11, 2022
মার্চের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহে পাকিস্তানের ২২০ মিলিয়ন জনসংখ্যার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশে তীব্রতর হয়েছে, চালিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসযজ্ঞ।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাদ জুগনু বলেন, ‘যদি পরিস্থিতি না বদলায়, তবে আমরা মারা যাব। আপনি খবরে দেখতে পাবেন চোলিস্তানের বাসিন্দারা মারা গেছে।
‘ঈশ্বরের ভালোবাসার জন্য, সরকারকে চোলিস্তান সম্পর্কে ভাবতে হবে। আমাদের পানি দেয়া উচিত। অন্যথায় আমরা মারা যাব।’
বিশ্বের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে ১ শতাংশেরও কম নিঃসরণ করে পাকিস্তান। তবে জার্মানওয়াচের ২০২১ সালের সমীক্ষা বলছে, আবহাওয়ায় পরিবর্তনের কারণে দেশটি এখনও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় অষ্টম অবস্থানে আছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোয় পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই অঞ্চলের মানুষ এবং প্রাণীরা পানিশূন্যতায় ভুগছে, হিটস্ট্রোকের বড় ঝুঁকিতে আছে।
চোলিস্তানে তীব্র তাপমাত্রা এবং কম বৃষ্টিপাতের ফলে কূপগুলো শুকিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ফসল। বাধ্য হয়ে অঞ্চল ছেড়ে যাচ্ছে বহু মানুষ।
রেহাই পাচ্ছে না পশু-পাখিরাও। এই অঞ্চলে বাস করা দুই লাখ মানুষের আয়ের অন্যতম উৎস গবাদিপশু। গত কয়েক দিনে অন্তত ৫০ প্রাণী মারা গেছে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সংখ্যাটা ২০০-র কাছাকাছি।
জুগনু বলেন, ‘চোলিস্তানের পরিস্থিতি ভয়াবহ। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় চারদিকে খরা। অনেক প্রাণী মারা গেছে। কিছুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
বিষয়টি আমলে নিয়েছে প্রশাসন। জরুরি ত্রাণ ও চিকিৎসা শিবির স্থাপন করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বিশুদ্ধ পানি আছে এমন জায়গায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে মানুষ ও গবাদিপশুকে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে আরও পরিকল্পনা নিচ্ছে পাকিস্তান সরকার।
তবে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ব্যবস্থা আগেই নিতে পারত সরকার। এতে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা কমানো যেত অনেক। গ্রীষ্মে যখন থেকে তাপদাহ বাড়তে শুরু করেছিল, সে সময় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভূগর্ভস্থ পানির জন্য ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টের অভাবকে দায়ী করছেন বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য পুকুরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হতো না তাদের। সরকার প্রতিবেশী অঞ্চল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে চোলিস্তানে পানি সরবরাহ করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করলেও, পাইপগুলো শুকিয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে খরা মৌসুমে পানি সরবরাহের জন্য নিয়মিত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তানে যুদ্ধ বাধাতে চান বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক ই-ইনসাফের (পিটিআই) এক কর্মসূচি নিয়ে রোববার শাহবাজ এ মন্তব্য করেন।
বুধবার ইসলামাবাদে লংমার্চের ঘোষণা দিয়েছে পিটিআই। ওই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ডন।
শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘ইমরান খান দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাতে চান। কিন্তু তিনি ভ্রান্তির মধ্যে আছেন। তিনি যে পাপ করেছেন, জনগণ কখনই তা ভুলবে না। তাকে শার্টের কলার ধরে নামাবে মানুষ।’
ইমরানের দলের কর্মসূচি নিয়ে প্রয়োজনে যেকোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিভিন্ন নাটকীয়তার পর গত ৯ এপ্রিল মধ্যরাতের অনাস্থা ভোটে ৬৯ বছর বয়সী ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্বের অবসান ঘটে। তিনি দেশটির ২২তম প্রধানমন্ত্রী।
পরে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে আবার ভোটাভুটিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) নেতা শাহবাজ শরিফ।
দুর্নীতির দায়ে নওয়াজ শরিফ অভিশংসিত হওয়ার পর ২০১৮ সালে চার দলের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ইমরান। তার সরকারের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিতে এবার দলিত পুরোহিতের চিবানো মিষ্টি হাসিমুখে খেয়ে নিলেন ভারতের এক মুসলিম রাজনীতিবিদ।
বেঙ্গালুরুর চামরাজপেট আসনের বিধায়ক (এমএলএ) জামির আহমেদ খান রোববার দলিত সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব আম্বেদকর জয়ন্তী এবং মুসলমানদের ঈদে মিলন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
সেখানে বক্তব্য দেয়ার মাঝে একটি মিষ্টি তিনি তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুরোহিতকে খাইয়ে দেন। এরপর পুরোহিতকে চিবানো মিষ্টি মুখ থেকে বের করে তার মুখে দেয়ার অনুরোধ করেন এমএলএ নিজেই।
এতে পুরোহিত কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বিধানসভার সদস্যের অনুরোধে নিজের চিবানো মিষ্টি পুড়ে দেন এমএলএ-র মুখে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তুলে ধরতে বিধায়কের এমন দৃষ্টান্তমূলক সম্প্রীতির ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
ভারতে হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ইস্যুগুলোকে উসকে দিয়ে ফায়দা আদায় করা রাজনীতিকদের উদ্দেশ করে বিধায়ক জামির আহমেদ খান বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্মীয় উগ্রবাদী দল ভারতের মাটিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
চারবারের বিধায়ক জামির খান এর আগে খাদ্য ও নাগরিক অধিকার, ভোক্তা অধিকার এবং সংখ্যালঘুদের কল্যাণবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন:তীব্র গরমে অতিষ্ঠ ভারতের রাজধানী দিল্লির বাসিন্দাদের জীবনে এলো স্বস্তির বৃষ্টি। সোমবার ভোররাত থেকে প্রবল বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি হয়েছে দিল্লি ও আশপাশের এলাকায়। দিল্লিবাসীর মনে স্বস্তি এনে দেয়া এই বৃষ্টি সারা দিনই অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি)।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে দিল্লির তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। সোমবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে তাপমাত্রা ছিল ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বৃষ্টির পর সকাল ৭টায় ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এদিকে আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, দিল্লি ও এর আশপাশের এলাকায় আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা জারি করে বলেছে, শুধু দরকারেই ঘর থেকে বের হতে হবে, ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হবে। পাশাপাশি বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে ঝুপড়ি, টিনের চালার মতো দুর্বল স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এদিকে ভারি বৃষ্টির কারণে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিমান সেবা ব্যাহত হয়েছে। দিল্লি বিমানবন্দরের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যানুসারে, খারাপ আবহাওয়া ও অন্যান্য কারণে ৪০টি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যাত্রীদের ফ্লাইট আপডেটের জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
অধিক বৃষ্টির ফলে দিল্লির বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে দিল্লির বহু স্থানে ট্রাফিক জ্যামের পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। রাজধানীর কিছু অংশে গাছ উপড়ে গেছে এবং সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আইটিও, ডিএনডি ফ্লাইওভার ও অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট মেডিক্যাল সায়েন্সের কাছাকাছি বিভিন্ন এলাকায় ট্র্যাফিক জ্যামের খবর পাওয়া গেছে এবং গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
দিল্লির মতিবাগ এলাকায় একটি চলন্ত গাড়ির ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে। ঘটনার সময় সেই গাড়িতে তিনজন ছিলেন। তাদের নিরাপদে গাড়ি থেকে বের করে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন:অর্থনৈতিকসহ নানা সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় নতুন করে আরও ১০ মন্ত্রী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ওই মন্ত্রীদের নিয়োগ দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিলন টুডে।
নতুন নিয়োগ পাওয়া মন্ত্রীদের মধ্যে ইলাম পিউপিলস ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ডগলাস দেবানন্দকে দেয়া হয়েছে মৎস্য সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। পরিবহন, সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন ব্যান্দুলা গানওয়ার্দেনা।
এ ছাড়া পানি সম্পদ, কৃষি, বন, শিল্প, ধর্ম, সংস্কৃতি ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়েও নতুন মন্ত্রী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই ১০ মন্ত্রীই শপথ গ্রহণ করেছেন।
ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় টানা কয়েক দিন ধরে চলা সরকারবিরোধী আন্দোলন গত ১১ মে আরও বড় রূপ ধারণ করে। ওইদিনের সংঘর্ষে নিহত হন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের এক এমপি ও পুলিশ সদস্যসহ অন্তত নয়জন।
করোনাভাইরাস মহামারি, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি মূল্য এবং কর কর্তনে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। বিদেশি মুদ্রার তীব্র সংকট এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতিতে দেশটিতে ওষুধ, জ্বালানি ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রীর সংকটও চরমে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে, যার কোনো কোনোটি সহিংস রূপ নিয়েছে। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাকাপাকসে পদ ছেড়েছেন। এসেছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:আফগানিস্তানে নতুন আদেশ কার্যকর করেছে তালেবান সরকার। যাতে বলা হয়েছে দেশের সব নারী টেলিভিশন সংবাদ উপস্থাপক তাদের মুখ ঢেকে রাখবে।
গত বৃহস্পতিবার আদেশটি ঘোষণা করে তারা। আদেশের পরপরই কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নতুন নির্দেশনা মেনে চলা শুরু করে।
তবে রোববার তালেবানের 'পূণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রণালয়' এই ডিক্রি জারি করার পর বেশিরভাগ নারী উপস্থাপকদের মুখ ঢেকে উপস্থাপনা করতে দেখা যায়।
এর আগে দেশটির তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে, এই নীতিই চূড়ান্ত থাকবে এবং আর কোনো আলোচনা হবে না।
এর প্রতিবাদে আফগানিস্তানের টোলোনিউজের একজন টিভি উপস্থাপক সোনিয়া নিয়াজি বলেছেন, ‘এটি আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ ঢাকতে বাধ্য করা আমাদের সংস্কৃতি নয়। কোনো অনুষ্ঠান উপস্থাপনার সময় আমাদের জন্য এটা একটা অস্বস্তির কারণ।’
নিয়াজি আল জাজিরাকে বলেন, প্রথমবারের এভাবে উপস্থাপনা করতে বেশ অসুবিধায় পরতে হয়েছে আমাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই আদেশটি সব নারী উপস্থাপকদের জন্য প্রত্যাশিত নয়। কারণ ইসলাম আমাদের মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয়নি। এ ছাড়া প্রত্যেক ইসলামিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই আদেশের বিরোধিতা করেছেন।’
তালেবানরা আরও বলেছে, নারী উপস্থাপকরা এর পরিবর্তে মেডিকেল মাস্কও পরতে পারেন। বিপরীতে নিয়াজি বলেন, মুখ ঢেকে রাখার আদেশটি তার কাছে নিজেকে আবদ্ধ রাখা বলে মনে হচ্ছে। এই ধরনের আদেশ নারীদের ওপর প্রয়োগ করা আফগানিস্তান জুড়ে নারীদের নির্মূল করার একটি পদক্ষেপ মনে হচ্ছে।
নারী সহকর্মীদের পাশে থাকার জন্য টোলো নিউজের পুরুষ সংবাদ পাঠকরা তাদের মুখ ঢেকে সংবাদ পাঠ করেন।
একজন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মকর্তা তার নাম ও স্টেশনের নাম গোপন রাখার শর্তে আল জাজিরাকে নিশ্চিত করেছেন, গত সপ্তাহে তার স্টেশনটি তালেবানের পক্ষ থেকে এই আদেশ পায়। তবে রোববার জানতে পারেন এই আদেশই চূড়ান্ত থাকবে।
এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সাল থেকে আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতার শেষ সময়ে আপাদমস্তক ঢাকা বোরকা পরতে বাধ্য করে নারীদের ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। এ ছাড়া তাদের সাধারণ জীবনযাপন ও শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি করেছিল।
গত বছর আগস্টে তারা আবার ক্ষমতা দখল করার পর প্রাথমিকভাবে বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে আগের মত কট্টর পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি নারীদের জন্য কোন পোশাকের সুনির্দিষ্ট কোনো বিধিনিষেধও তারা শুরুতে দেয়নি।
কিন্তু সম্প্রতি তাদের এই জারিকৃত আদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে তালেবানের সম্পর্ক আরও জটিল করে তুলবে।
আফগান পার্লামেন্টের প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার ফওজিয়া কুফি আল জাজিরাকে বলেছেন যে ‘এই আদেশটির কোন যুক্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘তালেবানের মধ্যে কিছু ব্যক্তি ধর্মের নামে তাদের নিজস্ব নীতি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ ১ জুন পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।
সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদোশ কোচবিহার ও নিউ জলপাইগুড়ি জংশন (এনজেপি) পরিদর্শনে গিয়ে এমনটি নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক এই ট্রেনের যাত্রা সফল করতে কাস্টমস, ইমিগ্রেশন সার্ভিসকে পুরোদমে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মিতালী এক্সপ্রেস দুই দেশের পর্যটন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করবে।’
প্রতিবেশী দুই দেশে চালু হওয়া যাত্রীবাহী ট্রেনের মধ্যে মিতালী হচ্ছে তৃতীয় এক্সপ্রেস ট্রেন।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে ৯ ঘণ্টায় ৫১৩ কিলোমিটার দুরত্ব পাড়ি দিয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছাবে মিতালী।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চারটি কেভিন কোচ ও চারটি চেয়ার কার ও ডিজেলচালিত ইঞ্জিন থাকবে এই আন্তর্জাতিক এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে। এতে মোট আসন সংখ্যা ৪৫৬টি।
গত বছর ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ ট্রেন উদ্বোধন করেন। ওই দিন ট্রেনটি চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুটে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করে। তবে করোনা মহামারির কারণে ট্রেনটি এত দিন নিয়মিত চলাচল শুরু করতে পারেনি।
চলতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) থেকে চালু হবার কথা ছিল ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে নতুন ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রস্তুতি চূড়ান্ত না হওয়ায় তা চালু হয়নি। এতে হতাশ হয় দুই দেশের পর্যটকরা।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে বলে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের কথা দেশটির পূর্ব রেলের মহাব্যবস্থাপক ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়েকে জানানো হয়। গত ১৯ মে ভারতীয় রেলের এই সিদ্ধান্ত চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশে রেলওয়েকে জানানো হয়।
চিঠিতে আগামী ২৯ মে থেকে ঢাকা থেকে কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস ও কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস চালুর প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া ১ জুন থেকে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর প্রস্তাব করা হয়।
ভারতীয় রেলের চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারতের হাইকমিশন, ঢাকা ও বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয় ক্রস বর্ডার যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা পুনরায় চালুর জন্য অনুরোধ করেছে। সেই অনুযায়ী বিআর রেক দ্বারা ঢাকা থেকে কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং আইআর রেক দ্বারা কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস পুনরায় চালু করার প্রস্তাব করেছে।
এর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছিল, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল দুই দেশের যাত্রীবাহী রেল যোগাযোগ। বন্ধ ছিল দুই দেশের পর্যটন ভিসা প্রক্রিয়াও। পরে শুধু ব্যবসা, শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে দুদেশে জরুরি ভিত্তিতে নাগরিকদের চলাচল করছিলেন।
গত ২৩ মার্চ ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে বৈঠক করেন রেলমন্ত্রী নূরল ইসলাম সুজন। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তর্দেশীয় মৈত্রী, বন্ধন এবং মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে দুই দেশের নিয়মিত পর্যটন ভিসা চালু হলেই বন্ধ ট্রেনগুলো চালু করা হবে বলে মত দেন উভয় দেশের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য