টুইটারে পরিবর্তন আনা দরকার। আর তাই জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি কিনে নেয়ার মতলব এঁটেছেন মহাকাশযান নির্মাণ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স ও টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। এ জন্য তিনি টুইটার কর্তৃপক্ষকে ৪৩.৪ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দিয়েছেন মাস্ক।
সিএনএন- এর খবরে বলা হয়েছে, টুইটারের চেয়ারম্যান ব্রেট টেইলরের কাছে বুধবার চিঠিও দিয়েছেন মাস্ক।
সেখানে বলা হয়, ‘টুইটারে বিনিয়োগ করেছি। কারণ বিশ্বব্যাপী মুক্ত বাক-স্বাধীনতার প্ল্যাটফর্ম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এটির। আমি বিশ্বাস করি একটি কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য বাক স্বাধীনতা একটি সামাজিক বাধ্যবাধকতা।
‘বিনিয়োগ করার পর থেকে বুঝতে পেরেছি, প্রতিষ্ঠানটি বর্তমান পরিসরে সামাজিক চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। তাই টুইটারকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তরিত করা দরকার।’
কয়েকদিন আগেই টুইটারের ৯.২ শতাংশ শেয়ার কেনেন ইলন মাস্ক। এবার পুরো সামাজিক মাধ্যমটিই কিনে নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
টুইটারের বর্তমান বাজার মূল্য ৪১.৪ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বলছে, টুইটারের প্রতি শেয়ারের জন্য মাস্ক ৫৪.২০ ডলারের প্রস্তাব দিয়েছেন।
মাস্ক জানান, তার প্রস্তাবটি ‘সেরা এবং চূড়ান্ত প্রস্তাব’। এটি গ্রহণ না করা হলে শেয়ারহোল্ডার হিসেবে তার অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
টুইটার বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মাস্কের প্রস্তাবের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটি বলছে, প্রতিষ্ঠান এবং টুইটার স্টকহোল্ডারদের সর্বোত্তম স্বার্থ বিবেচনায় পদক্ষেপ নির্ধারণের জন্য প্রস্তাবটি সাবধানতার সঙ্গে পর্যালোচনা করবে বোর্ড।
টুইটারে মাস্কের ফলোয়ার ৮১.৬ মিলিয়ন। যা বিশ্বের যে কোনো সিইও বা সেলিব্রেটিদের তুলনায় অনেক বেশি।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রে বাতিল হলো গর্ভপাত অধিকার আইন। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত শুক্রবার ঐতিহাসিক এ রায় দেয়। এতে দেশজুড়ে গর্ভপাতকে বৈধতা দেয়া ১৯৭৩ সালের আইনি সিদ্ধান্ত ‘রো বনাম ওয়েড’ আর থাকছে না। ফলে প্রতিটি রাজ্যই এখন নিজস্বভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিতে পারবে।
রায়ে বিচারকরা জানান, সংবিধান গর্ভপাতের অধিকার দেয় না। সিদ্ধান্তের পক্ষে সমর্থন দেন ছয়জন বিচারক, বিপক্ষে তিনজন।
এ রায়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও নিন্দার জন্ম দিয়েছে। প্রজনন অধিকারের সমর্থকরা বলছেন, লাখ লাখ নারী গর্ভপাত পরিষেবাগুলো নিতে পারবেন না।
প্রজনন অধিকার সংগঠন গুটমাচার ইনস্টিটিউট বলছে, ১৯৭৩ সালের আইনি নজির উল্টে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২৪টির বেশি রাজ্যে এখন গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নিম্ন আয়ের নারীর ওপর প্রভাব ফেলবে।
BREAKING: The Supreme Court just overturned Roe v. Wade, ending our constitutional right to abortion. We know you may be feeling a lot of things right now — hurt, anger, confusion. Whatever you feel is OK. We’re here with you — and we’ll never stop fighting for you.
— Planned Parenthood (@PPFA) June 24, 2022
বিচারকরা জানান, আগের আইনে ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত বৈধ ছিল। এটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ সংবিধানে গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ নেই।
রো বনাম ওয়েডের রায়ে যুক্তি দেয়া হয়েছিল, সংবিধানের অধীনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার একজন নারীর গর্ভাবস্থা বন্ধ করার ক্ষমতাকে রক্ষা করে।
সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯২ সালের সাউথইস্টার্ন পেনসিলভানিয়া বনাম ক্যাসি প্ল্যানড প্যারেন্টহুড নামে একটি রায়ে গর্ভপাতের অধিকারকে পুনরায় নিশ্চিত করেছিল। রায়ে বলা হয়েছিল, গর্ভপাতের বিষয়ে ‘অযথা বোঝা’ চাপিয়ে দেয়া আইনগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রক্ষণশীল বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটো বলেন, ‘রো এবং প্ল্যানড প্যারেন্টহুড বনাম কেসি ভুল ছিল। এটি অবশ্যই বাতিল করা উচিত।
‘আমরা মনে করি যে রো এবং কেসিকে অবশ্যই বাতিল করা উচিত। সংবিধানে গর্ভপাত উল্লেখ নেই। এ ধরনের অধিকার সাংবিধানিক বিধান দ্বারা সুরক্ষিত নয়।’
বিচারপতি ক্লারেন্স থমাস, নিল গর্সুচ, ব্রেট কাভানাফ এবং অ্যামি রায়ের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিপক্ষে দেয়া তিন বিচারপতি ট্রাম্পের নিয়োগপ্রাপ্ত।
উদারপন্থি বিচারপতি স্টিফেন ব্রেয়ার, সোনিয়া সোটোমায়র এবং এলেনা কাগান ভিন্নমত পোষণ করেন।
তারা জানান, ‘এটা আদালতের জন্য দুঃখের খবর। তবে লাখ লাখ আমেরিকান নারী আজ একটি মৌলিক সাংবিধানিক সুরক্ষা হারিয়েছেন। আমরা ভিন্নমত পোষণ করছি।’
জনমত জরিপ দেখা গেছে, বেশির ভাগ আমেরিকান গর্ভপাতের অধিকারকে সমর্থন করেন।
গত মাসের শুরুর দিকে সুপ্রিম কোর্টের ফাঁস হওয়া একটি গোপন খসড়া নথিতে ঐতিহাসিক গর্ভপাত অধিকার আইন বাতিল হতে পারে বলে আভাস মিলেছিল। রাজনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো সেই নথি প্রকাশ করেছিল।
আরও পড়ুন:অবশেষে অস্ত্র আইন পাস হলো যুক্তরাষ্ট্রে। বলা হচ্ছে, তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র আইন হতে যাচ্ছে এটি। এই আইন তরুণ ক্রেতাদের ওপর কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি হুমকি হিসেবে বিবেচিত মানুষদের অস্ত্র কিনতে নিরুৎসাহী করবে।
কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ১০০ সদস্য বৃহস্পতিবার ভোট দেন। আইন সংস্কারের পক্ষে পড়ে ৬৫ ভোট, বিপক্ষে ৩৩টি।
বিলটি নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে পাস হলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সইয়ের মধ্য দিয়ে কার্যকর হবে। ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষে শিগগিরই ভোট হবে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘দ্বিদলীয় এই বিলে’ দ্রুত ভোট আয়োজনের তাগিদ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘২৮ বছরের নিষ্ক্রিয়তার পর কংগ্রেসের দ্বিদলীয় সদস্যরা তাদের পরিবারের আহ্বানে একত্রিত হয়েছিলেন। সম্প্রদায়গুলোতে বন্দুক সহিংসতার অভিশাপ মোকাবিলায় আইন পাস হয়েছে।’
নিউ ইয়র্কের বাফেলোর একটি সুপারমার্কেটে এবং টেক্সাসের উভালদেতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্দুক হামলার পর আইন সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। ওই দুই হামলায় নিহত হন ৩১ জন।
সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে ২১ বছরের কম বয়সী ক্রেতাদের জন্য বিস্তারিত পরিচয় নিশ্চিত করা, মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্প এবং স্কুল নিরাপত্তাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে ১৫ বিলিয়ন ডলার ফেডারেল তহবিল গঠন এবং হুমকি হিসেবে বিবেচিতদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ফিরিয়ে নেয়ার জন্য ‘লাল পতাকা’ আইন বাস্তবায়নে রাজ্যগুলোকে উৎসাহিত করতে অর্থায়ন করা হবে।
এ ছাড়া যারা ইতোমধ্যে অস্ত্রের অপব্যাবহারের দায়ে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন, তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করা যাবে না।
গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
বিলটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এটি কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর একটি, যেটি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই পক্ষের সমর্থন পেয়েছে।
ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক আইন শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা দেখা গেছে রিপাবলিকানদের মধ্যে। এবার ১০০ সদস্যের সিনেটে ভোট পড়েছে ৬৫-৩৩।
দলের সবচেয়ে রক্ষণশীল সদস্য সিনেটর জো মানচিন এবং কার্স্টেন সিনেমাসহ ৫০ জন ডেমোক্র্যাট বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
তাদের সঙ্গে প্রস্তাব তৈরিকারী রিপাবলিকানরা যোগ দিয়েছিলেন। যার মধ্যে পার্টির সিনেট নেতা মিচ ম্যাককনেল এবং লিন্ডসে গ্রাহাম আছেন। গ্রাহাম সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং বন্দুক-নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরোধী ছিলেন। দুই-তৃতীয়াংশ রিপাবলিকান এই আইনের বিরোধিতা করেছেন।
টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ বলেন, ‘শিশুদের সুরক্ষার জন্য গুরুতর ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে আইন মেনে চলা নাগরিকদের নিরস্ত্র করার চেষ্টা এটি।’
বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছে বন্দুক সুরক্ষা গ্রুপ মার্চ ফর আওয়ার লাইভস। ফ্লোরিডায় ২০১৮ সালে পার্কল্যান্ড স্কুলের বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি।
টুইটে সংগঠনটি জানায়, ‘আমরা জানি এই মহামারি শেষ করতে আরও অনেক কাজ করতে হবে। আমরা ছাড় দিতে বা দমে যেতে রাজি নই। বন্দুক সহিংসতা বন্ধ করা আমাদের জীবনের লড়াই।’
ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ) বিলটির বিরোধিতা করেছে। তাদের যুক্তি, এটি কোনোভাবেই সহিংসতা বন্ধ করবে না।
কেন বন্দুক নিয়ন্ত্রণে এত বড় চুক্তি?
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে আনুমানিক ৩৯৩ মিলিয়ন আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রে মৃত্যুর সর্বোচ্চ হার এই যুক্তরাষ্ট্রেই।
গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের হিসাবে, চলতি বছর দেশটিতে বন্দুক সহিংসতায় ২ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ, যেখানে বন্দুক রাখার অধিকারের কথা বলা হয়েছে দেশটির সংবিধানে।
সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য ফেডারেল বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯৪ সালে পাস হয়েছিল। অ্যাসল্ট রাইফেল এবং বড় ক্ষমতার ম্যাগাজিনগুলো বেসামরিক ব্যবহারের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এতে। তবে এক দশক পর আইনটি বাতিল হয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের একটি আইন বাতিল করে। এই আইনে যেকোনো নাগরিক বন্দুক বহন করতে পারে।
জরিপ বলছে, বেশির ভাগ আমেরিকান বন্দুক নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে। অনেক রিপাবলিকান সিনেটর বন্দুকপন্থি বড় সম্প্রদায়ের রাজ্যগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। এসব রাজ্যের রিপাবলিকান সমর্থকরা আইন সংস্কারের ঘোর বিরোধী।
আরও পড়ুন:স্মরণকালের ভয়াবহ তাপদাহে ধুঁকছে ইউরোপ। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ঠেকছে যে ফ্রান্সের একটি অঞ্চলে উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের আয়োজন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের গিরন্ড জেলার বন্দর শহর বোর্দোতে আপাতত কনসার্ট এবং বড় জনসমাবেশ করা যাবে না।
গত সপ্তাহে ফ্রান্সের কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কায় করছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।
ফ্রান্সের আবহাওয়া অফিস বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যতীত স্থানগুলোতেও অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ থাকবে। তবে ব্যক্তিগত উদযাপন যেমন বিয়ে করার অনুমতি দেয়া হবে।
স্থানীয় কর্মকর্তা ফ্যাবিয়েন বুসিও ফ্রান্স ব্লু রেডিওকে বলেন, ‘প্রত্যেকই এখন স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন।’
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে তীব্র তাপের সময়কাল আরও বেশি এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, তারা জনগণকে সতর্ক করেছে। এই আবহাওয়ার যেন কেউ বাইরে না বের হয়।
গিরন্ডের আবহাওয়া কর্মকর্তা মেটিও ফ্রান্স বলেন, তীব্র গরমে ধুঁকছে ফ্রান্স। উত্তর আফ্রিকা উড়ে আসা গরম বাতাসের কারণে এমনটা ঘটেছে।
‘প্যারিসে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছতে পারে। এটি খরা দাবানলের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তুলুসের বাসিন্দা জ্যাকলিন বননড। তিনি বলেন, ‘আমি বয়স ৮৬। এখানেই আমার জন্ম। মনে হচ্ছে এটিই আমার দেখা সবচেয়ে খারাপ তাপপ্রবাহ।’
গ্রিড অপারেটর আরটিই জানিয়েছে, এয়ার-কন্ডিশনার এবং ফ্যানের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ফ্রান্সকে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে বাধ্য করছে।
একই দশার মধ্যে আছে স্পেন, ইতালি এবং যুক্তরাজ্যও।
শতাব্দীর উষ্ণতম তাপদাহ অনুভূত হচ্ছে স্পেনে। সপ্তাহান্তে তাপমাত্রা সর্বোচ্চে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া পরিষেবা-অ্যামেট। আঞ্চলিক সরকার জানিয়েছে, কাতালোনিয়ায় ২০ হাজার হেক্টর জমি দাবানলে পুড়ে গেছে।
ইতালির বৃহত্তম নদী পো-এর বিশাল অংশে পানি এতটাই কম যে, স্থানীয়রা বালির বিস্তৃতির মাঝখান দিয়ে হেঁটে যেতে পারছে। এমনকি যুদ্ধকালীন জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পুনরুত্থিত হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ ইংল্যান্ডে তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় লন্ডনে তৃতীয় স্তরের তাপ-স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি হয়েছে।
চরম তাপ ইউরোপে সীমাবদ্ধ না
গেল সপ্তাহে রেকর্ড তাপমাত্রার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশকে বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। ভারতের দিল্লিতে চলতি গ্রীষ্মের ২৫ দিনে সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে নির্গত হচ্ছে। এ ধরনের গ্যাস সূর্যের তাপকে আটকে রাখে, ফলে গ্রহটি উষ্ণ হয়ে ওঠছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি ডেলওয়্যারে নিজের অবকাশকালীন বাড়ির কাছে সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে হাস্যরসের জন্ম দিয়েছেন। ওই ঘটনা নিয়ে এবার বিদ্রুপে যোগ দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
সবশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের কাছে পরাজিত ট্রাম্প তৈরি করেছেন একটি ভিডিও। এতে দেখা যায়, একটি মাঠে কষে গলফ স্টিক হাঁকাচ্ছেন ট্রাম্প, এর পরের দৃশ্যে রাস্তার মাঝে সাইকেল থেকে পতন ঘটছে বাইডেনের।
নিজ উদ্যোগে গড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। এরই মধ্যে পোস্টটি রিট্রুথ হয়েছে ৪ হাজার ২০ বার এবং লাইক পড়েছে ৯ হাজার ৩৭০টি।
যুক্তরাষ্ট্রে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিদ্বেষ ও সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগে ডনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় ফেসবুক ও টুইটার। এরপর নিজেই চালু করে দেন ট্রুথ সোশ্যাল। এটি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। টুইটারে কোনো পোস্ট ফের শেয়ার করা হলে তাকে বলা হয় রিটুইট। এর আদলে ট্রুথ সোশ্যালের পোস্ট শেয়ার করলে বলা হয় রিট্রুথ।
ব্যাঙ্গাত্মক ভিডিও পোস্টের পাশাপাশি কথার জালেও বাইডেনকে উপহাস করেছেন ট্রাম্প। আমেরিকা ফ্রিডম ট্যুরের এক শোভাযাত্রায় বক্তব্যের সময় তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি তিনি (জো বাইডেন) সুস্থ হয়ে উঠেছেন। না, আমি সিরিয়াস। আশা করি তিনি ঠিক আছেন। আমি আপনাদের কাছে আজ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি কখনও সাইকেলে চড়ব না।’
আমেরিকার স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের রেহোবোত সমুদ্রসৈকতের কাছে বাইডেন সাইকেল থেকে পড়ে যান।
স্ত্রীর সঙ্গে ৪৫তম বিবাহবার্ষিকী উদযাপনে সেখানে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজনের সঙ্গে লাইন ধরে সাইকেল চালিয়ে আসছেন বাইডেন। একপর্যায়ে হঠাৎ পড়ে যান তিনি। তাকে টেনে তোলেন কয়েকজন।
রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য থামলে সাইকেলসহ ধরাশায়ী হন তিনি। স্থানীয় লোকজন ছাড়াও এ সময় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
নিজেকে সামলে উঠে দাঁড়ানোর সময় বাইডেন বলছিলেন, ‘আমি ভালো অছি’, ‘আমি ভালো আছি’।
এমন দুর্ঘটনা বাইডেনের জীবনে এটিই প্রথম নয়। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে নিজের পোষা কুকুরের সঙ্গে খেলতে গিয়ে পড়ে পা ভাঙেন তিনি। চিকিৎসার পাশাপাশি সে সময় তাকে কয়েক সপ্তাহ মেডিক্যাল বুট পরে থাকতে হয়েছিল।
ক্ষমতা গ্রহণের পর গত বছরের মার্চে বিমানে ওঠার সময় সিঁড়িতে তিনবার হোঁচট খান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আটলান্টা যাওয়ার জন্য এয়ারফোর্স ওয়ানে উঠছিলেন বাইডেন। একপর্যায়ে বিমানটির সিঁড়িতে তিনবার হোঁচট খান তিনি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশিত হয়। পরে অবশ্য ঠিকমতো বিমানের কেবিন পর্যন্ত পৌঁছান বাইডেন। সিঁড়ির মুখে দাঁড়িয়ে স্যালুটও দেন।
আরও পড়ুন:বাবা-মায়ের দেয়া নাম বদলাতে চান ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা ও মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের ট্যান্সজেন্ডার মেয়ে।
গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের সুপ্রিম কোর্টে তিনি নাম বদল ও নতুন জন্ম সনদ চেয়ে আবেদন করেন বলে এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সম্প্রতি ১৮ বছরে পা দেয়া জেভিয়ার আলেকজান্ডার মাস্ক তার বাবা বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের মাস্কের সঙ্গে আর কোনোভাবেই সম্পর্কিত থাকতে চান না বলে জানিয়েছেন।
আদালতের কাছে ছেলে থেকে মেয়ে পরিচয়ের স্বীকৃতি এবং বর্তমান নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম নিবন্ধন করতে আবেদন করেন তিনি।
আলেকজান্ডার মাস্ক বলেন, 'আমি আর কোনোভাবেই আমার জন্মদাতা বাবার সঙ্গে থাকতে বা তার নাম-পরিচয় বহনের সম্পর্ক রাখতে চাই না।'
ইলন মাস্ক-জাস্টিন উইলসনের ঘরে জন্ম নেন আলেকজান্ডার মাস্ক। ২০০৮ সালে তার বাবা-মায়ের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জাস্টিনের সঙ্গে ঘর করার পর আরও দুই নারীকে বিয়ে করেছিলেন ইলন মাস্ক। অবশ্য এই দুই স্ত্রীর সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয় তার।
মেয়ের নাম পরিবর্তনের আবেদনের ব্যাপারে মাস্কের প্রতিষ্ঠান টেসলা বা তার নিজের কোনো আইনজীবীর মন্তব্য জানা যায়নি।
তবে এই আবেদনের মাসখানেক পর যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির প্রতি সমর্থনের কথা জানান ইলন মাস্ক; যে পার্টির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবস্থান দেশজুড়ে ট্রান্সজেন্ডার অধিকারকে সীমিত করার আইনের পক্ষে।
এর আগে ২০২০ সালে এক টুইট বার্তায় ইলন মাস্ক বলেছিলেন, 'আমি পুরোপুরি ট্রান্সজেন্ডারদের সমর্থন করি। কিন্তু নারী বা পুরুষ পরিচয় বেছে নেওয়া একটি দুঃস্বপ্ন।'
আরও পড়ুন:কোনোভাবেই কী তাহলে আর মিলছে না! মিটে গেছে সব হিসাব-নিকাশ! একসঙ্গে জীবন কাটানোর সব আয়োজনই ম্লান হয়েছে! হাঁপিয়ে উঠেছেন তারা? এসব প্রশ্নের উত্তর হয়তো হ্যাঁ। তাই তো স্ত্রীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের আবেদন করেছেন বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ও সার্চ ইঞ্জিন গুগলের অন্যতম কারিগর এবং সহপ্রতিষ্ঠাতা সার্গেই ব্রিন।
সম্পর্কে বৈরিতা এসেছে জানিয়ে চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে ব্রিন বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সার্গেই ব্রিন-নিকোলি শানাহান দম্পতির তিন বছরের সংসারে একটি তিন বছর বয়সী ছেলেসন্তান রয়েছে। আদালতের কাছে তারা আবেদন জানিয়েছেন, বিচ্ছেদ নিয়ে সব তথ্য যেন গোপন রাখা হয়।
গুগলসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ৪৮ বছর বয়সী ব্রিন ৯৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ সম্পদের মালিক। আরও একবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি। তবে ২০১৫ সালে ওই স্ত্রীর সঙ্গেও তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
এর আগে গত বছরের মে মাসে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয় ওই মুহূর্তে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে থাকা বিল গেটসের বিয়েবিচ্ছেদের খবর। মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটসের ২৭ বছরের দাম্পত্যে ইতি ঘটলে তা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
বিল ও মেলিন্ডা তাদের বিয়েবিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে তখন বলেন, জুটি হিসেবে এগিয়ে যেতে পারি, এটা আমরা আর বিশ্বাস করি না।
আরও পড়ুন:কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন সাবেক গেরিলা ও বামপন্থি নেতা গুস্তাভো পেত্রো।
৬২ বছর বয়সী এই সিনেটর ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবাসন ব্যবসায়ী ধনকুবের রোদোলফো হার্নান্দেজের চেয়ে ৭ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন রাজধানী বাগোতার সাবেক এই মেয়র।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলম্বিয়ার ইতিহাসে প্রথম বামপন্থি প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো নির্বাচিত হয়ে বলেন, ‘এই বিজয় স্রষ্টার জন্য, এই বিজয় জনগণের জন্য।’
পেত্রো টুইটারে লিখেছেন, ‘আজ যে আনন্দের ধারা দেশবাসীর হৃদয়কে প্লাবিত করেছে, তা দিয়ে সহজে দুঃখ-কষ্ট দূর হয়ে যাবে। আজ সড়ক ও চত্বরে সময় কাটানোর দিন।’
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় পরাজয় মেনে নিয়েছেন রোদোলফো হার্নান্দেজ।
হার্নান্দেজ বলেন, ‘কলম্বিয়ার নাগরিকরা আমাকে ছাড়া অন্য একজনকে বেছে নিয়েছেন, তবুও আমি ফল মেনে নিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, গুস্তাভো পেত্রো ভালো জানেন কীভাবে দেশ পরিচালনা করতে হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার আপসহীন সংগ্রাম সম্পর্কে আমার বিশ্বাস রয়েছে।’
তৃতীয় দফায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা থাকায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি দেশটির প্রেসিডেন্ট ইভান ডুক। পেত্রোকে অভিনন্দন জানিয়ে ডুক বলেন, ‘সংহতি ও সহমর্মিতার মাধ্যমে সমাজ গড়ায় পেত্রোর চেষ্টার সঙ্গে থাকব আমিও।’
পেত্রোর রানিংমেট ফ্রান্সিয়া মার্কেজ যিনি একজন ‘সিঙ্গেল’ মা এবং সাবেক গৃহকর্মী, তিনি হতে যাচ্ছেন দেশটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট।
গত ১৯ জুন ভোটের দ্বিতীয় রাউন্ডে ধনকুবের রোদোলফো হার্নান্দেজের মুখোমুখি হন পেত্রো।
অবশ্য প্রথম রাউন্ডের আগে জরিপগুলোতে বলা হয়েছিল, পেত্রোর চেয়ে সামান্য ব্যবধানে পিছিয়ে থাকবেন রোদোলফো। যদিও ফলে ব্যবধানটা চোখে পড়ার মতো।
রাজধানী বোগোতার সাবেক মেয়র পেত্রো জনমত জরিপগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে ছিলেন। পেনশন সুবিধা ফিরিয়ে আনা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে শিক্ষার সুযোগসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠেন তিনি।
প্রথম রাউন্ডের ফল প্রকাশের পর বোগোতার প্রাণকেন্দ্রে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের উদ্দেশে পেত্রো বলেন, ‘এ সময়ে এসে পরিবর্তনের বিষয়ে আর সন্দেহ নেই।’
জয়ী হলে কলম্বিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্কের সঙ্গে ২০১৬ সালে তৎকালীন সরকারের করা চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন পেত্রো। সক্রিয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইএলএনের সঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য