ক্ষমতায় এসেই কাশ্মীর ইস্যুতে মনোযোগ দিলেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে কাশ্মীর বিরোধের একটি ‘শান্তিপূর্ণ’ নিষ্পত্তি ‘অপরিহার্য’।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শাহবাজকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। জবাবে মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে শাহবাজ বলেন, "দিল্লির সঙ্গে ইসলামাবাদ 'শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক' সম্পর্ক চায়। কূটনৈতিক সম্পর্কে আমরা জোর দেব।"
এক টুইটে পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘অভিনন্দনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ। ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক চায় পাকিস্তান। জম্মু ও কাশ্মীরসহ বিরোধপূর্ণ ইস্যুগুলোতে শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি অপরিহার্য।
‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের আত্মত্যাগ সর্বজনবিদিত। আসুন শান্তি সুরক্ষিত করি এবং আমাদের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মনোনিবেশ করি।’
ইমরান খানকে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হারিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সোমবার পাকিস্তানের মসনদে বসেন মুসলিম লীগের এই নেতা।
উপমহাদেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর ১৯৪৭ সাল থেকে কাশ্মীরের হিমালয় অঞ্চল নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ দুটির বিবাদ লেগে আছে।
মনোরম উপত্যকাটি পাকিস্তান এবং ভারত ভাগাভাগি করে নিলেও দুই দেশই পুরো কাশ্মীর দাবি করে আসছে। এই কাশ্মীরের একটি অংশ আবার রয়েছে চীনের নিয়ন্ত্রণে।
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান গত ৭৫ বছরে তিনবার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়েছে। ব্রিটিশদের শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পরের বছর ১৯৪৮ সালে প্রথম দফা যুদ্ধে জড়ায় দিল্লি-ইসলামাবাদ। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালেও হয়েছিল লড়াই।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলো প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতে চাইছে। তাই তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে, ১৯৮৯ সালে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে সংঘর্ষে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
উত্তেজনা আরও তীব্র হয় ২০১৯ সালের আগস্টে। মোদি সরকার ভারতশাসিত কাশ্মীরকে তার বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত মর্যাদা কেড়ে নেয় সে মাসে।
শাহবাজের বিবৃতির প্রতিক্রিয়া
ভারতশাসিত কাশ্মীরের ভারতপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, তারা সব সময় কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে আলোচনার পক্ষে আছেন।
জম্মু-কাশ্মীরের একটি রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের মুখপাত্র ইমরান নবী দার আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার পক্ষে। সব সময়ই তা চেয়ে এসেছি।
‘দুই দেশের বৈরিতার কারণে কাশ্মীরিরা ভুগছে। আমরা চাই দুই দেশ আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করুক।’
কাশ্মীরের শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিদ্দিক ওয়াহিদ অবশ্য আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। এই বিশ্লেষক মনে করেন, শাহবাজ শরিফের বক্তব্য ইসলামাবাদের নিয়মিত ঘটনার অংশ শুধু।
সিদ্দিক ওয়াহিদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পাকিস্তানে নতুন প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিকে ইসলামাবাদের একটি নিয়মিত আয়োজন হিসেবে বিবেচনা করি। কারণ এটা কল্পনা করা কঠিন যে, ইসলামাবাদের কেয়ারটেকার সরকারের সঙ্গে কাশ্মীর ইস্যুতে আলোচনায় বসবে দিল্লি।’
তবে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং ফোর্স ম্যাগাজিনের সম্পাদক প্রভিন সাহনি বলছেন, পাকিস্তানের নেতার বক্তব্যে ভারতের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত।
তিনি বলেন, ‘ভারতের উচিত আলোচনা শুরু করা। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া উচিত। আমি দেখছি, এতে দুই পক্ষই আগ্রহী। তাই দেরি না করাই ভালো।’
দিল্লিঘেঁষা শরিফ পরিবার
শাহবাজের বড় ভাই নওয়াজ শরিফ ছিলেন পাকিস্তানের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। তার শাসনামলে দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করেছিলেন।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নওয়াজ শরিফ। পিছিয়ে থাকেননি মোদিও। পাকিস্তানে শরিফ পরিবারের এক বিয়েতে মোদির উপস্থিতি চমকে দিয়েছিলেন বিশ্বকে।
শরিফ পরিবার যেখানে দিল্লির সঙ্গে সমঝোতামূলক এবং আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তিতে জোর দিয়েছিলেন, সেখানে বিপরীত অবস্থানে ছিলেন ইমরান খান।
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার জবাবে দিল্লির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ফাটল তীব্র হয়। স্থগিত করা হয়েছিল সরাসরি বাণিজ্য সুবিধা।
নরেন্দ্র মোদির হিন্দু-জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের ঘোর সমালোচক ছিলেন ইমরান। ভারতে উগ্রবাদীদের হাতে সে দেশের মুসলিম নাগিরকদের হত্যার বিচার চেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক মহলে।
ইসলামাবাদের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের ইমতিয়াজ গুল বলেন, ‘পারিবারিক ঐতিহ্য মেনে ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে 'সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক' মেনে চলেছে শরিফ ভাইরা। তাই শান্তি আলোচনার উপযুক্ত সময় এখনই।
শাহবাজ শরিফ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালে ভারত সফরে এসেছিলেন। কেবল তাই নয়, সীমান্তের ভারতীয় অংশে নিজেদের পৈতৃক গ্রাম পরিদর্শন করেন শাহবাজ। সে সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বছরের পর বছর চলা উত্তেজনা কমে আসতে পারে নতুন প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে।
দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অজয় দর্শন বেহেরা বলেন, ‘তিনি এমন কেউ নন যে ভারতকে বিরোধিতা করার চরম পর্যায়ে যাবে।’
Thank you Premier Narendra Modi for felicitations. Pakistan desires peaceful & cooperative ties with India. Peaceful settlement of outstanding disputes including Jammu & Kashmir is indispensable. Pakistan's sacrifices in fighting terrorism are well-known. Let's secure peace and.. https://t.co/0M1wxhhvjV
— Shehbaz Sharif (@CMShehbaz) April 12, 2022
‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের প্রখ্যাত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় আর নেই, যার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
গত সপ্তাহ থেকেই এ শিল্পী হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় তার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাই স্নায়ু এবং নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা হয় তার।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, প্রতুলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে শিল্পীর ফুসফুসেও সংক্রমণ দেখা দেয়। দ্রুতই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
প্রতুলের গাওয়া অন্যতম জনপ্রিয় গান হলো ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার গানের গুণমুগ্ধ ছিলেন। মমতার তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে।
বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। শৈশব থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তার গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য শিল্পী ছিলেন তিনি।
তার মতে, সৃষ্টির মুহূর্তে লেখক-শিল্পীকে একা হতে হয়। তারপর সেই সৃষ্টিকে যদি মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া যায়, কেবল তাহলেই সেই একাকিত্বের সার্থকতা। সেই একক সাধনা তখন সকলের হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হারনাই জেলায় শুক্রবার শ্রমিক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোয়েটা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা শাহজাদ জাহরি এএফপিকে জানান, হারনাই জেলায় এ বোমা বিস্ফোরণে ১০ খনিশ্রমিক নিহত হন।
একই জেলার আরেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সেলিম তারিন এএফপিকে বলেন, ‘শ্রমিকরা কাজের জায়গা থেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই তাদের গাড়িটি আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ছিল একটি আইইডি বিস্ফোরণ।আমরা হামলার তদন্ত করছি।’
হারনাই দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি জেলা।
কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রায়ই অন্যান্য প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বা পাকিস্তানিদের, বিশেষ করে বেলুচিস্তানের পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার দাবি করে।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনাবাহিনীর আলাদা তিন অভিযানে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রদেশের লাক্কি মারওয়াত, কারাক ও খাইবার জেলায় অভিযান চালায়।
এতে আরও বিবৃতিতে বলা হয়, লাক্কি মারওয়াতে অভিযানে ১৮ সন্ত্রাসী নিহত ও ছয়জন আহত হন। কারাক জেলায় আরও ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।
সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তাদের তৃতীয় অভিযানটিতে গোষ্ঠীটির নেতাসহ ৪ সন্ত্রাসী নিহত ও দুজন আহত হন।
অভিযানে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
এলাকায় অন্য সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি নির্মূল করতে একটি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিপদ নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
আরও পড়ুন:ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে।
তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
পুলিশ জানায়, একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
বাহিনীটি আরও জানায়, শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন এলাকায় নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন।
কর্ণাটক থেকে পিটিআই শনিবার এ খবর জানায়।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রাণ হারানো নারী বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ছয় বছর ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন।
তার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবে তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
ওই নারী বৃহস্পতিবার তার সহকর্মীকে বলেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে বলেন তাকে ছাড়াই চলে যেতে। তবে বাড়ি ফিরতে নারীর দেরি হলে তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন জায়গায় গিয়েছিলেন পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মাথায় গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল।
তথ্য পাওয়ার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পূর্ব বিভাগ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ।
আরও পড়ুন:ভারতের মধ্যাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১২ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি মাওবাদীদের দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা দমনে পদক্ষেপ জোরদার করেছে। শুক্রবার পুলিশ এই খবর জানায়।
কয়েক দশকের মাওবাদী সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হন।
বিদ্রোহীদের দাবি, তারা প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সহিংসতার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছত্রিশগড়ের বিজাপুর জেলার বন-জঙ্গলে বৃহস্পতিবার এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সুন্দররাজ পি. এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছে।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হন।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সরকার আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্যে বিদ্রোহীদের দমন করা সম্ভব হবে।
বিদ্রোহীরা গত কয়েক বছরে সরকারি সেনাদের টার্গেট করে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
চলতি মাসের গোডার দিকে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে ৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন।
আরও পড়ুন:ভারতের মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলী খান।
স্থানীয় সময় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, রাত আড়াইটায় একজন অনুপ্রবেশকারী বাসায় ঢুকে সাইফ আলীকে ছয়বার ছুরিকাঘাত করে। বর্তমানে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার চলছে।
হাসপাতালকর্মীরা বলছেন, সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। রাতে তার নিউরো সার্জারি করা হয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি চলছে।
এ ঘটনায় বান্দ্রা থানায় একটি এজাহার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সাইফ আলী যখন বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন একজন অনুপ্রবেশকারী চুপিসারে তার বাসায় ঢোকেন। এ সময়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়।
এরপর সাইফ আলী খানকে ছয়বারের বেশি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান অনুপ্রবেশকারী।
এক বিবৃতিতে লীলাবতী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছয়টি আঘাতের মধ্যে দুটি তার মেরুদণ্ডের কাছে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।
এরই মধ্যে তার বাসার তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করছে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
এক বিবৃতিতে সাংবাদিক ও ভক্তদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে সাইফ আলী খান টিম।
এতে বলা হয়, ‘এটি এখন পুলিশের কাজ। আমরা আপনাদের হালানাগাদ তথ্য জানিয়ে দেব।’
কারিনা কাপুর খান টিমও একই বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘পরিবারের অন্য সদস্যরা ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই শনিবার বলেছেন, তিনি তার জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে ‘অভিভূত’ ও ‘আনন্দিত’।
ইসলামি বিশ্বে নারী শিক্ষাবিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে এবং এরপর তিনি বিদেশে চলে যান। বিদেশে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি দেশে আসেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন শনিবার সকালে। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হবেন।
স্থানীয় সময় রোববার ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্সে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘আমি সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবান নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারেও বলব।'
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানান, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তালেবান ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনো সাড়া দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে দুই কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। তাদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকার একটি স্কুল বাসে ২০১২ সালে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
পরবর্তী সময়ে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবক্তা হয়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য