নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে রেলস্টেশনে নির্বিচারে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এতে দশজন গুলিবিদ্ধ অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা হয়েছে বেশ কিছু বিস্ফোরক। পুলিশের পাশাপাশি নিউ ইয়র্ক সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট বিষয়টি তদন্ত করছে।
সানসেট পার্কের কাছে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গুলির ঘটনা ঘটে।
রবি ব্রোক নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী টুইটে জানান, ‘গুলি কিংবা বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে থার্টি সিক্স স্ট্রিটে। আমার জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর মুহূর্ত ছিল এটা।’
আরও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, থার্টি সিক্স এবং টুয়েন্টি ফাইভ স্ট্রিট থেকে আহত কয়েকজনকে বের হতে দেখেছেন তারা।
কনরাড অ্যাডেরার নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ব্রুকলিনের থার্টি সিক্স স্ট্রিট দিয়ে স্টেশনে যাচ্ছিলাম। তখন পা থেকে রক্ত বেরোচ্ছে এমন এক যুবকের সঙ্গে দেখা। সে বলেছিল, আরও অনেকে আহত হয়েছে।’
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকে জানান, বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অথবা তাদের ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। টুয়েন্টি ফাইভ স্ট্রিটে সেন্ট এবং ফোর্থ এভেনে আরও একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে।
স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আহতদের মধ্যে একজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত কমলা রঙের পোশাকে এক বন্দুকধারী এই হামলা চালিয়েছে। যাত্রীদের গুলি করে অন্য একটি ট্রেনে করে পালিয়ে যান হামলাকারী।
নিউ ইয়র্ক সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট বলছে, প্ল্যাটফর্মে কয়েকজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পেয়েছি। সে সঙ্গে কিছু অবিস্ফোরিত ডিভাইস।
নিউ ইয়র্ক পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আহতদের গুলি করা হয়েছে। এর বেশি তথ্য আপাতত আমাদের কাছে নেই। বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাজ্যে লাখ লাখ নারী গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার হারাতে যাচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫০ বছর পর সুপ্রিম কোর্ট ‘রো বনাম ওয়েডের’ সিদ্ধান্তকে বাতিল করে দিয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা গর্ভপাতের অধিকার হারাতে যাচ্ছেন।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় দেশটির অন্যান্য রাজ্যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার পথ প্রশস্ত করবে। এই রায়ে উচ্ছ্বসিত যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল নাগরিকরা।
একজন গর্ভপাতবিরোধী কর্মী বিবিসিকে বলেছেন, এই দেশে আইনই যথেষ্ট নয়, জীবনে এই বিষয়টিকে (গর্ভপাত) অচিন্তনীয় করে দিতে হবে।
মিসিসিপির গভর্নর টেট রিভস এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে আরও হৃৎপিণ্ড স্পন্দিত হবে, আরও রিপোর্ট কার্ড দেয়া হবে, আরও লীগ গেমস খেলা হবে এবং আরও বেশি জীবন ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। এটি একটি আনন্দের দিন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের ‘রো বনাম ওয়েডের’ একজন সমালোচক। তিনি গর্ভপাতবিরোধী সমর্থকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, প্রতিটি রাজ্যে আইনের মাধ্যমে ‘জীবনের পবিত্রতা’ সুরক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত থামা যাবে না।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গর্ভপাতের অধিকার কেড়ে নেয়াকে একটি ‘দুঃখজনক ত্রুটি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং রাজ্যগুলোকে গর্ভপাত পদ্ধতির অনুমতি দেয়ার জন্য আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
গর্ভপাত প্রদানকারী স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা প্ল্যান্ড প্যারেন্টহুডের গবেষণা অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর প্রজননে সক্ষম ৩ কোটি ৬০ লাখ নারীর গর্ভপাতের সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।
এর আগে ‘রো বনাম ওয়েড’ মামলায় ১৯৭৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, একজন নারীর গর্ভপাতের অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত।
সেই রায় দেশটির নারীদের গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে (ত্রৈমাসিক) গর্ভপাতের নিরঙ্কুশ অধিকার দেয়া হয়েছিল। পরবর্তী ৩ মাসে ছিল বিধিনিষেধ। ৬ মাস পরে গর্ভপাত নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন:এপ্রিল থেকে চলা আসামজুড়ে তীব্র বৃষ্টিপাতে বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ১১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মধ্য ও পশ্চিম আসামে পরিস্থিতি উন্নতি হলেও দক্ষিণ আসামের বরাক উপত্যকায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বন্যার কারণে রাজ্যটিতে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাজ্যের কাছাড় জেলা সদর দপ্তর এবং শিলচরের পরিস্থিতি সংকটজনক।
শিলচরের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শ্মশান ও কবরস্থান বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে শেষকৃত্যের জন্য মোড়ানো মৃতদেহ ভেসে যাচ্ছে।
কাছাড়ের ডেপুটি কমিশনার কীরথী জলি বলেছেন, গুরুতর রোগীদের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য নিয়মিত অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে পারছে না।
ডেপুটি কমিশনার জলি বলছেন, ছাদে বসবাসকারী প্রায় ৪০০ পরিবারের জন্য জল বিশুদ্ধকরণ মেশিন স্থাপন করে দেয়া হয়েছে।
বন্যাপ্লাবিত অঞ্চল ম্যাপিং এবং দুর্বল এলাকায় ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করার জন্য শিলচরে দুটি ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় নাগাল্যান্ডের স্বাভাবিক জীবনও ব্যাহত হয়েছে। অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় এরই মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, তবে প্রাণহানির কোনো খবর এখনও পাওয়া যায়নি।
আসাম ছাড়াও অরুণাচল প্রদেশ ও মেঘালয়ে এপ্রিল থেকে বৃষ্টির কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং এই দুই রাজ্যে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন:অবশেষে অস্ত্র আইন পাস হলো যুক্তরাষ্ট্রে। বলা হচ্ছে, তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র আইন হতে যাচ্ছে এটি। এই আইন তরুণ ক্রেতাদের ওপর কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি হুমকি হিসেবে বিবেচিত মানুষদের অস্ত্র কিনতে নিরুৎসাহী করবে।
কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ১০০ সদস্য বৃহস্পতিবার ভোট দেন। আইন সংস্কারের পক্ষে পড়ে ৬৫ ভোট, বিপক্ষে ৩৩টি।
বিলটি নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে পাস হলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সইয়ের মধ্য দিয়ে কার্যকর হবে। ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষে শিগগিরই ভোট হবে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘দ্বিদলীয় এই বিলে’ দ্রুত ভোট আয়োজনের তাগিদ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘২৮ বছরের নিষ্ক্রিয়তার পর কংগ্রেসের দ্বিদলীয় সদস্যরা তাদের পরিবারের আহ্বানে একত্রিত হয়েছিলেন। সম্প্রদায়গুলোতে বন্দুক সহিংসতার অভিশাপ মোকাবিলায় আইন পাস হয়েছে।’
নিউ ইয়র্কের বাফেলোর একটি সুপারমার্কেটে এবং টেক্সাসের উভালদেতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্দুক হামলার পর আইন সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। ওই দুই হামলায় নিহত হন ৩১ জন।
সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে ২১ বছরের কম বয়সী ক্রেতাদের জন্য বিস্তারিত পরিচয় নিশ্চিত করা, মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্প এবং স্কুল নিরাপত্তাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে ১৫ বিলিয়ন ডলার ফেডারেল তহবিল গঠন এবং হুমকি হিসেবে বিবেচিতদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ফিরিয়ে নেয়ার জন্য ‘লাল পতাকা’ আইন বাস্তবায়নে রাজ্যগুলোকে উৎসাহিত করতে অর্থায়ন করা হবে।
এ ছাড়া যারা ইতোমধ্যে অস্ত্রের অপব্যাবহারের দায়ে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন, তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করা যাবে না।
গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
বিলটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এটি কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর একটি, যেটি ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই পক্ষের সমর্থন পেয়েছে।
ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক আইন শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা দেখা গেছে রিপাবলিকানদের মধ্যে। এবার ১০০ সদস্যের সিনেটে ভোট পড়েছে ৬৫-৩৩।
দলের সবচেয়ে রক্ষণশীল সদস্য সিনেটর জো মানচিন এবং কার্স্টেন সিনেমাসহ ৫০ জন ডেমোক্র্যাট বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
তাদের সঙ্গে প্রস্তাব তৈরিকারী রিপাবলিকানরা যোগ দিয়েছিলেন। যার মধ্যে পার্টির সিনেট নেতা মিচ ম্যাককনেল এবং লিন্ডসে গ্রাহাম আছেন। গ্রাহাম সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং বন্দুক-নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরোধী ছিলেন। দুই-তৃতীয়াংশ রিপাবলিকান এই আইনের বিরোধিতা করেছেন।
টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ বলেন, ‘শিশুদের সুরক্ষার জন্য গুরুতর ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে আইন মেনে চলা নাগরিকদের নিরস্ত্র করার চেষ্টা এটি।’
বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছে বন্দুক সুরক্ষা গ্রুপ মার্চ ফর আওয়ার লাইভস। ফ্লোরিডায় ২০১৮ সালে পার্কল্যান্ড স্কুলের বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি।
টুইটে সংগঠনটি জানায়, ‘আমরা জানি এই মহামারি শেষ করতে আরও অনেক কাজ করতে হবে। আমরা ছাড় দিতে বা দমে যেতে রাজি নই। বন্দুক সহিংসতা বন্ধ করা আমাদের জীবনের লড়াই।’
ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ) বিলটির বিরোধিতা করেছে। তাদের যুক্তি, এটি কোনোভাবেই সহিংসতা বন্ধ করবে না।
কেন বন্দুক নিয়ন্ত্রণে এত বড় চুক্তি?
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে আনুমানিক ৩৯৩ মিলিয়ন আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রে মৃত্যুর সর্বোচ্চ হার এই যুক্তরাষ্ট্রেই।
গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের হিসাবে, চলতি বছর দেশটিতে বন্দুক সহিংসতায় ২ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ, যেখানে বন্দুক রাখার অধিকারের কথা বলা হয়েছে দেশটির সংবিধানে।
সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য ফেডারেল বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯৪ সালে পাস হয়েছিল। অ্যাসল্ট রাইফেল এবং বড় ক্ষমতার ম্যাগাজিনগুলো বেসামরিক ব্যবহারের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এতে। তবে এক দশক পর আইনটি বাতিল হয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের একটি আইন বাতিল করে। এই আইনে যেকোনো নাগরিক বন্দুক বহন করতে পারে।
জরিপ বলছে, বেশির ভাগ আমেরিকান বন্দুক নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে। অনেক রিপাবলিকান সিনেটর বন্দুকপন্থি বড় সম্প্রদায়ের রাজ্যগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। এসব রাজ্যের রিপাবলিকান সমর্থকরা আইন সংস্কারের ঘোর বিরোধী।
আরও পড়ুন:গুজরাট দাঙ্গায় ২০০২ সালে সহিংসতায় নিহত কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অব্যাহতি দেয়া এক রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি আর্জি নাকচ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে মোদির অব্যাহতিই বহাল রাখা হয়েছে।
৮৪ বছর বয়সী জাকিয়া জাফরি গুজরাট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার নতুন তদন্ত চেয়েছিলেন। তার মতে, এটি ছিল একটি বড় চক্রান্ত, যেখানে রাজনীতিবিদ, পুলিশ জড়িত ছিল।
জাকিয়া জাফরির স্বামী এহসান জাফরি একজন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ। গুজরাট দাঙ্গার সময় দাঙ্গাকারীরা তাকে টেনে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করে।
জাকিয়া বলেছিলেন, দাঙ্গাকারীদের আক্রমণের আগেই তিনি সাহায্যের জন্য পুলিশ কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদদের ফোন করেন, কিন্তু তার ফোনের উত্তর দেয়া হয়নি।
বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) ঘটনার ১০ বছর পরে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি রিপোর্ট জমা দেয়, যেখানে ‘কোনো বিচারযোগ্য প্রমাণ’ না থাকায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অন্য ৬৩ জনকেও অব্যাহতি দেয়া হয়।
তবে জাকিয়া জাফরির আইনজীবী এই কপিল সিবল জানিয়েছিলেন, এসআইটি তদন্ত করেনি, অভিযুক্তদের রক্ষার চেষ্টা করেছিল।
পশ্চিম ভারতে ২০০২ সালে হওয়া গুজরাট দাঙ্গা তিন দিন ধরে চলেছিল। যে দাঙ্গায় ১ হাজারের বেশি মুসলিম মারা যান। সে সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে চলমান রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যেই এবার দেশটির রাজধানী মস্কো থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রিয়াজান শহরের কাছে শুক্রবার সকালে একটি সামরিক পরিবহন বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বেশ কয়েকজন ক্রু নিহত হয়েছেন।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামরিক বিমান ধ্বংস হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তবে দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত করেনি রুশ সামরিক বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে, সামরিক বিমানটিতে ৯ বা ১০ জন আরোহী ছিলেন।
দেশটির জরুরি বিভাগ বলছে, দুর্ঘটনায় অন্তত দুইজন মারা গেছেন এবং ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে যাওয়া ৬ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল ইলিউশিন টু-৭৬। বিমানটি একটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনা করছিল। দুর্ঘটনার সময় বিমানে কোনো কার্গো ছিল না।
প্রশিক্ষণ ফ্লাইট পরিচালনার সময় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে পাইলট রুক্ষ মাটিতে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়।
ভূমিতে আঘাত কিংবা কোনো অবকাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি। বিমানটি দৃশ্যত একটি খালি মাঠে জরুরি অবতরণ করে এবং অবতরণের আগেই বিমানটির ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছেন।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ বর্তমানে তুরস্ক সফরে আছেন। দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ইস্তাম্বুলে ইসরায়েলিদের ক্ষতি করার এক ইরানি চক্রান্ত বানচাল করতে সাহায্য করার জন্য তুর্কিয়েকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুর্কিয়ে গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুর্কিয়ে কর্তৃপক্ষ লাপিদের সফরের আগে ইসরায়েলিদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করার সন্দেহ পাঁচজন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ বলেছেন, ইসরায়েলিরা ইরানের হুমকির মুখে অলস বসে থাকবে না।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল এবং তুরস্কের মধ্যে নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সহযোগিতার জন্য সম্প্রতি ইসরায়েলি নাগরিকদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে এবং এই প্রচেষ্টা চলমান আছে।
‘আমরা কেবল ইসরায়েলি পর্যটকদের হত্যার কথাই বলছি না, ইরানি সন্ত্রাসের দ্বারা তুর্কিয়ে সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘনের কথাও বলছি। আমরা নিশ্চিত তুর্কিয়ে জানে এই বিষয়ে ইরানিদের কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।’
লাপিদ বৃহস্পতিবার তুরস্ক সফরে এসেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুর সঙ্গে আলোচনা করতে। ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনের কারণে দুই দেশের মধ্যে যে উত্তেজনাপূর্ণ তা মেরামত করার প্রচেষ্টা হিসেবে এই সফর।
এদিকে হুরিয়েত পত্রিকা জানিয়েছে, তুর্কিয়ে কর্তৃপক্ষ বুধবার ইস্তাম্বুলে ইসরায়েলি নাগরিকদের ক্ষতি করতে কথিত ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার সন্দেহে পাঁচজন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে।
সন্দেহভাজনদের অবস্থান করা বাড়ি ও হোটেলে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ দুটি পিস্তল এবং দুটি সাইলেন্সার জব্দ করেছে।
তবে ইরানের পক্ষ থেকে কোনো তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এর আগেই এই মাসের শুরুতেই ইসরায়েল তার নাগরিকদের তুর্কিয়ে ভ্রমণ এড়াতে সতর্কবার্তা জারি করেছিল ও দেশটিতে অবস্থান করা নাগরিকদের তুর্কিয়ে ত্যাগের আহ্বান জানানো হয়েছিল। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছিল, ইসরায়েলি নাগরিকরা ইরানি হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
আরও পড়ুন:আফগানিস্তানে পাকতিকা প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ৫০০ বাড়িঘর ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দশকের মধ্যে আফগানিস্তানে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে যারা বেঁচে গেছেন, তাদের খাবার নেই, আশ্রয় নেই। সম্ভাব্য কলেরা প্রাদুর্ভাবেরও আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষ করে আহত ব্যক্তিদের অবস্থা দুর্বিষহ, কারণ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে কাছের বড় শহরে যেতেও তিন ঘণ্টা গাড়িতে যাওয়া লাগে এবং রাস্তাটিও দুর্গম, ফলে আহত ব্যক্তিদের পরিবহন কঠিন হয়ে গেছে। আহত কয়েকজনকে তালেবানের সামরিক হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসা দিতে সরঞ্জাম ও ওষুধেও ঘাটতি রয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাকতিকা প্রদেশের চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘তাদের অঞ্চলে ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে।’
ভূমিকম্পের ফলে অনেক পরিবারই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হলো আশ্রয়। কিন্তু পর্যাপ্ত আশ্রয়ের ব্যবস্থা সেখানে করা যাচ্ছে না।
টোলো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত খোস্ত ও পাকতিকা থেকে আহত মানুষদের গজনি ও কাবুলের মতো অন্যান্য প্রদেশে নিয়ে যাচ্ছে তালেবান। পাকতিকা প্রদেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।
আফগানিস্তানে এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সম্ভাব্য কলেরা প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে সতর্ক করেছে। এরই মধ্যে সংস্থাটি বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার কাছে ১৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে।
এদিকে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে।
জীবিত ও উদ্ধারকারীরা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া গ্রাম, রাস্তাঘাট ও মোবাইল টাওয়ারের কথা জানিয়েছে।
দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে হওয়া সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা বর্তমান তালেবান সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটি মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটে আছে। তালেবানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা আব্দুল কাহার বলখি আফগান সরকারের সীমাবদ্ধতাও স্বীকার করে নিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আর্থিকভাবে জনগণকে যতটা সহায়তা দেয়া প্রয়োজন ততটা দিতে অক্ষম বর্তমান প্রশাসন।‘
বলখি জানিয়েছেন, সাহায্য সংস্থা, প্রতিবেশী দেশ ও বিশ্বশক্তিগুলো সাহায্য করছে। কিন্তু তার মতে, সহায়তা আরও বাড়ানো দরকার, কারণ এটি একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প, যা কয়েক দশকের মধ্যে হয়নি।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল পাকতিকার খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে, ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইএমএসসি জানিয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পাশাপাশি পাকিস্তানের ইসলামাবাদেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে পাকতিকার গায়ন ও বারমাল জেলায়। গায়নের একটি গ্রাম পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে।
পাকতিকার একজন স্থানীয় সাংবাদিক জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে মোবাইল টাওয়ারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ করা আরও কঠিন হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। দেশটির অবস্থান টেকটোনিকভাবে সক্রিয় অঞ্চলে।
জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের রিপোর্ট অনুসারে, গত এক দশকে দেশটিতে ভূমিকম্পে ৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। দেশটিতে ভূমিকম্পে বছরে গড়ে মারা যায় ৫৬০ জন।
গত জানুয়ারিতেও দেশটির পশ্চিমে ভূমিকম্পে ২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় ও শতাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য